09/11/2022
#ডেঙ্গু জ্বর ও ডেঙ্গু জ্বরে করনীয়
সাধারনত সর্দি -জ্বর,বছরে দুই একবার হয়েই থাকে তাছাড়া জ্বরের সাথে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়াও থাকতে পারে। কিন্তু হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই অন্য কোনো উপসর্গ ছাড়া যদি জ্বর তাহলে একেবারেই অবহেলা করা উচিত নয়।
ডেঙ্গু কোনো সংক্রামক রোগ নয়,ডেঙ্গু বলা হয়ে থাকে ডেঙ্গু জ্বর স্বাভাবিকভাবেই ভাল হয়ে যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হিতে পারে আর ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বর মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তবে ডেঙ্গু জ্বর হলেই সম্পর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে এমনকি প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্ম থেকেও বিরত থাকতে হবে।
ডেঙ্গু জ্বরের সময়কাল : সাধারণত জুন -জুলাই থেকে অক্টোবর -নভেম্বর পর্যন্ত এডিস মশার বিস্তার ঘটে তাই এই সময় ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থাকে।
ডেঙ্গু মশা কখন কামড়ায় - ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা অন্ধকারে কামড়ায় না। সাধারণত সকালে এবং বিকেলে বিশেষ করে সূর্য ডোবার আগ মূহুর্তে এডিস মশা তৎপর হয়ে উঠে। তাই দিনে রাতে যখনই ঘুমাবেন মশারী ভেতর ঘুমাবেন।
এডিস মশা কোথায় জন্মায়: সাধারণত এডিস মশা স্বচ্ছ পানিতে ডিম্ পারে। বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় ফলের টবে জমে থাকা পানিতে, নির্মাণাধীন ভিবনের বিভিন্ন পয়েন্টে ,রাস্তার পাশে পরে থাকা টায়ার কিংবা অন্য যেকোনো পাত্রে জমে থাকা পানিতে এডিস মশা বংশ বিস্তার করে।
সতর্কতার পরেও যদি কোন কিছতে জমে থাকা পানিতে নিচের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এমন কিছু দেখতে পাওয়া যায় তাহলে পানি শুধু ফেলে দিলেই হবে না পানিতে জন্মানো মথগুলো গরম পানি ঢেলে মেরে ফেলতে হবে কারণ বেসিনে ফেলে দিলে খোলা ড্রেন এ যেয়ে সেখান থেকে আবার বংশ বিস্তার করতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও উপসর্গ :
১.তীব্র জ্বর
২. মাথা, মাংসপেশি,চোখের পেছনে ,পেটে এবং হাড়ে ব্যথা বিশেষ করে মেরুদণ্ডে ব্যথা।
৩. অরুচি ,বমি বমি ভাব ও বমি এবং পাতলা পায়খানা হতে পারে।
৪. শরীরে হামের মত দানা ও চুলকানি হতে পারে।
৫.রক্তচাপ হ্রাস ও নাড়ির গতি দ্রুত হওয়া।
৬.চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ,চোখে রক্ত জমাট বাধা।
৭. দাঁতের মাড়ি ,নাক ,মুখ দিয়ে রক্তপাত।
৮.ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরের জ্বরের ক্ষেত্রে শরীরের অন্তঃস্থিত বিভিন্ন অঙ্গপ্রতঙ্গ হতে রক্তক্ষরণ হয়, প্রস্রাব ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্তপাত এবং পেটে ও ফোসফোসে পানি জমতে পারে।
প্রাথমিক ব্যবস্থাপনা :
জ্বরের প্রথম ২৪ঘন্টার মধ্যে ডেঙ্গু এনএস ১ পরীক্ষা পজিটিভ হয় এবং সিবিসি পরীক্ষায় প্লাটিলেট এর সংখ্যা দেড় লাখের কম হয় তাহলে নিস্চিত ডেঙ্গু জ্বর বলে গণ্য হয় সেক্ষেত্রে ২-৩দিন বাসায় অবস্থান করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে যেমন-
১. প্রথমেই দ্রুত জ্বর কমানো একান্ত জরুরী এর জন্য মাথায় পানি দেওয়া, ভেজা কাপড় দিয়ে গা মুছে দেওয়া ও প্যারাসিটামল খেতে হবে।
২.প্যারাসিটামল ব্যতীত কোনো অবস্থাতেই এসপিরিন বা ব্যথানাশক কোনো ওষুধ খাওয়া যাবে না।
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে প্রচুর পরিমানে তারল ও তরল জাতীয় খাবার যেমন ডাবের পানি,লেবুর শরবত,ফলের জুস্ এবং খাবার সেলাইন গ্রহণ করতে হবে।
৩. এককাপ পেঁপে পাতার জুসে এক চাচামচ মধু মিশিয়ে সকাল বিকাল খালি পেটে পান করা যেতে পারে। এতে রক্তের প্লাটিলেটের পরিমান কমে যাওয়ার গতি ধীর হবে তবে প্রতিদিন সিবিসি পরীক্ষা করে প্লাটিলেটের সংখ্যা দেখতে হবে।
৪. পেঁয়ারা ও পুদিনা পাতা একসাথে জুস্ তৈরী করে পান করা যেতে পারে এতে সংক্রমণের জ্বর কমতে পারে আর প্লাটিলেটের সংখ্যাও বাড়াতে পারে।
৫. তুলসী পাতা ও গোলমরিচ দেড় কাপকাপ পানিতে ফোটিয়ে এক কাপ হলে নামিয়ে এক চাচামচ মধু মিশিয়ে ঠান্ডা হলে পান করা যেতে পারে।
৬. ডেঙ্গু জ্বরের ২-৩ দিন পর প্লাটিলেটের সংখ্যা যদি ১লক্ষ বা ৮০ হাজারের নিচে নেমে আসে তাহলে অবশ্যই কোন সরকারী হাসপাতাল বা ভাল কোন বেসরকারী হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যোগাযোগ করতে হবে। সর্বোপরি অধিক জ্বর হলে নিকটস্থ হাসপাতালে এসে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।