09/08/2025
#প্রি_অর্ডার
বানু মুশতাকের হার্ট ল্যাম্প (Heart Lamp)— শুধুই একটা বই নয়, বইটির সিলেক্টেড ১২টি গল্প যেন ১২টি সিগন্যাল ল্যাম্পের সারি!
এই সংকলনের প্রতিটি গল্প একেকটা স্টেথোস্কোপ। আপনি পড়লে শুনতে পাবেন কোনও এক মহিলার বুকের ভেতরের শব্দ—'স্বামী মা_রছে', 'মা বলছে সহ্য কর', 'মসজিদে জায়গা নেই', 'বংশের মান'—এইসব সংলাপ, যা খুব হাল্কা কাগজে !
তাঁর গল্প শুধু গল্প নয়, একেকটা মামলার কেস ফাইল। একেকটা ‘রিপ্রোডাকটিভ রাইটস’ নিয়ে লেখা চরিত্র। কেউ কিশোরী, কেউ বিধবা, কেউ তালাকপ্রাপ্ত, কেউ অদৃশ্যপ্রায়। তাঁদের শরীর, সিদ্ধান্ত, এবং সন্তানের নাম রাখা—সবই পুরুষেরা ঠিক করে দেয়। বানু সেই গল্পগুলো লেখেন, যা কোনোদিন আদালতের ডায়েরিতে উঠবে না, কিন্তু আদালতের কাঠগড়ায় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকবে।
শুরু করি বানুর পরিচয় দিয়ে। বয়স ৭৬, আইনজীবী, সমাজকর্মী, বিদ্রোহী লেখক।
তাঁর গল্পগুলো মফস্বলের মসজিদ গলি, ডিভোর্সের শুনানির দিন, কিংবা কোনও নারীর গর্ভপাতের আগের রাতে জন্ম নেয়। বানু বলেন—“আমি সেই জগৎ নিয়েই লিখি, যেটার গন্ধ আমি চিনি, যা আমাকে রোজ আঘাত করে আর গোপনে ভালবাসে।” আর এই জগৎটা কেমন? ওখানে ধর্মের টুপি পরে পুরুষেরা নারীদের মুখ চাপা দেয়, ইমাম সাহেবদের মুখে ‘অধিকার’ শব্দটা নেই, কিন্তু কোরআনের ব্যাখ্যায় তারা পিএইচডি। ওদিকে রাস্তায় দাঁড়ানো এক গৃহবধূ জানেন না—তিনি প্রথমে নাগরিক, নাকি শুধুই ‘বেগম’।
গল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি গল্প "কাফন"
এই গল্পের একটি অংশ দুটি লাইন,
"গরীব লোকদের পকেটের টাকা ঠিক ওদের মতোই, ভাঙাচোরা, দোমড়ানো, মোচড়ানো, কুঁচকানো, রূপ-রস ধ্বংসপ্রাপ্ত।"
গল্পের মধ্যে একটার নাম Taste of Heaven, যেখানে এক শিশু-বিধবা পেপসিতে লিপস্টিকের বদলে স্বামীর সাথে পুনর্মিলনের স্বপ্ন মাখে। আরেকটা গল্প The Red Lungi—এখানে সদ্য সদ্য সংবেদনশীল পুরুষরা হয়তো ‘ওফ! চমৎকার প্রতীকী গল্প!’ বলে হ্যাশট্যাগ দিতে গিয়েই পড়ে যাবে, কারণ গল্পের শেষে শারীরিক এবং সামাজিক কেটে-ফেলার মধ্যে পার্থক্য খুঁজে পাওয়া যায় না।
Be a Woman Once, Oh Lord গল্পে তো এক মহিলা সৃষ্টিকর্তাকে বলেন, “একবার মহিলা হয়ে জন্মাও বাবা, তারপর বুঝবে ছুটির দিনে রান্না করা কী জিনিস!”… চিঠিটা পোস্ট না হলেও স্বর্গের পিওন নাকি কান্না করে ফেলেছে।
গল্পে বানুর নারীরা সব সময় হার মানেন না, আবার জয়ও পায় না। তারা ‘টিকে থাকেন’। যেটা একরকম বিপ্লবই, যেখানে মৃত্যু নয়, বেঁচে থাকাটাই যুদ্ধ। কেউ নিজের গর্ভের মালিকানা দাবি করেন, কেউ স্বামীর ঘর ছেড়ে নিজের ঘরের দেয়াল রং করেন। সেই সব গল্পে একটা শব্দ ঘোরাফেরা করে—"নিয়ন্ত্রণ"। অর্থাৎ, নারীরা কী খাবে, কী পরবে, কখন যৌ*নমিলনে রাজি হবে—এসবের চাবিকাঠি কে রাখবে?
ভাষার ধরনে কোন অলঙ্কার নেই, ব্যঙ্গের বাজনা বাজে না, শুধু কাচা সত্যের ধূপকাঠি। বানু মুশতাক গল্প লেখেন যেমন কেউ সিঙ্গার সেলাই মেশিনে চোখে জল মাখা সুতোর ওপর দিয়ে কাটা কাপড় টেনে দেয়। দীপা বাস্থি অনুবাদে কান্না রেখে দেন, কিন্তু কাঁদতে বলেন না। কান্না না এলে, পাঠক হয় স্টোন স্ট্যাচু, নয় তো বুকার কমিটির সদস্য।
আর গল্পগুলো? এমনভাবে সাজানো, যেন কেউ বলছে, “দ্যাখ, তুই যদি আমার বোনকে ‘মৌ_ল_বাদী সমাজে মিউট চরিত্র’ বলে ভাবিস, তবে তোর ছেলেবেলার প্লাস্টিক গ্লাসে দুধ খাওয়ার স্মৃতিও আমি বদলে দেবো।”
তবে পাঠকবর্গ দুই দলে বিভক্ত। একদল গল্প পড়ে ভাবে, “ওফ, সাহসের গল্প!” আরেক দল ভাবে, “আচ্ছা, এ গল্পটা আগেও কি পড়িনি?” মানে repetition আছে, যেমন আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের প্রতিশ্রুতি।
বইয়ের সংস্করণের কভার ডিজাইনেও নারীবাদ আছে—পেঁপে নয়, ডা_লিম! হ্যাঁ, বইয়ের কভারে ডা_লিম। মানে নারীর ভেতরের ভাঙনের প্রতীক, কিংবা ডিএনএ-র অনুচ্ছেদ, যা বলে, “এখানে শুধু সন্তান ধারণ নয়, বিদ্রোহ ধারণ হয়।”
বইটি পড়লে আপনি ‘feminist’ হবেন না। আপনি শুধু কিছুক্ষণের জন্য মানুষ হবেন। এই বইটি যে শুধু নারীর গল্প তা নয়, এটা পুরুষের গল্পও—মানে, কেমন করে তারা প্রতিদিন মন্দিরে পুজো দিয়ে কিংবা মসজিদ থেকে ফিরে এসে স্ত্রীর উপর হাত তোলে।
Heart Lamp এক চিমটে ঈশ্বর, দুই চামচ অভিশাপ, আর বাটি ভরা বাস্তব, যা আপনি খেতে না চাইলেও মুখে পুরে দেয়।
বানু মুশতাক লেখক নন। তিনি সেই বুড়ো জাদুকর, যিনি নিজের শিরদাঁড়া ভেঙে মেয়েদের জন্য কাঁটায় বসে এক একটা গল্প বানান, যেন মসজিদের শীতল পাথরে একটু কোমল গালিচে বিছিয়ে দিতে পারেন।
এই বইটা একটা পাঠ নয়। এটা একপ্রকার প্রতিশোধ! কে জানে, হয়তো কোনোদিন 'Heart Lamp'-এর গল্পগুলো স্কুলের পাঠ্যক্রমে ঢুকবে না। তবে একটা মেয়ে হয়তো লুকিয়ে পড়বে। আর কেউ হয়তো হাতের লেখায় পাশে লিখে রাখবে, “আমি শুধু বাঁচতে চেয়েছিলাম। গল্প হয়ে গেলাম।”
প্রথমবারের মত বইটির পূর্ণাঙ্গ বাংলা অনুবাদ আসছে!
বইয়ের নাম : হার্ট ল্যাম্প (সিলেক্টেড স্টোরিজ)
মূল লেখক: বানু মুশতাক।
অনুবাদ: ফয়জুন নাহার রুমা।
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৯২
প্রকাশক: তরফদার প্রকাশনী।
বইয়ের বাঁধাই ধরন: হার্ড কভার।
মুদ্রিত মূল্য: ৪০০ টাকা।
🌿৫৫% ছাড়ে প্রি-অর্ডার মূল্য মাত্র: ১৮০ টাকা।
অর্ডার করতে ইনবক্সে নক করুন অথবা Whatsapp করুন 01717-247566 নাম্বারে।