15/12/2024
আজ থেকে ৪ বছর আগে আমি প্রথম "মা” হই।
তখন আমার ১৭ বছর ছিল। সাথে চলছিলো করোনা ভাইরাস এর সময়। দেশ থেকে কাউকে আমার সেবা করার জন্য আনা সম্ভব হয়নি।
অনেকটা কঠিন ছিল সব কিছু। প্রেগন্যান্সিতে ডায়াবেটিস ধরা পরে যা নিয়ে কোনো ধারণা ছিল না। একটু ঘাবড়ে যাই। কিন্তু কেউ নেই আমাকে বুঝানোর জন্য। তাই নিজে নিজেই google এ ঘাটাঘাটি করে খাবার বের করতাম কোনটা খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
এরপর আরেক চ্যালেঞ্জ যে ডেলিভারির সময় কে পাশে থাকবে। কেউ ছিল না 😔। হাজবেন্ড এখানে ডেলিভারির রুম এ ঢুকতে পারবে না। তাই এই সময় টাও একাই পার করলাম। বাচ্চা হওয়ার ১ দিন পর কাউকে দেখতে পাই নিজের পরিবারের।
আরেক চ্যালেঞ্জ সামনে দাঁড়ায়। বাচ্চাকে খাওয়ানো। কিছুই জানতাম না কিভাবে কি হয়। এর মধ্যেই অনেক অসুস্থ হয়ে যাই। ব্লাড ইনফেকশন এর কারণে 5 দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছে।৩ দিন তো বাচ্চাকে রাখতে দেয়নি করণার কারণে।
আলহমদুলিল্লাহ অনেক অনেক challenges দেখেছি ছোট বয়স থেকেই। জীবন কারো জন্য অনেক সহজ কারো জন্য অনেক কঠিন। কিছু সঠিক মানুষ পাশে থাকলে কঠিন সময় সহজ হয়ে যায়।
একমাত্র আমার শ্বশুর ছিল বলেই প্রথম বার পোস্ট ডেলিভারির সময় সহজ হয়েছিল যেটা দ্বিতীয় বার অনেকগুণ বেশি কষ্টের ছিল আমার জন্য।
আমার কষ্ট কেউ কেউ না বুঝেই আমাকে নিয়ে উপহাস করেছে। কটু কথা বলেছে। গীবত গেয়েছে। আমি সবই বুঝতাম কিন্তু সময় খারাপ ছিল কাউকে কিছু বলিনি।
আজকে একটা কথা বলতে চাই, আল্লাহ আমার ধর্যের এতো ভাবে পরীক্ষা করেছেন বলেই এখন অনেক বড় বড় বিপদে আমি ঘাবড়ে যাই না। একা ২ বাচ্চা নিয়ে চলার সাহস করি ভয় পাই না। অনেক কিছুই একসাথে সামাল দিতে পারি কোনো সমস্যা হয় না।
সময়ের সাথে সাথে আমি অনেক ম্যাচিউর হয়েছি তাই কারো কথা গায়ে লাগিয়ে পুরাদিন খারাপ করি না। মানুষের কাছ থেকে চাওয়া অনেক অনেক কমিয়ে দিয়েছি। সময় সবার একরকম থাকবে না। কারো খারাপ সময়ে কাউকে নিয়ে উপহাস করবেন না। কারণ, দুঃখী মানুষের হায় খুব দ্রুত লেগে যায়।