07/11/2025
হে পুরুষ, তুমি কি সত্যিই মানুষ?
দিনে তুমি সমাজে সম্মানিত, অফিসে ভদ্র, বন্ধুদের চোখে নীতিবান। কিন্তু রাত নামলে তোমার মুখোশ খুলে যায়— তখন তুমি অন্য কেউ।
বাইরে আলো জ্বালিয়ে রেখে ভেতরে তুমি অন্ধকারে ডুবে থাকো।
হে পুরুষ,
তুমি সেই মানুষ, যে বে*শ্যা*র দরজায় খুব আস্তে করে টোকা দাও—
লজ্জা নয়, বরং গর্ব নিয়ে।
খরচ করো শুধু টাকা নয়, নিজের বিবেকও।
আর বাড়ি ফিরে, শিশুপুত্রের কপালে চুমু খেয়ে ভাবো—
“আমি একজন আদর্শ বাবা।”
স্ত্রীর পাশে বসে বন্ধুর “চরিত্রহীনতা” নিয়ে গল্প করো, আর মনে মনে নিজেকে সাধু প্রমাণ করো।
স্ত্রী যখন বলে—
> “মানুষ যখন অমানুষ হয়, তখনই এসব সম্ভব।”
তখন তুমি মাথা নেড়ে বলো—
“ঠিক বলেছো।”
আর কোণের টিকটিকিটা যেন তাচ্ছিল্যের হাসিতে আবার বলে ওঠে— টিক… টিক… টিক…
হে পুরুষ,
তুমি ভুলে গিয়েছো, যে বুকের আঁচল তুমি সরিয়েছো, সেটি কোনো “অপরের স্ত্রীর শরীর” নয়—
ওটা ছিল এক নারীর সম্মান, এক সংসারের শান্তি, এক মায়ের অস্তিত্ব।
তুমি সেই আঁচল ছিঁড়ে যখন উপভোগে মত্ত হলে, তখন শুধু একজন নারী নয়, মানবতাকেও অপমান করলে।
তুমি সেই মানুষ, যে কাজের মেয়েকে দু’শ টাকা বাড়তি দিয়ে “দয়ালু” পরিচয় দিতে চেয়েছিলে।
সে মেয়েটি তোমার মধ্যে এক পিতার ছায়া দেখেছিল,
কিন্তু তুমি—
এক রাতে ঘুমন্ত স্ত্রীর পাশ থেকে চুপিচুপি উঠে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লে।
তার কান্না থেমে গিয়েছিল ভয়ে, আর তোমার বিবেকও থেমে গিয়েছিল পাপের চাপে।
পরদিন সে আর কাজে এল না।
আর তুমি বললে—
> “এই কাজের মেয়েগুলোর বিশ্বাস নেই, ভালো করে দেখো জিনিসপত্র সব আছে কিনা।”
স্ত্রী মাথা নাড়লো,
আর কোণের টিকটিকিটা আবার বললো— টিক… টিক… টিক… ঠিক বলেছো…
হে পুরুষ,
অফিস ট্যুরের নামে তুমি কক্সবাজারে কাটিয়েছো কলিগের সঙ্গে “সুন্দর” সময়,
ফেরার পথে সন্তান আর স্ত্রীর জন্য গিফট কিনে নিজের অপরাধ ঢেকে দিলে।
তুমি ভাবলে, কাউকে কিছু জানাতে না দিলেই পাপ মুছে যাবে!
কিন্তু তুমি জানো না,
তোমার প্রতিটি পাপ লিপিবদ্ধ হচ্ছে—
অদৃশ্য কলমে, অমোচনীয় কালি দিয়ে, তোমার সৃষ্টিকর্তার দপ্তরে।
তারপর যখন তোমার বন্ধুর ফোনে তোমার স্ত্রী কথা বললো,
তুমি বন্ধুর মুখে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখলে।
নিজের চরিত্রহীনতাকে আড়াল করতে স্ত্রীর উপরই নিক্ষেপ করলে সন্দেহের পাথর।
বললে—
> “তোদের মতো মেয়েরা কি নতুন না হলে টিকতে পারে না?”
তুমি ভুলে গেলে—
যে অবিশ্বাস তোমার নিজের ভিতরে জন্মেছিল,
সেটাই আজ তোমার ঘর ধ্বংস করছে।
হে পুরুষ,
তুমি যতই লুকাও না কেন,
তোমার প্রতিটি নিশ্বাস, প্রতিটি অপরাধ, প্রতিটি মিথ্যা—
লিপিবদ্ধ হচ্ছে অদৃশ্য চোখের সামনে।
একদিন সেই চোখই তোমার মুখোমুখি হবে,
আর তুমি তখন পালাবার পথ খুঁজে পাবে না।
হে পুরুষ,
তুমি যদি সত্যিই মানুষ হও—
তবে জাগো।
নিজের অন্ধকার ভেতরটাকে আলোকিত করো।
কারণ, একজন আলোকিত পুরুষই পারে একটি পরিবারকে বাঁচাতে,
একটি সমাজকে গড়তে,
একটি জাতিকে উন্নতির পথে নিতে।
তুমি যদি নিজেকে আলোকিত করো,
তাহলে তোমার আলোয় আলোকিত হবে তোমার সন্তান, তোমার স্ত্রী, তোমার ভবিষ্যৎ,
এমনকি পুরো পৃথিবীও।