FKS Book Shop

FKS Book Shop আসসালামু আলাইকুম। আমি চেষ্টা করবো আপনাদের জীবনে কাজে লাগে এমন কিছু উপকারী জিনিস উপস্থাপন করতে।

বিয়ের আগে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরিবারের কাছে ভাইভা পরীক্ষা দেয়া। নিজের পরিবারের কাছে কোনো মাধ্যম দ্বারা বা সরাস...
09/02/2025

বিয়ের আগে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরিবারের কাছে ভাইভা পরীক্ষা দেয়া। নিজের পরিবারের কাছে কোনো মাধ্যম দ্বারা বা সরাসরি নিজে যখন বিয়ের কথা তুলবেন, তখন একটি ভাইভার জন্য প্রস্তুতি নিন। পৃথিবীর সবাইকে বোঝানো সহজ, নিজের পরিবারকে বোঝানো সহজ না। তারা আপনার কথা কেন মেনে নেবে? তারা তো এখনো আপনার চেহারার দিকে তাকালে আপনার ছোট্টবেলার ছবিটি ভেসে ওঠে! যতই বড় হোন না কেন, পরিবারের চোখে আপনি শিশুই থাকবেন।

একটি ভাইভা বোর্ডে যেমন কিছু ডকুমেন্ট দেখাতে হয়, বিয়ের কথা তোলার পর নিজের পরিবারকেও এটা বোঝাতে হবে যে, ‘আই অ্যাম সিরিয়াস।’ পরিবার জানতে চাইবে, ‘এখনো তোর হাতখরচের টাকা আমাদের কাছ থেকে নিতে হয়, বিয়ের আয়োজন কীভাবে করবি, দেন-মোহর কীভাবে দিবি, বিয়ে করে বউকে কী খাওয়াবি?’

আপনি যদি সত্যিই বিয়ে করতে আগ্রহী থাকেন, তাহলে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর অবশ্যই দিতে হবে। টিউশনের জমানো টাকা বা কোনোভাবে উপার্জিত টাকা আপনার হাতে অবশ্যই রেখে তারপর পরিবারের কাছে যেতে হবে। হতে পারে সেটা মোটামুটি একটা অ্যামাউন্টের টাকা, যেটা দেন-মোহরের জন্য বরাদ্দ। ধরুন সেটা ৫০ হাজার বা ১ লাখ। অথবা আপনি এখন এই পরিমাণ আয়-রোজগার করছেন, যা দিয়ে আপনি অন্তত আপনার স্ত্রীকে মোটামুটি চালাতে পারবেন। যদি এটা না পারেন তাহলে শুধু-শুধু ‘বাবা, আমার বিয়ের ব্যবস্থা করুন’ বলে আস্ফালন করে লাভ নেই। (টাকা জমাতে গিয়ে অনেকে ভুলে যান যে, নিসাব পরিমাণ অর্থ জমে গিয়ে এক বছর হাতে থাকলে কিন্তু সে টাকাতেও যাকাত দিতে হয়। এটা খেয়াল রাখতে হবে।)

বই : বিয়ের আগে ফ্যান্টাসি নয়, হোক বাস্তব প্রস্তুতি
লেখক : তানজীল আরেফীন আদনান
খুচরা মূল্য : ১৩০৳ টাকা।

বই পড়ার গতি বাড়াতে চান?বইপ্রেমীদের জন্য দ্রুতগতিতে বই পড়া এক অমূল্য দক্ষতা, যা বই পড়ার অভিজ্ঞতাকে আরো মজার করে তোলে। আরো...
03/02/2025

বই পড়ার গতি বাড়াতে চান?

বইপ্রেমীদের জন্য দ্রুতগতিতে বই পড়া এক অমূল্য দক্ষতা, যা বই পড়ার অভিজ্ঞতাকে আরো মজার করে তোলে। আরো বেশি গল্প উপভোগের সুযোগ করে দেয়, জ্ঞান অর্জনে সাহায্য করে।

পড়ার গতি বাড়াতে কিছু নির্দিষ্ট কৌশল চর্চা করতে পারেন, যাতে পড়ার গতি ও বোঝার ক্ষমতা দুটিই বাড়ে। দ্রুতগতিতে বই পড়ার জন্য এই কৌশলগুলি দেখে নিতে পারেন।

১. প্রিভিউ করা

প্রিভিউ হল পড়ার আগে যেকোনো কিছু একটু চোখ বুলিয়ে তা সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা নেওয়া।

এই কৌশলের মাধ্যমে কোনো কিছুর মূল আইডিয়া ও গঠন সম্পর্কে ধারণা পাবেন। লেখার হেডিং, সাবহেডিং ও হাইলাইট বা বোল্ড করা টেক্সটগুলি পড়ে নিলে আপনি এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি করে নিতে পারবেন। প্রস্তুতিমূলক এই ধাপ আপনার মস্তিষ্ককে প্রস্তুত করে, বিস্তারিত তথ্য বুঝতে ও মনে রাখতে সাহায্য করে।

২. পয়েন্টার বা নির্দেশক ব্যবহার করা

আঙুল, কলম বা ডিজিটাল কার্সরের মত পয়েন্টার বা নির্দেশক ব্যবহার করে চোখকে দিক নির্দেশনা দেওয়া যায়, ফলে মনোযোগ দেওয়া সহজ হয়।

এই কৌশলের কারণে একই সেকশন বা লেখা বার বার পড়তে হয় না, চোখ সামনের দিকে যায়। পয়েন্টার পদ্ধতির মাধ্যমে পড়ার অভিজ্ঞতা হয় মসৃণ ও ধারাবাহিক, চোখ এদিক-সেদিক যায় না, ফলে পড়ার গতি বাড়ে।

৩. চাংকিং বা খণ্ড পদ্ধতি

একটা একটা শব্দ না পড়ে কয়েকটি শব্দ একেবারে পড়ার পদ্ধতিকেই চাংকিং বা খণ্ড পদ্ধতি বলা হয়।

এই পদ্ধতিতে এক নজরে অনেকগুলি তথ্য চোখে পড়ে, ফলে পড়ার গতি বাড়ে। ছোট ছোট খণ্ড দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে এর আকার বাড়ালে, আপনার মস্তিষ্ক একসাথে অনেকগুলি শব্দ বুঝতে পারবে, ও মনে রাখতে পারবে। এতে শুধু পড়ার গতিই বাড়ে না, বরং বোঝার ক্ষমতা বাড়ে, কারণ আলাদা শব্দের তুলনায় কয়েকটি শব্দ বা বাক্যাংশ পড়লে কনটেক্সট ভালভাবে বোঝা যায়।

৪. সাবভোকালাইজেশন কমান

সাবভোকালাইজেশন হল পড়ার সময় মনে মনে প্রতিটা শব্দ উচ্চারণ করা। এটি পড়া বুঝতে অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য করলেও পড়ার গতি কমিয়ে দেয়।

সাবভোকালাইজেশন কমাতে, বিষয়বস্তু ভিজ্যুয়ালাইজ করা কিংবা মনে মনে পড়া ছাড়াই বুঝতে চেষ্টা করুন। নিরবে পড়ার চর্চা করুন ও চোখ বুলিয়ে তথ্য মনে রাখার চর্চা করলে দ্রুত ও কার্যকরভাবে পড়তে পারবেন।

৫. চোখের পরিসর বাড়ান

চোখের পরিসর বাড়ানোর অর্থ হল চোখের প্রান্তের দিকের দৃষ্টিসীমা বাড়ানো, যাতে এক নজরে বেশ কিছু শব্দ চোখে পড়ে।

চোখের প্রান্তের দৃষ্টিসীমা বাড়ানোর অনুশীলন কাজে আসতে পারে। যেমন, মার্কার রাখা অথবা একবারে লেখার বড় একটি অংশ পড়ার সুবিধা দেয়, এমন সফটওয়্যার ব্যবহার করা। এতে পড়ার গতি বাড়বে।

৬. পড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

বই পড়ার ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় জুড়ে পড়া কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বেশি পড়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারেন। যেমন, ৫-১০ মিনিটের জন্য টাইমার সেট করে সেই সময়ের মধ্যে কতখানি পড়তে পারেন তা দেখুন।

নিজের অগ্রগতি ট্র্যাক করা ও ধীরে ধীরে লক্ষ্য বাড়ানোর মাধ্যমে কম সময়ের মধ্যে বেশি পড়তে পারবেন। অগ্রগতি মনিটর করলে লক্ষ্যে স্থির থাকা যায়, ও ক্রমান্বয়ে আরও ভাল করা সম্ভব হয়।

৭. মনোযোগ নষ্ট করে এমন জিনিসপত্র সরিয়ে রাখুন

পড়ার জন্য মনোযোগ নষ্ট করে এমন জিনিসপত্র বিহীন শান্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এমন একটি জায়গা খুঁজে নিন, যেখানে পড়ার সময় কেউ এসে বিরক্ত করবে না।

এছাড়া পড়ার সময় অন্য কিছু করা থেকে বিরত থাকুন। পড়ার দিকে পুরোপুরি মনোযোগ দিলে মনোযোগ ধরে রেখে দ্রুতগতিতে পড়া সম্ভব হয়। সহজেই মনোযোগ আসে এমন কোথাও পড়তে বসলে পড়ার গতি বেড়ে যায়।

৮. দ্রুত পড়তে সাহায্য করে এমন টুল ব্যবহার করুন

চর্চার মাধ্যমে পড়ার গতি বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু অ্যাপ ও সফটওয়্যার আছে। Spreeder, Readsy, ও Reedy এর মত অ্যাপগুলির ‘র‍্যাপিড সিরিয়াল ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন’ ব্যবহার করে দ্রুতগতিতে পড়তে পারেন।

এই টুলগুলি কাঠামোবদ্ধ চর্চা ও ফিডব্যাকের সুযোগ করে দেয়, ফলে পড়ার গতি বাড়ানো সহজ হয়। অনলাইন কোর্স ও টিউটোরিয়াল থেকে মূল্যবান মতামত ও পড়ার গতি বাড়ানোর নানারকম টিপস পেতে পারেন।

৯. নিয়মিত চর্চা করুন

যেকোনো দক্ষতার মতই, দ্রুতগতিতে পড়ার জন্যও দরকার নিয়মিত চর্চা। ওপরে উল্লিখিত কৌশলগুলি চর্চার জন্য প্রতিদিন কিছুটা সময় রাখুন। ধীরে ধীরে কঠিন বিষয়ে পড়া শুরু করুন, ও পড়ার গতি বাড়ান।

নিয়মিত চর্চা কেবল আপনার পড়ার গতিই বাড়াবে না, কী পড়ছেন সেটাও সহজে বোঝা ও মনে রাখার সক্ষমতা বাড়াবে। পড়ার গতি বাড়ানোর ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা অত্যন্ত দরকারি।

১০. ভোকাবুলারি বা শব্দভাণ্ডার বাড়ান

শব্দভাণ্ডার বিস্তৃত থাকলে কম সময়ের মধ্যে সহজে শব্দ চিনতে ও বুঝতে পারবেন, যা দ্রুতগতিতে পড়ার জন্য দরকারি।

নানারকম লেখা, যেমন বুঝতে কষ্টকর লেখা, আপনার ভাষাগত দক্ষতা বাড়াবে। বিভিন্ন শব্দ ও বাক্যাংশের সাথে আপনি যত বেশি পরিচিত হবেন, তার অর্থ বুঝতে তত কম কষ্ট করতে হবে, ফলে পড়ার গতি বাড়বে। ভোকাবুলারি বা শব্দভাণ্ডার বিস্তৃত হলে পড়ার গতি ও বোঝার ক্ষমতা দুই’ই বাড়বে।

১১. পড়ার পরিবেশ গুছিয়ে নিন

মনোযোগ ধরে রাখা ও ক্লান্তি এড়ানোর জন্য বই পড়ার আরামদায়ক পরিবেশ দরকার। ভাল পশ্চার বা অঙ্গভঙ্গি ও আরামদায়ক আসনে বসে বই পড়ুন, যাতে শারীরিকভাবে কোনো অস্বস্তি না হয়। পর্যাপ্ত আলো চোখের স্ট্রেইন কমায়, ও কার্যকরভাবে পড়তে সাহায্য করে। পড়ার জন্য আরামদায়ক পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে দীর্ঘসময় একটানা বই পড়া যায়।

১২. বিরতি নিন

নিয়মিত বিরতি নিলে মানসিক অবসাদ দূর হয়। লম্বা সময় ধরে বই পড়লে ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে ছোট বিরতি মনোযোগ ধরে রাখতে ও বুঝতে সাহায্য করে।

মস্তিষ্ককে বিরতি দেওয়ার মাধ্যমে নতুন ফোকাস ও শক্তি নিয়ে পড়ায় ফিরতে পারবেন। পড়ার সময় নিয়মিত বিরতি নিলে সতর্ক ও সাবধান থাকা সম্ভব হবে, ফলে তাড়াতাড়ি ও কার্যকরভাবে পড়তে পারবেন।

পড়ার সময় এই কৌশলগুলি কাজে লাগালে ধীরে ধীরে আপনার পড়ার গতি বাড়বে, কী পড়ছেন তাও সহজেই বুঝতে পারবেন এবং উপভোগ করতে পারবেন। এই কৌশলগুলির নিয়মিত চর্চা ও ধারাবাহিক প্রয়োগ কার্যকরভাবে পড়ার সক্ষমতা বাড়াবে।

লেখা—সংকলিত

03/02/2025

রমাদানের প্রস্তুতির জন্য কোন বইগুলো পড়া উচিৎ?

বাসায় সুকেসে দামী দামী ডিনার সেট কিনে সাজিয়ে রাখি তাতে যদি দোষ না হয়।তাহলে বই কিনে সাজিয়ে রাখলে দোষ কোথায়?লাখ লাখ টাকার ...
08/10/2024

বাসায় সুকেসে দামী দামী ডিনার সেট কিনে সাজিয়ে রাখি তাতে যদি দোষ না হয়।
তাহলে বই কিনে সাজিয়ে রাখলে দোষ কোথায়?
লাখ লাখ টাকার গয়না কিনতে কার্পণ্য নাই
যত কার্পণ্য বই কিনতে?

আলমারি বা ওয়ার্ডরোবে দামি দামি পোশাক কিনে রাখি।
বসার রুমে আমরা হাজার টাকা দিয়ে কাচের শো পিস কিনে সাজিয়ে রাখি। প্রায় প্রতিটি বসার রুমে কর্নার থাকে যেখানে আমরা কেবলই শো পিস সাজিয়ে রাখি।
এমন আরও অনেক কিছু আমরা ঘরের শোভাবর্ধক হিসেবে সাজিয়ে রাখি হাজার হাজার টাকা ব্যায় করে তা কিন্তু দোষনা প্রশংসনীয়।কিন্তু সব দোষ কেবলই বইয়ের সংগ্রহ করা নিয়ে। এই যে ধরুন
বিয়ের সময় একবার ই পরার জন্য হাজার হাজার টাকার বেনারসি কিনে স্মৃতি হিসেবে রাখলে দোষ নাই।
যত দোষ কেবল বই কেনা আর সংগ্রহে।

কত লাখ লাখ টাকার ঝলমলে শোরুম হচ্ছে পোশাক আর জুতোর কিন্তু বইয়ের বেলায় ই আমাদের যত কার্পণ্য। সারা মার্কেট ঘুরে ও একটা বইয়ের দোকান পাবেন না।

প্রতিসপ্তাহে ফ্যাশন পরিবর্তন হয়, প্রত্যেক মাসে পোশাক কিনি অনেকে। পার্লারে গিয়ে পানির মতো টাকা খরচ
করি শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য। মানসিক সৌন্দর্য বিকাশের কোন গুরুত্ব নাই। তাই তো সমাজের সর্বত্রই চলছে হানাহানি মারামারি।

আজ রাস্তা দিয়ে আসার সময় একটা অদ্ভুত কান্ড দেখি।
ছোট ছোট দুটো শিশু সামনে দিয়ে একে অপরকে মারছে কাছাকাছি আসাতে বুঝলাম তারা ভাই বোন।
একে অপরকে মারছে কোন একজন মহীয়সী নারী বললো মারামারি করোনা।

আমি অনেক টা পিছনে একটু সামনে যাওয়ার পর ছোট মেয়েটাকে দেখি এক নারী থাপ্পড় দিচ্ছে? আমরা সামনে পরায় বললাম দেখেন এভাবে শিশুদের সবার সামনে মারতে নাই।
একটু পর সেই ছোট ভাই দুজন হাঁটছে আর বলছে জানিস আমি তোকে একটা থাপ্পর দিতে পারি।বোন বলছে আমি ও পারি।
এমন সময় ভাই রাস্তা থেকে ইটের ছোট্ট টুকরো নিয়ে বোনকে ছুড়ে মারতে উদ্ধত হলে? আমি বললাম বাবা এভাবে মারামারি করতে হয়না রাস্তার মধ্যে, যাও বাসায় যাও।তোমাদের মধ্যে বড় কে ভাই টা বলল আমি।
আমি বললাম তাহলে ছোট বোনকে মাফ করে দাও ছোট দের ছার দিতে হয় বড় ভাই বোনদের। দুজনেই স্কুলের পোশাক পড়া ছিল। আমাদের গন্তব্য এসে পড়ে আমি বাসায় চলে যাই।

দুটো শিশুর বয়স সাত/আট এর বেশি হবে না কিন্তু তাদের মারমুখী ভুমিকা চেহারা ছিল হিংসাত্মক । এতো ছোট বয়সে এতো কঠিন স্বভাবের হয়েছে আজকালকার শিশুরা।
কেমন যেন কোমলতার ঘাটতি শিশুদের মধ্যে। ছোট থেকেই মানুষ হচ্ছে এরা টম,জেরি,শিবা ডরিমন আর ফ্রী ফায়ার গেইমস খেলার মধ্যে ।এই কার্টুন গুলো শিশুদের কি শেখায় কেবলই মারামারি আর খুঁচাখুচি।

শিশুরা হলো অনুকরণ প্রিয়। যেসব শিশুরা ঘরে নতুন বই আর বইয়ের সান্নিধ্যে মানুষ তারা দেখবেন আর দশটা শিশুর চেয়ে আলাদা।

মানুষ কিন্তু প্রথমে দেখে তারপর শিখে। তাই ঘরে বই দেখে যেসব শিশুরা অভ্যস্ত তারা কম বেশি পড়ুয়া ই হয়ে থাকে।
আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন।

পড়ি বা না পড়ি বই সংগ্রহ করবো।হয়তো আমার দ্বারা কিছু হতে না ও পারে কিন্তু আমার পরবর্তী জেনারেশনের কেউ না কেউ তো উপকৃত হতে পারে।
এই কথা গুলো লিখতে নিয়ে আমার রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা মনে পড়লো খুব।

আল্লাহর রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তায়েফবাসীদের আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছিলেন। তখন তাকে বদদোয়া করতে বললে তিনি বলেছিলেন হয়তো আজ তারা আমাকে বুঝতে পারেনি কিন্তু তাদের পরবর্তী দের মধ্যে কেউ হয়তো বুঝতে পারবে আর ইসলাম কবুল করবে।

গতকাল রাতে ভাবছিলাম আমি এতো কথা শুনার পর ও বই সংগ্রহ করছি। হতে পারে এ বই সব পড়ার তৌফিক
ও আমার হবেনা তবুও কেন সংগ্রহ করবো বা করছি।
আজকের একটা ভিডিও আর লিখতে লিখতে তায়েফ বাসীর কথা মনে হয় দিল টা শান্ত হয়ে গেল আলহামদুলিল্লাহ।

Effort Never Dies..
তাই মনের আনন্দে বই সংগ্রহ করুন পাছে লোকে কিছু বলবেই তাই বলে হতোদ্যেম হওয়া যাবে না।বই হলো নানা রঙের ফুল যা প্রতিনিয়ত সুবাস ছড়াবে আপনার হৃদয় কাননে।

ফাতিমা পারভীন।

16/06/2024

স্ত্রীর উপর স্বামীরও অনস্বীকার্য অধিকার

স্ত্রীর উপর স্বামীরও অনস্বীকার্য অধিকার রয়েছেঃ-
প্রথম অধিকার হল বৈধ কর্মে ও আদেশে স্বামীর আনুগত্য। স্বামী সংসারের দায়িত্বশীল ব্যক্তি। সংসার ও দাম্পত্য বিষয়ে তার আনুগত্য স্ত্রীর জন্য জরুরী। যেমন কোন স্কুল-কলেজের প্রধান শিক্ষক, অফিসের ম্যানেজার বা ডিরেক্টর প্রভৃতির আনুগত্য অন্যান্য সকলকে করতে হয়।
স্ত্রী সাধারণতঃ স্বামীর চেয়ে বয়সে ছোট হয়। মাতৃলয়ে মা-বাপের (বৈধ বিষয়ে) আদেশ যেমন মেনে চলতে ছেলে-মেয়ে বাধ্য, তেমনি শবশুরালয়ে স্বামীর আদেশ ও নির্দেশ মেনে চলাও স্ত্রীর প্রকৃতিগত আচরণ। তাছাড়া ধর্মেও রয়েছে স্বামীর জন্য অতিরিক্ত মর্যাদা। অতএব প্রেম, সম্প্রীতি ও শৃঙ্খলতা বজায় রাখতে বড়কে নেতা মানতেই হয়। প্রত্যেক কোম্পানী ও উদ্যোগে পার্থিব এই নিয়মই অনুসরণীয়। অতএব স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে তা নারী-পরাধীনতা হবে কেন। তবে অন্যায় ও অবৈধ বিষয়ে অবশ্যই স্বামীর আনুগত্য অবৈধ। কারণ যাদেরকে আল্লাহ কর্তৃত্ব দিয়েছেন তাদেরকে অবৈধ ও অন্যায় কর্তৃত্ব দেননি। কেউই তার কর্তৃত্ব ও পদকে অবৈধভাবে ব্যবহার করতে পারে না। তাছাড়া কর্তা হওয়ার অর্থ কেবলমাত্র শাসন চালানোই নয়; বরং দায়িত্বশীলতার বোঝা সুষ্ঠুভাবে বহন করাও কর্তার মহান কর্তব্য।
যে নারী স্বামীর একান্ত অনুগতা ও পতিব্রতা সে নারীর বড় মর্যাদা রয়েছে ইসলামে। প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন,
إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا، دَخَلَتْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ.
‘‘রমণী তার পাঁচ ওয়াক্তের নামায পড়লে, রমযানের রোযা পালন করলে, ইজ্জতের হিফাযত করলে ও স্বামীর তাবেদারী করলে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে।
ত্বাবারানী, ইবনে হিববান, সহীহ, মুসনাদে আহমদ, প্রভৃতি, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩২৫৪নং

خَيْرُ النِّساءِ الَّتِي تَسُرُّهُ إذا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إذا أمَرَ ولا تُخالِفُهُ في نَفْسِها ولا مالِها بِما يَكْرَهُ.
‘‘শ্রেষ্ঠ রমণী সেই, যার প্রতি তার স্বামী দৃকপাত করলে সে তাকে খোশ করে দেয়, কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং তার জীবন ও সম্পদে স্বামীর অপছন্দনীয় বিরুদ্ধাচরণ করে না।’’
[2] (আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ১৮৩৮নং)

স্ত্রীর নিকট স্বামীর মর্যাদা বিরাট। এই মর্যাদার কথা ইসলাম নিজে ঘোষণা করেছে। প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন, ‘‘স্ত্রীর জন্য স্বামী তার জান্নাত অথবা জাহান্নাম।’’
[3] (ইবনে আবী শাইবাহ ,নাসাঈ, তাবারানী, হাকেম , প্রভৃতি, আদাবুয যিফাফ ২৮৫পৃঃ)

لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا.
‘‘যদি আমি কাউকে কারো জন্য সিজদা করতে আদেশ করতাম, তাহলে নারীকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে।’’
[4] (তিরমিযী, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩২৫৫নং)

مِن حَقِّ الزَّوجِ عَلَى زَوجَتِهِ إن سَالَ دَماً وَقَيحاً وَصَديداً فَلَحَسَتهُ بِلِسَانِهَا مَا أَدَّتْ حَقَّهُ.
‘‘স্ত্রীর কাছে স্বামীর এমন অধিকার আছে যে, স্ত্রী যদি স্বামীর দেহের ঘা চেঁটেও থাকে তবুও সে তার যথার্থ হক আদায় করতে পারবে না।’’ (হাকেম, ইবনে হিববান, ইবনে আবী শাইবাহ , সহীহুল জামে ৩১৪৮ নং)
..فَإِنَّ الْمَرْأَةَ لَوْ تَعْلَمُ مَا حَقُّ زَوْجِهَا ، لَمْ تَزَلْ قَائِمَةً مَا حَضَرَ غَدَاؤُهُ وَعَشَاؤُهُ.
‘‘মহিলা যদি নিজ স্বামীর হক (যথার্থরূপে) জানতো, তাহলে তার দুপুর অথবা রাতের খাবার খেয়ে শেষ না করা পর্যন্ত সে (তার পাশে) দাঁড়িয়ে থাকতো।’’ (ত্বাবারানী, সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৫২৫৯নং)
..فَوَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ لاَ تُؤَدِّى الْمَرْأَةُ حَقَّ رَبِّهَا عَزَّ وَجَلَّ حَتَّى تُؤَدِّىَ حَقَّ زَوْجِهَا كُلِّهِ حَتَّى إِنْ لَوْ سَأَلَهَا نَفْسَهَا وَهِىَ عَلَى قَتَبٍ أَعْطَتْهُ أَوْ قَالَ لَمْ تَمْنَعْهُ.
‘‘তাঁর শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ আছে! নারী তার প্রতিপালকের হক ততক্ষণ পর্যন্ত আদায় করতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার স্বামীর হক আদায় করেছে। সওয়ারীর পিঠে থাকলেও যদি স্বামী তার মিলন চায় তবে সে বাধা দিতে পারবে না।’’ (ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ, ইবনে হিববান , আদাবুয যিফাফ ২৮৪পৃঃ)

اثْنَانِ لا تُجَاوِزُ صَلاتُهُمَا رُءُوسَهُمَا : عَبْدٌ آبِقٌ مِنْ مَوَالِيهِ حَتَّى يَرْجِعَ إِلَيْهِمْ ، وَامْرَأَةٌ عَصَتْ زَوْجَهَا حَتَّى تَرْجِعَ.
‘‘দুই ব্যক্তির নামায তাদের মাথা অতিক্রম করে না (কবুল হয় না) ; সেই ক্রীতদাস যে তার প্রভুর নিকট থেকে পলায়ন করেছে, সে তার নিকট ফিরে না আসা পর্যন্ত এবং যে স্ত্রী তার স্বামীর অবাধ্যাচরণ করেছে, সে তার বাধ্য না হওয়া পর্যন্ত (নামায কবুল হয় না।)’’ (ত্বাবারানী, হাকেম , আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ২৮৮নং)

ثَلاَثَةٌ لاَ يُقبَلُ منهُم صَلاَةٌ وَلاَ تَصعُدُ إلَى السَّمَاءِ وَلاَ تَجَاوزُ رُءُوسُهُم : رَجُلٌ أَمَّ قَوماً وَهُم لَه كَارِهُونَ ، وَرَجُلٌ صَلَّى عَلَى جَنَازَةٍ وَلَمْ يُؤمَر ، وَامرَأَةُ دَعَاهَا زَوجُهَا من اللَّيلِ فَأَبَتْ عَلَيه.
‘‘তিন ব্যক্তির নামায কবুল হয় না, আকাশের দিকে উঠে না; মাথার উপরে যায় না; এমন ইমাম যার ইমামতি (অধিকাংশ) লোকে অপছন্দ করে, বিনা আদেশে যে কারো জানাযা পড়ায় এবং রাত্রে সঙ্গমের উদ্দেশ্যে স্বামী ডাকলে যে স্ত্রী তাতে অসম্মত হয়।(আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ৬৫০নং)

إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ أَنْ تَجِيءَ لَعَنَتْهَا الْمَلَائِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ.
‘‘ স্বামী যখন তার স্ত্রীকে নিজ বিছানার দিকে (সঙ্গম করতে) আহ্ববান করে তখন যদি স্ত্রী না আসে, অতঃপর সে তার উপর রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রি কাটায়, তবে সকাল পর্যন্ত ফিরিশ্তাবর্গ তার উপর অভিশাপ করতে থাকেন।’’ অন্য এক বর্ণনায় ‘‘যতক্ষণ পর্যন্ত না স্বামী তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ফিরিশ্তা তার উপর অভিশাপ করতে থাকেন।’’(বুখারী, মুসলিম, আবু দাঊদ, মুসনাদে আহমদ, প্রভৃতি, আদাবুয যিফাফ ২৮৩পৃঃ)

স্বামীর আনুগত্য স্ত্রীর জন্য আল্লাহ ও তদীয় রসূলের আনুগত্য। সুতরাং স্বামীকে সন্তুষ্ট করলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হন। বলাই বাহুল্য যে, অধিকাংশ তালাক ও দ্বিতীয় বিবাহের কারণ হল স্বামীর আহ্বানে স্ত্রীর যথাসময়ে সাড়া না দেওয়া। উক্ত অধিকার পালনেই স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন মজবুত ও মধুর হয়ে গড়ে উঠে, নচেৎ না।
২- স্বামীর মান-মর্যাদা ও চাহিদার খেয়াল রাখা স্ত্রীর জন্য জরুরী। স্বামী বাইরে থেকে এসে যেন অপ্রীতিকর কিছু দেখতে, শুনতে, শুঁকতে বা অনুভব করতে না পারে। পুরুষ বাইরে কর্মব্যস্ততায় জবলে-পুড়ে বাড়িতে এসে যদি স্ত্রীর স্মিতমুখ ও দেহ-সংসারের পারিপাট্য না পেল, তাহলে তার আর সুখ কোথায়? সংসারে তার মত দুর্ভাগা ব্যক্তি আর কেউ নেই, যাকে বাইরে মেহনতে জবলে এসে বাড়িতে স্ত্রীর তাপেও জবলতে হয়।
সে নারী কত আদর্শ পতিভক্ত, যে তার স্বামীকে মিলন দিয়ে খুশী ও সন্তুষ্ট করার জন্য কারো মৃত্যুতেও শোক প্রকাশ করে না। অতি ধৈর্য ও সহনশীলতার সাথে এমনটি করা অনুপম পতিভক্তির পরিচয়। পরন্তু এরূপ করার পশ্চাতে প্রভূত কল্যাণের আশা করা যায়। যেমন ঘটেছিল উম্মে সুলাইম রুমাইসা (বিবি রমিসা) ও তাঁর স্বামী আবু তালহা (রাঃ) এর সাংসারিক জীবনে। তাঁদের একমাত্র সন্তান ব্যাধিগ্রস্ত ছিল। আবু তালহা প্রায় সময় নবী (ﷺ) এর নিকট কাটাতেন। এক দিন সন্ধ্যায় তিনি তাঁর নিকট গেলেন। এদিকে বাড়িতে তাঁর ছেলে মারা গেল। উম্মে সুলাইম সকলকে নিষেধ করলেন, যাতে আবু তালহার নিকট খবর না যায়। তিনি ছেলেটিকে ঘরের এক কোণে ঢেকে রেখে দিলেন। অতঃপর স্বামী আবু তালহা রসূল (ﷺ) এর নিকট থেকে বাড়ি ফিরলে বললেন, ‘আমার বেটা কেমন আছে?’ রুমাইসা বললেন, ‘যখন থেকে ও পীড়িত তখন থেকে যে কষ্ট পাচ্ছিল তার চেয়ে এখন খুব শান্ত। আর আশা করি সে আরাম লাভ করেছে!’
অতঃপর পতিপ্রাণা স্ত্রী স্বামী এবং তাঁর সাথে আসা আরো অন্যান্য মেহমানদের জন্য রাত্রের খাবার পেশ করলেন। সকলে খেয়ে উঠে গেল। আবু তালহা উঠে নিজের বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লেন। (স্ত্রীর কথায় ভাবলেন, ছেলে আরাম পেয়ে ঘুমাচ্ছে।) ওদিকে পতিব্রতা রুমাইসা সব কাজ সেরে উত্তমরূপে সাজ-সজ্জা করলেন, সুগন্ধি মাখলেন। অতঃপর স্বামীর বিছানায় এলেন। স্বামী স্ত্রীর নিকট থেকে সৌন্দর্য, সৌরভ এবং নির্জনতা পেলে উভয়ের মধ্যে যা ঘটে তা তাদের স্বামী-স্ত্রীর মাঝে (মিলন) ঘটল। তারপর রাত্রির শেষ দিকে রুমাইসা স্বামীকে বললেন, ‘হে আবু তালহা! যদি কেউ কাউকে কোন জিনিস ধার স্বরূপ ব্যবহার করতে দেয়, অতঃপর সেই জিনিসের মালিক যদি তা ফেরৎ নেয় তবে ব্যবহারকারীর কি বাধা দেওয়া বা কিছু বলার থাকতে পারে?’ আবু তালহা বললেন, ‘অবশ্যই না।’ স্ত্রী বললেন, ‘তাহলে শুনুন, আল্লাহ আয্যা অজাল্ল আপনাকে যে ছেলে ধার দিয়েছিলেন তা ফেরৎ নিয়েছেন। অতএব আপনি ধৈর্য ধরে নেকীর আশা করুন!’
এ কথায় স্বামী রেগে উঠলেন; বললেন, ‘এতক্ষণ পর্যন্ত কিছু না বলে চুপ থেকে, এত কিছু হওয়ার পর তুমি আমাকে আমার ছেলে মরার খবর দিচ্ছ?!’ অতঃপর তিনি ‘ইন্না লিল্লাহি----’ পড়লেন ও আল্লাহর প্রশংসা করলেন। তারপর আল্লাহর রসূল (ﷺ) এর নিকট ঘটনা খুলে বললে তিনি তাঁকে বললেন, ‘‘তোমাদের উভয়ের ঐ গত রাত্রে আল্লাহ বর্কত দান করুন।’’ সুতরাং ঐ রাত্রেই রুমাইসা তাঁর গর্ভে আবার একটি সন্তান ধারণ করেন।(ত্বায়ালিসী ২০৫৬, বাইহাকী ৪/৬৫-৬৬, ইবনে হিববান ৭২৫নং, মুসনাদে আহমদ ৩/১০৫-১০৬ প্রভৃতি। দেখুন, আহকামুল জানায়েয ২৪-২৬ পৃঃ)

৩- স্বামীর দ্বীন ও ইজ্জতের খেয়াল করা ওয়াজেব। বেপর্দা, টোঁ-টোঁ কোম্পানী হয়ে, পাড়াকুঁদুলী হয়ে, দরজা, জানালা বা ছাদ হতে উঁকি ঝুঁকি মেরে, স্বামীর অবর্তমানে কোন বেগানার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে অথবা কোথাও গেয়ে-এসে নিজের তথা স্বামীর বদনাম করা এবং আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করা মোটেই বৈধ নয়। স্বামী-গৃহে হিফাযতের সাথে থেকে তার মন মতো চলা এক আমানত। এই আমানতের খেয়ানত স্বামীর অবর্তমানে করলে নিশ্চয়ই সে সাধবী নারী নয়।
মহান আল্লাহ বলেন,
﴿فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللهُ﴾
‘‘সুতরাং সাধবী নারীরা অনুগতা এবং পুরুষের অনুপস্থিতিতে লোকচক্ষুর অন্তরালে নিজেদের ইজ্জত রক্ষাকারিণী। আল্লাহর হিফাযতে তারা তা হিফাযত করে।’’(সূরা আন-নিসা (৪) : ৩৪)

স্বামীর নিকট স্বামীর ভয়ে বা তাকে প্রদর্শন করে পর্দাবিবি বা হিফাযতকারিণী সেজে তার অবর্তমানে গোপনে আল্লাহকে ভয় না ক’রে কুটুমবাড়ি, বিয়েবাড়ি প্রভৃতি গিয়ে অথবা শ্বশুরবাড়িতে পর্দানশীন সেজে এবং বাপের বাড়িতে বেপর্দা হয়ে নিজের মন ও খেয়াল-খুশীর তাবেদারী ক’রে থাকলে সে নারী নিশ্চয় বড় ধোঁকাবাজ। প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন,
ثَلَاثَةٌ لَا تَسْأَلْ عَنْهُمْ رَجُلٌ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ وَعَصَى إِمَامَهُ وَمَاتَ عَاصِيًا وَأَمَةٌ أَوْ عَبْدٌ أَبَقَ فَمَاتَ وَامْرَأَةٌ غَابَ عَنْهَا زَوْجُهَا قَدْ كَفَاهَا مُؤْنَةَ الدُّنْيَا فَتَبَرَّجَتْ بَعْدَهُ فَلَا تَسْأَلْ عَنْهُمْ.
‘‘তিন ব্যক্তি সম্পর্কে কোন প্রশ্নই করো না; যে জামাআত ত্যাগ করে ইমামের অবাধ্য হয়ে মারা যায়, যে ক্রীতদাস বা দাসী প্রভু থেকে পলায়ন করে মারা যায়, এবং সেই নারী যার স্বামী অনুপস্থিত থাকলে---তার সাংসারিক সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস বন্দোবস্ত করে দেওয়া সত্ত্বেও---তার অনুপস্থিতিতে বেপর্দায় বাইরে যায়।’’(আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ৫৪২নং)

শ্রেষ্ঠা রমণী তো সেই যে কোন পরপুরুষকে নিজের মুখ দেখায় না এবং বেগানার মুখ নিজেও দেখে না। স্বামী বাড়িতে না থাকলে গান-বাজনা শুনে নয়; বরং কুরআন ও দ্বীনী বই-পুস্তক পড়ে নিজের মনকে ফ্রী করে। কারণ গান শুনে মন আরো খারাপ হয়। স্বামীকে কাছে পেতে ইচ্ছা হয়। যৌন ক্ষুধা বেড়ে উঠে। তাইতো সলফগণ বলেন, ‘গান হল ব্যভিচারের মন্ত্র।’(তামবীহাতুল মু’মিনাত ১৬২পৃঃ)

পক্ষান্তরে-
﴿الَّذِينَ آمَنُوا وَتَطْمَئِنُّ قُلُوبُهُمْ بِذِكْرِ اللهِ﴾
‘‘আল্লাহর যিকরেই মুমিনদের চিত্ত প্রশান্ত হয়।’’(সূরা আর র‘দ (১৩) : ২৮)

৪- স্বামীর বৈয়াক্তিক ও সামাজিক জীবনের প্রতিও বিশেষ খেয়াল রাখা স্ত্রীর কর্তব্য। সুতরাং তার ব্যক্তিগত কাজ-কারবার, পড়াশুনা প্রভৃতিতে ডিস্টার্ব করা বা বাধা দেওয়া হিতাকাঙিক্ষনী স্ত্রীর অভ্যাস হতে পারে না। স্বামীর নিকট এমন বিষয়, বস্ত্ত বা বিলাস-সামগ্রী স্ত্রী চাইবে না, যার ফলে সে বাধ্য হয়ে অবৈধ অর্থোপার্জনের পথ অবলম্বন করে ফেলে। হারাম উপার্জন ও অসৎ ব্যবসায় মোটেই তার সহায়তা করবে না। সাধবী স্ত্রী তো সেই; যে তার স্বামীকে ব্যবসায় বের হলে এই বলে সলফের স্ত্রীর মত অসিয়ত করে, ‘‘আল্লাহকে ভয় করবেন, হারাম উপার্জন থেকে দূরে থাকবেন। কারণ, আমরা না খেয়ে ক্ষুধায় ধৈর্য ধরতে পারব; কিন্তু জাহান্নামে ধৈর্য ধরতে পারব না!’’ (আল মারআতুল মুসলিমাহ, ওয়াহ্বী সুলাইমান আল-আলবানী ১৬৯পৃঃ, সিফাতুল মু’মিনাতিস সা-দিক্বাহ, নাওয়াল বিন্ত্ আব্দুল্লাহ ৫০-৫১পৃঃ)

‘‘--পতি যদি হয় অন্ধ হে সতী বেঁধোনা নয়নে আবরণ,
অন্ধ পতিরে আঁখি দেয় যেন তোমার সত্য আচরণ।’’
৫- স্বামীর ঘর সংসার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সাজিয়ে গুছিয়ে পরিপাটি করে রাখা স্ত্রীর কর্তব্য। স্বামীর যাবতীয় খিদমত করা, ছেলে-মেয়েদেরকে পরিষ্কার ও সভ্য করে রাখাও তার দায়িত্ব। সর্বকাজ নিজের হাতে করাই উত্তম। এতে তার স্বাস্থ্য ভালো এবং দেহে স্ফূর্তি থাকবে। একান্ত চাপ ও প্রয়োজন না হলে দাসী ব্যবহার আলসে মেয়ের কাজ। সাহাবী মহিলাগণ সবহস্তে ক্ষেতেরও কাজ করতেন। একদা হযরত ফাতেমা (রাঃ) কাজের চাপের এবং নিজের মেহনত ও কষ্টের কথা আব্বার নিকট উল্লেখ ক’রে কোন খাদেম চাইলে প্রিয় নবী (ﷺ) তাঁকে সবহস্তে কর্ম সম্পাদন করতে নির্দেশ দিলেন এবং অলসতা কাটিয়ে উঠার ঔষধও বলে দিলেন; বললেন, ‘‘যখন তোমরা শয়ন করবে তখন ৩৪ বার ‘আল্লা-হু আকবার’ ৩৩ বার ‘সুবহা-নাল্লা-হ’ এবং ৩৩ বার ‘আলহামদু লিল্লা-হ’ পড়বে। এটা তোমাদের জন্য খাদেম থেকেও উত্তম হবে!’’ (মুসলিম ২৭২৭নং)

তাই তো একজন বাদশাহর কন্যা হয়েও তিনি সবহস্তে চাকি ঘুরিয়ে আটা পিষতেন। তাঁর হাতে ফোস্কা পড়ে যেত, তবুও আব্বার কথামত কোন দাস-দাসী ব্যবহার না করেই সংসার করেছেন।
‘‘আত্মাহারা না হইয়া সৌভাগ্য সোহাগে
পরন্তু যে করে কাম সবকরে যতনে,
পরিজন প্রীতি হেতু প্রেম অনুরাগে
আদর্শ রমণী সেই যথার্থ ভূবনে।’’
পক্ষান্তরে দাস-দাসী ব্যবহারে বিপত্তি আছে। এদের মাধ্যমে ঘরের রহস্য বাইরে যায়, বাড়ির কোন সদস্যের সাথে অবৈধ প্রণয় গড়ে উঠতে পারে। তাদের ব্যবহার, চরিত্র, বিশ্বাস প্রভৃতি শিশুদের মনে প্রভাব বিস্তার করে ইত্যাদি। বিলাসের আতিশয্যে নিজের স্বামী ও সন্তানের সেবাযতন ত্যাগ করে সব কিছু দাস-দাসীর উপর নির্ভর করলে সংসারে ইচ্ছাসুখ মিলে না।
‘‘বিলাসিনী যে রমণী গৃহস্থালি কার্য
সম্পাদন আপন ভাবিয়া না করে,
হউক তাহার পতি রাজ-অধিরাজ
অধমা সে নারী এ সংসার ভিতরে।’’
৬- স্বামী তার স্ত্রীকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে থাকে। যথাসাধ্য উত্তম আহার-বসনের ব্যবস্থা করে থাকে। তবুও ত্রুটি স্বাভাবিক। কিন্তু সামান্য ত্রুটি দেখে সমস্ত উপকার, উপহার ও প্রীতি-ভালোবাসাকে ভুলে যাওয়া নারীর সহজাত প্রকৃতি। কিছু শিক্ষা বা শাসনের কথা বললে মনে করে, স্বামী তাকে কোনদিন ভালোবাসে না। স্বামীর অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তার মনে নিদারুণ ব্যথা দিয়ে থাকে। এটি এমন একটি কর্ম যার জন্যও মেয়েরা পুরুষদের চেয়ে অধিক সংখ্যায় জাহান্নামবাসিনী হবে।(বুখারী, মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ ১৯ নং)

প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন,
لاَ يَنْظُرُ اللَّهُ إِلَى امْرَأَةٍ لاَ تَشْكُرُ لِزَوْجِهَا وَهِىَ لاَ تَسْتَغْنِى عَنْهُ.
‘‘আল্লাহ সেই রমণীর দিকে তাকিয়েও দেখেন না (দেখবেন না) যে তার স্বামীর কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে না, অথচ সে স্বামীর মুখাপেক্ষিনী।(নাসাঈ, আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ২৮৯নং)

আসলেই ‘মেয়ে লোকের এমনি সবভাব, হাজার দিলেও যায় না অভাব।’ সে দেখে না যে, তার স্বামী তার জন্য কত কি করছে। সে শুধু তাই দেখে, যা তার জন্য করা হয় না।
৭- স্ত্রী হয় সংসারের রানী। স্বামীর ধন-সম্পদ সর্বসংসার হয় তার রাজত্ব এবং স্বামীর আমানতও। তাই তার যথার্থ হিফাযত করা এবং যথাস্থানে সঠিকভাবে তা ব্যয় করা স্ত্রীর কর্তব্য। অন্যায়ভাবে গোপনে ব্যয় করা, তার বিনা অনুমতিতে দান করা বা আত্মীয়-স্বজনকে উপঢৌকন দেওয়া আমানতের খেয়ানত। এমন স্ত্রী পুণ্যময়ী নয়; বরং খেয়ানত-কারিণী। অবশ্য স্বামী ব্যয়কুণ্ঠ কৃপণ হলে এবং স্ত্রী ও সন্তানের জন্য যথার্থ খরচাদি না দিলে, স্ত্রী গোপনে শুধু ততটুকুই নিতে পারবে যতটুকু নিলে তার ও তার সন্তানের প্রয়োজন মিটানোর জন্য যথেষ্ট হবে। এর বেশী নিলে অবৈধ মাল নেওয়া হবে।(ইরওয়াউল গালীল ২৬৪৬নং,ফাতাওয়াল মারআহ ৯২পৃঃ)
অবশ্য স্বামী দানশীল হলে এবং দানের জন্য সাধারণ অনুমতি থাকলে স্ত্রী যদি তার অনুপস্থিতিতে দান করে, তাহলে উভয়েই সমান সওয়াবের অধিকারী হবে।(বুখারী, মুসলিম, আবু দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, প্রভৃতি, সহীহ আত্তারগীব অত্তারহীব, আল্লামা আলবানী ৯২৬-৯৩০নং)

৮- স্বামীর বিনা অনুমতিতে বাইরে, মার্কেট, বিয়েবাড়ি, মড়াবাড়ি ইত্যাদি না যাওয়া পতিভক্তির পরিচয়। এমনকি মসজিদে (ইমামের পশ্চাতে মহিলা জামাআতে) নামায পড়তে গেলেও স্বামীর অনুমতি চাই।(জামিউ আহকামিন নিসা, ১/২৭৫-২৭৬)

এই পরাধীনতায় আছে মুক্তির পরম স্বাদ। মাতৃক্রোড় উপেক্ষা করে ঝড়-বৃষ্টি, শীত-গ্রীষেম যেমন শিশু নিজেকে বিপদে ফেলে, তা-এর কোল ছেড়ে ডিম যেমন ঘোলা হয়ে যায়, ঠিক তেমনি নারীও স্বামীর এই স্নেহ-সীমাকে উল্লংঘন করে নিজের দ্বীন ও দুনিয়া নষ্ট করে।
রুচিতে যা রুচে তাই যদি খাওয়া পরা, বলা, চলা হয় এবং রুচিতে যা বাধে তাই যদি না খাওয়া, না পরা, না বলা, না চলা হয়, তাহলে নৈতিকতাই বা কি? মানবিকতাই বা কি? তাও মানুষের রুচির ব্যাপার নয় কি? তাহলে থাকল আর কি? বন্ধন, শৃঙ্খল ও সীমাবদ্ধতা ছাড়া কি কোন নৈতিকতা, কোন শান্তি ও সুখ আছে?
পক্ষান্তরে ইসলামী নৈতিকতা ও গন্ডী-সীমার ভিতরে থেকেও নারী কর্ম, চাকুরী ও উপার্জন করতে পারে। যেখানে দ্বীনের কোন বাধা নেই, নারীত্ব ও সতীত্বের কোন আঁচড় নেই, সেখানে স্বামীরও কোন বাধা থাকতে পারে না। মহিলা কেবল মহিলা কর্মক্ষেত্রে, শিশু ও মহিলা শিক্ষাঙ্গনে অফিস বা শিক্ষকতার কাজ, বাড়িতে বসে শিশু ও মহিলা পোষাকের দর্জিকাজ অথবা কোন হাতের শিল্পকাজ বা ম্যাকানিকেল কাজ দিব্যি করতে পারে; যাতে পরপুরুষের সাথে কোন সংস্রবই নেই। অন্যথা পর পুরুষের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে অবাধভাবে মিলেমিশে কর্ম করা নারী স্বাধীনতা নয়, বরং নারীর হীনতা এবং স্বামীর দ্বীনতা।(ফাতাওয়াল মারআহ ১০৩পৃঃ, তামবীহাতুল মু’মিনাত ১৩১-১৩৩পৃঃ)

অবশ্য যারা স্বামীর পরম সুখ ও ভালোবাসা পেয়ে ধন্য হয়েছে তারা কোন দিন ঐ সকল চাকুরী মরীচিকার পশ্চাতে ছুটে না। যেখানে জলভ্রম প্রদর্শন করে নারীকে পুরুষদের কর্মক্ষেত্রে আকর্ষণ করে এনে তারা নারীকেই জলখাবার বানিয়ে থাকে। ঘরের ও বাইরের উভয় কাজ উভয়কেই করতে হলে সুখ কোথায়? এই অবস্থায় সন্তান-সন্ততির লালন পালন ও তরবিয়ত কোত্থেকে কেমন করে হবে?
বলাই বাহুল্য যে, ধর্ম ও নৈতিকতাকে কবর দিয়ে উচ্চ শিক্ষিতা হয়ে, প্রতিষ্ঠিতা হয়ে, চাকুরী করে মোটা টাকা উপার্জন করে, স্বামীর তোয়াক্কা না করে, পার্থিব সুখ লুটা ভোগবাদী, বস্ত্তবাদী এবং পরকালে অবিশ্বাসিনীদের লক্ষ্য। পক্ষান্তরে ধর্ম ও নীতি-নৈতিকতা বজায় রেখে পার্থিব বিষয়াদি পরকালে বিশ্বাসিনী মুসলিম নারীর উপলক্ষ্য মাত্র। মুসলমানের মূল লক্ষ্য হল পরকাল। মুসলিম দু’দিনের সুখস্বপ্নে সন্তুষ্ট নয়। সে চায় চিরস্থায়ী উপভোগ্য অনন্ত সুখ।
এ জন্যই প্রিয় নবী (ﷺ) দুআ করতেন,
(وَلاَ تَجْعَل الدُّنْيَا أَكْبَرَ هَمِّنَا وَلاَ مَبْلَغَ عِلْمِنَا)
অর্থাৎ, দুনিয়াকে আমাদের বৃহত্তম চিন্তার বিষয় এবং আমাদের জ্ঞানের শেষ সীমা (মূল লক্ষ্য) করে দিও না।(তিরমিযী ৩৪৯৭নং)

৯- স্বামীর অনুমতি না হলে তার উপস্থিতিতে স্ত্রী নফল রোযা রাখতে পারে না। যেহেতু তার সাংসারিক কর্মে বা যৌন-সুখে বাধা পড়লে আল্লাহ সে রোযায় রাযী নন।(বুখারী, মুসলিম, সহীহ আত্তারগীব অত্তারহীব ৯২৭নং)

১০- কোন বিষয়ে স্বামী রাগান্বিত হলে স্ত্রী বিনীতা হয়ে নীরব থাকবে। নচেৎ ইঁটের বদলে পাটকেল ছুঁড়লে আগুনে পেট্রল পড়বে। যে সোহাগ করে, তার শাসন করার অধিকার আছে। আর এ শাসন স্ত্রী ঘাড় পেতে মেনে নিতে বাধ্য হবে। ভুল হলে ক্ষমা চাইবে। যেহেতু স্বামী বয়সে ও মর্যাদায় বড়। ক্ষমা প্রার্থনায় অপমান নয়; বরং মানুষের মান বর্ধমান হয়; ইহকালে এবং পরকালেও। তাছাড়া অহংকার ও ঔদ্ধত্যের সাথে ‘বেশ করেছি, অত পারি না’ ইত্যাদি বলে অনমনীয়তা প্রকাশ সতী নারীর ধর্ম নয়। সুতরাং স্বামীর রাগের আগুনকে অহংকার ও ঔদ্ধত্যের পেট্রল দ্বারা নয় বরং বিনয়ের পানি দ্বারা নির্বাপিত করা উচিৎ।
প্রিয় নবী (ﷺ) বলেন,
وَنسَاؤُكُم من أَهْل الجَنَّة الوَدُود العَؤودُ عَلَى زَوجهَا الَّتي إذَا غَضِبَ جَاءت حَتَّى تَضَعَ يَدَهَا في يَده ثُمَّ تَقُولُ : لاَ أَذُوقُ غَمضاً حَتى تَرضَى.
‘‘তোমাদের স্ত্রীরাও জান্নাতী হবে; যে স্ত্রী অধিক প্রণয়িণী, সন্তানদাত্রী, বার-বার ভুল করে বার-বার স্বামীর নিকট আত্মসমর্পণকারিণী, যার স্বামী রাগ করলে সে তার নিকট এসে তার হাতে হাত রেখে বলে, আপনি রাজি (ঠান্ডা) না হওয়া পর্যন্ত আমি ঘুমাবই না।’’(আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ২৮৭ নং)

নারী হয়ে একজন পুরুষের মন জয় করতে না পারা বড় আশ্চর্যের ব্যাপার!
‘‘তুফানে হাল ধরতে নারে সেইবা কেমন নেয়ে,
আর মরদের মন যোগাতে নারে সেই বা কেমন মেয়ে?!’’
খেয়াল রাখার বিষয় যে, স্বামী-স্ত্রীর মাঝে বিচ্ছেদ ঘটাতে শয়তান বড় তৎপর। সমুদ্রের উপর নিজ সিংহাসন পেতে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে তার ‘স্পেশাল ফোর্স’ পাঠিয়ে দেয়। সবচেয়ে যে বড় ফিৎনা সৃষ্টি করতে পারে সেই হয় তার অধিক নৈকট্যপ্রাপ্ত। কে কি করেছে তার হিসাব নেয় ইবলীস। প্রত্যেকে এসে বলে, ‘আমি অমুক করেছি, আমি অমুক করেছি। (চুরি, ব্যভিচার, হত্যা প্রভৃতি সংঘটন করেছি)। কিন্তু ইবলীস বলে, ‘কিছুই করনি তুমি!’ অতঃপর যখন একজন বলে ‘আমি স্বামী-স্ত্রীর মাঝে রাগারাগি সৃষ্টি করে উভয়ের মাঝে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে ছেড়েছি’ তখন শয়তান উঠে এসে তাকে আলিঙ্গন করে বলে, ‘হ্যাঁ, তুমিই কাজের ব্যাটা কাজ করেছ! (মুসলিম ২৮১৩নং)

সুতরাং রাগের সময় শয়তানকে সহায়তা ও খোশ করা অবশ্যই কোন মুসলিম দম্পতির কাজ নয়।
১১- পতিপ্রাণা নারীর সদা চিন্তা স্বামীর মনোসুখ, তার পরম আনন্দ ও খুশী। যেহেতু তার আনন্দেই স্ত্রীর পরমানন্দ। স্বামীর আনন্দ না হলে নিজের আনন্দ কল্পনাই করতে পারে না স্ত্রী। বাইরে থেকে রোদে-গরমে এলে সবতঃস্ফূর্তভাবে তার সামনে পানি পেশ করা, হাওয়া করে দেওয়া ইত্যাদি সতীর ধর্ম। তাছাড়া স্বামী সালাম দিয়ে যখন বাড়ি প্রবেশ করে, তখন উত্তর দিয়ে হাসিমাখা ওষ্ঠাধরের স্পর্শ উপহার যদি উভয়ে বিনিময় করে, তবে এর মত দাম্পত্য সুখ আর আছে কোথায়?
‘‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে
রমণী সুন্দর হয় সতীত্ব রক্ষণে।’’
এমনিতেই স্ত্রী স্বামীর জন্য হয়ে থাকবে ফুটন্ত গোলাপ। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায়, অঙ্গসজ্জা এবং বেশভূষায় স্বামীর চক্ষুশীতল করবে। সৌন্দর্য ও সৌরভে ভরা গোলাপের দিকে একবার তাকিয়ে যেমন মন-প্রাণ আকৃষ্যমাণ হয়, ঠিক তেমনি হবে স্বামীর মন তার স্ত্রীকে দেখে। স্বামী-স্ত্রীর এ পরম সুখ থাকলে, কোন নারী সংগঠন বা নারী-স্বাধীনতা ও নারী-মুক্তির আন্দোলনের প্রয়োজনই নেই।
নারী-পুরুষের মধুর সহাবস্থান ও মধুর মিলনে পরম সুখ, এই শান্তিই পরম শান্তি। কিন্তু এমন স্বর্গীয় সংসার আছে কয়টা?
‘‘কোথায় গেলে তারে পাই?
যার লাগি এ বিশাল বিশেব নাই মোর কোন শান্তি নাই।’’
বলাই বাহুল্য যে, যে স্বামী তার স্ত্রীর প্রগাঢ় ভালোবাসা পায়, বিপদে সান্ত্বনা, কষ্টে সেবাযত্ন, যৌবনে পরম মিলন পায়, রাগ-অনুরাগ বা অভিমান করলে যাকে তার স্ত্রী মানিয়ে নেয় এমন স্বামীর মত সৌভাগ্যবান স্বামী আর কে হতে পারে? পিতা-মাতার দুআ ও স্ত্রীর প্রেমেই তো রয়েছে স্বামীর প্রকৃত পৌরুষ। এমন নারী না হলে পুরুষের জীবন বৃথা।
‘‘প্রেমের প্রতিমা স্নেহের সাগর
করুণা-নির্ঝর দয়ার নদী,
হত মরুময় সব চরাচর
জগতে নারী না থাকিত যদি।’’
স্বামীকে সন্তুষ্ট ও রাজী করবার জন্য ইসলাম এক প্রকার মিথ্যা বলাকেও স্ত্রীর জন্য বৈধ করেছে। স্ত্রীর মনে যতটুকু পরিমাণ স্বামীর ভালোবাসা বর্তমান, স্বামীকে অধিক খুশী করার জন্য তার দ্বিগুণ ভালোবাসা মুখে প্রকাশ করা, বরং স্বামীর কোন কুসবভাবের কারণে ভালোবাসায় আবিলতা এলেও তা গোপন করে স্বামীকে যদি তার প্রাণঢালা ভালোবাসার কথা মিথ্যা ক’রে ব’লে জানায় তাহলে তা দোষের নয়। তবে তার কর্ম যেন এ কথার অসত্যতা প্রমাণ না করে।
খুব কমসংখ্যক পরিবারই এমন আছে যাদের দাম্পত্য অনাবিল প্রেমের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। নচেৎ অধিকাংশ সংসারই তাসের ঘর। প্রায় সব সংসারের গাড়িই চলে টানে, নচেৎ ঠেলায়। বেশীর ভাগ দাম্পত্যই সন্তান, ইসলাম অথবা সামাজিক, নৈতিক নতুবা কোন অন্য চাপের ফলে টিঁকে থাকতে বাধ্য হয়। সুতরাং এ ক্ষেত্রে যদি স্বামী-স্ত্রী উভয়ে উভয়কে মোটেই ভালো না বাসলেও যদি ‘খুব ভালোবাসি’ বলে এক অপরকে রাজী করে সংসার টিকিয়ে রাখতে চায়, তবে তা মিথ্যা নয়।(ফিকহুস সুন্নাহ ২/১৮৫)

তবে হ্যাঁ, এ মিথ্যা যেন অন্য উদ্দেশ্যে, ধোঁকা প্রদান বা অধিকার নষ্ট করার উদ্দেশ্যে স্বামীকে বলা না হয়। নচেৎ সে মিথ্যা প্রমাণিত হলে সামান্য প্রেমেরও শীশমহলটুকু ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।
১২- স্বামীর সংসারে তার পিতামাতা ও বোনদের সাথে সদ্ব্যবহার করা স্ত্রীর অন্যতম কর্তব্য। স্বামীর মা-বাপ ও বোনকে নিজের মা-বাপ ও বোন ধারণা করে সংসারের প্রত্যেক কাজ তাদের পরামর্শ নিয়ে করা, যথাসাধ্য তাদের খিদমত করা এবং তাদের (বৈধ) আদেশ-নিষেধ মেনে চলা পুণ্যময়ী সাধবী নারীর কর্তব্য।
১৩- নিজের এবং অনুরূপ স্বামীর সন্তান-সন্ততির লালন-পালন, তরবিয়ত ও শিক্ষা দেওয়া স্ত্রীর শিরোধার্য কর্তব্য। এর জন্য তাকে ধৈর্য, স্থৈর্য, করুণা ও স্নেহের পথ অবলম্বন করা একান্ত উচিৎ। বিশেষ করে স্বামীর সামনে সন্তানের উপর রাগ না ঝাড়া, গালিমন্দ, বদ্দুআ ও মারধর না করা স্ত্রীর আদবের পরিচয়। তাছাড়া বদ্দুআ করা হারাম। আর তা কবুল হলে নিজের ছেলেরই ক্ষতি।(আবু দাঊদ, আল মারআতুল মুসলিমাহ ১৭৬পৃঃ)

স্ত্রীর উচিৎ, সন্তান-সন্ততিকে পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা, সচ্চরিত্রতা, বীরত্ব, সংযমশীলতা, বিষয়-বিতৃষ্ণা, দ্বীন-প্রেম, ন্যায়-নিষ্ঠা, আল্লাহ-ভীরুতা, প্রভৃতি মহৎগুণের উপর প্রতিপালিত ও প্রতিষ্ঠিত করা। কারণ,
মায়ের হাতেই গড়বে মানুষ মা যদি সে সত্য হয়,
মা-ই তো এ জাহানে প্রকৃত বিশ্ববিদ্যালয়।

এই মা-ই তো পরমা, সত্তমা। এই মায়ের পদতলেই জান্নাতের আশা করা যায়। এই মা তার সন্তানকে এমন মানুষ করে তুলবে; যাতে তারা বাঁচবে ইসলাম নিয়ে ও ইসলামের জন্য এবং মরবে তো তারই পথে। যাদের মাধ্যমে সমাজে সাধিত হবে প্রভূত কল্যাণ।

এরা হবে তারাই, যাদেরকে নিয়ে রসূল (ﷺ) কিয়ামতে গর্ব করবেন।

উৎসঃ Hadithbd . com => আদর্শ বিবাহ ও দাম্পত্য=> বিবাহ ও দাম্পত্য বিষয়াবলী =>আবদুল হামীদ ফাইযী

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when FKS Book Shop posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category