মুক্ত মঞ্চ

  • Home
  • মুক্ত মঞ্চ

মুক্ত মঞ্চ welcome to my page
(1)

03/07/2025

বাবার রুমের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম।হঠাৎ মনে হল একটু বাবার রুম থেকে ঘুরে আসি।অনেকদিন হল বাবার রুমে যাওয়া হয় না।বিয়ের পর থেকেই বাবার সাথে আগের মত সময় কাটানো হয় না।শুক্রবারে সময় পেলেই বউকে নিয়ে ঘুরতে চলে যায়।বাবা গেছেন কিছু ঔষধ আনতে।আমি বাবার রুমে ঢুকে দেখি রুমটা খুব এলোমেলো।খুব অগোছালো।ঠিক যেমন একটা ছোট্ট বাচ্চার রুম।বাবার বয়স হয়েছে।শরীরটারও দিন দিন অবনতি ঘটছে।আমার সাথে তার অনেকদিন কথাতো দূরে থাক তার চেহারাটাও দেখি না।সারাদিন অফিস করে রাত করে বাসায় আসি।এসে খেয়ে দেয়ে ঘুমায় পড়ি।সকালে উঠে আবার অফিসে চলে যায়।বাবাকে নিয়ে ভাবার সময় আমার নাই।আমি জুইকে ডাক দিলাম।জুই বাবার রুমে এসে বলল,
-কি হয়েছে এতো চিৎকার করছো কেনো??
-বাবার রুমটা এত অপরিষ্কার আর অগোছালো কেনো??
-তো আমি কি করবো??
-কি করবে মানে?তোমাকে না বলেছি বাবার যত্ন নিতে।
-আমি কি প্রতিদিন শুধু ওনাকে নিয়ে পড়ে থাকবো নাকি।যত্তসব।বাড়ির আরো অনেক কাজ আমাকে করতে হয়।
-তাই বলে বাবার যত্ন নিবে না।
-কেনো?ওনাকে সময় মতো খাওয়াচ্ছি।সময় মতো ঔষধ দিচ্ছি এসব কি যত্ন নেওয়া না।
আমি কিছু বলিনি আর।জানি ওকে কিছু বলে লাভ হবে না।ও এমনই।খুব জেদি।ভালোবেসে বিয়ে করেছি।তাই এসব সহ্য করতে হচ্ছে।জুই চলে গেলো রান্নাঘরে।আমি চুপচাপ বাবার ঘর পরিষ্কার করতে লাগলাম।।রুমটা পরিষ্কার করার সময় চোখ পড়লো টেবিলে রাখা খাতাটার উপর।বাবা খাতা দিয়ে কি করছে।কৌতুহল বেড়ে গেল কি আছে তা দেখার জন্য।আমি খাতাটা নিয়ে প্রথম পেইজটা খুললাম।প্রথম পেইজে লেখা আছে আমার ডায়েরি।লেখাটা পড়ে খুব অদ্ভুদ লাগলো।আমি পরের পেইজ খুলতেই দেখি।মায়ের একটা পুরানো ছবি।আর তার নিচে লেখা আছে কলিজা।বাবা মাকে অনেক ভালবাসতো।কিন্তু মায়ের মৃ&%ত্যুর পর বাবা খুব পাল্টে গেলেন।মা যখন মা&%রা যায় তখন আমি ইন্টারে পড়তাম।ঐসময় বাবা খুব ভেঙে পড়েছিলেন।আমি আর আপুরা মিলে অনেক কষ্টে বাবাকে সেই কষ্টটা ভুলাতে পেরেছি।আমরা তিন ভাই-বোন।আপুরা বড় আর আমি সবার ছোট।আমার আপুরা মানে ইরা আপু আর জান্নাত আপুর বিয়ে হয়েছে দুইবছর।তারপর থেকে বাবা আর আমি একা থাকি।জুই আর আমার বিয়ে হয়েছে ৬মাস হল।বাবা অনেক আগেই তার চাকরী থেকে রিটায়ার্ড হয়েছেন।আমি পরের পেইজটা উল্টালাম।সেখানে মাকে নিয়ে লেখা অনেক কবিতা আছে।আমি সব পড়ে একটু মুচকি হাসলাম।কয়েক পেইজ উল্টানোর পর লেখা আছে,
-আজ আমার ছোট্ট ছেলেটার বিয়ে।না ছোট্ট না অনেক বড় হয়েছে।সে এখন চাকরি করে।কাব্য এখন দ্বায়িত্ব নিতে শিখেছে।আজ তার বিয়ে।মেয়ে তার পছন্দের।আমি না দেখেই হ্যা করে দিই।আমার ছেলে মেয়ের আশা আমি কোনোদিন অপূর্ণ রাখিনি।তাই তাদের পছন্দ মতো সব করেছি।জুই মা দেখতে খুব মিষ্টি।দোয়া করি তারা যেনো সুখী হয়।
এভাবে কয়েক পেইজ পড়লাম সবগুলোতেই আমাকে নিয়ে লেখা।পরের পেইজ উল্টিয়ে দেখলাম,
-কাব্য এখন খুব ব্যস্ত।নিজের শরীরটাও দিনদিন অবনতি হচ্ছে।কাব্যের সাথে আগের মতো রাতের আকাশ দেখা হয় না।চায়ের দোকানে বসে আর চা খেতে খেতে বাপ-ছেলের আড্ডা দেওয়া হয় না।সারাদিন ঘরে বসে থেকে খুব বিরক্ত লাগে।তাই বউমাকে বলেছিলাম একটা ডায়েরি কিনে দিতে।কিন্তু বউমা আমাকে বলল,
-বাবা এই বয়সে ডায়েরি দিয়ে কি করবেন??
-কিছু না।একটু লিখালিখি করতাম।
-এত টাকা দিয়ে ডায়েরি না কিনে।অল্প দামে কিছু খাতা কিনে লিখলেই তো হয়।আমি কিছু না বলে খাতা কেনার টাকা নিয়ে নিলাম।এখন খুব লজ্জা হয় বউমার কাছ থেকে টাকা খুজতে।গতমাসে ঔষুধের টাকা খুজতে গিয়ে অনেক বকা শুনতে হয়েছিল।বলেছিল,
-এত দামী ঔষুধ না খেয়ে অল্প দামী ঔষুধ খেলেই তো হয়।
আমি সেদিনও কিছু বলিনি।কিছু কিভাবে বলব।কাব্যকে বললে সে ভাববে আমি মিথ্যা বলছি।সে তো আর আমার কথা ভাবে না।সে এখন নিজের ঘর সংসার নিয়ে ব্যস্ত।আমি চাই না তার সুন্দর সংসারটাকে নষ্ট করতে।এখন যে ঔষুধগুলো খাচ্ছি সেগুলো খুব সস্তা।তাতেও কষ্ট নাই।ছেলের সাথে আছি এইটাই যথেষ্ট।তবে বউমা আমাকে একটুও সহ্য করতে পারে না।আমি কিছু বললেই সে বিরক্ত হয়।কোমরের ব্যাথাটা বেড়েছে।বউমাকে ডাক্তার দেখাতে যাবো বলে কিছু টাকা চাইতে গেলে বউমা বলে,
-সব ঢং।
তাই আর কিছু বলিনি।বাধ্য হয়ে এই মাসের ঔষুদের টাকাটা বাঁচিয়ে রেখেছি।ডাক্তার দেখাতে যাবো বলে।কালকে বউমা বলেছিল আমি নাকি তাদের সংসারের বোজা।তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আজকে ডাক্তার দেখাতে যাবো।সেখান থেকে বাসায় এসে শেষবারের জন্য ছেলের মুখটা দেখে কালকেই বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাবো।
আমি আর পড়তে পারছিনা।চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে।যেই বাবা আমাকে সামান্য কষ্ট কোনোদিন পেতে দেই নিই।সেই বাবা আজ হাজারো কষ্ট ভোগ করছে।জুই এতটাই নিচ।ছিঃ নিজেকে ওর স্বামী বলতেই লজ্জা হচ্ছে।আমি চুপচাপ রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।কিছুক্ষণ পর বাবা ফিরে আসলো।এসে আমাকে দেখে বলল,
-বাবা আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
-কি বাবা??
-আমি কালকে বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাবো।আমাকে কি অফিসে যাওয়ার সময় আশ্রমে নামিয়ে দিবি।
-আচ্ছা বাবা।
কথাটি বলে বাবা চলে গেলো।আমাকে কিছু বলার সুযোগ দিল না।আমার পাশে জুই ছিল।সে খুশি হয়েছে।আমাকে বলল,
-যাক এতদিনে আপদ বিদায় হবে বলে মনে হচ্ছে।কি বল কাব্য।
আমি কিছু বললাম না।রাতে জুইকে বললাম,
-এই শোনো কালকে আমরা ছুটিতে যাবো কক্সবাজার।তুমি তোমার কাপড় চোপড় প্যাক করে রাখিও।
-সত্যি বলছো তুমি??
-হ্যা সত্যি।
জুই খুশি হয়ে রান্না করতে চলে গেলো।বাবা আমাদের সাথে খাইনা অনেক দিন হল।আজকে আসলো খেতে।জুই আব্বার পছন্দের খাবার বানিয়েছে।বাবাতো কাল চলে যাবে তাই।বাবা নিস্তব্ধে খেয়ে চলে গেলো।তার চোখের কোণে অশ্রুগুলো ঠিকই দেখতে পেরেছিলাম।সকালে রেডি হলাম।গাড়িতে আমি,জুই আর বাবা বসে আছি।প্রথমে গেলাম জুইয়ের বাড়িতে।জুইকে বললাম,
-তোমার ব্যাগটা নাও।আর চল একটু তোমার বাবার সাথে দেখা করে আসি।
-কিন্তু ব্যাগ কেনো??
-আরে চলই না।
আমি জুইয়ের বাসায় গেলাম।বাবাও আসলো।বাবাকে নিয়ে এসেছি।সোফায় বসে আছি।জুইয়ের বাবা-মা আমাদের দেখে বলল,
-কিরে জামাই সাহেব অসময়ে যে??
-জ্বি আপনাদের জিনিষ আপনাদের বুঝিয়ে দিতে এলাম।
-আমাদের জিনিষ মানে??
-আপনাদের মেয়েকে।
পাশ থেকে জুই বলল,
-কি বলছো এসব কাব্য??
-হ্যা ঠিক বলছি।আর শুন তোর মত নিচ মেয়েকে বউ হিসেবে না রেখে।আমি সারাজীবন বউ ছাড়াই থাকবো।আর আমি ডিভোর্সের পেপার পাঠিয়ে দিব।সাথে তোর পাওনা সব টাকাও।
বাবা পাশ থেকে আমাকে থা&%প্পড় দিয়ে বলল,
-ছিঃ কাব্য ছিঃ।তোকে আমি এজন্যেই মানুষ করেছি।নিজের বউয়ের সাথে কেউ এভাবে ব্যবহার করে।মাফ করবেন বেয়ান সাহেব।আমি কাব্যকে বুঝিয়ে বলবো সব।
জুইয়ের আব্বু আম্মু কিছু না বুঝে বলল,
-কাব্য বাবা কি হয়েছে খুলে বল??
বাবা হয়তো টের পেয়েছে।আমি বাবাকে বললাম,
-আব্বু তুমি গাড়িতে গিয়ে বস।আমি আসছি।
আব্বু যেতে রাজি না।বাধ্য হয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম,
-তোমাকে যেতে বলেছি যাও।
-আব্বু চলে গেলো।
তারপর জুইয়ের আব্বু বলল,
-জামাই সাহেব কি হয়েছে??আমার মেয়ে কি ভুল করেছে??
-কাব্য আমি কি করেছি??আমি তো তোমাকে অনেক ভালবাসি।
-চুপ কর তুই।তুর মতো মেয়ের মুখে ভালবাসি শুনতেই ঘৃণা লাগে।আর হ্যা আপনাদের মেয়েকে ভুলেও আমার চোখের সামনে যেনো না দেখি।
-আমার মেয়েটা কি করেছে সেটাতো বলো,
-কি করেনি সেটা জিজ্ঞেস করেন??যেই বাবা আমাকে এতটা বছর কষ্ট করে বড় করেছে।নিজে হাজারো কষ্ট সহ্য করে আমাকে মানুষ করেছে।নিজের কষ্টগুলোকে লুকিয়ে আমাদের ভাই-বোনের সুখের জন্য লড়াই করেছে।সেই বাবাকে আপনার মেয়ে আপদ বলে।বাবা শব্দটা মানে কি সেটা আপনার মেয়ে জানেনা।ওকে শিখিয়ে দিবেন।আর হ্যা জুই তুমিও শুনে রাখো,
-আমার বাবা তোমার কাছে আপদ।কিন্তু আমার কাছে সব কিছুর উর্ধে।আমার কাছে সবচেয়ে দামী।সবচেয়ে প্রিয়।
-জুই আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
-সরি কাব্য আমাকে ক্ষমা করে দাও।
-আমি পারবো না।ক্ষমা করা আমার পক্ষে সম্ভব না।তুমি বাবাকে আপদ মনে করো তাই না।বাবাকে এত কষ্ট দেওয়ার পর কিভাবে ভাবলে আমি তোমাকে মাফ করবো।তোমার জায়গা আমার মনেতো দূরের কথা আমার পায়ের নিচেও না।
আমি চলে আসলাম।গাড়ি স্টার্ট দিলাম।বাবা আমাকে বলল,
-কিরে বউমা কয়??
-ও আজকের পর আর আসবে না।বাবা আমাকে মাফ করে দাও।আমি ভুলে গিয়েছি।ভুলে গিয়েছি তোমাকে সময় দিতে।তুমিই আমার কাছে সব।
এখন আমি আর বাবা চায়ের দোকানে বসে বসে চা খাচ্ছি।আর আড্ডা দিচ্ছি।হুমম বাবার চোখে খুশির ঝলক দেখতে পাচ্ছি।অনেকদিন পর বাবা হাসছেন।তার হাসিমাখা মুখটা দেখি না অনেকদিন হল।তাকে হাসতে দেখে মনের মাঝে এক আনন্দের ঝড় বয়ে যেতে লাগলো।বাবা ভালবাসি।অনেক ভালবাসি তোমায়।।।

-------------সমাপ্ত------------

💞💞বাবা।💞💞
সংগৃহিত

02/07/2025
24/06/2025

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পিতা-পুত্র আটক, কী ঘটেছে সেখানে?

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পিতা-পুত্র আটক, কী ঘটেছে সেখানে?

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলা লালমনিরহাটের সদর থানার গোশলা বাজার এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বী দুই ব্যক্তিকে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে স্থানীয় একদল ব্যক্তি হেনস্থার পর পুলিশ তাকে আটক করেছে।

আটক ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে গণমাধ্যমকে বলেছেন, চুল কাটানোর পর টাকা কম দেয়া নিয়ে তর্কের জের ধরে ধর্ম অবমাননার মিথ্যে অভিযোগ তুলে ওই দুজনকে পরিকল্পিতভাবে হেনস্থা করা হয়েছে।

ওই দুই ব্যক্তি সম্পর্কে পিতা ও পুত্র এবং তারা পেশায় নরসুন্দর, যা বাংলাদেশে নাপিত হিসেবেই পরিচিত। তারা দুজনে দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে একটি সেলুন পরিচালনা করে আসছিলেন।

জেলার সদর থানা পুলিশ বলছে, ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করে একদল ব্যক্তি পরেশ চন্দ্র শীল ও তার ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীলকে হেনস্থা করার পর তারা ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে।

পরেশ চন্দ্র শীলের পুত্রবধূ দিপ্তী রানী শীল গণমাধ্যমকে বলেছেন তার শ্বশুড় ও স্বামী সম্পূর্ণ নির্দোষ। "তারা মিথ্যে অভিযোগ করেছে। আমার শ্বশুড় আমাকে নিশ্চিত করেছেন যে টাকা নিয়েই কথা কাটাকাটি হয়েছিলো তাদের মধ্যে," বলছিলেন তিনি।

এ ঘটনায় স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। ওই মসজিদের খতিব ও মামলার একজন সাক্ষী মোঃ জোবায়ের হোসেইন বলেছেন, "ওই দুই নাপিত নবীকে অসম্মান করে কথা বলেছেন। এর প্রত্যক্ষদর্শীও আছে"।

মামলার এজাহারে তাকে সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করা হলেও তিনি জানিয়েছেন যে, তিনি নিজে ও মামলার বাদী কেউই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নন। তারা অভিযোগকারী ব্যক্তি ও অন্যদের কাছ থেকে ঘটনাটি শুনে নিশ্চিত হয়েছেন।

"ইমাম সাহেব মামলা করেছেন কারণ অভিযোগকারীর সাথে তার ইমাম-মুসল্লি সম্পর্ক আছে," বলছিলেন তিনি।

রোববার এই হেনস্থা এবং আটকের ঘটনা ঘটলেও মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, 'ধর্ম অবমাননা'র ঘটনাটি ঘটেছিল তিনদিন আগে শুক্রবার।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ সাজু মিঞা বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তারা ইতোমধ্যেই অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছেন।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে ধর্ম অবমাননা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হয়।

যদিও গত কয়েক বছরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে অনেকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অনেকগুলোতেই ধর্ম অবমাননার অভিযোগ পরে আর প্রমাণ করা যায়নি।

বরং বেশ কিছু সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় বিভিন্ন সময়ে এধরণের অভিযোগ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে এসব হামলার পটভূমি তৈরি করা হয়েছে।

কী ঘটেছে সেখানে
লালমনিরহাট থানায় ঘটনার যে প্রতিবেদন হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, বালাটারী এলাকার মোঃ নাজমুল ইসলাম নামে এক তরুণ সেখানকার গোশলা বাজারে হানিফ পাগলার মোড়ে পরেশ চন্দ্র শীলের সেলুনে চুল কাটতে গিয়েছিলেন গত শুক্রবার।

মামলার অভিযোগে মি. ইসলামের বরাত দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে চুল কাটার সময় পরেশ চন্দ্র শীল তাকে নবী ও দাঁড়ি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।

এর এক দেড় মাস আগে সতের বছর বয়সী আরেক কিশোরকেও মি. শীল ওই ধরনের মন্তব্য করেছিলেন বলে মামলার বলা হয়েছে।

"পরে নাজমুল ইসলাম ও ওই কিশোর স্থানীয় মুসল্লি ও জনগণদের জানালে ২২শে জুন দুপুর সোয়া দুইটায় মুসল্লি ও জনগণ ওই সেলুনে গিয়ে পরেশ চন্দ্র শীল ও বিষ্ণু চন্দ্র শীলকে আটক করলে উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তাৎক্ষনিক খবর পেয়ে পুলিশ ওই দুই ব্যক্তিকে হেফাজতে নেয়," বলে পুলিশের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ সময় খবর পেয়ে যৌথ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানা গেছে।

পরে এ ঘটনায় স্থানীয় আল-হেরা জামে মসজিদের ইমাম মোঃ আব্দুল আজিজ বাদী হয়ে পরেশ চন্দ্র শীল ও তার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

ওই মসজিদের খতিব ও মামলার একজন সাক্ষী জোবায়ের হোসেইন বলেছেন, তারা স্থানীয়দের নিয়ে এ ঘটনার পর থানা ঘেরাও করেছিলেন।

ঘটনার তিন দিন পরে কেন লোকজন সেলুনে হামলা করলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার এবং সেদিন সবাই জুমার নামাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো।

"পরে দুজনের কাছ থেকে বিস্তারিত শুনে মুসল্লি ও স্থানীয়রা রবিবার সেলুনে গিয়ে তাদের আটক করে। এরপর পুলিশ ওদেরকে তাদের হেফাজতে নিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছে," বলছিলেন মি. হোসেইন।

কিন্তু আর কী জানা গেছে, পরিবার কী বলছে
পরেশ চন্দ্র শীলের পুত্রবধূ দিপ্তি রানী শীল বলছেন সোমবার তিনি তার শ্বশুর ও স্বামীর সাথে সাক্ষাত করেছেন।

"আমি আমার শ্বশুড়ের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। তিনি পরিষ্কার বলেছেন এ ধরনের কিছু হয়নি সেখানে। একটি ছেলে চুল কাটিয়ে টাকা কম দিয়ে যাচ্ছিলো। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে ছেলেটি পরে দেখিয়ে দিবো বলে হুমকি দিয়ে চলে যায়," বিবিসি বাংলাকে বলেছেন তিনি।

তিনি বলেন এরপর তারাই রোববার এসে দোকান ভাংচুর করে এবং তার শ্বশুরকে মারধর করতে শুরু করলে তার স্বামী বাধা দেয়। পরে দুজনকেই মারধর করে পুলিশে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অন্যদিকে ওই বাজারের আরও কয়েকজনের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, চুল কাটার সময়ে ধর্ম নিয়ে আলাপচারিতার সরাসরি কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি। পরেশ চন্দ্র শীল দীর্ঘদিন ধরেই সেখানে সেলুন চালিয়ে আসছেন। সে কারণে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করে যা ঘটেছে সেটি অনেককে বিস্মিত করেছে।

যদিও জোবায়ের হোসেইন বলছেন, ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন এমন কয়েকজন তাদের পরিচিত আছেন। তারাও ঘটনা সম্পর্কে তাদেরকে নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ পরিদর্শক সাজু মিঞা বলছেন, অভিযোগ ওঠার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুজনকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়। "এখন তদন্ত চলছে। স্থানীয় মুসল্লিরা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ করেছেন। আশা করি তদন্তেই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

ওদিকে দিপ্তি রানী শীল অভিযোগ করেছেন ওই ঘটনার পর তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। তবে কারা এই হুমকি দিচ্ছে সেটি তিনি জানাতে পারেন নি।
"আমি জানি না তারা কেন হুমকি দিচ্ছে। তবে বাড়িতে থাকতেই ভয় পাচ্ছি এখন," গণমাধ্যমকে বলছিলেন তিনি।

Address


Telephone

+8801741679930

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মুক্ত মঞ্চ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to মুক্ত মঞ্চ:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share