01/08/2023
তাওহীদ হৃদয়কে কবে থেকে চিনেন? কেউ হয়তো ২০২০ অনুর্ধ্ব বিশ্বকাপ থেকে চিনতে পারেন। কেউ আবার চিনতে পারেন বিপিএল থেকে। কথা হচ্ছে তাওহীদ কি সবসময় এরকম সফল ছিলেন?
আমি তাওহীদকে প্রথম দেখি সিলেট সিক্সার্সের হয়ে খেলা বিপিএলটা থেকে। সেই ম্যাচে প্রথমবারের মত টি২০ তে খেলতে নেমে তাওহীদ করে ২৪ বলে ৮ রান। বুঝতে পারছেন? ৩ এ নামা একটা ব্যাটার রান করেছে ২৪ বলে ৮; তার চেয়ে বড় কথা সে রান আউট করিয়েছিলো সতীর্থ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারকে। অনেকের কাছে ফার্স্ট ইমপ্রেশন অনেক ম্যাটার করে, তাই সেদিন যারা তাওহীদকে দেখেছিলো, মনের অজান্তেই ভেবে উঠেছিলো, একে দিয়ে কিসসু হবে না, যদিও এটা ছিলো তার প্রথম ম্যাচ। শুধু তাই নয়, একটা বিপিএল ফাইনালে বরিশালের হয়ে যখন শেষ ওভারে ১০ রান লাগে, লাইফ পেয়েও জেতাতে পারেনি দলকে, যেটার আক্ষেপ হৃদয়ের মাঝে এখনো আছে।
২০২৩ শুরুর আগেও এই ছেলেটাকে কেউ জাতীয় দল তো দূরের কথা, বিপিএল দলের নিয়মিত সদস্য হবে কিনা বলতে পারতো না। ২০২৩ বিপিএল এ সিলেট স্ট্রাইকার্স দলে।যখন তাওহীদ আসলো, অনেকেই বলছিলো, আরেক লর্ডকে নিয়েছে৷ কিন্তু হৃদয়ের জীবনের সমীকরণ পাল্টালো, এই ২০২৩ সালে এসেই। জাতীয় দলে দুই ফরম্যাটে ডাক পেলো। প্রতি ম্যাচেই নিজের ইম্প্যাক্টটা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
♦️হৃদয়ের জার্নিটা যে মসৃণ ছিলো না, আন্দাজ করেছেন হয়তো? হৃদয়ের পরিবার জমি বন্ধক দিয়ে তাকে ক্রিকেট কোচিং করিয়েছে, এটা তো কারোরই অজানা না। আরো সবচেয়ে দু:খজনক কথা হলো, এই যে টাকা জোগাড় করে বগুড়া ছেড়ে ঢাকায় যে একটা একাডেমিতে এসেছিলেন তিনি, সেটা ছিলো সম্পূর্ণ একটা ভূয়া প্রতিষ্ঠান। যখন মায়ের সব কষ্ট বিফলে গেলো, তিনি ভেবেছিলেন ক্রিকেটটা ছেড়ে দিবেন আর কোনো আবদার নিয়ে তো মায়ের কাছে যেতেও পারবেন না। তবে সেখানে টুকটাক এইজ লেভেলে খেলা চালিয়ে যেতেন। সেখান থেকেই আস্তে আস্তে উত্থান হয়৷ নিজেকে প্রমাণ করে করে তিনি আজ জাতীয় দলে।
বর্তমান সেটাপে তাওহীদ হৃদয় দলের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছে, কয়েকদিনের ব্যবধানে। ছেলেটা যে ট্যালেন্টেড এটা নিয়ে কারো সন্দেহ থাকার কথা না। ছেলেটার খারাপ সময় হয়তো আসবে, যেটা আর ৫-১০ টা খেলোয়াড়েরই আসে। তবে আমি অনুরোধ করবো, ছেলেটার যদি খারাপ সময় আসেও আমরা যেন দর্শক হিসেবে যে প্রপার সাপোর্টটা দেওয়া উচিৎ, সেটা দিতে পারি। কারণ সময় কম হলেও, হৃদয় ছেলেটার মাঝে যে প্রতিভা আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।