01/07/2025
শিক্ষায় বৈষম্য: শহরে সুযোগের ছড়াছড়ি, গ্রামে বঞ্চনার দীর্ঘ ছায়া
নিজস্ব প্রতিবেদক, জকিগঞ্জ:
সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার শিক্ষাক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় ধরে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন। তাঁর নামেই রয়েছে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান — বিশেষ করে সিলেট শহরে হাফিজ মজুমদার শিক্ষা ট্রাস্টের অধীনে প্রতিষ্ঠিত বাংলা ও ইংরেজি মিডিয়ামের আধুনিক স্কুলগুলো।
শহরের এসব স্কুলে রয়েছে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক, আধুনিক ল্যাবরেটরি, উন্নত পাঠদান পদ্ধতি এবং শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ। প্রতিটি শাখা—শাহী ঈদগাহ, টিলাগড়, মেজরটিলা, কদমতলি—শিশুদের প্লে গ্রুপ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষায় সমৃদ্ধ করছে।
কিন্তু আফসোস, এমপি মহোদয়ের নিজের নির্বাচনী এলাকা জকিগঞ্জে শিক্ষার এমন চিত্র দেখা যায় না।
এখানকার বেশিরভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ই গড়ে উঠেছে তাঁর বা তাঁর পরিবারের নামে। তবে সেইসব প্রতিষ্ঠানে নেই পর্যাপ্ত দক্ষ শিক্ষক, নেই আধুনিক কোনো ল্যাবরেটরি, নেই ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ। শিক্ষক সংকট এতটাই প্রকট যে, অনেক বিদ্যালয়ে অফিস সহকারী বা সদ্য এইচএসসি পাস করা যুবকদের দিয়েই নবম-দশম শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় ৭০% কৃষক সন্তানদের স্বপ্ন থাকে ছেলে-মেয়েকে শিক্ষিত করার। কিন্তু মানসম্মত মাধ্যমিক শিক্ষা না পাওয়ায়, সেই স্বপ্ন ক্রমেই ঝুঁকে পড়ে হতাশার দিকে। শিক্ষার্থীরা ইংরেজি বা স্কিল ভিত্তিক কোনো শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না, যার ফলে তারা পিছিয়ে পড়ছে জীবনের প্রতিযোগিতায়।
প্রশ্ন উঠছে—
শহরের অর্থবান অভিভাবকের সন্তানরা যখন লক্ষ টাকার গাড়িতে করে এসে আধুনিক শ্রেণিকক্ষে বসে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে, তখন গ্রামের কৃষকের সন্তানের কি মানসম্মত শিক্ষায় অধিকার নেই?
হাফিজ আহমদ মজুমদার যদি শহরের জন্য আধুনিক শিক্ষার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন, তাহলে নিজ নির্বাচনী এলাকাতেও কি একই রকম উদ্যোগ নেওয়া তাঁর দায়িত্ব ছিল না?
জকিগঞ্জের মানুষ আজ এই প্রশ্নের জবাব চায়।