ShebikAmit, Dhaka (2025)

03/11/2025

আমি চিৎকার করে ফেলেছি,,,😣

কিন্তু আমার সন্তানের ক্ষ*তি হবে না তো?

আপনার এই কথা অনুভব হওয়া মানে, আপনি নিজের আচরণটা নিয়ে সচেতন, সেটাই জেন্টল প্যারেন্টিংয়ের প্রথম ধাপ।
কেউই নিখুঁত না, এমনকি যাদের বই লেখার মতো অভিজ্ঞতা আছে, তারাও মাঝে মাঝে রাগ নিয়ন্ত্রণ হারায়। আমি কিছুদিন আগে USA এর একজন নিউরোলজিস্টের ভিডিও দেখছিলাম, তখন সে একি কথা নিয়ে আলোচনা করছিলেন। Emotional Repair।
আপনি ক্লান্ত হবেন না বা emotion প্রকাশ পাবেনা এটা অসম্ভব। আপনি মা, আপনি ক্লান্ত হন, চাপ থাকে, এটা খুবই স্বাভাবিক।

চলুন একটু বুঝে দেখি কীভাবে বিষয়টা সামাল দেওয়া যায়,

কেন এমন হয়🤷‍♀️

ঘুমের অভাব, কাজের চাপ, একসাথে বহু দায়িত্ব, মস্তিষ্কের amygdala (রাগ ও প্রতিক্রিয়ার অংশ) দ্রুত সক্রিয় হয়।

আমাদের শৈশবের “শাসনের প্যাটার্ন” অবচেতন মনে বসে থাকে, তাই অনেক সময় আমরা না চাইলেও সেটাই রিপিট করি। করে ফেলি।

কীভাবে সামলাবেন ধীরে ধীরে🤷‍♀️

১. রাগের মুহূর্তে থেমে যান: নিজেকে বলুন, “আমি এখন চিৎকার করতে চাই না, একটু থামি।”
৫টা গভীর শ্বাস নিন বা সামান্য দূরে গিয়ে ৩০ সেকেন্ড চুপ থাকুন। এটা খুব ভালো কাজ দেয়।

২. রাগের পর ক্ষমা চান (এটা দুর্বলতা নয়):সন্তানকে বলুন, “মা রেগে গিয়ে চিৎকার করেছে, এটা ঠিক না। আমি দুঃখিত। I love you baba”
এতে সে শিখবে, ভুল হলে ক্ষমা চাইতে হয়, এবং ভালোবাসা নিরাপদ।

৩. নিজের যত্ন নিন (Self-care): পর্যাপ্ত ঘুম, একটু সময় নিজের জন্য,এগুলো আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখে।

৪. ট্রিগার চেনো: কখন রাগ বেশি হয়? ক্লান্তিতে? খাওয়ার সময়? এগুলো নোট করে রাখুন,
রুটিন ঠিক রাখলে নিয়ন্ত্রণ অনেক সহজ হয়। ওই সময়গুলোতে রাত হলে, নিজেকে একটু অন্যদিকে ঘুরিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন।

৫. পরে আলোচনা করুন: রাগের মুহূর্ত চলে গেলে সন্তানের সাথে শান্তভাবে কথা বলুন,
“মা রেগে গিয়েছিল, কিন্তু তুমি কিছু ভুল করেছিলে সেটা আমরা মিলে ঠিক করব। মার ভুল হয়ে গিয়েছে মা, কিন্তু তোমারো ওমন টা করা ঠিক হয়নি”

আপনি প্রতিদিন শিখছেন , চেষ্টা করছেন, এটাই আসল জেন্টল প্যারেন্টিং। আপনার সন্তান আপনার আচরণের নিখুঁততা নয়, আপনার ভালোবাসা আর সাড়া দেওয়াই বেশি মনে রাখবে।

আমরা মায়েরা মানুষ, দেবী নই।
ক্লান্তি, কাজের চাপ, মানসিক টানাপোড়েনের মাঝে কখনো কখনো আমরা নিজেরাও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়।
চিৎকার করে ফেলি, রেগে যাই, পরে বুক ফেটে কান্না আসে,
"আমি ওর ক্ষতি করে ফেললাম না তো?" এই প্রশ্ন একজন মা নয়, অনেক মা আমাকে ইনবক্সে জানতে চান। তাই আজকের লেখাটায় বিস্তারিত রাখার চেষ্টা করছি।

আসলে না মা, আপনি ক্ষতি করছেন না।
আপনি মানবিক আচরণ করছেন, আর পরে ভালোবাসা দিয়ে সম্পর্ক মেরামত করছেন,
এটাই আপনার সন্তানের মানসিক বিকাশের সবচেয়ে বড় উপহার। ❤️

Emotional Repair করছেন আপনি।

🧠 বৈজ্ঞানিকভাবে কী হয় দেখি চলুন

যখন আপনি রেগে চিৎকার করেন,
আপনার শিশুর মস্তিষ্কে কিছুক্ষণের জন্য ভ*য়ের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়, কিন্তু আপনি যখন শান্ত হয়ে ওকে জড়িয়ে ধরেন, ক্ষমা চান, বলেন “মা রেগে গিয়েছিল, এটা ঠিক হয়নি, Sorry ma”, তখন ওর মস্তিষ্ক শেখে এক অবিশ্বাস্য শিক্ষা:
“রাগ, ভুল আর কষ্ট, সবই ভালোবাসা দিয়ে ঠিক করা যায়।”

এই অভিজ্ঞতাই ওর মস্তিষ্কে তৈরি করে:

নিরাপত্তার অনুভূতি,

সহানুভূতি,

আত্মনিয়ন্ত্রণ,

আর সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার দক্ষতা।
যা ওর জন্য আশীর্বাদ হবে, ওর নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক বুঝতে ও মেরামত করতে কাজে লাগবে।

এই প্রক্রিয়াকে বলে Emotional Repair,
এটাই ভবিষ্যতের “Secure Attachment”-এর ভিত্তি,
যা শিশুকে আজীবন মানসিকভাবে স্থিতিশীল রাখে।

আসলে রাগ একটা Emotion, আপনার হাসি, কান্না, খারাপ লাগা, ভালো লাগা, যেমন emotion তেমনি রাগ।

এই বিষয়ে জেন্টল প্যারেন্টিং আসলে কী বলে?🤷‍♀️

জেন্টল প্যারেন্টিং-এর মূলনীতি হচ্ছে
Respect + Empathy + Boundaries + Understanding

অর্থাৎ:
সন্তানের অনুভূতিকে শ্রদ্ধা করা,

সহানুভূতি দেখানো,

সীমা দেওয়া,

এবং বোঝানো কেন সীমাটা দরকার।

এখানে চিৎকার করা বা ভ*য় দেখানো মূলত শিক্ষা নয়, প্রতিক্রিয়া। তাই এই দর্শন বলে, যতটা সম্ভব শান্তভাবে গাইড করতে, যেন শিশুর আত্মসম্মান নষ্ট না হয়।

তাহলে বাস্তবে কি চিৎকার করা “ভুল”?

না, এটা “ভুল” না, এটা মানবিক প্রতিক্রিয়া।
Gentle parenting মানে কখনো রা*গ না করা নয়;
বরং রা*গকে চিনে ফেলা, মেনে নেওয়া, এবং পরে মেরামত করা।

আপনি যখন রেগে চিৎকার করলেন, তারপর বলুন

“মা রে*গে গিয়েছিল, আমি দুঃখিত”
তখন আপনি আসলে gentle parenting-ই করছেন, কারণ আপনি নিজের ভু*লের দায় নিচ্ছেন ও সম্পর্ক পুনর্গঠন করছেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর ক্ষতি হয় চিৎকারে নয়, বরং ভ*য় ও অব*হেলায়। আপনি যখন চিৎকারের পর ওকে বোঝান, ভালোবাসেন। তখন শিশুর মস্তিষ্কে reconnection pathway তৈরি হয়,
যা তাকে শেখায়: “রা*গ আসতে পারে, কিন্তু সম্পর্ক নিরাপদ।”

Gentle parenting কোনো নিখুঁত হওয়ার প্রতিযোগিতা না। এটা হলো self-awareness-এর অনুশীলন,
যেখানে মা-ও শিখছে, শিশু-ও শিখছে।

Emotion Repair আপনার সন্তানকে শেখায়:

“ভুল হলেও সম্পর্ক ভাঙে না, মেরামত হয়।”
এটাই জীবনের সবচেয়ে সুন্দর পাঠ। 💖

বিদ্র: তাই বলে বারবার নিয়ন্ত্রণ হাড়াবেন না, একাধিক বার এমন করা ওদের জন্য ভালো নয়। ধৈর্য্য ধরুন। আর নিজের রাগ ও emotion এর ও নিয়ন্ত্রণ করা শিখুন। আপনাকে দেখেই আপনার ক্ষুদে, সকল শিক্ষা নেবে। তাই সচেতনতা প্রয়োজন।
ধন্যবাদ 🙏
ShebikAmit

03/11/2025

একটা নারী বা পুরুষ, সবচেয়ে মানসিক যন্ত্রণায় ভোগে তার সঙ্গীর অবহেলার কারনে।

02/11/2025

জেন্টল প্যারেন্টিং — কি, কেন ও কিভাবে কার্যকর

আজকে একটু জানার চেষ্টা করি চলুন💁‍♀️

নীচে সহজ ভাষায় জেন্টল প্যারেন্টিং (Gentle Parenting)–এর মূল দিকগুলো, কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং বাস্তব জীবনে কীভাবে ফল দেবে, সবগুলো ধাপে বিস্তারিতভাবে লিখলাম।

জেন্টাল প্যারেন্টিং কি?

জেন্টল প্যারেন্টিং হল এমন একটি প্যারেন্টিং দৃষ্টিভঙ্গি যেখানে শাস্তি বা কর্তৃত্বের উপর নয়, সন্তানের অনুভূতি, সংযোগ, সীমা ও নির্দেশনার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এটি দৃঢ় কিন্তু সহানুভূতিশীল, অর্থাৎ সীমা আছে, কিন্তু তা ভালোবাসা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে রক্ষা করা হয়।

কোন দিকগুলোকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়🤷‍♀️

১. আবেগ ও মানসিক নিরাপত্তা (Emotional safety) শিশুর অনুভূতিকে গ্রহণ করা, ব্যাপারগুলো শুনে আত্মসম্মান গঠন করা।

২. সংযুক্তি ও সম্পর্ক (Attachment & connection), পিতামাতার সাথে সুরক্ষিত সম্পর্ক শিশুকে আত্মবিশ্বাসী করে। তাই বন্ডিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।

৩. আত্মনিয়ন্ত্রন ও আত্মনির্ভরতা (Self-regulation & autonomy), শিশুকে নিজের আবেগ ও আচরণ নিয়ন্ত্রণ শেখানো; ছোট থেকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেয়া।

৪. সম্মানভিত্তিক যোগাযোগ (Respectful communication), ছোট-বড় সবাইকে সম্মান দেখিয়ে কথা বলা শেখানো।

৫. নিয়ম ও সীমা, কিন্তু বোঝানো রীতিতে (Boundaries with explanation) “কেন” বোঝিয়ে সীমা স্থাপন করা, ক্ষমতা ও বিবেক গঠন করা। জোর করে চাপিয়ে না দিয়ে ব্যাখা দেয়া, নিয়মের।

৬. সমস্যা সমাধানের দক্ষতা (Problem-solving skills), ক্ষমতায়ন করে সমস্যার সমাধান শিখানো, শাস্তি নয় প্রশিক্ষণ।

৭. নিয়মিত রুটিন ও সীমাবদ্ধ নির্দেশনা (Predictability & structure), নিরাপত্তা ও আত্মনিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে।

কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কীভাবে ফল দেয়🤷‍♀️

মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়তা: শিশুর মস্তিষ্ক সামাজিক ও আবেগীয় সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। সংযুক্তি ও সহানুভূতিপূর্ণ প্রতিক্রিয়া মস্তিষ্কের স্থিতিশীলতা ও স্থায়ী নেটওয়ার্ক গঠনে সাহায্য করে।

উত্থিত আত্মসম্মান ও আত্মনিয়ন্ত্রন: শিশুর আবেগ গ্রহণ করলে সে নিজের অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আচরণকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।

কম আচরণগত সমস্যা (long-term): শক্ত হাতে শাস্তির তুলনায় সংযোগভিত্তিক পদ্ধতি অসহযোগী বা আগ্রাসী আচরণ কমাতে বেশি সহায়ক।

সামাজিক দক্ষতা ও সহানুভূতি: অন্যের আবেগ বুঝবার ক্ষমতা, সহযোগিতা ও সামাজিক বোধ বিকাশ পায়।

মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা: হতাশা, উদ্বেগ ও আত্মসম্মান-সংক্রান্ত সমস্যার ঝুঁকি দীর্ঘমেয়াদে কম থাকে।

আসলে, জেন্টল প্যারেন্টিং কেবল “শান্ত” নীতির কথা নয়, এটি শিশুকে আবেগীয় ও সামাজিক সক্ষম করে এমন একটি কার্যকরী বিনিয়োগ।

বাস্তবিক কিছু উদাহরণ 💁‍♀️

বাচ্চা খেলনা নিয়ে ঝগড়া করল → সমাধান: “দেখছি তুমি রাগে আছো, খেলনা এখন ভাগ করা কঠিন মনে হচ্ছে। আমি তোমার সঙ্গে আছি, চলো এক মিনিট ভেবে দেখি কিভাবে ভাগ করা যায়।”

বাচ্চা স্কুলে কাঁদছে → সমাধান: পাশে বসে বলুন, “কী হয়েছে? তুমি কষ্ট পাচ্ছো, বললে আমি সাহায্য করব।” পরে সমস্যার সমাধানে অংশগ্রহণ করান।

সীমা দিতে চাইলে → “আমি বুঝি এটার জন্য তুমি অনুপ্রাণিত, কিন্তু রাতের ৮টার পরে পর্দায় ৩০ মিনিটই হবে, তার পর গল্পের সময়।”

সাধারণ কিছু মিসকনসেপশান ও বাস্তব চ্যালেঞ্জ🤷‍♀️

মানে যা আমরা বারবার শুনি💁‍♀️

“এটা ছেলেমানুষি, শাসনই ভালো” 👉ভুল। জেন্টল প্যারেন্টিং বলে না কঠোরতা বাদ দিতে; বলছে সীমা কিন্তু সহানুভূতিতে।

“বাচ্চা কীভাবে শিখবে?”, শাস্তি ছাড়া শেখানো যাবে না? না 👉 সীমা ও ফলাফল বোঝালে, প্রাকটিসে শিশুরা আচরণ শিখে।

যেসব চ্যালেঞ্জ আমরা ফেস করি: ক্লান্তি, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে না পারা, পারস্পরিক রুটিনের সমস্যা।

এইগুলোর জন্য ধৈর্য, স্থিতিশীল রুটিন ও পরিবারের সমন্বয় দরকার। পারিবারিক সাহায্য না পেলে, যেকোনো প্যারেন্টিং মেনে চলা বা ফলো করা কষ্টকর।

কিছু ছোট কিন্তু শক্তিশালী প্রয়োগযোগ্য কৌশল (Daily toolkit)

১. নাম দিয়ে আবেগ শোনান: “তুমি এখন বিরক্ত/দুঃখিত বলছো।” " তুমি এখন রেগে গেছো"।

২. নীরবতার মাঝে সংযুক্তি: কঠোর লেকচার নয়, শান্তভাবে চোখে চোখ রেখে কথা বলুন।

৩. প্রাকটিসিং চয়েস দিতে দিন: “তুমি নীল শার্ট নেবে নাকি লাল?” (যেখানে সম্ভব) সবসময় নয়।

৪. প্রতিক্রিয়া নয়, আইন ও পরিণতি বোঝান: আচরণ ও তার প্রভাব দেখান।

৫. মডেলিং: নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ দেখান, শিশু এটাই শিখে।

৬. শান্ত অভ্যাস (calming routine): নিঃশ্বাস নেয়া, ছোট গল্প বলা বা কোলে নেয়া, এরমধ্যে যেসব টিপস কাজ করে সেগুলোর রুটিন বানান।

৭. প্রশংসা নির্দিষ্টভাবে দিন: “তুমি তাকে Thank You, বলেছো, মাম্মা ভীষন খুশি হয়েছি” (মোটিভেশন বাড়ে)

কখন বেছে নিতে হবে সাবলীল মিশ্র পদ্ধতি🤷‍♀️

জেন্টল প্যারেন্টিং সব পরিস্থিতিতে একই রকম করা সম্ভব নয়, বিশেষ করে বিপদজনক/জটিল নিরাপত্তা বিষয় বা অতি-উচ্ছৃঙ্খল আচরণে প্রাসঙ্গিক প্রফেশনাল সাহায্য দরকার হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে শিশুর বয়স, পরিপার্শ্বিকতা ও বিশেষ চাহিদার ওপর ভিত্তি করে ফ্লেক্সিবিলিটি প্রয়োজন। আপনি চাইলেই সবসময় জেন্টাল প্যারেন্টিং ফলো করা সম্ভব হয়না বা হবেনা।

কিছু বই ও রিসোর্স দেয়া হলো (পড়তে পারেন)

How to Talk So Kids Will Listen & Listen So Kids Will Talk — Faber & Mazlish

The Whole-Brain Child — Dan Siegel & Tina Payne Bryson

No-Drama Discipline — Dan Siegel & Tina Payne Bryson

Parenting from the Inside Out — Dan Siegel

Gentle Parenting — Sarah Ockwell-Smith

(উপরের বইগুলো পড়লে বাস্তব উদাহরণ, টেমপ্লেট ও অ্যাকশনেবল কৌশল পাবেন।)

জেন্টল প্যারেন্টিং হলো শিশু-নির্দিষ্ট, সংযোগভিত্তিক এবং সহানুভূতিশীল নির্দেশনা—যা দীর্ঘমেয়াদে শিশুর আত্মনিয়ন্ত্রন, সামাজিক দক্ষতা ও মানসিক সুস্থতা বাড়ায়। এটি কেবল “নরম” না; বরং সচেতন, সীমাবদ্ধ কিন্তু সম্মানজনক করেই সন্তানের ব্যক্তিত্ব ও মনস্তত্ত্ব গড়ে তোলে।

আমি মিশ্র প্যারেন্টিং ফলো করি ( জেন্টাল+ অথরেটেটিভ + নিউরো প্যারেন্টিং)
ইচ্ছে আছে এই মিশ্র প্যারেন্টিং নিয়ে বই লেখার, যাতে মানবিক, মেধাবী ও সুন্দর একটা জেনারেশন আসে🥰

ভালো থাকবেন সবাই।
মনে রাখবেন, সন্তান মানুষ করার সময়, একবারি আসে, বারবার নয়।
ধন্যবাদ 🙏
ShebikAmit

02/11/2025

My dear Princess ❤️

02/11/2025

বাচ্চার জেদ, কারন ও করনীয় 💁‍♀️

02/11/2025

আপনার সন্তানের জন্য সেরা কিছু💁‍♀️
পেয়ে যাবেন Sanaya's Shop এ

02/11/2025

তার ইচ্ছে মতো এক একটা বই আনবে💁‍♀️

02/11/2025

শিশুকে অন্তত প্রথম ৩ বছর স্ক্রীন ফ্রী রাখুন🙏

01/11/2025

টিনএজ সন্তানদের মোটিভেট করার দারুন ট্রিকস💁‍♀️
পর্ব-০৬
আজকে চেষ্টা করবো বিজ্ঞানসম্মত কিছু কার্যকরী টিপস & ট্রিকস নিয়ে আলোচনা করতে।
🧠 গবেষণা-ভিত্তিক তথ্য (Neuro- & Motivation Science)

নিচে কয়েকটি মূল পয়েন্ট এবং সেগুলোর সঙ্গে গবেষণা ফলাফল দেওয়া হলো, যাতে আপনারা পরিষ্কার ভাবে বুঝতে পারেন।

মস্তিষ্কের বিকাশ ও তার প্রভাব

টিনএজারদের মস্তিষ্ক এখনও বিকাশমান: উদাহরণস্বরূপ, কাঠামোগত নেটওয়ার্ক-অর্গানাইজেশন (structural brain networks) বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সুসংহত হয়। যেমন এক গবেষণায় দেখা গেছে: ৮-২২ বছরের মধ্যে অংশ নেওয়া ৮৮২ জনের ডেটায় দেখা গেছে, “মডিউলার সেগ্রিগেশন” (module segregation) বাড়ার সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ফাংশন (যেমন সিদ্ধান্ত নেওয়া, নিয়ন্ত্রণ) ভালো হচ্ছিল।

ইউনিসেফের এক রিভিউ বলছে: “বুদ্ধিমত্তা আছে, তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ-ক্ষমতা (decision making) ও নিয়ন্ত্রণগত ক্ষমতা (cognitive control) এখনও পুরোপুরি পরিণত হয়নি”।

অর্থাৎ বাবা-মা হিসেবে আমাদের ধারণা করা উচিত, “সে তো বড় মানুষ” হলেও তার মস্তিষ্ক এখনও বিকাশে। এই বাস্তবটি বুঝলে বেশি ধৈর্যের সঙ্গে ও বাস্তবমুখীভাবে করণীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব।

মোটিভেশন, রিওয়ার্ড সিস্টেম ও টিনএজার

একাধিক গবেষণা বলছে, টিনএজারদের রিওয়ার্ড সিস্টেম (reward-sensitivity) একটু বেশি সক্রিয় হয়, বিশেষ করে “নতুনতা” (novelty) বা “উঁচু রিস্ক/উঁচু রিওয়ার্ড” পরিস্থিতিতে।

যেমন একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১০-১২ বছরের, ১৪-১৫ বছরের ও ১৮-২৩ বছরের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রিওয়ার্ড anticipation (প্রত্যাশা) ও রিওয়ার্ড গ্রহণের সময় মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের সক্রিয়তা ভিন্ন ছিল।

আরেকটা গবেষণা বলছে, যখন রিওয়ার্ড বা প্রোফিট সম্ভাবনা থাকে, টিনএজারদের “মোটিভেশনাল সিস্টেম” (incentive motivation) বেশি কাজ করে এবং তারা হয়তো কম নিয়ন্ত্রণ (self-regulation) দেখাতে পারে।

এছাড়া, শিক্ষণ বা শেখার প্রসঙ্গে: একটি গবেষণায় দেখা গেছে ১০-১৮ বছর বয়সের সবাই বলেছে শব্দ শেখার সময় “সাফল্যের আনন্দ” অনুভব করেছে, অর্থাৎ তারা অভ্যন্তরীণ রিওয়ার্ড (intrinsic reward) অনুভব করতে পারে।

কী অর্থে এই গবেষণা আমাদের জন্য মূল্যবান, বাবা-মা হিসেবে এটা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ :

যখন আমরা বলি “তোমার এখনই পড়াশোনা করা জরুরি”, “ না করলে ভবিষ্যতে শেষ ”, এসব বার্তা অনেক সময় দূর ভবিষ্যতের ভয়ভিত্তিক হয়। কিন্তু গবেষণা বলে: টিনএজারদের রিওয়ার্ড সিস্টেম বেশ আকর্ষণ করে তাত্ক্ষণিক, স্পষ্ট, অর্থপূর্ণ পুরস্কারগুলোর প্রতি। (যেমন: তুমি এখনই ছোট কিছু করেছ, সেটা দেখছি, আমরা তার জন্য গর্বিত), যেমন : ক্লাস টেস্টে সে ৮/১০ এ সেটার জন্য খুশি হন, বলুন নেক্সট এক্সামেও এমন ভালো ফলাফল রেখো সোনা"।

আবার, যেহেতু নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা (cognitive control) পুরোপুরি পরিণত নেই, তারা সিদ্ধান্ত নেওয়া বা নিজেকে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ পেতে পারে, তাই শুধু আদেশ বা চাপ নয়, গাইডিং, সহযোগিতা, পরিকল্পনা দরকার।

এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, রিওয়ার্ড-সেন্সিটিভিটি নেতিবাচক দিকে যেমন ঝোঁক বাড়াতে পারে (রিস্ক টেকিং, উত্তেজনা খোঁজা) তেমনি ইতিবাচক দিকে বড় সুবিধা নিয়ে আসতে পারে, আমরা যদি ভালোভাবে “মোটিভেশনাল চ্যানেল” তৈরি করি।

বাবা-মায়েদের জন্য প্রয়োগযোগ্য বাস্তব ধাপ ও কৌশল💁‍♀️

গবেষণার ওপর ভিত্তি করে নিচে ধাপে ধাপে করণীয় দেওয়া হলো, আপনার টিনএজারের সঙ্গে ব্যবহার করতে পারবেন। আমি, আমার মতোন সাহায্য করার চেষ্টা করছি, আপনাদের ভালো আইডিয়া গুলো কমেন্টে বলতে পারেন।

ধাপ ১: সংযোগ ও অনুভূতিপূর্ণ সম্পর্ক গঠন

প্রতিদিন কিছু সময় শুধু শুনতে বসুন, কোনও উপদেশ নয়, শুধু “আজ তুমি কেমন অনুভব করেছিলে?” এ ধরনের খোলা প্রশ্ন। সারাদিন কি হলো, কি করেছে, নিছক খোলা আলাপ, কোনো জেড়া নয়।

যখন তারা কিছু দেয় বা কিছু করে, সেটা দেখুন এবং বলুন, “আমি দেখেছি তুমি এই কাজটা করেছ, ভালো হয়েছে”, এমনভাবে প্রশংসা করুন। গবেষণা বলছে, ইতিবাচক সংযোগ মস্তিষ্কে নিরাপত্তা ও মোটিভেশন তৈরি করে।

যদি আপনার পছন্দের বাইরের কোনো কাজ করে, তবে, “তুমি কেন এটা করেছ” না বলে বোঝার চেষ্টা করুন উদাহরণস্বরূপ: “তোমার মনের কথা বলো, কি কারণে তুমি এই ক্লাবে যোগ দিতে চাও?” শুধু ফলাফল নয়, কারণ শুনুন। এতে আপনার ও সন্তানের মধ্যে খুব ভালো একটা সম্পর্ক বজায় থাকবে, কোনে লুকোচুরি হবেনা।

ধাপ ২: উদ্দেশ্য-বোধ (purpose) তৈরি করা

একসঙ্গে বসে আলোচনা করুন: “তুমি কেমন মানুষ হতে চাও?”, “পাঁচ বছর পর তুমি কী করেছ বলে ভাবছ?” বড় ছবির সাথে তাদের সংযোগ দিন। মাঝে মাঝে ভালো ভালো মোটিভেশনাল স্পিকারের অনুষ্ঠানে সন্তান নিয়ে যান, এতে ওদের মধ্যে ভালো রকম পরিবর্তন আসবে, যখন শুনবে ওই একটা ছেলে SSC এর পড়েই Programming এর দারুন দারুন Problem Solve করছে, বা HSC শেষ করেই রিসার্চ পেপার পড়ছে ও নতুন গবেষণা পেপার রেডি করে ফেলছে, আর সবাই তার প্রশংসায় ভাসছে, তখন আপনার সন্তানেরও ইচ্ছে হবে দারুন কিছু করার, চমকে দেবার, আর বাবা- মার গর্ব হবার।

আপনার সন্তানের উদ্দেশ্য ভালোভাবে শুনুন, তারপর
সেই উদ্দেশ্যকে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করুন, যেমন: “এই সপ্তাহে তুমি এই একটি ছোট কাজ করতে পারো যা তোমার বড় উদ্দেশ্যের দিকে এগিয়ে যাবে”।

তাদের স্বার্থ ও ইচ্ছার প্রতি সম্মান জানান, ইচ্ছে আছে কি না, সেটি শুনুন এবং সমর্থন করুন।

ধাপ ৩: রিওয়ার্ড ও অগ্রগতি উৎসাহ দেওয়া

ছোট পুরস্কার এবং দৃশ্যমান অগ্রগতির সুযোগ দিন, যেমন: “এই দিন তুমি সময়মতো পড়েছ, আমরা একসাথে একটু সময় কাটাব”।

রিওয়ার্ড বলতে বড় কিছু নয়, যুক্ত-যোগ্য কিছু হতে পারে, সময়, কথোপকথন, নতুন সুযোগ।

গবেষণা অনুসারে, তাত্ক্ষণিক অনুভূতি ও প্রতিক্রিয়া বেশি কার্যকর হয় টিনএজারে। যেমন: যখন তারা আজ কিছু নতুন শিখেছে বা করেছে, তা আজই দেখিয়ে দিন, “ভালো হয়েছে, তুমি এগিয়ে গেছে”।

ধাপ ৪: নিজেদের মডেল হওয়া

আপনি যেমন সময়মতো কাজ করেন, বাসায় পড়াশোনা বা বই পড়ার অভ্যাস রাখেন, এটি টিনএজারে “মিরর নিউরন” কাজ করবে।

ভুল হলে তা স্বীকার করুন, “হ্যাঁ আমি আজ একটু দেরি করেছিলাম, কালকে থেকে আর হবেনা” বলুন। এটি তাদের শেখাবে নিজ-নিয়ন্ত্রণ ও নম্রতা।

ঘর-বাড়িতে আলোচনার পরিবেশ রাখুন, পড়াশোনা, সামাজিক দায়িত্ব, মানবিক কাজ নিয়ে কথা বলুন, শুধু অঙ্ক বা ইংরিজির প্রসঙ্গ নয়।

ধাপ ৫: ডিজিটাল-ডিসিপ্লিন ও মননশীলতা

টিনএজারদের স্ক্রিন-টাইম, সোশ্যাল মিডিয়া ইত্যাদিতে বেশি সময় কাটানোর প্রবণতা আছে। হালকা নিয়ম নির্ধারণ করুন: যেমন রাত ৯টার পর No Phone. বাসার সবার জন্য।

নিজে একটি ছোট মাইন্ডফুলনেস বা ধ্যান অভ্যাস শুরু করুন, টিনএজারের সঙ্গে একসাথে ৫-১০ মিনিট বসুন। এটি তাদের মন শান্ত রাখতে সহায়ক। শরীর ও ব্রেইনের জন্য দারুন উপকারী । ভালো কেনো মেডিটেশন একসাথে সবাই করতে পারেন।

শেখাতে হবে, স্ক্রীন কেবল ভালো কাজে, অহেতুক সময় নষ্ট করার কাজে না। HSC শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিজের স্মার্ট ফোন নয়। বাসায় ল্যাপটপ বা কম্পিউটার রাখুন, যাতে সে তার প্রয়োজনীয় স্ক্রীন টাইম কাটাতে পারবে। কোনো স্কীল শেখার ব্যাপারে উৎসাহ দিন, ধাপে ধাপে সাহায্য করুন ও প্রশংসা করুন। ❤️ নিজেই পরিবর্তন দেখতে পারবেন।

ধাপ ৬: মানবিকতা ও সামাজিক দায়িত্বের ধারণা জাগানো

সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করান, যেমন: একসাথে গরিবদের সহায়তা, পরিবেশ-সচেতন কার্যক্রম। এটি তাদের মনে করবে “আমার কাজ শুধু নিজে নয়, অন্যদের জন্যও”। মাঝে মাঝে বৃদ্ধাশ্রম, অনাথালয় নিয়ে যান।

গল্প, ইতিহাস, সাহিত্য পড়ান, যেখানে মানবিক মূল্যবোধ, দায়িত্ব, অন্য-জনের প্রতি সহমর্মিতা আসে।

সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বলুন: “এই সিদ্ধান্ত কি অন্যকে ক্ষতি করতে পারে?”, এমন প্রশ্ন ভাবতে উৎসাহ দিন।

আসলে,

টিনএজারদের মস্তিষ্ক এখনো বিকাশে আছে; তারা রিওয়ার্ড-সেন্সিটিভ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রেনিং প্রয়োজন।

তাই মোটিভেশনের জন্য শুধুই আদেশ বা ভয় নয় সংযোগ, উদ্দেশ্য, ছোট পুরস্কার, অগ্রগতি দৃশ্যমান করা, মডেলিং ও মানবিকতা জরুরি।

এই ৮ টি পর্বের সিরিজে চেষ্টা থাকবে আপনাদের সাহায্য করার, টিনএজরা সঠিক দিশা ও পথ পাক। শুধু আমার একার চেষ্টা হলেই হবেনা, আপনাদের চেষ্টাও অনেক বেশি দরকার।

পর্বগুলো পড়ে নেবেন।
নিজে জানুন, অন্যকে জানান।

আমাদের চেষ্টা দারুন এক জেনারেশন আসুক, অসুস্থ সমাজ সুস্থ হোক। আপনারা বাবা-মা হিসেবে নিজের সেরারা চেষ্টা করুন। 🙏
ধন্যবাদ 🙏
ShebikAmit

01/11/2025

আজকে তার খুব মজার দিন, যেসব Animals এতোদিন বইয়ে দেখেছে আজকে সরাসরি দেখেছে, 😮
সে কি যে আনন্দ তার।
অনেক কিছু নতুন দেখেছে আজ, খুবি খুশি
ShebikAmit

31/10/2025

বাচ্চার ঘুমের সমস্যার সমাধান করুন💁‍♀️
নিজেদের অভ্যাস ঠিক না করে বাচ্চাকে দোষ দেবেন না প্লিজ🙏

31/10/2025

প্রতিদিন বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন তো?

ShebikAmit

03/11/2025

03/11/2025

02/11/2025

02/11/2025

02/11/2025

02/11/2025

02/11/2025

02/11/2025

01/11/2025

01/11/2025

31/10/2025

31/10/2025

Address

Telephone

Website

Alerts

Contact The Business

Shortcuts

Share