07/04/2025
ফিলিস্তিনিদের এই দুর্দশা দেখে আপনার কান্না পাবে, হতাশ লাগবে, ক্ষোভ হবে - সবই স্বাভাবিক।
কিন্তু আপনার যদি মনে হয় - আল্লাহ্ কই, আল্লাহ্'র অস্তিত্ব থাকলে এত বড় গণহত্যার পরেও তিনি নীরব কেন, অথবা ইসলাম সত্য ধর্ম হলে এত কোটি কোটি মুসলমানের দোয়া আল্লাহ'র কাছে পৌঁছছে না কেন; ইভেন আপনি যদি ভাইরাল হওয়া এই ধরনের পোস্টগুলোতে লাইকও দেন, তাহলেও বুঝবেন, ইমানের পরীক্ষায় আপনি ফেল করছেন।
আপনার যদি ধারণা হয়ে থাকে, ইমান আনলে বা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেই আল্লাহ আপনাকে বাই ডিফল্ট এই দুনিয়ায় খুব আরাম-আয়েশে রাখবে, তাহলে আপনি ভুল ধর্মে ইমান এনেছেন।
ইমানের মূল বিষয়গুলোর একটা হচ্ছে আখিরাতের উপর ইমান। এর অর্থই হচ্ছে দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী; আর আখিরাতই হচ্ছে আমাদের চিরস্থায়ী গন্তব্য। কুরআনে এই কথা একাধিকবার বলা হয়েছে।
সেই সাথে এটাও বলা হয়েছে, এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে আল্লাহ আমাদেরকে ভয় এবং ক্ষুধা দিয়ে, জান-মাল এবং ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দিয়ে পরীক্ষা করবেন। আর এসব পরীক্ষায় যারা ধৈর্য্য ধারণ করতে পারবে, তাদেরকেই আল্লাহ্ সুসংবাদ দিয়েছেন।
ফিলিস্তিনিদের যতগুলো ভিডিও আমাদের সামনে আসছে, আত্মীয়-স্বজন সবাইকে হারানোর পরেও তারা যেরকম ইমান এবং সবরের পরিচয় দিচ্ছে, তাতে মনে হয়, এই যুদ্ধ যদি আল্লাহ্'র পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনিদের জন্য সেরকম পরীক্ষা হয়ে থাকে, তাহলে তারা সেই পরীক্ষায় এ প্লাস গ্রেড নিয়ে পাশ করে ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়ার জার্নি অতিক্রম করে অন্ততকালের জন্য জান্নাত অর্জন করে নিয়েছে।
কিন্তু এই পরীক্ষাকে শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের জন্য পরীক্ষা মনে করার কোনো কারণ নাই। একইসাথে এটা বিশ্ববাসীর জন্যও পরীক্ষা। আমাদের অক্ষমতা এবং ইমানের দুর্বলতার কারণে আমরা কিছুই করতে পারছি না। সেটার জন্য তবুও আমরা আল্লাহ্'র কাছে ক্ষমা চাইতে পারব।
কিন্তু ইমানের যে মূল থীম, সেটাকেও আমরা যদি আঁকড়ে ধরে রাখতে না পারি, হতাশাবাদী ভাইরাল দুই-একটা স্ট্যাটাস পড়ে যদি আমাদের সেই বিশ্বাসেই চিড় ধরে, তাহলে এই পরীক্ষায় আমরা পুরোপুরিই ফেল করব। সেখান থেকে হয়তো ক্ষমা পাওয়ারও পথ থাকবে না।
লেখা: Mozammel Hossain Toha