15/08/2024
"If he had asked us to eat grass or to dig the earth with our bare hands we would have done it for him. But look how he behaved! "
- Major Farook Rahman (One of the army officers who was involved in killing of Seikh Mujib, in 1975)
পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের আশার আলো,
নতুন জীবনের আহবান, শেষ ভরসার জায়গা, যার কথা শুনার জন্য অধীর আগ্রহে লাখো জনতা অপেক্ষার প্রহর গুনতো সে আর কেউ নয় তিনি ছিলেন 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান'।
এই পরাধীন বাংলার অবিসংবাদিত এক নেতা হয়ে উঠে ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান যাকে "বাংলার-বন্ধু" রূপে গ্রহণ করেছিল আপামর জনসাধারণ, মাওলানা ভাসানীর মত জননেতা থাকার পরও।
প্রেক্ষাপট বদল হলো পূর্ব পাকিস্তান হয়ে গেলো স্বাধীন নাম "বাংলাদেশ "! সদ্য জন্ম নেয়া এ দেশে যার জন্য সবাই অপেক্ষা করছিলেন। সবার আস্থার মানুষ কবে আসবেন এই স্বাধীন বাংলায়, তিনি এসেছেন, পরম ভালোবাসায় বাংলার মানুষ তাকে গ্রহণ করলো, চারদিকে আনন্দ, উচ্ছ্বাস, আমাদের নেতা, আমাদের বন্ধু ফিরে এসেছেন। কি রূপকথার মত সব কিছু হচ্ছে এবং এগুলো এদেশের মানুষ দেখেছে, উপভোগ করেছে সে আনন্দ।
শুরু হলো দায়িত্ব নেয়া এবং দেশ পরিচালনার কাজ এরপর ধীরে ধীরে সব কিছুই বুমেরাং হতে লাগলো, সীমাহীন দুর্নীতি, দুর্ভিক্ষ, বিচার বহির্ভূত হত্যা*কান্ড, বাকশাল প্রতিষ্ঠা(BKSL-Bangladesh krishak Sramik Awami League, a one party system of government announced by Mujib on 26th March 1975) , সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া, নিতান্তই আওয়ামীলীগ ছাড়া কেউই আর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে পারবে না ইত্যাদি সংঘটিত হলো উনার শাসন আমলে।
১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ বঙ্গবন্ধুর ডাকে অনুপ্রাণিত হয়ে যে মানুষগুলো সম্মুখ যুদ্ধ করেছে, বঙ্গবন্ধু যাদের বিভিন্ন উপাধি দিয়েছেন যুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য, যারা বঙ্গবন্ধুর কথায় "ঘাস খেতেও রাজি " (মেজর ফারুক এর উক্তি) এরকম কিছু সেনা অফিসার সেদিন বঙ্গবন্ধ র বাসভবন ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে উনাকে এবং সেখানে উপস্থিত আত্মিয়-স্বজনদের হত্যা করা হয়। ইতিহাসের পাতায় যেটা স্থান করে নেয় একটা নিষ্ঠুর হত্যাকান্ড হিসেবেই।
এবার আসা যাক ২০০৮ এর নির্বাচনের দিকে 'শেখ হাসিনার' নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনপ্রিয় দল হিসেবে সরকার গঠন করে। তরুণদের প্রায় অধিকাংশই শেখ হাসিনা কে মেনে নেয় আনন্দের সাথে এবং বেশ উচ্ছ্বসিত ছিল মানুষজন যে এবার দেশে ভালো কিছুই হবে। যদিও শুরু হয় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যাকান্ডের পটভূমি "পিলখানা ট্রাজেডি" দিয়ে, এরপর দিন দুপুরে কু*পিয়ে "বিশ্বজিৎ" হত্যা*কান্ড, ২০১৩ সালের ৫ মে হত্যাকান্ড, ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের দলীয় কর্মীদের বিশেষ করে ছাত্রলীগ দিয়ে মারা, অত্যাচার করা, মোদীর বাংলাদেশে সফর কেন্দ্র করে মুসলিমদের মিছিলে গুলি চালিয়ে হত্যাকান্ড, আইন বহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম, অপহরণ, মিথ্যা মামলা, সাধারণ জনগণের মত প্রকাশে চূড়ান্ত বাঁধা প্রদাণ করা, সংবাদ মাধ্যমগুলোকে দলীয় করন করা, লাখ লাখ কোটি টাকা দুর্নীতি এবং পাচার, প্রশাসন কে সম্পূর্ণ দলীয়করন এবং নিজেদের কাজে পরিপূর্ণ ব্যবহার আর অলিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা তিনটা ভোটহীন নির্বাচন আয়োজন করার মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকা।
যদি ও কয়েকটা স্থাপনা কেন্দ্রিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় অসীম দুর্নীতির বিনিময়ে। পরিণতি কি হলো ৫ আগস্ট, ২০২৪ সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে দ্রুত দেশ পলায়ন, মৃত্যু আসন্ন ভেবে!
বাবা শেখ মুজিব কিংবা উনার মেয়ে শেখ হাসিনা দুজনেই এদেশ শাসন করেছেন, দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে কিংবা আদর্শগত দিক থেকে মিল থাকবে সেটাই স্বাভাবিক, অতিরঞ্জিত করার কিছুই নেই।
আসলে কোনো রাজনৈতিক ফায়দা নিতে নয়, তর্কে জিততে নয়, বরং নিজেদের বিবেকের কাছে পরিষ্কার থাকার জন্য, প্রতিটা বাংলাদেশীর উচিত দেশের অস্তিত্ব, ইতিহাস এইগুলা জানা। ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয় ভবিষ্যত আমাদের কোথায় নিয়ে যেতে পারে।
কয়েকটা ঐতিহাসিক আলোচনা / সমালোচনা/বিতর্ক সবসময়ই থাকবে যেমন,
- কেনো বঙ্গবন্ধু ৭ ই মার্চ, সরাসরি স্বাধীন বাংলাদেশের ঘোষণা দিলেন না, উনি বার্তা দিয়েছিলেন "মুক্তির সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম"(এই ভাষণ নিয়ে অনেক গবেষণা হচ্ছে এবং হবে কারণ এরকম ভাষণ পৃথিবী তেমন একটা অবলোকন করে নাই)
- ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ কেনো বঙ্গবন্ধুর মতো তর্কাতিত জনপ্রিয় নেতাকে এরকম পরিণতি বরণ করতে হলো?
- চার নেতাকে কেনো জেলে হত্যা করা হলো
- জেনারেল জিয়াউর রহমান কিভাবে নতুন রাজনৈতিক দল করলেন এবং কেনই বা তিনি নির্মম হত্যাকান্ডের স্বীকার হলেন!
- জেনারেল এরশাদ এর ভূমিকা দেশ গঠনে এবং তার পতনের কারণ
- এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের পটভূমি এবং বেগম খালেদা জিয়ার ভূমিকা
- বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামীর উত্থান
- ফখরুদ্দিন, মঈন উদ্দিনের শাসন এবং মাইনাস টু ফর্মুলা.
-২০২৪ এর ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি এবং ফলাফল
শেখ মুজিবুর রহমান একটা কথা বলতেন "Nobody understands what I do for my country"
এই একটা লাইন অনেক কিছু ব্যাখ্যা করে, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য এ লাইনটা বেশ দিক নির্দেশনামূলক, যদিও সাবেক স্বৈরশাসক ও একই কথা বলেছেন।
ধন্যবাদ।
১৫ আগস্ট, ২০২৪!