Krishicitra Asia

Krishicitra Asia The Daily Krishicitra (দৈনিক কৃষিচিত্র) বিশ্বের অন্যতম অনলাইন ভিক্তিক কৃষি নিউজ পোর্টাল। কৃষি বিষয়ক সকল ধরনের তথ্য তুলে ধরা হয়।

04/12/2024

আগাম ফুলকপি চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন কৃষকের
কৃষি ডেক্স | দৈনিক কৃষিচিত্র | প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৪

লালমনিরহাটে বন্যার ধকল কাটিয়ে ও ভারী বর্ষণ না থাকায় চলতি মৌসুমে ফুলকপি বাম্পার ফলন হয়েছে। শীতকালীন সবজি ফুলকপির আগাম ফলনে সাড়া ফেলেছেন জেলার সবজি চাষিরা। চাষিরা আগাম ফুলকপি চাষকরে জেলার সবজির চাহিদা পূরণ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করছে কৃষকরা।

লালমনিরহাটের সীমান্তবর্তী ৫ উপজেলায় আগাম জাতের ফুলকপি চাষ করে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন কৃষকরা। খরচের চেয়ে তিনগুণ লাভ পেয়ে খুশি ফুলকপি চাষিরা। ভোর থেকে ফুলকপি বিক্রির ধুম পড়ে যায় গ্রাম গুলোতে। পাইকাররা আসেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে। কৃষাণ কৃষাণী দলবেঁধে জমি থেকে ফুলকপি সংগ্রহ করে তা ওজনের পর বিক্রি হয়। ফুলকপি বহন করতে নিয়মিত আসে অটোরিকশা, পিকাপ ও ট্রাক।

কৃষকরা বলছেন, রোগ বালাই কম থাকায় আগাম জাতের ফুলকপির ফলন ভালো হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অধিক মুনাফা অর্জন করছি। আগাম ফুলকপি পাওয়ায় ক্রেতাদের চাহিদাও বেড়েছে। বর্তমানে বাজারমূল্য বেশী পাওয়ায় চাষিরা লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতি কেজি ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা ও প্রতি পিস ২০ থেকে ২৫ টাকা দামে বিক্রি করছেন কৃষকরা।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, বর্ষার পরপরই শীতের আগে আগস্ট মাসে ফুলকপির চারা রোপণ করা হয়। আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাবে। এবার জেলায় আগাম ২২০ হেক্টর জমিতে ফুলকপি চাষাবাদ হয়েছে। স্বল্প সময়ে ভালো ফলন হওয়ার পাশাপাশি অধিক মুনাফা পাওয়ায় অনেক চাষিই এখন ফুলকপি চাষে ঝুঁকছেন।

পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা এলাকার ফাতেমা আক্তার বলেন, চার বিঘা জমি লিজ নিয়ে ফুলকপি চাষাবাদ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ার জন্য স্বামীর সহযোগিতায় ট্রাকে করে ফুলকপি ঢাকার কারওয়ান বাজারে পাঠাচ্ছি। আশাকরি ভালো দাম পাবো।

ফুলকপি চাষী মহির উদ্দিন বলেন, সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছি। খরচ হয়েছে দেড় লাখ। আশা করি চার লক্ষ টাকার বেশি ফুলকপি বিক্রি করব।

সবজি ব্যবসায়ী লিটন বলেন, আমরা প্রতিদিনই ট্রাকভর্তি করে কৃষকদের ফুলকপি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে থাকি। বর্তমানে ফুলকপির চাহিদা ব্যাপক। দামও ভালো। চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।

লালমনিরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন বলেন, লালমনিরহাট জেলা তিস্তা বিধত জেলা হলেও এর অধিকাংশ জমি উঁচু ও মাঝারি উচু জমিতে শাকসবজি আবাদের উপযোগী। বর্ষার পরপরই শীতের আগ মুহূর্তেই শাকসবজি তুলনামূলক কম থাকে। এই মুহূর্তে যারা আগাম সাবজি আবাদ করবে তারা নিঃসন্দেহে বাজারে দাম ভালো পাবে। সেই সাথে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করতে এবং তা বাণিজ্যিকীকরণ করতে কৃষি বিভাগ সারা বছর সবজি চাষে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতা দিয়ে আসছেন।

04/12/2024

আলু চাষ পদ্ধতি

পৃথিবীর ৪০টিরও বেশি দেশে আলু প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। পুষ্টির দিক দিয়ে আলু ভাত ও গমের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। অনেক ক্ষেত্রে ভাত ও রুটির চেয়ে আলুর পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। আলুর আমিষ চাল ও গমের চেয়ে অনেক উন্নত। আলুতে চর্বির পরিমাণ অনেক কম। চাল ও গমের তুলনায় আলুতে আঁশ জাতীয় পদার্থের পরিমাণ বেশি। খাদ্যের আঁশ ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ভাত ও আলুতে ভিটামিন-সি একেবারে নেই; কিন্তু আলুতে আছে। সমপরিমাণ ভাত ও গমের চেয়ে সিদ্ধ আলুতে খনিজ পদার্থের পরিমাণও বেশি। আলুতে ভিটামিন-বি’র পরিমাণ অন্যান্য সবজির চেয়ে বেশি।

আলুর জাত : ষাটের দশক থেকে এ দেশে উচ্চ ফলনশীল জাতের আলু চাষ হয়ে আসছে। এ পর্যন্ত দেশে আলুর ৩২টি উচ্চ ফলনশীল জাত অনুমোদন লাভ করেছে। এসব জাতের মধ্যে হীরা, আইসলা, পেট্রোনিস, মুলটা, ডায়ামন্ড, কার্ডিনাল, কুফরিসিন্দুরী, চমক, ধীরা, গ্রানোলা, ক্লিওপ্যাট্রা, বিনেলা, লেডিরোসেটা, কারেজ, মেরিডিয়ান, সাগিটা ও কুইন্সি ইত্যাদিই প্রধান। তবে সারা দেশে উচ্চ ফলনশীল জাতের মধ্যে ডায়ামন্ড, গ্রানোলা, কার্ডিনাল, পেট্রোনিস ও লেডিরোসেটা জাতের আলু বেশি পরিমাণে চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া দেশি জাতের মধ্যে লাল পাকড়ি, শিলবিলাতি, কুফরিসিন্দুরী, লাল শিল ও চল্লিশা জাতের আলুও চাষ হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।

বারি আলু-৭ (ডায়ামন্ড) : এটি সারা দেশে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় আলুর জাত। বাছাইয়ের মাধ্যমে উদ্ভাবিত এ জাতটি ১৯৯৩ সালে সারা দেশে চাষের জন্য অনুমোদন লাভ করে। এ আলু ডিম্বাকার, মাঝারি থেকে বড় আকৃতির। ত্বক মসৃণ হালকা হলদে। শাঁস হালকা হলদে ও চোখ অগভীর। এ জাতটি মড়ক ও অন্যান্য ভাইরাস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন। একরপ্রতি ফলন ১০-১২ টন।

বারি আলু-৮ (কার্ডিনাল) : বাছাইয়ের মাধ্যমে উদ্ভাবন করা এ জাতটি ১৯৯৩ সালে সারা দেশে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে। রঙ হালকা লালচে। আলু ডিম্বাকার ও মাঝারি আকৃতির। ত্বক মসৃণ হালকা লাল বর্ণের। শাঁস হলদে এবং চোখ অগভীর। এ জাতটি মড়ক ও অন্যান্য ভাইরাস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। একরপ্রতি ফলন ১০-১২ টন।

বারি আলু-১৩ (গ্রানোলা) : এটিও একটি জনপ্রিয় আগাম আলুর জাত। বাছাইয়ের মাধ্যমে উদ্ভাবিত এ জাতটি ১৯৯৪ সালে সারা দেশে চাষাবাদের জন্য অনুমোদন লাভ করে। আলু গোল ডিম্বাকার ও মাঝারি আকৃতির। ত্বক অমসৃণ, হালকা তামাটে হলদে। শাঁস ফ্যাকাসে হলদে। জীবনকাল ৯০-৯৫ দিন। তবে ৭০-৭৫ দিনের মধ্যে আগাম চাষ করে সবজি হিসেবে বিক্রি করা যায়। বিদেশেও এ জাতটির চাহিদা রয়েছে। এ জাতটিও মড়ক ও অন্যান্য ভাইরাস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন। একরপ্রতি ফলন ১৪-১৫ টন। সুপ্তিকাল বেশি হওয়ায় এ জাতের আলু ৪-৫ মাস ঘরে সংরক্ষণ করা যায়।

বারি আলু-২৮ (লেডিরোসেটা) : এ জাতের আলু লাল গোলাকার। মাঝারি আকৃতির, ত্বক মসৃণ, শাঁস হলুদাভ সাদা। একরপ্রতি ফলন ১০-১২ টন।

জমি তৈরি : আলু উৎপাদনের জন্য ৪-৫টি চাষ দিয়ে জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করতে হবে।

মাটি : আলু চাষের জন্য বেলে দোআঁশ ও দোআঁশ ধরনের মাটি সবচেয়ে বেশি উপযোগী।

রোপণ সময় : উত্তরাঞ্চলে মধ্যকার্তিক এবং দক্ষিণাঞ্চলে অগ্রহায়ণের প্রথম সপ্তাহ থেকে ২য় সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ে আলু রোপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

বীজের হার : একরপ্রতি উচ্চ ফলনশীল জাতের আলু চাষের জন্য ৬০০ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। অনুমোদিত জাতের প্রত্যায়িত বীজ ভালো উৎস থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

রোপণ দূরত্ব : আস্ত আলু রোপণের জন্য সারি থেকে সারির দূরত্ব দিতে হবে ৬০ সেন্টিমিটার এবং আলু থেকে আলুর দূরত্ব দিতে হবে ২৫ সেন্টিমিটার। আর কাটা আলু রোপণের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দূরত্ব দিতে হবে ৪৫ সেন্টিমিটার এবং আলু থেকে আলুর দূরত্ব দিতে হবে ১৫ সেন্টমিটার।

সারের পরিমাণ : ভালো ফলনের জন্য আলুর জমিতে সঠিক মাত্রায় ও সঠিক সময়ে জৈব ও রাসানিক সার প্রয়োগ করতে হবে। আলুর জমিতে একরপ্রতি ৪ টন গোবর, ১০০ কেজি ইউরিয়া, ৬০ কেজি টিএসপি, ১০০ কেজি এমওপি, ৪৮ কেজি জিপসাম, ৪ কেজি জিংক সালফেট এবং অম্লীয় বেলে মাটির জন্য ৪০ কেজি ম্যাগনেসিয়াম ও বেলে মাটির জন্য একরপ্রতি ৪ কেজি বোরন সার ব্যবহার করতে হবে।

সার প্রয়োগ পদ্ধতি : অর্ধেক ইউরিয়া এবং সম্পূর্ণ গোবর, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম ও জিংক সালফেট রোপণের সময় জমিতে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি ইউরিয়া রোপণের ৩০-৩৫ দিন পর অর্থাৎ দ্বিতীয়বার মাটি তোলার সময় প্রয়োগ করতে হবে। অম্লীয় বেলে মাটির জন্য একরপ্রতি ৪০ কেজি ম্যাগনেসিয়াম সালফেট এবং বেলে মাটির জন্য একর প্রতি ৪ কেজি বোরন প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

পানি সেচ : বীজ আলু রোপণের ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে প্রথম সেচ দিতে হবে। দ্বিতীয় সেচ আলু রোপণের ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে এবং তৃতীয় সেচ আলু রোপণের ৬০ থেকে ৬৫ দিনের মধ্যে দিতে হবে। দেশের উত্তরাঞ্চলে ভালো ফলন পেতে হলে ১০-১২ দিন পরপর জমির অবস্থা বুঝে সেচ দিতে হবে।

সাথী ফসল হিসেবে চাষ : কলা, ভুট্টা ও আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে আলুর চাষ করা যায়। এতে একই জমি থেকে একাধিক ফসল চাষ করে কৃষক আর্থিকভাবে বেশ লাভবান হতে পারেন।

অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা : আলু লাগানোর ৩০-৩৫ দিন পর গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হবে। এ ছাড়া রোগবালাই দমনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

রোগবালাই দমন : আলুর অনিষ্টকারী রোগবালাইয়ের মধ্যে নাবি ধসা রোগ অন্যতম। কুয়াশাযুক্ত মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় এই রোগ দ্রুত বিস্তার লাভ করে এবং আলুর ফলন ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। এ রোগের আক্রমণে প্রথমে পাতা, ডগা ও কা-ে ছোট ভেজা দাগ পড়ে। ক্রমে দাগ বড় হয় ও পুরো পাতা, ডগা ও কা-ের কিছু অংশ ঘিরে ফেলে। বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা বেশি থাকলে ২-৩ দিনের মধ্যেই জমির অধিকাংশ ফসল আক্রান্ত হয়ে পড়ে। ভোরের দিকে আক্রান্ত পাতার নিচে সাদা পাউডারের মতো ছত্রাকের উপস্থিতি চোখে পড়ে। আক্রান্ত ক্ষেতে পোড়া পোড়া গন্ধ পাওয়া যায় এবং মনে হয় জমির ফসল পুড়ে গেছে। এ রোগের প্রতিকার হিসেবে রোগমুক্ত আলুবীজ ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত জমিতে যথাসম্ভব সেচ দেয়া বন্ধ রাখতে হবে। রোগ দেখা দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম রিডোমিল বা ডাইথেনএম-৪৫ ইত্যাদি ছত্রাকনাশক মিশিয়ে আলু ক্ষেতে ১০-১২ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

04/12/2024

কৃষি ও কৃষক বাঁচাতে ধানের মণ ১৫০০ টাকা নির্ধারণের দাবি
কৃষি ডেক্স | দৈনিক প্রতিচিত্র | প্রকাশ : ১৩:নভেম্বর, ২০২৪

কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সমাবেশ। আজ সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায়
কৃষকের ফসলের ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবিতে বাংলাদেশ কৃষক সমিতির সমাবেশ। আজ সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের চৌরাস্তায়ছবি: সংগৃহীত
আমন ধানের দাম মণপ্রতি ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র খুলে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার দাবিতে ঠাকুরগাঁও শহরে সমাবেশ হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে শহরের চৌরাস্তায় বাংলাদেশ কৃষক সমিতি ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

সমাবেশের আগে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শহরের সাধারণ পাঠাগারের সামনে জড়ো হন সাধারণ কৃষক ও কৃষক সমিতির নেতারা। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে অবস্থান নেয়। সেখানে সংগঠনের নেতারা জাতীয় ও স্থানীয় কৃষকদের ১২ দফা দাবি–সংবলিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের কাছে দেন।

পরে মিছিল নিয়ে শহরের চৌরাস্তায় যাওয়ার পর সেখানে পথসভা হয়। বাংলাদেশ কৃষক সমিতির ঠাকুরগাঁও জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব আলীর সভাপতিত্বে পথসভায় বক্তব্য দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন, সহসাধারণ সম্পাদক সুকান্ত সফি চৌধুরী, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোর্তুজা আলম। এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম।

পথসভায় মোহাম্মদ আলতাফ হোসাইন বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রধান বনিয়াদ কৃষি। পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে দেশের অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক ভিত্তি কৃষির ওপর নির্ভর করে দাঁড়িয়ে আছে। দেশে আমন ধান কিছুদিনের মধ্যেই কাটা শুরু হবে। প্রতিবছর ধানের দাম সরকার নির্ধারণ করলেও ধানসহ পাট, গমের লাভজনক দাম কৃষক পাচ্ছেন না। সম্প্রতি দফায় দফায় সার, জ্বালানি তেল ও কৃষি উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির ফলে কৃষকের উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়েছে; কিন্তু বিক্রি করতে গিয়ে ফসলের দাম পাচ্ছেন না। গত মৌসুমে সরকার আমন ধানের দাম মণপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করে; কিন্তু উৎপাদন খরচের তুলনায় এটা যথেষ্ট নয়। উৎপাদন খরচ বিবেচনা করে ধানের দাম কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারি গুদামে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা খুবই কম। সরকার প্রতিবছর ধান, মোটা চাল ও আতপ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করে; কিন্তু তার সুফল কৃষকেরা পান না। বাধ্য হয়ে কৃষক বাজারে সরকার–নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক কমে ধান বিক্রি করেন। এতে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষক ধান উৎপাদন করেন, চাল নয়। ধান থেকে চাল তৈরি করেন চালকল ও মিলের মালিকেরা। অথচ সরকার ধান কেনে কম, চাল কেনে বেশি। এর মাধ্যমে কৃষকের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে সরকার মিলের মালিক ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করছে।

বক্তারা আরও বলেন, কৃষি ও কৃষক বাঁচাতে প্রতিটি ইউনিয়নে কমপক্ষে একটি করে ক্রয়কেন্দ্র খুলতে হবে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট যাতে চালসহ দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। দেশে খাদ্যপণ্যের মজুত নিশ্চিতে প্রতি মৌসুমে কমপক্ষে ৫০ লাখ টন ধান কেনা প্রয়োজন। খাদ্যশস্য সংরক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যগুদাম ও সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নিতে হবে।

04/12/2024

কালীগঞ্জে মাঠ জুড়ে আমন ধান কাটার ধুম কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক
কৃষি ডেক্স | দৈনিক কৃষিচিত্র | প্রকাশিত : ১৩ নভেম্বর , ২০২৪

শষ্য ভান্ডার হিসা‌বে বেশ প‌রি‌চিত উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে কালীগঞ্জ উপজেলায় শুরু হ‌য়ে‌ছে আগাম জা‌তের রোপা আমন ধানাল কাটা মাড়াই। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হচ্ছে, তাই উপজেলার প্রতিটা কৃষক রোপা ও আমন ধানের ফলনে বেশ খুশি। তারা ইতিমধ্যই ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলতে শুরু করেছে। রোপা আমন ফসলের মাঠে এখন পাকা ধানের সোনালি হাসি। উজ্জ্বল রোদে সেই হাসি আরও ঝলমল করে উঠছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার অনেক মাঠেই কাস্তে নিয়ে ধান কাটার উৎসবে নেমে পড়েছেন কৃষকরা। আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুকূল থাকায় এবারো ধানের বাম্পার ফলন হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।ধানের ভালো ফলন ও বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে সোনালী হাসি। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলা কালীগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু ইউনিয়নে রোপা আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে।তবে কৃষি বিভাগ বলছে, পুরোদমে ধানকাটা মাড়াই শুরু করতে আরও দিন দশেক লাগবে।কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা মেলে জমির ধান পেকে সোনালি রঙে শোভা ছড়িয়েছে। পাকা ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক-শ্রমিক। শ্রমিকের পাশাপাশি ধান কাটায় ব্যবহার করা হয় আধুনিক যন্ত্র কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কালীগঞ্জ উপজেলায় ৮টি ইউনিয়নে ১৭হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ হয়েছে। উপজেলার বেশির ভাগ চাষি বিনা-১৭, ব্রি-ধান ৭১ ব্রি-ধান ৭২, ব্রি-ধান ৭৫জাতের ধান চাষ করেছেন। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বিনা-১৭ প্রতি মন ১২থেকে ১৩শ টাকা, ব্রি-ধান ৭১ প্রতি মন ১৩ থেকে ১৪শ টাকা, ব্রি-ধান ৭২ প্রতি মন ১৩ থেকে ১৪শ টাকা, ব্রি-ধান ৭৫ প্রতি মন ১৪ থেকে ১৫শ টাকা দরে বিক্রয় হচ্ছে।সোনারহাটের গ্রামের কৃষক সোহাগ রানা বলেন, আমাদের এলাকায় ধানের ফলন ১৬-১৭ মণ হচ্ছে। খরচ বাদ দিয়ে বিঘায় ৭-৮ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে। উপজেলার দুহুলী গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, আগাম জাতের ধান কেটে ঘরে তুলেছি দাম ও ফলন দুটোই ভালো পেয়েছি এতে বেশ কিছু টাকা লাভ হয়েছে। আগাম ধান কাটতে পেরে এখন রবি-শস্য আবাদ করতে পারবো।উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন,আমার সোনারহাট ব্লকে আমি কৃষকদেরকে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়েছি তাই এবার আগাম আমন ধান বেশ ভালো হয়েছে আমাদের কৃষি অফিস থেকে কৃষকের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি বলেন, এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয়েছে। ধানের ফলন ও দাম বেশ ভালো। এবারো কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা লাভবান হবে।

04/12/2024

অসাধারণ সুন্দর ব্রি ধান ১০৩

04/12/2024

রামরঙ্গন কমলা চাষে অহিদুজ্জামানের স্বপ্নপূরণ
কৃষি ডেক্স | দৈনিক কৃষিচিত্র | প্রকাশিত: ১৪ নভেম্বর ২০২৪

যশোরের শার্শায় রামরঙ্গন কমলা চাষ করে স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে পানবুড়িয়া গ্রামের কৃষক অহিদুজ্জামানের। জেলার মাটিতে সুস্বাদু এ কমলা তিনিই প্রথম চাষ করেন বলে দাবি তার। ফলে এ কমলা চাষের অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। শার্শার মাটিতে উৎপাদিত রামরঙ্গন কমলা চীনসহ অন্য যে কোনো দেশ থেকে আমদানি করা রামরঙ্গনের চেয়ে মিষ্টি ও সুস্বাদু। বিভিন্ন জাতের আম, কুল, আঙুর, কমলা, ড্রাগন, স্ট্রবেরি, মাল্টা, লিচু চাষের পর এবার রামরঙ্গন কমলা চাষে সফল হন অহিদুজ্জামান। নার্সারি ব্যবসার পাশাপাশি শখের বশে রামরঙ্গন কমলা চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।

বাগান ঘুরে দেখা যায়, সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে নজরকাড়া ছোট ছোট হলুদ রঙের কমলা। এরই মধ্যে অনেক ফলে পাকা রং ধরেছে। ফলের নাম ‘রামরঙ্গন’। এটি কমলার একটি ভ্যারাইটি জাত। এ জাতের কমলা চাষে সুবিধা হচ্ছে পরিপক্ব হওয়ার পরও গাছ থেকে ঝরে পড়ে না। পাকার পরও ফলটি এক মাস গাছে রাখা যায়। ভারত ও চীন দেশে ব্যাপক চাষ হয় ফলটির। তবে শার্শা উপজেলার পানবুড়িয়া গ্রামের অহিদুজ্জামানের বাগানে ফলটি চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। রামরঙ্গন কমলার চাষ দেখতে আশেপাশের লোকসহ দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেকেই। কেউ আবার তুলছেন ছবি।

রামরঙ্গন চাষি অহিদুজ্জামান বলেন, ২০২২ সালে তিনি টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদন দেখেন। দেশের মাটিতে বিদেশি ফলের চাষ হচ্ছে। তাই ফেব্রুয়ারি মাসে ২ বিঘা জমি ১০ বছর মেয়াদে লিজ নিয়ে ১৯৬টি রামরঙ্গন চায়না কমলার চারা রোপণ করেন। সে সময় তিনি জানতেনও না, এ গাছে কেমন ফল হবে। প্রথম বছর কিছু ফল আসে। সে ফল খুব সুস্বাদু হওয়ায় তাতে কলম বাঁধেন। পরে দ্বিতীয় বছর গাছে ফল ভরে যায়।

তিনি জানান, প্রথম বছর তার ফল বিক্রি হয় ১ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। এ বছর ৮-১০ লাখ টাকা বিক্রি হবে। ফলে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। ২ বিঘা জমিতে চাষ করতে প্রথম বছর ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। বছরের যে কোনো সময় চারা রোপণ করা যায়। শুষ্ক মৌসুম হলে সেচের ব্যবস্থা করতে হয়। সাধারণত নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে ফল হারভেস্ট করতে হয়। সামান্য কিছু পরিচর্যা করলেই চাষে সাফল্য আসে। পোকামাকড়ের আক্রমণও কম। পূর্ণবয়স্ক গাছ থেকে এক মৌসুমে দেড় থেকে দুই মণ কমলা পাওয়া সম্ভব। আগামী মৌসুমে প্রতিটি গাছে দুই মণ কমলা পাওয়ার আশা তার। প্রায় প্রতিদিন দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখরিত থাকে বাগান।

নাভারন-সাতক্ষীরা মহাসড়কের কুচেমোড়া বাসস্ট্যান্ডের পাশে জিসান নার্সারির মালিক অহিদুজ্জামান বলেন, ‘আগে আম, পেয়ারা, মাল্টা, কুল চাষ করে সাফল্য পেয়েছি। তারপর লিজ নেওয়া জমিটি রামরঙ্গন কমলা চাষের উপযোগী করে প্রস্তুত করি। বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করে দেশের বাইরে না গিয়ে তরুণ, বেকার এবং শিক্ষিত যুবকদের রামরঙ্গন কমলার বাগান করার পরামর্শ দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘রামরঙ্গন কমলার চারাগুলো মূলত দুই বছরের মধ্যে ফলন দেয়। যা ২০-২৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। দুই বিঘা জমিতে শুরু হওয়া এই বাগান এখন চার বিঘা জায়গায় রূপ নিয়েছে। নার্সারি ব্যবসার মাধ্যমে রামরঙ্গন কমলার চারা তৈরি করে বিক্রি করছি। প্রতিটি চারা বিক্রি করছি ৬০ টাকা দরে। এখান থেকে চারা সংগ্রহ করে অনেকেই বাগান তৈরির পরিকল্পনা করছেন।’

ঝিকরগাছার ফল ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘দেশে চায়না জাতের রামরঙ্গন কমলার ব্যাপক চাহিদা আছে। এ কমলা বিদেশ থেকে আমদানি করতে প্রায় ফলের দামের সমান ভ্যাট ও খরচ হয়ে যায়। দেশি ফলগুলো একশ টাকা কেজি দরেও ভালোভাবে বিক্রি করতে পারি। তাতে ভালো লাভও হয়।’

04/12/2024

ভূট্টা চাষ পদ্ধতি
কৃষি ডেক্স | দৈনিক কৃষিচিত্র | প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর, ২০২

ভূট্টা চাষ পদ্ধতিঃ
ভূট্টা ফসল সারাবছর চাষ করা যায, তবে রবি মৌসুমে সর্বাধিক ফলন পাওয়া যায়। ভূট্টা চাষবাদে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনা নিম্নে বর্ণিত হলো-

জমি নির্বাচন, তৈরী ও বীজ বপন পদ্ধতিঃ

সাধারণত পানি জমে থাকেনা এমন বেলে দো-আঁশ বা দো-আঁশ মাটি ভুট্টা চাষের জন্য সবচেয়ে ভাল। জো থাকা অবস্থায় মাটির প্রকারভেদে ৩-৪টি আড়াআড়ি চাষ দিতে হবে। ৮-১০ ইঞ্চি গভীর করে চাষ দেয়া ভাল। চাষের পর মই দিয়ে মাটি সমতল করা প্রয়োজন। সারি টেনে বীজ বোনা উত্তম।

সারি থেকে সারির দূরত্বঃ ৫৫-৬০ সেমি (২২-২৪ ইঞ্চি)
বীজ থেকে বীজের দূরত্বঃ ২২.৫-২৫ সেমি (৯-১০ ইঞ্চি)
বপনের গভীরতাঃ ৩-৫ সেমি (প্রায় দেড় ইঞ্চি)
প্রতি গর্তে বীজের সংখ্যাঃ ১টি
বপনের সময়ঃ অক্টোবর থেকে জানুয়ারি।

ভুট্টার কয়েকটি উন্নত হাইব্রিড জাতঃ

সার প্রয়োগঃ

ভুট্টা সার-প্রিয় ফসল। ভুট্টা চাষে সাফল্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সার দেওয়া অত্যন্ত জরুরী। জমির উর্বরতাভেদে সারের মাত্রার কিছুটা তারতম্য হতে পারে। নিচের ছকে সারের মাত্রা দেয়া হলঃ

একর প্রতি সারের পরিমাণ ও প্রয়োগের নিয়মঃ

ভুট্টাতে সার

ভুট্টা গাছের সুষ্ঠ পরগায়নে এবং পরগায়িত ভুট্টার মোচায় সঠিকভাবে দানা গঠনের জন্য গাছের বৃদ্ধি পর্যায়ে ভাল মানের বোরণ স্প্রে করতে হবে।
উপরিপ্রয়োগের সময় মাটিতে পরিমিত রস থকা দরকার, না থাকলে হালকা সেচ দিতে হবে।

সেচ ব্যবস্থাপনাঃ

জলাবদ্ধতা ভুট্টার জন্য খুবই ক্ষতিকর। ভুট্টার জমিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে। জলবায়ু, জমির পানি ধারণ ক্ষমতা, শিকড়ের গভীরতা ইত্যাদির উপর সেচ ব্যবস্থাপনা নির্ভর করে। তবে পানির অভাবের প্রতি লক্ষ্য রেখে গাছের সংবেদনশীল বৃদ্ধি পর্যায়সমূহের ভিত্তিতে সেচ প্রয়োগ করা অত্যন্ত জরুরি। রবি মৌসুমে ভুট্টার ভাল ফলন পেতে হলে জমি ও মাটির প্রকারভেদে ৪/৫ বার সেচ দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

প্রথম সেচঃ বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে (৪-৬ পাতা পর্যায়)
দ্বিতীয় সেচঃ বীজ বপনের ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে (৮-১২ পাতা পর্যায়)
তৃতীয় সেচঃ বীজ বপনের ৮০-৮৫ দিনের মধ্যে (মাথার ফুল আসা পর্যায়)
চতুর্থ সেচঃ বীজ বপনের ১০০-১০৫ দিনের মধ্যে (মোচা নরম দুধ অবস্থা পর্যায়)
পঞ্চম সেচঃ বীজ বপনের ১১৫-১২০ দিনের মধ্যে (মোচা দানা শক্ত হওয়া পর্যায়)
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ গাছে ফুল আসার পর খেয়াল রাখতে হবে, যেন পরবর্তী ৩০-৩৫ দিন জমিতে কখনো রসের ঘাটতি না হয়।

পোকা-মাকড় দমনঃ

কাটুঁই পোকা, মাজরা পোকা এবং ফল আর্মিওয়ার্ম দমনের জন্য অনুমোদিত বালাইনাশক অনুমোদিত মাত্রায় সঠিক সময়ে প্রয়োগ করতে হবে।

রোগ-বালাই দমনঃ

ভুট্টা ফসলে খুব একটা রোগ বালাই দেখা যায় না, তবে প্রয়োজনে অনুমোদিত মাত্রায় সঠিক বালাইনাশক (ব্যাকটেরিয়ানাশক) সঠিক সময়ে প্রয়োগ করতে হবে।

ফসল সংগ্রহ ও উৎপাদন ক্ষমতাঃ

সম্পূর্ণ পরিপক্ক (উপরে ২-৩ পাতা বাদ দিয়ে অবশিষ্ট পাতা সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেলে) হওয়ার পর ফসল সংগ্রহ করতে হবে।

বিশেষ নির্দেশনাঃ

মোচা থেকে ছাড়ানো বীজের গোড়ায় কালো দাগ দেখা গেলে নিশ্চিতভাবে বোঝা যাবে মোচা পেকেছে। পাকা মোচাগুলো গাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে। অতি বৃষ্টির সময় গাছ থেকে মোচা সময়মত সংগ্রহ করতে না পারলে চাপ দিয়ে গাছ আলতোভাবে নুয়ে মোচাগুলো মাটির দিকে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এতে মোচার ভিতরে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করে দানাগুলো নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না।

পরে মেঘমুক্ত দিনে গাছ থেকে মোচা সংগ্রহ করতে হবে। মোচা সংগ্রহের সময় মোচাগুলোর খোসা ছাড়িয়ে নেয়া ভাল। সংগৃহীত মোচা রোদে ৩-৪ দিন খুব ভাল করে শুকিয়ে মাড়াই যন্ত্রের সাহায্যে বা হাত দিয়ে দানা খসাতে হবে। দানা আলাদা করে আবার রোদে শুকিয়ে সংরক্ষণ করতে হবে।

04/12/2024

কৃষি বিভাগের পরামর্শে মাছের ঘেরের উপরে বস্তায় ৭০ শতক জমিতে লাউ আবাদ করে সফলতা পেয়েছেন তরুন উদ্দোক্তা মেহেদী হাসান মধু

জাতঃ থাই কিং ও ময়না, ডায়না

প্রতি ১৫ দিন পরপর ফ্লোরা ও সলুবর বোরন স্প্রে করার জন্য পরামর্শ।

২০ দিন পরপর বস্তা প্রতি ২০ গ্রাম ইউরিয়া ২০ গ্রাম পটাশ সার প্রয়োগ করার জন্য পরামর্শ।

04/12/2024

ধুঁকছে খুলনার পোল্ট্রি শিল্প
কৃষি ডেক্স | দৈনিক কৃষিচিত্র | প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

দফায় দফায় খাবার, মুরগির বাচ্চা, ভ্যাকসিনসহ ওষুধের দাম বাড়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে খুলনা অঞ্চলের পোল্ট্রি শিল্প। ব্যাংক, এনজিও, সমিতি থেকে ঋণ নিয়েও ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না খামারিরা। একের পর এক লোকসানে গত এক বছরেই খুলনায় বন্ধ হয়ে গেছে ছয় শতাধিক মুরগির খামার। এ অবস্থায় এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কৃষি খাতের মতো ভর্তুকির দাবি সংশ্লিষ্টদের।

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজারে কিছুটা কম মূল্যে সাধারণের প্রয়োজনীয় আমিষের চাহিদা মেটায় মুরগি ও ডিম। তবে খুলনায় নানা সংকটে এই শিল্পটি। বন্ধ হয়ে যাওয়ার ধারাবাহিকতায় গত পাঁচ বছরে পুরো বিভাগে প্রায় ১০ হাজার মুরগির খামার বন্ধ হয়েছে। যার মধ্যে শুধু চুয়াডাঙ্গায় বন্ধ রয়েছে ৭ হাজার খামার।

খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিসংখ্যান বলছে, খুলনা জেলায় নিবন্ধিত খামারির সংখ্যা ৬ হাজার ৮৮টি, এর মধ্যে ৬৪৬টি বন্ধ রয়েছে, চালু রয়েছে ৫ হাজার ৪৪২টি। এছাড়া সাতক্ষীরায় ১৩ হাজার ৮৮৩টি খামারের মধ্যে বন্ধ রয়েছে এক হাজার ৪৫১টি। নড়াইলে ৫৪৪টি খামারের মধ্যে বর্তমানে চালু মাত্র ২০৬টি।

খামারিদের দাবি, দফায় দফায় মুরগির খাবার, বাচ্চা, ভ্যাকসিনের দাম বৃদ্ধিতে প্রতিনিয়ত উৎপাদন খরচ বাড়েছে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত তাপ, বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক কারণে মুরগির মৃত্যু ঘটছে। দিনশেষে লাভ তো দূরে থাক, বিক্রির সময় উঠছে না উৎপাদন খরচই। ফলে আর্থিক লোকসানের মুখে বাধ্য হয়ে খামার বন্ধ করে দিচ্ছেন অনেকেই। অনেকেই শঙ্কায় আছেন বন্ধ করে দেয়ার।

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় জুয়েল হাসান। গত ৬ বছর ধরে মুরগির খামার করে আসছেন। তবে অব্যাহতভাবে মুরগির খাবার, ওষুধের দাম বৃদ্ধি, সেই সাথে শ্রমিকের মূল্য বৃদ্ধিতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে তার। সবশেষ দুই বছর ধরেই ছিলেন লোকসানে। শেষ পর্যন্ত মাস ছয় আগে খামারটি বন্ধ করে দিয়েছেন।

জুয়েল বলেন, ‘আমার খামারটি উপজেলার মধ্যে সব থেকে বড় ছিল। তবে শেষ বার আমার ৩০ লাখ টাকা লস হয়েছে। আমি আর পারছি না। বাধ্য হয়ে খামারটি বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু এই খামারটি নয়, বটিয়াঘাটা উপজেলায় অর্ধশতাধিক খামার বন্ধ হয়েছে। আর পুরো জেলায় ছোট বড় ছয় শতাধিক মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেছে গত এক বছরের মধ্যে।’

বটিয়াঘাটা উপজেলার আরেক খামারি আবির হোসেন জানান, ‘ডিমের দাম বাড়লেই সরকারের টনক নড়ে, মুরগির দাম বাড়লেই সবাই অস্থির হয়ে যায়। উৎপাদন খরচ তো কেউ দেখে না। প্রতিনিয়ত বাড়ছে খাবারের দাম। এগুলোর দিকে সরকার নজর দিলে খামারিদের ক্ষতি হয় না; ডিম, মুরগির দামও বাড়ে না। আমার ৪টা আলাদা খামার ছিল। তিনটাই এখন বন্ধ। যেটা আছে সেটাও বন্ধ করে দিতে হবে।’

এদিকে এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে কৃষি খাতের মতো ভর্তুকি ও মধ্যস্বত্বভোগী এড়াতে আলাদা মার্কেটের দাবি করে আসছেন ব্যবসায়ী নেতারা। পাশাপাশি খাবার, ওষুধের মূল্যে লাগাম টানারও দাবি তাদের।

বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ ফেডারেশনের যুগ্ম মহাসচিব এসএম সোহরাব হোসেন বলেন, এই অঞ্চলে গ্রামীণ অর্থনীতির চালিকা শক্তি পোল্ট্রি শিল্প। কিন্তু এই শিল্পে সংকটের শেষ নেই। খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণে সরাকারের কোনো ভূমিকা নেই। আর উৎপাদক অর্থাৎ খামারিদের থেকে সরাসরি ভোক্তার ক্রয়ের জন্য প্রতিটি উপজেলায় আলাদা একটি মার্কেটের দাবির কথা আমরা বলে আসছি দীর্ঘদিন ধরে। সেটাও কেউ কর্ণপাত করে না।

এতে খামারি প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে বিষয়গুলো এখন বাস্তবায়ন করতে হবে। পোল্ট্রি শিল্পও কৃষি পণ্যের মতোই। সরকার কৃষি পণ্যে সহজ শর্তে ঋণ কিংবা নানা প্রণোদনা দিলেও এ খাতেই কিছুই দেয় না। সরকারের এখাতে ভর্তুকি ও সহজশর্তে ঋণ দিয়ে চাষীদের পাশে থাকতে হবে।

তবে খামারিদের সংকটের কথা স্বীকার করে তাদের ভর্তুকির ব্যাপারে সরকারের কাছে সুপারিশ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করাসহ প্রতিটি উপজেলায় আলাদা মুরগি ও ডিমের বাজার করার ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। খুলনা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, ‘পোল্ট্রি শিল্পে নানা সংকটের কথা আমরা স্বীকার করি। তাদের দাবির কথাও আমরা জানি। বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা প্রতিনিয়ত চাষিদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকি।’

এছাড়া খামারিদের আলাদা মার্কেট করার যে দাবি উঠেছে সেটা নিয়ে এরই মধ্যে সরকারের কাছে সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী বছরগুলোতে পোল্ট্রি শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, বর্তমানে খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় নিবন্ধিত ছোট-বড় চালু খামার রয়েছে প্রায় ৩৭ হাজার।

04/12/2024

বাংলাদেশ_ধান_গবেষণা_ইনস্টিটিউট_কর্তৃক_উদ্ভাবিত_সাম্প্রতিক_আধুনিক_বোরো_ধানের_জাতসমূহ

১। ব্রি ধান ৮৯ঃ জীবনকাল ১৫৪-১৫৮দিন
ফলনঃ ৮.০ টন (হেক্টরে)
চাল: মাঝারি আকৃতির চিকন, রান্নার পর ভাত ১.৪ গুন লম্বা হয়।

২। ব্রি ধান ৯২ঃ জীবনকাল ১৫৬-১৬০ দিন
ফলনঃ ৮.৪ মন(১০ শতকে)
চাল: চাল লম্বা ও চিকন

৩। ব্রি ধান ১০০ঃ জীবনকাল ১৪৮দিন
ফলনঃ ৭.৭ মন(১০ শতকে)
চাল: মাঝারি চিকন সাদা

৪। ব্রি ধান ১০২ঃ জীবনকাল ১৫০ দিন
ফলনঃ ৮.১০ মন(১০ শতকে)
চাল: লম্বা চিকন ও সাদা

৫। ব্রি ধান ১০৪: জীবনকাল ১৪৭ দিন
ফলনঃ ৭.৩ মন(১০ শতকে)
চাল: সুগন্ধি এবং লম্বা চিকন বাসমতি টাইপের এবং রং সাদা

৬। ব্রি ধান ১০৫ঃ জীবনকাল ১৪৮ দিন
ফলনঃ ৭.৬ মন(১০ শতকে)
চাল: মাঝারি চিকন এবং রং সাদা

৭। ব্রি ধান ১০৮ঃ জীবনকাল ১৪৯-১৫১ দিন
ফলনঃ ৮.৭ মন(১০ শতকে)
চাল:চাল মাঝারি লম্বা ও চিকন যা জিরার চালের অনুরূপ এবং রং সাদা

৮। ব্রি ধান ৮১ঃ জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন
ফলনঃ ৬.০-৬.৫০ মন(১০ শতকে)
চাল: প্রিমিয়াম কোয়ালিটি। চালের আকার বাসমতির মতো লম্বা

৯। ব্রি ধান ৮৬ঃ জীবনকাল ১৪০-১৪৫ দিন
ফলনঃ ৬.০-৬.৫০ মন(১০ শতকে)
চাল: লম্বা ও চিকন

বাংলাদেশ_পরমানু_কষি_গবেষণা_ইন্সিটিউট_কর্তৃক_বোরো_মৌসুমের_উদ্ভাবিত_জাতসমূহ:

১। বিনা ধান ৫ঃ জীবনকাল ১৫০-১৫৫ দিন
ফলনঃ ৫-৬ মন(১০ শতকে)
চাল: মাঝারি লম্বা ও সরু

২। বিনা ধান ১০ঃ জীবনকাল ১২৫-১৩০ দিন
ফলনঃ ৭.৫-৮.৫ মন(১০ শতকে)
চাল: লম্বা ও মাঝারি চিকন

৩। বিনা ধান ১৪ঃ জীবনকাল ১২০-১৩০ দিন
ফলনঃ ৬.৯ মন(১০ শতকে)
চাল: লম্বা ও চিকন

৪। বিনা ধান ১৮ঃ জীবনকাল ১৪৮-১৫৩ দিন
ফলনঃ ৭.২৫ মন(১০ শতকে)
চাল: হালকা সুগন্ধি, লম্বা ও মাঝারি মোটা

৫। বিনা ধান ২৫: জীবনকাল ১৩৮-১৪৮ দিন
ফলনঃ ৭.৬ মন(১০ শতকে)
চাল: প্রিমিয়ার কোয়ালিটি। লম্বা ও সরু।

04/12/2024

নাইস গ্রীন লাউ

বৈশিষ্ট্য:

উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড জাতের লাউ

অতি শীত ব্যতীত সারা বছরই চাষ করা যায়।

ফল আকর্ষণীয় হালকা।

সবুজ বর্ণের ও খেতে সুস্বাদু।

ফল ৫০-৫৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয়।

প্রতি ফলের গড় ওজন ২.০ থেকে ২.৫ কেজি।

পোকামাকড়, রোগ ও বৃষ্টি সহনশী জাত।

বীজ বপনের ৪০-৪৫ দিন পর থেকে লাউ সংগ্রহের উপযোগী হয়।

Address

Dhaka

Telephone

+8801812471070

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Krishicitra Asia posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category