Preacher Of Islam

Preacher Of Islam Assalamu Alaikum

Welcome to our official Facebook Page.in this page maximum post video collected.

30/08/2024

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সাংবিধানিক বাস্তবতাকে অনুধাবন করার জন্য General Will এবং Will of All এর মধ্যকার পার্থক্য বুঝা অনেক জরুরি।
একদম সহজ ভাষায় বললে, জেনারেল উইল হল জনগণের কি চাওয়া উচিত। আর উইল অফ অল হল জনগণ যা চায়। এখন গণতন্ত্রের যেই ধোঁকাটা বুঝতে হবে, সেটা হল গণতন্ত্র কখনোই উইল অফ অলকে বাস্তবায়ন করে না এবং উইল অফ অলকে রক্ষা করে না। গণতন্ত্র সর্বদা জেনারেল উইলকেই বাস্তবায়ন করে।
গণতান্ত্রিক কাঠামো আগে এটা ঠিক করে দেয় যে, জনগণের কি চাওয়া উচিত এবং তাদের কি চাওয়ার অধিকার আছে। যেমন আপনাকে সেকুলারিজমই চাইতে হবে এটা সে ঠিক করে দিচ্ছে। এটা জেনারেল উইল। কিন্তু দেখা গেল আপনি সহ অধিকাংশরা চাচ্ছেন ইসলামী শরীয়াহ। এটা উইল অফ অল। গণতান্ত্রিক কাঠামো কখনোই এই উইল অফ অলকে প্রশ্রয় দিবে না, বরং দমন করবে। কারণ উইল অফ অল জেনারেইল উইল মোতাবেক হয়নি। গণতান্ত্রিক কাঠামো সেই জনমতকেই অনুমোদন করে, যেটা জেনারেল উইল তথা তাদের ঠিক করে দেয়া চাওয়া অনুযায়ী হয়।
উদাহরণস্বরূপ যদি কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষ তালেবদের ভোট দিয়ে রাষ্ট্র-ক্ষমতায় নিয়ে আসে তবে এর মর্ম দাঁড়ায় তারা হিউম্যান রাইটস-এর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে। সুতরাং এমন উইল অফ অলকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করা হবে। কারণ এই উইল অফ অল জেনারেল উইলের অনুগামী হয়নি। এই মূলনীতির ভিত্তিতেই নব্বইয়ের দশকে আলজেরিয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনকারী ইসলামি দলের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়নি। কারণ তারা স্বাধীনতার পরিবর্তে ‘আবদিয়্যাত’কে বিশ্বাস করত। বাল্যপ্রেম ও ব্যভিচার অনুমোদন পাওয়া; অথচ উভয়পক্ষের সম্মতি থাকা সত্ত্বেও বাল্যবিবাহ রোধ অভিযান এর সাম্প্রতিক উদাহরণ।
আপনি সেজুলারিজম চাইতে পারবেন, গণতন্ত্র চাইতে পারবেন, সমাজতন্ত্র চাইতে পারবেন, পুঁজিবাদী চাইতে পারবেন, লিবারেলিজম চাইতে পারবেন, কিন্তু ইসলামী শরীয়াহ চাইতে পারবেন না। এই যে ঠিক করে দেয়া চাওয়া এটাই গণতন্ত্রের সাংবিধানিক কাঠামো। এর বাইরে আপনি কিছু চাইতে পারবেন না। চাইলে আপনাকে সহ আপনার চাহিদাকে দমন করার চেষ্টা করবে।
এটাই গণতন্ত্রের স্বরূপ। এটাই গণতন্ত্রের প্রতারণা। আপনি গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক কাঠামোয় উইল অফ অল তথা অধিকাংশের চাওয়া ছাড়াই সমকামিতা, ফাহিশাত, ফেমিনিজম ইত্যাদি বাস্তবায়ন করতে পারবেন। কিন্তু ইসলামী শরীয়াহকে পারবেন না উইল অফ অল তার পক্ষে থাকা সত্ত্বেও। কারণ ওগুলো জেনারেল উইল, ওগুলো আপনি চাইতে পারবেন, ওগুলো তাদের ঠিক করে দেয়া চাওয়া। কিন্তু ইসলামী শরীয়াহ তাদের জেনারেল উইলে নাই, তাদের ঠিক করে দেয়া চাওয়াতে নেই।
এই বাস্তবতা আপনাকে বুঝতে হবে, এই প্রতারণা আপনাকে চিনতে হবে।
Iftekhar Sifat

29/08/2024

জেনোসাইড বা গণহত্যা কী?

জাতিসংঘের জেনোসাইড কনভেনশন (The Convention on the Prevention and Punishment of the Crimes of Genocide) অনুযায়ী, জেনোসাইড হল–

কোন নির্দিষ্ট জাতি, নৃতাত্ত্বিক, বর্ণ বা ধর্মীয় গোষ্ঠীকে আংশিকভাবে বা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে চালানো কার্যক্রম।

এই সংজ্ঞানুযায়ী জেনোসাইডের ৫টি বৈশিষ্ট্য আছে –

ক) হত্যা।
খ) গুরুতর শারীরিক কিংবা মানসিক ক্ষতিসাধন।
গ) জীবনযাত্রার ওপর এমন কোন শর্তারোপ যা ঐ গোষ্ঠীকে ধ্বংস কিংবা বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যাবে।
ঘ) উক্ত গোষ্ঠীর সদস্যদের প্রজনন ও জন্মহারকে নিয়ন্ত্রণ ও বাধাগ্রস্ত করা।
ঙ) উক্ত গোষ্ঠীর শিশুদের জোরপূর্বক অন্য কোন গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেয়া।
ওপরের কোন একটি বৈশিষ্ট্য থাকলেই সেটা জেনোসাইড বা গণহত্যা বলে বিবেচিত হবে। উইঘুর মুসলিমদের ওপর চীন সরকারের চালানো ধ্বংসযজ্ঞে ওপরের সবগুলো বৈশিষ্ট্য আছে। পূর্ব তুর্কিস্তানের উইঘুরদের ওপর চীনা যুলুমের ইতিহাস অনেক পুরনো। এ আগ্রাসনের সর্বশেষ অধ্যায়ও চলছে কমসেকম ৭০ বছর ধরে। কিন্তু গত চার-পাঁচ বছরে নতুন মাত্রা পেয়েছে এই আগ্রাসন। কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে বন্দী করা হয়েছে লক্ষ লক্ষ উইঘুর ও কাযাখ মুসলিমকে। সবচেয়ে রক্ষণাত্মক হিসেব অনুযায়ী ক্যাম্পে বন্দীর সংখ্যা দশ লক্ষ। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে গত কয়েক বছরে বন্দীর মোট সংখ্যা ৩০ লক্ষের বেশি[1]।

কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলোতে নিয়মতান্ত্রিক নির্যাতন, ধর্ষণ আর মগজধোলাইয়ের শিকার হচ্ছে বন্দীরা। বন্দীদের বাধ্য করা হচ্ছে মুসলিম-উইঘুর পরিচয় এবং ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটুক্তি করতে, পাশাপাশি সমাজতন্ত্র, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের স্তুতি গাইতে। রীতিমতো নিয়ম করে প্রতিদিন কাল্পনিক অপরাধের স্বীকারোক্তি আর প্রশংসা সঙ্গীত আওড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে বন্দীদের।

যারা তুলনামূলক ভাগ্যবান, তাদের শ্রমদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে। উইঘুরদের রক্ত আর অশ্রু মাখা শ্রমে তৈরি হচ্ছে নাইকি, অ্যাপল, অ্যাডিডাস, ক্যালভিন ক্লাইন, গ্যাপ, ফক্সওয়াগ্যানের মতো বিশ্ববিখ্যাত অসংখ্য কোম্পানীর ঝা চকচকে পণ্য।

বাকিদের শিকার হতে হচ্ছে ইলেকট্রিক শক, ওয়াটারবোর্ডিং, ‘টাইগার চেয়ার’, স্ট্রেস পযিশানসহ নানা ধরণের নির্যাতনের। ব্যাপক মাত্রায় চলছে যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ ও গণধর্ষণ। চালানো হচ্ছে বিভিন্ন মেডিক্যাল এক্সপেরিমেন্ট। দেয়া হচ্ছে অজানা ইঞ্জেকশান। নারীদের জোরপূর্বক গর্ভপাত করানো হচ্ছে। নারী ও পুরুষ,উভয়ে শিকার হচ্ছে জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ ও নির্বীজনের (sterilization)। হিসেবী নিষ্ঠুরতায় বন্দী উইঘুরদের শরীর থেকে ছিনিয়ে নেয়া অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়ে চীন গড়ে তুলেছে অর্গান ট্রেডের এক বিশাল, রমরমা মার্কেট।

যারা কোনমতে বন্দীত্ব থেকে এখনো বেঁচে আছেন তাঁদেরও নানাভাবে রাষ্ট্রীয় আগ্রাসনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে সুক্ষ ও সুবিস্তৃত এক পুলিশি রাষ্ট্র গড়ে তুলেছে চীন। নজরদারীর আওতায় আনা হয়েছে উইঘুরদের প্রতিটি পদক্ষেপ, প্রতিটি উচ্চারণ। রাস্তার মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট থেকে শুরু করে মোবাইলে ফোনে অ্যাপ ডাউনলোড কিংবা বিদেশে ফোন করার মতো বিষয়েও চলছে কঠোর নজরদারী। উইঘুরদের ঘরেও নজরদারীর ব্যবস্থা করেছে চীন। এক লক্ষের বেশি হান চাইনিযকে ‘আত্মীয়’ হিসেবে পাঠানো হয়েছে উইঘুরদের ঘরে। আক্ষরিক অর্থেই উইঘুরদের বেডরুমে ঢুকে নজরদারী করছে চীন। পরিবারের পুরুষরা যখন ক্যাম্পে বন্দী, তখন তাদের স্ত্রীদের বাধ্য করা হচ্ছে হান চাইনিজদের সাথে একই বিছানায়, একই চাদরের নিচে শুতে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় চলছে উইঘুর নারীদের ধর্ষণ।

এটুকুতেই ক্ষান্ত দেয়নি চীন। আক্রমণ করেছে ইসলামের ওপরও। অসংখ্য উইঘুরকে বন্দী করা হয়েছে নামায, রোযা, হজ পালন কিংবা কুরআন শেখার ‘অপরাধে’। ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে হাজার হাজার মাসজিদ, ধ্বংস করা হয়েছে অসংখ্য কবরস্থান। এমনকি মৃতদের দাফন করার সময় জানাযার নামায পড়তেও বাধা দিচ্ছে প্রশাসন। মসজিদের ইমামদের বাধ্য করা হচ্ছে সুরের তালে তালে ক্যামেরার সামনে নাচতে। দাড়িটুপি কিংবা হিজাব তো দূরের কথা, নারীদের পোশাক শুধু কোমরের নিচে গেলেই রাস্তায় পুলিশ এসে বাড়তি অংশ কেটে দিচ্ছে। ঘোষণা দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছে রমাদ্বানে সিয়াম পালন। কোন উইঘুর রোযা রাখছে কি না, তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে খেয়াল রাখছে সরকার এবং হান চাইনিযরা। মদ, কিংবা শূকরের মাংশ খেয়ে উইঘুরদের প্রমাণ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, তাঁরা সন্ত্রাসী না, উগ্রবাদী না।

ব্যাপক ও বিস্তৃত এই আগ্রাসনের উদ্দেশ্য সোজাসাপ্টা:

উইঘুর-কাযাখ মুসলিমদের শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে ফেলা। তাদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ও পরিচয় মুছে ফেলা।

পরিপাটি এ নিষ্ঠুরতার কথা অবিশ্বাস্য মনে হলেও খোদ চীনা সরকারের নিজস্ব দলিল দস্তাবেজেই স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে এর প্রমাণ। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কর্মচারীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে উইঘুরদের ‘বংশ, শেকড়, সম্পর্ক এবং উৎস ভেঙ্গে দেয়ার’। চীনের নিজস্ব সূত্র ব্যবহার করে এই জেনোসাইডের প্রমাণ তুলে এনেছেন বেশ কিছু গবেষক। পিয়ার রিভিউড রিসার্চে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে চীনের সরকারী নির্দেশনা, দলিল-দস্তাবেজ, প্রতিবেদন, টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি, পাবলিক কন্সট্রাকশন প্রকল্প, নিরাপত্তা খাতে চাকরির বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ, এবং সরকারী মিডিয়ার বক্তব্য থেকে গবেষকরা প্রমাণ করেছেন পূর্ব তুর্কিস্তানের মুসলিমদের ওপর চালানো চীনের এই জেনোসাইডের কথা। প্রমাণ করেছেন উইঘুর ভুক্তভোগীদের বক্তব্যের সত্যতা।

এগুলো ইতিহাসের পুরনো কোন অধ্যায়ের কথা না। এগুলো আমাদের বর্তমানের কথা। এই গণহত্যা চলছে আজকের পৃথিবীতেই। আমরা আধুনিক, সভ্য আর মানবিক হবার বড়াই করি। কিন্তু এই আধুনিক, সভ্য, মানবিক পৃথিবীর মানুষরাই নির্বিকারভাবে মেনে নিয়েছে এই গণহত্যা। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মুক্ত বিশ্ব, মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর শাসকগোষ্ঠী, আমজনতা - সবাই দেখেও না দেখার ভান করে যাচ্ছে।

উইঘুরদের নিয়ে বিচিত্র খেল দেখিয়েছে পশ্চিমা শক্তি আর মিডিয়াগুলো। চীনের সাথে চলা বাণিজ্য যুদ্ধের প্রয়োজনে কখনো আলোচনার টেবিলে উইঘুরদের গুটি হিসেবে আনছে, আর বেমালুম উপেক্ষা করে যাচ্ছে বাদবাকি সময়। হরহামেশা গণতন্ত্র, মানবাধিকার আর স্বাধীনতার বুলি আওড়ানো পশ্চিমের এ আচরণ প্রমাণ করেছে এই বুলিগুলো আসলে অন্তঃসারশূন্য। সব সময়ই তাই ছিল। প্রয়োজনের সময় সাদা সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বৈধতা উৎপাদন ছাড়া এই গালভরা শব্দগুলোর আর কোন ভূমিকা নেই।

অন্যদিকে জেনোসাইডের সংজ্ঞার অংশটুকু ছাড়া পুরো ব্যাপারটায় জাতিসংঘের ভূমিকা শূন্য। ফিলিস্তিন, সাবরা-শাতিল্লা, সেব্রেনিৎচা, সিরিয়া আর আরাকানের পর পূর্ব তুর্কিস্তানেও বরাবরের মতোই অল্পস্বল্প কিছু বিবৃতিবাজি ছাড়া স্রেফ নিষ্ক্রিয় দর্শকের ভূমিকা পালন করছে জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। জেনোসাইডের সবগুলো বৈশিষ্ট্য থাকার পরও উইঘুরদের ওপর চলা গণহত্যাকে জাতিসংঘ জেনোসাইড বলতে নারাজ। উল্টো জাতিসংঘের ৫৪টি সদস্য রাষ্ট্র চীনের এ জেনোসাইডের পলিসিকে সমর্থন জানিয়েছে, প্রশংসাও করেছে।

আধুনিক পৃথিবীর এক অদ্ভূত প্যারাডক্সে পুঁজিবাদী স্বার্থপরতা ও লালসার সবচেয়ে কদর্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে সমাজতান্ত্রিক চীনকে কেন্দ্র করে। বিলিয়নের বেশি ভোক্তার বাজার, সস্তা শ্রম আর বিনিয়োগের লোভের নিচে চাপা পড়ে গেছে পূর্ব তুর্কিস্তানের আড়াই কোটি উইঘুরের আকুতি।

মুসলিম ভূখণ্ডের শাসক এবং তাদের অনুগত আলিমদের অবস্থা আরো খারাপ। মুসলিম ভ্রাতৃত্বের দাবি তো দূরে থাক, চীনা বিনিয়োগের লোভে গণহত্যার সাফাই গেয়ে যাচ্ছে তারা নিয়মিত। সৌদি আরব থেকে শুরু করে তুরস্ক, পাকিস্তান থেকে শুরু করে ইরান – উইঘুর মুসলিমদের পক্ষে বলা তো দূরে থাক, খোলাখুলি চীনের ‘শিনজিয়াং পলিসি’র পক্ষে বক্তব্য দিয়েছে এসব শাসকেরা। আবারো প্রমাণ করেছে ইসলাম এবং মুসলিম ভ্রাতৃত্বের বিশেষ কোন মূল্য তাদের কাছে নেই। এগুলো নিছক রাজনৈতিক বুলি। নির্বাচনে জেতা, জনসমর্থন কেনা কিংবা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন মতো ব্যবহার করলেই হয়।

আর পৃথিবীর ছাপোষা সাধারণ মানুষেরা সন্তুষ্ট ঘুম, খাওয়া, প্রজনন, ভোগ, বিনোদন, ঘুম…এর চক্রেই। কোথায় কে মরছে, কীভাবে মরছে, অতোশতো চিন্তার সময় আমাদের নেই।

সবাই উইঘুরদের ত্যাগ করেছে। স্বার্থ ও সন্তুষ্টির ক্যালকুলাসে মূল্যহীন প্রমাণিত হয়েছে উইঘুরদের কষ্ট, রক্ত, অশ্রু আর জীবন।

সমাধান খোঁজার আগে সমস্যাকে চিনতে হয়। মুক্ত হবার আগে জেনে নিতে হয় বন্দীত্বের মাত্রা আর খাঁচার পরিধি। উইঘুরদের ওপর চলা নির্বিঘ্ন জেনোসাইড ফাঁস করে দিয়েছে আজকের পৃথিবীর সত্যিকারের চেহারাটা। নিজেদের রক্ত আর সম্মান দিয়ে উইঘুর মুসলিমরা আবারো প্রমাণ করেছে এই বিশ্বব্যবস্থা ভেঙ্গে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে। পশুর পচে যাওয়া, ফুলতে শুরু করা, দুর্গন্ধ ছড়ানো মৃতদেহের কাছ থেকে যতোটুকু পরিবর্তন, যতোটুকু বিচার আশা করা যায়, এই বিশ্বব্যবস্থার কাছে আশা করা যায় ততোটুকুই। বন্দীত্ব, নির্যাতন ও হত্যার কবল থেকে উইঘুরসহ অন্যান্য নির্যাতিত মুসলিমদের বাঁচাতে এ ব্যবস্থা শুধু ব্যর্থ না, বরং এই বিশ্বব্যবস্থা আগ্রাসন ও যুলুমকে দীর্ঘায়িত করে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতি রাষ্ট্রের সীমানা এবং মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর শাসকগোষ্ঠী ঐ আন্তর্জাতিক কাঠামোর অংশ, যা এই নির্যাতন ও হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করে, একে জিইয়ে রাখে। ফিলিস্তিন থেকে শুরু করে পূর্ব তুর্কিস্তান–পূর্ব ও পশ্চিমের মুসলিম ভূখণ্ডগুলো এই তিক্ত বাস্তবতার জলজ্যান্ত প্রমাণ।

এ অনাচার এবং যুলুম কাঠামোগত। তাই এই কাঠামো আর ব্যবস্থার পরিবর্তন ছাড়া এই অন্যায় থামবে বলে আশা করা যায় না। হয়তো সময়ের সাথে অত্যাচারিতের নাম বদলাবে, স্থান বদলাবে, কিন্তু মৌলিক কোন পরিবর্তন আসবে না। যুলুমের এ ধারা চলতে থাকবে। যেমনটা গত দেড়শো বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। দেয়ালের লিখনী স্পষ্ট। সময়ের দাবি পরিষ্কার। দায়িত্বকে এড়িয়ে গিয়ে নিরব নিভৃত বিড়ালপ্রবণতায় হয়তো জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো আমরা, কিন্তু ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। বিচার ও জবাবদিহিতার সেই ভয়ংকর দিনে, আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগও হয়তো আমাদের থাকবে না।

আজ হোক, কাল হোক, নিঃসন্দেহে পরিবর্তন আসবেই। কিন্তু সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে হলে বদলাতে হবে এই বিশ্বব্যবস্থা ও কাঠামোকে। বদলাতে হবে বিদ্যমানতাকে। চিন্তা করতে হবে যুলুমকে টিকিয়ে রাখা নিয়মতান্ত্রিকতার ছকের বাইরে গিয়ে। মাযলুমের প্রতিরোধ এবং অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই কখনো যালিমের বেঁধে দেয়া নিয়মে হয় না।

Asif Adnan

Address

Jhenaidah
Dhaka
1212

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Preacher Of Islam posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share

Category