14/07/2025
একদিন একটা কাপড়ের দোকানে গিয়েছিলাম কিছু দরকারে, তো এক দম্পতি তাদের বাচ্চা নিয়ে এসেছে দোকানে। দোকানদার যখন উনাদের কাপড় দেখাচ্ছে তখন তাদের চার-পাঁচ বছর বয়সের বাচ্চাটা সেই কাপড়গুলোর উপর উঠে লাফাতে শুরু করলো।
মুহূর্তের ভিতর কাপড়ের ভাজ নষ্ট হয়ে একদম বিচ্ছিরি অবস্থা হয়ে গেলো।
দোকানদার চোখ মুখ কপালে তুলে ফেলছে কিন্তু কিছু বলতে পারতেছে না কারন কাস্টমার লক্ষী।
বাচ্চা একটু পর দোকানে থাকা একটা টবে লাগানো গাছের উপর আক্রমন চালালো। একটা ছাগল গাছের যে পরিমান ক্ষতি করতে পারে তার চেয়ে একটু বেশি করে গাছের সানডে মানডে ক্লোজ করে দিলো।
দোকানদার চোখমুখ লাল করে চুপচাপ দাড়িয়ে আছে কারন কাস্টমার লক্ষী৷ আর বাচ্চার বাপ মা নির্বিকার ভঙ্গিতে তাদের কাজ করতেছে, যেনো এসব কিছুই তারা দেখতেছে না।
সব শেষে এই পিচ্চি দোকানদারের দাড়ি টানাটানি শুরু করলো। বাচ্চার খায়েশ সে ঐ দোকানদার আংকেলের দাড়ি ধরে ঝুলু খাবে।
এতোক্ষণ পর দোকানদারের প্রচন্ড বিরক্ত ও অসহায় মুখভঙ্গি দেখে বাচ্চার বাবার বাচ্চাকে নিষেধ করার বোধ হলো। বাচ্চার বাবা অতি আহ্লাদী ভঙ্গিতে বাচ্চাকে ছেলেধরার ভয় দেখায়ে থামানোর চেষ্টা করলেন কিছুক্ষন।
কিন্তু এই বাচ্চা তো ছেলে ধরা দেখে ভয় পাওয়ার না, উল্টা ছেলে ধরার নিজের জীবনের উপর মায়া থাকলে এই বাচ্চারে ধরার চিন্তা করবে না।
তাই বাচ্চা তার বাপের কথার তোয়াক্কা না করে সর্বশক্তি নিয়ে দোকানদারের দাড়ির উপর ঝাপিয়ে পড়ে।
পাঁচ বছরের বাচ্চা হলেও শরীর স্বাস্থ্যে মিনি সাইজের এই হাতির হাত থেকে দোকানদারকে রক্ষা করতে আমিসহ দোকানদারের দুইজন কর্মচারিকে হাত লাগাতে হলো।
সব শেষে বাচ্চার মা পরিস্থিতি হালকা করতে একটা হাসি দিয়ে বললো -
“আমার বাবুটা একটু এই রকমই বড্ড দুষ্টামি করে, কি যে করি?”
বাচ্চার মায়ের এমন প্রতিক্রিয়া দেখে এতোক্ষণ চুপ থাকা দোকানদার তার "কাস্টমার লক্ষী" এই নীতি বাতিল করে বললেন -
“সরিষার তেল মাখানো কাঁচাকন্চি দিয়ে জ্বীন ঝারা মাইর দরকার, শুধু আপনার বাবুর না, সাথে বাবুর বাপ আর আপনারেও, বাবুর দাদা দাদি নানা নানি থাকলে তাদেরও দিতে হবে।”
মহিলা আর তার বর মুখ বাঁকা করে পাশের দোকানে যাচ্ছিলো, তখন পাশের দোকানদার বলে উঠলো,
“আপা আমরা দোকান বন্ধ করবো এখন অন্য দিন আসেন।”
©
কুন্তল হোসেন