24/06/2024
-আমাদের তরুন সমাজ
মানুষের সভাব জাত প্রক্রিয়া হচ্ছে ঝামেলা মুক্ত, অভাব মুক্ত ও অমুখাপেক্ষী ভাবে জীবন যাপন করা, কিন্তু এটা যে কখনো সম্ভব নয় সেটা মানুষ জানে তাও এ-ই রকম একটা জীবন সবাই পেতে চায়। সবাই চায় তারা কোনো প্রকারের ঝামেলা ছাড়াই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে।
কিন্তু ঝামেলা মানব সমাজের নিত্য সঙ্গী, এমন কোনো মানুষ নাই যাকে কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। বেচে থাকার তাগিদেই মানুষকে নানা ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয়। এ-র সমস্যা থেকে নিস্তারের জন্য মানুষকে সাহায্য নিতে হয়। সাহায্যটা হতে পারে আর্থিক, মানসিক ইত্যাদি ইত্যাদি।
তরুন সমাজ তাদের জীবনের উষা লগ্নে অনেক ধরনের সমস্যায় পতীত হয়। যা তাদের পরিবারের সাথে সচরাচর শেয়ার করে না বা করতে চায় না। বাঙালি পরিবারও তাদের সন্তানদের ঐ সময় কার সমস্যা গুলো বুঝতে চায় না। ফলে তরুন সমাজ তাদের সমস্যার সামাধানের জন্য বিভিন্ন মোটিভেশান স্পীকারের ধারস্ত হয়। কিভাবে জীবন সমস্যার সামাধান পাবে, কিভাবে তাদের মনের সুপ্ত খায়েশাত পুরন করতে পারবে এ-ই সব বিষয় গুলো নিয়েই মুলত তরুন সমাজ বেশি এক্সাইটেড থাকে এবং এ-ই বিষয় গুলোর সহজ সামাধান খুজে। এ-ই সুজোগ কে কাজে লাগিয়ে মোটিভেশনাল স্পীকার গুলো খুলে বসেছে জ্ঞ্যান বিতরণ ব্যবসা। তারা জীবনে উন্নতি, পড়া লেখায় ভালো করা থেকে শুরু করে আরো অনেক আকর্ষণীয় বিষয় গুলোকে রসকস মিশিয়ে উপস্থাপন করতো, ছাত্র জনতাও সেগুলো গোগ্রাসে গিলে।
কচি হৃদয় গুলোতে তথা কথিত বড় ভাইয়া বা মোটিভেশোনাল স্পীকাররা এমন কিছু স্বপ্ন অনুপ্রবেশ করিয়ে দেয় যা তরুনদের মোটিভেট করা তো দুরে থাক বরং ডিমোটিবভেট করে দেয়। সিক্স ডিজিট বেতনের চাকরি না করলে জীবন বৃথা, আমি এ-ই করেছি সেই করেছি, আমি পারলে তুমি পারবে না কেনো?? যত সব ফালতু কথা বার্তা বলে তাও টাকার বিনিময়ে। এক প্রকারের মোটিভেশন ব্যাবসা। এভাবে তারা বিশাল ফেসভ্যালু তৈরি করে হাজার হাজার ফ্যান বানায়। যারা তাদের পোস্টে লাইক কমেন্ট শেয়ার করে। এই ফ্যান দের কে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার করে তাদের আসল উদ্দ্যেশ্য কে সামনে নিয়ে আসে ধীরে ধীরে জাহালাত প্রচার করতে থাকে সমাজে ও তাদের ফ্যান দের কাছে।
তাদের অনুসারীরা তাদের আসল উদ্দ্যেশ্যে বুঝতে পারে না তাই তারা তাদের কে সাপোর্ট দিয়ে যায়, এ-র ফলে সমাজে জাহালাত সহজেই সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়, এক প্রকার নিরব বিপ্লব। আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন।
জাহিলিয়াত যারা ছড়ায় তাদের সব দিক থেকে কেমন জানি একটা আলাদা ব্যাকআপ থাকে তারা পার পেয়ে যায়,কিন্তু তারা যে জাহিলিয়াত এ-র বীজ বুনে সেগুলো চর্চা হতে থাকে, এ-ই মোটিভেশনাল স্পীকার দের মধ্যে কেউ কেউ আবার ধর্ম কর্মও করে এবং ধর্মীয় বিষয় গুলো নিয়ে মন্তব্যও করে, যার ফলে তাদের জাহালাত সবাই ধরতে পারে না।
আমাদের অবস্থা এত শোচনীয় যে আমরা সত্য-মিথ্যা, হক-বাতিল, ভালো-মন্দ আলাদা করতে পারিনা এ-র ফলে জাহিলিয়াত আমাদেরকে জাপ্টিয়ে ধরে। তথা কথিত বড় ভাইদের আমরা আইডল মানি।
নিস্তারের উপায় কি?? আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি? এ-ই ধারা কি অব্যাহত চলতে থাকবে? আমাদের কি কিছুই করার নাই??
আছে কিন্তু আমরা যারা তুলনামূলক ধর্মচর্চা করি তারা এ-ই মোটিভেশনাল স্পীকার দের বিকল্প আরো একজন কে নিয়ে আসতে পারি নাই। এককথায় জাহিলিয়াতের সম্মুখে আমরা এন্টিজাহিলিয়াত মুভমেন্ট করতে পারি নাই, কারণ আমরা নিজেদের নিয়েই ব্যাস্ত থাকি। হাহ ।
✍আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ