14/07/2025
শারিরীক চাহিদা না মেটাতে পারলে নারীরা রাজা ছেড়ে প্রজার কাছে চলে যায়, অথচ সে নারীই বলে পুরুষ নাকি দেহের পাগল। আসলে নারীরা পুরুষের ভালোবাসাটাই বুঝেনা।
নারী, তুমি কি সত্যিই জানো একজন পুরুষের ভালোবাসা কেমন হয়?
আমরা এক আশ্চর্য সমাজে বাস করি। যেখানে "ভালোবাসা" শব্দটা খুব সহজে বলা যায়, কিন্তু খুব কম মানুষই এর গভীরতা উপলব্ধি করতে পারে। নারীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন—পুরুষরা নাকি শুধুই শরীরের পাগল। অথচ বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রেই তার উল্টো চিত্র তুলে ধরে।
একজন পুরুষ যখন কাউকে ভালোবাসে, সে শুধু তার শরীরকে চায় না, বরং সে তার জীবনের প্রতিটি অংশে তাকে জড়াতে চায়। তার হাসি, তার কষ্ট, তার ঘুম না হওয়া রাত, তার ভবিষ্যৎ—সবকিছুর সাথেই সে নিজেকে জড়িয়ে ফেলতে চায়।
পুরুষও অনুভব করে, কাঁদে, ভেঙে পড়ে
একটা প্রচলিত ভুল ধারণা হলো—পুরুষেরা কাঁদে না, তাদের কষ্ট হয় না, তারা অনুভূতিহীন যন্ত্র। কিন্তু প্রকৃত ভালোবাসার পুরুষটিও কাঁদে—চুপিচুপি, রাতের অন্ধকারে। কারণ সে জানে, কাঁদতে দেখলে হয়তো 'দুর্বল' বলে দূরে ঠেলে দেওয়া হবে। সে বোঝে, তার মানসিক কষ্ট কেউ বুঝবে না—তার কাছের মানুষটিও না।
সে যখন কাউকে ভালোবাসে, তখন হয়তো নিজের শখ, নিজের চাহিদা, এমনকি নিজের স্বপ্নও বিসর্জন দেয়, শুধুমাত্র তার ভালোবাসার মানুষটিকে একটু সুখে রাখতে।
শারীরিক চাহিদা কি শুধু পুরুষের?
এই প্রশ্নটা অনেক সময় নারীই তোলেন—“পুরুষ মানেই শরীরের পাগল।” কিন্তু বাস্তবতা হলো, শরীরের চাহিদা নারী-পুরুষ উভয়েরই। একজন পুরুষ দিনের পর দিন মানসিক ও শারীরিক চাহিদা না মিটিয়েও একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চায়, শুধুমাত্র ভালোবাসার টানে।
কিন্তু যখন সে দেখতে পায়—তার চাহিদা পূরণ হচ্ছে না, অথচ অন্য কেউ একটু মনোযোগ দিলে, একটু আবেগ দেখালে সেই নারী ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছে—তখন তার হৃদয়ের ভিতরটা ভেঙে চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়।
প্রজার সাথে চলে যাওয়া সেই নারীর অভিযোগ থাকে—“আমার অনুভূতির কদর পায়নি।” অথচ সে কি একবারও ভেবে দেখে, সেই পুরুষটি দিনের পর দিন কতটা চেষ্টা করেছিলো তার ভালোবাসাকে ধরে রাখতে?
নারীরা কি সত্যিই পুরুষের ভালোবাসা বুঝে?
অনেক নারী মনে করেন—ভালোবাসা মানেই উপহার, সময়, রোমান্টিক কথা। কিন্তু একজন প্রকৃত পুরুষের ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে তার কঠোরতার মধ্যে। সে হয়তো মিষ্টি কথা বলতে পারে না, কিন্তু ক্লান্ত শরীরে সারা দিন কাজ করে ঘরে ফিরে তোমার জন্য একটা ওষুধ নিয়ে আসে। হয়তো সময় দিতে পারে না, কিন্তু তোমার বাবার অসুস্থতার খোঁজ নেয়ার জন্য অফিস টাইমে ফোন দেয়। এটাই তো ভালোবাসা!
নারী যদি কখনও অনুভব করতেন—একজন পুরুষের ভালোবাসা কতটা নিঃস্বার্থ, কতটা গভীর—তাহলে হয়তো তারা আর কখনো এমন বলতেন না, “তুমি শুধু দেহটাই চাও।”
নারী, বুঝো তোমার পুরুষের নিঃশব্দ ভালোবাসা
তোমার সেই স্বামী, প্রেমিক বা সঙ্গী—হয়তো মুখে কিছু বলে না। কিন্তু তার চোখের ভিতর তাকাও—সেখানে আছে ভয়, কষ্ট, অপেক্ষা আর তোমার জন্য তার সমস্ত ভালোবাসা। সে হয়তো রাজার মতো ধনবান না, কিন্তু তার ভালোবাসা এমন এক সম্পদ যা পৃথিবীর কোনো রাজার কাছেও নেই।
তাই নারী, অনুরোধ করি—শুধু নিজেকে বুঝো না। একজন পুরুষের নিঃশব্দ ভালোবাসাকেও বোঝার চেষ্টা করো। তার আবেগ, তার স্বপ্ন, তার সীমাবদ্ধতা—সবকিছুর পেছনে যে ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে, সেটাও অনুভব করো।
শেষ কথা
ডাঃ জাকিয়া সুলতানার মতে একজন পুরুষ যখন ভালোবাসে, সে একজন নারীর কাছে রাজা হয়ে থাকতে চায়—শরীরের জন্য না, ভালোবাসার জন্য।
আর একজন নারী যখন এই ভালোবাসা বুঝে ফেলে, তখন সে প্রজার কাছে নয়, বরং রাজার সিংহাসনে বসে—সমান ভাবে, ভালোবাসার রাণী হয়ে থাকত চাই।
আপনি কি তাই মনে করেন?