Golpo Kotha-গল্প কথা

  • Home
  • Golpo Kotha-গল্প কথা

Golpo Kotha-গল্প কথা গল্প কথা

19/05/2025

⭐ কুরুলুস ওসমান ভলিউম ১৯২ এর ২য় ট্রেইলার বাংলা সাবটাইটেল

08/05/2025

কিছু সময় আগে পাকিস্তান বিশাল সংখ্যক Combat ড্রোন ভারতের উদ্দেশ্যে Dispatched করেছে!

আত্মার_অন্তরালে লেখিকা_প্রীতি_আক্তার_পিহু পর্ব :১৬ইউভানের নিশ্বাস দ্রুত ওঠানামা করছে,চোখ দুটো জ্বলছে রাগে। এক মুহূর্তও দ...
07/05/2025

আত্মার_অন্তরালে
লেখিকা_প্রীতি_আক্তার_পিহু
পর্ব :১৬

ইউভানের নিশ্বাস দ্রুত ওঠানামা করছে,চোখ দুটো জ্বলছে রাগে। এক মুহূর্তও দেরি না করে সে রিসোর্টের বাইরে বেরিয়ে আসে। চারদিক শুনশান, সবাই রিসোর্টের ভেতর পার্টিতে মত্ত। শুধু কয়েকটা গাড়ি পার্ক করা আছে। ইউভান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চারপাশ পর্যবেক্ষণ করে। সে এক মুহূর্তও দেরি না করে গাড়িতে উঠে স্টিয়ারিং শক্ত করে চেপে ধরে। গাড়ির চলতে শুরু করে,প্রচণ্ড বেগে গাড়ি ছুটতে থাকে রিসোর্ট এর মেইন গেটের দিকে। ইউভান একবারও গতি কমায় না। গাড়ির সামনের বাম্পারে প্রচণ্ড ধাক্কা খেয়ে গেটটা বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে রাস্তায়।ইউভান একপলক রিয়ার ভিউ মিররে একবার রিসোর্টের দিকে তাকায়।মুহূর্তেই তার চোখের সামনে কনফারেন্স রুমে আনায়ার দিকে সেই বাজে দৃষ্টিতে তাকানো মুখগুলো ভেসে ওঠে।ইউভান বাঁকা হেসে পকেট থেকে ছোট্ট রিমোটটা বের করে লাল বোতামটায় চাপ দেয়।

ধববববববব!প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে আকাশ ফেটে পড়ে। পুরো রিসোর্ট মুহূর্তেই আগুনের লেলিহান শিখায় ঘিরে ফেলে।পুরো রিসোর্ট জুড়ে দাউ দাউ করে জ্বলছে। চারদিকে মানুষের চিৎকার, আতঙ্কে দৌড়াদৌড়ি। রিসোর্টের প্রতিটি কোন ঘন ধোঁয়ার চাদরে ঢেকে যায়। গাড়িগুলো একের পর এক বিস্ফোরিত হতে থাকে।ইউভান গাড়ি চালাতে চালাতে আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখল সেই বিভীষিকাময় দৃশ্য। সঙ্গে সঙ্গে ইউভানের অধর খানিকটা প্রসারিত হলো। কারণ ওই কনফারেন্স রুমে একটি বোম ফিট করা ছিল যেটা আর কেউ না বরং ইউভান করেছে। ইউভান একহাতে স্টিয়ারিং ধরে, আরেক হাতে পকেট থেকে একটা হুইস্কির বোতল বের করে। হুইস্কির বোতলের ঢাকনাটা খুলে গলা উঁচু করে ঢক ঢক করে পুরো বোতলটা শেষ করে ফেলে সে।তারপর খালি বোতলটা সে জানালার বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দিল।এরপর ঠান্ডা শীতল কণ্ঠে আওড়ালো,
"তোর জন্য হাজারো সাম্রাজ্য এভাবে আগুনে পুড়িয়ে ফেলতে পারি আমি সুইটি।জাস্ট ফর ইউ!বিকজ ইউ আর মাইন অনলি মাইন!"

সেই মুহূর্তে আনায়ার কথা স্মরণে আসতে ইউভানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। মুহূর্তে সে গাড়ির স্পিড কয়েক গুণ তীব্র করে ফোনে কাউকে এসএমএস দিল।

_

ঘুটঘুটে অন্ধকারে পুরোনো গোডাউনের মেঝেতে নিথর পড়ে আছে আনায়া। তার চুলগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে মেঝেতে। ফিকে আলোয় আনায়ার মুখটা আবছা দেখা যাচ্ছে সজ্ঞানে নেই সে। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক মুখোশধারী ব্যক্তি। ব্যক্তিটি আনায়ার দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। থমথমে পরিবেশের মধ্যে ভারী শ্বাসের শব্দ ছাড়া আর কিছু শোনা যাচ্ছে না।ব্যক্তিটি ধীরে ধীরে আনায়ার দিকে এগিয়ে আসল। তারপর এক হাত দিয়ে নিজের মুখোশটি খুলে ফেলে।মুহূর্তেই এক ঝাঁক চুল মাজা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।ব্যক্তিটির চেহারাটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে সে আর কেউ না বরং ক্লারা।ক্লারায় আনায়াকে কিডন্যাপ করে নিয়ে এসেছে এখানে তার লক্ষ্য পূরণের জন্য।ক্লারা হালকা হেসে মাথা কাত করে আনায়ার দিকে ঝুঁকে আসে। তার ঠোঁটের কোণে পাপিষ্ঠ হাসি খেলে যায়। হঠাৎ করেই সে ঠান্ডা বিদ্রুপপূর্ণ কণ্ঠে বলে উঠল,
"এবার তোমাকে কে বাঁচাতে আসবে জানো? ড্রেভেন হান্টার!"

পরমুহূর্তে এক ঝটকায় পেছনে সরে এসে উচ্চস্বরে হেসে উঠল সে।আনায়ার পানে তাকিয়ে পুনরায় অসভ্য ভঙ্গিতে বলতে থাকলো,
"কোথায় তোমার সেই পাগলা প্রেমিক হুম? এখনও তো এল না? সো স্যাড আনায়া।"

আনায়া নিঃশব্দে চোখ বন্ধ করে আছে। ক্লারা আবার নিজের হাতের ঘড়ির দিকে তাকায়, ঠোঁটে ব্যঙ্গাত্মক হাসি ফুটিয়ে বলে ওঠে,
"সময় কিন্তু ফুরিয়ে যাচ্ছে ডার্লিং।কোথায় তোমার রোমিও? আরেকটু পরে তো তোমার প্রাণ বাঁচানোরও দরকার থাকবে না।"

সে হাঁটাহাঁটি করে। আচমকা আনায়ার মুখের সামনে বসে ঠোঁটে হাসি নিয়ে বলে,
"ভাবতেই অবাক লাগছে ড্রেভেনের প্রাণ ভোমরা আমার হাতে উফফ।"

ঠিক তখনই এক বিকট শব্দে গোডাউনের বিশাল লোহার দরজা ভেঙে পড়ে। দেয়ালের সাথে এমন জোরে আঘাত লাগে যে পুরো গোডাউন কেঁপে ওঠে। বাতাস ধুলায় ভরে যায়।ক্লারা লাফিয়ে উঠে দাঁড়ায়, বন্দুকটা দু-হাতে শক্ত করে ধরে। চোখ মুখে তার আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।তখনই ভারী বুটের আওয়াজ শুনা গেল।আবছা আলোয় আগুন্তিকের মুখাবয়ব খানিকটা স্পষ্ট হয়।ব্যক্তিটিকে সামনে দেখে ক্লারার ঠোঁটে বিজয়ের ঠান্ডা হাসি ফুটে ওঠে।তখন সে ঠোঁটের কোণে বীভৎস হাসি নিয়ে বিষমাখা কণ্ঠে বলল,
"ওয়েলকাম ড্রেভেন হান্টার!"

ড্রেভেনের পিছু পিছু রিচার্ড ও আসলো। সে ক্লারাকে দেখে এখানে কিছুটা অবাক হলো।ড্রেভেন মাথা কাত করে আনায়ার মুখপানে একবার তাকালো।মুহূর্তেই ড্রেভেনের অভ্যন্তরীণ আগ্নেয়গিরি জ্বলে উঠল তার দৃষ্টিতে। চোখের পাতা শক্ত করে ক্লারার দিকে কঠোর দৃষ্টিতে তাকাল। ক্লারার অন্তর কেঁপে উঠল সেই অগ্নিদৃষ্টি দেখে কিন্তু বাইরে কিছুই প্রকাশ করল না সে।ড্রেভেন নিঃশব্দে ধীর গতিতে এগিয়ে আসতে থাকল।এই দৃশ্য দেখে ক্লারা আতঙ্কিত হয়ে কাঁপা গলায় তড়িঘড়ি করে বলে,
"ওখানে দাঁড়াও সামনে এগোবে না। এক পা এগোলে আমি ওকে মেরে ফেলবো।"

ড্রেভেন মুহূর্তের জন্য থামল। মাথা একটু নীচু করে আনায়ার মুখপানে তাকায়,মাস্কের আড়ালে তার অভিব্যক্তি স্পষ্ট নাহ।তারপর সরাসরি সামনে ক্লারার পানে তাকিয়ে, সমস্ত প্রতিশোধের আগুন কণ্ঠে ঢেলে হিমশীতল গর্জনে বলে উঠল,
"ওর গায়ে যদি একটুও আঁচ পড়ে। আমি তোর শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত গুনবো।"

ক্লারা উন্মাদের মতো উচ্চস্বরে হেসে উঠল। তার হাসির শব্দ ঘর কাঁপিয়ে তোলে।পুনরায় উগ্র গলায় ক্লারা চিৎকার করে ওঠে,
"ফরমুলা দাও ড্রেভেন।আমি ওকে ছাড়বো নাহ ফর্মুলার না দেওয়া পর্যন্ত।"

ড্রেভেন ঠোঁটের কোণে ব্যঙ্গহাসি ফুটিয়ে দৃষ্টিতে অমোঘ তাচ্ছিল্যে নিয়ে বলল,
"তোর মতো নর্দমার কীটের হাতে ফরমুলা তুলে দেবো?"

ক্লারা আর সহ্য করতে পারে না। তার সারা শরীর ক্রোধে থরথর করে কাঁপে।সে মুহূর্তেই উন্মাদের মতো চিৎকারে ফেটে পড়ল,
"নিজের প্রাণ বাঁচাতে চাইলে ফরমুলা দাও। তুমিও মরবে, এই মেয়েটাকেও নিয়ে মরবে।"

ড্রেভেন কোন কথা তোয়াক্কা না করে ধীরে ধীরে দুই কাঁধ নামিয়ে এগিয়ে আসতে থাকল।এহেন দৃশ্য দেখে
ক্লারার আত্মবিশ্বাস মুহূর্তে টাল খেয়ে গেল। কাঁপতে থাকা আঙুলে বন্দুকের ট্রিগারে চাপ দিতে দিতে দাঁতে দাঁত চেপে গর্জে উঠে বলল,
"সামনে এগোবে নাহ, নয়তো আমি এখনই ওর মাথায় গুলি করবো।"

কিন্তু ড্রেভেন থামলো না।চোখের পলক না ফেলেই এগিয়ে আসতে থাকল।তার চোখ দুটো জ্বলছে আগুনের মতো।ক্লারার দেরি না করে আঙুল চাপ দিল ট্রিগারে।কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তে ড্রেভেন বিদ্যুতের গতিতে কোমরের পাশ থেকে পিস্তল বের করে শুট করল।বিকট আওয়াজে গুলি ছুটে ক্লারার কাঁধ বরাবর বিঁধল। সঙ্গে সঙ্গে ক্লারা ছিটকে পড়ে যায় মাটিতে। তার বন্দুকের গুলি সামান্য সরে গিয়ে আনায়ার পাশ ঘেঁষে বেরিয়ে যায়,তবে আনায়ার গায়ে লাগেনি।ড্রেভেন চ জাতীয় শব্দ করল ঠোঁট দিয়ে।রিচার্ড ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সবকিছু দেখতে থাকলো।এখন মুখ দিয়ে কোনো শব্দ করা অর্থাৎ মৃত্যু। ক্লারা কাতরাতে কাতরাতে উঠে বসতে চাইল, কিন্তু ব্যথায় গুঙিয়ে ওঠে।ড্রেভেন এবার আনায়ার দিকে এগিয়ে আসতে যাবে, ঠিক সেই মুহূর্তে ক্লারা ড্রেভেনের পা শক্ত করে চেপে ধরে।ড্রেভেনের চাহনি তৎক্ষণাৎ ক্লারার দিকে পড়ে। ক্লারা ব্যথায় কুকিয়ে ওঠে বলল,
"ভেবো না ফরমুলা ছাড়া যেতে দেবো তোমাকে আজকে আনায়ার কাছে।"

ড্রেভেন ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসি টেনে শুধালো,
"ফরমুলা তো দূরের কথা তোকে আজকে জিন্দা রাখবো কিনা সন্দেহ।"

ক্লারা দেরি করে না পাশে পড়ে থাকা লোহার রডটি হাতে তুলে নেয়। ক্লারা সেই রডটা ভীষণ বেগে ড্রেভেনের মাথার দিকে ছুড়ে মারে। ড্রেভেন সামান্য নীচু হয়ে বাঁচে, রডটা পিছনের কাঁচের জানালা ভেঙে দেয়।ড্রেভেন এবার ক্লারার দিকে লাফিয়ে পড়ল, এক হাতে ওর গলা চেপে ধরে দেয়ালে ঠেলে দেয়।মুহূর্তেই ক্লারার চোখ কোটর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। কিন্তু ঠোঁটে তবুও বিকৃত হাসি নিয়ে বলল,
"আমাকে মেরে ফেললে ও পার পাবি নাহ তুই।কারণ K.K আবার নতুন কাউকে পাঠাবে ফরমুলা নেওয়ার জন্য। কয়জন কে মারবি তুই হ্যাঁ?"

ড্রেভেন চেপে রাখা ক্রোধে বলল,
"আফসোস K.K এর ইচ্ছা অপূর্ণ রয়ে যাবে।"

বলেই ক্লারাকে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।ক্লারা ছিটকে পড়ে আরেকবার। ব্যথায় কাঁপতে কাঁপতে উঠে বসার চেষ্টা করে, কিন্তু এবার আর পেরে ওঠে না।ড্রেভেন সেটা দেখে ঠান্ডা গলায় বলল
"যেখানে পড়ে আছিস, ওখানেই পচে মর।"

বলেই সে এবার আনায়ার দিকে এগিয়ে আসে কিন্তু হঠাৎ ধপ করে একটা গ্যাস লাইট ছিটকে পড়ে মাটিতে আর ফচ করে আগুন লেগে যায়।মুহূর্তে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে আগুন।ড্রেভেন দুই কদম পিছিয়ে আসে, চোখ রক্তবর্ণ হয়ে ওঠে তার ধোঁয়ার ভেতর।আগুন গোলাকৃতি আকারে ছড়িয়ে পড়ল আনায়াকে ঘিরে।হঠাৎ নিস্তব্ধতার মাঝে ভয়ংকর বাঁশির সুর বাতাসে ভেসে এলো। গা ছমছমে ক্রিমিনাল সং-এর ভয়ংকর মেলোডি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে লাগল।ড্রেভেন সতর্ক চোখে চারপাশ দেখতে শুরু করে।হঠাৎ ধোঁয়ার ভেতর ধীর পায়ে এগিয়ে এলো এক ছায়ামূর্তি।আগুনের ঝলসানো আলোছায়ার আবছা ভেতর দিয়ে ছায়ামূর্তির অবয়ব স্পষ্ট হতে লাগল।ড্রেভেনের তীক্ষ্ণ চোখ সেদিকেই আটকে গেল।বাঁশির সুর হঠাৎ করেই থেমে গেল।তারপরই শোনা গেল ঠান্ডা, গম্ভীর পুরুষলী কণ্ঠ,
"ডোন্ট ইউ ডেয়ার টাচ হার।সি ইজ মাইন! "

ড্রেভেন মুখোশের আড়ালে ঠোঁট বেঁকিয়ে বিদ্রুপাত্মক হাসি দিলো।ঠিক তখনই আগুনের ছড়িয়ে পড়া লাল আভায় অপর পাশে আবির্ভূত হলো ইউভান।একপাশে ড্রেভেন, অন্যপাশে ইউভান।মাঝখানে অগ্নিপথের কেন্দ্রে অচেতন হয়ে পরে আছে আনায়া।ইউভানকে দেখে ক্লারা কিছুটা অবাক হয়।ইউভানকে সে এখানে মোটেও আশা করিনি। ইউভান সরু দৃষ্টিতে একবার তাকালো ক্লারার পানে।মুহূর্তে ক্লারা ভয়ে আরও গুটিয়ে গেল।ইউভানের গলার নিচে স্পষ্ট উঁচু-নিচু হচ্ছে অ্যাডাম'স অ্যাপেল প্রবল রাগে দ্রুত ওঠানামা করছে।গলার শিরাগুলো চওড়া হয়ে উঠেছে।তৎক্ষণ ইউভান ড্রেভেনের পানে পাথরের মতো কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে, দাঁত চেপে কড়া কণ্ঠস্বরে বলল,
"সাহসের তারিফ করতে হয় তোমার।এত সাহস কীভাবে এলো?এত সহজে আমি আনুকে স্পর্শ করতে দিব তোমায়?ওকে ছোঁয়ার কথা স্বপ্নেও ভেবো না। আই ডোন্ট গিভ দ্যাট রাইটস।"

মুহূর্তেই ড্রেভেন মুখোশপর আড়ালে কটাক্ষভরা হাসি দিল।তারপর চোখের কোণে একটা অবজ্ঞার ছায়া টেনে ছায়াচ্ছন্ন কণ্ঠে জবাব দিল,
"ওহ তাই নাকি? কে তোমাকে সেই অধিকার দিল মিস্টার ইউভান?"

ইউভান অধর প্রসারিত করে হাসলো।পরমুহূর্তে অমোঘ দৃষ্টিপাত করে, বিষাক্ত মাধুর্যে ভেজা কণ্ঠে বলে উঠলো,
"কেউ দেয়নি, আমি নিয়েছি রক্ত দিয়ে লিখে এবং ভাগ্য দিয়ে স্বাক্ষর করে। যেটা আমার সেটা দাবি করতে কাগজ-কলমের দরকার পড়ে না।"

রিচার্ড ভীত চোখে আরও একটু সরে দাঁড়াল।তার বোধগম্য হচ্ছে না, ইউভান এখানে কেন এলো?তবুও নিশ্চুপ থেকে দুই পক্ষের ঠান্ডা লড়াই দেখতে থাকলো সে।তখনই ড্রেভেন চ জাতীয় শব্দ করলো।চোখ সামান্য সংকুচিত করে ঠান্ডা তিরস্কারের ভঙ্গিতে বিষ মাখা কণ্ঠে উচ্চারিত করল,
"প্রমাণ ছাড়া মালিকানা? আমার কাছে সেটা খুব ঠুনকো মনে হচ্ছে ইউভান। তুমি মনে করো আনায়া চিরকাল তোমার শিকলে বাঁধা থাকবে?"

এই কথা শুনে ইউভানের চোখ এক মুহূর্তের জন্য আনায়ার উপর পৌঁছালো।আনায়ার নিথর দেহের পানে তাকিয়ে বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল তার।ইউভান আনায়া দিকে নিরুত্তাপ দৃষ্টি তাকিয়ে রইল।মুহূর্তেই তার ঠোঁট জুড়ে ঠান্ডা নির্মম হাসি ফুটে উঠল।সে আনায়ার উদ্দেশ্য হুইস্কির মতো গড়ানো কণ্ঠে শুধালো,
"সে শিকলে বাঁধা নেই। সহস্র নক্ষত্রের ভিড়ে সে নিজে থেকেই আমাকে বেছে নিয়েছে।"

পলকের মধ্যে আবার ইউভানের রক্তিম দৃষ্টি ড্রেভেনের ওপর পড়ল।সে বিদ্ধ করা কণ্ঠে পুনরায় বলল,
"ছিনিয়ে নিতে চাও ওকে আমার কাছ থেকে? এত সহজ সিংহের খাঁচা থেকে শিকারিকে নেওয়া?ছেড়ে দিব তোমাকে?

ড্রেভেন মাথা কাত করে উত্তর দিল,
"আমাকে ভয় দেখাচ্ছ হ্যাঁ? তোমার ওই সস্তা কথাই এই ড্রেভেন ভয় পাবে।সো ফানি ম্যান!ছিনিয়ে নিতে আমিও ভালো করেই জানি ইউ নো?"

সঙ্গে সঙ্গে ইউভান হাত উঁচু করে হিশহিশয়ে বলে উঠল,
"নোপপপ!আই সোয়ার ট্রাট মি আফসোস করার সুযোগটাও পাবে না তুমি।"

ড্রেভেন বাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে, বিদ্রুপ করে প্রতিউত্তর করল,
"আর যদি আমি ছুঁয়ে দি?"

ইউভান এবার উচ্চস্বরে উম্মাদের ন্যায় হাসতে থাকলো। ক্লারার রক্তাক্ত দেহটি কেঁপে উঠল এই অস্বাভাবিক আওয়াজে।ইউভান হাসি থামিয়ে হুমকিমাখা গলায় বলল,
"তাহলে প্রস্তুত থেকো, যেই হাতে ছুঁয়েছো সেই হাত হারানোর জন্য।"

ড্রেভেন এবার আলতো করে হাসলো। ঠোঁটের কোণে আগুনের মতো ঝলসানো দৃঢ়তা নিয়ে বলল,
"আমি মুখে বলি না কাজ করে দেখাই।"

এই কথা বলেই সে আনায়ার দিকটায় কয়েক কদম এগিয়ে যেতে লাগল। হঠাৎ ইউভান আরেকটু নড়ে উঠল।তার ঘাড়ের পেশি শক্ত হয়ে চোখের মণি নীল রঙে চকচক করতে লাগল। ঠান্ডা জমাট কণ্ঠে সে বলল,
" ইউ নো ওয়াট ড্রেভেন?আমার ভেতরকার সত্তাটা ঠিক এইমাত্র আমাকে ফিসফিস করে বলল,"মে আই কাম আউট?"

এই কথা শোনার পর ড্রেভেন হঠাৎ থেমে গেল। তার পা জড়িয়ে গেল মাটির সঙ্গে। কিছুক্ষণ স্তব্ধ দাঁড়িয়ে রইল ড্রেভেন। ক্লারা আর রিচার্ড কিছুটা হতভম্ব হয়ে গেল। এমন করে ড্রেভেনকে থেমে যেতে তারা কখনো দেখেনি। ক্লারা চোখে বিস্ময়।সে বুঝতেই পারছে না ইউভানের কথায় ড্রেভেন কেন থেমে গেল?আনায়াকে ড্রেভেন ইউভানের কাছে দিয়ে দিল?ক্লারার কিছুটাই বিশ্বাস হচ্ছে না সে যতদূর জানতো ড্রেভেনের মতো হিংস্র মানুষ আনায়াকে কখনো ছাড়বেনা।ক্লারা এতটা আহত যে সে উঠে বসতেও পারছে না, শুধু নীরবে দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। তখনই পুনরায় ইউভান ঠোঁটে বাঁকা হাসি নিয়ে ড্রেভেনের উদ্দেশ্যে বলল,
"আর ইউ রেডি নাও টু হ্যান্ডেল মাই ডার্কনেস?"

মুহূর্তেই ড্রেভেনের রক্তচক্ষু দৃষ্টি ইউভানের উপর গিয়ে বিধঁলো। সে কয়েক সেকেন্ড নিশ্চুপ থেকে, হাত শক্ত করে মুঠি বানিয়ে কয়েক কদম পিছু হটল।এহেন দৃশ্য দেখে ইউভানের অধর জুড়ে রক্তমাখা হাসি খেলে গেল।তারপর তার দৃষ্টি আটকালো আনায়ার পানে।আগুনের চারপাশে মাটি ফেটে কিছু পাথর বেরিয়ে আছে। ইউভান দেরি না করে ঠিক সেগুলোর ওপর পা ফেলে ধীরে ধীরে আগুনের গোলের ভেতরে পা রাখল।আনায়া নিস্পন্দ হয়ে শুয়ে আছে।তার চুলগুলো চারপাশে ছড়িয়ে আছে,আগুনের তাপে মুখ লাল হয়ে আছে। ইউভান ধীরে ধীরে আনায়ার কাছে এসে হাঁটু গেড়ে বসল।এক হাতে আনায়ার ঘাড়ের নিচে, আরেক হাত পিঠের নিচে রেখে পরম যত্নে কোলে তুলে নিল।
সঙ্গে সঙ্গে আনায়ার মাথা ইউভানের বুকে এসে পড়ল নিঃশব্দে।ইউভান আনায়ার মুখে হাত বুলিয়ে চুলগুলো কানে গুঁজে দিয়ে অস্থির কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল,
"আই মিস ইউ সুইটি। দেখ আমি চলে এসেছি তোকে সাথে করে নিয়ে যেতে।প্রমিস আর একা ছাড়বো নাহ তোকে কখনোই নাহ।"

বলেই বুকজুড়ে আলিঙ্গন করল শক্ত করে।একটুক্ষণ আনায়াকে বুকের সঙ্গে চেপে ধরল ইউভান।তারপর ধীরে ধীরে আনায়াকে কোলে তুলে নিল।আনায়ার মাথাটা ইউভানের কাঁধে এলিয়ে পড়লো।ইউভান আনায়কে নিয়ে বেড়ি এলো আগুনের ভেতর থেকে।পেছনে ড্রেভেন আশ্চর্যজনকভাবে নিশ্চুপ হয়ে সবকিছু তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখছে।তবে এই নিশ্চুপতার কারণ সম্পূর্ণ অজানা।ইউভান সামনে এগতো এগোতে ও থামল,একবার পেছন ফিরে ক্লারার পানে অদৃশ্য বিষ ঢেলে দেওয়া দৃষ্টিতে তাকালো।মুহূর্তেই ক্লারা ভয়ে আহত শরীর নিয়ে কিছুটা নড়েচড়ে উঠলো।পরমুহূর্তে ইউভান বজ্রনির্ঘোষ কণ্ঠে বলল,
“আর ইউ লাকি আমি কোনো মেয়েকে ছুঁই না। তা না হলে তোমার অবস্থা খুব খারাপ হতো।তবে ভেবো নাহ ছাড়া পেয়ে যাবে।

এক পলকে ইউভান ড্রেভেনের দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোণে এক নির্মম বাঁকা হাসি টেনে বলল,
"কিন্তু আমি না মারলেও তোমার সমাধি খোঁড়ার জন্য কেউ একজন ঠিকই প্রস্তুত আছে।সে ফুলের কাটা উপরে ফেলবে আর আমি ফুলটা তুলে নিব।"

ড্রেভেন এবার উচ্চস্বরে হাসলো।হাসতে হাসতে একপর্যায়ে বিধ্বস্ত কণ্ঠে বলে উঠলো,
"তুমি কী ভেবেছো আমি ফুলটা দিয়ে দিয়েছি?এত সহজে?নো নো নো নেভার ম্যান!আমি ছাড় দিয়েছি ছেড়ে নয়।"

ইউভান অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিঃশব্দে হাসলো।এরপর আনায়াকে কয়েক গুন শক্ত করে আঁকড়ে ধরে রুদ্ধ কণ্ঠে শুধালো,
"তুমি শুধু ফাইট করে যাবে বাট আফসোস শেষের দলিলের সিলমোহরের কাগজে একমাত্র আমার নামই লেখা থাকবে।ইতিহাসে বুকে তুমি নাম মাত্র যোদ্ধা আর আমি রাজা।ইউ নো রানি সর্বদা রাজারই হয়।সো আমার রাজ্য এবং আমার রানি ধারে কাছেও তোমার স্থান নেই।নেক্সট টাইম বি কেয়ারফুল!"

ড্রেভেন কোনো প্রতিউত্তর করল নাহ।চোখ নামিয়ে আনায়ার দিকে তাকিয়ে রইল।ইউভান কোন বাক্য ব্যয় না করে পেছনদিকে ফিরে আনায়াকে নিয়ে বেড়িয়ে গেল।ড্রেভেনে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সেদিকে স্থির হয়ে রইল। রিচার্ড সম্পন্ন হতভম্ব সেটাই বুঝতে পারছে না ড্রেভেনের মতো মানুষ কেন ইউভানকে ছেড়ে দিল।কিছুক্ষণ বাদ ড্রেভেন ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াল এইবার তার দৃষ্টি সোজা ক্লারার উপর।ক্লারা মুহূর্তেই গুটিয়ে গেল। ঠোঁট কাঁপতে লাগল তার, হাতের তালু ঘামে ভিজে উঠল।ড্রেভেন মুখোশের আড়ালে দানবিক হাসি দিল।তারপর আড়চোখে রিচার্ডের দিকে তাকিয়ে বলল,
"এখন এখান থেকে বেরিয়ে যাও।এখন এমন কিছু হবে,যেটা তুমি সহ্য করতে পারবে না।"

রিচার্ড কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু ড্রেভেন তার দিকে হাত বাড়িয়ে থামিয়ে দিল।
"আমি রিপিট করতে পছন্দ করি না।"

রিচার্ড ক্লারার দিকে একবার অসহায়ভাবে তাকিয়ে চুপচাপ পেছন ফিরে বেড়িয়ে গেল।ক্লারা এবার সম্পূর্ণ একা এবং অসহায়। ড্রেভেন এবার লম্বা রড নীচ থেকে হাতে তুলে নিল।এহে দৃশ্য দেখে ক্লারা কেঁপে উঠল।ড্রেভেন ধীরে ধীরে ক্লারার দিকে এগিয়ে এলো।তৎক্ষণ ক্লারা পেছনে সরতে সরতে বলে,
"আমাকে মারবেন না দয়া করে। আমাকে ছেড়ে দাও আমি আর কখনো আসব না।এবারের মত ক্ষমা করে দাও প্লিজ।"

ড্রেভেন থামল না। মুখোশের আড়ালে সে ঠান্ডা শীতল কণ্ঠে বলল,
"এটা আগে মনে রাখা উচিত ছিল তোর।"

বলেই লোহার রডটা সোজা ঢুকিয়ে দিল ড্রেভেন ক্লারার পেট বরাবর।পেট চিরে ধমনি ছিঁড়ে রক্ত শিষ দিয়ে বেরিয়ে এলো।ক্লারা জোড়ে আর্তনাদ করে উঠলো।সেই আর তোমাদের আওয়াজে ড্রেভেন পৈশাচিক আনন্দ পেল। ড্রেভেন রডটা বের করল সঙ্গে সঙ্গে রক্ত ছিটকে তার গায়ে আছড়ে পরল।ক্লারার মুখ ফাঁক হয়ে গেল তার গলা দিয়ে শব্দ বের হচ্ছে না।দুই হাত পেতে রেখে নিচে ছটফট করছে সে। ড্রেভেন কোনো রকম থামল না। এক লম্বা শ্বাস নিয়ে সে রডটি আবার গরম করে এনে ক্লারার পিঠে চেপে ধরল। মুহূর্তে পিঠের চামড়া ফেটে গলগল করে মাংস ঝরে পড়ল, পাঁজরের হাড় উন্মুক্ত হয়ে গেল। ক্লারা তার শরীরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে টানতে টানতে কাঁদতে শুরু করল,
"ছেড়ে দাও! দয়া করে ছেড়ে দাও আমাকে। আমি জানি আমি ভুল করেছি, আমাকে ক্ষমা করে দাও। K.K চৌধুরি ম্যানসনে একটি বিড়াল রেখেছে যার মধ্যে ক্যামেরা......"

কথা শেষ করার পূর্বেই ড্রেভেন হঠাৎ করে ক্লারার পেটে গরম রড ঢুকিয়ে পাকস্থলীর পাশ দিয়ে ঘোরাতে থাকল।ক্লারা চোখ কোটা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম।ক্লারার ইচ্ছে করছে একবারে মরে যেতে কিন্তু সেটা ড্রেভেন হতে দিবে নাহ।ড্রেভেন আবার রডটি টেনে বের করতেই লাল গরম রক্ত ছিটকে দেয়ালে ছড়িয়ে পড়ল।ক্লারা গলাকাটার মুরগির মতো ছটফট করতে থাকলো।ড্রেভেনের চোখে কোনো মায়া নাই, সে কিছুতেই তার চোখে কোন সহানুভূতি দেখাল না।ড্রেভেন এবার গরম রডটি ক্লারা চোখের দিকে ঠেলে দিলো। মুহূর্তেই মাংস খসে খসে পড়ে চোখের কোটা বেরিয়ে আসে। চোখের মণি মুহূর্তে বিস্ফোরিত হয়ে কোটর থেকে মাটতে গড়িয়ে পড়ল।

ড্রেভেন রডটির উপর হাতের চাপ প্রয়োগ করলো ফলস্বরপ রডটি ক্লারার চোখ ফুঁড়ে ভেতরে প্রবেশ করে মাথার ভেতরের ঘিলু পর্যন্ত পৌঁছাল। ঘিলুর নরম স্তরগুলো রডের তাপে জ্বলে উঠল।চোখের পাশ দিয়ে সাদা মাংস আর রক্ত একসাথে গড়িয়ে পরল মাটিতে।ড্রেভেন ইচ্ছাকৃতভাবে রডটা মাথার ভেতর একটু এদিক ওদিক ঘুরাতে লাগলো ফলে মগজের ভেজা নরম কোষগুলো গলে গলে বেরিয়ে এলো বাইরে।ঘন লাল কিছু তরল ধীরে ধীরে গড়িয়ে পড়ল ক্লারার কপাল বেয়ে।তার শরীরটা ঢলে পড়ল সামনে।ড্রেভেন এবার থামল ক্লারার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে ফিসফিস করে বলল,
"তোর শেষ ইচ্ছা কি বল পূরণ করতে চাই আমি?"

ক্লারার এক চোখ ফেটে ঘা আর জমে থাকা পুঁজ বপন হচ্ছে। আরেকটা চোখ আধা খোলা হয়ে আছে।সেই চোখ দিয়েই সে ড্রেভেনকে পানে ঘোলাটে দৃষ্টিতে তাকায়। তার মাথা আর কাজ করছে না। চিন্তা জট পাকিয়ে যাচ্ছে। যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠে তার শরীর।তবুও গলার ভেতর থেকে নিঃস্ব কষ্টের শব্দ বেরুলো,
"ক কে তুমি?"

ড্রেভেন হেসে ওঠে। সেই হাসি বজ্রের মতো বিকট যা ক্লারার আত্মা কাঁপিয়ে তোলে। ড্রেভেন তারপর নীচু হয়ে হিশহিশিয়ে বলল,
"তোর মৃত্যু! বাই দ্য ওয়ে তোর শেষটা তাহলে পূরণ করেই নেই। সত্যটা জানার পর না হয় মরিস।"

বলেই ড্রেভেন উঠে দাঁড়ালো। ধীরে ধীরে এক হাত দিয়ে মাস্কটা খুলে ফেলে মুখ থেকে।মাস্কের আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে একজোড়া চোখ নীল রত্নের মতো।ক্লারার এক চোখ পুরোপুরি নিভে এসেছে, তবু বাকি চোখে ধরা পড়ে সেই নীল দৃষ্টি।ক্লারা বিস্ময় ভরা দৃষ্টিতে দেখল।তারপরও শরীর থরথর করে কাঁপছে।মৃত্যু তার খুব কাছে বুঝতে পারছে সে। তবুও ঠোঁট ফাঁক করে ফিসফিস করে বলে উঠলো,
"ত তুমি তাহলে ও কে......"

শব্দগুলো অসম্পূর্ণ রয়ে গেল। ক্লারা হাতগুলো দিয়ে মাটি আঁকড়ে ধরে। ড্রেভেন এবার শেষ আঘাতটা হানে। ড্রেভেন আগুনে লালচে হয়ে ওঠা রডটি ক্লারার যৌনা* বরাবর ধরে মুহূর্তের মধ্যে ঠেলে ঢুকিয়ে দিলো ভিতরে। ছ্যাঁকা খাওয়া চামড়ার গন্ধে ঘর ভরে উঠল। ধাতব রডটা ফুসফুস ছিঁড়ে, পাকস্থলী বিদীর্ণ করে, হাড় ভেঙে মাথা পর্যন্ত পৌঁছাল।ক্লারা শেষবারের মতো জোরে ছিন্নচিৎকার দিয়ে উঠলো।মাথার খুলি চিরে রডের ডগাটা বেরিয়ে এলো।ক্লারার শরীরটা কেঁপে ওঠে,তারপর স্থির হয়ে পড়ে যায় মাটিতে।চোখে চিরতরের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল।ড্রেভেন রডটি বের নাহ করে ওভাবেই রেখে দিলো।

---

ইউভানের গাড়ি চৌধুরি ম্যানশনের গেট পার হয়ে ভেতরে ঢুকলো।ইউভান বাড়ির সামনে গাড়িটি থামালো। তারপর ধীরে ধীরে দরজা খুলে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায়।এগিয়ে এসে গাড়ির অন্য পাশ ঘুরে আনায়ার দরজা খুললো।আস্তে আস্তে সিটের দিকে ঝুঁকে আনায়ার চুল সরিয়ে দিল মুখ থেকে।আলতো হাতে আনায়াকে কোলে তুলে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল ইউভান।ইউভান ধীরে ধীরে পা ফেলতে ফেলতে ম্যানশনের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে থাকলো।আনায়ার রুমের দরজার সামনে এসে একহাতে হাতল চেপে দরজাটি খুললো।রুমটা নরম হলুদ আলোয় আলোকিত।ইউভান বিছানার পাশে এসে হাঁটু গেড়ে বসলো।আস্তে করে আনায়ার শরীর নিচের দিকে নামিয়ে পরম যত্নে বিছানায় শুইয়ে দিলো ইউভান।আবছা হলুদ আলোয় আনায়ার মুখশ্রী আরও কোমল আর স্বপ্নিল লাগছে। এলোমেলো চুলগুলো বালিশের গায়ে ছড়িয়ে পড়েছে, ইউভান কিছুটা ঝুঁকে আলতো হাতে চুলগুলো ঠিক করে দেয়।ইউভান সোজা হয়ে দাঁড়াতেই যাবে তার পূর্বেই আনায়া আচমকা ইউভানের গলা পেঁচিয়ে ধরে।ইউভান সেটা হতভম্ব হয়ে তাকায় কারণ আনায়া সম্পূর্ণ নিস্তেজ।তখনই আনায়া ঘুমিয়ে ঠোঁট উল্টিয়ে বিড়বিড় করে উঠলো,
"ইউভান ভাই!"

ইউভানের নিশ্বাস আটকে আসে অষ্টাদশীর আহ্লাদি কণ্ঠের এই সম্বোধনটায়।বাতাস ও যেন কেমন ভারী হয়ে উঠছে।ইউভান কিছুক্ষণ নির্বিকায় তাকিয়ে থেকে হুইস্কির কণ্ঠে উত্তর দিল,
"হুমমমম। "

আনায়ার ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরছে। সে আধো আধো চোখ খুলে অভিমানী আহ্লাদি কণ্ঠে বলে,
"আপনি আমাকে এত কষ্ট কেন দেন উমমমমম?"

ইউভানের বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠে। সত্যিই সে তার সানসাইনকে বড্ড কষ্ট দিয়ে ফেলেছে। আনায়ার কোমল মুখাবয়বের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে রইল ইউভান। তপ্ত নিশ্বাস ফেলে নিজের চওড়া তালুর ভেতর আলতোভাবে বন্দি করে নেয় আনায়ার মুখের আদলটা।তারপর কোমল কণ্ঠে বলল,
"সত্যি বুঝি আমি আমার সুইটিকে অনেক কষ্ট দিয়েছি?"

আনায়া জোর করে তাকিয়ে থাকতে চেষ্টা করে, কণ্ঠে রুদ্ধ আবেগের কম্পন নিয়ে বলল,
"হুমম! আপনি আর কষ্ট দিবেন না ইউভান ভাই। সত্যি বলছি, আমি আর সহ্য করতে পারবো না। শত আঘাত, শত যন্ত্রণায় আমি কখনো চোখের জল ফেলিনি। কিন্তু আপনি আমায় এমনভাবে ভেঙেছেন, যে আমি অবুঝ শিশুর মতো হাহাকার করে কেঁদেছি। আপনি আমার বড় শখের পুরুষ। যদি কখনও তা বোঝাতে পারতাম আপনাকে।"

ইউভান কোনো শব্দ খুঁজে পায় না। তার চেতনায় যেন ভাষা লুপ্ত হয়ে গেছে। শুধু অপলক তাকিয়ে থাকে আবেগে আচ্ছন্ন আনায়ার মুখপানে। মুহূর্ত পরে তার ঠোঁটে রহস্যময় হাসির রেখা খেলে যায়। দীর্ঘ নিঃশ্বাসে ভেজা কণ্ঠে সে বলল,
"আপনিও আমার তীব্র শখের নারী, ম্যাডাম। আপনার জন্যই আমার প্রতিটি হৃৎস্পন্দন ব্যথিত আর উত্তেজিত হয় সর্বদা। আপনি আমার হৃদয়ের অনির্বচনীয় চাহিদা।আপনি আমার এমন এক টান যা যুক্তি-তর্ককে উপেক্ষা করে আপনার দিকে আকৃষ্ট করে আমাকে। আপনি কি তা অনুভব করতে পারেন ম্যাডাম?"

আনায়া আরেকটু ইউভানের গলা শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।তারপর মাথাটা ইউভানের বুকে এলিয়ে দিয়ে মোলায়েম কণ্ঠে বলল,
"উহহহ তাহলে বলুন আর কষ্ট দিবেন না। না হলে আমি কান্না করব খুব।"

ইউভান এক হাত দিয়ে আনায়াকে আগলে নেয়।সে খুব ভালোমতো বুঝতে পারছে আনায়া ঘুমের মধ্যে অচেতন হয়ে কথাগুলো বলছে। জেগে থাকলে হয়ত এসব বলার সাহস পেত না।ইউভান স্পষ্ট বুঝতে পারল আনায়ার দৃষ্টির কোণে জমে থাকা অব্যক্ত অনুভূতিগুলো।এসব ভেবে ইউভান নিরুত্তাপ হেসে নেশালো কণ্ঠে শুধালো,
"হুশশশশশশ! দিব নাহ আর কষ্ট, প্রমিস।কখনো যেন আর তোর চোখে অশ্রু না দেখি কারণ,
তোর প্রতিটি অশ্রুবিন্দু আমার ভেতরটা উথালপাথাল করে তোলে।বহুপূর্বে প্রথমবার তোর চোখে চোখ রেখে কিছু একটা অনুভব করেছিলাম আমি।

আনায়া এবার মাথা উঁচু করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো ইউভানের পানে।তার ঠোঁট ফাঁক করে ঠান্ডা বিস্ময়ে কণ্ঠে বলল,
"ক কী?"

ইউভান সরাসরি আনায়ার দৃষ্টিতে দৃষ্টি রেখে কুয়াশার মতো রহস্যময় কণ্ঠে উত্তর দিল,
"আমার সর্বনাশ।"

আনায়া পলক ঝাঁপটালো কয়েকবার।ইউভান ঠিকই বুঝতে পারল তার অবুঝ রানীর কিছুই বোধকর্ম হয়নি। জানালার পর্দা গুলো বারবার বাতাসে দুলছে বাতাসের সাথে বেলি ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ ঘরে মই মই করছে।আনায়া মসৃণ মুখয়াবের পানে তাকিয়ে ইউভান হুইস্কির কণ্ঠে বলল,
"কতটা অাদুরে লাগছে তোকে জানিস?"

আনায়া বাচ্চাদের মত মুখ করে মাথা দুদিকে নারায়।তার চোখ প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে।।হঠাৎ কী মনে করে ইউভান দুহাত দিয়ে আনায়ার আদলটি আঁকড়ে ধরে গাঢ় চুমু খেলো কপালে। ধুকপুক করে ওঠে আনায়ার হৃৎস্পন্দন, আঁখিদ্বয় বন্ধ হয়ে যায় সঙ্গে সঙ্গে। ঢুলে পরে ইউভানের প্রশস্ত বুকে। মুচকি হাসে ইউভান ধীরে শুয়ে দেয় বালিশে, কিন্তু আনায়া শক্ত করে কলার চেপে ধরে আছে। কেমন যেন মুঠো ফাঁক করলেই হারিয়ে যাবে ইউভান।ইউভান আনায়ার ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকায়।আর সঙ্গে সঙ্গে তার দৃষ্টি বদলে যায়,
চোখে একরাশ নেশা জমে উঠে। হৃদয়ের স্পন্দন দ্রুত হয়ে উঠছে।চোখের দৃষ্টি আরও গভীর হয়, তখন ইউভান আর নিজের হাত কন্ট্রোল করতে পারে না।

সে আনায়ার একগুচ্ছ চুল হাতে তুলে নিয়ে তার সুবাস নেয়। মুহূর্তেই চুলের সুবাসে ধীরে ধীরে আরো বেশি মাতাল হয়ে ওঠে। ইউভানের পুরো শরীরের মধ্যে কামুক আবেগ তৈরি হতে শুরু করলো।তার মধ্যে আনায়াকে স্পর্শ করা তীব্র আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠল।সে সেই আকাঙ্ক্ষাকে দমিয়ে রাখতে না পেরে আনায়া চুলগুলো সরিয়ে গলার কাছ দিয়ে ধীরে স্লাইড করতে করতে ঠোঁটের কাছে এসে থামে।ঘুমের ঘোরে আনায়ার ঠোঁট কাঁপে সামান্য।ইউভান সামান্য ঢুকলো তার চোখে অদম্য নেশা।আনায়ার গোলাপ রাঙ্গা ঠোঁটে ইউভান আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে থাকলো।আনায়ার বুক ওঠা নামা করছে দ্রুতগতিতে।ইউভান

তার আঙুলগুলো আনায়ার ঠোঁটের দিকে চলে যায়। চামড়ার উপর হাত দিয়ে সে ঠোঁটের স্লাইড করে। গোলাপ রঙের ঠোঁটগুলোর উপর আঙুল চলে যেতে থাকে, আর হৃদয়ের স্পন্দন এক দমে বেড়ে ওঠে।ইউভানের নেশাক্ত তো দৃষ্টি আনায়ার অধরের দিকে।সে শুকনো ঢুক গিলে আনায়ার অধরের দিকে এগিয়ে এল।দুজনের নিশ্বাস এক মুহূর্তের জন্য এক হয়ে গেল। যখনই ইউভান আনায়ার অধর স্পর্শ করতে যাবে তার পূর্বে একটা বিড়াল ছানা লাফ দিয়ে এসে আনায়ার বুকের উপর পড়ে।সাথে সাথে ইউভানের মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।

তার অনুভূতিগুলো খানিকটা বিলীন হয়ে যায়। সে চোখে ক্রোধ নিয়ে বিড়ালটির পানে তাকায়। বিড়াল ছানাটি আনায়ার মুখের সাথে মুখ ঘষতে থাকে।বিড়ালটির এমন কর্মকাণ্ড ইউভানের রাগের আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করে।আনায়ার পাশে সামান্য বিড়ালকে তার সহ্য হচ্ছে না।অসহ্য বিরক্তির সাথে ইউভান তাড়াতাড়ি বিড়ালটিকে ধরে আনায়ার বুক থেকে সরিয়ে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিল। তারপর সে নিজের বসার জায়গা তৈরি করে পুনরায় আনায়ার নিকটে আসল।সামান্য পরিমাণ ঝুঁকে আনায়ার পানে দীর্ঘ দৃষ্টিতে তাকিয়ে সামান্য হাসলো। হঠাৎই সে সামান্য ঠোঁট ফাঁক করে ফিসফিসিয়ে গেয়ে ওঠে,
❝ তেরে ইস্কপে,তেরে ওয়াকত পে,
বাস হাক হে ইক মেরা
তেরে রুহু পে,তেরে জিসমপে
বাস হাক হে ইক মেরা, বাস হাক হে ইক মেরা
উমমম...মম বাস হাক হে ইক মেরা।❞

— — —

রাত গভীর। আকাশও আজ ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।কিন্তু চোখে এক বিন্দু ঘুম নেই পিহুর।
ঘর জুড়ে নিস্তব্ধতার মাঝে একা জানালার দিকে তাকিয়ে বসে আছে সে। ঠিক সেই মুহূর্তেই পেছন থেকে নরম পরিচিত কণ্ঠস্বর শোনা গেল,
"পিহু মা আর কত রাত জেগে থাকবি? রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়।"

পিহু চমকে উঠে পিছন ফিরে তাকায়।চোখে মুচকি হাসি নিয়ে হেঁটে গিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মহিলাটিকে জড়িয়ে ধরে বলে,
"আজকে ঘুম আসছে না, মনি।তুমি আমাকে গল্প শোনাবে?"

মহিলার নামই মনি। যে ছোটবেলা থেকে মানুষ করেছে পিহুকে। মায়ের অভাব সে কোনোদিন বুঝতে দেয়নি।
তাকে ঘুম পাড়িয়েছে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কষ্টের দিনগুলো পার করেছে।পিহুর আশ্রমেরি টিচার হলো মনি।মনি পিহুর মাথায় হাত বুলিয়ে হেসে বলে,
"গল্প? এত রাতে তুই আবার ছোট বাচ্চা হলি নাকি?"

পিহু ফিক করে হেসে বলে,
"আমি তো আজও তোমার ছোট্ট পিহু। আসো, গল্প বলো না একটুখানি প্লিজ।"

মনি এক পাশে বসে, পিহুকে কোলে টেনে নেয়।
পিহু মাথা রাখে মনির কোলের উপর, যেন পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা এটি।এই একমাত্র মানুষ, যাকে সে চোখ বন্ধ করে নিজের বলেই ভাবতে পারে।তখনই মনি পিহুর মাথায় হাত বুলিয়ে গল্প বলা শুরু করে,
"অনেক কাল আগে, এক রাজ্যে থাকত এক রাজা আর রানি। তাদের ছিল খুব সুখী সংসার। হেসে-খেলে দিন কাটত তাদের।একদিন তাদের ঘর আলো করে একদিন জন্ম নিল ছোট্ট ফুটফুটে এক রাজকন্যা।
গাল দুটো টোকা দিলেই লাল হয়ে যেত।রাজকন্যাটার বিশেষত্ব হলো তার লাল টকটকে চুল।দেখে মনে হবে আকাশ থেকে নেমে আসা কোনো পরি।কিন্তু হঠাৎ একদিন এক ঝড় এসে সবকিছু ওলটপালট করে দিল।রাজ্যে শুরু হল যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে রাজকন্যা হারিয়ে ফেলল তার মা-বাবাকে।তখন কিছু দুষ্টু লোক রাজকন্যাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল।ঠিক সেই সময়, হঠাৎ করে এক সাহসী যুবক এসে তাকে বাঁচিয়ে নেয়।আর রাজকন্যাটিকে সুরক্ষিত স্থানে রেখে আবার চলে যায়।সেই যুবকটির কারণেই রাজকন্যা বেঁচে ছিল কিন্তু..... "

পিহু মনোযোগ দিয়ে গল্প শুনছিল।মনি থেমে যাওয়াতে পিহু মাথা তুলে বলে উঠলো,
"কিন্তু কি মনি? তারপর কি হলো?"

মনি একটু থামে। চোখে-মুখে অস্বস্তির রেখা ফুটে

07/05/2025

Fatih Sultan Mehmed. Bolum 45 trailer 1. English Subtitle

07/05/2025

#অর্ধাঙ্গিনী
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব -৫০
জিয়ান নয়নার থুতনিতে হাত রেখে বলে, চলে যাবো মানে আমার ছুটিতো শেষ। যেতে হবে না?
"নয়নার মুডঅফ হয়ে গেলো! এটা কেমন কথা এতো তাড়াতাড়ি ছুটি শেষ?
" আমাদের ছুটিতো কম বেবি তবে তোমার সব কাগজ পত্র ঠিক করে তোমাকে পার্মানেন্ট ভাবে আমার সাথে নিয়ে যাবো।
"আপনি তো ককপিটে থকবেন আমি যেয়ে কি করবো!
" নয়নার গাল টেনে বলে, একদিন ফ্লাইট পরেরদিন রেস্ট এভাবেই আমাদের ডিউটি৷ যেদিন রেস্ট সেদিন তোমার আমার দিন।
"কিন্তু।
" কি গো খু্ব মিস করবে বুঝি আমাকে?
"নয়না উঠে দাঁড়ালো মিস করবো তবে একটু। এই চলুন তো ফুচকা খেয়ে আসি।
" আমি তো ফুচকা খাইনা বৌ।
"না খেলে খাবেননা আমি খাবো আপনি দেখবেন।
" আচ্ছা যাবো শর্ত হলো তোমাকে শাড়ি পরে বের হতে হবে।
"আচ্ছা এক্ষুনি চেঞ্জ করে আসি।
" জিয়ান নয়নার হাত ধরে নিজের কাছে নিয়ে আসলো,নয়নার এলোমেলো চুলগুলো কানের কাছে গুঁজে দিয়ে বলে,হটাৎ করে এসে একদম হৃদয় জুড়ে বসে আছো৷ নয়নার কপালে চুমু খেয়ে বলে,ভালোবাসি আমার পিচ্চি বৌটাকে।
"নয়না সরে এসে বলে,আমি মোটেও পিচ্চি না। কয়েকদিন পরে কলেজে ভর্তি হবো। সো পিচ্চি পিচ্চি করবেন না।
" জিয়ান নয়নার ঠোঁটের উপর আঙুল রেখে বলে,বড্ড বেশি কখা বলো তুমি। তুমি হলে আমার বাটার মাশরুম।
"দেরি হচ্ছে তো ছাড়ুন আমাকে।
" ইশশ রে নিব্বি বৌ আমার ধরায় আগেই ছোটার জন্য মোচড়ামুচড়ি করবে মাছের মত।
"নয়না একটু দূরে সরে যেয়ে বলে যাবোই না আপনার সাথে।
" আচ্ছা জান স্যরি এই কানে ধরছি আর বলবো না নিব্বি৷
"নয়না সোফায় বসলো কপট রাগ দেখিয়ে বলল আর একবার বললে,সোজা বাপের বাড়িতে চলে যাবো৷
"আমি থাকতে বাপের বাড়ি! তা হবে না। ঝগড়া হোক মারামারি কা'টাকা'ঠি যাহোক তবুও আমার কাছেই থকতে হবে। এতো কথা না বলে দ্রুত রেডি হও সময় নষ্ট হচ্ছে জান৷
" নয়না উঠে পেটিকোট আর ব্লাউজ নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
পেটিকোট আর ব্লাউজ পরে ওয়াশরুম থেকে বের হলো। আলমারি থেকে কলাপাতা রঙের একটা শাড়ি বের করে পরলো। চুলগুলো বিনুনি করে নিলো এরপর খোপা করলো। ম্যাচিং হিজাব পরলো, হাতে রেশমি কাচের চুড়ি৷ পরে বলে চলুন আমি রেডি। একি আপনি ভিডিও করছেন কেনো?
"আমি তোমাকে বড্ড মিস করবো বাটার মাশরুম। তখন একাএকা কি করবো?এসব থেকে মনটাকে শান্ত রাখবো।
" আহাগো ডিয়ার হ্যাসবেন্ড। আপনার যখনই আমার কথা মনে পরবে সোজা কল করবেন মনপ্রাণ ভরে কথা বলবো৷
"জিয়ান উঠে এসে নিজের চুল ঠিক করে নিয়ে বলে,তোমার সাথে কথা বলে এজন্মে মন প্রাণ ভরবে বলে তো আমার মনে হয় না। উল্টো তখন আরো তৃষ্ণা বাড়বে।জিয়ান হুট করে বলল,তোমার হাইট কত?
" পাঁচ ফিট দুই ইঞ্চি।
"জিয়ান নয়নাকে উঁচু করে ধরে বলে,অথচ বর পেয়েছো ছ'ফুটের। কপালে পাপ্পি দাও ডিয়ার ওয়াইফি।
" নয়না বলল,এখন দেয়া যাবেনা৷ এখন পাপ্পি দিলে আপনার কপালে লিপস্টিকের স্ট্যাম্প লেগে যাবে।সো ঝাপ্পি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন বাকিটা পরে হবে৷ নয়না জিয়ানে শার্টের বাটন ঠিক করে দিয়ে বলে,ব্ল্যাক আর কলাপাতা কালার দারুণ মানিয়েছে কিন্তু
"শাড়ী পরলেই মেয়েদের অদ্ভুত রকমের মায়াবতী লাগে! মনে হয় শাড়ী যেনো তোমাদের শোভা বর্ধন করার হাতিয়ার।শাড়ী এমন এক হাতিয়ার যা দিয়ে তোমরা আমাদের মত অবলা ছেলেদের হৃদয় কেড়ে নিতে পারো।
" অনেক বকবক করেছেন মিস্টার প্লেন ড্রাইভার। এখন চলুন তো তাড়াতাড়ি।
"তবে হাত ধরো। হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাই দু'জনে৷ তুমি আমি আর আমাদের এই পথচলা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হোক।
🌿জাহিন একটা সিগারেট ধরিয়ে দুই আঙুলের ফাঁকে ধরে,মুখ দিয়ে টেনে নিচ্ছে সিগারেটের ধোঁয়া।
"অন্তর জাহিনের হাত থেকে সিগারেটা নিয়ে নিজেও দু'টো টান দিলো।
" জাহিন সিগারেটে শেষ টান দিয়ে বলে,সিগারেটের মত বৌ ভাগ করা যায় না?
"শা'লা মুখ সামলে কথা বল সিগারেট আর বৌ কি এক!
" আরেহহ এক না আবার একই। দু'টোই নেশার মত কাজ করে।
"তোর কাছে এক মনে হলে তুই আরেকজনের সাথে ভাগাভাগি করিস। আমার বৌ আমার পার্সোনাল প্রপারটি আমি তাকে ভাগ তো দূরে থাক তার দিকে তাকালেও চোখ তুলে ফেলবো।
" হাইপার হচ্ছিস কেনো কথার কথা বললাস ইয়ার৷ আচ্ছা তোর বোনের কি অবস্থা? সুইসাইড করলো কেন?
"ওর অবস্থা বেশি ভালো না জানিনা কি হবে। হটাৎ করে কি এমন হলো সুইসাইড কেন করলো?
" চিন্তা করিস না সুস্থ হয়ে যাবে। সুস্থ হলে জেনে নিস৷
"জানিনা বেঁচে ফিরবে কিনা। আইসিইউ তে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে আমার চঞ্চল বোনটা। মৃত্যু আর জীবনের মাঝখানে।আচ্ছা মান্নাতের কেসের তদন্ত কতদূর এগোলো? তোকে দেখলাম মন্ত্রীর সাথে কথা বলতে?
" এই তো আগাচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি সব দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার ব্যবস্থা করবো।কথা বলতে বলতে জাহিন আরেকটা সিগারেট ধরালো।
"কি হয়েছে তোর? তুই তো কোন কিছু নিয়ে টেনশনে না থাকলে এতো সিগারেট খাস না।
" সিগারেটের পাওয়ার হলো ধোঁয়ার সাথে সব কষ্ট উড়িয়ে দিতে পারে৷ তবে জানিস ভালোবাসাও কিন্তু সিগারেটের চেয়ে কম না৷ আমরা জানি তাতে ক্ষতি তবুও ভালোবেসে ভুল করি৷ ঠিক সিগারেট যারা খায় সবাই জানে এর ক্ষতিকারক দিক।
"তোর কি হলো হঠাৎ? তুই ভালোবাসার কথা বলছিস? প্রেমে ট্রেমে পরিস নি তো?
" উঁহু জাহিন চৌধুরীর লাইফে প্রেম নিষিদ্ধ। তুই কেনো ডাকলি আমাকে?
"জাহিন আমি রিতুর সুইসাইডের মত ডিসিশন নেয়ার কারন জানতে চাই। আমার বোন মাত্র কলেজে পড়ে সে কেনো এতো বড় একটা পদক্ষেপ নিবে? এরজন্য তোর সাহায্য চাই।
" আচ্ছা টেনশন করিস না রিতু ঠিক হয়ে যাবে। আমি দেখছি বিষয়টা কিভাবে হ্যান্ডেল করা যায়। চল হসপিটালে যাই রিতুকে একবার দেখে আসি৷
"জাহিন আর অন্তর বাইক নিয়ে বের হয়ে গেলো হসপিটালের উদ্দেশ্যে
🌿অনিকেত চেম্বার থেকে বের হয়ে এতিমখানায় আসলো।
জামাল সাহেবের সাথে দেখা করে বলল,আচ্ছা আঙ্কেল আমাকে এখানে কে রেখে গিয়েছিলো?
" জামাল সাহেব অনিকেতের দিকে তাকিয়ে বলে,এতোদিন পর হঠাৎ এই কথা কেনো বাবা?
"আঙ্কেল আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে৷ কে আমার বাবা, মা তারা কেনই বা আমাকে ফেলে রেখে গেলো? আমার দোষটা কোথায়?
" জামাল সাহেব লাঠি ভর দিয়ে উঠে গেলেন৷ এরপর ফিরে এসে বললো,এক ভদ্র মহিলা তোমার বয়স যখন দু'দিন বা এক সপ্তাহ তখন এখানে রেখে যায়। আমি আর তোমার চাচি দু"জনেই তখন এখানে নতুন। চেহারা ঠিকমতো মনে নেই তবে দেখে মনে হয়েছিলো বড়লোক বাড়ির মেয়ে হবে৷ জিজ্ঞেস করলাম এতো ফুটফুটে বাচ্চাটাকে ফেলে রেখে যাচ্ছেন!
"মেয়েটা কান্না করতে করতে বলল,আমি অভাগা। জানিনা বড় হয়ে এই সন্তান কোনদিন আমাকে ক্ষমা করবে কি না। তবে তাকে বলে দিয়েন তার মা অসহায়। তার মা'কে যেনো ক্ষমা করে দেয়।
" তারপর কোনোদিন আর আমার খোঁজ করতে আসেনি?
"এসেছিলো ছয়মাস পর্যন্ত আসতো। সে তখন ভার্সিটিতে পড়ালেখা করে। এসে এমে তোমাকে খাইয়ে যেতো। মুখ ঢাকা থাকতো শুধু চোখ দুটো দেখতাম। শরিফ স্যারের কাছে টাকাও দিয়েছিলো অনেক৷ তোমারে রাখার জন্য।
" তারপর আর কোনদিন আসেনি?
"নাহহ বাবা আর কোনদিন দেখিনি তাকে এই আঙিনায়। তয় আমার কি মনে হয় জানো?
" কি মনে হয় আঙ্কেল?
"মনে হয় প্রেম ঘটিত জটিলতা আছিলো তোমার মায়ের। বুঝোই তো উঠতি বয়সি মাইয়া আবিয়াইত্তা সমাজ কি হেরে মাইনা নিবো? সবাই কইবো না এই সন্তান কার? মনে হয় হের প্রেমিক হেরে ধোঁকা দিছে এরজন্য তোমারে রাইখা গেছে নিরুপায় হইয়া।
" আমি কি তার নাম জানতে পারি?
"শামসুন্নাহার নাম কইছিলো তোমার চাচির কাছে।আমারেও তিনলাখ টাকা দিয়া কইছিলো তোমার যেনো আদর যত্নে রাখি।
" অনিকেতের পা অবশ হয়ে আসছে। ইচ্ছে করছে একবার তার মা"কে জড়িয়ে ধরতে একবার তার কোলে মাথা রাখতে আচ্ছা মায়ের শরীরে গন্ধ কেমন হয়? মায়ের শরীরে নাকি মা মা গন্ধ থাকে আঁচলে থাকে সন্তানের জন্য ভালোবাসা। আমি একবার সেই অনুভূতি পেতে চাই মা৷
#চলবে

Address


Website

https://t.me/+jPUe0-A1s2ljYjJl

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Golpo Kotha-গল্প কথা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share