13/08/2025
৪৫ বছর ধরে নিঃস্বার্থভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন কক্সবাজারের রামুর এক মহৎপ্রাণ মানুষ—ডা. সুজিত কুমার শর্মা। মাত্র ১০ টাকার ভিজিটে, কখনো বিনামূল্যেও, শত শত মানুষকে সেবা দিচ্ছেন প্রতিদিন।
তিনি শুধু একজন ডাক্তার নন—তিনি এই এলাকার মানুষের কাছে আশার আলো, একজন প্রকৃত মানবসেবক।
পশ্চিম মেরংলোয়ার সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেয়া এই চিকিৎসক নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন দরিদ্র ও অসহায় মানুষের সেবায়। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় তার রোগী দেখা। রামু চৌমুহনী স্টেশনের উত্তরে ছোট্ট একটি চেম্বারে দিনভর ১৫০ থেকে ২০০ রোগী আসে তার কাছে। ধনী-গরিব সবার জন্য একই ভিজিট—মাত্র ১০ টাকা। আর যারা দিতে পারেন না, তাদের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা।
৬৫ বছরের বৃদ্ধা তফুরা খাতুন বলেন, “আমার কোনো সন্তান নাই, এই ডাক্তারই আমার ভরসা। তিনি শুধু ওষুধই দেন না, তার কথায় মনটা শান্ত হয়ে যায়।”
এই চিকিৎসকের কাছে অনেক জটিল রোগের রোগীরাও সুস্থ হয়েছেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত রোগীদের সেবা থেকে শুরু করে টিউমার কিংবা অন্যান্য ছোটবড় অপারেশনও তিনি সফলভাবে করে থাকেন। কারো কাছে টাকা না থাকলে, তার মুখে একটিই কথা—"মানুষের সেবা করাটাই তো আসল কাজ।"
ডা. সুজিত বলেন, “চিকিৎসা কোনো বিলাসিতা নয়, এটা মানুষের মৌলিক অধিকার। আমি চাই না কেউ অভাবে চিকিৎসার বাইরে থাকুক।”
তাঁর এই অদম্য নিষ্ঠা, মানবিকতা ও পেশাদারিত্ব তাকে রামুর মানুষের হৃদয়ে গেঁথে দিয়েছে গরিবের ডাক্তার হিসেবে। সরকার ও বিভিন্ন সংস্থাও তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে সম্মাননা দিয়েছে।
সময় পাল্টেছে, চারপাশ বদলেছে—তবে বদলায়নি ডা. সুজিতের সেবার মানসিকতা। এই মানুষটি প্রমাণ করেছেন, ভালোবাসা আর সদিচ্ছা থাকলে পৃথিবী বদলানো যায় একাই।