29/10/2025
রফিকুল ইসলাম মিয়া ১৯৪৩ সালে কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার জন্মগ্রহণ করেন। উনার বাবার নাম ছিল আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া এবং মাতার নাম দূরবাজের নেশা। উনার দাদার নাম ছিল হায়দার আলী মুন্সী এবং নানার নাম আব্দুল লতিফ সরকার। উনার দাদা ব্রিটিশ শাসনামলে একজন শিক্ষিত লোক ছিলেন এবং নায়েব ছিলেন। কুমিল্লা হোমনা উপজেলা মাইজর গ্রামে উনার নানার বাড়ি। উনার নানানাম ছিল আবদুল লতিফ সরকার। উনার নানা একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন। উনার বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়া ১৯৬৮ সাল হইতে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত ইউপি মেম্বার ছিলেন। শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বপ্রথম উদ্যোগ নেন। তাছাড়া বিষ্ণুপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য জনাব আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক সাহেব কে পরামর্শ দেন। বিষ্টপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিষদের সদস্য হন। আলহাজ্ব ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বাংগরা উমালোচনা উচ্চ বিদ্যালয় হইতে এসএসসি পাস করেন। উনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ হইতে এইচ এস সি ও ডিগ্রী পরীক্ষা পাস করেন । উনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের তুখোড় ছাত্রনেতা ছিলেন,। তৎকালীন সময় ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম সাহেবের নেতৃত্বে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ছাএ আন্দোলন করেছিলেন আমাদের সেই প্রিয় নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। কিন্তু চট্টগ্রামের এক ভদ্রলোক বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ জনাব ফজলুল কাদের চৌধুরী একরাত্রে ১৯৬৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যায়। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন।উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার জন্য লিংকন্স ইনলন্ডনে ১৯৬৯ সালে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে লন্ডনে বাংলাদেশ স্বাধীনতার পক্ষে বাঙালি ছাত্রদের নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন।
১৯৭২ হইতে ১৯৭৪ সালে পযন্ত নির্বাচিত ইন স্টুডেন্ট ইউনিয়ন সভাপতি হন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান উনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষে কাজ করার জন্য ১৯৮০ সালে আহ্বান করেছিলেন।
তখনকার সময় উনি বি,এন,পির প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৮১
সালে ৩০ শে মে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান দুষ্কৃতিদের হাতে শাহাদত বরণ করেন। ১৯৮১ সালে ২০ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি আব্দুল সাত্তার বিএনপি থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তখনকার সময়ে আলহাজ্ব ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বিএনপির পক্ষে বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে মুরাদনগর হইতে বিপুল ভোটে জয়ী করে দেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও বেশিদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। ১৯৮২ সালে ২৪ শে মার্চ তখনকার সেনাপ্রধান হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ কু করে ক্ষমতা নিয়ে যায়। তারপর এরশাদ সরকার আরম্ভ করে সৈরাচারী আচরণ। বিরোধীদলকে নিপীড়ন নির্যাতন এবং হামলা মামলা দিয়ে দমন করার চেষ্টা করে।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি'র সিনিয়র নেতাদের কে নিয়ে আন্দোলন আরম্ভ করেন। সেই সময় ঢাকা চামিলিবাগ রাব্বানী মঞ্জিল দুতালায় থাকতেন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। প্রত্যেকটি মিছিল মিটিং সামনের ভাগে থাকতেন ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম সাহেব। ছাত্রনেতা আমানুল্লাহ সাহেব খাইরুল কবির খোকন ইলিয়াস আলী আরো অনেক ছাত্রনেতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম সাহেবের বাসায় কয়েকবার এসেছিলেন।আমি তখন ঢাকায় থাকতাম। এরশাদ সরকার কয়েকবার ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলামিয়া কে অন্যায় ভাবে জেল খাটিয়েছেন। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া এমন এক ব্যক্তি ছিলেন যিনি প্রত্যেকদিন কোরআন তেলাওয়াত করতেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন। যখন উনি ঢাকা হইতে বাড়িতে আসতেন গ্রামের কবরস্থানে যাইয়া কবর জিয়ারত করতেন এবং সকল মুদ্দারদের জন্য দোয়া করতেন।আমার দাদার কাছ থেকে শুনেছি উনি ছাত্র জীবনে গভীর রজনীতে হারিকেন হাতে নিয়ে গোরস্থানে কোরআন তেলাওয়াত করতেন। ১৯৯১ সালে মুরাদনগর হইতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রী হয়েছিলেন। উনার মন্ত্রিত্ব থাকাকালীন এই মুরাদনগরে মানুষকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য সর্বপ্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। উনি ২৬ টি প্রাইমারি স্কুল, ২২ টি হাই স্কুল, মাদরাসা সাতটি কলেজ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয় দায়িত্ব পাওয়ার পর মুরাদনগর হইতে বহু লোক বিদেশে পাঠিয়েছেন। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়ার সহদর্মিনী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর বিভাগীয় প্রধান ডক্টর সাহিদা রফিক।তাছাড়া প্রফেসর ডক্টর সাহিদার রফিক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ছিলেন। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মি য়ার দুটি সন্তানই পিএসডি করেছেন বড় ছেলের নামডঃ মাশরুর রফিক সাদ। ছোট ছেলের নাম ডঃশাহাপুর রফিক রাদ।প্রয়াত প্রফেসার ডক্টর সাহিদা রফিকের সমাধিস্থল শ্রীরামপুর কবরস্থানে শাইত আছেন। উনার দুটি সন্তানই পিতা-মাতার জন্য গভীর ভালোবাস। প্রায় প্রতি মাসে সেই যুক্তরাষ্ট্র হইতে ছুটি আসেন বাবার সেবা করতে এবং মায়ের কবর জিয়ারত করতে। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া আজ অসুস্থ হয়ে বিসনায় দিন কাটাচ্ছেন। যিনি সারাটি জীবন অন্যায়ের বিরুদ্ধে, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিজ সরকারের বিরুদ্ধে ঢাকার রাজপথে প্রতিবাদ করেছিলেন। উনার একটাই উদ্দেশ্য ছিল সত্য ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। 🐃মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করি হে আল্লাহ তুমি ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়াকে সুস্থ করে দাও আমিন।
(কপি)