
08/10/2025
ঘুমের ভারসাম্য: সুন্নাহ ও সালাফদের দৃষ্টিভঙ্গি
সৃষ্টির মূলনীতি হলো ভারসাম্য। যারা মধ্যপন্থা অবলম্বন করে, তারাই প্রকৃত কল্যাণ অর্জন করে। ইমাম ইবনে আবিদ দুনইয়া তাঁর আল-আদাব আল-কুবরা গ্রন্থে এক হাকীমের কথা উদ্ধৃত করেছেন: "তন্দ্রা (অপর্যাপ্ত ঘুম) বুদ্ধিকে নিস্তেজ করে তোলে, কিন্তু পূর্ণ ঘুম তা শাণিত করে।"
এখানে 'তন্দ্রা' বলতে বোঝানো হয়েছে সেই হালকা ও অসম্পূর্ণ ঘুম, যা মনকে বিশ্রাম না দিয়ে বরং বিভ্রান্ত করে ফেলে। পক্ষান্তরে, 'ঘুম' বলতে বোঝানো হয়েছে পরিপূর্ণ বিশ্রাম, যা বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তিকে উজ্জ্বল করে তোলে।
তবে মনে রাখতে হবে, শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ঘুম ইবাদতে অলসতা সৃষ্টি করে এবং চিন্তাশক্তিকে নিস্তেজ করে দেয়। এতে ফজরের বরকতপূর্ণ সময় এবং রাতের ইবাদতের সুযোগ হাতছাড়া হয়, যা আত্মিক উন্নতির পথে বড় বাধা। সালাফদের জীবনাচরণে দেখা যায়, তাঁরা অতিরিক্ত ঘুমকে অনাকাঙ্ক্ষিত মনে করতেন।
ফুদাইল ইবনে ইয়াদ রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: "দুটি বৈশিষ্ট্য হৃদয়কে কঠিন করে তোলে-অতিরিক্ত ঘুম এবং অতিরিক্ত খাওয়া।"(তারিখে দিমাশক ৪৮/৪২২)
অনুরূপভাবে, ইমাম ইবনুল কাইয়িম রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন: "হৃদয়কে কলুষিত করে এমন পাঁচটি জিনিস হলো: মানুষের সাথে অতিরিক্ত মেলামেশা, অহেতুক আকাঙ্ক্ষা, আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর প্রতি আসক্তি, পেট ভরে খাওয়া এবং অতিরিক্ত ঘুম।
এই পাঁচটিই হৃদয়ের সবচেয়ে বড় কলুষতা।” এই বিষয়গুলো হৃদয়কে আধ্যাত্মিকভাবে অসুস্থ করে তোলে এবং আল্লাহর স্মরণ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়, ফলে সৎকর্মের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়।
প্রকাশিতব্য ‘মুমিনের ঘুম ও জাগরণ’ বই থেকে নেয়া।