Hibat Allah

Hibat Allah Help Allah's Slave And Make Your Heart Soul
(1)

জোরাম ভ্যান ক্ল্যাভেরেন: ঘৃণা থেকে হিদায়াতের পথে🌿🌿🌹জোরাম ভ্যান ক্ল্যাভেরেন (Joram Jaron van Klaveren) একজন ডাচ (নেদারল্য...
05/10/2025

জোরাম ভ্যান ক্ল্যাভেরেন: ঘৃণা থেকে হিদায়াতের পথে🌿🌿🌹

জোরাম ভ্যান ক্ল্যাভেরেন (Joram Jaron van Klaveren) একজন ডাচ (নেদারল্যান্ডস) রাজনীতিবিদ, লেখক এবং প্রাক্তন ইসলামবিদ্বেষী। জন্ম ২৩ জানুয়ারি ১৯৭৯ সালে, আমস্টারডামে। তিনি ডাচ সংসদের সদস্য ছিলেন এবং একসময় গির্ট উইল্ডারসের নেতৃত্বাধীন কুখ্যাত ইসলামবিরোধী দল Party for Freedom (PVV)-এর প্রভাবশালী নেতা ছিলেন।

তার রাজনীতিক জীবনের বেশিরভাগ সময় ইসলাম ধর্ম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা ও বিরূপ প্রচারণা চালিয়েছেন। একসময় তিনি ইসলামের বিরুদ্ধে একটি বই লেখার কাজও শুরু করেন যার উদ্দেশ্য ছিল ইসলামকে “ভুল ধর্ম” হিসেবে প্রমাণ করা।

কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন।

যখন তিনি গভীরভাবে ইসলাম নিয়ে গবেষণা করতে শুরু করেন, তখন তিনি দেখেন যে ধর্মকে তিনি এতদিন ভুল ভাবতেন, সেটিই আসলে সত্য ও যুক্তিসঙ্গত। কুরআন ও রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবন অধ্যয়ন করতে গিয়ে তার অন্তর পাল্টে যায়। অবশেষে, ২০১৯ সালে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন—

“আমি যখন ইসলামের বিরুদ্ধে বই লিখতে বসেছিলাম, তখনই বুঝতে পারি আমি ইসলামের পক্ষে লিখছি।”

পরবর্তীতে তিনি সেই বইটির নাম দেন “Apostate” (ডাচ: Afvallige), যেখানে তিনি নিজের পরিবর্তনের গল্প বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। বইটি প্রকাশের পর পুরো ইউরোপে আলোড়ন তোলে।

জোরাম বর্তমানে ইসলাম সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা প্রচারে সক্রিয়। তিনি ইসলামি চিন্তাবিদদের সঙ্গে কাজ করছেন এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়িয়ে ইউরোপে ইসলামের সঠিক চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।

সংক্ষিপ্ত তথ্য:
• পূর্ণ নাম: জোরাম জ্যারন ভ্যান ক্ল্যাভেরেন
• জন্ম: ২৩ জানুয়ারি, ১৯৭৯ – আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস
• জাতীয়তা: ডাচ
• পেশা: রাজনীতিবিদ, লেখক, বক্তা
• পূর্বের দল: Party for Freedom (PVV)
• বর্তমান পরিচয়: ইসলাম গ্রহণকারী ও ইসলাম প্রচারক
• বই: Apostate (Afvallige)

তার জীবন আমাদের শেখায়:
মানুষ যতই ইসলাম থেকে দূরে থাকুক না কেন, সত্য যখন হৃদয়ে পৌঁছায়—অন্ধকার দূর হয়ে যায়। যেমন আল্লাহ বলেন,

“যাকে আল্লাহ হিদায়াত দেন, তাকে কেউ পথভ্রষ্ট করতে পারে না।”
(সূরা আয-যুমার ৩৯:৩৭)

04/10/2025
Stockholm Syndrome: অপহরণ অপরাধ এবং অপহরনকারী যখন এক সরল রেখায় দাড়িয়ে-১৯৭৩ সালে সুইডেনের স্টকহোমে একটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়...
04/10/2025

Stockholm Syndrome: অপহরণ অপরাধ এবং অপহরনকারী যখন এক সরল রেখায় দাড়িয়ে-

১৯৭৩ সালে সুইডেনের স্টকহোমে একটি ব্যাংকে ডাকাতি হয়। ছয় দিন চারজন কর্মী বন্দি থাকে, আর আশ্চর্যের বিষয় এই বন্দিরাই পরে অপহরণকারীর পক্ষ নেয়! পুলিশ পর্যন্ত অবাক হয়ে যায়। এখান থেকেই জন্ম নেয় মনোবিজ্ঞানের এক অদ্ভুত শব্দ “Stockholm Syndrome”।

এর মানে হলো যখন কেউ দীর্ঘসময় ধরে ভয়, চাপ বা নির্ভরতার মধ্যে বন্দি থাকে, তখন সে নিজের অপহরণকারীর প্রতিই সহানুভূতিশীল হয়ে ওঠে। কেউ কেউ তো তাদেরকে “ভালো” মানুষ হিসেবেও দেখতে শুরু করে। একে আগে মনোবিজ্ঞানীরা বলতেন “Capture Bonding Syndrome”।

এই নামটি জনপ্রিয় হয় ঠিক ৫২ বছর আগে, ১৯৭৩ সালে। ধারণা করা হয়, ১৯৭৪ সালের দিকেই শব্দটি অভিধানে যুক্ত হয়।

কিন্তু আসলে এই প্রবণতা নতুন না।
১৯৩৩ সালে আমেরিকার Mary McElroy নামে এক তরুণী অপহৃত হয়েছিলেন চারজনের হাতে। তার ধনী বাবা ৩০,০০০ ডলার মুক্তিপণ দিয়ে মেয়েকে ছাড়ান। অপহরণকারীরা ধরা পড়ে, কিন্তু মেরি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য না দিয়ে বরং তাদের পক্ষে কথা বলেন। এমনকি যাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, তার জন্য মেরি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
পরে ১৯৪০ সালে মেরি আত্মহত্যা করেন। বলা হয়, তার নোটে তিনি লিখেছিলেন—
“যারা আমাকে অপহরণ করেছিল, তারা ছাড়া সবাই আমাকে বোকা ভাবতো। শুধু ওরা আমাকে মানুষ হিসেবে সম্মান করতো তাই আমি তাদের ভালোবাসি।”

এই দুই ঘটনাই মনোবিজ্ঞানের চোখে দেখিয়েছে মানুষ কখনও কখনও বিপদের মুখে নিজের শত্রুর সঙ্গেই মানসিক বন্ধন গড়ে তোলে।
একই সঙ্গে ভয়, নির্ভরতা আর আশার এক অদ্ভুত মিশেল যা মানুষকে ভুলিয়ে দেয়, কে আসল শত্রু আর কে বন্ধু।

মূল কথা:
Stockholm Syndrome কোনো রোগ না এটা একধরনের মানসিক প্রতিক্রিয়া। যেখানে বেঁচে থাকার তীব্র ইচ্ছাই বন্দিকে তার দমনকারীর প্রতি সহানুভূতিশীল করে তোলে।

গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম — আকাশের বাঙালি ঈগলযে মানুষ নিজের জীবন বাজি রেখে তিনটি দেশের আকাশ রক্ষা করেছে, অথচ নিজেকে কখন...
03/10/2025

গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম — আকাশের বাঙালি ঈগল

যে মানুষ নিজের জীবন বাজি রেখে তিনটি দেশের আকাশ রক্ষা করেছে, অথচ নিজেকে কখনো বীর মনে করেনি তিনি ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম (Saiful Azam)।
বাংলাদেশের এই কিংবদন্তি পাইলট শুধু আমাদের নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের গর্ব। তিনি পাকিস্তান, জর্ডান ও ইরাক এই তিন দেশের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন, এবং ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখেছেন এক অমর যোদ্ধা হিসেবে।

প্রারম্ভিক জীবন

সাইফুল আজম জন্মগ্রহণ করেন ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪১ সালে, পাবনা জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। ছোটবেলা থেকেই তাঁর স্বপ্ন ছিল আকাশে ওড়া।
তিনি পাকিস্তান এয়ার ফোর্স একাডেমিতে ভর্তি হন ১৯৫৮ সালে এবং ১৯৬০ সালে অফিসার হিসেবে কমিশন পান।

পাকিস্তান এয়ার ফোর্সে বীরত্ব

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে তিনি এক অনন্য কীর্তি গড়েন। তখন তিনি PAF-এর No. 17 Squadron-এ কর্মরত ছিলেন।
এই যুদ্ধে তিনি একটি ভারতীয় ফাইটার বিমান (Folland Gnat) গুলি চালিয়ে ধ্বংস করেন এবং এজন্য তাঁকে পাকিস্তান সরকার Sitara-e-Jurat (সিতারা-এ-জুরাত) পদকে ভূষিত করে।
এই পদক পাকিস্তানে বীরত্বের অন্যতম সেরা স্বীকৃতি।

আরব দুনিয়ায় ঈগল পাইলট

১৯৬৬ সালে তাঁকে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠানো হয় প্রশিক্ষক ও উপদেষ্টা হিসেবে।
১৯৬৭ সালের Six-Day War চলাকালে তিনি জর্ডান ও ইরাক বিমানবাহিনী–এর হয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন।
তাঁর হাতে চারটি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ধ্বংস হয় যা কোনো মুসলিম পাইলটের পক্ষে এক রেকর্ডস্বরূপ অর্জন।

এই কৃতিত্বের জন্য তাঁকে জর্ডান ও ইরাক দুই দেশই সন্মাননা ও পদকে ভূষিত করে।
তাঁর নাম সেই সময় আরব পত্রিকায় ছাপা হয় “The Flying Tiger from the East” নামে।

বাংলাদেশের আকাশে ফিরে আসা

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে তিনি ফিরে আসেন মাতৃভূমিতে।
নতুন স্বাধীন দেশে তিনি যোগ দেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে (BAF)।
পরে তিনি দায়িত্ব পালন করেন ফ্লাইট অপারেশন, সেফটি ও ঢাকা এয়ার বেস কমান্ডে।
তিনি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানও ছিলেন একসময়।

রাজনৈতিক জীবন

অবসরের পর তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন।
১৯৯১ সালে পাবনা-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
দেশের জন্য তাঁর কাজ ছিল নিঃশব্দ, কিন্তু গভীর প্রভাবশালী।

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের Air Force Association তাঁকে “Living Eagle” উপাধি দেয় যা ইতিহাসে খুব কম পাইলটই পেয়েছেন।
বিশ্বে এমন পাইলট খুব বিরল যিনি একাধিক দেশের হয়ে যুদ্ধ করে একাধিক পদক অর্জন করেছেন।

মৃত্যু ও উত্তরাধিকার

১৪ জুন ২০২০ সালে, ৭৮ বছর বয়সে তিনি পরলোকগমন করেন।
তাঁকে বাংলাদেশের জাতীয় বীরের মর্যাদা ও সামরিক সম্মানসহ দাফন করা হয়।
তিনি রেখে গেছেন এক উত্তরাধিকার —

“দেশপ্রেম মানে শুধু নিজের দেশের পতাকা নয়, সত্যের ও ন্যায়ের পতাকা রক্ষা করা।”

মতিউর রহমানের সঙ্গে সম্পর্ক

অনেকেই বলেন, তিনি ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের প্রশিক্ষক।
যদিও এ বিষয়ে নিশ্চিত নথি পাওয়া যায়নি, তবুও দুজনই একই সময় পাকিস্তান এয়ার ফোর্সে কর্মরত ছিলেন এবং একই ঘরানার সাহস ও আদর্শ ভাগ করে নিয়েছিলেন।
দুজনই সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্তানের দুই উজ্জ্বল তারকা একজন শহীদ, আরেকজন কিংবদন্তি।

গ্রুপ ক্যাপ্টেন সাইফুল আজম ছিলেন এমন এক মানুষ, যিনি আকাশে উড়লেও পা রাখতেন মাটিতে।
তিনি বাঙালি জাতির সেই স্মারক, যিনি প্রমাণ করেছেন দেশপ্রেমের কোনো সীমানা নেই।
তার আকাশ আজও আমাদের মাথার উপর জ্বলজ্বল করছে, যেমন করে জ্বলজ্বল করে তাঁর নাম—
“সাইফুল আজম, The Eagle of Three Nations.”

“Pale Blue Dot — এক বিন্দু আলোর অহংকার”১৯৯০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, মহাকাশযান Voyager 1 পৃথিবী থেকে প্রায় ৬ বিলিয়ন কিলোম...
01/10/2025

“Pale Blue Dot — এক বিন্দু আলোর অহংকার”

১৯৯০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, মহাকাশযান Voyager 1 পৃথিবী থেকে প্রায় ৬ বিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল। নাসার বিজ্ঞানী কার্ল সেগান অনুরোধ করেছিলেন, “একবার ঘুরে পৃথিবীর দিকে তাকাও।”
যখন মহাকাশযান ঘুরে সেই দিকের ছবি তোলে ছবিটাতে দেখা গেল একটা ক্ষীণ নীল বিন্দু, ধূলিকণার মতো কিছু।
সেই বিন্দুই আমাদের পৃথিবী।

এই ক্ষুদ্র বিন্দুর ভেতরেই আমাদের সব
ভালোবাসা, যুদ্ধ, ইতিহাস, রাজনীতি, ধর্ম, সাম্রাজ্য, বিজ্ঞান, কবিতা, অহংকার, ক্ষমতা, সব।
এখানেই মানুষ ভালোবাসে, ঘৃণা করে, সন্তান জন্ম দেয়, মরেও যায়।
এখানেই রাজারা রাজত্ব করে, আর সাধারণ মানুষ প্রার্থনায় ডুবে থাকে।
সবটাই ঘটে এক বিন্দুর ওপর— that pale blue dot.

এই ফ্যাকাশে নীল বিন্দুটি আমাদের সেই সমস্ত গর্বকে এক নিমেষে ধূলিসাৎ করে দেয়। কার্ল সাগান, যার দূরদর্শিতায় এই ছবিটি তোলা সম্ভব হয়েছিল, তিনি এ প্রসঙ্গে যা বলেছিলেন, তা আজও মানবতার জন্য সবচেয়ে গভীর ও মর্মস্পর্শী বক্তব্য:

"ওই বিন্দুর উপরই আছে আমাদের সবাই। ওই ক্ষুদ্র বিন্দুটিতে যাদের তুমি ভালোবাস, যাদের তুমি চেন, যাদের নাম কখনো শোন নি, প্রতিটি মানুষ, প্রতিটি রাজা-প্রজা, প্রতিটি প্রেমিক যুগল, প্রতিটি মা-বাবা, প্রতিটি আশাবাদী শিশু, প্রতিটি নৈতিকতা শিক্ষাদানকারী, প্রতিটি দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, প্রতিটি সুপারস্টার, প্রতিটি 'মহান' নেতা, প্রতিটি সাধু ও পাপী — মানবজাতির ইতিহাসের সবাইকেই তাদের এই বাসস্থানে অতিবাহিত করতে হয়েছে — এক ধূলিকণার উপর স্থির হয়ে ঝুলে থাকা এক দানাবিশেষ।"

মহাবিশ্বের প্রেক্ষাপট: আমরা কতটা নগন্য?

এই ছবিটি প্রমাণ করে যে আমরা সৃষ্টিকর্তার কাছে, এই ব্রহ্মাণ্ডের কাছে কতটা নগন্য, কতটা তুচ্ছ।

ভাবো তো, আমরা কত গর্ব করি— কে বেশি ধনী, কে বেশি ক্ষমতাশালী, কার ধর্ম সঠিক, কার জাতি শ্রেষ্ঠ।
অথচ আমরা সবাই সেই এক বিন্দুর বাসিন্দা, যাকে মহাবিশ্বের অসীমতায় খুঁজে পাওয়াই প্রায় অসম্ভব।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন—

“তোমরা পৃথিবী ও আকাশের সৃষ্টির দিকে চিন্তা করো।”
(সূরা আলে ইমরান: ১৯১)

আরেক জায়গায় বলেন,

“নিশ্চয়ই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে এবং দিন-রাতের পরিবর্তনে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।”
(সূরা আল-বাকারা: ১৬৪)

এই ছবিটাই প্রমাণ করে—
আমরা সত্যিই ক্ষুদ্র।
আমাদের অস্তিত্ব, যত বড়ই মনে হোক, স্রষ্টার অসীম সৃষ্টির তুলনায় এক বিন্দু ধূলিরও কম।
তবু এই ক্ষুদ্রত্বের মধ্যেই আল্লাহ আমাদের চিন্তার শক্তি দিয়েছেন, ভালো-মন্দ বেছে নেওয়ার বুদ্ধি দিয়েছেন— যেন আমরা বুঝি, গর্ব নয়, কৃতজ্ঞতাই আমাদের আসল পরিচয়।

তাই আসল শিক্ষা হলো:
পৃথিবীটাকে যত বড় মনে হোক, এই বিন্দুর বাইরে অসংখ্য জগৎ আছে, অসংখ্য রহস্য আছে, আর আছে সেই মহান স্রষ্টা— যার ইচ্ছাতেই এই নীল বিন্দু ভেসে আছে অন্ধকার মহাবিশ্বে।
আমরা সত্যিই তুচ্ছ,
কিন্তু তাঁর দয়া আমাদের অনন্ত বড় করে দেয়।

29/09/2025

সুন্দর কাজ ও আচরণ হচ্ছে নেকি। আর যে কাজ করতে গিয়ে অন্তরে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়, কেউ তা দেখে ফেলা বা জেনে যাওয়াকে তোমরা অপছন্দ করো, সেটাই গুনাহ।

মুসলিম, তিরমিজী

29/09/2025

"সাপ পালে সরকার! অদ্ভুত কিন্তু সত্যি গল্প"

আজ এমন একটি মনস্তাত্ত্বিক ও অর্থনৈতিক ধারণার সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব, যার নাম "কোবরা ইফেক্ট" বা "Cobra Effect"। এটি শুধু একটি টার্ম নয়, এটি আমাদের সমাজ ও প্রশাসনে কীভাবে ভুল নীতি বিশাল ক্ষতি ডেকে আনে তার একটি জীবন্ত উদাহরণ।

কোবরা ইফেক্ট হলো এমন একটি পরিস্থিতি, যখন কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য নেওয়া পদক্ষেপই সেই সমস্যাকে আরও বড় করে তোলে বা সম্পূর্ণ নতুন সমস্যার সৃষ্টি করে। সহজ ভাষায়, "উপরে উপরে সমাধান, ভিতরে ভিতরে বিস্ফোরণ!"

এই টার্মটির জন্ম ব্রিটিশ শাসিত ভারতে একটি বাস্তব ঘটনা থেকে।

ঐতিহাসিক উদাহরণ: কোবরা মামলা!

ঘটনাস্থল: ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান দিল্লি)
সময়: আনুমানিক ১৮৫৭ সালের দিকে

সমস্যা: সেই সময় দিল্লি শহরে বিষধর কোবরা সাপের আধিক্য ছিলো। সাপের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছিল, আতঙ্ক ছড়িয়েছিল সর্বত্র।

সমাধানের চেষ্টা: সমস্যার সমাধান করতে ব্রিটিশ সরকার একটি চমৎকার (আপাতদৃষ্টিতে) প্রণোদনা স্কিম চালু করলো। তারা ঘোষণা দিল, যে ব্যক্তি একটি মৃত কোবরা সাপ সরকারের কাছে জমা দিবে, তাকে পুরস্কার হিসেবে অর্থ দেওয়া হবে।

ফলাফল (প্রথম ধাপ): পরিকল্পনা সফল মনে হলো! শত শত কোবরা সাপ মেরে মানুষ তা জমা দিতে লাগলো এবং পুরস্কার নিতে লাগলো। কোবরা সাপের সংখ্যা কমতে লাগল বলে সরকার খুশি।

আনপক্ষিত ফলাফল (কোবরা ইফেক্ট): কিছু বুদ্ধিমান মানুষ কোবরা সাপ পালন করা শুরু করলো! কারণ, মরা সাপ জমা দিলে টাকা মিলছে, কিন্তু সাপ ধরে এনে মেরে জমা দিতে গিয়ে কষ্ট বেশি। তাই তারা সাপের ফার্ম বানিয়ে বাণিজ্যিকভাবে কোবরা সাপ পালন ও বংশবৃদ্ধি করলো এবং মরা সাপ জমা দিয়ে টাকা উপার্জন করতে লাগলো।

চূড়ান্ত সমাধান ও বিস্ফোরণ: সরকার যখন এই ফাঁদটি বুঝতে পারলো, তারা সঙ্গে সঙ্গে এই পুরস্কার স্কিমটি বাতিল করে দিল।

চূড়ান্ত ফলাফল: পুরস্কার স্কিম বাতিল হওয়ার পর, সেই সাপের ফার্মের মালিকদের কাছে এখন হাজার হাজার বেকার কোবরা সাপ! যেহেতু সাপগুলো এখন আর অর্থ উপার্জনের উৎস নয়, তাই তারা সব সাপকে মুক্ত করে দিল। ফলস্বরূপ, দিল্লিতে আগের চেয়েও অনেক অনেক বেশি কোবরা সাপ ছড়িয়ে পড়লো। সরকারের "সমাধান" শেষ পর্যন্ত সমস্যাকে আরও ভয়াবহ করে তুলল।

আরও কিছু বাস্তব উদাহরণ:

১. ইঁদুর নিধন অভিযান (ভিয়েতনাম হ্যানয়):

· ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনামলে হ্যানয় শহরে ইঁদুরের উপদ্রব ছিল। সরকার জনগণকে প্রতিটি মৃত ইঁদুরের লেজ জমা দিতে বললো, এবং তার বিনিময়ে পুরস্কার দিতো।
· ফলাফল? মানুষ ইঁদুর ধরে মেরে তাদের লেজ কেটে জমা দিতে লাগল। কিন্তু কিছু চতুর ব্যবসায়ী ইঁদুর পালন শুরু করলো শুধু লেজের জন্য! আরও ভয়াবহ হলো, কিছু লোক লেজ কাটার পর ইঁদুরগুলো ছেড়ে দিত, যাতে তারা আরও বাচ্চা দিতে পারে! এছাড়াও বাজারে শুধু ইঁদুরের লেজেরও ব্যবসা শুরু হয়ে গেল।

২. ডেট্রয়েটের গাড়ি বীমা কেলেঙ্কারি:

· এক সময় ডেট্রয়েটে সস্তায় পুরনো গাড়ি কিনে তারপর সেগুলো চুরি হওয়ার ভান করে বীমা কোম্পানির কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা আদায় করার একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছিল। বীমা কোম্পানিগুলো ক্ষতির মুখে পড়ে। এটিও এক ধরনের কোবরা ইফেক্ট, যেখানে বীমার সুবিধা নেওয়ার নীতিই জালিয়াতিকে উৎসাহিত করেছিল।

কেন কোবরা ইফেক্ট হয়?

· প্রণোদনার (Incentive) ভুল ডিজাইন: নীতিনির্ধারকরা প্রণোদনা এমনভাবে ডিজাইন করেন, যা শর্টকাট ও অসাধুতাকে উৎসাহিত করে।
· মানুষের চতুরতা: যেকোনো সিস্টেমের ফাঁক গলে সুবিধা নেওয়ার জন্য মানুষ সৃষ্টিশীল হয়ে ওঠে।
· দীর্ঘমেয়াদী চিন্তার অভাব: অনেক সময় তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় দীর্ঘমেয়াদী কী প্রভাব পড়বে, তা ভাবা হয় না।

আমাদের জীবনে কোবরা ইফেক্ট:

· শিক্ষাক্ষেত্রে: শুধুমাত্র ভালো গ্রেডের জন্য চাপ দিলে শিক্ষার্থীরা রটে মুখস্থ বা নকল করার দিকে ঝুঁকতে পারে, প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে পারে না।
· অফিস-কারখানায়: কর্মচারীদের শুধু নির্দিষ্ট সংখ্যক কাজ করার টার্গেট দিলে তারা সংখ্যা পূরণ করবে, কিন্তু কাজের গুণগত মান নষ্ট হবে।
· সরকারি নীতিতে: কৃষিকে ভর্তুকি দিতে গিয়ে কখনো কখনো এমন ফসল উৎপাদন হয়, যার বাজার দর নেই, ফলে কৃষক আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

শিক্ষা:

"কোনো সমস্যার সমাধান করার আগে ভাবুন, আপনার এই পদক্ষেপটি কি কোবরা ইফেক্ট তৈরি করবে না তো?" সিস্টেমকে বোঝা, মানুষের আচরণ বোঝা এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব বিশ্লেষণ করাই হলো আসল সমাধান।
Hibat Allah

28/09/2025

তোমরা ধনসম্পত্তি দিয়ে সবাইকে সন্তুষ্টি করতে পারবে না। মানুষকে সন্তুষ্ট করো হাসিমুখে সুন্দর আচরণ উপহার দিয়ে।

আবু হুরায়রা (রা:)

“Animal Farm: একটি শুয়োরের গল্প, এক দেশের প্রতিচ্ছবি”"The most effective way to destroy people is to deny and obliterate...
25/09/2025

“Animal Farm: একটি শুয়োরের গল্প, এক দেশের প্রতিচ্ছবি”

"The most effective way to destroy people is to deny and obliterate their own understanding of their history."
"মানুষকে ধ্বংস করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো তাদের নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে বোঝাকে অস্বীকার করা এবং মুছে ফেলা।"
— George Orwell

বইয়ের নাম: অ্যানিম্যাল ফার্ম (Animal Farm)
লেখক: জর্জ অরওয়েল (George Orwell)

এই বই প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪৫ সালে। কিন্তু প্রচ্ছদ প্রকাশ করতে, বই বাজারে আনতে লেখককে ভয়ংকর সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। কারণ বইটি সরাসরি স্বৈরতন্ত্র ও একনায়ক শাসনের বিরুদ্ধে তীব্র রূপক বার্তা বহন করে। অনেক প্রকাশক তখন ভয়ে বইটি ছাপতে চাইছিল না।

১৯৪৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হওয়ার সময় এই বইটি নিয়ে প্রকাশকদের মধ্যে ভীষণ দ্বিধা ছিল। স্ট্যালিনের নেতৃত্বাধীন সোভিয়েত ইউনিয়ন তখন মিত্রশক্তি, তাই সরাসরি সমালোচনা করা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। অনেক প্রকাশক এটি ছাপতে রাজি হননি। সময় বদলালেও বইটির এই 'অসুবিধা' কাটেনি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন শাসন ব্যবস্থার অধীনে এই বইটি নিষিদ্ধ হয়েছে। কারণ? এটি যে কোনও স্বৈরাচারী শাসন, যে কোনও বিপ্লবের নামে প্রতিষ্ঠিত শোষণকারী গোষ্ঠীর মুখোশ অত্যন্ত দক্ষতার সাথে খুলে দেয়।

অ্যানিমাল ফার্ম কি শুধুই একটি প্রাণীদের গল্প?

না, একদমই না। এটি হচ্ছে সেই চিরচেনা গল্প যেখানে ক্ষমতার লোভে মানুষ (বা প্রাণী) কিভাবে তাদের আদর্শ, নীতি এবং প্রতিশ্রুতি ভুলে যায়। Manor Farm-এর জুলিয়ান মেজর জোন্সের অত্যাচার থেকে মুক্তির জন্য যে বিদ্রোহের সূচনা, তা শেষ পর্যন্ত নেপোলিয়ন (সুয়োর) এবং তার কুকুরদের নতুন একনায়কত্বে রূপ নেয়। "চার পা ভাল, দুই পা খারাপ" এর মতো সহজ-সরল নীতিমালা শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন হয়ে দাঁড়ায় "চার পা ভাল, কিন্তু দুই পা বেশি ভাল।"

বইয়ের মূল আলোচনা ও ব্যাখ্যা:
অ্যানিম্যাল ফার্ম একটি খামার, যেখানে পশুরা মানুষের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। তারা নিজেদের জন্য এক নতুন সমাজ প্রতিষ্ঠা করে, যার স্লোগান ছিল: "চার পায়ে ভালো, দুই পায়ে খারাপ।" শুরুতে সবার জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হলেও, ধীরে ধীরে শূকররা ক্ষমতা দখল করে। বিশেষ করে 'নেপোলিয়ন' নামের শূকরটি হয়ে ওঠে এক স্বৈরাচারী শাসক। তারা নিজেদের সুবিধা মতো নিয়ম বদলাতে থাকে, এবং পুরোনো স্লোগান পরিবর্তন করে নতুন স্লোগান তৈরি করে: "সব প্রাণী সমান, তবে কিছু প্রাণী অন্যদের চেয়ে বেশি সমান।" এই বইয়ের প্রধান চরিত্রগুলো হলো:

# মিঃ জোনস: অত্যাচারী শাসক, যা জার দ্বিতীয় নিকোলাসকে প্রতিনিধিত্ব করে।
# ওল্ড মেজর: বিপ্লবের স্বপ্নদ্রষ্টা, যা কার্ল মার্ক্স ও লেনিনকে বোঝায়।
# নেপোলিয়ন: একনায়ক, যার চরিত্রটি জোসেফ স্ট্যালিনের প্রতিফলন।
# নোবল: আদর্শবাদী নেতা, যিনি লিওন ট্রটস্কির প্রতিরূপ।
# বক্সার: পরিশ্রমী কিন্তু সরল সাধারণ মানুষ, যাদের আনুগত্যের সুযোগ নিয়ে শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে।

এই প্রতীকী চরিত্রগুলোর মাধ্যমে অরওয়েল দেখিয়েছেন, কীভাবে একটি আদর্শবাদী বিপ্লব ধীরে ধীরে স্বৈরাচারী শাসনে পরিণত হয়, যেখানে সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় এবং শাসকগোষ্ঠী নিজেদের সুবিধার জন্য সব নিয়ম পরিবর্তন করে।

এই প্রতীকী চরিত্রগুলোর মাধ্যমে অরওয়েল দেখিয়েছেন, কীভাবে একটি আদর্শবাদী বিপ্লব ধীরে ধীরে স্বৈরাচারী শাসনে পরিণত হয়, যেখানে সাধারণ মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয় এবং শাসকগোষ্ঠী নিজেদের সুবিধার জন্য সব নিয়ম পরিবর্তন করে।

অ্যানিম্যাল ফার্ম ও বাংলাদেশ:
অ্যানিম্যাল ফার্মের গল্পটি শুধু একটি নির্দিষ্ট সময়ের বা দেশের জন্য সীমাবদ্ধ নয়। এর বার্তা সার্বজনীন, যা আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের পরিস্থিতির সঙ্গেও ভয়ঙ্করভাবে অনেকাংশেই মিলে যায়।

পরিবর্তিত আদর্শ: বইয়ের পশুরা যেমন নিজেদের বিপ্লবী আদর্শ থেকে সরে গিয়েছিল, তেমনই আমরাও দেখতে পাই, কীভাবে আমাদের দেশের রাজনৈতিক আদর্শ এবং মূল্যবোধ ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে। স্বাধীনতার সময় থেকে যে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার কথা ছিল, তা এখন অনেক ক্ষেত্রে ক্ষমতার লড়াই আর ব্যক্তি-স্বার্থের জালে আটকা পড়েছে।

শোষক ও শোষিত: শূকররা যেমন খামারের অন্যান্য পশুদের শোষণ করত, তেমনই আমাদের দেশেও শাসকগোষ্ঠী সাধারণ মানুষের শ্রম ও বিশ্বাসকে ব্যবহার করে নিজেদের ক্ষমতা আরও শক্তিশালী করে। সাধারণ মানুষ, বক্সারের মতো, কঠোর পরিশ্রম করে, কিন্তু তার সুফল পায় না।

মিথ্যা প্রচারণা: নেপোলিয়নের কুকুররা যেমন ভিন্নমতাবলম্বীদের মুখ বন্ধ করে দিত, তেমনই আমাদের সমাজে ভিন্নমত দমন করতে নানা ধরনের আইন ও ভয় দেখানো হয়। শাসকগোষ্ঠী নিজেদের কর্মকাণ্ডকে বৈধতা দিতে গণমাধ্যমে মিথ্যা প্রচারণা চালায় এবং ইতিহাসকে নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা করে।

“All animals are equal, but some animals are more equal than others.” (সব প্রাণী সমান, কিন্তু কিছু প্রাণী বেশি সমান): এই উক্তিটি আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতির একটি নিখুঁত বর্ণনা। আইন সবার জন্য সমান হলেও, বাস্তব জীবনে ক্ষমতা ও অর্থের জোরে কিছু মানুষ আইনের ঊর্ধ্বে থাকে। তারা যা খুশি তাই করতে পারে, কারণ তাদের জন্য নিয়মকানুন আলাদা।

অ্যানিম্যাল ফার্ম শুধু একটি বই নয়, এটি আমাদের চারপাশের বাস্তবতার এক নির্মম প্রতিচ্ছবি। এটি আমাদের শেখায়, ক্ষমতা কীভাবে মানুষকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে এবং আদর্শকে ধ্বংস করে। আমাদের নিজেদের ইতিহাসকে ভুলে গেলে আমরাও একদিন "অ্যানিম্যাল ফার্ম"-এর পশুদের মতো এক নতুন শাসকের অধীনে চলে যাব, যারা হয়তো আমাদেরই মতো দেখতে, কিন্তু তাদের নীতি সম্পূর্ণ আলাদা।

জর্জ অরওয়েলের এই কালজয়ী রচনা আমাদের জাগ্রত রাখে। আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সতর্ক জনতাই হলো স্বৈরাচারের প্রধান শত্রু।

বিঃদ্রঃ: এই পোস্টটি একটি সাহিত্যিক বিশ্লেষণ ও সামাজিক আলোচনাকে উদ্দেশ্য করে লেখা। এর মাধ্যমে সরাসরি কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করা উদ্দেশ্য নয়।
Hibat Allah

নেগেটিভিটি বায়াস ও ডার্ক কনটেন্টে মানুষের আকর্ষণ: মানসিক প্রভাব ও ক্ষতিকর দিক। অবশ্যই এ বিষয়ে কিছু জানা প্রয়োজন আমাদের...
14/09/2025

নেগেটিভিটি বায়াস ও ডার্ক কনটেন্টে মানুষের আকর্ষণ: মানসিক প্রভাব ও ক্ষতিকর দিক।

অবশ্যই এ বিষয়ে কিছু জানা প্রয়োজন আমাদের-

মানুষ স্বভাবতই ভালো ও ইতিবাচক খবরের চেয়ে খারাপ বা নেতিবাচক অভিজ্ঞতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। মনোবিজ্ঞানে একে বলা হয় Negativity Bias। শুধু তাই নয়, অনেক মানুষ আবার পজিটিভ বা স্বাভাবিক কনটেন্টের চেয়ে ডার্ক, ভয়ংকর বা ডিস্টার্বিং বিষয় বেশি আগ্রহ নিয়ে দেখে। এই দুই প্রবণতাই মানুষের মানসিক ও সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন:
“আর আমি মানুষকে অবশ্যই পরীক্ষা করব কিছুটা ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষতিতে। আর আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন।” (সূরা বাকারা: 155)
—এই আয়াত ইঙ্গিত করে যে নেতিবাচক অভিজ্ঞতা মানুষকে কষ্ট দেয়, কিন্তু এটিই আসলে মানুষের ঈমান, ধৈর্য ও মানসিক শক্তি যাচাইয়ের মাধ্যম।

নেগেটিভিটি বায়াসের মূল কথা
# অগ্রাধিকার – খারাপ খবর বা ঘটনা মানুষের মনে ভালো ঘটনার তুলনায় বেশি জায়গা নেয়।
# স্মৃতিশক্তি – মানুষ নেতিবাচক স্মৃতি বেশি স্পষ্টভাবে মনে রাখে।
# প্রতিক্রিয়া – নেতিবাচক আচরণ বা মন্তব্য, ইতিবাচক মন্তব্যের চেয়ে দ্রুত প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
# সিদ্ধান্তে প্রভাব – ভয়, সন্দেহ বা আশঙ্কা মানুষের সিদ্ধান্তকে নিয়ন্ত্রণ করে, যদিও একই পরিস্থিতিতে ইতিবাচক দিকগুলো অবহেলিত থাকে।

নেগেটিভিটি বায়াস কী?

নেগেটিভিটি বায়াস হলো এমন এক মানসিক প্রবণতা যেখানে মানুষ খারাপ ঘটনা, দুঃসংবাদ বা নেতিবাচক অভিজ্ঞতাকে ইতিবাচক ঘটনার তুলনায় বেশি গুরুত্ব দেয়।

উদাহরণ:
কর্মক্ষেত্রে একজন কর্মী ১০টি ভালো কাজ করল, কিন্তু একটি ভুল করলে সবাই সেই ভুলটাই মনে রাখে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ৫০টি প্রশংসামূলক মন্তব্যের ভিড়ে একটি সমালোচনাই সবচেয়ে বেশি মনে দাগ কাটে।

ডার্ক বা ডিস্টার্বিং কনটেন্টের প্রতি আকর্ষণ

অনেকের মধ্যে দেখা যায় অন্ধকার বা ভীতিকর বিষয় নিয়ে বাড়তি আগ্রহ। একে মনোবিজ্ঞানে বলা হয় Morbid Curiosity।
মানুষ ভয়াবহ দুর্ঘটনা, রহস্যময় ঘটনা, ক্রাইম নিউজ বা ভৌতিক গল্পের প্রতি অদ্ভুত কৌতূহল দেখায়।

উদাহরণ:
সংবাদমাধ্যমে দুর্ঘটনার খবর বা হত্যাকাণ্ডের কভারেজে সাধারণত বেশি ভিউ হয়।
ইউটিউব বা সোশ্যাল মিডিয়ায় হরর বা ট্র্যাজেডি ভিডিও অনেক দ্রুত ভাইরাল হয়।

কেন এমন হয়?
> বেঁচে থাকার প্রবৃত্তি (Survival Instinct): নেতিবাচক বা ভয়ংকর বিষয় মানুষকে সতর্ক করে।
> অস্বাভাবিকের প্রতি কৌতূহল: সাধারণ খবর দ্রুত ভুলে যাওয়া যায়, কিন্তু অস্বাভাবিক বিষয় বেশি মনে থাকে।
> মানসিক পুরস্কার (Thrill): ডার্ক কনটেন্ট দেখার সময় মস্তিষ্কে উত্তেজনা বা থ্রিল তৈরি হয়।
> নিরাপত্তার অনুভূতি: মানুষ ভাবে, “ঘটনাটা আমার সঙ্গে হয়নি”—এতে এক ধরনের স্বস্তি পায়।

মানুষের উপর প্রভাব ও ক্ষতিকর দিক

১. মানসিক প্রভাব
আতঙ্ক ও চাপ: নেতিবাচক বা ভীতিকর খবর মানুষকে বেশি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত করে।
আত্মবিশ্বাসে আঘাত: সমালোচনা বা ব্যর্থতার স্মৃতি মানুষকে দীর্ঘসময় প্রভাবিত করে।
ডার্ক থটের পুনরাবৃত্তি: ভীতিকর কনটেন্ট বারবার মাথায় ঘুরে, ফলে মানসিক অশান্তি বাড়ে।

২. সামাজিক প্রভাব
পরিবার ও সমাজে একটিমাত্র নেতিবাচক অভিজ্ঞতা সম্পর্ক নষ্ট করে দিতে পারে।
মিডিয়ায় খারাপ খবর বেশি প্রচারিত হওয়ায় মানুষের মধ্যে হতাশা ও ভয় তৈরি হয়।
ডার্ক কনটেন্ট বেশি দেখলে মানুষ অসংবেদনশীল হয়ে পড়ে, অন্যের কষ্টকে হালকা ভাবে নেয়।

৩. ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রভাব

কোরআনে আল্লাহ বলেন:
“নিশ্চয়ই কানের, চোখের এবং অন্তরের ব্যাপারে প্রত্যেকের কাছ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।” (সূরা আল-ইসরা: 36)
অর্থাৎ, মানুষ যা শুনে, দেখে বা নিয়ে কৌতূহলী হয় সব কিছুর হিসাব দিতে হবে। তাই ভয়ংকর ও ক্ষতিকর বিষয়ে অতিরিক্ত আকর্ষণ আসলে মানুষের আত্মাকে কলুষিত করে।

নেগেটিভিটি বায়াস এবং ডার্ক কনটেন্টের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহ—দুটোই মানুষের মানসিক শান্তি ও সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
* এগুলো আমাদের উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, হতাশা এবং অসংবেদনশীলতার দিকে ঠেলে দেয়।
* একই সাথে, ভালো দিকগুলো আড়ালে পড়ে যায়।

তবে সচেতন হলে, মানুষ ইতিবাচক কনটেন্টে বেশি মনোযোগ দিতে পারে এবং নেতিবাচক দিকগুলোকে শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করতে পারে।
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“মুমিনের প্রতিটি অবস্থা তার জন্য কল্যাণকর—সুখে থাকলে শোকর করে, আর দুঃখে পড়লে ধৈর্য ধরে।” (মুসলিম)

এটাই দেখায়, মানুষের জন্য সঠিক পথ হলো নেতিবাচক অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং ইতিবাচকতাকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
Hibat Allah

চন্দ্রগ্রহণ কোরআন ও হাদিস এবং গর্ভবতী নারীর ক্ষতি হয় কি?না। কুরআন ও সহিহ হাদিসে এর কোনো প্রমাণ নেই।রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:...
07/09/2025

চন্দ্রগ্রহণ কোরআন ও হাদিস এবং গর্ভবতী নারীর ক্ষতি হয় কি?

না। কুরআন ও সহিহ হাদিসে এর কোনো প্রমাণ নেই।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন:
“সূর্য ও চাঁদ আল্লাহর নিদর্শন। কারও জন্ম বা মৃত্যুর কারণে এগুলো গ্রাস হয় না।”
(সহিহ বুখারি 1043, সহিহ মুসলিম 901)

গর্ভবতী নারীর জন্য আলাদা কোনো ক্ষতি বা সতর্কতা ইসলামে নেই।
এটা কুসংস্কার, ইসলামের শিক্ষা নয়।

চন্দ্রগ্রহণে কী করবো?

নবী ﷺ আমাদের শিখিয়েছেন:
* সালাতুল-খুসুফ পড়তে (২ রাকাত, প্রতিটি রাকাতে ২টি রুকু)
* দোয়া করতে, ক্ষমা চাইতে, কোরআন তেলাওয়াত করতে
* যিকির, দান-সদকা ও সৎ কাজ বাড়াতে

রাসূল ﷺ বলেছেন:
“যখন গ্রহণ ঘটবে, তখন আল্লাহকে স্মরণ করো, দোয়া করো, নামাজ পড়ো, দান করো।”
(সহিহ বুখারি 1044)

আজকের জন্য বার্তা

চন্দ্রগ্রহণ ভয় পাওয়ার কিছু নয়, এটা আল্লাহর শক্তির নিদর্শন।
আমাদের উচিত তাঁর দিকে ফিরে যাওয়া, বেশি বেশি ইস্তেগফার করা আর নিজের কাজগুলো ঠিক করা।
গর্ভবতী মা-বোনদের জন্যও কোনো বাড়তি বিধিনিষেধ নেই।
শরীয়ত শুধু তাকওয়া আর আল্লাহর স্মরণ চাইছে।

Address

75/1/1 West Agargone Shere Bangla Nagar
Fulbaria
1207

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Hibat Allah posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Hibat Allah:

Share