15/04/2024
# এম ভি আবদুল্লাহ এবং মুক্তিপণ
মুক্তিপণ নিয়ে অনেক জলঘোলা করা হচ্ছে।
গতকাল বাংলাদেশ সময় আনুমানিক দুপুর আড়াইটার দিকে ছোট সী প্লেনটা মুক্তিপণ এর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ডলার, ৩টা বড় বড় ওয়াটারপ্রুফ ব্যাগে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের পাশেই সমুদ্রে নিক্ষেপ করে।
ছোট ছোট স্পিড বোটে করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা সেই ডলার ভর্তি ব্যাগগুলো পানি হতে তুলে নেয়। এই ভিডিওটা ইতিমধ্যে ভাইরাল এবং সবাই দেখেছে।
ভিডিওটা কোন নাবিক তুলেনি। ২৩ জন নাবিক সারিবদ্ধভাবে জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে ছিল যেন প্লেনের পাইলট দেখতে পারেন সবাই অক্ষত আর নিরাপদ আছে।
ভিডিওটা করেছে সোমালিয়ার ইন্টারপ্রেটার, যে এই মুক্তিপণ নেগোসিয়েশন টিমের লিডার ছিল। সে ভিডিওটা করে শিপিং কোম্পানিকে পাঠিয়েছে।
ডলারের ব্যাগগুলো জাহাজে নিয়ে এসে জলদস্যুরা নিজ হাতে গুনেছে কয়েকঘন্টা ধরে। এরপর ভাগাভাগি করে সন্তুষ্ট হয়েছে। এসময় শুরু হতে শেষ পর্যন্ত কাজ করা সব জলদস্যু জাহাজে যোগ দিয়েছিল যার যার ভাগ বুঝে পাওয়ার জন্য৷ তাদের মোট সংখ্যা আনুমানিক ৬৫ জন। তারপর মধ্যরাতে ৯টা স্পিডবোটে করে সবাই জাহাজ ত্যাগ করেছে।
মুক্তিপণ সরকারও দেয়নি, শিপিং কোম্পানিকেও দিতে হয়নি। মুক্তিপণ দিয়েছে ইন্সুরেন্স কোম্পানি। কোম্পানি "কিডন্যাপ এন্ড র্যানসম" ইন্সুরেন্সের অধীনে এতবছর ধরে প্রিমিয়াম দিয়ে আসছিল।
এটা কোন সরকারী নাটক ছিল না। সোমালিয়ার জলদস্যুদের উপরে অন্তত বাংলাদেশের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। আগের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে KSRM ম্যানেজমেন্ট এবার দ্রুত মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজ আর নাবিকদের মুক্ত করেছেন। তবে অন্যান্য জলদস্যুরা উৎসাহিত হতে পারে এই আশংকায় উনারা মুক্তিপণের অংক প্রকাশ করতে অনাগ্রহী। উনাদের এই সিদ্ধান্তে আমিও একমত।
২০ তারিখ দুবাই পৌঁছাবে জাহাজ। তবে নাবিকরা জাহাজে কন্ট্রাক্ট শেষ হওয়া পর্যন্ত থাকবে নাকি দুবাই হতে ফিরে আসবে এটা নাবিকরা যে যার সিদ্ধান্ত সে নিবে। জানা যাবে ২-৩ দিনের মধ্যে। কোম্পানি চাইতেই পারে যেন কয়েকজন পুরানো নাবিক কন্ট্রাক্ট পুরো শেষ করে আসেন। এতে জাহাজ ম্যানেজ করা সহজ হয়। যদিও সবাই জাহাজে কাজ করার মত মানসিক অবস্থায় আছে কিনা সেটাও যাচাই করে দেখা দরকার।
দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা দেখলাম, মুক্তিপণ ছাড়াই রাষ্ট্রীয় আর আন্তর্জাতিক চাপ দিয়ে জাহাজ মুক্ত করেছেন, এমন দাবী করছেন।
তবে কি ডলারের ব্যাগগুলোতে জলদস্যুদের জন্য যাকাতের শাড়ি আর লুঙ্গি ছিল? 🙄
Capt. Atique Ua Khan
BMA 27th