30/04/2025
কিছুক্ষণ আগে ঢাকা মেডিকেলের ইমার্জেন্সি গেইটের সামনে এক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী হলাম!
ছেলেটার বয়স ১৭/১৮ হবে। দুই হাতের পুরোটাই প্লাস্টার করা। ঘাড়টা সোজা করতে পারছে না। ঠিকমতো দাঁড়াতে পারছে না। কুজো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এরকম একটি রোগীর ওভারঅল কন্ডিশানটা কীরকম ভাবুন একবার।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় মনে হচ্ছে মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট। এদের একটা বড়ো অংশ ছাপড়ি হয়ে থাকে। যারা রাস্তাঘাটে নিয়মিত চলাচল করেন, তারা এদের ছাপড়িপনায় সবাই খুব বিরক্ত।
তার সিনসিয়ারিটি, কমিটমেন্ট ও আরাধনায় আমি বিমুগ্ধ হলাম। এই অবস্থাতেও সে হসপিটাল থেকে বের হয়ে গিয়ে সিগারেট খাচ্ছে। একটা জিনিসকে কতোটা ভালোবাসলে পরে জীবন-মৃত্যু ভুলে সব বাধা-বিপত্তির পাহাড় ডিঙিয়ে ছুটে আসা যায়!
দুই হাতের উপর থেকে নিচ প্লাস্টার করা থাকলে কীভাবে সিগারেট খাচ্ছে এটাই তো ভাবছেন?
তার পাশে একজন বন্ধু সিগারেট জ্বালিয়ে হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সিগারেটটা রোগীর মুখ বরাবর এনে ধরছে। প্রায় বাঁকা হয়ে যাওয়া ঘাড় নিয়ে অদম্য সাধনায় বহু ত্যাগ তিতিক্ষায় সে সিগারেটে টান দিচ্ছে।
ধোঁয়া ত্যাগ করা হয়ে গেলে ইশারা দিচ্ছে। আবার ঠোঁট বরাবর চলে আসছে সিগারেট। আহ!
এই অবস্থায় হসপিটাল থেকে বের হয়ে এই টেকনিকে সিগারেট খাচ্ছে এটা নিয়ে আমার কোনো বিস্ময় নেই।
আমার সমস্ত বিস্ময় পাশের ভন্দুটিকে ঘিরে। এই রোগীকে ওয়ার্ড থেকে নামিয়ে হাসপাতালের গেইট দিয়ে বের করতে কী পরিমাণ কষ্ট তার হয়েছে! তার উপর কতো যত্ন করে সিগারেট 'খাইয়ে' দিচ্ছে।
আমার একান্ত জিজ্ঞাসা, এমন প্রাণ #ভন্দুয়া কোথায় পাওয়া যায়? কেউ উত্তর না দিয়ে যাবেন না।