05/08/2025
স্ত্রী তো শান্তিতে থাকতে দেয় না!
সকালে সন্ধ্যায় ঝগড়া..... 🤯🤯
আজ একটু রাগের মাথায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম।
মাথায় ঘুরছিল—এই সংসার, এই ঝগড়া, এই প্রতিদিনের কষ্ট।
মন বলছিল, আর নয়! এই "চিরকাল ঝগড়াবাজ" মানুষটার সাথে আর এক মুহূর্ত কথা বলব না।
চুপচাপ হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে উঠলাম পাড়ার এক চায়ের দোকানে।
এক কাপ চা অর্ডার দিয়ে বসে আছি—অভিমান, রাগ আর গুমোট ভাব নিয়ে।
হঠাৎ পাশ থেকে কেউ জিজ্ঞেস করল—
"এই ঠান্ডায় বাইরে বসে চা খাচ্ছো?"
চোখ ফিরিয়ে দেখি এক বৃদ্ধ মানুষ বসে আছেন, মুখে একরাশ শান্ত হাসি।
বললাম, "আপনিও তো এসেছেন, এই বয়সে, এত ঠান্ডায়?"
উনি হেসে বললেন, "আমার তো কেউ নেই...
না সংসার, না সঙ্গী। তুমি তো দেখছি বিবাহিত।"
আমি যেন তখন ঝড়ে ভেসে যাচ্ছিলাম।
বললাম, "স্ত্রী তো শান্তিতে থাকতে দেয় না!
সকালে সন্ধ্যায় ঝগড়া।
এইজন্যই তো বাইরে ছুটে এসেছি।"
বৃদ্ধ মানুষটা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলেন।
তারপর বললেন,
"আমার স্ত্রী নেই আজ আট বছর হলো।
যখন ছিল, তখন ওর কদর বুঝিনি।
সেই ঝগড়া, সেই আদর, সেই ছোট ছোট রাগ আজ ভীষণ মিস করি।
এই বাড়ি, এই টাকা, এই শহর… সবই আছে, কিন্তু সে নেই।
সত্যি বলি, তার অনুপস্থিতিতেই বুঝেছি, সে ছিল আমার জীবন, আমার প্রাণ।
যখন বেঁচে ছিল, তখন শুধু অভিযোগ করেছি,
আজ ওর একটুখানি শব্দও শুনতে মন কাঁদে।"
আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।
চা শেষ করে উঠে দাঁড়ালাম।
চোখের কোনে জল, কিন্তু মুখে নিশ্চুপ সিদ্ধান্ত।
বাড়ি ফিরে আসতে আসতেই দেখলাম, সে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে।
ভয় আর অভিমান মেশানো চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে—
"এতক্ষণ কোথায় ছিলে? জ্যাকেটও পরোনি, ঠান্ডা লেগে যাবে!"
আমি আস্তে করে বললাম,
"তুমিও তো ঠান্ডায় দরজায় দাঁড়িয়ে আছো…"
আর কিছু না বলে শুধু তাকিয়ে রইলাম একে অপরের চোখে।
সেই চাহনিতে ঝগড়া ছিল না, অভিমান ছিল না, ছিল শুধুই ভালোবাসা।
জীবনে এমন অনেক সময় আসে,
যখন রাগ করে চলে যাই,
কিন্তু ফিরতে শেখা উচিত।
একটা জীবন, খুব বেশি বড় নয়।
ক্ষমা চাইতে আর ক্ষমা করতে শিখলে জীবনটা অনেক সহজ হয়ে যায়।