29/11/2021
ক্ষণস্থায়ী দুনিয়াতে প্রতিযোগিতা করা একটা বোকামির কাজ। অথচ, আমরা সেটাই করে বেড়াই। একটা অনিশ্চিত দুনিয়াতে নিশ্চয়তার খোঁজ করে চলি। অর্থ-সম্পদ, ক্যারিয়ার, ক্ষমতা - সবকিছু নিয়েই একটা প্রতিযোগিতা।
এই প্রতিযোগিতায় জয়ীরা নিজেদের মনে করে সফল আর ব্যর্থরা অপমান বোধ করে।
অথচ প্রতিযোগিতা করা উচিত ছিল আখিরাতের বিষয়ে, অনন্ত অসীম চিরসুখময় জান্নাতের জন্যে আর আল্লাহ তা'আলার সান্নিধ্যের জন্য।
আমরা মানুষকে বিচার করি তার দুনিয়ার সাফল্যের দ্বারা। মানুষের অর্থ, সৌন্দর্য, পেশা, প্রভাব - এগুলাই এখন মানুষকে মাপার মাপকাঠিতে পরিণত হয়েছে।
অথচ, একজন নাসার সায়েন্টিস্ট যে ফজর কাজা করেছে তার তুলনায় একজন রিকশাওয়ালা যে ফজর এর সালাত ওয়াক্তের মধ্যে পড়েছে সে হাজার গুণে উত্তম।
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
"ফজরের দুই রাকাত সালাত এই দুনিয়া এবং এর মাঝে যা কিছু আছে, তার সবকিছুর চেয়ে উত্তম।"
দুনিয়ার বিষয়ে প্রতিযোগিতা না করার বিষয়ে কিছু আয়াত/হাদিসঃ
(১) প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদের গাফেল রাখে যতক্ষণ না তোমরা কবরের সাক্ষাৎ পাও। [সুরাহ আত তাকাসুর]
(২) তোমরা জেনে রাখ, পার্থিব জীবন খেল তামাশা, সাজ-সজ্জা, পারস্পরিক অহমিকা এবং ধন ও জনের প্রাচুর্য ব্যতীত আর কিছু নয়। [সুরাহ আল হাদিদ]
(৩) পার্থিব জীবন প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয়। [সুরাহ আল হাদিদ]
(৪) দুনিয়াতে অপরিচিত অথবা ভ্রমণকারী মুসাফিরের মত জীবন যাপন কর। [বুখারি]
আখিরাতের বিষয়ে প্রতিযোগিতা করার ব্যাপারে কিছু আয়াত/হাদিসঃ
(১) তোমরা তোমাদের পালনকর্তার ক্ষমা এবং জান্নাতের দিকে ছুটে যাও যার সীমানা হচ্ছে আসমান ও যমীন, যা তৈরী করা হয়েছে তাকওয়াবানদের জন্য। [সুরাহ আলে ইমরান]
(২) “মানুষ যদি ইশা ও ফজরের সালাতের ফযিলত জানতো, তবে তাতে অবশ্যই যেত, উপুড় দিয়ে হলেও।" [মুত্তাফাকুন আলাইহি]
আসলে আখিরাতের বিষয়ে প্রতিযোগিতা করার ব্যাপারে এতো আয়াত আর হাদিস যে আলাদাভাবে উল্লেখ করে শেষ করাই সম্ভব না। বরং, পুরো কুরআন এবং সুন্নাহ এর উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষকে আখিরাতমুখী করা।
নিজেকে হিপোক্রেট মনে হয় এসব নিয়ে লিখলে বা বললে। আল্লাহ আমাদের যেন আমাদের ক্ষমা করেন, ঈমানকে বৃদ্ধি করেন। আমীন।
Coppy