বিদ্যাপ্রকাশ - Biddyaprokash

বিদ্যাপ্রকাশ - Biddyaprokash সৃজনশীল সাহিত্য প্রকাশক

লেখক রুমানা বৈশাখী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর বই হতে উপার্জিত সমস্ত রয়েলিটি বন্যাদুর্গতদের পুর্নবাসন ফান্ডে দেয়ার ঘোষণা...
24/08/2024

লেখক রুমানা বৈশাখী আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর বই হতে উপার্জিত সমস্ত রয়েলিটি বন্যাদুর্গতদের পুর্নবাসন ফান্ডে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তাই বিদ্যাপ্রকাশ হতে লেখকের সকল বই ৩০% কমিশনে বিক্রয়ের ঘোষণা দেয়া হলো।

আমাদের প্রকাশিত লেখকের বইসমূহ এবং দাম।

১. যে মেয়েটি ভাত বেশি খেতো ৩২৫/-
২. তোমায় আমি মন্দবাসি ২৭০/-
৩. অবলৌকিক ৩৮০/-
৪. গল্পগুলো পরকীয়ার ২২৫/-
৫. অতিলৌকিক ২০০/-
৬. তাঁদের কোনো ছায়া ছিল না ২৪০/-
৭. নীল ও লীনা ২০০/-
৮. ছায়ারীরী ২০০/-
৯. চিতি ২০০/-
১০. সোয়া দুই ফুট ১৫০/-
১১. মেঘলীনা ১৬০/-

ঢাকা কিংবা দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে বইগুলো অর্ডার করতে চাইলে নক করুন বিদ্যাপ্রকাশের ইনবক্সে, পেয়ে যাবেন হোম ডেলিভারি।

ভারত থেকে অর্ডার করতে চাইলে কলেজ স্ট্রিটের বই বাংলায় অর্ডার করা যাবে!
বইবাংলা
https://www.facebook.com/rokomarinovels/posts/911375184333871

বইয়ের নামঃ "পরানচুল্লি”বইয়ের ধরণঃ "মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস ”লেখকঃ মোহিত কামাল মুদ্রিত মূল্যঃ ৫০০টাকা----------------------...
22/08/2024

বইয়ের নামঃ "পরানচুল্লি”
বইয়ের ধরণঃ "মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস ”
লেখকঃ মোহিত কামাল
মুদ্রিত মূল্যঃ ৫০০টাকা
------------------------------------------------------
ফ্ল্যাপ:

পরানের গহনতলেও চুল্লি থাকে, থাকতে পারে সাহিত্যের ভাষায়ও-সেখানেও জ্বলতে পারে তুষের আগুন। খোলা চোখে দৃশ্যমান না হলেও তা পুড়িয়ে দিতে পারে যাপিত জীবন। মিথ্যা রটানো কিংবা কুৎসিত গিবত ছড়ানোর মাধ্যমে সেই চুল্লিতে ঢেলে দেওয়া যায় মানুষকে ভস্মীভূত করে ফেলার মতো ভয়ংকর জ্বালানি। না জেনে, না বুঝে, শোনা কুৎসার সত্যতা যাচাই না করে কাছের বন্ধুরাও ভাইরাল করে দিতে পারে মিথ্যা কিংবা ভুল রটনা।

আবার হিতৈষীরাও পাশে দাঁড়াতে পারে প্রকৃত বন্ধুর মতোই। একের পর এক এ ধরনের পরিস্থিতি, সংকট, মিথ্যা রটনা, নিষ্ঠুর আর হিংস্র অপমান-অবহেলার মুখোমুখি হতে থাকে এই উপন্যাসের মূল চরিত্র-মিতু।

বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনে ঢোকার পর বাবাকে হারিয়ে আর্থিক সংকটে জর্জরিত হতে থাকে সে। নিচ প্রবৃত্তিবিশিষ্ট রটনার বিরুদ্ধে লড়াই করে এগোতে থাকে আপন দৃঢ়তা নিয়ে। চারপাশ থেকে সহযোগিতাও পেতে থাকে।

শিক্ষাঙ্গনে রাজনৈতিক সংগঠনের গ্রুপ, পাল্টা গ্রুপের নানা কূট-কৌশলের ভেতর থেকে মানবিক, রাজনৈতিক সাপোর্টও অর্জন করে। ছাত্ররাজনীতি কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়েও ঋদ্ধ হয়ে ওঠে মিতু। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ওঠার নানা ষড়যন্ত্র দূর করে নিজের যোগ্যতায় একসময় সংকট কাটিয়ে সফলতার শিখরেও পৌছে যায়। কিন্তু সেখানেও যে রয়েছে আরেক চুল্লি! তেজস্ক্রিয়তার বিপর্যয়ের মতো আবেগের দহনে স্তব্ধ হয়ে যায় মিতু।
তার মতো তেজস্বী তরুণীর জীবন কি থেমে যাবে? নাকি অনলবাণ বুকে পুষে এগোতে থাকবে?

মনস্তাত্ত্বিক এই উপন্যাসের ভেতর থেকে উত্তর খুঁজে নিতে হবে পাঠককেই।

বই - লেনিন কেন জরুরীলেখক - সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীমুদ্রিত মূল্য - ৪২০৳------------------------------------------------ফ্ল্য...
21/08/2024

বই - লেনিন কেন জরুরী
লেখক - সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
মুদ্রিত মূল্য - ৪২০৳
------------------------------------------------
ফ্ল্যাপ:

এই বইয়ের প্রবন্ধগুলোর অধিকাংশই লেখা হয়েছিল ১৯৯২ সালে, যখন সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন ঘটেছে, এবং সমাজতন্ত্রের ভবিষ্যৎ নেই বলে ধারণা প্রবল হয়ে উঠতে শুরু করেছে। মূল প্রবন্ধটির নাম, 'লেনিন কেন জরুরী'। অন্য প্রবন্ধগুলোতেও পুঁজিবাদের দৌরাত্ম্যের কথাই বলা হয়েছে। বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৯৩ সালে; পাঁচটি নতুন লেখা যুক্ত করে দ্বিতীয় বর্ধিত সংস্করণটি প্রকাশিত হলো এমন এক সময়ে যখন লেনিনের কাজের প্রাসঙ্গিকতা ও আবশ্যকতা দু'টোই আগের চেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রবন্ধগুলোর মূল বক্তব্যটি হচ্ছে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক, অর্থাৎ সমাজতান্ত্রিক, ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা। পুঁজিবাদ যে আজ চরম অবস্থায় পৌঁছে ফ্যাসিবাদী রূপ পরিগ্রহ করেছে তাতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই; এবং বিশ্বব্যাপী এই সচেতনতা ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে ঘটনা যেদিকে চলছে সেদিকে চলতে দিলে মানুষের মনুষ্যত্বই কেবল নয়, তার বেঁচে থাকাটাই হুমকির মুখে পড়বে। সমাধান সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা বটে, তবে সেটা আপনা আপনি ঘটবে না; তার জন্য সাংস্কৃতিক প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে। এসব বক্তব্য লেখকের অন্যান্য বইতেও রয়েছে, বিশেষ ভাবেই পাওয়া যাবে বর্তমান প্রকাশনাটিতে। বক্তব্য তাত্ত্বিক ঠিকই, কিন্তু উপস্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন প্রসঙ্গের বিবেচনার মধ্য দিয়ে এবং হৃদয়গ্রাহী রূপে। লেখকের উদ্দেশ্য সমস্যা নিয়ে কেবল ভাবিত করা নয়, সমাধানে আগ্রহ বৃদ্ধি করাও বটে।

একুশে বইমেলা ২০২৪ প্রিয় পাঠক,বিদ্যাপ্রকাশের ৩২৬-৩২৭-৩২৮-৩২৯ গুমটি ক্রমে আপনাদের স্বাগত!বিদ্যাপ্রকাশ বরাবরের মতো এবারও বা...
01/02/2024

একুশে বইমেলা ২০২৪

প্রিয় পাঠক,
বিদ্যাপ্রকাশের ৩২৬-৩২৭-৩২৮-৩২৯ গুমটি ক্রমে আপনাদের স্বাগত!

বিদ্যাপ্রকাশ বরাবরের মতো এবারও বাংলা সাহিত্যে যুক্ত করবে, বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় নবীন ও প্রথিতযশা প্রবীণ লেখকদের ভিন্ন চিন্তনের বই।

বাংলা একাডেমির বিপরীত প্রান্তে রমনা কালীমন্দির গেট গিয়ে প্রবেশ করলে খুব সহজেই লেখক-পাঠকদের ভালোবাসার প্রতিষ্ঠান বিদ্যাপ্রকাশ নজরে আসবে !

24/01/2024

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৪
বিদ্যাপ্রকাশের গুমটিক্রম :
৩২৬-৩২৭-৩২৮-৩২৯

26/11/2023

সোয়া দুই ফুট
পর্ব-১
#উপন্যাস #ভালোবাসারগল্প

হেমন্তের হিম হিম রাতে গভীর ঘুমের মাঝে কেউ একটা পাতলা কাঁথা গায়ে টেনে দিলে যে অনুভবটা হয়.. ..চায়ের কাপটা হাতে পাবার পর ঠিক সেই রকম একটা অনুভবই তৈরি হয় আরমান আলীর মনের মাঝে! আরামদায়ক একটা ওম ওম উষ্ণতা, কোণা ভাঙা কাপটার শরীর ভেদ করে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে তার মনের আনাচে কানাচে। সেই উষ্ণতায় আস্তে আস্তে কেটে যেতে শুরু করে সারাদিন- সারারাত মনের মাঝে উপচে পড়া তেল চিটচিটে কালিমা, গলতে শুরু করে বুকের মাঝে জমাট হয়ে থাকা অপমান বরফ।

আর তাই,
আরমান আলীর সোয়া দুই ফুট উচ্চতার খর্বাকায় বামন জীবনে এই কাক ডাকা ভোরের এক পেয়ালা চা টুকুনই সারাদিনের সবচাইতে উল্লেখ্যযোগ্য ব্যাপার।

আর হবে না-ই বা কেন??

এই গোটা বস্তিতে একমাত্র নারী শাহানা, যে কিনা আরমান আলীর সাথে সোজা করে দুটো কথা বলে, সহজ ভাবে দুটো কথা বলে। আরমান আলীকে মানুষ মনে করে দুটো কথা বলে শাহানা। অবশ্য, যে সময়টাতে তাদের কথা হয়, তখন বোধহয় চাইলেও কোনো রূঢ় বাক্য উচ্চারণ করা যায় না। কাউকে নিয়ে রসিকতা করা যায় না। কাউকে অপমান-অপদস্থ আর তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা যায় না।

ফজরের আজান হয়ে যাবার পরেও তখন ঘুমিয়ে থাকে এই শহরের সমস্ত ব্যস্ততা। বস্তির দু/একজন বয়োবৃদ্ধ জায়নামাজ হাতে মোড়ের মসজিদটার দিকে পা বাড়ান, পাইকারি সবজি আর ডিম ওয়ালারা ভ্যান চালিয়ে হুঁশহাস ছুটে যায়, পতিতা মেয়েগুলি নিঃশব্দে খদ্দের বের করে ঘর থেকে আর সুরাইয়া হিজড়ার দলটা রাত শেষে ফিরে আসে নিজ নিজ আস্তানায়…

ঠিক তখন।

ঠিকই তখনই শাহানা তার পুরানো স্টোভটা টেনে নিয়ে বসে ঘরের দোরগোড়ায়। ছোট পাতিলে পানি চড়িয়ে অপেক্ষা করে অনেক অনেকক্ষণ। আগুনের আঁচে ফর্সা মুখটা যখন তার লাল হয়ে ওঠে আর নাকে জমে বিন্দু বিন্দু ঘাম, তখন চা পাতা ঢেলে দেয় একটু খানি। পানি ফোটে আর ফোটে, সদ্য জ্বাল করা চায়ের নরম সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে বস্তির এঁদো গলিতে। লম্বা চুলগুলো মেলে নিয়ে সেই ফাঁকে চিরুনী চালায় শাহানা, যেন এর চাইতে জরুরী কোন কাজ আর নেই জগতের কোথাও। আরমান তখন নিঃশব্দে এগিয়ে যায় বুভুক্ষের মতন, নিজেই একটা ইট পেতে বসে পড়ে স্টোভটার কাছাকাছি। যেখানে বসে থাকে শাহানার সাদা-কালো ছোপ ছোপ পোষা কুকুর কাল্লু মিয়া।

হাট করে খোলা দরজার ফাঁক দিয়ে তখন চোখে পড়ে কামরুল মিয়াকে। চৌকিতে এলোমেলো ঘুমে অচেতন, রাতের নেশায় তখনও আচ্ছন্ন। পরনের লুঙ্গিটা উচুঁ হয়ে থাকে তার বিশ্রীভাবে, নাক ডাকার আওয়াজ এত দূর থেকেও শোনা যায় পরিষ্কার। বউতে রাতের বেলা বাড়ি ফিরলো কি ফিরলো না, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। কিন্তু দুপুর গড়ানোর পর যখন ঘুম ভাঙবে লাট সাহেবের, সাথে সাথে ভাত না পেলে চিৎকার করে করে মাথায় তুলবে বস্তি। গলা শুনে মনে হবে ভাতের জন্যে বুঝি প্রাণটা বেরিয়ে যাচ্ছে তার। ঘরের বউয়ের শরীর বিক্রির টাকায় কেনা ভাতের পৃথক কোনো সুস্বাদ আছে কিনা, মাঝে মাঝে বড় জানতে ইচ্ছা করে আরমানের।

‘ওই, কী এত চিন্তা করোস?’ শাহানা তাকে তুই-তোকারিই করে। ‘চা তো জুড়ায় যাইতেছে। নে, বিস্কুট নে।’

বিস্কুটের টুকরোটা আগ্রহ করেই নেয় আরমান। শাহানা দৈনিকই তাকে চায়ের সাথে এটা-ওটা খাওয়ায়, আর নিজেও খায়। কোনোদিন বিস্কুট,কোনো দিন এক পিস কেক। কেন যেন মনে হয় দিনের এই একটা বেলাই আগ্রহ করে কিছু খায় মেয়েটা। মনে হবার কারণ নেই কোনো, তবু মনে হয়।

‘আমারে একদিন মুরগীর গোসতো দিয়া ভাত খাওয়াইবা?’

আচমকা অনুরোধে কয়েক মুহূর্তের জন্য একটুখানি বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকে শাহানা।

‘খাওয়ামু না ক্যান? ভাত না, পোলাউ খাওয়াবো। সাথে ঝাল কইরে মুরগীর সালুন, বেগুনের ভাজা। কিন্তুক বেশ্যা মাইয়া লোকের খাওয়া কি তোর গলা দিয়া নামবো?’

‘কী যে কও না!!’
আসলে কী জবাব দেবে বুঝতে না পেরে এটুকুই বলতে পারে কেবল আরমান। অস্বস্তিতে নড়েচড়ে বসে। এমন প্রশ্নের কি জবাব হয়??

এই বস্তির সত্তর ভাগ নারীই দেহ ব্যবসায়ী, কিন্তু শাহানার মতন এমনি করে কেউ বলে না।

‘তোমার স্বোয়ামী খাইতে পারলে আমি পারুম না ক্যান? শরীর বেইচ্যা খাও বইলে কি পইচে গেছো নাকি? শরীর ব্যাচো, ভিক্ষা তো করো না।’

আর কোনো প্রতিউত্তর আসে না অপরপ্রান্ত থেকে, নীরবে চলে চা পান। একসময় ঝাপসা একটা হাসি দিয়ে চায়ের কাপটা হাতে চলে যায় শাহানা। কলপাড়ে গিয়ে কাপড় ধোয় সশব্দে, জমে থাকা বাসন মাজে। এই শীতের আধো অন্ধকার ভোরেও একগাদা কাপড় ধুতে আনে রোজ, হাঁটু পর্যন্ত শাড়ি গুটিয়ে কেচে যায় এক মনে। আরেকটু পর বস্তির বাকি মহিলারা যখন একে একে কলপাড়ে ভীড় করতে শুরু করবে, তার অনেক আগেই শাহানা কাজ শেষ করে চলে যাবে ঘরে। কামরুল মিয়ার পাকস্থলীর ক্ষুধা মেটাবার প্রয়াসে ভাত তরকারী রাঁধবে। আর তারপর দেবে লম্বা ঘুম। জানে আরমান।

অন্য কেউ হলে হয়তো উচিয়ে থাকা শাড়ির বাহানায় ফর্সা পা জোড়ার দিকেই চেয়ে থাকতো। কিন্তু আরমান দেখে শুধু তার বির্বণ মুখটাই। রাত জাগার ক্লান্তি চোখের নিচে, হাতের নাড়াচাড়ায়, বসার ভঙ্গিতে, এমনকি নিঃশ্বাসের আওয়াজে পর্যন্ত। অবশ্য সন্ধ্যা কালে যখন সেজেগুজে কাজে যাবে মেয়েটা,তখন এসবের চিহ্নও অবশিষ্ট থাকবে না কোথাও। সালোয়ার কামিজে কিশোরী মেয়েদের মতন দেখাবে, আর শাড়ি পরলে তো কোনো গাড়ি ওয়ালা বড়লোকের পাশে অনায়াসে বউ হিসাবে মানিয়ে দেয়া যাবে তাকে। এবং বোধহয় দিনের এই একটা মাত্র সময়েই “স্বামী” হবার দ্বায়িত্ব-কর্তব্য পালন করবে কামরুল মিয়া। বউকে সাথে করে নিয়ে পৌছে দিয়ে আসবে খদ্দেরের বিছানায়।

আর দূরে দাঁড়িয়ে দেখবে তখন আরমান। কেবল দেখতেই থাকবে, যতক্ষণ না শাহানা হারিয়ে যায় দৃষ্টিসীমার আড়ালে। তারপর আবার যথারীতি মন দেবে সে টেবিল মোছার কাজে, অথবা খদ্দেরকে পরিবেশন করবে চা। হয়তো টেবিলটায় ময়লা রয়ে যাবে কোথাও, অথবা ছলকে পড়বে গরম তরল পানীয়টি। ম্যানেজার স্যার লক্ষ্য করে দাঁতমুখ খিঁচিয়ে গাল বকবে- “হালার বামুনের পিরিতের খায়েশ হইছে। কাজে কামে মন নাই, মনে খালি বে* শ্যা মাগীগো চিন্তা!.. ..দিনে রাইতে থাল ভইরে গিলিস, ওইটা কি আকাশ থেইকা আসে নাকি?.. ..বে*শ্যারাও বামুনের সাথে শোয় না.. ..”

অবশ্য গাল সে বকতেই পারে। কেননা সম্পর্কে সে বাপ হয়। সৎ হোক আর যাই হোক, বাপ তো। মায়ের স্বামী বাপ ছাড়া আর কি হবে?

গাল সে বকতেই পারে.. ..কেননা বামনকে কটু কথা বললে দোষ হয় না। আল্লাহ স্বয়ং যাকে বামন হয়ে জন্মাবার অভিশাপ দিয়ে পাঠিয়েছে, এই দুনিয়ার মানুষ তার প্রতি মমতা দেখাবে কি করে? মানুষের ক্ষমতা নেই খোদার চাইতেও সহানুভুতিশীল হবার।

তাছাড়া অমন দূরাশা আরমান করেও না। ঠাট্টা-তামাশা-কটু বাক্য বহু আগেই গা সওয়া হয়ে গেছে সাতাশ বছরের দীর্ঘ জীবনে, এখন আর যায় আসে না কিছু। তার সোয়া দুই ফুট উচ্চতার শরীরটা এখন আর নতুন কিছুও নয় বস্তির হরেক রঙে রাঙানো জীবন গুলোতে। এখানে বেশ্যা আর হিজড়াদের বসবাস, মাথায় টুপি দিয়ে আল্লাহর নামে সন্ত্রাস করা লোকেদের বসবাস, মিনিস্টার-এম পি দের পা চাটা গুন্ডাদের বসবাস, অর্থের বিনিময়ে সন্তান গর্ভে ধরা মেয়ে লোকের বসবাস। আরমান আলীর বামনত্ব এখানে তাই অনেক পুরানো বিষয়- বারবার কচলে ফেলা লেবুর মতন, বেশ্যা মেয়েদের শরীরের মতন।

তবু প্রতিদিন এই সময়টাতে নিজেকে নিয়ে কেন জানি ভীষণ লজ্জা পায় আরমান। লজ্জা হয় নিজের খাটো খাটো পা গুলো নিয়ে, যে পা গুলো তাকে শাহানার পাশে রিকশায় ওঠার স্বাধীনতা দিতে পারেনা। ছোট ছোট হাত জোড়া নিয়ে, যে হাত গুলো শাহানার মাথায় স্বান্তনা বুলিয়ে দেবার মতন উচ্চতায় যেতে পারে না। লজ্জা হয় নিজের অপ্রশস্ত বুকটা নিয়ে, যে বুকটা কখনও শাহানাকে আগলে রাখার মতন চওড়া হতে পারবে না।

তবে কি শাহানা নামের এই মেয়েকে ভালোবাসে সে? অন্যের স্ত্রী শাহানা, পরপুরুষের কাছে প্রতিরাতে শরীর বিক্রি করা শাহানা। এমন মেয়েকে বুঝি ভালোবাসে কোনো পুরুষ, না বাসতে পারে?

অবশ্য সে নিজেও কি সত্যিকারের পুরুষ??
নাকি .. ..পুরুষ মানুষের অর্ধেকটা কেবল!!

(চলবে.....)

"সোয়া দুই ফুট"
উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে বিদ্যা প্রকাশ
প্রথম প্রকাশ- ফেব্রুয়ারি, ২০১১
মূল্য- ১৫০ টাকা

বইটি সরাসরি অর্ডার করতে পারবেন বিদ্যাপ্রকাশ - Biddyaprokash এর পেজ হতে। এছাড়াও পেয়ে যাবেন রকমারি ডট কম থেকেও। রকমারি.কম এর অর্ডার লিঙ্কটি কমেন্ট বক্সে দেওয়া আছে।

ভারতে কেউ পেতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন কলেজ স্ট্রিটের বইবাংলা তে।

26/11/2023

সোয়া দুই ফুট
পর্ব-২
#উপন্যাস #ভালোবাসারগল্প
(প্রথম পর্বের লিংক পাওয়া যাবে কমেন্ট সেকশনে।)

মাঝে মাঝে এমন হয়।

কোনো তুচ্ছ ঘটনা, অথবা ছোট্ট কোনো কথা মনের মাঝে অকারণেই একটু হুটোপুটি করে যায়। আজকাল মনকে নাড়া দিয়ে যাবার মতন ঘটনা খুব একটা ঘটে না জীবনে। কী যে ছাই হয়েছে মনের, কুষ্ঠ রোগীর ত্বকের মতন অনুভবহীন এখন!

অবশ্য নতুন কিছু, মনকে নাড়া দেয়ার মতন বিশেষ কিছু যে ঘটছে জীবনে তা-ও তো নয়। রোজই তো সেই গতবাঁধা পুনরাবৃত্তি। ঘুম ভাঙে দুপুর গড়িয়ে যাবার পর, গোসল করে দুটো মুখে দিয়ে আস্তে আস্তে তৈরি হওয়া কাজে যাবার জন্যে। শরীরটাকে পরিচ্ছন্ন করা ঘষে ঘষে যেন পুরানো পিতলের বাসন, চুলগুলো বাঁধা বাহারি ঢঙে। আর মাগরিবের আযানটা হয়ে গেলেই বেরিয়ে পড়া কামরুলের ডাকে…

যেভাবে বহু আগে ছেড়ে এসেছিল আপন ঘর, বাবা-মা, ভাই-বোন। নিজের উঠোন, নিজের আকাশ, গ্রামের ছোট্ট ভিটেয় মায়ের কোল ঘেঁষে বড় সাদাসিধে কিন্তু নিরাপদ এক জীবন… ছেড়ে এসেছিল ভালোবাসার টানে, কামরুলের ডাকে। যে ডাক আজীবনের মত ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে শাহানার জীবনটা…

বাপজানের অর্থ-বিত্ত ছিল ভালোই। মাঠে জমি ছিল, বাজারে দোকান ছিল একটা। তিন কন্যা আর আহলাদের একমাত্র পুত্রকে নিয়ে হেসেখেলে দিন কেটেই যেতো। বিলাসিতা হয়তো ছিল না ঠিকই, তবে কারও সামনে হাত পাতার মতন পরিস্থিতির তৈরি হয়নি কোনোদিন। চার সন্তানকে স্কুলেও পাঠাতেন বাপজান। বলতেন-

“আমি মুরুক্ষু বইলে কি পুলাপানগো তাই বানামু?”

আম্মার অবশ্য এতে সায় ছিল না মোটেই। সংসারের সমস্ত ঝামেলা একা সামলে উঠতে উঠতে হাঁপিয়ে উঠতেন বেচারী, আর প্রায়ই আর্জি জানাতেন স্বামীর দরবারে। মুখ ঝামটা মেরে বলতেন-

“স্কুলে যায়ে আপনের মাইয়ারা কি জর্জ ব্যারিষ্টর হইবো নাকি? হইবো তো পরের বউ, জীবন কাটবো চুলার পাড়ে! হুদাহুদি পয়সা পানিতে না ঢাইলা আমার কাছে দ্যান, সংসার-ধর্ম শিখাই। পরের শ্বাশুড়ীতে কইবো, ধামড়ি মাইয়ারে মাতে কিছু শেখায় নাই.. ..”

কথোপথন এভাবে চলতো দীর্ঘসময় প্রায়ই। এক পর্যায়ে বিড়ির প্যাকেটটা হাতে অন্য দিকে চলে যেতেন বাপজান, গোমড়া মুখে বেশী বেশী বিড়ি ফুঁকতেন স্ত্রীকে দেখিয়ে দেখিয়ে। মানুষটার কাছে সন্তানেরাই ছিল সব, কন্যাদের বিবাহের প্রসঙ্গে তাই সর্বদা রাগ করে বসতেন শিশুদের মতন। কলিজার টুকরা কন্যাদেরও তাই কেউ পরের ঘরে পাঠায়?

আম্মা অবশ্য তখনও টিপ্পনী কাটতে ছাড়তেন না। খুব হাসতে হাসতে বলতেন-

“বুইড়া ব্যাটার ঢঙ দেখছো? ভাবখান এরম যে মাইয়া বিয়া দিবো না। ঘরের খুটি বানায় রাখবো। পরে মাইয়া যখন পিরিত কইরে পালায় যাইবো, তক্ষণ তো চউখের পানিতে চাইরদিক ভাসায় ফেলবা.. ..”

বিধাতা বোধহয় মুচকি হাসতেন তখন… তখন কে জানতো আম্মার কথাই এমন করে সত্য হয়ে যাবে একদিন? শাহানা একদিন সত্যিই সব ছেড়ে চলে যাবে প্রেমিকের হাত ধরে?

কামরুলের সাথে কখন-কোথায়-কী করে পরিচয়, সে কাহিনী এখন অবান্তর। সত্য এটুকুই যে এই লোকটাকেই কখনও ভালোবেসেছিল ক্লাস নাইন পড়ুয়া শাহানা। আর একদিন তার হাত ধরে ছেড়ে এসেছিল আজন্ম চেনা গ্রামটাকে, ছিঁড়ে এসেছিল ওইটুকুন জীবনের চিরচেনা সমস্ত বন্ধন। কথা ছিল, পরিস্থিতি একটু শান্ত হলেই আবার ফিরে আসা হবে। শাহানার সুখী-সমৃদ্ধ জীবন দেখে তখন কি আর মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারবে আম্মা কিংবা বাপজান? পারবেন না, একেবারেই না। তখন সব ঠিক হয়ে যাবে।

বলেনি যে তা নয়, কামরুল অবশ্য গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবারই বলেছে বাপের বাড়ি থেকে ঘুরে আসার কথা। তোয়াজ করে করে বলেছে। রুজি-রুটি যার ওপরে নির্ভরশীল, তাকে বোধকরি একটু-আধটু ভয়ই করে মানুষ। কামরুল-ও হয়তো ভয় করে তাকে। বেশ ভালোভাবেই করে।

তবে এটা এখনকার দৃশ্য, বর্তমানের দিনের। প্রথম যখন এই শহরে পা রেখেছিল সেই কিশোরী শাহানা, অবুঝ শাহানা, ভালোবাসার আবেগে ভেসে যাওয়া শাহানা… চিত্রটা একেবারে ভিন্ন ছিল তখন! কোথায় নিজেদের দোতলা বাড়ি, কোথায় নিজের গ্যারেজের ব্যবসা, আর কোথায় মা-বাবা-ভাই-বোন নিয়ে ভরা পরিবার! স্বপ্ন শুরু হবার আগেই সব শেষ, এক রাতেই সোজাসাপ্টা অশালীন বাস্তবতাটা দেখতে পেয়েছিল কল্পনার রাজ্যে ভেসে বেড়ানো সরল গ্রাম্য কিশোরী।

মা অবশ্য ছিল কামরুলের, তবে কেবল ওই এক মা-ই। পেশায় বেশ্যা, কামরুল তার পিতৃপরিচয়হীন সন্তান। গ্যারেজের ব্যবসা নয়, বরং একটা জরাজীর্ণ গ্যারেজ লাগোয়া টিনশেডের এক কামরায় ছিল দুই মা-ছেলের সংসার। ননদও একজন ছিল বটে, তবে শ্বশুরবাড়িতে। দেহপসারীনি মা তার পুত্রকে কখনোই সঠিক করে বলতে পারেন নি পিতার পরিচয়টা, তবে কন্যাকে পেরেছিলেন। ব্যাপারটা নিয়ে কামরুলের মাঝে একটু উত্তাপ আছে ঠিকই, তবে ভাই-বোনের সম্পর্কে সে উত্তাপের ছোঁয়া পৌছায় না। শাহানা সংসারে প্রবেশের আগেই ছোট বোনকে বিয়ে করিয়ে দিয়েছে সে। বেশ্যার দালাল কোনো ভাই তার বোনকে যতটা বিয়ে দিতে পারে, তার চাইতে ভালোই দিয়েছে।

হ্যাঁ, কামরুলের পেশা ছিল দেহপসারিনী মেয়েদের দালালী। তাদের ভালো খদ্দের খুঁজে দেয়া আর বিনিময়ে উর্পাজনের একটা অংশ নিজের পকেটে পোরা। ওটাই সংসারে একমাত্র আয়ের উৎস।

প্রথম কয়েক মাস অবশ্য কিশোরী বধূ বুঝে উঠতে পারেনি কিছুই। শ্বাশুড়ীর লাথি-গুঁতো-গালাগাল সয়ে মুখ বুঝে ঘর করেছে, যা হোক যেমন-তেমন দুটো ভাত-তরকারিই নিজের সংসার ভেবে তৃপ্তি নিয়ে খেয়েছে আর রাতের বেলা স্বামীর বিছানায় কয়েক মিনিটের শরীরী ভালোবাসা পেয়েই সন্তষ্ট থেকেছে বেশ। অবশ্য সেটাকে “ভালোবাসা” বলা যায় কিনা তাই বা কে জানে। শ্বাশুড়ী ঘুমাতো চৌকিতে, আদুরে ছেলেকে পাশে নিয়েই। মা ঘুমিয়ে গেলে সরীসৃপের মতন নিঃশব্দে নিচে নেমে আসতো কামরুল, শাড়িটা উচুঁ করে নির্বিকার অনুপ্রবেশের আকাঙ্খায়। অবশ্য কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফুরিয়ে যেতো সব, শরীরে রয়ে যেতো উগড়ে দেয়া থকথকে সাদা তরলটা কেবল।

জানে না কেন, সেসব দিনের কথা মনে করলে এখন শুধু গা ঘিনঘিনে একটা অনুভবই তৈরি হয় মনের মাঝে। তবে সংসারটা সে সত্যিই বড় মন দিয়ে করতো! মুখ বুজে শ্বাশুড়ীর সেবা করা, বড় শখ করে মায়ের কাছে শেখা এটা-ওটা রান্না করা, ননদ বেড়াতে এলে সাধ্যমত অতিথি অ্যাপ্যায়ন করা। তখন কি আর ছাই জানতো নাকি যে কামরুল তাকে বিয়ে করেনি, করেছে তার পরিষ্কার চামড়া আর ধারালো চেহারাটাকে। বাজারে নাকি অমন মেয়ের ভারী কদর! পরের দালালী করে করে পয়সাই বা পকেটে আসে। ভাড়ায় খাটাবার মতন নিজের একটা মেয়েমানুষ হলে তো পুরোটাই লাভ।

কী করে আর কীভাবে এই ধান্দায় এলো, সে কাহিনীরও এখন আর কোনো প্রয়োজন নেই। তবে একথা সত্যি যে মার খেতে হয়েছিলো খুব। কামরুল গরুর মতন পেটাতো তাকে। শরীরে বস্তা চাপিয়ে পিটাতো, যাতে দাগ না পড়তে পারে। না হলে যে আবার বিকোবে না শরীরটা! ছয়দিন না খাইয়ে বেঁধে রেখেছিলো জানালার সাথে, এখনও মনে আছে পরিষ্কার। না দানা, না পানি। এক বিন্দুও না। মা-ছেলে সামনেই বসতো ভাতের থালা নিয়ে, খেয়ে উঠে গতরে শক্তি সঞ্চয় করে আবার পেটাতো। খদ্দেরের বিছানায় উঠতে রাজি না হয়ে তবেই ছয়দিন পর এক চুমুক পানি জুটেছিল কপালে…

আর এও সত্যি যে, জীবনে প্রথম বার যখন কামরুল ব্যতীত অন্য কোনো পুরুষের সাথে মিলিত হলো.. ..নাহ, খারাপ লাগলো না একটুও! বরং ভালোই লাগলো, কেমন যেনো সুখ সুখ! কই, কামরুল তো তার শরীরটাকে এমন সুখ দিতে পারেনি কখনও!

কাহিনীটা আজো মনে আছে স্পষ্ট, বুঝি আজীবনই থাকবে। নতুন এক সেট থ্রি পিস পরিয়ে কামরুল নিয়ে গেলো তাকে, সস্তা দরের একটা হোটেলের কামরায়। গদগদ কণ্ঠে পরিচয় দিলো- “কলেজ গার্ল স্যার! কলেজ গার্ল!.. ..ভেরি স্মার্ট গার্ল স্যার!”

লোকটা ছিল মধ্য বয়সী, মাথায় টাক, রঙ কালো আর মানিব্যাগে স্ত্রী-সন্তানের ছবি- টাকা দেবার সময় দেখেছিলো শাহানা। পরপর দু’রাত লোকটার কাছে যেতে হয়েছিলো তাকে। এরপর আরো অনেক বার। সারারাত রাখতো লোকটা, যতবার সম্ভব পয়সাটা উসুল করে নিতো। একটু পর পর কীসের যেন একটা ট্যাবলেটও গিলে নিতো। নারী দেহটা যখন আর কিছুতেই চলতো না, তখন কষে দু’ চারটে লাথিও দিতো।

সেই কোন পাঁচ/সাত বছর আগেকার কথা। নাকি আরো বেশি??? মনেও নেই…

গরুর মতন পিটুনি খাওয়া শাহানার গল্পকে এখন অন্য কোনো জীবনের মনে হয়। আগ্রহ করে এটা-ওটা রাঁধতে বসা শাহানাকে মনে হয় অন্য কেউ। এখনকার শাহানা নির্বিকার আর শীতল, যাকে কামরুল বুঝে-সমঝে চলে। কামরুলের মা যে শাহানাত ভয়ে মেয়ের সংসারে গিয়ে উঠেছে অনেক বছর, ফিরে আসবার আগ্রহ প্রকাশ করারও সাহস নেই। এখনকার শাহানা আর শখ করে কারও জন্যে কিছু রাঁধে না , কোনো মতে দায়সারা দুটো ভাত ফোটায় বেঁচে থাকার তাগিদে।

কিন্তু আজ.. ..

বামনটা এমন করে বললো, বহুদিন পর কেমন যেন নড়ে উঠলো ভেতরটা। বহু বহুকাল পর কেউ তাকে রেঁধে খাওয়াতে বললো কিছু। বাপজান যেমন করে বলতো-

“আম্মাজান, যান তো একটু ডাইল চচ্চড়ি করেন। বেশী কইরে রসুনের কোয়া দিয়া।”

আরমানের কথার মাঝে সেইরকম একটা আহবান ছিল কোথাও। বাপজানের মতন আহবান। নিষ্কলঙ্ক, স্বার্থহীন আহবান। জগৎ সংসারে এই এক আরমানই তো আছে, যার সাথে দুটো কথা বলা যায় শান্তিত্ব। বামনটা তার শরীরের দিকে তাকায় না, হয়তো এই জন্যেই।

ঘরের এক কোণে যত্ন করে গুছিয়ে রাখা হাঁড়ি-পাতিলের ঢেরটার দিকে তাকিয়ে ছোট্ট একা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শাহানা। সংসার বলতে এই হাঁড়ি-পাতিলের ঢেরটাই অবশিষ্ট আছে কেবল। কিংবা বলা ভালো- সংসারের স্মৃতি!! হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন খরিদ করার বড় শখ তার। কেনে, আর সাজিয়ে রাখে। যত্ন করে সাজিয়ে রাখে।

চৌকির ওপর উপুর হয়ে পড়ে আছে কামরুল। পরনের লুঙ্গিটা কুৎসিতভাবে উচুঁ হয়ে আছে, মুখের লালায় বালিশ ভিজে একাকার। আজকাল সে বস্তির কোণে নতুন ঘরে ওঠা মেয়েটার কাছে যায়, জানে শাহানা। বেশ্যা বউয়ের সাথে শোয়ার চাইতে বাজারের বেশ্যার সাথে শোয়া বোধহয় বেশী আরামের। অবশ্য তাতে কিছু যায় আসে না তার, কেননা নিজেকে তার কামরুলের বউ মনে হয় না কোনো দিক থেকেই। বহুকাল যাবত মনে হয় না।

তবুও,এরকম সকাল গুলোতে কীসের কারণে যেন দীর্ঘশ্বাস ফেলে মন, হাহাকার করে। আবার একই সাথে ঘিনঘিন করে ওঠে শরীরের কোথাও। সব শেষে তালগোল পাকিয়ে….

এক গাদা বিতৃষ্ণায় ভরে যায় মনটা!!!

(চলবে.....)

"সোয়া দুই ফুট"
উপন্যাসটি প্রকাশ করেছে বিদ্যা প্রকাশ
প্রথম প্রকাশ- ফেব্রুয়ারি, ২০১১
মূল্য- ১৫০ টাকা

বইটি সরাসরি অর্ডার করতে পারবেন বিদ্যাপ্রকাশ - Biddyaprokash বিদ্যাপ্রকাশ - Biddyaprokash এর পেজ হতে। এছাড়াও পেয়ে যাবেন রকমারি ডট কম থেকেও। রকমারি.কম এর অর্ডার লিঙ্কও পাবেন কমেন্ট বক্সে।

ভারতে কেউ পেতে চাইলে অর্ডার করতে পারেন কলেজ স্ট্রিটের বইবাংলা তে। আর বিনে পয়সায় পড়তে চাইলে লাইক দিন এই পোস্টে, পেজে ফলো দিয়ে রাখুন। নতুন পর্ব পোস্ট হলেই নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন। 😌

বই: ছায়ারীরী লেখক : রুমানা রৈশাখী ---------------------------------কী হবে, যদি একটু একটু করে বদলে যায় আপনার বহু বছরের চ...
19/10/2023

বই: ছায়ারীরী
লেখক : রুমানা রৈশাখী
---------------------------------
কী হবে, যদি একটু একটু করে বদলে যায় আপনার বহু বছরের চিরচেনা মানুষটি? দিনের পর দিন ক্রমশ বদলে সে হয়ে উঠছে এমন কেউ যাকে আপনি চেনেন না একটুও! মানুষ নয়, প্রিয় মানুষটি বদলে যাচ্ছে এমন এক প্রাণিতে যা আদৌ নয় এই পৃথিবীর। আপনার প্রিয় মানুষটির স্থান ক্রমশ দখল করে নিচ্ছে অন্য ভুবনের এক পৈশাচিক অস্তিত্ব, যার জন্ম ভয় আর আতঙ্কের কুৎসিত এক গহ্বরে.. কিংবা কে জানে, হয়তো সে মানুষই ছিল না কখনো!

কী হয়, যখন কোনো প্রেত সত্ত্বা রূপ বদলে প্রবেশ করে আপনার জীবনে, আপনার দৈনন্দিন প্রতিটি মুহূর্তে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যায়, গভীর রাতে আপনাকে আলিঙ্গন করে বুকে মাথা রাখে । ঠিক মানুষ নয়, মানুষের মতোই কিছু একটা। হিম শীতল মৃত্যুর মতো তাঁর অস্তিত্ব, বাস্তব আর পরাবাস্তবতার মাঝামাঝি তাঁর অস্তিত্ব! কী ঘটে, যখন মানবীয় কারো বাইরে আপনি ভালোবেসে ফেলেন পৈশাচিক কোনো অবয়বকে ?

রোজকার সাদামাটা জীবনের ফাঁক-ফোঁকরে লুকিয়ে থাকা ভয়াল এক কাহিনি নিয়ে এই উপন্যাস “ছায়ারীরী” । যে কাহিনি দাঁড় করিয়ে দেবে আপনাকে এমন এক সত্যের সামনে, যা আমরা দেখেও দেখতে চাই না অনেকেই । কিন্তু তাতে মিলিয়ে যায় না, বরং আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে প্রকৃতির সেই অস্বাভাবিক শক্তি। প্রবল, প্রচণ্ড আর ভয়াল সেই শক্তি—যা তছনছ করে দেয় তুচ্ছ মানব জীবন ।

সত্যিই কি আছে এমন পৈশাচিক শক্তির অস্তিত্ব? সত্যিই কি আছে তাঁরা, যাদেরকে সহজ ভাষায় বলা হয় “প্রেত"? সত্যিই কি প্রকৃতি রূপ বদলে জন্ম দেয় এমন সব অমীমাংসিত রহস্যের, যার সমাধান নেই তাঁর নিজের কাছেও? প্রকৃতির ঠিক তেমন এক অমীমাংসিত রহস্য নিয়ে আমাদের এবারের কাহিনি....

08/10/2023

ঢাকা বিভাগীয় বইমেলা ২০২৩
স্থান : বাংলা একাডেমি চত্বর
বিদ্যাপ্রকাশ-এর স্টল নং : ১৭

মেলা চলবে : ০৭-১৩ অক্টোবর বেলা ২ টা থেকে রাত ৮ টা।
ছুটির দিন সকাল ১১ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।

প্রকাশিত হলো মোহিত কামালের "মন" উপন্যাসের পরিমার্জিত ত্রয়োদশ মুদ্রণ।পরিমার্জিত সংস্করণের প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।বইটির ...
10/09/2023

প্রকাশিত হলো মোহিত কামালের "মন" উপন্যাসের পরিমার্জিত ত্রয়োদশ মুদ্রণ।
পরিমার্জিত সংস্করণের প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ।
বইটির মুদ্রিত মূল্য : ৪৫০ টাকা। কমিশন দিয়ে : ৩১৫ টাকা।
------------------
ফ্ল্যাপ:
"কথাশিল্পী মোহিত কামালের ভিন্ন রকম উপন্যাস ‘মন’। সাহিত্যের শব্দ গাঁথুনিতে তিনি ব্যবহার করেছেন মনস্তাত্ত্বিক উপাদান। মনোবিজ্ঞানের কলকব্জায় চড়ে উপন্যাসের জীবনধারা বিস্তৃত হয়েছে, মনের সাহিত্য রচিত হয়েছে। ভলোবাসায় পূর্ণ জীবনে ফাটল তৈরি হয়। বদলে যায় মনের গতি-প্রকৃতি। বিপর্যয় নেমে আসে, সুখি পরিবারের ভিত ভেঙে যেতে থাকে। ভুল বোঝাবুঝি, সন্দেহ, অবিশ্বাস এবং ক্রোধের আগুনে পুড়তে থাকে মন। পুড়তে থাকে দেহ । ধসে যায় সামাজিক সমৃদ্ধি।

সাম্প্রতিক সামাজিক সমস্যা চিত্রণের আলোকে মোহিত কামাল তুলে ধরেছেন জীবন যন্ত্রণার গোপন হাহাকার। ভালোবাসার গোপন শক্তিকে তিনি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করেছেন। সমাজ সংস্কারের জন্য নৈতিকতা ব্যবহার করেছেন বিশ্লেষণের ভেতর দিয়ে । উপন্যাসের শব্দ বিন্যাসের ধাপে ধাপে মনোথেরাপির বিষয়-আশয় ব্যবহার করে চরিত্রগুলোর ভেতরগত শুদ্ধির পথ দেখিয়ে দিয়েছেন। পাঠকের সামনে উন্মোচিত হবে সামাজিক নগদগে ঘা নিরাময়ের কৌশল। সাম্প্রতিক জীবন ধারায় মোবাইল ফোনের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সমাজের নারী পুরুষের মধ্যে গেড়ে বসতে চলেছে মারাত্মক ধরনের ক্ষত। মোবাইল শব্দ তরঙ্গ হানা দেয় নারী পুরুষের শয়ন কক্ষে। আলোড়িত হয় মন। আলোড়িত হয় দেহ, যৌনতার গোপন কক্ষে ঢল নামে । গড়ে উঠে পরকীয়া, সর্বনাশ হয়ে যায় পারিবারিক আবহ। অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায় সন্তানের ভবিষ্যৎ। মা-বাবার অনৈতিক স্খলনের কারণে সন্তানের ব্যক্তিত্বের কাঠামোয় গেড়ে বসে নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য । অনিয়ন্ত্রিত হয় আচরণ ও মেজাজ । বেড়ে যায় তাদের মাদকাসক্তির ঝুঁকি ।"
এসব নিয়ে এ উপন্যাস।

ফুলের ভাষা যদি বুঝিপলাশ মজুমদার বিষয় : উপন্যাস প্রচ্ছদ : রাজীব দত্ত মূল্য : ৩০০ টাকা---------------------------
07/09/2023

ফুলের ভাষা যদি বুঝি
পলাশ মজুমদার
বিষয় : উপন্যাস
প্রচ্ছদ : রাজীব দত্ত
মূল্য : ৩০০ টাকা
---------------------------

নীল ও লীনা রুমানা বৈশাখী প্রথম প্রকাশ-র্মাচ ২০২১প্রচ্ছদ-মোস্তাফিজ কারিগর মূল্য : ২০০ টাকাছাড় দিয়ে : ১৫০ টাকাঅর্থ চায়নি,...
02/08/2023

নীল ও লীনা
রুমানা বৈশাখী

প্রথম প্রকাশ-র্মাচ ২০২১

প্রচ্ছদ-মোস্তাফিজ কারিগর

মূল্য : ২০০ টাকা
ছাড় দিয়ে : ১৫০ টাকা

অর্থ চায়নি, বিত্ত চায়নি, খ্যাতিও না। নীল কেবল চেয়েছিল একটি মাস্টারপিসের স্রষ্টা হতে। কেবল আর কেবলমাত্র একটি মাস্টারপিস!

শিল্পীর নাকি পিছুটান থাকতে নেই!

ভালোবাসা নাকি শিল্পীকে ক্ষয় করে দেয়, কুড়ে কুড়ে নাকি খেয়ে ফেলে ঘুণপোকার মত ।

শিল্পী নীল আহসান ক্ষয় হতে চায়নি, তাই সে ক্ষয় করেছিল প্রেমিক নীলকে ।

অস্বীকার করতে চেয়েছিল আজন্মের সেই ভালোবাসাকে, যা নির্ধারণ করেছিল স্বয়ং নিয়তি । তীব্র ঘৃণা করেছিল নীল সেই মেয়েটিকেই, যাকে ছাড়া এক জীবনে আর কাউকেই ভালোবাসতে পারেনি ...

ভালোবাসার নারীর প্রতি এক পুরুষের সীমাহীন ঘৃণার গল্প “মেঘলীনা"...

আর তারপর-

সেই মেয়েটিকেই আজীবন খুঁজে বেড়ানোর গল্প “নীল ও লীনা”!

পদ্মাসেতু : সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয় মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া অষ্টম প্রকাশ জানুয়ারি-২০২২প্রচ্ছদ : রাজিব আহমেদ মূল্য : ৫৫০ ট...
23/07/2023

পদ্মাসেতু : সততা ও আত্মবিশ্বাসের বিজয়
মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া

অষ্টম প্রকাশ
জানুয়ারি-২০২২
প্রচ্ছদ : রাজিব আহমেদ
মূল্য : ৫৫০ টাকা
ছাড় দিয়ে : ৪১২ টাকা

জনাব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সরকারের একজন সফল আমলা
হিসেবে সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। সরকারি দায়িত্ব
পালনে ব্যস্ততা সত্বেও তাঁর সুলিখিত দু'টি ভ্রমণ কাহিণীমূলক বই
‘দেশ-বিদেশের ভ্রমণ কথা’ ও ‘মার্কিন মুলুকে মনোভ্রমণ'
যথাক্রমে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে। ‘পদ্মাসেতু :
সততা ও আত্নবিশ্বাসের বিজয়’ তাঁর রচিত তৃতীয় গ্রন্থ ।
পদ্মাসেতু বাংলাদেশের স্বপ্নের সেতু, গর্বের সেতু, বিজয়ের
সোপান। উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে নির্মিতব্য এ সেতুর
প্রাথমিক প্রস্তুতিমূলক কাজ বাস্তবায়নকালে একটি স্বার্থান্বেষী
মহল বিশ্বব্যাংকের ইন্টিগ্রিটি বিভাগে দুর্নীতির অভিযোগ করে এই
সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে। সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রী, উপদেষ্টা
ও সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অপবাদ
দিয়ে বিতর্কিত করা হয়েছে। এ গ্রন্থের লেখক দুর্নীতি দমন
কমিশনের দায়ের করা মামলায় প্রায় দু’বছর কষ্টভোগ করেছেন,
এমন কি জেলেও গিয়েছেন। অবশেষে সকল দুর্নীতির অভিযোগ
দেশে-বিদেশে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী সিদ্ধান্তে
বাংলাদেশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করছে। তাঁর
দূরদর্শী পদক্ষেপ ও অটুট মনোবলের কারণে সারা বিশ্বে
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম ও আত্নমর্যাদাশীল জাতি
হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। পদ্মাসেতু নির্মাণের শুরু থেকে একটি
স্বার্থান্বেষী ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠি, বিশ্বব্যাংক এবং দেশের
একশ্রেণীর সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যম ভিত্তিহীন রটনা ও প্রচার
প্রচারণার মাধ্যমে সরকারের শীর্ষপর্যায়সহ মন্ত্রী ও সরকারি
কর্মকর্তাদের দুর্বিসহ কষ্ট দিয়েছে। এই বইয়ের লেখক তাঁর
কার্যকালীন বাস্তব অভিজ্ঞতা, দুঃখ-কষ্ট ও দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র,
মিডিয়ার প্রচারণা ইত্যাদি তার নিজস্ব সত্যভাষণের মাধ্যমে
বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। বইটি পদ্মাসেতুর উপর একটি
তথ্যবহুল, নির্ভরযোগ্য প্রামাণ্য দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে।

দ্য আলকেমিস্টমূল : পাওলো কোয়েলহো অনুবাদ : ফারহানা আজিম শিউলী বিষয় : উপন্যাস প্রচ্ছদ : রাগীব আহসান মূল্য : ২৫০ টাকাছাড় দি...
21/06/2023

দ্য আলকেমিস্ট
মূল : পাওলো কোয়েলহো
অনুবাদ : ফারহানা আজিম শিউলী
বিষয় : উপন্যাস
প্রচ্ছদ : রাগীব আহসান
মূল্য : ২৫০ টাকা
ছাড় দিয়ে : ১৮৮ টাকা
---------------------------
আলকেমিস্ট একটা বই হাতে তুলে নিলেন, বইটা হয়তো কাফেলারই কোনো যাত্রীর। পাতা উল্টাতে উল্টাতে তিনি নার্সিসাসের একটা গল্প খুঁজে পেলেন। নার্সিসাসের পৌরাণিক উপাখ্যান আলকেমিস্টের জানা। নার্সিসাস নামের এক যুবক- রোজ এক হ্রদের পাড়ে হাঁটু গেড়ে বসে নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে- সৌন্দর্যে মগ্ন হয়ে থাকতো। নিজের সৌন্দর্যে বিভোর হয়ে এক সকালে, সেই হ্রদেই সে পড়ে গিয়ে ডুবে মারা যায়। তার মৃত্যুর জায়গাটায় জন্মে এক ফুল- যার নাম নার্সিসাস।

কিন্তু এই বইয়ের লেখক এভাবে গল্পের উপসংহার টানেননি। তিনি লিখেছেন, নার্সিসাস মারা যাওয়ার পর বনদেবীরা এসে দেখতে পায়- মিঠা পানির হ্রদটা অশ্রু-জলে লবণাক্ত হয়ে গেছে। বনদেবীরা হ্রদের কান্নার কারণ জানতে চায়।

হ্রদ জবাব দেয়, “এই কান্না- নার্সিসাসের জন্য।”

বনদেবীরা বলে, “এতে অবাক হওয়ার কী আছে? নার্সিসাসের জন্যই তো তুমি কাঁদবে। আমরা না হয় বনে তার পিছে ছুটে মরতাম কিন্তু তুমি তো একেবারে কাছ থেকে, গভীরভাবে তার সৌন্দর্য দেখতে পেতে।” হ্রদ জানতে চায়, “কিন্তু... নার্সিসাস সুন্দর ছিল কি?”

বনদেবীরা বিস্মিত হয়ে বলে, “তুমি ছাড়া এর উত্তর আর কে ভালো জানবে?

তোমার পাড়েই তো প্রতিদিন বসে সে নিজের সৌন্দর্যে মগ্ন থাকতো!” হ্রদ কিছু সময় চুপ করে থাকে। অবশেষে বলে ওঠে : “আমি নার্সিসাসের জন্য কাঁদি বটে কিন্তু কখনো তার সৌন্দর্য খেয়ালই

করিনি। আমি কাঁদি কারণ সে যতোবার আমার পাড়ে ঝুঁকে বসতো, আমি তার চোখের গভীরে নিজের সৌন্দর্যের প্রতিবিম্ব দেখতে পেতাম।” আলকেমিস্ট ভাবলেন, “গল্পটা চমৎকার।”

ছত্রভঙ্গের পূর্বাপর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বিষয় : প্রবন্ধপ্রচ্ছদ : ধ্রুব এষমূল্য : ৪০০ টাকা ছাড় দিয়ে : ৩০০ টাকাঊনিশ শ' সাত...
21/06/2023

ছত্রভঙ্গের পূর্বাপর
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
বিষয় : প্রবন্ধ
প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ
মূল্য : ৪০০ টাকা
ছাড় দিয়ে : ৩০০ টাকা

ঊনিশ শ' সাতচল্লিশে অখণ্ড বাংলা দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। সেটা ছিল মর্মান্তিক ও অতিশয় ক্ষতিকর এক বিপর্যয়। তার দায়িত্ব ব্রিটিশের তো অবশ্যই, কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগেরও। সে-সময়ে লীগ ও কংগ্রেসের কয়েকজন বিশিষ্ট নেতা চেষ্টা করেছিলেন বাংলাকে এক রাখতে। তাঁরা সফল হন নি। বস্তুত সাফল্যের সম্ভাবনা আগেই নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছিল। এই দ্বিখণ্ডিকরণের বিপদের বিষয়ে বিভিন্নভাবে এবং আগে থেকেই দেশবাসীকে সচেতন করতে চেয়েছিলেন বাংলাভাষার প্রধান কবিদের একজন, কাজী নজরুল ইসলাম। তারপর ধারাবাহিক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পূর্ব বঙ্গ পাকিস্তানের প্রায়-ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে। কিন্তু মানুষের ছত্রভঙ্গদশার অবসান ঘটে নি। তবে গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়ে দুর্দশার অবসান ঘটাবার পক্ষে যাঁরা কাজ করছেন তাঁরা আশা ছাড়েন নি। তাঁদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। লড়াইটা আসলে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে, কারণ পুঁজিবাদই হচ্ছে সেই দুর্বৃত্ত নিজেকে প্রচ্ছন্ন রেখে একদা যে বাংলাকে ভাগ করেছিল। পাকিস্তান আমলে পুঁজিবাদ বেশ প্রকাশ্য হয়ে পড়েছিল। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ দেশবাসীর বিজয় হয়েছে, কিন্তু সেই সঙ্গে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে যে পুঁজিবাদের তৎপরতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন সে মুক্ত এবং অনেকটাই উন্মোচিত। 'ছত্রভঙ্গের পূর্বাপর' বইটিতে ঘটনাগুলোর বিভিন্ন দিক ও পরম্পরা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বইয়ের শুরু লেখকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে শেষ এই আশার সুরটি দিয়ে যে মরা গাঙে আবার বান ডাকবে। সেটা এমনি এমনি ঘটবে না, তার জন্য শত্রু ও মিত্রকে চিহ্নিত করা এবং মুক্তির লড়াইটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আবশ্যক হবে। প্রয়োজন পড়বে দেশপ্রেম ও গণতান্ত্রিক চেতনার। পরিবর্তন আনাটা একটি মস্তবড় চ্যালেঞ্জ। আগে ছিল, এখনো রয়েছে। লেখক এই চ্যালেঞ্জটিকে বাঙালীর নিকট- ইতিহাসের পটভূমিতে স্থাপন করে দেখতে চেয়েছেন। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিটা নৈর্ব্যক্তিক ঐতিহাসিকের নয়, সংলগ্ন বুদ্ধিজীবীর।

Address

38/4
Dhaka
1100

Opening Hours

Monday 10:00 - 17:00
Tuesday 10:00 - 17:00
Wednesday 10:00 - 17:00
Thursday 10:00 - 17:00
Saturday 10:00 - 17:00
Sunday 10:00 - 17:00

Telephone

+8801716601193

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when বিদ্যাপ্রকাশ - Biddyaprokash posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to বিদ্যাপ্রকাশ - Biddyaprokash:

Videos

Share

Category