24/06/2023
নাগরপুর জমিদারবাড়ি : উনবিংশ শতাব্দীতে যদুনাথ চৌধুরী। প্রায় ৫৪ একর জমির ওপর জমিদারি প্রতিষ্ঠা করেন। তাদের বংশক্রমে দেখা যায় এমন- তার তিন ছেলে উপেন্দ্র মোহন চৌধুরী, জগদীন্দ্র মোহন চৌধুরী, শশাঙ্ক মোহন চৌধুরী। ব্রিটিশ সরকার উপেন্দ্র মোহন চৌধুরীর বড় ছেলে সতীশ চন্দ্র রায় চৌধুরীকে সাধারণ জনগোষ্ঠীর জন্যে বিভিন্ন মুখী সেবামূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ রায় বাহাদুর খেতাবে ভূষিত করে। ছোট ছেলে সুরেশ চন্দ্র রায় চৌধুরী অপেক্ষাকৃত পাশ্চাত্য সংস্কৃতিঘেষা। তিনি ছিলেন অনেকের চেয়ে সৌখিন প্রকৃতির মানুষ। তিনি ছিলেন খুব ক্রীড়ামোদী। উপমহাদেশের বিখ্যাত ফুটবল দল ইষ্ট বেঙ্গল ক্লাবের তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি। পাশ্চাত্য এবং মুঘল সংস্কৃতির মিশ্রণে এক অপূর্ব নান্দনিক সৌন্দর্যে নির্মিত এই বৈঠকখানা বিল্ডিংয়ের ওপরে ছিল নহবতখানা। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রতিদিন ভোরে সানাইয়ের ভৈরবী রাগিনীতে চৌধুরী বংশের তথা স্থানীয় প্রজাদের ঘুম ভাঙত।
শোনা যায়, রায় বাহাদুরের ছোট ভাই সুরেশ চৌধুরীকে নাগরপুরে রেখে সম্পূর্ণ রাজধানী কলকাতার আদলে নাগরপুরকে সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। চৌধুরী বাড়ির রঙ্গমহলের পাশে এক সুদৃশ্য চিড়িয়াখানা ছিল। সেখানে শোভা পেত-ময়ূর, কাকাতোয়া, হরিণ, ময়না আর শেষ দিকে শৌখিন সুরেশ চৌধুরীর ইচ্ছায় চিড়িয়াখানায় স্থান করে নেয় বাঘ (কেতকী) এবং সিংহ (দ্যুতি)। ১৯৪৭ এর দেশ বিভক্তির পর একসময় তদানিন্তন সরকার চৌধুরী বাড়ির সব সম্পদ অধিগ্রহণ করে। অট্টালিকাটির অভ্যন্তরের পুরো কাজটি সুদৃশ্য শ্বেত পাথরে গড়া। আর হ্যাঁ, বর্তমানে চৌধুরী বাড়ির এই মুল ভবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘নাগরপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ’। ফলে জমিদার বাড়িটি একেবারে অযত্নে নেই।