Akon Bhai

Akon Bhai কথা বলা যদি রূপা হয় তবে নীরব থাকা হচ্ছে সোনা।
(1)

ইফতারের সময় যে যে কাজগুলো করতে হয়১. ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা।২. অন্য কাজে ব্যস্ত না হয়ে ইফতারে মনোযোগ দেও...
06/03/2025

ইফতারের সময় যে যে কাজগুলো করতে হয়

১. ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা।

২. অন্য কাজে ব্যস্ত না হয়ে ইফতারে মনোযোগ দেওয়া।

৩. বেশি বেশি দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।

৪. খেজুর কিংবা সাদা পানি দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ আদায় করা।

৫. ইফতারের সময় ভারী খাবার না খাওয়া। মাগরিবের নামাজ আদায় করে তারপরে তৃপ্তিসহ খাবার খাওয়া। তাতে শরীর সুস্থ ও সবল থাকে।

03/11/2024

কারবারডা দেখছেন??
ইন্ডিপেন্ডেন্ট মহিলা।
তার টাকা, তার মদ, তাই আইনও তার।

স্টাইল দেখে আমি তো পুরাই অবাক।😱😱
27/10/2024

স্টাইল দেখে আমি তো পুরাই অবাক।😱😱

আল্লাহ তুমি সবাইকে রক্ষা করো।
22/08/2024

আল্লাহ তুমি সবাইকে রক্ষা করো।

কমেন্টস অফ দ্যা যুগ😋😋😋😋😋
08/06/2024

কমেন্টস অফ দ্যা যুগ😋😋😋😋😋

আমি কোনোদিন বাবাকে মায়ের গা''য়ের উপর হাত তুলতে দেখিনি। আজ হাত তুললেন। সম্ভবত মায়ের গালে পাঁচ আঙুলের ছা'প বসে গেছে। কিন্ত...
03/06/2024

আমি কোনোদিন বাবাকে মায়ের গা''য়ের উপর হাত তুলতে দেখিনি। আজ হাত তুললেন। সম্ভবত মায়ের গালে পাঁচ আঙুলের ছা'প বসে গেছে। কিন্তু মায়ের চোখে পানি নেই। মায়ের অ*গ্নিচোখ। রাগে দাঁতে দাঁত চেপে কি'ড়'মি'ড় করছেন। অথচ বাবার ছলছলে চোখ। বাবা ভেজা গলায় বললেন,

"উঠতে বসতে যে জোছনার খোটা দেও, সে আজ ম'রে গেছে। এবার খুশি তো? এখন থেকে অন্তত আমাকে রেহাই দেও।"

জোছনা নামটা আমি আজ প্রথম শুনিনি। আগেও বহুবার মায়ের মুখে শুনেছি। মা বাবার সাথে একটু রেগে গেলেই জোছনার নাম উঠে। আমি দুয়েকবার জানতে চেয়েছিলাম মায়ের কাছে, কে এই জোছনা? মা মুখে ভেং*চির আকৃতি এনে ভাষাকে বিকৃতি করে বলেছিল,

"তোর বাপের না*ঙ লাগে। আমারে বিয়ে করার আগে জো'ছনার লগে তোর বাপের পিড়িত ছিল।"

বাবা মাথা নিচু করে সেদিন আমার সামনে থেকে চলে গিয়েছিল। বুঝাই যাচ্ছে, নিজের ছেলের সামনে তিনি বেশ অপমানিত হয়েছেন।
বাবার জন্য আমার বড্ড মায়া লাগে। মায়ের এই অকথ্য ভাষার প্রতিবাদ বাবা কোনোদিন করেননি। কিন্তু আজ প্রতিবাদ করেছেন। প্রতিবাদের ভাষা ছিল সজোরে একটি থা*প্পড়। বিগত এত বছরের রা'গ ক্ষো'ভ বাবা একটি থা*প্পড়ে কমাতে পেরেছেন তো? আমি দুপুরের খাবার খেতে বসেছি, মা তরকারি দিচ্ছিলেন। বাবা এলেন হঠাৎ ঘরে। তখনি মায়ের হুং*কার!

"আমারে ঘুমে রাইখা কাউরে কিছু না কইয়া জোছনার কাছে গেছিলা? কইয়া গেলে কী হইতো? না করতাম আমি? এত বছরেও না কইরা ফিরাইতে পারছি?"

বাবা এগিয়ে এলেন। ক'ষে থা*প্পড় দিয়ে জোছনার মৃ*ত্যু সংবাদ প্রকাশ করলেন। এমতাবস্থায় আমার গলা দিয়ে আর ভাত নামবে না। বাবা ঘর থেকে চলে গেলেন। মায়ের দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, মৃ*ত্যু সংবাদ শুনে রাগ একটু কমেছে। আমি খাবার রেখে ন'লকূপে হাত ধুয়ে ফেলেছি। মনটা কেমন খারাপ লাগছে। বাবা যে আজ আড়ৎ এ যাবেন না, বুঝাই যাচ্ছে। তার চেয়ে ভালো আমি আড়ৎ এ গিয়ে বসি। কাস্টমারকে চাউল দিতে দিতে মনটাকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখা যাবে।

রাত তখন বারোটা হবে। আমি বই পড়ছিলাম। হুমায়ূন স্যারের 'মিশির আলি সমগ্র।' বইয়ের 'তন্দ্রা বিলাস' আমার দুই চোখের তন্দ্রা কাটিয়ে দিলো। দরজায় ঠকঠক। দরজার ওপাশ থেকে বাবার গলার শব্দ।

"শাওন, ঘুমিয়ে পড়েছিস?"

আমি কোনো জবাব না দিয়ে দরজা খুলে দিলাম। বাবা ঘরে ঢুকে আমার বিছানায় বসতে বসতে বললেন,

"ঘুমাসনি এখনো! তোর সাথে গল্প করতে এলাম। বাপ-বেটার গল্প অন্য কারো শুনতে হয় না। তাই এখন এলাম। তোর সমস্যা হবে না তো?"

আমি মুচকি হেসে বললাম,

"না বাবা। আমার আরো ভালো লাগছে যে তুমি এসেছো। আজ এই ঘরেই ঘুমাও। মায়ের ব্যবহারে মন খারাপ করে থেকো না।"

বাবা পা তুলে আয়েশ করে বসলেন। ইশারায় আমাকে চেয়ার টেনে কাছে যেতে ই'ঙ্গিত করলেন। আমি কাঠের চেয়ার নিয়ে বাবার মুখোমুখি বসলাম। বাবা আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। তারপর দেয়ালের দিকে তাকিয়ে বললেন,

"তোর অনেক কিছু জেনে রাখা দরকার। আমি তোকে জানাতে চাই। আগেও জানাতে চেয়েছি, সাহস হয়নি। ভেবেছি তোর মা যেমন অ*কথ্য ভাষায় কথা বলে, হয়তো তোর জানা হয়ে যাবে। কিন্তু তুই জানিস না কিছুই। শুধু একটি নাম জানিস, জোছনা। তুই এই নামটি তোর মায়ের মুখে শুনেছিস। যতবার শুনেছিস আমি লজ্জা পেয়েছি। বলতে পারিনি কিছু। আজ বলব।"

আমি গভীর মনোযোগ দিয়ে বাবার গল্প শুনছি। যে নাম নিয়ে মায়ের অকথ্য ভাষা, বাবার লজ্জা পাওয়া। অজানাকে জানতে অবশ্যই মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। বাবা একনাগারে গল্প বলছেন। লুকায়িত এক গল্প।

"তোর মায়ের মুখে জোছনা নাম শুনে হয়তো ভেবেছিলি, আমার অন্য কারো সাথে কোনো সম্পর্ক আছে। সত্য হলো, জোছনার সাথে আমার কোনো অ'বৈধ সম্পর্ক নেই। জোছনা আমার বিয়ে করা প্রথম স্ত্রী ছিল। তোর দাদা দাদি পছন্দ করে বিয়ে করিয়েছেন। তোর দাদার বাড়ির কাছেই। আমরা যে এত বছর ধরে তোর দাদা দাদিকে রেখে শহরে থাকি, তার একটি কারণ এই জোছনা। তোকে নিয়ে যে প্রতিবার তোর দাদার বাড়ি যেতাম, আমি তোর সাথে সাথেই থাকতাম। যেন আমাদের গ্রামের কারো কাছ থেকে এই বিষয়ে কিছু শুনতে না হয়। তোর খারাপ লাগতে পারে শুনলে। তোর দাদা-দাদি মারা যাওয়ার পর গ্রামে খুব একটা যাই না। তোর মা সব জানে। তবুও তোকে বলেনি, যে আমি আগেও একটি বিয়ে করেছিলাম। আমার আর জোছনার একটি সন্তানও আছে। নাম ফাল্গুনী। তোর সৎ বোন ফাল্গুনীর মতো তোর নামটাও বাংলার বারো মাসের একটা নাম। গ্রামে আমরা শ্রাবণ মাসকেই শাওন মাস বলি। তোর মা আমার দ্বিতীয় স্ত্রী। সে যাই হোক। জোছনার সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ হওয়ার পর সে পরবর্তীতে আবার বিয়ে করে এক স্কুল মাস্টারকে। তোর দাদার বাড়ি থেকে কয়েকটা গ্রাম পরে। আট বছর সংসার করলেও আর কোনো সন্তানাদি হয়নি। স্কুল মাস্টার মা'রা গেলেন চার সালের বন্যায়। আমি সব খোঁজই রাখতাম। রাখার কারণ ফাল্গুনী, আমার মেয়ে। আমি তাকে আমার কাছে রাখতে পারিনি। মাস্টার মা'রা যাওয়ার পর সেই সংসারে টানাটানি অবস্থা। আল্লাহ আমাকে যথেষ্ট দিয়েছেন। কয়েকটা সংসার চালানোর তৌফিক দিয়েছেন। আমি প্রতি মাসেই যাই সেই এলাকায়। কাউকে দিয়ে খবর পাঠালে ফাল্গুনী আসে। বাবা বলে এসে জড়িয়ে ধরে। কতশত বায়না তার। আমি আসার পথে পুরো মাসের খরচ দিয়ে আসি ফাল্গুনীর হাতে। তোর মা এসব জানে। আমি গোপন করি না তোর মায়ের কাছে। আমি ফাল্গুনীর জন্মদাতা। সে আমার কাছে মেয়ে হিসেবে পাওনা। আমি তা দেবই। আমি ফাল্গুনীর মায়ের সাথে দেখা করি না। দেখা করাটা বেমানান। লোকে মন্দ বলবে। তাই লোক মারফত ফাল্গুনীকে ডেকে আনি। আর এখন তো নরসিংদী সরকারি কলেজেই অনার্স শেষ করবে এই বছর। এখন তো কলেজে গেলেই মেয়ের সাথে দেখা করতে পারি।
কিন্তু ঐ যে, আমি তোর মায়ের কাছে কোনোকিছু লুকাই না। তোর মা মনে করে আমি হয়তো ফাল্গুনীর মায়ের সাথেও দেখা করি। এজন্যই রাগের মাথায় দুই চারটে কথা শোনায়। এতে আমার খারাপ লাগে না। শুনতে শুনতে অভ্যেস হয়ে গেছে। কিন্তু তুই.... "

"বাবা এক মিনিট....."

আমি বাবাকে থামিয়ে প্রশ্ন করলাম,

"এত বড়ো জীবন ঘটিত বিষয়টা মায়ের কাছেও লুকিয়ে রাখো না। তাহলে আমি শুনলে কী সমস্যা বাবা?"

বাবা উত্তরে বললেন,

"আসলে আমি চেয়েছিলাম তুই বড়ো হলে সব বলব। তোর মানসিক বেড়ে উঠাতে মস্তিষ্কে কোনো প্রভাব পড়ুক, সেটা চাইতাম না। কিন্তু ভুলেই গিয়েছিলাম, যথেষ্ট বড়ো হয়েছিস। ইন্টার পরীক্ষা দিয়ে আর পড়লি না। ফাল্গুনী শুনেও কষ্ট পেয়েছে। ওহ হ্যাঁ, ফাল্গুনী কয়েকবার বলেছিল তোকে সব জানাতে, আমি সাহস পাইনি। তবে বিশ্বাস কর, ফাল্গুনীর মায়ের সাথে আমি দেখা করতাম না কখনো। কিন্তু আজ মৃত্যু সংবাদ শুনে না গিয়ে থাকতে পারিনি। তার উপর তোর মায়ের এমন কথাটুকু সহ্য হয়নি। তাই..."

আমার কোনো ভাই-বোন নেই, এমন একটি আক্ষেপ ছিল সবসময়। আজ বাবার মুখে শুনলাম আমার একটি বোনও আছে। আমার বড়ো আপু। নাম ফাল্গুনী। কোনোদিন দেখিনি। বাবা দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছেন। চোখ দুটো ছলছল। জোছনা নামের মানুষটির জন্য বাবার চোখে পানি। থাকাটা স্বাভাবিক। আমি বাবাকে প্রশ্ন করলাম,

"তোমাদের ছাড়াছাড়ি কেন হয়েছিল বাবা?"

বাবা দেয়াল থেকে দৃষ্টি আমার দিকে দিলেন। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন,

"যে মানুষটা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেছে, তার সম্পর্কে কিছু না বলাই উত্তম। এতটুকু জেনে নে, আমাদের মনের মিল ছিল না। তবে বুঝতে একটু দেরি হওয়াতে সাড়ে চার বছর সংসার টিকেছিল। পরে আর টিকেনি। ফাল্গুনীকেও নিয়ে গেছে, আমার কাছে কোনোভাবেই রাখতে পারিনি। জোর করলে হয়তো পারতাম। আইনে গেলে ফাল্গুনীকে রাখতে পারতাম। থানা পুলিশ করে কোর্টে গিয়ে এতসব করতে ইচ্ছে হয়নি।"

আমি কিছু বলতে যাব, তার আগেই বাবা কীভাবে যেন প্রসঙ্গ পাল্টে ফেললেন। আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

"মেঘনা দিয়ে এক ট্রলার ভর্তি চাউল আসার কথা। মুন্সিগঞ্জ বাজারের পরিচিত পাইকারদের থেকে কিনেছি। সন্ধ্যায় আসার কথা। রাত নয়টা অবধি বসেছিলাম, আসেনি। দোকানের আওলাদের কাছে নাম্বার আছে। সকালে আড়ৎ এ গিয়ে একটু খোঁজ করিস তো। আসলে রশিদ দিবে, টাকা দিয়ে দিস।"

কথাটুকু বলে বাবা উঠলেন। উঠে সাথে সাথে চলে গেলেন না। একটু দাঁড়িয়ে থেকে আবার বললেন,

"রাত একটা বেজে যাচ্ছে। জেগে থাকিস না, ঘুমিয়ে পড়। সকালে আড়ৎ এ যাবি।"

বাবা ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেন। আমি চেয়ার আগের জায়গায় নিয়ে এলাম। আজ আর 'তন্দ্রা বিলাস' পড়ে শেষ করা হবে না। বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।

ঠিক এক সপ্তাহ পরে বাবা হঠাৎ মারা গেলেন। আমি আড়ৎ এ ছিলাম। খবর পেয়ে ছুটে এসেছি বাড়িতে। বাড়ি ভর্তি মানুষ। কেউ মারা গেলে পরিচিত সবাই শেষ দেখা দেখতে আসে। মা বিলাপ করে কান্না করছেন। মায়ের মুখেই শুনতে পেলাম, সকালে শুধু বলেছিলেন বুকটা ব্যথা করে। মা ভেবেছেন খাওয়ার পর হয়তো এমনিতেই ব্যথা করছে। তাছাড়া ব্যথা ততোটা বেশিও না। কিছু না বলে বাবা দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন। আমার মাথার উপর বটগাছের ছায়া ছিলেন। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে। এত বড়ো পৃথিবীতে নিজেকে একা লাগছে। আমার দুই চোখ বেয়ে অঝরে পানি পড়ছে। সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে এলেন এলাকার কয়েকজন। মানুষের সামনে কান্না করাটা অন্যসময় হলে লজ্জাকর পরিস্থিতী হতো। কিন্তু এখন লজ্জা লাগছে না। শুধু পানি পড়ছে। এক এক করে সব আত্মীয় স্বজন এলো। শেষ বিদায়ের আয়োজন চলছে। বরই পাতার গরম পানি বসানো হয়েছে। ক'বর খুঁ*ড়তে লোক গেছে ক'বরস্থানে। পাশের বাড়ির একজন আমাকে সাথে করে নিয়ে গেলেন কা*ফনের কাপড় কিনতে। এ যেন এক অনুষ্ঠান চলছে। শেষ বিদায়ের অনুষ্ঠান।

বাবা মারা যাওয়ার মাস পেরিয়ে যাচ্ছে। আমি আড়ৎ এ বসে আছি। বাবার অবর্তমানে দায়িত্ব বেড়ে গেছে। হঠাৎ আমার অবচেতন মনে ক্ষানিকটা ধাক্কা লাগল। ফাল্গুনী!
আমার একটা মাত্র বোন। বাবার মেয়ে। তাকে তো খবর দেওয়া হয়নি। আমার কাছে তো ফোন নাম্বারও নেই। বাড়িও চিনি না কোন গ্রামে থাকে! বাবাকে শেষ দেখা হয়নি তার। এটা তো তার প্রতি মস্ত বড়ো অন্যায় হয়েছে। মায়ের কাছে কি আপুদের বাড়ির ঠিকানা আছে? না, মা'কে কিছু বলা যাবে না। দাদার বাড়ির কেউ কি জানে?
ভাবতে ভাবতে হঠাৎ মনে পড়ল, বাবা বলেছিলেন ফাল্গুনী আপু নরসিংদী সরকারী কলেজ থেকে এবার অনার্স শেষ করবেন। আমি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালাম। একটা বড্ড ভুল হয়ে গেল। আপুকে বাবার মৃ*ত্যু সং:বাদ জানানোটা দরকার ছিল।

নরসিংদী সরকারি কলেজের দক্ষিন দিকে অনার্স ভবন। আমার পরিচিত কেউ নেই এখানে। অনার্স ভবনের সামনে অনেকেই আছে। আমি এগিয়ে গেলাম। সবাই বয়সে আমার বড়ো। একসাথে তিন চারজন কথা বলছে দাঁড়িয়ে। আমি গিয়ে সালাম দিলাম। জানতে চাইলাম, অনার্স শেষ বর্ষের ফাল্গুনী নামের কাউকে চিনে কি-না! সাথে সাথে একজন ডানদিকে তাকিয়ে একটু গলাটা উঁচিয়ে বলল,

"এই ফাল্গুনী, তোকে কেউ খুঁজতে আসছে।"

আমার চোখদুটো যেন অপেক্ষা সইছে না। কেউ একজন এগিয়ে আসছে। আমার তিন চার বছরের বড়ো হতে পারে। দেখতে খুবই সুন্দর। ইচ্ছে করছে এখনি চিৎকার করে বলি, আপু আমি তোমার একমাত্র ভাই শাওন। কিন্তু বলতে পারিনি। আমার গলার স্বর কি ভেজা? বুঝতে পারছি না।

"আমাকে খুঁজছ? কে তুমি?"

আপুর কথায় কী বলব ভেবে পাচ্ছি না। আসলে কে আমি? পরিচয়ের শুরুটা কীভাবে করব? মুখ ফুটে বললাম,

"আপু, আপনার সাথে কিছু কথা আছে। খুব জরুরী। একটু এদিকে আসবেন?"

অনার্স ভবনের সামনে দুর্বা ঘাসে শীতল পাটির মতো বিছানা পাতা। আমি আর আপু ঘাস মাড়িয়ে মাঠের মাঝখানটায় গেলাম। আপুর কৌতূহলী চোখ। হঠাৎ বললাম,

"আমি চিনিশপুর থেকে এসেছি। আমার নাম শাওন।"

কথাটুকু বলে আপুর দিকে তাকালাম। আপু নির্বাক। চোখের পলক পড়ছে না। চোখদুটো ভিজে উঠল আমার সামনে। আরেকটু এগিয়ে এসে আপু আমার কাঁধে হাত রাখল। তারপর মাথায়, তারপর গালে। এই স্প'র্শ কত শীতল, কত মায়ায় ভরা। টলমল চোখ, ভেজা গলায় আপু বলল,

"তোমাকে দেখার ইচ্ছে ছোটোবেলা থেকে। আমার একটা ভাই আছে, আর তাকে আমি কখনো দেখিনি। এই কষ্টটা আমার অনেক বছরের। কত বড়ো হয়ে গেছো তুমি।"

আমার দৃষ্টি নিচের দিকে। ইচ্ছে করছে নিজের চোখের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করি। আমার চোখ থেকে এখন যেন কোনো পানি না পড়ে। আমি শত বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছি আটকাতে। আটকাতে আর পারলাম কই! এরই মধ্যে আপু আবার বলল,

"বাবা মারা যাওয়ার দিন গিয়েছিলাম তোমাদের বাড়িতে। আড়ৎ থেকে আওলাদ নামের কেউ একজন ফোন করেছিল। তোমাদের বাড়ির ঠিকানা নিয়ে গিয়েছিলাম। বিশ মিনিটের মতো ছিলাম। সবাই কান্না করছে। মানুষের ভীড়ে আমিও বাবার মুখখানি শেষবারের মতো দেখে নিয়েছি। দেখে কান্নাও করেছি। কিন্তু কেউ জানে না আমি কে!
তোমাকেও খুঁজেছি। জিজ্ঞেস করিনি কারো কাছে। কে কবর খুঁড়তে গেল, কে বাজারে গেল! এসব বলার সময় শুনলাম তোমার নাম। কেউ একজন বলছে শাওন কা*ফনের কাপড় কিনতে গেছে। আমি আর সেখানে থাকিনি, চলে এসেছি।"

মাথা তুলে তাকাতে খুব ইচ্ছে করছে। কিন্তু চোখের পানি লুকাতে পারব না। টপ করে নিচে পড়বে। আপু আমার থুতনি ধরে মাথাটা উপরের দিকে তুললেন। টপ করে চোখের পানি আপুর কব্জিতে পড়ল। আপু আমার চোখের পানি মুছে দিচ্ছেন। বড়ো বোনের বুঝি এত মমতা থাকে? এত আদর থাকে?
আপু আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে মাথার চুল নাড়িয়ে বললেন,

" তুমি ছোটো হলেও এখন তোমার দায়িত্ব অনেক। মায়ের দিকে খেয়াল রেখো।"

আমি আড়ৎ থেকে আসার সময় বিশ হাজার টাকা নিয়ে এসেছি পকেটে ভরে। টাকাটা বের করে আপুর হাতে দিয়ে বললাম,

"আমি এখন আর ছোটো নই আপু। অনেক বড়ো হয়েছি। মায়ের খেয়াল যেমন রাখতে পারব, তেমনি আপুর জন্যও এই ভাইটি আছে।"

আপু একটু চমকালেন বোধ হয়। তারপর টাকাটা আমার হাতে দিয়ে বললেন,

"আমি তোমার চেয়েও বড়ো। এখন আমার টাকা লাগবে না। মামার বাড়িতে থাকি এখন।"

আমি টাকা ফেরত না নিয়ে বললাম,

"টাকা নিতেই হবে। আপুর সব দায়িত্ব এখন থেকে তার ভাইয়ের। বাবা শুধু আমার একার নয়, তোমারও বাবা। তোমারও অধিকার আছে। আমাকে শুধু আপু ডাকতে দিও, বঞ্চি'ত করো না।"

অনার্স ভবনের মাঠের দুর্বা ঘাস সাক্ষী হচ্ছে দুই ভাই বোনের চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া পানির। ঘাস মাড়িয়ে সামনে এগুচ্ছি। আড়ৎ এ যেতে হবে। আড়ৎ থেকে বাড়িতে। মা কয়েকদিন ধরে মনমরা থাকে। মায়ের কাছাকাছি থাকাটা দরকার। গল্প করা দরকার। সব দায়িত্ব এখন আমাকেই পালন করতে হবে। রিকশায় উঠে কিছু দূর এসে পেছন ফিরে দেখি, আপু তখনো আমার চলে আসা দাঁড়িয়ে দেখছে। যেন ভাইকে বিদায় দিতে মন চাচ্ছে না।
আকাশে মেঘ জমেছে। গুড়মুড় শব্দ হচ্ছে। এক পশলা বৃষ্টি হলে মন্দ হয় না।

#সংসর্গ"
#অণুগল্প
সমাপ্ত...

সংগ্রহীত।

চা মানেই এক প্রশান্তি, সকালে চা, দুপুরে চা, সন্ধ্যায় চা, রাতে চা।ঘুম থেকে উঠে চা, ঘুমাতে যাওয়ার আগে চা।দাওয়াতে চা, বিনা ...
18/04/2024

চা মানেই এক প্রশান্তি,
সকালে চা, দুপুরে চা, সন্ধ্যায় চা, রাতে চা।
ঘুম থেকে উঠে চা, ঘুমাতে যাওয়ার আগে চা।
দাওয়াতে চা, বিনা দাওয়াতে চা, ছ্যাচড়ামিতেও চা।
ক্ষুধা লাগলে চা, আবার ক্ষুধা না লাগলেও চা।
🥱🥱🥱🥱🥱🥱🥱🥱🥱🥱🥱🥱🥱🥱

জীবনে লেখাপড়া করে কি করলাম?এই লেখাটাই যদি না পড়তে পারি।
15/04/2024

জীবনে লেখাপড়া করে কি করলাম?
এই লেখাটাই যদি না পড়তে পারি।

আসুন দুইটি পরিবারের অবস্থা দেখি ১. বাসায় যে ছুটা বুয়া কাজ করে তার মাসিক ইনকাম ১৩০০০ টাকার মত, দুই বেলা খাবার সহ। তার স্ব...
28/03/2024

আসুন দুইটি পরিবারের অবস্থা দেখি

১. বাসায় যে ছুটা বুয়া কাজ করে তার মাসিক ইনকাম ১৩০০০ টাকার মত, দুই বেলা খাবার সহ। তার স্বামী রিক্সা চালিয়ে আয় করে মাসে প্রায় ১৮০০০-২০০০০ টাকা। তাদের ১২ বছরের একটা ছেলে টেম্পুতে হেলপারি করে পায় ৬০০০ টাকা। ঐ পরিবারের মাসিক আয় ৩৯০০০ টাকা। মা,ছেলের ২ বেলা খাবার ফ্রি।
এরা যে বাসায় থাকে তার ভাড়া ৭০০০ টাকা। সব খরচ মিটিয়ে প্রতিমাসে সমিতিতে জমা করে ৮০০০ টাকা, জমার পরেও গত কয়েক বছরে গ্রামের বাড়িতে জায়গা কিনেছে ১০ শতাংশ।

২. বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বছর দশেক আগে মাস্টার্স করা ছেলে শফিকুল ইসলাম, বিবাহিত, ৮ বছরের ছেলে আছে। একটা বায়িং হাউসে চাকরি করত।হঠাত চাকরিটা চলে যায়, দীর্ঘদিন বেকার থেকে বহু চেষ্টা তদবির করে আরেকটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি পায়। বেতন সর্বসাকুল্যে ২৮৫০০ টাকা, ৩ দিন লেট হলে ১ দিনের বেতন কাটা। ২ রুমের বাসা নিয়ে ঢাকায় থাকে, বাসা ভাড়া সমস্ত বিল সহ ১৪,০০০ টাকা। বাকি ১৪,৫০০ টাকা দিয়ে খাওয়া, যাতায়াত, কাপড়চোপড়, চিকিৎসা, বাচ্চার লেখাপড়া সব। ২০ দিন যেতে না যেতেই টাকা শেষ। এরপর ধার দেনা করে চলতে হয়। জমানো বা সম্পদ করা তো দুরের কথা।

** দেশে ১ কোটি দরিদ্র পরিবারকে টিসিবি কার্ড দেওয়া হচ্ছে কম দামে পণ্য কেনার জন্য।
এই কার্ড কে পাওয়ার যোগ্য- কাজের বুয়া নাকি শফিকুল ইসলাম?
কোন্ কেটাকোরিতে দারিদ্র্যতা সঙ্গায়িত হয় বাংলাদেশে, আয় দিয়ে নাকি সামাজিক অবস্থান দিয়ে?বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।

৫১ বছর ধরে প্রেমিকার ছবি আজও বুক পকেটে নিয়ে বেচে আছেন একজন বীর মুক্তিযো দ্ধা। নাম তানেসউদ্দিন। প্রেমিকার নাম জহুরা।এক ইন...
21/03/2024

৫১ বছর ধরে প্রেমিকার ছবি আজও বুক পকেটে নিয়ে বেচে আছেন একজন বীর মুক্তিযো দ্ধা। নাম তানেসউদ্দিন। প্রেমিকার নাম জহুরা।

এক ইন্টারভিউতে বিয়ে কেনো করেননি প্রসঙ্গে তিনি বলেন। আমি এখনো শপ্নে জহুরা কে দেখি। তার মত সুন্দর কখনোই কাউকে লাগেনি।

তানেসউদ্দিন আর জহুরার প্রেমের শুরু ১৯৬৩ সালে। তানেসউদ্দিন তখন ক্লাস টেনে পরেন। আর জহুরা ক্লাস এইটে। কিশোর মনের চঞ্চলতা ভীরুতা নিয়েই হয়েছিল প্রেমের শুরু।

জোহরার সঙ্গে দেখা করতে প্রায়ই সন্ধ্যায় তানেসউদ্দিন কে নৌকায় করে মেঘনা নদী পার হতে হতো। আবার নৌকায়ই ফিরতেন তিনি। একদিন সন্ধায় দেখা হওয়ার কথা। আগে থেকেই জোহরাকে খবর দেওয়া হয়ে গেছে। সন্ধায় জোহরা মেঘনা নদীর ওপারে অপেক্ষা করছিলেন। এদিকে পারাপারের জন্য কোনো নৌকা নেই। কিভাবে ওপারে জাবেন তানেসউদ্দিন?

উপায় না পেয়ে সাঁতরে মেঘনা নদী পার হয়েছিলেন তানেসউদ্দিন। উপারে ওঠে জোহরার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। সেই রাতে উত্তাল জোয়ারের মধ্যে সাচ্চা প্রেমিকের মতো ছুটে গিয়েছিলেন তিনি। এমন পাগলামির জন্য জোহরার বকা ও খেয়েছিলেন। তাতে কি? সম্পর্কের গভীরতা কতটুকু তাতো বুঝাতে পেরেছিলেন।

এক সময় ঘনিয়ে এলো মুক্তি যু দ্ধের বছর। সাল ১৯৭১। চারদিকে যু দ্ধের ডাক। সেই ডাকে সারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তানেসউদ্দিন। এই কথা সুনে কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন জোহরা। প্রথমে আপত্তি করেছিলেন কিন্তু পরে সম্মতি দিয়েছেন ঠিকই।

তানেসউদ্দিন বলেছিলেন দেশ স্বা-ধীন করে তবেই তোমাকে বিয়ে করবো। তুমি অপেক্ষা করিও।

বিদায় দেওয়ার সময় খামে মুরিয়ে তানেসউদ্দিনকে একটা চিঠি দিয়েছিলেন জোহরা। খামের ভিতর ১০০টাকার একটা নোট ছিল।আর চিঠিতে লেখা ছিল শুধু টাকাই রাইখোনা সঙ্গে আমার ভালোবাসা ও রাইখো।

কলকাতার আগারতলায় যু দ্ধ প্রশিক্ষন শেষে দেশে ফিরেন তানেসউদ্দিন। লোকেশন রেডি করেন। মিটিং করেন। শ ত্রু পক্ষের উপর ঝা পিয়ে পড়েন।এভাবেই যু দ্ধের দিন কাটতে থাকে তার। জোহরা কি করছেন, কেমন আছেন এসব ভেবে মাঝেমধ্যে আনমনা হয়ে পরেন। স্টে-নগান মাথায় চাপিয়ে ভবিষ্যতের কথা ভাবতেন তানেসউদ্দিন।

দির্ঘ নয় মাস পর যু দ্ধ শেষ হয়। যু দ্ধ শেষে তানেসউদ্দিন সর্বপ্রথম জোহরার বাড়িতে ছুটে জান। গিয়ে জানতে পারেন জোহরা ও তার বাবাকে মি-লিটারিরা হ ত্যা করেছে।

রন-ক্ষেত্রে বসেও জে মন পরে থাকতো মেঘনা নদীর পাড়ে যেখানে উত্তাল স্রোত ঠেলে জেতে হয়। যেখানে চাদের আলোর নিচে জোহরার আচল বিছানো। সেই জোহরার স্থান হলো বুক পকেট। ৫১ টা বছর মেয়েটি সেখানে আছে। সেখানেই থাকবে। এই বুক পকেটেই থাকবে ❤️🥰

লেখা- সোহেল আর রানা
ছবি- তানেসউদ্দিন

Address

Demra
Dhaka
1362

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Akon Bhai posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Akon Bhai:

Share