10/10/2025
পাবনা-৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থীতা নিয়ে নতুন সমীকরণ
-------------------------------
জুবায়ের খান প্রিন্স।।
পাবনা সদর আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে নতুন সমীকরণ তৈরি হয়েছে। দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বাইরে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য শহীদ মাওলানা আব্দুস সোবহানের পুত্র নেসার আহম্মেদ নান্নু।
তিনি জানান, “সারাদেশে শহীদ পরিবার থেকে প্রার্থী দেওয়া হচ্ছে। আমার এলাকার নেতা-কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীরাও একই প্রত্যাশা করছেন। সুতরাং দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, আলহামদুলিল্লাহ। আর না দিলে আমি স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তার ভাতিজা ইসা আহম্মেদও নান্নুর প্রার্থীতা ঘোষণার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নান্নু সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। তিনি নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে গণমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং “ইতিবাচক সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করার” আহ্বান জানান।
অন্যদিকে, এই আসনে জামায়াতে ইসলামী পাবনা জেলার সাবেক আমীর ও বর্তমান বগুড়া টিম সদস্য এবং কেন্দ্রীয় সুরা সদস্য অধ্যাপক মাওলানা আব্দুর রহীমের নামও শোনা যাচ্ছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “দল থেকে যে মনোনয়ন ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি প্রাথমিক সিদ্ধান্ত মাত্র। আমি আশা করি, দল পুনর্বিবেচনা করে আমাকে মনোনয়ন দেবে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।”
তিনি আরও বলেন, “নেসার আহমেদ নান্নুর বক্তব্য ও স্বতন্ত্র নির্বাচনের ঘোষণার বিষয়ে আপাতত মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পরই আমি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবো।”
এ বিষয়ে জামায়াতের নায়েবে আমীর প্রিন্সিপাল ইকবাল হুসাইন বলেন, “দল থেকে ইতোমধ্যে আমার মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়েছে। আমি দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। তবে ব্যক্তি পর্যায়ে কেউ মনোনয়ন চাইলে সেটি তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তা সাংগঠনিকভাবে বিবেচনা করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নেসার আহমেদ নান্নু দলের কোনো পদে ছিলেন না, তাই তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমরা মন্তব্য করছি না।”
উল্লেখ্য, পাবনা-৫ (সদর) আসনে প্রিন্সিপাল ইকবাল হুসাইন গত নির্বাচনে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন। এবারও তিনি দলের প্রাথমিক মনোনয়ন পেয়ে তৃণমূল পর্যায়ে গণসংযোগ অব্যাহত রেখেছেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও জেলা জামায়াতের আমীর আবু তালেব মন্ডল ফোন রিসিভ করেননি।
এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বিভক্ত মতামত ও কৌতূহল। কেউ বলছেন, শহীদ পরিবারের সদস্যকে মনোনয়ন দিলে দলীয় ভাবমূর্তি আরও শক্তিশালী হবে; আবার কেউ মনে করছেন, একাধিক প্রার্থী দলের ঐক্যে চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।
সবমিলিয়ে, পাবনা সদর আসনে জামায়াতের প্রার্থীতা এখন ‘দুই শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা’তে রূপ নিচ্ছে—একজন শহীদ পরিবারের প্রতিনিধি, অন্যজন দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক নেতৃত্বের প্রতীক।