ঐতিহ্যর রাজবাড়ী।

ঐতিহ্যর রাজবাড়ী। Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from ঐতিহ্যর রাজবাড়ী।, Digital creator, Dhaka.

এটি প্রায় আড়াইশত বছরের প্রাচীন কুয়া।মীর মশাররফ হোসেনেন পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন  তৎকালীন সুপেয় পানির জন্য অনেক কুপ খনন ক...
09/07/2025

এটি প্রায় আড়াইশত বছরের প্রাচীন কুয়া।

মীর মশাররফ হোসেনেন পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন তৎকালীন সুপেয় পানির জন্য অনেক কুপ খনন করেন। পদমদী এষ্ট্রেটের তেমনি একটি কুয়া এখনো দেখা যায়।

মীর মোশাররফ হোসেনের জন্ম ১৮৪৭ সালে তার বাবা যদি এই কুপ খনন করেন তা হলে গানিতিক হিসাবে কুপটির বয়স দাড়াঁয় প্রায় দুইশত পঁচিশ বছর।এই কুয়াটি এখনো বহরপুর পালোয়ান শাহের মাজারের পাশে আমাদের উদাসীনতার মতো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে।

রাজবাড়ী  গণেশ দাসের জেলেপাড়ার মঠ।এটাও হতে পারে মানিক বাবুর পদ্মানদীর মাঝি  এখানেই থাকতো।আজ গেছিলাম গোয়ালন্দে কবিগান শুনত...
08/07/2025

রাজবাড়ী গণেশ দাসের জেলেপাড়ার মঠ।

এটাও হতে পারে মানিক বাবুর পদ্মানদীর মাঝি এখানেই থাকতো।
আজ গেছিলাম গোয়ালন্দে কবিগান শুনতে, বরাবরই কবিগান আমাকে মুগ্ধ করে।প্রায় হারিয়ে যাওয়া এই লোকজ সংস্কৃতি শোনার পাশাপাশি এই মঠ সম্পর্কে দারুণ এক তথ্য পেলাম।সচরাচর মন্দির গুলো রাজা বাদশা জমিদার কিংবা প্রভাবশালী মানুষেই করে। তবে এটা ভিন্ন।
প্রায় শত বছরের পুরানো মঠটি এখানকার অতীত ঐতিহ্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। গোয়ালন্দ বিজয়বাবুর পাড়ার এই মঠমন্দির শ্রীঅঙ্গনটি এক সময় জেলে বাড়ীর মঠ নামে সমধিক পরিচিত ছিল। পদ্মার তীরবর্তী গোয়ালন্দ ঘাটে মাছের প্রাচুর্যের কারনে এক সময় এখানে প্রায় চারশত জেলে পরিবারের বসতি ছিল। তথানুসন্ধানে যতদুর জানা যায়, গোয়ালন্দের এই জেলে পাড়ায় বাস করতেন গনেশ দাস। দূর্গা মায়ের ভক্ত গণেশ দাস জাল দড়ি নিয়ে সারারাত নৌকায় মাছ ধরতেন। স্বপ্নে আদিষ্ঠ হয়ে গনেশ দাস বাড়ির আঙিনায় বাঁশ খড় দিয়ে একটি দুর্গা মন্দির প্রতিষ্টা করেন। নিজে মাছ ধরে অতিকষ্টে সংসার চালালেও ছেলে কৈলাশ দাসকে তিনি আয়ুর্বেদীক শাস্ত্রে ডাক্তার হিসেবে গড়ে তোলেন। কালক্রমে দাস পরিবারটি বেশ অর্থ প্রতিপত্তির মালিক হয়ে ওঠেন। কৈলাশ দাসের সাত সন্তান। এরা হচ্ছেন, সতীশ দাস, বিজয় দাস, সুরেন্দ্র নাথ দাস, অবিনাশ দাস, কামদেব দাস, গজেন্দ্র দাস ও মেয়ে টবি দাস। এদের মধ্যে বিজয় দাস ছিলেন দ্বিতীয় সন্তান। তিনি ছিলেন একজন প্রকৌশলী, তথাপিও তিনি পুজা পার্বণে সমস্ত আয়োজন অত্যান্ত ভক্তি ও নিষ্ঠার সাথে পালন করতেন। তাই পূর্ব পুরুষের দূর্গা মন্দিরটিকে ইঞ্জিনিয়ার বিজয় দাস নিজের হাতে নক্সা তৈরি করে ১৯৩৬ সালে পূর্ণাঙ্গ ভাবে সুউচ্চ দৃষ্টিনন্দন একটি মঠ মন্দির হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। মন্দিরের পূর্বদিকে নাটমঞ্চ তৈরি করেন। নাটমঞ্চের দু'পাশে একতলা বিশিষ্ট বেলকোনি তৈরি করা হয়। এই বেলকোনিতে বসে পুজাপার্বণ বা যে কোন অনুষ্টানাদি দাস বাড়ীর পরিবারবর্গ স্বাচ্ছন্দ্যে উপভোগ করতেন। মন্দিরের সম্মুখ ভাগ কারুকার্য খচিত নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে সকলেই আকৃষ্ট হতেন। নাট মন্দিরের পশ্চিম পাশে মঞ্চের গেট তৈরি করা হয়, পূর্বাংশে তাদের সিঁড়িঘরে পরিবারের সকলে থাকলেও বিজয় দাস মঠ মন্দিরের নিচে ভূগর্ভের একটি কক্ষে থাকতেন। দক্ষিণ পার্শ্বে রাধা গোবিন্দের দোলমঞ্চ ছিল। সনাতন ধর্মের বারো মাসের তেরো পার্বনের সবকিছুই ধারাবাহিক ভাবে পালন করতেন দাস পরিবার। এখানে দুর্গা পূজাতে মহিষ বলি দেওয়া হত। দুর্গাষষ্ঠি থেকে বিজয় দশমী পর্যন্ত নাটমঞ্চে ধারাবাহিক ভাবে সারারাত রামযাত্রা, কৃষ্ণযাত্রা, যাত্রাভিনয় প্রভৃতি অনুষ্টানগুলো বেশ জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্টিত হত। ভারত থেকে শিল্পীবৃন্দ এসে এসকল অনুষ্টান পরিবেশন করতেন। তাদের সাথে স্থানীয় কিছু অভিনয় শিল্পীও যোগদান করতেন। যাত্রামঞ্চে বিবেক বেশে দেবেন সাধুর মরমী কণ্ঠের গানের সুর লহরি এখনো এলাকায় জনশ্রুতি আছে।

ইঞ্জিনিয়ার বিজয় দাস এক সময় কলিকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে প্রফেসর হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন। কালক্রমে বিজয়বাবুর পরিবারবর্গ বিষয় আসয় সবকিছু ফেলে স্বাধিনতার পূূবেই দেশত্যাগ করে ভারতে চলে যান। বিজয় দাস যাবার প্রাক্কালে এ মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণ দায়িত্ব স্থানীয়দের লোকজনের হাতে রেখে গেলেও মঠের কার্যক্রম আস্তে আস্তে ঝিমিয়ে পড়ে। তারপর থেকে জেলে পাড়ার অনেকে পরিবারই ভারতে চলে যান। তখন থেকেই হারিয়ে যেতে থাকে মঠ মন্দিরের জৌলুস। মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অযত্নে অবহেলায় এক সময় সমস্ত পুজা-পার্বন বন্ধ হয়ে যায়। দলিল দস্তখতে দেখা যায়,বিজয়বাবুর নামে অন্যান্য সম্পত্তি বাদেও শুধু মন্দির ও তার বাসগৃহ মিলেই ৮৬ শতাংশ জমি। তন্মেধ্য মঠমন্দিরের ২০ শতাংশ বাদে নাটমন্দিরের ৪০শতাংশ,এবং দুর্গা প্রতিমা বিসর্জনের ২৬ শতাংশ পুকুর ছিল। রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে এসব স্থাবর- অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি বেদখল হতে থাকে। বহুদিনের অব্যবহৃত অপরিচ্ছন্ন পরিত্যক্ত মন্দিরের চারিধারে বুনোগাছ পালায় ভরে যায়। এক সময় এই মন্দিরটি পরিনত হয় সমাজের বিপথগামী তরুনদের আখড়াস্থল।
মুক্তিযুদ্ধের সময় দুষ্কৃতকারীরা নাটমন্দিরের টিন ও মন্দিরে তৈজসপত্র লুট করে নিয়ে যায় বেশ কয়েক বছর পর পরিত্যক্ত মন্দিরটিকে জাগ্রত করতে ১৯৮৫ সালে গৌরাঙ্গ দাস, বিশ্বনাথ বিশ্বাস, নারায়ণ চক্রবর্তী প্রমুখ ব্যক্তিদের উদ্যোগে সনাতন ধর্মীয় মিশন নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়। মন্দিরে জ্বেলে ওঠে আবার মঙ্গল প্রদীপ। পুনরায় শুরু হয় দুর্গাপুজা ও কালিপুজা। কিন্তু পুজানুষ্ঠান শেষ হয়ে গেলে মন্দিরটি আবারও সেই তাস জুয়া নেশার আখড়ায় পরিনত হয়। লোকবলের অভাবে আস্তে আস্তে সনাতন ধর্মীয় মিশনের কার্যক্রমও স্থবির হয়ে পড়ে।

২০০৪ সালে সমাজ সেবক( যুব সংগঠক) সুধীর কুমার বিশ্বাস গোয়ালন্দের যুব সমাজকে নিয়ে এখানে সার্বজনীন ভাবে গড়ে তোলেন শ্রীকৃষ্ণ সেবা সংঘ। গোয়ালন্দ বিজয় বাবুর পাড়া মঠ মন্দিরের নতুন নামকরণ করা হয় শ্রীকৃষ্ণ সেবা সংঘ মঠ মন্দির শ্রীঅঙ্গন। যা গোয়ালন্দের সকলের সার্বজনীন মন্দির হিসেবে গন্য হয়।
এই সংগঠনের প্রচেষ্টায় মঠ মন্দির রক্ষনাবেক্ষণ, সংস্কার, উন্নয়ন ও জমিজমা উদ্ধারের কাজ শুরু হয়।২০১৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অধীনে মন্দিরটি হিন্দু কল্যান ট্রাস্ট্রের তালিকাভুক্তির সনদ প্রাপ্ত হয়। নিভে যাওয়া অতীত জৌলুস ফিরে পেতে থাকে মন্দিরটিতে।
আবার পূর্বের ন্যায় শুরু হয় মন্দিরের পুজা-অর্চণা। সাথে নতুন যোগ হয়েছে শ্রীশ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা , মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান। গঙ্গাস্নান, শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী, শ্রীকৃষ্ণের ঝুলনযাত্রা। তবে গোয়ালন্দের এই ঐতিহ্যবাহী মন্দিরে বর্তমানে নাট মন্দির, দুপাশের ব্যালকনি, বিভিন্ন দেবদেবীর মন্দির সংস্কার, মন্দিরের প্রচীর নির্মান, গেইট নির্মানসহ দুর-দুরান্তের ভক্তদের অাবাসস্থলের অভাবে নয়দিন ব্যাপি জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা এবং মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠানে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় কমিটির সদস্যদের। সরকার মন্দিরটিকে সংস্কার করে নতুন করে নতুন রঙে শ্রীবৃদ্ধি করলেও অতীত দিনের মঠ মন্দিরের জৌলুশ আজও খুঁজে ফিরে গোয়ালন্দে বয়োবৃদ্ধ মানুষেরা।
(বিশেষ ধন্যবাদ জীবন চক্রবর্তী যিনি তথ্যগুলো দিয়েছেন)

হাজারীর বাড়ী।চারশত বছরের প্রাচীন হরিস চন্দ্রের বাড়ী। হরিস চন্দ্রের পিতা ছিলেন চুকারাম হাজারী। চুকারাম বংশের যারা এখনো জী...
27/06/2025

হাজারীর বাড়ী।
চারশত বছরের প্রাচীন হরিস চন্দ্রের বাড়ী।
হরিস চন্দ্রের পিতা ছিলেন চুকারাম হাজারী। চুকারাম বংশের যারা এখনো জীবিত আছেন তাদের ভাষ্য মতে এই বাড়ীর বয়স চারশত বছর। কয়েক একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এই বাড়ী এখনো রাজবাড়ীর ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।

রাজবাড়ী জেলায় খোলাবাড়ীয়াতে অবস্হিত এই বাড়ী এখনি সংস্কার করা না হলে রাজবাড়ীর ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাবে এ অঞ্চলের গৌরব গাথাঁ অনেক অধ্যায়।

১৭৫৭ সালের ২৩ জুন চতুর্মুখী ষড়যন্ত্রে হেরে যান বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা।নবাব সৈন্য বাহিনীর সংখ্যা ছিল ৫০ হাজার। এক হাজার সৈন্য নিয়ে এক প্লাটুন গঠন করা হত।সেই প্লাটুনের যে নেতৃত্ব দিতো তাকে হাজারী বলা হতো।

দেখে আসুরমনু মিয়া ছনু মিয়ার মাজার।বালিয়াকন্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণবাড়ী গ্রামে এ মাজার অবস্থিত।  যতটুকু জানা য...
26/06/2025

দেখে আসুর
মনু মিয়া ছনু মিয়ার মাজার।
বালিয়াকন্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণবাড়ী গ্রামে এ মাজার অবস্থিত। যতটুকু জানা যায় বাগদাদ থেকে বহু সুফি সাধক বাংলাদেশে এসেছেন এবং ইসলাম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। শাহ মখদুম (রহ.) এর মতো সুফি সাধকরা ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ শতাব্দীতে রাজশাহী অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করেন। ছনু ও মনু মিয়া বাগদাদ থেকে এসেছিলেন ধর্ম প্রচারের জন্য। বাগদাদ একটি শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল, যা মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করত। এই যোগাযোগের মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে ধারণা অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল।

সুতরাং, বাগদাদ থেকে সরাসরি ইসলাম প্রচারের ঘটনা কম হলেও, শহরটি মুসলিম বিশ্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল এবং এর পরোক্ষ প্রভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে ইসলাম প্রচার হয়েছে।ছনু মিয়া মনু মিয়া নিয়ে অনেক মিথ শোনা যায়। তাদের কবর পাহাড়া দেয়ার জন্য দুটি সাপ মাজারের আশে পাশে অবস্থান করে এখনো। অনেক প্রত্যক্ষদর্শী নিজে দেখেছেন বলে স্বীকার করেন।
এই মাজারের এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যারা মানত করে গরু ছাগল, খাসী মুরগী কিংবা নগদ টাকা দান করেন সেই সব অর্থ গরীব মানুষের চিকিৎসা বা তাদের কল্যানে ব্যয় করা হয়। সস্প্রতি মাজারের পাশে কবর স্থানের জন্য কিছু জমি কেনা হয়েছে। ভক্তদের জন্য থাকা খাওয়ার জন্য একটি টিন শেড ঘর তৈরি করা হয়েছে।

স্মৃতি চিহ্ন হিসাবে তাদের পায়ে দেয়া খড়ম সংরক্ষনণ করা হয়েছে। আপনিও দেখে আসতে পারেন ইসলামের প্রচার সম্প্রসারনের দুই ভাইয়ের কবর স্থান। আপনাকে
বালিয়াকান্দি বাজারে নেমে অটোরিক্সা ভ্যান অথবা ইজিবাইকে যেতে পারেন আবার রামদিয়া বাজার থেকে যেতে পারেন। নিজস্ব যানবাহন থাকলে সুবিধা।
বালিয়াকান্দি উপজেলার দক্ষিণবাড়ী গ্রামে মনু মিয়া ও ছনু মিয়ার মাজার আছে। তার অদুরেই রয়েছে শাহ পালোয়ানের কবর।

এই দুই ভাই শাহ পাহলোয়ান এর সঙ্গী ছিলেন এবং ইসলাম ধর্ম প্রচারে ব্রতী এই দুই সাধকের অনেক মাজেজার কাহিনী এ অঞ্চলে প্রচলিত আছে মনু মিয়া ও ছনু মিয়া পদ্মায় ডুবন্ত এক নৌকা বদনার মধ্যে হাত ‍দিযে উদ্ধার করেন এমন অনেক কাহিনী এ অঞ্চলে প্রচলিত আছে।

গৌরবের রাজবাড়ী।বিজয়চন্দ্র মজুমদারকবি, ভাষাতত্ত্ববিদ ও নৃতত্ত্ববিদ।রাজবাড়ী জেলা শিল্প সাহিত্য যুগে যুগে বিশ্ব সাহিত্যে  ...
03/06/2025

গৌরবের রাজবাড়ী।
বিজয়চন্দ্র মজুমদার
কবি, ভাষাতত্ত্ববিদ ও নৃতত্ত্ববিদ।

রাজবাড়ী জেলা শিল্প সাহিত্য যুগে যুগে বিশ্ব সাহিত্যে গুরুত্বপুর্ন অবদান রেখেছে যার অনেকটাই হয়তো আমাদের কাছে অজানা রয়ে গেছে।যাদের জানানোর কথা তাঁরা কোন অভিমানে নিশ্চুপ আছেন জানি না।
গীত গোবিন্দ্রের অনুবাদক বিজয়চন্দ্র মজুমদার (২৭ শে অক্টোবর ১৮৬১ — ৩০ শে ডিসেম্বর ১৯৪২) রাজবাড়ী জেলায় জন্ম গ্রহন করেন। তিনি একজন বাঙালি কবি, ভাষাতত্ত্ববিদ প্রত্নতাত্ত্বিক ও গবেষক। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল রাজদরবারের গ্রন্থাগার থেকে এর পুথি আবিষ্কার করেন সেটা নিয়ে তিনি সর্বপ্রথম চর্যাপদের নিয়ে আলোচনা করেন।

বিজয়চন্দ্র শিক্ষা ও কর্মজীবনে একাধিক ভাষা আয়ত্ত করেন। সংস্কৃত, পালি, তামিল, তেলেগু, উড়িয়া, বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় তাঁর ব্যুৎপত্তি ছিল। তিনি কলকাতা থেকে প্রকাশিত বঙ্গবাণী (১৯২১-২৭), শিশুসাথী (১৯২৮-৩২) ও বাংলা (১৯৩২) নামে তিনটি পত্রিকা সম্পাদনা করেন। সাহিত্যের অঙ্গনে কবি হিসেবেই তাঁর সর্বাধিক পরিচিতি।তবে ইতিহাস ও পুরাতত্ত্ব বিষয়েও তাঁর গভীর পান্ডিত্য ছিল এবং এ বিষয়ে তাঁর গ্রন্থও আছে।

ব্যঙ্গ কবিতা রচনায় তিনি পারদর্শী ছিলেন। কবিতা (১৮৮৯), যুগপূজা (১৮৯২), ফুলশর (১৯০৪), যজ্ঞভস্ম (১৯০৪), পঞ্চকমলা (১৯১০) তাঁর কাব্যগ্রন্থ; থেরীগাথা (১৯০৫), গীতগোবিন্দ (১৯০৬), সচ্চিদানন্দ গ্রন্থাবলী (১৯২৬) পালি, সংস্কৃত ও ওড়িয়া থেকে অনূদিত গ্রন্থ এবং প্রাচীন সভ্যতা (১৯১৫) ও ভারতবর্ষের ইতিহাস (১৯১৯) তাঁর ইতিহাসবিষয়ক গ্রন্থ।

বিজয়চন্দ্র বৃদ্ধবয়সে অতিরিক্ত পড়াশোনার কারনে চক্ষূরোগে আক্রান্ত হয়ে অন্ধত্ব বরণ করেন এবং ১৯৪২ সালের ৩০ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দির খালকুলা গ্রামে তিনি জন্ম গ্রহন করেন।

30/05/2025

নির্বাচিত রাজবাড়ী
ছোট কলকাতা।
ঝাঁ ঝাঁ রোদ্রে ভরা দুপুরবেলায় হঠাৎ আমার মনে হলো, আমি যাকে খুঁজছি বোধ হয় সত্যি না । না... মানে...বলছি যে এই গ্রাম সম্পর্কে যা শুনেছি অন্তত সেই ছোটগল্পকে আমি যেন চোখের সামনে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি না।যে গল্পের কথা শুনেছি , যে আলো দিয়ে পুরো গ্রাম ভর্তি যে আলোর গ্রাম জুড়ে জলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে উদ্ভাসিত ঢেউ। যে গ্রামের কথা বলছিলাম, সেখানে রোদ এমন জলের মতো। মনে হয় রোদকে কেউ জলরং বানিয়ে ছবি এঁকেছে।

সেই গ্রামটির নাম কোড়কদী।
কোড়কদী গ্রামটি এক সময় ‘ছোট কলকাতা’ হিসেবে পরিচিত ছিল।দেশের প্রতিটি প্রান্তেই রয়েছে অসংখ্য গ্রাম। তবে, সেগুলির মধ্যে এমন কিছু গ্রাম রয়েছে যেগুলি তাদের অভিনব বিশেষত্বের মাধ্যমে এক আলাদা নজির তৈরি করেছে। শুধু তাই নয়, ওই গ্রামগুলি সম্পর্কে জানার পর অবাক হয়ে যান প্রত্যেকেই। আজ আমরা এমন একটি গ্রাম
৩০০ বছর আগে গ্রামটিকে কনকদ্বীপ নামে ডাকা হতো। গ্রামটি প্রথমে বালিয়াকান্দির মেঘচামি ইউনিয়নে ছিল, পরবর্তীতে কোড়কদীকে ইউনিয়ন করে মেঘচামি ইউনিয়ন সহ মধুখালি থানার ফরিদপুর জেলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

কোড়কদী নামে এই গ্রাম বারেন্দ্রদের গ্রাম হিসাবে পরিগণিত হয়েছিল এবং এখানে লেখাপড়ার প্রসার ছিল তুলনাহীন৷ এটিকে একসময় ছোট কলকাতা বলা হত৷ এই গ্রামে বাস করতেন মৈত্র, সান্যাল, লাহিড়ী ভাদুড়ি বাগচি ইত্যাদি পদবীধারী ও তৎসহ চক্রবর্তী ও ভট্টাচার্য পদবীধারী যাঁদের পূর্বপদবী ওই পাঁচটি বারেন্দ্র পদবীর কোনও একটি ছিল৷ রত্নগর্ভা ছিল এই গ্রাম৷

এই গ্রাম বহু বিখ্যাত মানুষকে জনমানসের পাদপ্রদীপের কাছে এনে দিয়েছে৷ এই গ্রামের বারেন্দ্র পরিবারের মেয়েরাই বাংলায় প্রথম ব্যাপক হারে পড়াশুনা শুরু করেছেন৷ অবিভক্ত বঙ্গদেশের নারীশিক্ষায় তাঁরা পথিকৃৎ বলা যেতে পারে।

গ্রামটি একসময় রত্নগর্ভা ছিল৷ বারেন্দ্রপ্রধান এবং বহু গুণী মানুষের আবাস ছিল এই গ্রাম৷ আগেকার দিনের বিদ্বজ্জন এঁদের নিশ্চয় চিনবেন৷ কম্যুনিস্ট আন্দোলনের উৎস বাংলাদেশে অনেকটাই এই গ্রামে।

ঐতিহ্যবাহী এ গ্রামটির শুরুতেই রয়েছে শত বছরেরও বেশি পুরনো কোড়কদী রাস বিহারী উচ্চ বিদ্যালয় যার প্রতিষ্ঠা সাল “১৯০১” যে কোনো কৌতূহলী পড়িয়াদের অবাক করবে। কালের সাক্ষী হয়ে আজও অত্র এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। ভারত বিভাগের আগে প্রত্যন্ত এই গ্রামেই কেরোসিন চালিত ফ্রিজ ব্যবহৃত হতো, যার নমুনা জাদুঘরে রক্ষিত আছে বলে জানা যায়।

কোড়কদী গ্রামের ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে তুলে ধরতে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি আয়ােজন করা হয় কোড়কদী সমাবেশ। বাংলাদেশ লিটারারি রিসাের্স সেন্টার (বিএলআরসি)-এর উদ্যোগে এই সমাবেশটি সম্পন্ন হয়।

১৮৬৯ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশ হয়েছিল কালীকৃষ্ণ লাহিড়ীর উপন্যাস ’রশিনারা’। ’দুর্গেশ নন্দিনী’ প্রকাশের মাত্র চার বছরের মাথায় প্রকাশিত সেই উপন্যাসটির লেখকের বাড়ি এই কোড়কদী গ্রাম। বিখ্যাত পন্ডিত ও নৈয়ায়িক রামধন তর্কপঞ্চানন ভট্টাচার্য এই গ্রামের বাসিন্দা। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এই গ্রামে এসে বিধবাবিবাহ বিষয়ে পন্ডিত তর্কপঞ্চাননের সাথে বিতর্কে মেতেছিলেন। পন্ডিত তর্কপঞ্চাননের নামে এখানে একটি লাইব্রেরি রয়েছে – লাইব্রেরি ভবনটি এখন ভেঙ্গে ঝুরঝুরে! পাঠাগারটিতে তখন বিভিন্ন পুস্তকের সাথে তালপাতার পুস্তক সংরক্ষিত ছিলো। এই গাঁয়ের লেখক অমল সান্যাল একটি বই ছিল, নাম 'কনকদ্বীপ'। 'মশাল' নামে হাতে লিখে একটি লিটিলম্যাগাজিন তখন সে এই গ্রাম থেকে বের করতো। পন্ডিত অবন্তী কুমার সান্যাল, নবাঙ্কুর উপন্যাসের লেখিকা সুলেখা সান্যাল, বিপ্লবী রাজনীতিক শ্যামেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, বরেণ্য নৃত্যশিক্ষক অজিত সান্যাল প্রমুখের বাড়িও ছিল এই গ্রামে। এই গাঁয়ের জমিদার মধুসূদন সান্নাল নীলকুঠির আয়ের দ্বারা কয়েকটি পরগণার মালিক হয়। কোড়কদীর মানুষ হলেও মধুসূদন সান্নাল বেশিরভাগ কলকাতার জোড়াসাঁকো এলাকায় বসবাস করতো। বৃটিশ আমলের মুন্সেফ যতীন্দ্র নাথ লাহিড়ী ও অনঙ্গ লাহিড়ী এই গ্রামের মানুষ।

কোড়কদীতে ১৯২০-৩০ দশকের দিকেও ৩০ থেকে ৪০ জন বিএ/এমএ পাস মানুষ ছিল। মধ্যযুগের বৃহৎ বাংলার সংস্কৃত শিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় ছিল কোড়কদীর নাম। শ্যামেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের যোগ্য সহধর্মিণী কোড়কদীর মেয়ে মৃদুলা ভট্টাচার্য এ গ্রামে নারী আন্দোলন পরিচালনা করতো। গ্রামের মেয়েরা কোঁদাল কেটে পুকুর করেছিল স্বদেশী যুগে। ভাষা আন্দোলনে এই গ্রামের প্রায় ৫০ জন ভাষা সৈনিক ছিল যারা অধিকাংশই রাস বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র। বৃটিশবিরোধী আন্দোলনের একটি ঘাঁটি ছিল এই গ্রাম। গ্রামটি অর্থ শিক্ষা সামাজিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভাবে অনেক উন্নত ছিলো।

শাহ পালোয়ানের মাজার:রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার ইসলামপুর ইউনিয়নের শেকাড়া গ্রামে অবস্থিত এই মাজার সম্পর্কে নানান শ্র...
16/05/2025

শাহ পালোয়ানের মাজার:
রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার ইসলামপুর ইউনিয়নের শেকাড়া গ্রামে অবস্থিত এই মাজার সম্পর্কে নানান শ্রুতি কথা প্রচলিত রয়েছে।ধারনা করা হয় ইসলাম প্রচারের জন্য ষোড়শ শতকে তিনি এ অঞ্চলে বসবাস জন্য আসেন।কথিত আছে তিনি অলৌকিক কিছু ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন।তার কবরে এখনো যে মরা কাঠাল গাছটি রয়েছে।সেই গাছটি ভাজা কাঠালের আটিঁ থেকে অঙ্কুরিত। তার কবর নিয়ে ও রয়েছে আরেক টি কাহিনী।

মৃত্যুর আগে তার অনুসারীদের কাছে বলে যান যে তার কবর যেন পুর্ব পশ্চিম মুখি করে দেয়া হয়।কিন্ত তারা সেটা না করে উত্তর দক্ষিন করে কবর দেয়।পরের দিন সকালে সকলে দেখতে পায় কবরটি আপনা আপনি পুর্ব পশ্চিম মুখি হয়ে আছে।বর্তমানে দুটি কবরই সংরক্ষিত আছে। এ রকম নানান বর্ণনায় তার কবর ঘিরে নানান কথা প্রচলিত।তার স্মৃতি চিহ্ন টুকু হারিয়ে যেতে বসেছে।মাজার কমিটি চেষ্টা করে ও মাজারের জায়টুকু নির্ধারণ করতে পারেন নাই।সেখানে গড়ে উঠেছে মসজিদ সহ একটি কবরস্থান। ইতিহাসে যে টুকু জানা যায় পালোয়ান শাহ ষোড়শ শতকে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে সুদূর বাগদাদ থেকে পীর আগমন করেন। বালিয়াকান্দি থানার চন্দনা নদীর তীরে বাসস্থান নির্মাণ করেন। ধারণা করা হয় খানজাহান আলীর উত্তরসূরি ছিলেন শাহ পালোয়ান। তার প্রভাবে ইসলাম প্রচার বৃদ্ধি পায়।শেকাড়া গ্রামে মৃত্যুবরণ করলে তাকে এখানেই এই গ্রামেই কবর দেয়া হয়।

এই ভূখণ্ডে সূফীবাদ পাগলামিতে নতুন মাত্রা এনে দেয়। মুরশিদ তত্ত্ব কিংবা পীরবাদে উল্লেখ আছে দুটি ধারার। একটি সালেকী, অন্যটি মজ্জুব। ধরে নেয়া হয় সালেকী ধারার পীররা প্রচলিত বিধানের ভেতর দিয়েই ভক্তদের সমস্যার সমাধান বাৎলে দেন। কিন্তু মজ্জুবদের চালচলন আলাদা। ওরা ধার ধারেনা প্রচলিত আচারের; কথা বলে একদম কম; গায়ে কাপড় রাখার ইচ্ছেও করেনা কেউ কেউ। বিশেষ দিনে ওদের সমাগম ঘটে নির্দিষ্ট মাজারে। ওরা নিজেদের মনে করে জিন্দাপীর খিজিরের অনুগামী। কোরাণে তার সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে। কিন্তু উত্তর ভারত ও প্রাচীন বাঙলায় এসে খিজিরের নামের সাথে যুক্ত হয় স্থানীয় লোকাচার। বৈদিক জলদেবতা বরুণসংশ্লিষ্ট আচারগুলো যুক্ত হয় স্থানীয়ভাবে পরিচিতি পাওয়া খোয়াজখিজিরের নামের সাথে। লোকসমাজে ধারণা রয়েছে খোয়াজখিজির জলজগৎ ও প্রকৃতির নিয়ন্ত্রক। খোয়াজের নামে বাঙলার ভাটী অঞ্চলে মাঘ মাসে এখোনো আয়োজন হয় বেড়াভাসানের। খিজির শব্দের অর্থ সবুজ। সবুজ আবার প্রকৃতির অংশ। সুফী সাধকরাও আবার বিরাজ করেন প্রকৃতিকে ঘিরে। মজ্জুবরা খোয়াজের হয়ে এই প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের কাজটি করে থাকে - এমন বিশ্বাসও গড়ে উঠেছে ।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে, শহরে ও গঞ্জে, মাজারে-মাজারে রয়েছে নানা বেশধারী পাগলফকিরের সমাগম। কারো পরণে শালু; কারো পোশাকে ঘটেছে বিচিত্র রঙের সমাগম, শত শত তালি দেয়া কাপড়ে। শরীর জুড়ে শেকল মোড়া কারো; কেউ হাতে রেখেছে দা কিংবা চিমটা। নানা প্রতীক বা ‘আশা’র রয়েছে নানা অর্থ। এই প্রতীকগুলো বলে দেয় কে কোন তরিকার অনুগামী। লোকায়ত সাতপীর ও পাঁচপীরের প্রতীকী মাজারগুলোরও রয়েছে নানা মাহাত্ম।

প্রাথমিকভাবে মুসলিম বিশ্বে সুফিবাদের আবির্ভাব হয় উমাইয়া খিলাফতের সময় (৬৬১-৭৫০) এবং এটি ইসলামের দুটি মূলধারা সুন্নি এবং শিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি রহস্যময় ঐতিহ্য হিসেবে বেড়ে ওঠে। সুফি মুসলিম তপস্বীগণ (ফকির ও দরবেশ) ইসলামের ইতিহাসে ইসলাম প্রচারে অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং ব্যাপকভাবে সফল ছিলেন।
ব্রিটিশরা প্রায় দুই শত বছর ভারতবর্ষ শাসন করে। এ সময় দেশের মানুষের স্বার্থবিরোধী নানা নিয়ম ও আইনের প্রচলন করে তারা। এসব নিয়ম আর আইনের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ বিভিন্ন সময় বিদ্রোহ করে। এ রকমই একটি বিদ্রোহ হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনের সূচনালগ্নে। এই বিদ্রোহ শুরু করে ছিলেন বাংলার সুফি সাধক ও সন্ন্যাসীরা।আমাদের এই ভুখন্ডে নানান জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য মাজার তাদের ইতিহাস এবং দর্শন সংগ্রহ করা দরকার বলে অনেকেই মতামত দিয়েছেন। সেই সাথে তাদের নিয়ে মিথ্যা প্রচারনা বন্ধ হওয়া দরকার বলে মনে করে সুফি সাধকরা।

রাজবাড়ীর বালিয়াডাঙ্গি গণহত্যা।১৯৭১ সালে এমনি এই দিনের শেষে রাজবাড়ীর কর্মক্লান্ত মানুষ যখন ছিলেন ব্যস্ত তখন সেই নিরপরাধ ন...
22/04/2025

রাজবাড়ীর বালিয়াডাঙ্গি গণহত্যা।
১৯৭১ সালে এমনি এই দিনের শেষে রাজবাড়ীর কর্মক্লান্ত মানুষ যখন ছিলেন ব্যস্ত তখন সেই নিরপরাধ নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর ট্যাংক, মর্টার, মেশিনগান, রাইফেলসহ অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানের হানাদার বর্বর সেনাবাহিনী। নির্বিচার তারা বিভিন্ন চালিয়েছিল গণহত্যা। নিরীহ মানুষের আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠেছিলো রাজবাড়ীর বাতাস।
১৯৭১ সালের ২০ শে এপ্রিল সন্ধ্যায় হাজার হাজার ছাত্র জনতার উপস্থিতে পদ্মার পাড় মুখরিত হয়ে ওঠে।পাকবাহীনি আসবে এই সংবাদে।তৎকালীন ছাত্র নেত ও এলাকাবাসীর নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়।হাজার হাজার মানুষ লাঠি ঢাল সরকি, তলোয়ার নিয়ে প্রতিরোধ করতে এগিয়ে আসে।সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করে যখন বাড়ী ফেরার প্রস্ততি নিচ্ছিল তখনি পাকিস্থানী বাহীনি আক্রমন করে আধুনিক অস্থের কাছে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি।পাকিস্থানী বাহিনী তান্ডব লীলানচালায়, রাস্তার পাশে বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দেয়।হত্যা করা হয় অসংখ্য শিশু, বৃদ্ধা মহিলাকে(৭১ মুক্তিযুদ্ধ রাজবাড়ী) এ সময়ে তৎকালীন রাজবাড়ী জেলার এস ডি ও ডঃ শাহ ফরিদ এর বর্ননায় গোয়ালন্দ ঘাট প্রতিরোধের বর্ননা ভয়াবহ ভাবে ফুটে ওঠে।মুক্তিযুদ্ধে চলাকালীন সময়ে তার বীরত্বতের কথা সবাই শ্রদ্ধা সাথে স্বরণ করে আজো।

২১ এপ্রিল গোয়ালন্দ প্রতিরোধ ও গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর দিকে পাকবাহিনী পদ্মাপারের গোয়ালন্দ মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ গোয়ালন্দ ঘাট দখলে নিতে আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। এরপর পাকবাহিনী নিরস্ত্র মানুষের উপর ব্যাপক গণহত্যা চালায়।
জানা যায়, কাকডাকা ভোরে আরিচাঘাট থেকে একটি গানবোট ও একটি কে-টাইপ ফেরি করে হানাদার বাহিনী এসে নামে তৎকালীন গোয়ালন্দ মহকুমার উজানচর ইউনিয়নের কামারডাঙ্গি এলাকায়। সেখানে স্থানীয় জনতার সহায়তায় ইপিআর, আনছার ও মুক্তিবাহিনীর একটি দল হালকা অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। কিন্তু পাকবাহিনীর ভারি অস্ত্রের মুখে অল্প সময়ের মধ্যেই মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়ে। এসময় শত্রুবাহিনীর বুলেটে শহীদ হন আনছার কমান্ডার মহিউদ্দিন ফকির। এরপর পাকবাহিনী পাশ্ববর্তী বালিয়াডাঙ্গা গ্রাম চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে ব্যাপক গণহত্যাযজ্ঞ চালায়। নিরীহ গ্রামবাসীর ঘরবাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। সেখানে হানাদারের বুলেটে শহীদ হন বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের স্বাধীনতাকামী জিন্দার আলী মৃধা, নায়েব আলী বেপারি, মতিয়ার বেগম, জয়নদ্দিন ফকির, কদর আলী মোল্লা, হামেদ আলী শেখ, কানাই শেখ, ফুলবুরু বেগম, মোলায়েম সরদার, বুরুজান বিবি, কবি তোফাজ্জল হোসেন, আমজাদ হোসেন, মাধব বৈরাগী, আহাম্মদ আলী মন্ডল, খোদেজা বেগম, করিম মোল্লা, আমোদ আলী শেখ, কুরান শেখ, মোকসেদ আলী শেখ, নিশিকান্ত রায়, মাছেম শেখ, ধলাবুরু বেগম, আলেয়া খাতুন, বাহেজ পাগলাসহ নাম না জানা আরো অনেকে।(ধারনা করা হয় অজ্ঞাত আরো দেড়শত লাশ এ দিক ওদিক ছিটিয়ে ছড়িয়ে ছিলো) সেই থেকে এই দিনটিকে গোয়ালন্দ প্রতিরোধ দিবস হিসেবে বিবেচনা করে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাসহ সাধারন মানুষ।
সরোজমিনে গত ২০ মার্চ ২০২২ তারিখে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল বালিয়াডাঙ্গি পরিদর্শন করতে গেলে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডর আব্দুস সামাদ মোল্লা বলেন, ২১ শে এপ্রিল ছিল বুধবার। ভোরে পাকহানাদার বাহিনী গোয়ালন্দ আক্রমন ও নিরস্ত্র মানুষের উপর যে গণহত্যা চালিয়েছিল তা ভাবলে এখনো গা শিউরে ওঠে। আমাদের হালকা অস্ত্রের প্রতিরোধ বেশীক্ষন স্থায়ী না হলেও মূলত ওই দিনই আমাদের সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়েছিল।২১ এপ্রিলের দুটি উল্লেখ যোগ্য গঠনা তৎকালীন রাজবাড়ী পুলিশের আর্মায়ার সিরাজুদ্দিন খান ( কনষ্টেবল নং১০২১ এর মৌখিক নির্দেশে অস্ত্রাগারের সকল রাইফেল ও বুলেট নাম ঠিকানা লিখে মুক্তিযোদ্ধাদের দিয়েদেন। এবং সেই খাতাটি নিজ দায়িত্বে রেখে সব প্রমান পুড়িয়ে দেন।তৎকালীন এস,ডি ও ড শাহ মোহাম্মদ ফরিদ তার চোকোস্লোভাকিয়া ব্রানো ২২ রাইফেল দিয়ে পাক জেট যুদ্ধ জাহাজ তাক করে গুলি করেন( ৭১ মুক্তিযুদ্ধ রাজবাড়ী)
এদিকে ২১ এপ্রিল প্রতিরোধ যুদ্ধস্থলকে স্মরনীয় করে রাখতে সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেছে স্থানীয়রা যদি ও অর্থ অভাবে স্থবির হয়ে আছে কাজ দীর্ঘদিন ধরে।

09/02/2025

যতীন্দ্র মোহন রায়।
রাজবাড়ীর কৃতি সন্তান।
যতীন্দ্রমোহন রায় (১৮৮৩ – ১৮-১-১৯৫১) রাজবাড়ী জেলায় গোয়ালন্দে জন্ম গ্রহন করেন । তিনি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব।১০ বছর বৃটিশ কারাগারে ছিলেন তিনি। তবু আদর্শ থেকে সরে দাড়াঁন নি।

তিনি বাঘা যতীনের সংস্পর্শে এসে বৈপ্লবিক কর্মতৎপরতায় যোগ দেন। বালেশ্বর যুদ্ধের পর কারাবরণ করেন। অসহযোগ আন্দোলন ও লবণ সত্যাগ্রহের জন্য দেড় বছর এবং ভারত ছাড় আন্দোলনের জন্য দুবছর কারাদণ্ড ভোগ করেন। পরে দরিদ্র অনুন্নতদের জন্য হিতকার্যে ব্রতী হন। বঙ্গীয় যুব সম্মেলন ও বিষ্ণুপুর বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনের সভাপতি ছিলেন। ফরিদপুর প্রাদেশিক কংগ্রেসেও তার গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ ছিলো। তিনি আদি অনুশীলন সমিতির সদস্য ছিলেন, পরে তার দল উত্তরবঙ্গে যতীনদার দল নামে পরিচিত হয়।

যতীন্দ্রমোহন রায় ১০ বছর ব্রিটিশের কারাগারে ছিলেন। রাজনৈতিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করার জন্য রাজশাহী কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন। পরে ঐ কলেজ থেকে ১৯০৭ খ্রী. বি.এ. পাশ করেন। পূর্ববঙ্গের বগুড়ায় শিক্ষকতা করবার সময় ‘গণমঙ্গল’ নামে সংগঠনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শিক্ষার সম্প্রসারণে আত্মনিয়োগ করেন। বগুড়ায় ২টি হাই স্কুলও স্থাপন করেছিলেন। এইসময় তিনি বাঘা যতীনের সংস্পর্শে এসে বৈপ্লবিক কর্মতৎপরতায় যোগ দেন। বালেশ্বর যুদ্ধের পর অন্তরীণাবদ্ধ হন। অসহযোগ আন্দোলন ও লবণ সত্যাগ্রহের জন্য দেড় বছর এবং ‘ভারত-ছাড়’ আন্দোলনে দুই বছর কারাদণ্ড ভোগ করেন।

আজীবন বিপ্লবী এই নেতার কথা এখন আর কোথায় শোনা যায় না।যতীন্দ্র মোহন রায় জন্ম ১৮৮৩ - ১৮ মৃত্য ১৯৫১ জানুয়ারী। ইতিহাস বিমুখ জাতির কারনে ইতিহাসের পাতায় ঠায় না পাওয়া এই সব মহৎ হৃদয় মানুষের সম্পর্কে যেমন আমরা কিছু জানতে পারি না। তেমন শিক্ষাও নিতে পারি না।
(বিঃ দ্রঃ ঢাকা জেলার ইতিহাস রচনা এই যতীন্দ্র মোহন রায়ের কিনা কারো জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন)

আজকের দিনেকাজী মোতাহার হোসেন।১৯৫৭ সালে মাওলানা ভাসানী আয়োজিত কাগমারী সাংস্কৃতিক সম্মেলনে সভাপতি করেন  রাজবাড়ী এই কৃতি স...
07/02/2025

আজকের দিনে
কাজী মোতাহার হোসেন।
১৯৫৭ সালে মাওলানা ভাসানী আয়োজিত কাগমারী সাংস্কৃতিক সম্মেলনে সভাপতি করেন রাজবাড়ী এই কৃতি সন্তান।কাগমারি সাংস্কৃতিক সম্মেলন ১৯৫৭ সালে অনুষ্ঠিত একটি বিশেষ তাৎপর্যবাহী জাতীয় সম্মেলন যা পরবর্তীতে পাকিস্তানের বিভক্তি এবং স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয়ে বিশেষ ইঙ্গিতবহ ভূমিকা রেখেছিল।১৯৫৭ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টাঙ্গাইল জেলার কাগমারী নামক স্থানে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

06/02/2025

১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজবাড়ী জেলার একটি বে- সরকারী পাঠাগার।

Address

Dhaka

Telephone

01711221973

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when ঐতিহ্যর রাজবাড়ী। posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to ঐতিহ্যর রাজবাড়ী।:

Share