Babor

Babor পাঠকের চাহিদা পূরণে একটি বিশ্বস্ত নাম

যেকোন তাফসীরের গভীর থেকে যদি গভীরে যেতে চান, তাহলে এই বইটি আপনার জন্য হবে অন্যতম এক পাথেয়।কারণ ১৬ টি দিক থেকে প্রতিটি সূ...
23/03/2025

যেকোন তাফসীরের গভীর থেকে যদি গভীরে যেতে চান, তাহলে এই বইটি আপনার জন্য হবে অন্যতম এক পাথেয়।

কারণ ১৬ টি দিক থেকে প্রতিটি সূরাকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে এখানে। কুরআনকে পূর্ণরূপে হৃদয়ঙ্গম করতে চাইলে আজহারি হুজুরের এই বইটি সংগ্রহ করুন এখনই।

এক নজরে কুরআন
by ড. মিজানুর রহমান আজহারি
TK. 1,590
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন: https://rkmri.co/AoEeIIoIMlEe/

কোন কোন নেতৃত্বগুণের বলে নবিজি (সা.) পৃথিবীর সেরা নেতা হয়েছিলেন?বলার অপেক্ষা রাখে না,মুহাম্মাদ (সা.) পৃথিবীর সবচেয়ে সফলত...
24/09/2024

কোন কোন নেতৃত্বগুণের বলে নবিজি (সা.) পৃথিবীর সেরা নেতা হয়েছিলেন?

বলার অপেক্ষা রাখে না,মুহাম্মাদ (সা.) পৃথিবীর সবচেয়ে সফলতম বিপ্লবী লিডার! তিনি শুধু তত্ত্ব ও দর্শন দিয়েই ইতি টানেননি; বরং সে তত্ত্ব ও দর্শনকে পৃথিবীর বুকে বাস্তবায়নও করেছেন সফলভাবে।

একটি বিশৃঙ্খল জনপদকে মাত্র ২৩ বছরের ব্যবধানে সুশিক্ষিত, সুশৃঙ্খল শক্তি হিসেবে পৃথিবীর বুকে পরিচয় করিয়েছিলেন। একটি গোত্রশাসিত ভূখণ্ডকে বানিয়েছিলেন বিশ্বরাজনীতির কেন্দ্রস্থল।
তিনি এমন একদল জনশক্তি তৈরি করেছিলেন, যারা পৃথিবীর যে প্রান্তেই গিয়েছে, বিজয় তাদের কদমে এসে চুমু খেয়েছে!

এ ছাড়াও তিনি ছিলেন সেরা পরিবারপ্রধান, সফল ব্যবসায়ী, অতুলনীয় শিক্ষক, সংস্কারক ও আধ্যাত্মিক নেতা।

নবিজির নেতৃত্বগুণ নিয়ে গবেষণা করে পশ্চিমা বুদ্ধিজীবী তাঁকে অবহিত করেছেন, ‘দ্যা আল্টিমেট লিডার’ নামে।

নবিজির সেসব গুণাবলি অর্জন করলে আপনিও হতে পারেন তাঁর মতো সেরা লিডার। নিজের পারিবারিক, ব্যাবসায়িক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রসহ কর্মস্থলে হতে পারেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী!

‘মুহাম্মাদ (সা.) দ্যা আল্টিমেট লিডার বইটি আপনাকে সেরা নেতা হওয়ার যাত্রায় কার্যকরভাবে সহায়তা করবে!

অর্ডার করতে কমেন্ট চেক করুন।

এক টাকা দান করলে তা সাতশ গুণ বর্ষিত হয় এবং এক টাকায় সাতশ টাকা দানের সওয়াব পাওয়া যায়। সূরা: বাকারা, আয়াত:২৬১
09/09/2024

এক টাকা দান করলে তা সাতশ গুণ বর্ষিত হয় এবং এক টাকায় সাতশ টাকা দানের সওয়াব পাওয়া যায়।

সূরা: বাকারা, আয়াত:২৬১

'জীবন' একটি প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় মায়ের উদর ছেড়ে পৃথিবীতে আগমনের সাথে সাথে; আর তা শেষ হয় মৃত্যু-পূর্ব...
24/03/2024

'জীবন' একটি প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতা শুরু হয় মায়ের উদর ছেড়ে পৃথিবীতে আগমনের সাথে সাথে; আর তা শেষ হয় মৃত্যু-পূর্ব শেষ নিঃশ্বাসটি ত্যাগ করার মধ্য দিয়ে। জীবন এবং মৃত্যুর মাঝে সময়ের এই সমীকরণটুকুর নামই হলো 'পরীক্ষা'। এই পরীক্ষায় অতিক্রান্ত পথগুলো হয় দুর্গম আর কণ্টকাকীর্ণ । প্রতিটি পদে পদে লুকিয়ে আছে বিপদ। পা পিছলে গেলেই রয়েছে অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবার ভয়ংকর সম্ভাবনা।
এমতাবস্থায় যদি জীবনটাকে গুছিয়ে নেওয়া যায়; যদি সাজিয়ে নেওয়া যায় সঠিকভাবে, তবেই অর্জিত হবে জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য।

দোদুল্যমান জীবনের এমন কঠিন সমীকরণে, জীবন নামক এই প্রতিযোগিতায় জিতে যাওয়ার বেশকিছু নিয়ামক রয়েছে, রয়েছে বেশকিছু উপায়, পথ এবং পদ্ধতি। উচ্ছল তারুণ্যের কঠিন সেই সময়ে সঠিক দিক-নির্দেশনার সাথে সুন্দর এবং সফল জীবন-গঠনের বিবিধ পরামর্শই মলাটবদ্ধ হয়ে এসেছে জীবন পথে সফল হতে রূপে।

🌟আরিফ আজাদের নতুন বই🌟আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে অপেক্ষার অবসান।‘জীবনের জাগরণ’ সিরিজ অত্যন্ত সমাদৃত, পাঠকপ্রিয় একটা সিরিজ। আম...
29/12/2023

🌟আরিফ আজাদের নতুন বই🌟

আলহামদুলিল্লাহ, অবশেষে অপেক্ষার অবসান।

‘জীবনের জাগরণ’ সিরিজ অত্যন্ত সমাদৃত, পাঠকপ্রিয় একটা সিরিজ। আমাদের নৈমিত্তিক ভুল আর ভ্রান্তিগুলোর তালিকা তৈরি করে, গল্প, আড্ডা আর স্মৃতিচারণ করতে করতে এই সিরিজের মাধ্যমে খুঁজে আনা হয় সেই ভুল আর ভ্রান্তির সমাধান।

যাপিত জীবনে জড়িয়ে থাকা সাধারণ ঘটনা, আপাতদৃষ্টিতে যেগুলোকে সামান্য আর ক্ষুদ্র বলে মনে হয়, সেগুলো থেকেও বের করে আনা হয় চিন্তার রসদ। ‘বেলা ফুরাবার আগে’, ‘এবার ভিন্ন কিছু হোক’ বই দুটো ছিলো এই সিরিজের প্রথম দুই কিস্তি। এই সিরিজের তৃতীয় কিস্তি হিশেবে, পাঠকদের কাছে দ্রুতই হাজির হচ্ছি ‘হায়াতের দিন ফুরোলে’ বইটিকে নিয়ে, ইন শা আল্লাহ।

হায়াতের দিন ফুরিয়ে গেলে নিভে যাবে জীবনের প্রদীপ। সেই অবধারিত, অনিবার্য ক্ষণটা চলে আসার আগে, আমরা আরেকবার জীবনের পেছনে তাকাতে পারি। নতুনভাবে করতে পারি অনেক হিশেব-নিকেষ। সেই হিশেব-নিকেষের ঘটনায়, ‘হায়াতের দিন ফুরোলে’ বইটা আপনার বিশ্বস্ত সঙ্গী হয়ে উঠতে পারে, ইন শা আল্লাহ।

বইমেলা ২০২৪। ‘হায়াতের দিন ফুরোলে’। ইন শা আল্লাহ, প্রকাশিত হবে সত্যায়ন প্রকাশন থেকে।

সকলের নিরন্তর দুয়াপ্রার্থী।

মা মা মা এবং বাবা - একজন মায়ের প্রতিক্রিয়া১.আট বছরের আনাস। পিঠাপিঠি ছোট দুই ভাই আছে তার। ওদের জন্মের পর থেকেই বেচারাকে আ...
25/12/2023

মা মা মা এবং বাবা - একজন মায়ের প্রতিক্রিয়া
১.
আট বছরের আনাস। পিঠাপিঠি ছোট দুই ভাই আছে তার। ওদের জন্মের পর থেকেই বেচারাকে আর আগের মত সময় দিতে পারেন না মা। হিফয শুরু করার পর থেকে প্রতিদিন ভোরে উঠে ক্লাসে চলে যেতে হয়। বাসায় ফিরতে ফিরতে বাজে দুপুর আড়াইটা। এরপর মায়ের বকা খেতে খেতে দিনের বাকি অংশ কেটে যায়। সংসারের কাজ, ছোট দুই ভাইয়ের দেখাশোনা, স্কুলের হোমওয়ার্ক করাতে গিয়ে মার সময় হয় না ওর দিকে নজর দেয়ার। দুপুরে সবাই যখন ভাতঘুমে মগ্ন, নিজের হাতে এক গ্লাস শরবত বানিয়ে বইয়ের শেলফ থেকে মোটাসোটা কোন বই নামিয়ে উপুর হয়ে শুয়ে পড়তে থাকে আনাস। বই পড়তে পড়তে শরবতে চুমুক দেয়। এটা এখন ওর নিত্যদিনের রুটিন।
ভাইদের সাথে ঝগড়া হলে মা কেন যেন শুধু ওকেই বকা দেন, ওর দোষটাই দেখেন অথচ ছোটদের আদর করে দেন। আজকাল মায়ের কথা শুনতে ইচ্ছা করে না। যদিও মা ছাড়া আর কেউ ওকে বুঝতে পারে না। স্কুলের কোন ঘটনায় মন খারাপ হলেও মা কিভাবে যেন টের পেয়ে যান। সব কথা মাকে বলে হালকা হওয়া যায়। কিন্তু এখন আর সে সুযোগটাও হয় না।
২.
আমি আনাসের মা। গত কয়েকদিন ধরে ওকে নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলাম। ওর বাবার সাথেও ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করলাম। দিন দিন কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে ছেলেটা। মায়ের অবাধ্য, সলাতে অমনোযোগী, একাকী। স্কুলেও রেজাল্ট খারাপ করছে। ভাইদের সাথে কারণে অকারণে ঝগড়া বেঁধে যাচ্ছে। বকা দিলে রাগ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে।
বই পড়ার খুব নেশা ওর। নতুন বের হওয়া ইসলামি বইগুলো ওর জন্য হাতে নেয়ার সুযোগ হয় না আমার। সেদিন সিয়ান থেকে প্রকাশিত আবু বাকার রাদিয়াল্লাহু আনহুর বইটা দ্বিতীয়বারের মতো পড়া শুরু করল, সেই রাতেই বাবা নতুন কিছু বই নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। ওখান থেকে একটা বই ওকে গিফট করলেন তিনি - “মা মা মা এবং বাবা”।
পরদিন স্কুল থেকে ফিরে যথারীতি নতুন বই হাতে শুয়ে পড়ল আনাস। আসরের সলাত পড়ার জন্য ডাকতে গিয়ে দেখি বেঘোরে ঘুমুচ্ছে। পাশে বাবার দেয়া বইটা। পরে শুনলাম, পুরো বই পড়ে শেষ করে ঘুমিয়ে পড়েছিল ও।
সেদিনও ওর পরিবর্তনটা চোখে পড়েনি তেমন। দু’একদিন পর লক্ষ্য করলাম, হঠাৎ করে আমার প্রতি আচার-আচরণে যেন অনেকটাই বদলে গেছে ছেলেটা। আমি সামান্য বিরক্ত হলে বা মন খারাপ হলেই বিচলিত হয়ে পড়ে সে, কাছে এসে জানতে চায় “মা তোমার মন খারাপ? আমি কি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি?” এরকম একবার দুইবার না - কয়েকবার হয়েছে।
রাগ হয়ে বকা দিলে অভিমান তো দূরের কথা - জড়িয়ে ধরে মাফ চাইতে থাকে। শুধু তাই না, আমার কোন কথার অবাধ্য হয় না; আমার কাজে সাহায্য করার চেষ্টা করে। গতকাল ইশার সলাতে ইমাম হয়েছে, ওর পেছনে সলাত আদায় করেছি আমি। অথচ আগে হাজার বললেও এই কাজ করতে চাইত না।
মা-ছেলের দূরত্ব ঘুচে গেছে এখন। ওর প্রতি ভালোবাসা বেড়ে গেছে বহুগুন। এখন দোষ করলেও বকা দিতে পারি না। আশা করি ছোট দুইজনও এভাবে বড় ভাইয়ের অনুসরণ করবে।
আলহামদুলিল্লাহ্‌! ছোট একটা বই, ছোট একটা মানুষকে এভাবে বদলে দিতে পারে তা ছিল কল্পনার বাইরে। ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে যেন বইটি। প্রত্যেক ঘরে ঘরে এই বই রাখা উচিৎ, প্রত্যেক সন্তানের এটা পড়া উচিৎ।
আল্লাহ বইটির সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উত্তম বিনিময় দান করুন...আমীন!
_____________
সিহিন্তা শরীফা আপু

কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ : আলোকিত প্রজন্ম গড়ার প্রত্যয়ে রচিত এক বিশাল স্বপ্নযাত্রা◈  আভাষ :প্রযুক্তির ছাঁচে গড়ে উঠা প...
19/12/2023

কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ : আলোকিত প্রজন্ম গড়ার প্রত্যয়ে রচিত এক বিশাল স্বপ্নযাত্রা
◈ আভাষ :
প্রযুক্তির ছাঁচে গড়ে উঠা প্রজন্ম দিনকে দিন কুরআনের বিধিনিষেধকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলছে অন্তহীন ধ্বংসের পথে। পার্থিব উন্নতি-অগ্রগতির তাড়নাতে যেন সবাই ব্যতিব্যস্ত। ফলে, কুরআনুল কারীমের শাশ্বত আহ্বান তাদের কর্ণকুহরে পৌঁছেনা। কারণ ঈমানের অমৃত সুধা, সত্যের অমোঘ বাণী থেকে শিক্ষা, উপদেশ ও পথনির্দেশ তো কেবল বোধশক্তিসম্পন্ন লোকেরাই গ্রহণ করে। আর সেই বোধশক্তিটুকুই পাঠকমনে জাগিয়ে তুলার অনবদ্য প্রয়াস⸺‘কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ’।
বইটিতে লেখক সমকালীন ঘটনাপ্রবাহের উদ্ধৃতি টেনে চিত্রায়ণ করেন আলোচনার প্রেক্ষাপট। এরপর কুরআন থেকে প্রাসঙ্গিক দৃষ্টান্ত তুলে ধরে পাঠককে নিয়ে যান মূল পাঠের গভীরে। অতঃপর আবেগঝরা ভাষায় ঐশী জ্ঞানের অপূর্ব নির্যাস পাঠকের মননে-মানসে, ভাবনার আবেশে ছড়িয়ে দেন ফোঁটা ফোঁটা কালির আঁচড়ে আঁচড়ে!
◈ মলাটের ভাঁজে :
লেখকের নিজস্ব ভাবনা-উপলব্ধি এবং কুরআনের প্রজ্ঞাপূর্ণ উপমা-উদাহরণ এবং বিশুদ্ধ তাফসিরের বিশ্লেষণে ২৯টি প্রবন্ধে ফুটে উঠেছে এক মোহনীয় সৌন্দর্যের ফুল।
গ্রন্থটির সুন্দর, পরিশীলিত আলোচনায় উঠে এসেছে ধৈর্য-সততা, নিষ্ঠা ও পরোপকারী হওয়ার প্রজ্ঞাপাঠ। এসেছে দুআর গুরুত্ব, সচ্চরিত্র-লজ্জাশীলতা, তাকওয়া-তাওয়াক্কুল ও রিয়ামুক্ত থাকার শিক্ষা। সেইসাথে আরও অনেক জ্ঞানগর্ভ বিষয় আলোচিত হয়েছে সূচি বিন্যাসের আকর্ষণীয় শিরোনামে।
নিরাশার মুহূর্তে তৃষিত পাঠক বইটিতে খোঁজে পাবে সূরা আল-ইনশিরাহের আলোকে আশার পিদিম এবং আদ-দোহার ব্যথা উপশমকারী মহৌষধ। সেইসাথে সূরা আল-আসরের আলোকে সফলতার সূত্র এবং আল বুরুজের ঈমান সতেজকারী ঘটনার অনুপ্রেরণা।
কুরআনের একটি আয়াতকে কেন্দ্রকরে চিন্তার কত গভীর থেকে গভীরে ডুবে যাওয়া যায়, একেকটি শব্দের ব্যাখ্যায় কত যে অন্তর্লীন-রহস্য লুকিয়ে থাকে তা এই মূল্যবান বইয়ের পাঠকমাত্রই অনুভব করতে পারবেন। নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চরিত্র সুষমা ছিল কুরআনের জীবন্ত প্রতীক, সেই মানদণ্ডে আমাদের অবস্থাও কিছুটা আঁচ করা যাবে।
গ্রন্থটির মুদ্রণ-সৌকর্য, প্রচ্ছদ, পৃষ্ঠাসজ্জা এককথায় অনন্যসাধারণ, তবে ‘খোদা’ শব্দটির পরিবর্তে আল্লাহর সিফাতি নাম ব্যবহার করলে মনে হয় ভালো হতো।
জীবনবোধ ও বাস্তবতাকে সামনে রেখে ঐশী বানীকে উচ্চকিত করে তুলে ধরে এরকম বই বাংলা সাহিত্যে খুব কমই আছে। তাই কুরআনের প্রকৃত মর্মকথা উম্মাহের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সত্যায়ন প্রকাশনের এই গ্রন্থটি হতে পারে এক সর্বোত্তম ‘প্রচারপত্র’।
◈ সারকথা :
আরিফ আজাদ⸺একটি বহতা নদীর নাম। যে নদীর উথাল-পাতাল ঢেউ-তরঙ্গে খোঁজে পাওয়া যায় জীবনের স্পন্দন। তাঁর প্রতিটি বই-ই যেন হতাশার দ্বীপে জেগে উঠা একেকটি আরোগ্য নিকেতন।
বরাবরের মতো⸺‘কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ’ বইটিও মানুষের জীবনের বাঁক বদলে দিবে ইনশাআল্লাহ। দুআ করি, মুহতারাম লেখকের সাদা পাতার পাঠশালা হয়ে উঠুক সুশিক্ষার আলোকবর্তিকা।
◈ একপলকে বইটি⸺
বই : কুরআন থেকে নেওয়া জীবনের পাঠ
লেখক : আরিফ আজাদ
প্রকাশনা : সত্যায়ন প্রকাশন

চশমা চোখে কুয়াশা এসে কাঁচকে যেমন ঘোলাটে দেখায়;তেমনি জীবনের সামনে যখন উপবিষ্ট হয় হতাশা,হতোদ্যম আর হঠকারিতা জীবনও তখন নিমজ...
18/12/2023

চশমা চোখে কুয়াশা এসে কাঁচকে যেমন ঘোলাটে দেখায়;তেমনি জীবনের সামনে যখন উপবিষ্ট হয় হতাশা,হতোদ্যম আর হঠকারিতা জীবনও তখন নিমজ্জিত হতে চায় পাপের সাগরে,ঘোলাটে হয়ে যায় সবকিছু।নিমজ্জনের এই ভয়াবহ মুহুর্তগুলো,নিষ্ঠুরতার এই অন্ধকার সময়গুলো জীবন থেকে এমনি এমনি চলে যায়না।বিপর্যয়ের দিনগুলোতে জীবন পথের যে পথিক সমুদ্র পথের সেই নাবিকের মতো ভেলায় চড়ে নিজের আসল তরী খুঁজে নিতে পারে,অথৈ সাগরের ঢেউ থেকেও সে-ই উঠে আসতে পারে।
কিন্তু যেকোনো ভেলায় উঠে পড়লেই তো হয় না,ভেলাকে মজবুত করে গন্তব্যস্থল নিশ্চিত করতে হয়।তবে সবাই কি পারে সেই দুর্গম পথের গন্তব্য নিশ্চিত করতে?কিংবা গন্তব্য নিশ্চিত করলেও সবাই কি পারে অন্ধকারের অতল গহবরে হারিয়ে গিয়েও সত্যের শুভ্র আলোয় নিজেকে আলোকিত করতে?
হে দুর্গম পথের পথিক...
কোথায় পাবে সেই নিশ্চিত গন্তব্যস্থল?
কীভাবে চিনবে সেই সত্য আর কিভাবে দেখবে সেই শুভ্রতার আলো?
সেই পথ এ জীবনেই।কিন্তু কেমন জীবনে?কোন সে জীবন যে জীবন সিরাতুল মুস্তাকিমের পথকে নিজের গন্তব্যস্থল হিসেবে নিশ্চিত করেছে,যে জীবন কুরআনের আলোয়, শুভ্রতার আলোয় সত্যকে খুঁজে পেয়েছে, সত্যকে খুঁজে পেয়েছে আল্লাহকে পাওয়ার মাধ্যমে।
সে জীবন...কোন সে জীবন?সেই জীবনের বর্ননা আমি খুঁজে পেয়েছি একটি রহস্যের পাতায়..একটি বইয়ের পাতায়।
সেই বইটি আমি কিভাবে পেয়েছি কিংবা সেই বইটি থেকে আমি কি পেয়েছি, তার ক্ষুদ্র অংশটুকুও আমি সাহিত্যের ভাষায় প্রকাশ করতে অক্ষম। যে বইটি আমার দু'চোখ মেলে দিয়েছে,মনের জানালা দিয়েছে খুলে সেই বইয়ের সারকথা আমি আমার মনের ভাষাতেই প্রকাশ করব।
বইটি পাঠককে তার জীবন নিয়ে ভাবায়।যে জীবন স্বাধীনভাবে বাঁচতে শেখে,বাঁচাতে শেখায়,সত্যকে খুঁজতে পারে,সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করাতে পারে,এমনই এক জীবনের স্বপ্ন দেখায় এই বইটি।ভেলায় চড়ে এই বইটি পাঠ করতে করতে পাঠক খুঁজে পাবে তার অস্তিত্বের ঠিকানা।ক্লান্ত,শ্রান্ত,অজানা ঠিকানায় হেটে চলা মুসাফির তার ক্লান্তি দূর করে হেটে যাবে জ্ঞানের সাধনায়,তার প্রতিটি কদমে রেখে যেতে পারবে জ্ঞানের ছাপ,শুরু হবে জ্ঞানীর পথচলা,জেগে উঠবে তার প্রত্যয় এবং জাগরণ হবে সুপ্ত প্রতিভাধর এক প্রজন্মের,ইনশাআল্লাহ।
এতক্ষন ধরে যে বইটি সম্পর্কে বলে আসছিলাম,সেই বইটির নাম,"যে জীবন ফরিঙের, যে জীবন জোনাকির।"
🔸প্রথম দেখা : গল্পের পোকা আমি সবসময় গল্পের গন্ধ খুঁজে বেড়াই।কিন্তু অজস্র গল্পের মধ্যে কোন গন্ধ কোন বই থেকে আসছে তা ঠিকমত বুঝতে পারি না এখনো।তাই গল্প খোঁজার সময় বইয়ের নাম দেখেই গল্প নির্বাচন করি।কখনো কখনো এই বাছাই পর্বে স্থান পায় বইয়ের প্রচ্ছদ ও।
সর্বশেষ পর্বে যখন আমি আমার বহু সাধের জমানো টাকা দিয়ে বই বাছাই করে কিনব বলে চিন্তায় মগ্ন তখন ই আমি এই বইটির নাম এবং প্রচ্ছদ দেখে এই বইটিকে নির্বাচন করলাম।কিছুক্ষনের জন্য চিন্তা করলাম যে জীবন ফরিঙের, আচ্ছা সে জীবন কেমন?সে জীবন কি ভালো নাকি খারাপ?যে বইয়ের নামের আগাগোড়ায় রহস্য জমে আছে সে বইটা কিনলে মন্দ হয় না! বই কিনার জন্য অনলাইন ওয়েবসাইট এ সার্চ দিলাম,আর বইয়ের প্রচ্ছদ দেখে তো আমি আরো আভিভূত!
"একটু পড়ে দেখুন" অপশনে ক্লিক করে বইয়ের সূচিপত্র চোখ বুলিয়ে নিলাম।দ্বিতীয় বারের মত ঠিক করলাম,এই বই আমাকে কিনতেই হবে।
🔸ডেকোরেশন : সূচিপত্র অংশে ঢুকে বইয়ের ডেকোরেশন সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়।এই বইয়ের সূচিপত্র দেখেও আমি ধারনা পেয়েছি গল্পের ধরন এবং ভাষারীতির।এতক্ষন ধরে যে কথাটি বলতে ভুলেই গিয়েছি তা হলো বইয়ের লেখকের নাম।বইটির লেখক "সাজিদ ইসলাম"।বইটি প্রকাশিত হয়েছে সর্বপ্রথম ২০২১ সালের মার্চ মাসে বুকমার্ক পাবলিকেশন থেকে।বইটিতে মোট ৫৫ টি শিরোনাম রয়েছে যদিও বইয়ের পৃষ্ঠাসংখ্যা ১৭৬।
যা বুঝলাম তার সারমর্ম এই যে,বইটিতে ছোট ছোট আকারে অনেক গুলো গল্প রয়েছে।প্রতিটি গল্পের শিরোনামেই কি সুন্দর ছন্দ!কোনো কোনো শিরোনাম এক একটা বানীর মত।দেখে মনেহয় গল্পটা বুঝি শিরোনামের মধ্যেই শুরু আর এর মাধ্যমেই শেষ।লেখকের ভাবনা এবং বইয়ের বিষয়বস্তু গুলো এই বানীগুলোর মাধ্যমেই অনুধাবন করা যায়।যেমন,"সুখে থাকা মানে অনেক কিছু থাকা নয়,সুখে থাকা মানে সুখে থাকা" কিংবা "স্বাধীনতা 'মানুষ কি বলবে' নামের ঐ কারাগার থেকে মুক্তিতেই",এরকম কিছু উক্তিমূলক শিরোনাম।
কোনো কোনো শিরোনামের আগাগোড়ায় আবার রহস্যের মিশ্রণ।যেমন, "এক ঠোঙা ঝালমুড়ি এবং অতঃপর.." কিংবা "প্রচন্ড এক উত্তাপের দিনে.." কিংবা "আবরার ফাহাদ এবং সুরা বুরুজের সেই বালক ও রাজার গল্প" এর মতো কিছু রহস্যমূলক শিরোনাম।
এরকম শিরোনামগুলো পড়ে সেই গল্পগুলোর "থিম"বুঝে উঠতে পারছিলাম না।তৃতীয় বারের মতো বুঝলাম,এই বইটি আমাকে কিনতেই হবে।
একটি শিরোনামে গিয়ে আমার দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়।গল্পের শিরোনাম,"যে জীবন ফরিঙের,যে জীবন জোনাকির,সে জীবন যেন আমার না হয়.." এইবার বুঝলাম জোনাকি কিংবা ফরিঙের মত জীবন যাপন করতে লেখক অনুৎসাহিত করেছেন,কিন্তু তাদের জীবন কেমন যা আমার আপনার হওয়া উচিত না?আর বেশি কিছু না ভেবে কিনে ফেলার জন্য অর্ডার করে দিলাম।
🔸গল্পগুলো অন্যরকম: যে বইটি নিয়ে এতক্ষন কথা বলছিলাম সেই বইটির সাথে দ্বিতীয় দেখা হবার পরপর ই আমি বইটি নিয়ে বসলাম।যখন বইটি পড়া আরম্ভ করলাম আমার মনে হলো আমি যেন অন্য এক জগতে বিচরন করছি,মাঝে মাঝে মনেহয় সেই জগত সাড়ে ১৪০০ বছর আগের মত সুন্দর আর সাজানো আবার খানিক্ষন বাদেই মনেহয় নৈতিকতার এক চরম অধঃপতনের যুগে বুঝি আমি বিচরন করছি।বইটিতে লেখকের ভাষারীতি এবং সৃজনশীলতা আপনাকেও এই দুই সময়ের ব্যবধান নিয়ে ভাবাবে বলে আমার বিশ্বাস।কীভাবে ভাবাবে সেটি জানতে হলে যে আপনাকেও সেই রহস্যের পাতায় চোখ বুলাতে হবে!
লেখক সাজিদ ইসলাম নিজস্ব এক গদ্যশৈলীর নির্মাতা।বইটিতে লেখক বিভিন্নসময় বিভিন্ন বর্ণনারীতির প্রয়োগ ঘটিয়েছেন।এজন্যই বইটি পড়তে গিয়ে কখনো মনে হয়েছে আমি বুঝি লেখকের কোনো ডায়েরী পড়ছি ,কখনো বা মনে হয়েছে যেন কোনো সিরাতগ্রন্থ পড়ছি।কখনো মনে হয়েছে আমি বুঝি মা-বাবা কে নিয়ে লেখা গল্প "মা,মা,মা ও বাবা" এর মত বই পড়ছি আবার কখনো মনে হয়েছে জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মুসলিমদের বিচরণ এবং মুসলিম সাহিত্যের স্বর্ণযুগ নিয়ে লেখা "মুসলিম মস্তিষ্ক " এর মতো বই পড়ছি।কোনো কোনো সময় মনে হচ্ছিল জীবন নিয়ে লেখা শ্রেষ্ঠ কোনো সাহিত্যিক এর শ্রেষ্ঠ কোনো লেখা বুঝি আমি পড়ছি।
বইটি যদিও আত্মউন্নয়নমূলক, আত্মশুদ্ধিমূলক,অনুপ্রেরণামূলক এবং ইবাদতে উৎসাহিতকরণের একটি বই তবুও আমি আমার আলোকে বইটিকে যেভাবে দেখেছি সে অনুযায়ী গল্পগুলোর বর্ণনা দিব।
(i) ডায়েরী : বইটিতে লেখক বিভিন্নসময় ডায়েরীর মত করে তার নিত্যদিনের ঘটে যাওয়া কিছু সাধারন ঘটনাকে অসাধারণ ভাবে উপস্থাপন করেছেন,অনেকটা আমরা যেভাবে ডায়েরী লিখি তেমন।যেন লেখকের কোনো একদিনের একটা ঘটনা ঘটার পরে হঠাৎ কিছু উপলব্ধি হলো-ওমনি তিনি লিখতে বসে গেছেন।তিনি এই ধরনের বর্ণনারীতির প্রয়োগ ঘটিয়েছেন এভাবে-
"ল্যাপটপ কাজ করছিল না। প্রথমে ভাবলাম ব্যাটারির সমস্যা, নতুন ব্যাটারি কিনলাম কিন্তু সমস্যার সমাধান হলো না। আবার গেলাম ঐ দোকানে, সমস্যা নাকি চার্জারে, নতুন একটা চার্জারও কিনলাম। সঙ্গে এক ছোট ভাই ছিল। আপাতদৃষ্টিতে ছোট একটা সমস্যায় একসাথে এতগুলো টাকা চলে গেল বলে তাকে আফসোস করেই বললাম, হুদাই টাকাগুলো গচ্চা গেল। ছোটভাই জবাব দিল, ভাই এভাবেই তো আল্লাহ একজনকে দিয়ে আরেকজনের রিযিকের ব্যবস্থা করেন!
সময়ের এক্সিসে মাপলে কথাটা বলতে কয়েক সেকেন্ড লেগেছে কিন্তু মুহূর্তেই চিন্তার জগতটা ১৮০ ডিগ্রি কোণে ঘুরে গেল। আরে তাই তো? এভাবেই তো এই দোকানির রিযিকের ব্যবস্থা হয়, ঠিক সেভাবে মাে বার রিযিকের পেছনেও আল্লাহ কাউকে না কাউকে উছিলা বানিয়ে দেন। হঠাৎ আরও একটা উপলব্ধি হলো—উত্তম সোহবত!"
এইরকম বর্ণনারীতির পরে লেখক উত্তম সোহবত নিয়ে কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও বিভিন্ন হাদিস এবং সেগুলোর আলোকে আমাদের কি করা উচিত তার বর্ননা দিয়েছেন এবং গল্পের নাম দিয়েছেন "সোহবতের গল্প"।
আবার এমন অনেক ঘটনাও লেখক বর্ণনা করেছেন যেগুলো শুধু তাঁর নিজের জীবনেই নয়,বরং প্রায় আমাদের সবার জীবনের ঘটে যাওয়া কাহিনী। যে বিষয়গুলা তুচ্ছ ভেবে,যে সময়গুলোকে তুচ্ছ করে আমরা আমাদের চলার স্বাভাবিক গতিকে অব্যাহত রাখি,আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে চলমান রাখি, সেই তুচ্ছ বিষয়গুলোকে তুলে এনে লেখক প্রমাণ করেছেন যে আমাদের জীবনের গতিময়তা আসলে অস্বাভাবিক এবং ছন্দহীন। গল্পের এইরকম বর্ননারীতি দেখা যায় এভাবে,
"একবার আমাদের এদিকে টমেটো খুব সস্তা হয়ে গেল।আমার বাসায় সারাদিন টমেটোর আলোচনা।আমার আব্বা আম্মার প্রতিদিনের রুটিন হয়ে গেল আজকে বাজারে টমেটোর কেজি কত করে বিক্রি হচ্ছে সেই খবর রাখা।একদিন নাকি টমেটো দুই টাকা করে কেজি বিক্রি হচ্ছিল,আব্বা কিনেননি, সেটা শুনে আমার আম্মা গেলেন ক্ষেপে—দুই টাকা কেজি হওয়া সত্ত্বেও কেন টমেটো কেনা হলো না সারাদিন সেই আলোচনা বাসায় ঘুরে ফিরে আসতে লাগল। আরেকদিন বাসায় একটা আলমিরা কেনা হলো। সকাল থেকে রাত অবধি আমি শুধু আলমিরার আলোচনা শুনলাম। আলমিরার রং, ড্রয়ার, আয়না, কোথায় বসানো হবে, কোন পজিশনে কীভাবে বসালে ভালো দেখাবে, আলমিরায় কী কী রাখা হবে—পুরো একটি দিন এসব অ্যলোচনা করে কাটল।
আমি অবাক হয়ে খুঁজে বের করার চেষ্টা করলাম এমন কেন হচ্ছে? সামান্য টমেটো আলোচনার বিষয়বস্তু, একটা আলমিরা নিয়ে সবাই ব্যস্ত! আমার মনে হয় আমাদের বেশিরভাগেরই এই অবস্থা। প্রত্যেক ঘরেই কমবেশি এরকম। আমি খুঁজে বের করলাম এর কারণ— আমরা একটি ভাবনা-চিন্তাহীন জীবন যাপন করছি। আমাদের মাথার উপর ছাদ আছে, থাকার জায়গা আছে, তিন বেলা খাবারের চিন্তা নেই, পরনের কাপড় যা প্রয়োজন তার চেয়ে কয়েকগুণ আছে। এই ভাবনা চিস্তাহীন, আপেক্ষিকভাবে নিরাপদ একটি জীবনে আমাদের কোনো প্রায়োরিটি নেই, কোনো লক্ষ্য নেই, উদ্দেশ্য নেই। আচ্ছা যাদের জীবন আমাদের মতো ভবনা-চিন্তাহীন নয়, তারা কী চিন্তা করে? তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু, তাদের প্রায়োরিটি কী থাকে?
এই যেমন ধরুন, চীনের উইঘুরের মুসলিমরা, যেখানে বাবা-মা জানে না তাদের সন্তান কোথায়। রোহিঙ্গা মায়ের কথা ধরুন, তার চোখের সামনে সন্তানকে আগুনে নিক্ষেপ করা হচ্ছে...."
এইরকম আরো বিভিন্ন ঘটনা লেখক আমাদের সামনে চিত্রিত করেছেন।পুরো বইয়ের প্রায় পুরো অংশেই এরকম নিত্যদিনকার ঘটনার আলোকে গল্পে গল্পে তার চিত্রায়ন দেখতে পাবেন। তিনি জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কে কিভাবে সুন্দর করা যায় তার বিস্তৃত বর্ণনা এই বইয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন।
(ii) সিরাতগ্রন্থ : বইটি পড়তে মাঝে মাঝে মনে হচ্ছিল আমি যেন কোনো সিরাতগ্রন্থ পড়ছি।যদিও সেইগুলোর পরিমাণ বেশি ছিল না তবুও নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গোটা জীবনের সমষ্টি নিয়ে তিনি একটি ছোট্ট গল্প সাজিয়েছেন,গল্পের নাম "তিনিই আমাদের রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম"। আবার আমাদের জীবনে মহানবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রভাব কতুটুকু হওয়া উচিত সেই বিষয় নিয়ে লেখক লিখেছেন,"শেষ কবে আপনি প্রিয় নবির জন্য কেঁদেছেন?"গল্পটি। সাহাবাদের জীবনীর কিছু অংশ নিয়েও তিনি বইটি সাজিয়েছেন,যেমন "একটি লাভজনক ব্যবসা" কিংবা "তাঁর ইহসানগুলো আমার পক্ষে পরিশোধ করা সম্ভব নয়" এর মত গল্পগুলো। পরিসর ছোট হলেও সেগুলো পড়ার পর আপনার চোখে পানি আসবেনা-এ কথা আমি কস্মিনকালেও ভাবতে পারি না।
(iii) "মা,মা,মা ও বাবা" : মা,মা,মা ও বাবা গল্পটি লেখক আরিফ আজাদের সম্পাদিত একটি বহুল পঠিত বই।এই বইয়ের পুরো অংশ জুড়েই মা,বাবাকে ঘিরে অনেকগুলো গল্প আছে। "যে জীবন ফরিঙের, যে জীবন জোনাকির " এই বইটিতেও বাবা-মা কে ঘিরে অন্যরকম বেশ কয়েকটি গল্প আছে,যেগুলো আপনাকে মা-বাবাকে নিয়ে ভাবতে শেখাবে,শেখাবে মা-বাবার অমায়িক হাসির আড়ালের দুঃখগুলোকে খুজে দেখতে। লেখকের ভাষায়:
"আমরা যারা শিক্ষিত হয়ে গেছি, আধুনিক হয়ে গেছি, পুরনো আমলের বাবা-মায়েদের সাথে মানসিক দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছি, আমাদের উচিত বাবা-মায়েদের সাথে বেশি বেশি সময় কাটানো। নিজের আধুনিক লেভেল এক পাশে সরিয়ে রেখে, বাবা-মায়েদের সেই পুরনো আমলের লেভেলে চলে আসা। তাদের সাথে তাদের মতো হয়ে যাওয়া। যেভাবে তারা ছোটবেলায় আমাদের সাথে আমাদের লেভেলে চলে আসত!"
(iv)মুসলিম মস্তিষ্ক : "মুসলিম মস্তিষ্ক" মূলত মুসলিম সাহিত্যের স্বর্ণযুগ যেসময় টি আমাদের কাছে "অন্ধকার যুগ" হিসেবে পরিচিত সেই সময়ের মুসলিম মনীষীদের জ্ঞান বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিচরণ এবং সেসব শাখায় তাদের অগ্রগতি নিয়ে লেখা একটি বই।
"যে জীবন ফরিঙের,যে জীবন জোনাকির" বইটির একটি গল্পেও অত্যন্ত স্বল্প পরিসরে কিন্তু যথাযথ তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে লেখক এই বিষয়গুলোকে তুলে এনে আমাদের দেখিয়েছেন মুসলিম জাতির জ্ঞান বিজ্ঞানের ইতিহাস। সে সময় এই বইটি পড়তে মনে হচ্ছিল আমি বুঝি জ্ঞান বিজ্ঞানের কোনো বই-ই পড়ছি!
অর্থাৎ এই একটিমাত্র বইয়েই লেখক অনেক ধাচের গল্পের মিশ্রণ ঘটিয়েছেন এবং এজন্যই আমার মনেহয় যে এই বইয়ের "গল্পগুলোই অন্যরকম!"
🔸মূল কথন : বইটি মূলত জীবন কে ভিত্তি করেই অন্য এক জীবনের সন্ধান দেয়।চিন্তা করেই চিন্তার পরিধিকে বিস্তৃত করতে শেখায়। সমাজের ভয়ঙ্কর যে চক্র, সেই চক্রকে সমাজের মানুষের সাহায্যেই কিভাবে ভাঙতে হয় তা দেখায়।"ভাল্লাগেনা" রোগ নিয়ে,একরাশ হতাশা আর জীবনের প্রতি বুকভরা বিতৃষ্ণা সাথে নিয়ে আমরা এক জীবনে যেই সুখের সন্ধান করে কাটিয়ে দিই,সেই সুখ যে আসলে মরিচীকা ব্যতীত কিছুই না,এই ধ্রুব সত্যকে মরিচীকার ফাঁদে পা দেওয়ার আগেই আলিঙ্গন করতে শেখায়। এই মরিচীকাময় জীবনকেও নতুনভাবে উপলব্ধি করা যায়,মরুভূমির প্রতিটি তুচ্ছ ধুলিকনার মত তুচ্ছ সময়গুলোকে যে জীবন কাজে লাগাতে শেখায় সে জীবন কখনোই মরিচীকার পেছনে ছুটে না।সে সুখের জন্য নিজেকে অসুস্থ করে তোলে না,সে সুখের পিছনে ছোটে না,সে নিজেই সুখের উপকরন হয়ে দাঁড়ায়।কিন্তু সে জীবন কীভাবে গঠন করবেন?এই বইটিতে মূলত ছোট ছোট গল্প আকারে সেই জীবন গঠনের জন্যই তাগিদ দেওয়া হয়েছে।বইয়ের মূলকথাই হলো মনের জানালা মাঝে সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখা আর তার বাস্তবায়ন করা।লেখকের ভাষায়,
"এই দ্বীন পালন যেন উত্তপ্ত মরুভূমিতে একাকি পথ চলা, তৃষ্ণায় কাতর হয়ে ছুটে চলা, থমকে যাওয়া, মাটিতে গড়িয়ে পড়া, শীতল পানিতে তৃষ্ণা মেটানো, কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া গাছের ছায়ায়। উস্কোখুস্ক চুল, ধুলোমাখা পা, জরাজীর্ণ জামা—অবশেষে এই দৌড় প্রতিযোগিতার শেষ প্রান্তে পৌঁছা। যার পরের কদম থেকেই আল্লাহ আযযা ওয়া যাল আমাদের দিয়েছেন অনন্ত সুখের প্রতিশ্রুতি। তাই সেই জীবনের স্বপ্ন অন্তরে বুনে নিন, যে জীবন আল্লাহর জন্য বাঁচে। যে জীবন ঘাস ফড়িঙ কিংবা জোনাকি পোকার মতো বন্দি নয়। যে জীবন অনেকের ভিড়ে পরাজিত, অধঃপতিত মানসিকতার নয়। যে জীবন এক বিঘত বুকে বিশাল আকাশ ধারণ করে বাঁচে। যেদিন বুক এফোঁড় ওফোঁড় করে বেরিয়ে যাবে শত্রুর আঘাত, মাটিতে গড়িয়ে পড়বে প্রথম রক্তবিন্দু, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা দেখিয়ে দেবেন জান্নাতে আমাদের ঘর, সেদিন—সেদিন হয়তো আকাশের ওপারের ঐ জীবনের জন্য কিছু সঞ্চয় হলো।"
অর্থাৎ যে জীবন আল্লাহর জন্য বাঁচে সেই জীবনের স্বপ্ন দেখিয়ে লেখক এই বইটি রচনা করেছেন।আর আমি আপনাদের সামনে তার সারাংশটুকু তুলে ধরার চেষ্টা করছি। ঠিক যেমনভাবে কেউ কোনো একটা ফল খেয়ে সেই ফলের বীজ মাটিতে ফেলে দেয় এবং ফলের বাগান করতে আগ্রহী ব্যক্তি সেই বীজ বপন করে নেয় যাতে করে ওই ফলের চারা গজায়;সেরকম ভাবে আমিও পুরো বইটি পড়ে সেই বইয়ের নির্যাসটুকু আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি। তাই যদি কেউ আমার ফেলে দেওয়া বীজগুলোকে বপন করে নেয় এমন জীবন গঠনের জন্য যে জীবন আল্লাহর জন্য বাঁচে,তাহলে হয়তো কোনো একদিন সেই বীজ থেকে চারা গজিয়ে বিশাল বৃক্ষে পরিনত হবে এবং সেই বৃক্ষের ছায়ায় আরো কিছু জীবন উপকৃত হবে। আর সেদিনই হয়তো আমার এই বীজ ফেলা স্বার্থক হবে।
🔸চরিত্র : আপাত দৃষ্টিতে বইটিতে কোনো চরিত্র নেই।আবার অন্য দৃষ্টিতে দেখলে বইটির চরিত্র স্বয়ং আপনিই।বইটিতে প্রতিটি ক্ষেত্রে আরেকটি চরিত্র সর্বক্ষণ আমাদের মধ্যে অনুপ্রেরণা এবং আশা জোগায়,সেই চরিত্র টি হলো আমাদের প্রিয় নবি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।কেন আমরা লেখকের উৎসাহ দেওয়া জীবন গঠন করব?কেননা এই জীবন গঠন করতে বলেছেন স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা,এই জীবন এর স্বপ্ন দেখিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!তার প্রতি আমাদের ভালোবাসা এবং আমাদের প্রতি তার ভালোবাসাই গল্পগুলোকে প্রাণবন্ত করে রেখেছে। সেই ভালোবাসার জন্য আমাদের জীবন কেমন হতে হবে তার আলোকচ্ছটা এই বইটি।যে জীবন শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বাঁচে সে জীবন কেমন?সেই জীবন শুধু গল্পের মধ্যেই নয়,বরং গল্পগুলোকে নিজের চরিত্রে ধারণ করার মধ্যে নিহিত আছে।তাই গল্প যাই হোক না কেন,সর্বদা মাথায় রাখতে হবে এই গল্পের চরিত্র আপনি নিজে।
এই হিসেবে আমি মনে করি,"যে জীবন ফরিঙের,যে জীবন জোনাকির" বইটির চরিত্র আমি,আপনি এবং আমরা সবাই।
🔸ছোট্ট একটা দাগ : ক্ষনস্থায়ী এই পৃথিবীর কোনো কিছুই ত্রুটিমুক্ত নয়। তাই এই বইটিও যে সব ত্রুটির উর্ধ্বে, এমনটা আমি বলবো না।যেমন লেখক রিদ্দা,ইরজা,খুরুজ এইরকম কঠিন শব্দগুলো বর্ননা করেননি,যা আমার মতো ক্ষুধে পাঠক দের জন্য আরেকটু খোলাসা করে বললে ভালো হতো বলে আমি মনে করি।
🔸রেললাইনের সমাপ্তি : ট্রেন আসার জন্য এতক্ষন ধরে যে রেললাইন তৈরি করে আসছিলাম সেই বিরাট রেললাইনের সমাপ্তি এখনই করব । ট্রেন নির্মাতার ভাষায়:
"দুনিয়াবি ক্যারিয়ার গড়তে জান-প্রাণ বিলিয়ে দিয়ে, দিনে কয়েক ওয়াক্ত সালাত পড়ে, সামাজিক ছবি(!) দেখে আর জীবনবোধের গান (!) শুনে, চেতনা অন্তরে লালন করে, টেবিলভর্তি সেক্যুলার বইয়ের উপর কাপড়ে বাঁধা কুরআনে সাজানো রুম--এই ছেলেটারই সমাজ থেকে মিলবে 'গুড বয় ইমেজ'। আখিরাতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে দুনিয়ার অর্জনগুলোতে ছাড় দেওয়া ছেলেটার শুনতে হবে---অমুক তো তোর মতোই নামায-রোযা করে, সে কি সব করছে না! কী করে বোঝাই, ঐ জীবন ফড়িঙের, ঐ জীবন জোনাকি পোকার। কী করে বোঝাই এই জীবনে পৃথিবীর ওপারে কিছুই নেই। কী করে বোঝাই আমি ঐ জীবন চাই না।"
কোন জীবন জোনাকির যে জীবন আপনার চাওয়া উচিত না?সেই জীবনের সন্ধান পেতে হলে ট্রেনের যাত্রী আপনাকেই হতে হবে!ট্রেন কিন্তু সামনেই আছে,আপনি বসার অপেক্ষায়....

ডক্টর আয়েয আলকরনীর বিখ্যাত দুটি বই আছে আমার সংগ্রহে।  আপনি সংগ্রহ করেছেন তো? রবিউল আওয়ালের এই মাসে জলদি সংগ্রহ করুন। সীর...
18/12/2023

ডক্টর আয়েয আলকরনীর বিখ্যাত দুটি বই আছে আমার সংগ্রহে। আপনি সংগ্রহ করেছেন তো? রবিউল আওয়ালের এই মাসে জলদি সংগ্রহ করুন। সীরাত বিষয়ক অন্যন্য গ্রন্থ 'মুলহিমুল আলাম'।
'যাঁর প্রেরণায় ধন্য পৃথিবী' আমার পড়া অন্যতম শ্রেষ্ঠ সীরাত। আপনি যদি ১০০টি সীরাতও পড়ে থাকেন তারপরও এই সীরাতটি আপনার চিন্তার নতুন দুয়ার খুলে দিবে। ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

একজন মুমিনের জন্য নামাজ পড়া যেমন ফরজ, তেমনই গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাও ফরজ। কিন্তু সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় আজকাল গু...
17/12/2023

একজন মুমিনের জন্য নামাজ পড়া যেমন ফরজ, তেমনই গুনাহ থেকে বেঁচে থাকাও ফরজ। কিন্তু সমাজের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় আজকাল গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চিন্তা অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই নেই। অনেকে তো জিকির, আযকার, তাসবিহ-তাহলিল, দুআ-দরূদ করার পাশাপাশিও গুনাহতে লিপ্ত থাকছে। অথচ গুনাহ মানুষকে ধ্বং/ স করে দেয়। আর গুনাহের মধ্যে অন্যতম হলো কুদৃষ্টি।
বক্ষ্যমাণ বইটি আমাদের দৃষ্টি সংযত রাখতে সহায়তা করবে, ইনশাআল্লাহ। বইটিতে মোট চারটি অধ্যায় রয়েছে। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ অধ্যায়ের আলোচনা শাইখুল ইসলাম মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানি দামাত বারাকাতুহুমের তিনটি বয়ানের অনুবাদ। যেখানে দৃষ্টিশক্তির নেয়ামত সহ চোখের যেনা, শয়তানের
আ/ক্রমণ, কুদৃষ্টির মহামারী, পাশ্চাত্য সভ্যতা, সীমালংঘনকারীর পরিমাণ, নজর হেফাজত, নবী ইউসুফের আদর্শ অবলম্বন পন্থা, দুনিয়াবী উদ্দেশ্যে দুআ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা এসেছে। আর প্রথম অধ্যায়টি মুহাম্মাদ ইমদাদুল্লাহ সংকলন করে সংযোজন করেছেন। এই অধ্যায়ে পাঁচটি পরিচ্ছেদে কুরআনের আয়াত, হাদিসের বর্ণনা, সালাফের বক্তব্য, জালিম পাপীচারীদের দিকে তাকানো এবং কুদৃষ্টির বিধান নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বইয়ের কাভার নজর কাড়া। পেপার কোয়ালিটি উন্নত মানের। বাঁধাইও খুব ভালো৷ সময়োপযোগী এই গুরুত্বপূর্ণ বইটি সকলের পড়া উচিত।
©
বই: দৃষ্টি সংযত রাখুন
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৮০
প্রকাশনী: মাকতাবাতুল আরাফ

 নিস্তব্ধ গভীর রাত। গোটা দুনিয়া ডুবে আছে এক নিশ্চুপ, নিরুপদ্রব নীরবতায়। চারপাশে সবাই গভীর ঘুমে অচেতন। এমন সময় আপনার ঘুম ...
25/11/2023



নিস্তব্ধ গভীর রাত। গোটা দুনিয়া ডুবে আছে এক নিশ্চুপ, নিরুপদ্রব নীরবতায়। চারপাশে সবাই গভীর ঘুমে অচেতন। এমন সময় আপনার ঘুম ভাঙলো। ঘড়ির কাঁটা জানান দিচ্ছে রাত তার শেষ প্রহরে উপনীত। চাইলে কাঁথা মুড়ি দিয়ে আপনি আবার ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। চাইলেই বেজে উঠা অ্যালার্মটাকে বন্ধ করে বালিশ-চাপা দিয়ে শুয়ে পড়া যায়। আরেকটু ঘুমোলে, আরামের বিছানায় আর একপ্রহর বাড়তি কাটালে দুনিয়ার কে আপনাকে দোষারোপ করবে?

কিন্তু, আপনি ঘুমোলেন না। উঠে বসে গেলেন বিছানায়। ঘুমে প্রায় জড়িয়ে আসা চোখ দুটোকে সজাগ রাখার আপনার সে কী প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা!

আপনি ঘুমোচ্ছেন না, কারণ শেষ রাতে আপনার একটা অ্যাপয়েন্ট নেওয়া আছে। জায়নামায বিছিয়ে আপনাকে দাঁড়াতে হবে আসমান আর যমিনের রবের সম্মুখে। কতো কথা যে তাঁকে বলবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন তার ইয়ত্তা নেই! মধুর প্রার্থনায় ডুবে যেতে যেতে ‘আল্লাহুম্মাগফিরলি’ বলে যখন শ্বাস নেবেন, তখন টপটপ করে দু’ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়বে জায়নামাযে। সে পরম অশ্রুসিক্ত ভালোবাসা!

কী সুন্দর এই অভিজ্ঞতা, তাই না? প্রতিটি রাতের শেষ প্রহরে, এমন মধুর অভিজ্ঞতায় সিক্ত হতে আমাদের কার না মন চায়, বলুন! কিন্তু, প্রবৃত্তির শেকল ভেঙে সেই অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ আমাদের খুব কমই ভাগ্যে জোটে। অথচ, রাতের সাথে প্রার্থনার এই গভীর মিতালিই আমাদের জীবনের সবচেয়ে আনন্দময় অনুষঙ্গ। আমাদের বড়রা, অর্থাৎ সালাফে-সালেহিনদের জীবনে গভীর রাত মানেই ছিলো জায়নামাযে দাঁড়িয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার নৈকট্য লাভে মশগুল হয়ে যাওয়া। তাহাজ্জুদ ছিলো তাদের জীবনের নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা—খাওয়া আর ঘুমোনোর মতোই।

বড়দের সেই গল্পগুলো হয়ে উঠতে পারে আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। কতো ওতপ্রোতভাবে তাহাজ্জুদ তাদের জীবনে জড়িয়ে ছিলো, কতোটা চাতক পাখির মতো তারা রাত্রির অপেক্ষা করতো তাহাজ্জুদে দাঁড়ানোর জন্যে, তাদের কী গভীর মিতালি ছিলো রাতের সাথে—সেসব ঘটনাকে প্রখ্যাত দাঈ ড. সাইয়্যেদ হুসাইন আল আফফানি হাফিজাহুল্লাহ একটা মলাটে একত্র করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা উত্তম বদলা দিন শাইখকে।

নবিদের তাহাজ্জুদ, সাহাবিদের তাহাজ্জুদ, উম্মুল মুমি’নীনদের তাহাজ্জুদ, তাবেয়ী, তাবে-তাবেয়ীদের তাহাজ্জুদের ঘটনা দিয়ে সাজানো এই বইটি ইন শা আল্লাহ আমাদের জীবনে ভীষণভাবে পরিবর্তন আনবে এবং গভীর রাতে জায়নামাযে দাঁড়াতে আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, ইনশা আল্লাহ।

সুকুন পাবলিশিং ‘যেমন ছিল বড়দের তাহাজ্জুদ’ নামে বইটিকে বাংলাভাষী পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজে নিয়োজিত আছে, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা যেন আমাদের জন্য সহজ করেন, আমাদের পক্ষ থেকে কাজটি কবুল করেন এবং ভুলত্রুটিগুলো মাফ করে অফুরান বারাকাহ দান করেন। আমীন।

হিদায়াত এমন কোনো বিষয় নয় যে নিলামে বসে কিছু বছরের জন্য কিনে নিলে! হিদায়াতের উপর টিকে থাকাকে তোমার পিতার রেখে যাওয়া সম্পত...
21/11/2023

হিদায়াত এমন কোনো বিষয় নয় যে নিলামে বসে কিছু বছরের জন্য কিনে নিলে! হিদায়াতের উপর টিকে থাকাকে তোমার পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তি মনে করো না যে, পিতা মারা গেলেও আইন অনুযায়ী তুমি তার মালিক হয়ে যাবে।
হিদায়াত এমন বিষয়। এটা চিরকাল তোমার থাকবে এমন কোনো কথা নেই। এটা ধৈর্য্য আর তাকওয়ার জিনিস। এখানে দাঁতে দাঁত চেপে আল্লাহর সিদ্ধান্তের উপর শক্ত হয়ে জমে থাকা চাই। এখানে এমন সময় আসবে কোনো কিছু তোমার পক্ষে থাকবে না,কেউ তোমার পাশে এসে দাঁড়াবে না,কেউ তোমাকে রক্ষা করবে না।তুমি অবিচল থেকো। বিনিময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য রয়েছে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি।

যে জীবন ফড়িঙের যে জীবন জোনাকির বই হতে🌸
লেখক : সাজিদ ইসলাম

#বাবর

Address


Telephone

+8801827003801

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Babor posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Babor:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share