Golpo Hunt Bangla

Golpo Hunt Bangla ডানদিকে লাইক দিন👉 পরিশেষে চলবে নয়.. পড়ুন অনুগল্প.. Golpohunt.com -এ

মেয়েরা বা বউরা স্বামীর কাছে আসলে কী/কী কী চায়?মেয়েরা বা স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে সম্পর্কের বিভিন্ন দিকের উপর ভিত্তি করে ...
04/01/2025

মেয়েরা বা বউরা স্বামীর কাছে আসলে কী/কী কী চায়?
মেয়েরা বা স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে সম্পর্কের বিভিন্ন দিকের উপর ভিত্তি করে কিছু চাহিদা বা প্রত্যাশা রাখতে পারেন। একটি সফল এবং সুখী বিবাহিত জীবন গড়ে তুলতে স্বামীর প্রতি স্ত্রীর চাওয়াগুলো সাধারণত মানসিক, আবেগীয় এবং সামাজিক চাহিদার সঙ্গে সম্পর্কিত। নিচে কিছু প্রধান দিক উল্লেখ করা হলো:..
১. ভালোবাসা এবং স্নেহ (Love and Affection):

- স্ত্রী সাধারণত স্বামীর কাছ থেকে ভালবাসা, যত্ন এবং স্নেহ প্রত্যাশা করে। এটি সম্পর্কের মূল ভিত্তি এবং একজন নারী চায় যে তার স্বামী তাকে ভালোবাসবে এবং যত্ন নেবে। দৈনন্দিন ছোট ছোট কাজ, যেমন আলিঙ্গন, চুম্বন, এবং স্নেহের মাধ্যমে এটি প্রকাশ পেতে পারে।

২. মানসিক সমর্থন (Emotional Support):

- স্ত্রীর জীবনেও চ্যালেঞ্জ এবং সমস্যা আসতে পারে, এবং সে চায় যে তার স্বামী মানসিকভাবে তাকে সমর্থন দেবে। তার অনুভূতি, কষ্ট, এবং সুখে পাশে থাকা এবং তার সাথে মনের কথা ভাগ করে নেওয়া আবশ্যক।

- আবেগীয় সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং তাকে শোনা একজন স্ত্রীর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

৩. আস্থা ও বিশ্বাস (Trust and Honesty):

- স্বামীর প্রতি আস্থা একজন স্ত্রীর জন্য অপরিহার্য। স্বামী যখন সৎ এবং বিশ্বাসযোগ্য হয়, তখন স্ত্রীর মনে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার অনুভূতি তৈরি হয়।

- সম্পর্কের ভিত্তি হলো বিশ্বাস, তাই স্ত্রী চায় যে স্বামী তার প্রতি বিশ্বাস রাখবে এবং কোনো মিথ্যা বলবে না।

৪. সম্মান (Respect):...

- স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে সম্মান আশা করে। তার মতামত, অনুভূতি এবং সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে স্বামী যদি সম্মান করে, তাহলে সম্পর্কের বন্ধন আরও দৃঢ় হয়।

- এটি শুধু ব্যক্তিগত সম্মানের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং সামাজিক এবং পারিবারিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।

৫. সময় এবং মনোযোগ (Time and Attention):

- স্ত্রী চায় যে তার স্বামী তাকে পর্যাপ্ত সময় দেবে এবং মনোযোগ দেবে। ব্যস্ত জীবনে সময় কাটানোর জন্য যতটা সম্ভব সময় বের করে স্ত্রীর সাথে মানসম্পন্ন সময় কাটানো একজন স্বামীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।...

- যৌথভাবে সময় কাটানো, মজা করা, এবং একে অপরের সাথে থাকা সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে সহায়ক হয়।

৬. সহানুভূতি এবং বোঝাপড়া (Empathy and Understanding):....

- স্ত্রীর চাওয়া-পাওয়া এবং সমস্যা সম্পর্কে স্বামী যদি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাকে বুঝতে চেষ্টা করে, তাহলে এটি সম্পর্কের গভীরতা বাড়ায়। বোঝাপড়া, সমঝোতা, এবং সহানুভূতির মাধ্যমে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করা যায়।

- স্ত্রীর অনুভূতিগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে তাকে মানসিক শান্তি প্রদান করা গুরুত্বপূর্ণ।....

৭. আর্থিক নিরাপত্তা (Financial Security):

- অনেক সময় স্ত্রী চায় তার স্বামী তার এবং পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক। এটি পরিবারে স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়।

- যদিও আধুনিক সময়ে অনেক নারী নিজেরাও আর্থিকভাবে স্বাধীন, তবে পরিবারে সুষম আর্থিক পরিচালনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

৮. উৎসাহ এবং সমর্থন (Encouragement and Support):

- স্ত্রীর ব্যক্তিগত স্বপ্ন, ক্যারিয়ার বা লক্ষ্য অর্জনে স্বামীর সমর্থন প্রয়োজন। স্বামীর কাছ থেকে উৎসাহ এবং পেছনে থাকা সমর্থন একজন স্ত্রীর আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।

- অনেক মেয়ে বা বউ চায় তার স্বামী তার ব্যক্তিগত উন্নতি এবং সিদ্ধান্তে সমর্থন দিক।

৯. রোমান্টিকতা (Romance):

- সম্পর্কের মধ্যে কিছু রোমান্টিকতা থাকা একজন স্ত্রীর জন্য আনন্দদায়ক হতে পারে। ছোট ছোট বিশেষ মুহূর্ত তৈরি করা, উপহার দেওয়া, বা বিশেষ সময় কাটানো একজন স্ত্রীর ভালো লাগা বাড়াতে সহায়ক।

- রোমান্টিকভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা একটি সম্পর্কের মানসিক ও আবেগীয় বন্ধনকে শক্তিশালী করে।

১০. সামঞ্জস্যপূর্ণ যৌন জীবন (Healthy Intimacy):

- স্ত্রীর জন্য সম্পর্কের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ঘনিষ্ঠতা ও শারীরিক সম্পর্ক। সামঞ্জস্যপূর্ণ যৌন জীবন ও শারীরিক ঘনিষ্ঠতা সম্পর্ককে আরও মজবুত করে।

- শারীরিক এবং মানসিকভাবে সংযুক্ত থাকা এবং একে অপরের চাহিদা বুঝে সেটি পূরণ করা সম্পর্কের মধ্যে গভীরতা আনে।

সারসংক্ষেপ:

স্ত্রীরা সাধারণত তাদের স্বামীর কাছ থেকে ভালোবাসা, সম্মান, বোঝাপড়া, এবং আস্থার মতো মানসিক ও আবেগীয় সমর্থন প্রত্যাশা করে। এ ছাড়া, সম্পর্কের মধ্যে স্থায়িত্ব এবং নিরাপত্তার অনুভূতিও চায়। যদি স্বামী এসব দিকগুলোর প্রতি মনোযোগী হয়, তবে সম্পর্কটি আরও দৃঢ় ও সুখী হয়ে উঠবে।

゚ ゚followers

⚛️একজন নারীর প্রতি বিন্দুমাত্র আবেগ-অনুভূতি ছাড়াও পুরুষ তার সাথে সে*ক্স করতে পারে। কিন্তু, একজন পুরুষের প্রতি যথেষ্ট অনু...
04/01/2025

⚛️একজন নারীর প্রতি বিন্দুমাত্র আবেগ-অনুভূতি ছাড়াও পুরুষ তার সাথে সে*ক্স করতে পারে। কিন্তু, একজন পুরুষের প্রতি যথেষ্ট অনুভূতি তৈরি না-হলে নারী সেই পুরুষটির সাথে সে'*ক্স করে না।

অধিকাংশ পুরুষেরই সে'*ক্স করার জন্য অজুহাতের দরকার শুধু। কিন্তু অধিকাংশ নারীরই সে'*ক্স করার জন্য কারণের দরকার।

কোনো নারীর সাথে শুধুমাত্র একটিবার সে'*ক্স করার জন্য পুরুষ দীর্ঘ সময় ব্যয় করে বহুদূর পর্যন্ত চলে যেতে পারে।

সে'*ক্স এর সময় পুরুষ এমন ভাব করে, যেন সে নারীটিকে ভালোবেসে সে'*ক্স করছে; অথচ সত্য হল সে নারীটির শারীরিক ভাঁজ, ত্বকের লাবণ্য, নিতম্ব-স্ত*নে*র স্ফীতি, অন্যান্য সৌন্দর্য, এসবের লালসায় মত্ত হয়ে সর্বোচ্চ মিনিট পাঁচেকের জন্য সে'*ক্স করছে; এবং বীর্যস্খলনের পর নারীটিকে ভুলেই গেছে।

দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আসা, এজন্য অনেককিছু স্যাক্রিফাইস করা, সাথে উপহার আনা, হোটেল-খাবারদাবার ও অন্যান্য খরচাদি দেখে মনে হতেই পারে— এসব প্রেমেরই বহিঃপ্রকাশ। প্রকৃতপক্ষ এই সবকিছুর একটাই লক্ষ্যঃ সে'*ক্স।

বেকুবিটা হচ্ছে— অধিকাংশ নারীই এইসবকে ভালোবাসা ভেবে নেয়, লাফ দিয়ে বসে পড়ে পুরুষের কোলে। ঠিক এই কারণেই, নারীদেরকে নামীদামী উপহার ও অন্যান্য বিলাসিতা দিয়ে অন্ধ করে রাখে চতুর পুরুষরা। এভাবে বিক্রি হওয়ার পরেও নারীরা উক্তি ফলায়— টাকা দিয়ে মানুষকে কেনা যায় না ব্রো।

সে'*ক্স কমিটমেন্ট নয়, একারণেই অধিকাংশ নারী ও পুরুষ পাশে পার্টনার রেখেই পরবর্তী জনের সাথে সে'*ক্স এর পরিকল্পনা করতে থাকে।

পুরুষ সে'*ক্স এর বস। সে'*ক্স করার জন্য এমন কিছু নেই সে করতে পারে না! রাজ্য জয় থেকে রাজত্ব ক্ষয়, সম্মান খোওয়ানো থেকে পরিবার হারানো, সবই করে পুরুষ শুধুমাত্র সে'*ক্স এর জন্য উন্মাদ হয়ে যাওয়ার কারণে।

এইসব ভয়ানক কর্মকাণ্ডকে নারী ধরে নেয়— তাকে পাওয়ার জন্য বিপ্লবী নায়ক হয়ে গেছে পুরুষ। প্রেম! প্রেম! আহ্‌! অথচ, সে'*ক্স ও প্রেম কখনোই একই পৃষ্ঠায় থাকে না, এমনকি ডিকশনারিতেও না।

একইসাথে একাধিক নারীর সাথে ভিন্ন-ভিন্ন স্বাদের সে'*ক্স চালিয়ে যাওয়ার জন্য পুরুষ কী না করে! সোনার খনি ছেড়ে সে খুঁড়তে শুরু করে নিজেরই কবর।

আর নারী? সে স্রেফ ইচ্ছে করলেই, সে'*ক্স কে হাতিয়ার বানিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে একের-পর-এক সম্ভাবনাময় পুরুষকে। কিন্তু সে ভালোবাসার কাঙাল। বহুজনকে দেহ দিয়েও একজন নারী একজন পুরুষকে হৃদয়ের দেবতা বানিয়ে রাখে। অন্যদিকে, পুরুষ নারীদেহের পূজারী। ভালোবাসা না-পেলেও পুরুষের হাহাকার থাকে না, বড়োজোর একটি কবিতা লিখে বিরহী।

কিন্তু ভালোবাসা পাওয়ার আশায় একজন নারী একটি বাক্য না-লিখেও হয়ে রইতে পারে একজন বিরহিনী-মহাকবি।

⚛️পোস্ট ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন এবং শেয়ার করে অন্যকে দেখার সুযোগ করে দিন।
゚ ゚followers #𝑪𝒐𝒍𝒍𝒆𝒄𝒕𝒆𝒅 ゚

একটি গল্প শোনা যাক,,,,রোজ সকালে মোরগের ডাকে সবার ঘুম ভাঙ্গতো।  তো, একদিন তার মালিক খুব বিরক্ত হয়ে তাকে হুমকি দিল যে, "আর...
04/01/2025

একটি গল্প শোনা যাক,,,,
রোজ সকালে মোরগের ডাকে সবার ঘুম ভাঙ্গতো। তো, একদিন তার মালিক খুব বিরক্ত হয়ে তাকে হুমকি দিল যে, "আরেকদিন যদি সকালে ডেকে ঘুম ভাঙ্গাস তাহলে তোর সমস্ত পালক আমি তুলে ফেলবো ।"
...
ভয় পেয়ে গেল মোরগ! মনে মনে যুক্তি দাঁড় করালো প্রয়োজনে অনেক কিছুই করতে হয়। মোরগ মনে মনে বললো,,,, আমার উচিত সকাল বেলা ডাকাডাকি বন্ধ করে নীতির সঙ্গে আপোষ করে নিজেকে বাঁচানো।
কাজেই মোরগ সকালে ডাকাডাকি বন্ধ করে দিল।

এক সপ্তাহ পর আবার তার মালিক ফিরে এসে তাকে হুমকি দিল, "তুই যদি মুরগির মতো গরগর শব্দ না করিস তাহলে গায়ের একটা পালকও থাকবে না "। মোরগ নীতির সাথে আপোষ করল আবারও মোরগ হয়ে মুরগির মতো গরগর করতে লাগলো।....

এক মাস চলে গেল, মালিক আবার আসলো। এবার দিল ভয়াবহ হুমকি। এখনই যদি তুই ডিম না পারিস তাহলে আমি আগামীকালই তোকে জবাই করব! বেচারা মোরগ কোন উপায় না পেয়ে কাঁদতে শুরু করল। চোখের জলে ভিজিয়ে দিল পুরো দেহ। কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগল, ইশ! প্রথমবারই যদি আপোষ না করতাম।

নীতির সাথে একটু আপোষ করলে এরকম একটার পর একটা আপোষ করে যেতে হয়।
পরিস্থিতি যাই হোক না কেন কখনোই মন্দ নীতির সঙ্গে আপোষ করা যাবে না। প্রথমবার আপনি স্বেচ্ছায় আপোষ করবেন কিন্তু নিশ্চিত থাকুন এর পরেরবার থেকে আপনি আপোষ করবেন কারণ আপনাকে আপোষ করতে বাধ্য করা হবে। ..
বলা হয়ে থাকে," যদি আপনি আপোষের পথের পথিক হন তাহলে নীতিতে অবিচল মানুষদের কখনো অপবাদ দিবেন না, বলবেন না যে এরা উগ্র"। তারচেয়ে বরং নিজের দিকে নজর দিন। দেখুন কি এক গভীর চোরাবালিতে ডুবে গেছেন আপনি।...

দুনিয়ার সমস্ত মানুষ যদি একটি হারাম কাজ করে তারপরও ওইটা হারামই থেকে যাবে।
অন্য সবাই করছে আমিও একটু করি এরকম ভাববেন না। আপনার কাজের জবাবদিহিতা আপনাকে দিতেই হবে। নিজের খেয়াল খুশি মতো কোন পথে নয় বরং সেই পথে অবিচল থাকুন যে পথে আল্লাহ আপনাকে অবিচল থাকার আদেশ দিয়েছেন।

একটা প্রবাদ আছে , " সিংহ ক্ষুধার্ত হলেও ঘাস খায় না। "
আপনার পেটে খাবার নেই, এ কারণে নীতির সাথে আপোষ করবেন না কখনোই।
হালাল-হারামের যে অনুভূতি আপনার মনে আছে, খুব সাবধান! খুব সাবধানে তা জিইয়ে রাখুন। কপি করলে আইডির সমস্যা হলে ভুল বুঝবেন না।শেয়ার করতে পারেন।

゚ ゚

কবির কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে ওর দিকে তাকালো। সুনেরাহ সত্যি সত্যিই ওকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছে? আনন্দে যেন কিছুক্ষণ ওর মুখ...
26/12/2024

কবির কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে ওর দিকে তাকালো। সুনেরাহ সত্যি সত্যিই ওকে বিয়ে করতে রাজি হয়ে গেছে? আনন্দে যেন কিছুক্ষণ ওর মুখ দিয়ে কোনো কথাই বের হলো না। সুনেরাহ নিজে থেকেই কিছু বলতে যাবে, এমন সময় হঠাৎ বিছানার উপর তার ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো। কবির সেদিকে তাকিয়ে দেখে, নাম্বারটি "ডিয়ার হাজবেন্ড" বলে সেভ করা। কবিরের এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে সুনেরাহও মনে হলো বেশ ভয় পেয়েছে।

কবির একদৃষ্টিতে ওর মোবাইলের দিকে চেয়ে আছে। ব্যাপারটা খেয়াল করে সুনেরাহ তড়িৎগতিতে তার ফোনটা পাশে সরিয়ে আড়াল করে কেটে দিলো। সম্পর্ক শুরু হবার আগেই কবিরের মনে সন্দেহ বাসা বাধে। মানুষ মাত্রই যেমন ভুল,তেমন মানুষ সর্বদাই বেঈমানীর আরেক রুপ বহন করে।

কবির কিছুটা কঠিন সুরেই জিজ্ঞাসা করে,
—কোনো সমস্যা, মিস সুনেরাহ? গুরুত্বপূর্ণ কেউ কল করেছে মনে হচ্ছে। সমস্যা নেই৷ আমি ডাইনিংয়ে যাচ্ছি। আপনি কথা শেষ করুন।

—আরে না, না। এমন কিছু নয়। আসলে আজ আমাকে পাত্রপক্ষ দেখতে আসছে,এটা আমার প্রাক্তণ শশুরবাড়ির লোকও জেনে গেছে। তাই সেই বিকাল থেকেই কল দিয়ে খোঁজ নিচ্ছে। আর দেখছেন না? কলও করেছে অনিকের সীম থেকে। ওর নাম্বারটা তো আর কখনোই ডিলেট করতে পারিনি।

সুনেরাহ একবার বড় করেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে। সেই দীর্ঘশ্বাসের ভারি হাওয়া যেন সোজা এসে লাগলো কবিরের বুকের ঠিক মাঝখানে। ছিঃ,ছিঃ, সামান্য এইটুকু কারণে এতক্ষণ তাকে কী না কী ভাবছিল সে! নিজের এই বোকামির জন্য নিজের উপরেই ভীষণ রাগ হচ্ছে ওর।

সুনেরাহকে আর কিছু না বলেই লজ্জায় আর সঙ্কোচে মাথা দুলিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। কবির বের হতেই সুনেরাহ যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। মোবাইল ফোনটা তাড়াতাড়ি সুইচ অফ করতে গিয়ে আবার রিংটোন বেজে ওঠে। সে কিছুটা ভয়ে ভয়েই কল রিসিভ করে বললো,
— বারবার কল দিচ্ছো কেন? পাত্রপক্ষ আমাকে দেখতে এসেছে, জানো না?

ওপাশ থেকে যে জবাব এলো, তা স্পষ্ট করে শোনা গেল না। তবে মুহুর্তেই সুনেরাহ তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে ডাইনিং রুমে ফিরে আসে।

(২)
সুনেরাহ'র সাথে নিজের একমাত্র ছেলের বিয়ের কথা সম্পূর্ণরুপে পাকাপোক্ত করেই রাফিয়া রহমান বাড়ি ফিরেছেন। আর বাড়ি ফিরেই বিয়ে নিয়ে বেশ তড়িঘড়ি শুরু করে দিলেন। হাজার হোক, তার একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা। বিয়েতে কোনো ত্রুটি রাখা যাবে না। কবির কেবলই অবাক হয়ে তার মাকে দেখছে।

নিজের মাকে সে যতটুকু চেনে, এই ভদ্রমহিলা কোনো বিধবা,এক বাচ্চার মায়ের সাথে নিজের ছেলের বিয়ে দিতে চাইবেন না। তাহলে সুনেরাহ'র মাঝে তিনি কী এমন দেখলেন? কবিরের মনে মায়ের এই বিষয়টা নিয়ে বেশ খটকা লাগে।

রাফিয়া রহমান নিজের বিছানায় শুয়ে আয়েস করে বসে মোবাইলে অপরিচিত কারো একজনের কথা বলছেন।
"ছেলের একটা ব্যবস্থা করেই ছাড়লাম। এই বিয়েই আমার ছেলের ভাগ্য ফেরাবে। আপনি দেখে নিয়েন। যদিও হাতে এখনও যথেষ্ট সময় আছে। কিন্তু তাতে কী? শুভ কাজে দেরি করা ভালো নয়। যত দেরি, তত সংশয়। পরে যদি এমন পাত্রী হাতছাড়া হয়ে যায়? তখন কী করবো আমি!"

দরজার পাশে দাঁড়িয়ে মায়ের সমস্ত কথোপকথনই শুনছে কবির। মায়ের এইরুপ আচরণ তাকে আরও যেন ঘেটে দিচ্ছে। এবাড়িতে তার বিয়ে নিয়ে কী এমন বিষয় চলছে! সে রাফিয়া রহমানের দরজায় কড়া নাড়লে তিনি সচকিত ভঙ্গিতে মুহুর্ত সময় চেয়ে রইলেন। কবির ভিতরে ঢুকে মায়ের হাত ধরে জিজ্ঞাসা করে,
—তুমি ঠিক আছো মা?
—একদম। কেন? আমার আবার কী হবে?
—সেটাই তো জানতে চাইছি। মা, একটা সত্যি কথা বলো তো। আমি তোমাকে যতটুকু জানি,তুমি সুনেরাহ'র মত এতগুলো বাহ্যিক দোষে পরিপূর্ণ মেয়ের সাথে আমার বিয়ে তো কখনোই হতে দেবে না। অন্যান্য আত্মীয়দের ক্ষেত্রেও তোমার আচরণ আমি দেখেছি। তাহলে আজ কেন? তাও আবার আমাকেই!
—তোর কী মেয়েটাকে পছন্দ নয়?
—আরে না মা। ওকে আমার অনেক পছন্দ। কত আত্মসম্মানবোধ সম্পন্ন মেয়ে। সেই সাথে বুদ্ধিমতীও।
—সুনেরাহ'কে বুদ্ধিমতী মনে হচ্ছে?

রাফিয়া রহমান কিছুটা ভড়কে গেলেন। শেষ কথাটি তিনি যে সুনেরাহ'র ক্ষেত্রে একদমই আশা করেননি, তা তার মুখভঙ্গি দেখেই অনুমান করা যাচ্ছে। ছেলের সামনে জোরপূর্বক নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বললেন,
—আরে, তুই কী আমাকে এতই নীচু চিন্তাভাবনার মানুষ মনে করিস নাকি?

কেউ যোগ্য হলে তার সেই যোগ্যতার কদর করতে জানতে হয়। আমিও তাই করেছি। দেখ কবির, সুনেরাহ'র ব্যাপারে আমি যথেষ্ট খোঁজ খবর নিয়েছি। মোটামুটি বেশ শিক্ষিত, ভদ্র, মানুষের সাথে সম্মান দিয়ে কথা বলে। আশেপাশের মানুষের কাছে তুই যদি মেয়েটার ব্যাপারে প্রশ্ন করিস, সবাই একটাই উত্তর দেবে-"অমন মেয়ে এই যুগে পাওয়া ভার"। তাছাড়া তুই নিজের চোখেই দেখলি না কীভাবে তোর সাথে বিয়ে ক্যান্সেল করতে চাচ্ছিলো!

—হ্যাঁ মা, সবই দেখেছি, বুঝেছিও। কিন্তু তোমাকে দেখে বুঝতে পারছি না। ছোট মামা কখন আসবেন?

—তোর বিয়ের কেনাকাটা করতে গেছে। পরশুই তো বিয়ে। ঘরোয়াভাবে বিয়ের আয়োজন করছি তো কী হয়েছে? বউমার কোনো কিছুর কমতি আমি রাখতে চাই না, বুঝলি?

কবির আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ মায়ের ঘর থেকে বের হয়ে আসে। তার অগোচরে কিছু তো একটা চলছেই। কিন্তু কী চলছে? পর্তুগাল থেকে "বিজনেস ম্যানেজমেন্ট" নিয়ে পড়াশোনা করে এসেছে সে। যদিও মা এবং ছোট মামার ইচ্ছে ছিল ডাক্তারি পড়ে কবির তার মামার প্রাইভেট হাসপাতালেই যুক্ত হোক।

কিন্তু নানান রকম জোর করলেও কবিরের জিদের কাছে কেউ জিততে পারেনি। পড়াশোনা শেষ করে বর্তমানে একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরিও জুটিয়ে নিয়েছে। আর সেই সাথে শুরু হয়েছে তার মায়ের তাকে নিয়ে বিয়ের তোড়জোড়।

বারান্দায় বসে অনেক রাত জেগে প্রায় দুটোর দিকে কবিরের দু'চোখ টেনে আসতে শুরু করে। ঘুমের ঘোরে একরকম টলতে টলতেই সে বিছানায় এসে বসে। দূরের রাস্তায় একনাগাড়ে রাস্তার কুকুরগুলো ঘেউঘেউ করে ডাকছে। পথে নিশ্চয় কোনো অপরিচিত পথচারী দেখেছে সে। আশেপাশে আর তেমন কোনো শব্দ নেই।

জানালার পাশেই কোনো গাছ থেকে একটা দুটো পাতা ঝরে পড়লো। কবিরের মনে হচ্ছে,সেই পাতা ঝরে পড়ার শব্দও সে শুনতে পেল। ঘুম ঘোরঘোর চোখে জোরপূর্বক তাকিয়ে কান খাড়া সে বেশ আগ্রহ নিয়েই পাতা ঝরার শব্দ শোনার চেষ্টা করে। ঠিক এমনই এক মুহুর্তে সুনেরাহ'র নাম্বার থেকে কল এলো।

কবির সিনেমার নেশাড়ু অভিনেতাদের মত ঘুমের নেশায় নেশাগ্রস্থ হয়ে ঘাড় কাঁত করে নাম্বার দেখার চেষ্টা করে।
"সুনেরাহ এত রাতে কল দিয়েছে!"

স্ক্রিণে ঘড়ির সময় দেখে সে এমনভাবে আঁৎকে ওঠে যে, মুহুর্তেই তার ঘুম হাওয়ায় মিলে গেল। ওপাশ থেকে সহাস্যে সুনেরাহ জিজ্ঞাসা করলো,
—আমার কেন জানি মনে হচ্ছিলো আপনি এখনও ঘুমোননি। শেষ পর্যন্ত আমার ধারণা সঠিক হলো। তাই না বলুন?
—ঠিক তা নয়। মাত্রই ঘুমোতে যাচ্ছিলাম। ঘুমের ঘোরে মরি মরি অবস্থা আমার।
—মাত্র! এখন রাত দুটো পনেরো বাজে।

কবির সহসা জবাব দিতে পারে না। এতক্ষণ তার সত্যিই যে ঘুম আসছিল না- একথা ধামাচাপা দেবার মত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ নয়। তার চেয়ে মৌনতাই উত্তম। ওপাশ থেকে সুনেরাহ আবার বললো,
—আমারও ঘুম আসছে না। সব কেমন যেন অদ্ভুত লাগছে। এভাবে হঠাৎ করে বিয়ে, শশুরবাড়ি! ছোট ওইটুকু মেয়ে নিয়ে এতকিছু সামলে মানিয়ে নেওয়া। সব কেমন যেন এলোমেলো লাগছে। আমি কী করছি, নিজেও জানি না। আমার কী করা উচিত বলুন তো কবির সাহেব। আমার নিশ্চিত হয়ে জানতে ইচ্ছে করছে, আপনি সত্যিই এই বিয়েতে রাজি?

সুনেরাহ'র কথায় কবিরের যেন বড্ড মায়া হলো। সুনেরাহ'কে খুব কাছ থেকে দেখে চোয়ালে হাত রেখে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে—সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি আছি তো। কিন্তু এবারও বলা হলো না।

—দেখুন, আল্লাহ কার কপালে কী লিখে রেখেছেন,এসব তিনিই ভালো জানেন৷ আর আমার সম্পর্কে যদি কিছু জানার থাকে৷ নিঃসঙ্কোচে আমাকে প্রশ্ন করবেন।

—আচ্ছা, এভাবে আপনার ঘুম নষ্ট করার বিশেষ প্রয়োজন নেই। মেয়েটা উঠে পড়েছে। গুড নাইট।

সুনেরাহ কবিরকে "গুড নাইট" বলার সময়টুকুও দিলো না। নিজের কথা শেষ হবার ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যেই বোধহয় কল কেটে দিলো। খাটের পাশে হেলান দিয়ে পা দুটি ঝুলিয়ে সে মুচকি হেসে ভাবে আর বলে,
" নতুন করে তো আর কিছু জানার নেই কবির সাহেব। বাকিটা জানাজানি বরং ময়দানেই হয়ে যাবে!"

#জলতরঙ্গ ৩য় পর্ব

সুনেরাহ'র কথায় কবিরের যেন বড্ড মায়া হলো। সুনেরাহ'কে খুব কাছ থেকে দেখে চোয়ালে হাত রেখে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে—সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি আছি তো। কিন্তু এবারও বলা হলো না। সে বালিশে মাথা রেখে বলে,
—দেখুন, আল্লাহ কার কপালে কী লিখে রেখেছেন,এসব তিনিই ভালো জানেন৷ আর আমার সম্পর্কে যদি কিছু জানার থাকে৷ নিঃসঙ্কোচে আমাকে প্রশ্ন করবেন।

—আচ্ছা, এভাবে আপনার ঘুম নষ্ট করার বিশেষ প্রয়োজন নেই। মেয়েটা উঠে পড়েছে। গুড নাইট।

সুনেরাহ কবিরকে "গুড নাইট" বলার সময়টুকুও দিলো না। নিজের কথা শেষ হবার ন্যানো সেকেন্ডের মধ্যেই বোধহয় কল কেটে দিলো। খাটের পাশে হেলান দিয়ে পা দুটি ঝুলিয়ে সে মুচকি হেসে ভাবে আর বলে,
" নতুন করে তো আর কিছু জানার নেই কবির সাহেব। বাকিটা জানাজানি বরং ময়দানেই হয়ে যাবে!"

সুনেরাহ’র মনের খবর কবির জানে না। কে কাকে ঠকাতে চায়, তাও একে অপরের অজানা।

দেখতে দেখতে বিয়ের দিন ঘনিয়ে আসে। কবির গাঢ় খয়েরি রঙের একটা পাঞ্জাবি পরেছে। তার মাথার মাঝারি সাইজে চুলগুলো কেউ বোধহয় খুব যত্ন করেই আঁচড়ে দিয়েছে। কবিরকে কী ভারি সুন্দর লাগছে আজ। রাফিয়া রহমান নিষ্পলকভাবে ছেলের দিকে চেয়ে রইলেন।

যেন কতদিন তিনি নিজের ছেলেকে এমন মন ভরে দেখেননি। কবির মায়ের কাছে এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো,
-মা, তোমার ছেলেকে কী চান্দের টুকরোর মত লাগছে?
-উঁহু , আমার ছেলে চাঁদের টুকরোর চেয়েও মূল্যবান। আল্লাহ তোকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখুক বাবা।

-রাখবে, রাখবে। এবার তুমি আমাকে একটা সত্যি কথা বলো তো। তুমি ভিতরে ভিতরে কোন একটা বিষয় নিয়ে একা একাই বুকের ভিতর ক্ষত বানাচ্ছো। সেই ক্ষতটা আসলে কী মা? প্লিজ, আমাকে তুমি মিথ্যে বলবে না। আমি বাচ্চা ছেলে নই,তা তুমি জানো।

রাফিয়া রহমান ছেলের মুখখানা নিজের কাছে এগিয়ে ধরে কবিরের কপালে চুমু খেলেন। তারপর বললেন,
-বেশ, তোকে আমি সব বলব। তবে এখন নয়। বিয়ের পর। এখন এসব ছোটখাটো মন খারাপের কথা বলে তোর মুড অফ করতে চাই না। মায়ের উপর এইটুকু বিশ্বাস রাখ।

কবির আর কথা বাড়ায় না। এমনিতেই বেশ দেরি হয়ে গেছে তাদের। মায়ের পা ছুঁয়ে সালাম করে বেরিয়ে পড়ে। রাফিয়া রহমান ছেলেকে একা ছাড়তে চাচ্ছিলেন না,কিন্তু কবিরের ছোটমামার জন্য আর যেতে পারলেন না। বিয়ের সময় পাত্রীর বাড়িতে পাত্রের মায়ের যাবার নিয়ম নেই। যা কিছুই ঘটুক, তা তিনি একাই সামলে নিতে পারবেন।

কিন্তু বিয়ে বাড়িতে ছোটমামা সব সামলাতে পারলেন না। বিয়ে পড়ানোর ঠিক আগ মুহুর্তে সুনেরাহ হঠাৎ কবিরকে ডেকে বসলো। কন্ঠে বেশ কাঠিন্য টেনেই সে বললো,
-আমার কেমন সন্দেহ হচ্ছে।
–মানে? কীসের সন্দেহ!

-আপনারা ওবারিতে যাবার পর সত্যিই আমার সাথে একজন নতুন বউয়ের মত ট্রিট করবেন তো? আমার এত দোষ, এত ত্রুটি-সবটাই আপনারা মেনে নিচ্ছেন। পৃথিবীটা এত সহজে বদলে গেছে,এই কথাটা বিশ্বাস করতে কেন জানি প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে। আপনি প্লিজ আমাকে ভুল বুঝবেন না। আমার জায়গায় দাঁড়িয়ে একবার অনুভব করে দেখুন।

কবির ছোট করে একবার শ্বাস ফেলে। নারীর মন খুব সহজে কোনো বস্তু, কোনো ব্যক্তির উপরেই ভরসা করে না। একথা সেও জানে।

তবে এও সত্যি যে, একবার ওদের কারো প্রতি ওদের বিশ্বাস জন্মে গেলে, একবার কারো মায়ায় পড়ে গেলে, সারা দুনিয়া বিরোধীতা করলেও ওরা সেই বিশ্বাস আর মায়াটুকুই আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়। সে নিজের অজান্তেই সুনেরাহ’র একটি হাত নিজের মুঠির মধ্যে আগলে ধরে বললো,
-আপনার এমন দুশ্চিন্তার হেতু আমি উপলব্ধি করতে পারছি।

শুধু আপনি নন, এই সম্পর্কটা নিয়ে আমারও সংশয়ের শেষ নেই। কিন্তু সাহস করে কদম উঠাতে তো দোষ নেই। বাকি সব কেমন হবে আমি জানি না, কিন্তু আমি কবির, আমি আজ পর্যন্ত কোনো নারীর সাথে এমন প্রতারণার চেষ্টাও করিনি, যার দরূণ সে দুঃখ পায়। আর সেখানে আপনি তো আমার স্ত্রী হবেন! মিস সুনেরাহ, আমি আপনাকে অভয় দেব না। কিন্তু নিজের উপর ভরসা করে সৎ সাহসটুকু দেব।

আমি বুঝতে পারছি, আপনার সমস্ত চিন্তা আপনার মেয়েকে নিয়ে। তাই তো? আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি, আমার বাড়িতে প্রবেশ করার পর ওর আগামীর দিনগুলোর সমস্ত দ্বায়িত্ব আমার উপর থাকবে। আর আমি সেই ব্যবস্থা করবো।

কিন্তু ওর কথায় সুনেরাহ খুব একটা সন্তুষ্ট হলো বলে মনে হয় না। না হবারই কথা। স্বামীহারা সদ্য মা হওয়া একটি অল্পবয়সী নারী খড়কুটো ধরে বাঁচতে চায়।

যে লতা হাতের সামনে জোটে, সেটি আঁকড়ে ধরে থাকে। কিন্তু সুনেরাহ কী তাই? সে নিজের বোধ ও আত্মসম্মান নিয়ে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তাছাড়া, মাত্র তেরোদিন আগে সে বাচ্চার মা হয়েছে। এর মধ্যেই রাফিয়া রহমান এই মেয়েকেই ছেলের বউ করার জন্য পাগল হয়ে যাচ্ছেন।

যদিও সম্বন্ধ পাকা হবার সময় কথা হয়েছে, অন্তত দুইমাস তারা একে অপরের ঘনিষ্ঠ হবে না। তারপরেও, হঠাৎ করে ব্যাপার এত সহজে মানিয়ে নেওয়াও অসম্ভব। এদেশের ইতিহাসে এমন অদ্ভুত ঘটনা কী এর আগে ঘটেছে?

কবির তার ছোটমামাকে ডেকে কোথায় জানি কল দিতে বললো। বরযাত্রী বিশেষ নেই। খুব কাছের বন্ধুবান্ধবসহ দুই পক্ষের হিসাবে সর্বোচ্চ আঠারো বা বিশের কাছাকাছি মানুষই হবে। রাগিব চেয়েছিল তার খালাকে কল দিতে।

কিন্তু সুনেরাহ কারোর সাথেই যোগাযোগ করতে দেয়নি। সে যখন যাবে, নীরবে চুপিচুপিই যাবে। আর একবার গেলে এবাড়িতে দ্বিতীয়বার ফিরে আসবে বলে মনে হয় না। হয়তো সেকারণেই কবিরের কাছে আরও অধিক কোনো ভরসা খুঁজছে।

ঘন্টাখানিক বিয়ে স্থগিত করার পর মোতালেব সরকার নামের এক উকিল হাজির হলেন। কবিরই তাকে ডেকেছে। সুনেরাহ একবার উকিলের দিকে আরেকবার কবিরের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকায়। সে যে এখনও ঘোরের মধ্যে আছে, সেটা বুঝতে পেরে কবির বললো,
—সুনেরাহ, আপনাকে বিয়ে করার জন্য আমি টিনেজার ছেলেদের মত পাগল হয়ে যাইনি।

কিন্তু সেদিন দেখতে এসে আমরা যখন একে অপরকে পছন্দ করেছি, তাই নিজেদের মধ্যে কোনো খাদ কিংবা সংশয় কোনোটাই রাখতে চাই না। আপনি আমার জীবনে সেরাদের সেরা মানুষটিও নন। তবে যোগ্য মানুষ। বিয়ের পর অনুদিতি আমারও সন্তান। তাই সেই সন্তানের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমারও। আমার সম্পত্তির অর্ধেক আমি অনুদিতির নামে লিখে দিচ্ছি।

সুনেরাহ হতভম্ব হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। কবির সত্যি সত্যিই তার মেয়ের নিরাপত্তার জন্য এত বড় একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছে! ব্যাপারটা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না ওর। কিছুক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থেকে সে বাধা দিয়ে বলে ওঠে,
—আমরা কী তবে দেনাপাওনা করছি!

—না। ভরসার জায়গাটি পোক্ত করছি। যদিও গতকাল রাতেই আমি এই বিষয়টি ভেবে রেখেছিলাম। আশা করি,এরপরে আমাকে ভরসা করতে তোমার দ্বিধা হবে না। মোতালেব ভাই, আপনি উইলটা সঙ্গে এনেছেন?

মোতালেব সরকার উইলের সমস্ত কাগজপত্র কবিরকে বুঝিয়ে দিলেন। কবির সেগুলোতে স্বাক্ষর করে সুনেরাহ'র হাতে তুলে দেয়। এরপর তার আর কিছুই বলার থাকে না। অবশ্য বলতেও হলো না। ঠিক যেমন হাঙ্গামার গতিতে প্রশ্ন উঠেছিল, তেমন গতিতেই নীরবতা বজায় রেখে দুজনের বিয়ে পড়ানো হয়ে গেল।

ছেলে যে পাত্রীপক্ষের বাড়িতে এমন বিচ্ছিরি কান্ড করে বসে আছে, তা রাফিয়া রহমান জানতেন না। এমনকি ছোটমামাও ভেবেছিলেন, তার বোনের পরামর্শেই কবির এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

যদিও ক্ষণিক মুহুর্তের জন্য সে অবাক হয়েছিল। কিন্তু তার যে বোন এমন একটি মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে, সেখানে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়াটাও বিশেষ কোনো ব্যাপার না। তবে ছোটমামার ভুল ভাঙলো, যখন বোনের কাছে যেচে গিয়ে কবিরের কথা জানায়।

—কী! তুই নিজে থেকেও এসব করতে দিলি? তুই জানিস না, সুনেরাহ'র সাথে আমি কেন কবিরের বিয়ে দিলাম? মেয়েটা সর্বোচ্চ দুই তিনমাস এ বাড়িতে থাকবে। তারপর? ও তো নাই হয়ে যাবে। ওর বদলে এখন আমাকে ওর ওই বাচ্চার দেখাশোনা করা লাগবে!



















এক মাস হয়েছে একটা ছেলের সাথে রিলেশনে আছি। ছেলেটা আমাকে একটু বেশিই জ্বালাতন করে তাই ভাবছি তার সাথে কীভাবে ব্রেকাপ করা যায়...
24/12/2024

এক মাস হয়েছে একটা ছেলের সাথে রিলেশনে আছি। ছেলেটা আমাকে একটু বেশিই জ্বালাতন করে তাই ভাবছি তার সাথে কীভাবে ব্রেকাপ করা যায় !!!!

এইদিকে ছেলেটাকেও ব্লক করতে পারছি না। কারন আমি ব্লক করে দিলেও সে আমাকে অন্য কোনো আইডি দিয়ে বা মোবাইলে কল দিয়ে ডিস্টার্ব করবে। তাই আমাকে এমন কিছু করতে হবে যাতে সে নিজে থেকেই আমাকে ব্লক করে দেয় আমার সাথে যেন আর কোনো দিন যোগাযোগ না করে।....

এইদিকে সিহাবকে তাড়ানোর জন্য আমার মাথায় একটা দুষ্টু বুদ্ধি এসেছে। রাতে তাকে মেসেজ দিয়ে বললাম,,,,,,

আমিঃ হ্যালো,কেমন আছো??????

সিহাবঃ হ্যা, বেবি.... আমি ভালো আছি তুমি কেমন আছো??????

আমিঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। আচ্ছা সিহাব তুমি তো আমাকে অনেক ভালোবাসো তাই না?? তাই তোমার থেকে কোনো কথা লুকানো ঠিক হবে না। আমি না এই শীতে এক মাস গোসল করেনি এটা যেনে কি তুমি আমার সাথে ব্রেকাপ করে দিবে??

প্লিজ সিহাব আমাকে ব্লক করে দিও না। আর যদি তুমি কথা বলতে না চাও তাহলে আমি তো আর কিছু করতে পারবো না। তুমি চাইলে আমাকে ব্লক করে দাও।|||

সিহাবঃ আরে পাগল আমি তোমাকে ব্লক করে দিবো কেন। শীতকালেও তো আমিও এক মাস গোসল করি না

ছি! কি খাচ্চরের সাথে এত দিন কথা বলতাম আমি। কিন্তু আমার এ প্ল্যানটা তো ফেল করলো এটাকে তাড়াতে হলে আরো জড়ালো প্ল্যান করতে হবে

আমিঃ সিহাব কালকে আমার সাথে দেখা করতে পারবে??

সিহাবঃ হ্যা বলো কোথায় আসতে হবে আর কয়টায় আসতে হবে??

আমিঃ সকাল ১০ টার দিকে আমাদের বাড়ির পাশের পার্কে চলে এসো।

সিহাবঃ ঠিক আছে...

সকালে পাশের বাসার আন্টিকে গিয়ে বললাম আন্টি হাফসাকে আজকে আমার সাথে পার্কে ঘুরতে নিয়ে যাবো। আন্টি তো শুনে অভাক।

তুমি কি হাফসাকে নিয়ে ঘুরতে পারবে?? ও যে দুষ্টু।আমি মনে মনে বলি আন্টি আমার তো হাফসার মতো এরকম ডেনজারাস মেয়েই দরকার।
সিহাবঃ একি এই ছোট বাচ্চা কে?? ...
আমিঃ ও তোমাকে তো আগে বলা হয়নি এটা আমার বেবি

মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে এমন ভঙ্গি করে সিহাব বলে,,,,,,

সিহাবঃ কি বলো এ কথা আগে বলনি কেন আমাকে.... তোমার বেবি আছে?? ....

আমিঃ তুমি তো জিজ্ঞাসা করো নাই তাই বলিনি। আর আমি কি বলছি আমার বেবি নাই এটাও তো বলি নাই।

সিহাবঃ বাচ্চার বাবা কে?? সে কোথায়?

আমিঃ বাচ্চার বাবা ১ বছর আগে মারা গেছে তাই তো তোমার মতো একটা ভালো বাবা খুজতেছি আমার বাবুর জন্য। যে কিনা আমার বাচ্চাকে বাবার আদর দিতে পারবে। আমি জানি তুমি আমার সাথে আমার বাবুকেও একসেপ্ট করবে। কি কোনো সমস্যা আছে তোমার?? ....

সিহাব বোবার মতো আমার দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছে,,,,,

আমিঃ নেও ধরো, কুলে নিয়ে রাখো আমার বাবুকে

সিহাবের কুলে দিতেই হাফসা পেন্টে হিসু আর পটি করে দিছে

কিন্তু এটা তো আমার প্ল্যানে ছিলো না। যাই হোক আল্লাহ যা করে ভালোর জন্যই করে

সিহাবঃ আমার কাপড় এর অবস্থা খরাপ করে দিলো। এখন আমি বাড়িতে যাবো কীভাবে?????

আমিঃ বাবা হতে গেলে এইটুকু তো সহ্য করতেই হবে বেবি। এগুলো পরিষ্কার করো। আমার জন্য এইটুকু পারবে না তুমি ??

সিহাব মুখটা একটু বেঙচিয়ে বলে

হ্যা পারবো,,,

আমি হাফসার পায়ে একটা চিমটি কেটে দেই আর সাথে সাথে মেয়ে এমন কান্না শুরু করছে যে আমরা তার কান্না থামাতেই পারছি না।

tআর বয়সে ছোট হওয়ায় কান্না করতে করতে কি বলছে সেটাও বুজা যাচ্ছে না। তাই আমি সিহাবকে বলি,,,,,৷

হাফসা বলছে সে পুরী খাবে.........

সিহাবঃ আরে এই দুপুর বেলা আমি পুরি পাবো কোথা থেকে। অন্য কিছু কিনে দেই?চিপস,চকলেট,আইসক্রিম?

আমিঃ না হাফসার যখন যেটা খেতে ইচ্ছে করে তখন সেটা এনে দিতে হয় নাহলে কান্না থামাবে না।

কয়েক মিনিট পর,,,,,,,,

সিহাবঃ এই নেও পুরি অনেক কষ্ট করে খুঁজে একটা হোটেল থেকে নিয়ে এসেছি। গিলাও তোমার মেয়ে কে

আমিঃ এই কি তুমি পুরির সাথে সালাদ এনেছো কেন? আমার মেয়েতো পুরীর সাথে টমেটো সস খায়। যাও তাড়াতাড়ি টমেটো সস এনে দেও

সিহাবঃ আবার যাবো আমি এত দূরে?

আমিঃ হ্যা যাবে না? কয়েকদিন পর তো হাফসা তোমার মেয়ে হবে। মেয়ের জন্য এইটু করতে পারবে না?

হুম,,,,,

হাপাতে হাপাতে বলে,,,,,,,

সিহাবঃ এই নেও টমেটো সস।

আমিঃ এইকি হাফসা কোথায় গেলো আমার মেয়েকে খুঁজে এনে দেও। ফোনে কথা বলা শেষ করে দেখি হাফসা নেই। সিহাব আমার মেয়েকে এনে দেও

এগুলো বলতে বলতে মাটিতে বসে মরা কান্না জুরে দিলাম......

সিহাবঃ আরে চুপকরো সবাই তো তোমার দিকে তাকিয়ে আছে কান্না থামাও আমি হাফসা কে খুঁজে আনছি।

এই যে ধরো তোমার মেয়েকে। এ রকম দুষ্টু মেয়েকে নজরে রাখতে পারো না?? আমার জীবনটা শেষ করে দিছে আজকে

দৌড়াতে দৌড়াতে ছেলেটার শার্ট ঘামে ভিজে গেছে।

হঠাৎ সিহাব পকেট থেকে ফোন বের করে কানে দিয়ে বলে,,,,,,,,, কি বলছো আমি এখনি বাড়িতে আসছি আম্মু। তুমি চিন্তা করো না।

আমিঃ কি হয়েছে কোনো সমস্যা? ???

সিহাবঃ হ্যা বাড়িতে একটু প্রবলেম হইছে। তোমাকে পরে জানাবো
এটা বলেই সিহাব বড় বড় পা ফেলে হাটঁতে থাকে। আমি পিছন থেকে ডাক দিলেও সে আর পিছনে তাকায় নি।

সিহাবের ফোনে যে কল আসলো আমি তো তার ফোনে কল আসার সাউন্ড শুনলাম না।

খুশি মনে বাড়িতে চলে আসলাম

রাতে ফোন হাতে নিয়ে দেখি মেসেঞ্জারে সিহাবের আইডিতে লেখা the Parson is unavailable in messenger নাম্বারেও ব্লক দেওয়া আমাকে
যাক তার মানে আমার মিশন সাকসেসফুল হইছে

সমাপ্ত





















বিবাহিতা নারীরা যখন প্রেমে পড়েন,তখন তাঁরা ঠিক ততটাই প্রেমময় হন,যতটা প্রেমময় হয় কুমারী মেয়েরা।প্রেম তো বিবাহ বা কুমা...
22/12/2024

বিবাহিতা নারীরা যখন প্রেমে পড়েন,
তখন তাঁরা ঠিক ততটাই প্রেমময় হন,
যতটা প্রেমময় হয় কুমারী মেয়েরা।
প্রেম তো বিবাহ বা কুমারীত্ব বোঝে না,
সে দেখে শুধু মনের আয়না,
শুনে হৃদয়ের রাগ-রাগিণী।....

বিবাহিতা নারীরাও,
সমাজের চোখ রাঙানি এড়িয়ে,
করে যান প্রেম—
একটি অমর লতার মতো।
কারণ প্রেমের বীজ কেউ বোনে না,
তা নিজেই হঠাৎ হৃদয়ের
ভেজা মাটিতে অঙ্কুরিত হয়।...
প্রেমে পড়ে, তারা হয়ে ওঠে
আবার সেই সতেরো-আঠারো বছরের তরুণী।
উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে মন,
প্রেমিকের এক ঝলক দেখার জন্য।
দেহের বাসনাকে ছাপিয়ে,
তাদের প্রেম খুঁজে পায় আত্মার সুখ।
প্রেমিকের একটি আলিঙ্গনে
তারা ডুবে যায় এক অপার্থিব আনন্দে।...

তারা ভুলে যায় নিজেদের সকল দুঃখ,
প্রেমিকের চোখের গভীরে ডুব দিয়ে।
তার প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি হাসি,
তাদের করে তোলে এক মীরার মতো।
মনের তারে বেজে ওঠে এক সুর,
যা ভাসিয়ে নিয়ে যায় তাদের।....

প্রেমিকের একটি ডাকেই,
সতরোটি বসন্ত যেন
তাদের হৃদয় জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।
তারা ফুটে ওঠে পলাশ ফুলের মতো,
আবিরের লাল রঙে।
তাদের আনন্দ খেলা করে
বসন্তের হলুদ সরষে ফুলের মতো।....

তবু, তারা চায় না সমাজের কোনো কলঙ্ক।
তারা চায় না, কেউ তাদের 'কুলটা' বলে,
তাদের প্রেমকে অপমান করুক।
তারা চায় সেরা মা হতে,
চায় আদর্শ স্ত্রী হয়ে থাকতে।
তারা গৃহস্থ জীবনের দায়িত্বে
কখনো পা বাড়ায় না পিছু হটার দিকে।...

তবু, মনে মনে তারা রয়ে যায় সেই নারীতেই।
যে ভালোবাসা দিতে জানে,
সেই কুমারী মেয়েটির মতোই,
যে তার বাবার মেয়ে, ভাইয়ের আদরের বোন।
তারা চায় প্রেমিকের প্রত্যেক ব্যথা
লুকিয়ে রাখতে নিজেদের আঁচলে।
প্রার্থনার প্রতিটি মুহূর্তে
চায় তার সুখের আশীর্বাদ।....

কিন্তু কুমারীদের মতো
তাদের প্রেমের স্বপ্নের
কোনো পূর্ণ ঠিকানা থাকে না।
তারা জীবন চালায় এক অদ্ভুত ভারসাম্যে—
এক চাকার গৃহস্থ জীবন, আর এক চাকার প্রেম।...

নীরব রাতে, নিঃসঙ্গতার ছায়ায়,
তারা স্বামীর পিঠে দেখে প্রেমিকের মুখ।
তারা চায় প্রেমিকের সান্নিধ্যে,
জীবনের প্রতিটি কঠিনতায়
খুঁজে পেতে শান্তির এক টুকরো ছায়া।

কুমারী মেয়েরা প্রেমিকের সঙ্গে বেঁধে নিতে চায় সংসার।..
আর বিবাহিতা নারীরা,
প্রেমিককে হারাতে চায় না।
তারা বাঁধা পড়তে চায় বিশ্বাসের ডোরে,
গ্লানির আগুনে প্রেম উৎসর্গ না করে,
তারা নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতে থাকে—
বিশ্বের সকল প্রেমিকাদের মতোই।...















“তোকে আমি বলেছিলাম‚ আমি একজনকে ভালোবাসি; গার্লফ্রেন্ড আছে আমার। তাই এই বিয়েটা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ঠান্ডা মাথায় তোকে...
22/12/2024

“তোকে আমি বলেছিলাম‚ আমি একজনকে ভালোবাসি; গার্লফ্রেন্ড আছে আমার। তাই এই বিয়েটা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। ঠান্ডা মাথায় তোকে সব বলে কত্ত বুঝালাম। তারপরও কেন ঢ্যাং ঢ্যাং করে আমায় বিয়ে করলি? হ্যাঁ?” রাগে রীতিমতো কাঁপছি আমি।

শেরওয়ানির ভেতরে ঘেমে-নেয়ে একাকার হচ্ছি; ললাটে জমছে আমার উত্তেজনার বিন্দু বিন্দু পানি‚ কিন্তু থামলাম না। বলে গেলাম তীক্ষ্ণ মেজাজে‚ “কী ভেবেছিস কী তুই নিজেকে? বিশ্বসুন্দরী? হ্যাঁ?... আরে অ্যাই... শোন শোন‚ আমি ম//রে গেলেও তোর মতোন কু/ৎসিত একটা মেয়েকে কোনোদিনও আমার বউ হিসাবে মানবো না; কোনোদিনও না।

আমার মা বাবা আর খালু খালামণি তোকে আমার গলায় ঝু/লিয়ে দিয়েছে বলে তোকে বউ হিসাবে মেনে নিবো— এটা তুই স্বপ্নেও ভাবিস না।”

আজ আমার বাসর‚ কিন্তু মেজাজ চড়ে আছে সপ্তম আকাশে। তাই তো সদ্য বিয়ে করা বউকে অপমান করতে এক চুলও ছাড় দিলাম না। মনের আঁশ মেটাতে মুখে যা এসেছে‚ বিচার বিবেচনা না করেই বলে গিয়েছি; তিক্ত মেজাজের বহিঃপ্রকাশ ভীষণ বাজেভাবে ঘটিয়েছি।

কিন্তু এত কথা শোনানোর পরও তো মনটা শান্ত হচ্ছে না। তাই দুমদাম পা ফেলে বেলকনিতে চলে এলাম; চলে এলাম নিজের তপ্ত মনকে নীহার করতে‚ এক টুকরো চাঁদের জ্যোৎস্নায় ঝ//লসিত হৃদয়কে ভাসিয়ে দিতে। কিন্তু গ্রিলের ফাঁকে চাঁদের খোঁজ করতে গিয়ে আজ বিরক্ত হলাম‚ “ধ্যাৎ শা লা! আজাইরা একটা জায়গায় গাছ গজিয়ে আছে। চাঁদের তো দেখা পাওয়াই ভার।...

আজ কপাল সবদিক দিয়েই পুড়েছে আমার।” বিরক্তে মন মস্তিষ্ক তিক্ত হলো। সময়কাল ব্যয় না করে বসে পড়লাম ইজি চেয়ারে; কিচ্ছু ভালো লাগছে না। জীবনটা শেষ হয়ে গেছে— এমন মনে হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে।

ইজি চেয়ারে হেলান দিয়ে কপাল হাত রাখলাম। দুঃখের সমুদ্রে ভেসে গিয়ে আমি মুদিত নয়নে দুঃখের হাসি হাসলাম। আনমনে বিড়বিড় করে বললাম‚ “হায় রে মিরাজ আবরার‚ অবশেষে তোমার ভবলীলা সাঙ্গ হলো আজ।

বিয়েও করলে এমন একজনকে‚ যাকে ছেঁটে ফেলা সহজ হবে না কারণ সে যে তোমার একমাত্র খালাতো বোন। তোমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে যেই খালামণি‚ এই মেয়ে তো তারই একমাত্র নয়নের মণি। এবার তোমার উপায় কী হবে চাঁদু?”

হ্যাঁ‚ বাসর ঘরে যাকে ফেলে রেখে বেলকনিতে চলে এলাম‚ সে আমার খালামণির অর্থাৎ আমার মায়ের আপন ছোটো বোনের মেয়ে। খালামণি আমাকে খুব স্নেহ করে। একদম নিজের ছেলের মতোন ভালোবাসে।

তাই তো আমাকে আরও আপন করে নিতে মেয়ের জামাই বানিয়ে বসলো। কিন্তু আমার যে আপত্তি আছে— এ কথা কেউ জানতে চাইলো না‚ বুঝতে চাইলো না এমনকি একবার জিজ্ঞেসও করলো না।

বিয়ে নিয়ে‚ বাসর নিয়ে কত স্বপ্ন ছিল আমার। ইচ্ছে ছিল বউয়ের হাত ধরে সারারাত খোলা আকাশের নিচে বসে ঝলমলে চাঁদের জ্যোৎস্নায় মন ভাসাবো‚ কিন্তু আমার সব আশা ভেস্তে দিলো! ইচ্ছে তো করছে বউ নামক ঝুলে পড়া ওই ইডিয়টকে এখনই খু//ন করে ফেলি।

কথামণি— আমার বিয়ে করা বউ; সম্পর্কে আমার খালাতো বোন। মেয়ে হিসাবে কিন্তু মন্দ নয় বরং বউ হওয়ার সমস্ত গুণ বিধাতা তাকে ভরপুর করে দিয়ে রেখেছেন। গায়ের রঙ উজ্জ্বল শ্যামলা হলে কী হবে।

ওই মেয়ের মুখের দিকে তাকানো প্রত্যেকটা যুবক একবার হলেও তার বুকের ভেতর অন্য একটা কাঁপুনি ঠিকই টের পাবে। মুখ ভর্তি কৃষ্ণ তিলগুলো মেয়েটাকে অপার সৌন্দর্যে ভাসিয়ে রেখেছে।

ছেলেদের নাকি তিলের প্রতি দূর্বলতা আছে। আমার ঠিক জানা নেই। তবে ওর মুখে অতি বাড়াবাড়ি রকমের তিলগুলো আমার কাছে একটুও বেমানান লাগে না বরং মনে হয়‚ এই তিলই ওকে দেখার নেশা গাঢ় করে; মনকে টালমাটাল করে। শুধু যে মুখে তিল আছে তা কিন্তু নয়‚ হাতে পায়েও অসংখ্য তিল।

ও যখন খুব ছোটো ছিল আর আমিও‚ তখন ওর হাতে পায়ে আর মুখের যেখানে তিল ছিল‚ সেখানে আমি চিমটি কাটতাম। মেয়েটা ব্যথা পেয়ে কেঁদে দিতো‚ তখন ওর কান্না থামাতে আবার আমিই মায়া ভরা গলায় বলতাম‚ “আর করবো না এমন।

কাঁদে না তিলপরী।” আশ্চর্যের বিষয় আমি ‘তিলপরী’ বললেই সেই ছোট্ট মেয়েটার কান্না থেমে যেত। ভেজা চোখ আর হাসি মুখে মিষ্টি করে জানতে চাইতো‚ “সত্যি মিরাজ ভাইয়া?”

রুম থেকে আচমকা ফোঁপানির শব্দ ভেসে আসছে। আমি কপাল থেকে হাত সরিয়ে সোজা হয়ে বসলাম। কান খাড়া করে পুনরায় শোনার চেষ্টা করলাম। হ্যাঁ‚ চুপিসারে তিলপরী কাঁদছে। এত বকা খেয়ে যেকোনো মেয়েই কাঁদবে— এটা নতুন কিছু নয়। কিন্তু কী জানি কী ভেবে আমি ইজি চেয়ার ছেড়ে রুমে চলে এলাম।

ঘরের মধ্যে আমার উপস্থিতি টের পেয়ে তিলপরী নড়েচড়ে উঠলেও ওর কান্নায় কোনোপ্রকার বিরতি এলো না; নিজের মতো করে ক্যাসেট প্লেয়ার চালিয়ে গেল। এদিকে আমি এক দৃষ্টিতে ঘোমটাপরা মেয়েটাকে দেখলাম নিভৃতে।

দেখতে গিয়ে বুকের মধ্যে মোচড়ও টের পেলাম। না‚ এই মূহুর্তে ওর কান্নাটা আমার একমদই সহ্য হচ্ছে না। টেবিলের এক কোণায় এক গ্লাস পানি ঢাকা দেওয়া ছিল‚ সেটা হাতে নিয়ে বিছানার কাছে এসে দাঁড়ালাম। এবার রাগ নয়‚ একটু স্নেহের গলাতেই ওকে ডাকলাম‚ “তিলপরী?” কাজ হলো।
মেয়েটা চমকে উঠে কান্না থামিয়ে দিলো; হয়তো ভয় পাচ্ছে আমায় একটুখানি বেশি। কিন্তু জোর করে থামিয়ে দেওয়া কান্না এবার হেঁচকির রূপ নিলো। সোজা হয়ে বসে ও সামলানো চেষ্টা চালাচ্ছে; চালাক চেষ্টা‚ আমি এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে গেলাম না। হাতের গ্লাসটা এগিয়ে দিয়ে বললাম‚ “পানিটা পান করে নে।”

ভেবেছিলাম আমাকে হয়তো বারকয়েক সাধতে হবে‚ কিন্তু একবার বলতেই কাজ হলো। বিনা উত্তরে পানির গ্লাস নিয়ে ঢকঢক করে পান করতে লাগলো। এদিকে আমি ওর বসন দেখে অন্য কথা ভাবতে লাগলাম। এত ভারী শাড়ি গহনা পরে তো ওর পক্ষে আর বসে থাকা সম্ভব নয়।

তাই চট করে আমার আলমারি থেকে সম্পূর্ণ কালো রঙের একটা থ্রি-পিস নিয়ে এলাম। ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম‚ “সারাদিন অনেক ঝামেলা গেছে। এবার চট করে পোশাকটা পাল্টে ফ্রেশ হয়ে নে। ভালো লাগবে।”

#তিলপরী❤️

✍️দিজা মজুমদার





#অলকানন্দার_নির্বাসন













Address

89, C. R Datta Road, 1205 Dhaka Division
Dhaka
1000

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Golpo Hunt Bangla posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Golpo Hunt Bangla:

Share