গল্পের ডায়েরি

গল্পের ডায়েরি যাদের গল্প পড়তে কিংবা গল্প শুনতে ভালো লাগে , তাদের সবাইকে এই পেজের স্বাগতম। আশা করি
গল্পপ্রিয় মানুষজন আমার পেজটাকে সাপোর্ট করবেন।
(1)

 #বড়ো__আপা__২ #পর্ব-৩শারমিন আঁচল নিপাফিয়না খেয়াল করল সেই কালো বিড়ালটা যেটা সে আগেও দেখত। কিন্তু শেষ ঘটনার পর আর দেখেনি। ...
12/10/2025

#বড়ো__আপা__২
#পর্ব-৩
শারমিন আঁচল নিপা

ফিয়না খেয়াল করল সেই কালো বিড়ালটা যেটা সে আগেও দেখত। কিন্তু শেষ ঘটনার পর আর দেখেনি। মানে অনন্যার হাসবেন্ড দীপকের মৃত্যুর ঘটনার পর এ কালো বিড়ালের কথা সে ভুলে গিয়েছিল। এর আগে প্রায়ই দেখত সে। কিন্তু দীপকের মৃত্যুর পর আর দেখেনি৷ এত বছর পর আজকে আবার দেখল। বিড়ালটা এক কোণ থেকে এসে মিলিয়ে গেল। ফিয়নার শরীর কেমন করে যেন কাঁপছে। বিশেষ করে হাত গুলো থরথর করে কাঁপছে তার। যুক্তির চোখে বিষয়টি লক্ষ্যণীয় হলো। সে ফিয়নার হাতের তালুটা নিজের দুহাতের তালু দিয়ে চেপে ধরে বলল

"এনিথিং রং? কী হয়েছে তোমার?"

ফিয়না কথায় বলতে পারছিল না। চুপ করে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। নিজেকে কোনোরকম সামলে নিল সে। হাতটা ছুটিয়ে একটা কাশি দিয়ে উত্তর দিল

"আমি ঠিক আছি।"

এর মধ্যেই অদিতি ডেকে উঠল তাকে। অদিতি এ প্রোগ্রামের হোস্ট। পুরো প্রোগ্রাম পরিচালনার দায়িত্ব তার। কারণ ফিয়নার পরিবারে দায়িত্ব পালনের মতো তেমন কেউ ছিল না। সবাই বিদেশ থাকে। আর আপন মা তো জেলে। ঘৃণায় কখনও দেখা করতেও যায় না। যার কাছে আছে সে ও প্যারালাইজড। তাই বাইরের কাউকে দায়িত্ব দিতে বাধ্য হয়েছে সে। অদিতির ডাক শুনে ফিয়না যুক্তিকে বলল

"অনন্যার বিষয়টা নিয়ে আমরা পরে কথা বলব। অনেক কিছুই জানার বাকি। তাই তোমাকে এক কথায় বুঝানো সম্ভব না। আমি আস্তে ধীরে তোমাকে বলব। অনুষ্ঠানটা শেষ হোক।"

যুক্তি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল

"আচ্ছা ঠিক আছে। সমস্যা নেই। তুমি স্টেজে যাও। আর শুভকামনা তোমার জন্য। রুদিতাকে দেখো তোমার আগে স্টেজে গিয়ে বসে আছে। "

ফিয়না একটু হেসে স্টেজের দিকে এগুলো। এদিকে যুক্তি রোবটের মতো দাঁড়িয়ে আছে। তার মাথায় এতক্ষণ ছিল অনন্যার অতীত নিয়ে কথা। এখন ঝেঁকেছে অনন্যার পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন। অনন্যা বলেছে তার মা অন্যত্র বিয়ে করেছে এরপর খু'ন হয়েছে। বাবাও মারা গেছে। এক বোন বিদেশ থাকে যোগাযোগ নেই। তবে আনহারির কথা অনুযায়ী অনন্যা নিঁখোজ কয়েক বছর হবে। তাহলে অনন্যার পরিচয় কী?সে যে অতীত বলেছিল এটা কী তাহলে মিথ্যা? আর অনন্যা যদি এদের বোন হয় তাহলে অনন্যা কেন এখানে আসছে না? অনন্যার মনে রাখার শক্তি আছে সেটা সে কথা বলেই বুঝতে পেরেছে। এমন না যে সে তাদের ভুলে গেছে। যদি ভুলে না যায়, তাহলে তাদের কাছে কেন আসছে না? অনন্যা নামটা ঘিরেই যেন একটা রহস্য তাকে তলিয়ে নিচ্ছে।

একটা হাতের স্পর্শ কাঁধে পেল যুক্তি। পাশ ফিরে তাকিয়ে লক্ষ্য করল আনহারির হাত। আনহারির দিকে তাকাতেই আনহারি বলে উঠল

"অনন্যার কথায় ভাবছেন তাই তো?"

যুক্তি হালকা নিঃশ্বাস ফেলে বলল

"অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। অনন্যার বলা অতীতের বর্ণণা আপনাদের পরিবারের সাথে মিশছে না। অনন্যার ভাষ্যমতে তার একটায় বোন ছিল। আপনারা তো দেখছি তিন বোন। ওর বাবা, মা মারা গেছে এটা বলেছিল। এখন তো দেখছি মা বেঁচে আছে।"

যুক্তির কথা শুনে আনহারি আরেকটু রহস্য বাড়াতে বলল

"আমাদের বাবা বেঁচে আছে। তবে আমাদের দুজনের পালিত বাবা আলাদা। তারা মারা গেছে। আর আমাদের জন্মদাত্রী মা জেলে। আর ফিয়না আমাদের সৎ বোন। লাবন্য জোহা আমার পালিত মা। সব মিলিয়ে আপনাকে পুরো কাহিনি না বললে বুঝবেন না। আপনি স্থির হয়ে অনুষ্ঠানটা উপভোগ করুন। ফিয়নার বিয়ের পর সব খুলে বলব।"

কথাগুলো শুনে যুক্তির মাথা আরও নড়ে গেল। কৌতুহল যেন তাকে গ্রাস করে নিল। কী বলছে কী হচ্ছে কিছুই সে মেলাতে পারছে না। আবারও স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। এবারও আনহারির ডাকে তার ঘোর কাটে। আনহারি তাকে বলল

"চলুন স্টেজের দিকে যাওয়া যাক।"

যুক্তি এগুচ্ছে ধীর গতিতে। আর আনহারি এগুচ্ছে একটু দ্রূত গতিতে। যুক্তি একটু সামনে গিয়ে থেমে যায়। আর আনহারি স্টেজে উঠে।

এদিকে ফিয়নার ভেতরটাও অনন্যার কথা শুনে অস্থির হয়ে আছে। তবুও নিজেকে সামলে অনুষ্ঠান উপভোগ করছে সে।

চারদিকে জোরালো আওয়াজে গান বাজছে। একটা মুখরিত পরিবেশ। ফিয়নার বন্ধু মহল কেউ ছিল না। তাই এখানে যারা উপস্থিত, যারা নাচছে তারা সবাই ভাড়া করা। সত্যি বলতে আপন যারা আছে তারা কেউ বেঁচে নেই, কেউ হারিয়ে গেছে আবার কেউ কেউ দেশের বাইরে।

গানের আওয়াজ টা হুট করেই থেমে গেল ফিয়নার এক চিৎকারে। ফিয়নার আচমকা এমন চিৎকারে সবাই যেন কেঁপে উঠল। ফিয়নাকে বেশ অস্থির দেখাচ্ছে। শ্বাসকষ্ট বেড়েছে তার। আনহারি ফিয়নাকে শক্ত হাতে ধরে বলল

"তুমি কি এখনও অনন্যার কথা চিন্তা করছো? কী হয়েছে তোমার? এমন করছো কেন? তুমি কি ঠিক আছো?"

ফিয়না কাঁদো কাঁদো গলায় বলল

"অনন্যাকে তো হারিয়ে ফেলেছি। নসিবে থাকলে ফিরে পাব। আপন সবাই তো আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন আমার ভালোবাসার মানুষটাও হারিয়ে গেল। দুটো বছর একসাথে থেকে একে অপরকে এত কাছে থেকে চিনলাম। আর এখন বিয়ের দিন সে পালিয়ে গেল। ওর বড়ো বোন কল দিল। সে নাকি আমাকে বিয়ে করতে পারবে না। তাই একটা চিঠি লেখে দেশের বাইরে চলে গেছে। আচ্ছা আপা আমার জীবনেই কেন এমন হবে বলো তো? আমি কী খুব খারাপ যে এত শাস্তি পাব?"

যুক্তি যতবারেরই স্বাভাবিক হতে চেয়েছিল ততবারেই এমন অবাক করা ঘটনা তাকে অস্বাভাবিক করে তুলছে। এত অদ্ভুত ঘটনা প্যারালাল আকারে হতে সে কখনও দেখেনি। দুই বছর সম্পর্কের পর ঠিক করা বিয়ে কী করে এভাবে ভেঙে যায়। ছেলে যদি না চাইত আগেই বিয়ে ভাঙতে পারত। আর ছেলে দেশের বাইরে গেলে নিশ্চয় আগেই ভিসা প্রসেসিং করেছিল। তাহলে হলুদের দিন এমন কান্ড ঘটানোর কী দরকার ছিল! একজন মানুষ এত ইমম্যাচুরের মতো কাজ করবে না। এখানেও কিছু না কিছু রহস্য তো লুকিয়েই আছে। এখন তো তার পুরো বিষয়টা অদ্ভুত রহস্যময় লাগছে। মনে হচ্ছে কোনো রহস্যের ফাঁদে সে পড়ে গেছে। চায়লেই সব সমাধান করতে পারছে না।

এদিকে ফিয়নাকে আনহারি বুঝ দিতে লাগল। ফিয়না বাচ্চাদের মতো কাঁদছে। উৎসব মুখরিত পরিবেশটা হঠাৎ করেই মরা বাড়ির মতো নীরব হয়ে গেল। ইভেন্টের লোকেরা আনহারির এক ইশারাতেই সব খুলে নিয়ে যেতে লাগল। গানের মাদল থেমে গেল। সবাই সবকিছু গুছিয়ে টাকার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। আনহারি ফিয়নাকে রুমে নিয়ে গেল। সেখানে শুইয়ে দিয়ে সবাইকে টাকা দিয়ে বিদায় করল। রুদিতা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। তার ছোট্ট মন এতটুকু বুঝতেছে যা হচ্ছে স্বাভাবিক কিছু না। তাই গুটিসুটি হয়ে সব দেখছে। সবাই চলে গেলেও যুক্তি রয়ে গেল ফিয়নাকে একটু স্বাত্ত্বণা দেওয়ার জন্য।

ফিয়না বিছানায় শুয়ে এক নজরে সিলিং এর দিকে তাকিয়ে কাঁদছে। আনহারি তাকে ধরতে গেলে। যুক্তি আনহারিকে বাঁধা দিয়ে বলল

"এখন তাকে কিছু বলে উত্তেজিত করার দরকার নেই। স্বাভাবিক স্বাত্ত্বণাও তার কাছে এখন বিষের মতো লাগবে। তাকে এক মনে নীরব হয়ে থাকতে দিন। লাইটটা অফ করে ডিম লাইটটা জ্বালিয়ে দিন। আর আমরা চলুন ঘরের ঐ কোণাটায় বসি। একা রেখে যাওয়াও ঠিক হবে না। কারণ এসব রোগীরা সুইসাইডাল প্রবণ হয়ে যায় হুট করে৷"

আনহারি যুক্তির কথায় কান দিল। কারণ যুক্তি একজন সায়কেট্রিক্স। সে যা বলেছে বুঝে শুনেই বলেছে। তাই তারা ঘরের এক কোণে বসল। যুক্তি তখন আনহারিকে বলল

"আমাকে কি অনন্যার ব্যাপারে বলা যাবে?"

আনহারি হালকা গলায় বলল

"হুম বলা যাবে।"

কথাটা বলে একটা নিঃশ্বাস নিল তারপর ঘটে যাওয়া ঘটনা বলতে লাগল। এবং অনন্যা নিঁখোজ কীভাবে হয়েছিল এবং নিঁখোজ হওয়ার পরের রহস্যও বলে উঠল। যা কাহিনির নতুন একটা মোড় আনল।

Continue

 #বড়ো__আপা__২ #পর্ব- ২শারমিন আঁচল নিপা কালো একটা বিড়াল কোথায় থেকে এসে যেন মিলিয়ে গেল। যুক্তি হালকা দম নিল। রুমের ভেতর থে...
12/10/2025

#বড়ো__আপা__২
#পর্ব- ২
শারমিন আঁচল নিপা

কালো একটা বিড়াল কোথায় থেকে এসে যেন মিলিয়ে গেল। যুক্তি হালকা দম নিল। রুমের ভেতর থেকে তার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে রুদিতা বের হয়ে এলো। যুক্তিকে জড়িয়ে ধরে বলল

"মাম্মা চকলেট এনেছো?"

যুক্তি রুদিতার কথা শুনে কিছুটা অপ্রস্তুত গলায় বলে উঠল

"আজকে তো মাম্মা ভুলে গেছে। কাল অবশ্যই আনব। রাগ করে না আমার জান বাচ্চাটা।"

রুদিতা বাচ্চা হলেও মাকে বেশ বুঝে। সে হালকা হেসে আধু আধু গলায় বলল

" ঠিক আছে মাম্মা। আজকে তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। কাল কিন্তু মনে করে চকলেট আনবে।"

যুক্তি রুদিতার গালে একটা চুমু কেটে বলল

"আলবাদ আনব।"

যুক্তি কাপড় ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানায় এলিয়ে পড়ল। মোবাইলটা বেজে উঠল ফিয়নার কলে। যুক্তি কলটা ধরল। ফিয়নার সাথে তার পরিচয় হয় একটা বাস স্ট্যান্ডে। রুদিতা দৌঁড়ে যাচ্ছিল রাস্তায়। সে মুহুর্তে একটা বাসও বিপরীত থেকে ছুটে আসছিল। ফিয়নায় তখন রুদিতাকে আল্লাহর ইশারায় বাঁচায়। সে থেকে ফিয়নাকে বেশ আপন করে নেয় যুক্তি। যদিও তার সাথে খুব ক্লোজ না। তবুও মাঝে মাঝে খোঁজ নেওয়া, রুদিতার সাথে কথা বলার পর্ব তাদের চলে। ফিয়নার কলটা ধরেই যুক্তি বলে উঠল

"হ্যাঁ বলো, কেমন আছো?"

ফিয়না হালকা হেসে বলল

"আমি তো ভীষণ ভালো আছি। কালকের কথা মনে আছে তো? কাল সন্ধ্যায় আমার বাসায় কিন্তু চলে আসবে। আমার হলুদ হবে। তুমি না আসলে আর রুদিতা না আসলে আমার হলুদ ইনকমপ্লিটেই থেকে যাবে। "

ফিয়নার কথা শুনে যুক্তি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। সে সত্যিই সবটা ভুলে গেছে। তবুও সেটা ফিয়নাকে বুঝতে না দিয়ে বলল

"হুম অবশ্যই আসব আমি। সন্ধ্যা সাতটার মধ্যেই চলে আসব।"

বলেই কলটা কাটল। যুক্তির মাথা থেকে অনন্যার ঘটনা সরছেই না। যতবার সরাতে চাচ্ছে ততবারেই যেন সেটা ঝেঁকে বসছে। যুক্তি চোখ বন্ধ করলেই অনন্যার মুখটা ভেসে আসছে। হঠাৎ করে তার মাথায় ঢুকলো সে তার স্যারকে অনন্যা কাল যাবে এ বিষয়টি বলে নি। তাই চট করেই ফোনটা হাতে নিয়ে অনুভূমিক প্রান্তকে কল দিলেন।

অনুভূমিক প্রান্ত তখন নিজের বাসার লম্বা করিডোরে পায়চারি করছেন। রাতের খাবারের পর এটা তার স্বাভাবিক রুটিন। প্রতিদিনেই তিনি এভাবে হাঁটেন৷ যুক্তির কল পেয়ে সে কলটা ধরে হ্যালো বলতেই যুক্তি কোনোরকম সালাম বা কোনো সম্বোধন না করেই সরাসরি বলল

"কাল সকাল দশটায় একজন পেশেন্ট আসবে আপনার কাছে। তার নাম অনন্যা। মেয়েটার বেশ অদ্ভুত একটা অতীত আছে। আপনি একটু বিষয়টি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করবেন৷ মেয়েটাকে দেখে ভীষণ অসহায় লাগছিল। এ অসহায়ত্ব যেন কাটিয়ে উঠতে পারে সে বিষয়টায় একটু খেয়াল রাখবেন। আমার মনে হয়েছে আমার থেকে ভালো ট্রিটমেন্ট আপনিই করতে পারবেন।"

অনুভূমিক প্রান্ত তার লম্বা চুলগুলো হাত দিয়ে আঁচরাতে আঁচরাতে জবাব দিল

"ঠিক আছে। তুমি কেমন আছো?"

যুক্তি ঠিক আছে বলার পরেই ফোনটা কেটে দেয় তাই পরের বাক্যটা সে শুনে নি। এদিকে যুক্তির আচরণে বেশ কিছুটা অবসাদ দেখে অনুভূমিক প্রান্ত একটু চিন্তার ভাঁজ কপালে টেনে বসলেন।

পরদিন সকাল বেলায় যুক্তির ফোন বেজে উঠল। আজকে তার উইকেন্ড তাই সকালে উঠার প্যারা নেই। যুক্তির মেয়েকে তার বাসার আয়ায় দেখাশোনা করে। যুক্তির হাসবেন্ড বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরে থাকে। তাই বাসায় তারা তিনজনেই থাকে। যুক্তি, রুদিতা আর রুদিতার আয়া। হঠাৎ কলটা বেজে উঠায় যুক্তি অপ্রস্তুত হয়ে কলটা ধরতেই লক্ষ্য করল অনুভূমিক প্রান্ত কল দিয়েছে। সে কলটা ধরে আমতা আমতা করে বলল

"স্যার এত সকালে? কিছু হয়েছে কী?"

অনুভূমিক প্রান্ত হেসে জবাব দিল

"বেলা বারোটা বাজে যুক্তি। আমি কল করেছি তোমার পেশেন্ট তো আর আসে নি। তোমার সাথে তার যোগাযোগ হয়েছে কি'না। সে আসবে কি'না সেটা জানার জন্য। আর তোমাকে গতকাল থেকে বেশ চিন্তিত লাগছে। এনিথিং রং?"

বেলা বারোটা বাজে শুনেই যুক্তি চমকে গেল। রুমে টানানো দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল সত্যিই ১২ টা বেজে গেছে। যুক্তি হতচকিয়ে বসে পড়ল। এত বেলা করে ঘুমানোর অভ্যাস তার নেই। সর্বোচ্চ বেলা ৯ টা অবধি সে ঘুমিয়েছে। এর বেশি তার কখনও হয়নি। হালকা গলায় অনুভূমিক প্রান্তকে উত্তর দিল

"না তেমন কিছু না। কেন মেয়েটা গেল না বুঝতে পারছি না। আমি তো তাকে সিরিয়াস হয়েই বলেছিলাম। আচ্ছা না গেলে কী আর করার। আর আমার কাছে তার কোনো নম্বর নেই। নিতে বেমালুম ভুলে গিয়েছি। নেওয়া টা জরুরি ছিল। যদি ফের আবার আসে নিয়ে নিব। আমি ঠিক আছি চিন্তা করবেন না। উইকেন্ড তো তাই ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছে ।"

অনুভূমিক প্রান্ত আর কথা বাড়াল না। ফোনটা রেখে দিল। যুক্তি ফোনটা রেখে ফ্রেশ হয়ে নিল। এক কাপ র' চা বসিয়ে দিল। সাথে কয়েক পিস ফ্রোজেন রুটি ছ্যাকে নিল। র' চা টা হয়ে গেলে সে তা নিয়ে ড্রইং রুমে এসে সোফায় বসলো। আর রুটি গুলো চায়ে ভিজিয়ে খেতে লাগল।

রুদিতা আয়ার সাথে খেলছে। যুক্তির মাথায় অনন্যার কথায় ঘুরছে। কেন অনন্যা সেখানে গেল না ভাবতে লাগল। মেয়েটার সাথে কি কিছু হয়েছে? এসব নানাবিদ চিন্তা তার মাথায় ঝেঁকে ধরেছে।

কিছুক্ষণ চিন্তা করে নিজেকে সামলে নিল সে। ফিয়নার বিয়ে তাকে যেতে হবে। ফিয়নার বাসা এখান থেকে ভালোই দূরে। রওনা দিলে এখনই দিতে হবে। তাই রুদিতার আয়া সায়েবাকে সে ডাকল। সায়েবা দৌড়ে এসে উত্তর দিল

"আপা কিছু বলবেন?"

যুক্তি স্বাভাবিক গলায় বলল

"রুদিতার হলুদ গাউনটা বের করো। আর ওকে গোসল করিয়ে দাও। একটা দাওয়াতে যাব।"

সায়েবা মাথা নেড়ে সম্মতি দিয়ে হ্যা বলল। যুক্তিও গোসল করতে চলে গেল। শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে বারবার অনন্যার কথায় ভাবছে। যতই সে এড়িয়ে যাচ্ছে বিষয়টি ততই তার মাথায় বিষয়টি গেঁথে যাচ্ছে।

গোসল সেরে একটা হলুদ শাড়ি পরে নিল। লম্বা চুল গুলো খোপা করে আর্টিফিশিয়াল বেলীর মালা দিয়ে মুড়ে নিল। এদিকে রুদিতাও প্রায় রেডি। পাঁচ বছর হলেও রুদিতার মাথার চুল কোমর সমান লম্বা। জন্মের পর একবার চুল কেটেছিল এরপর আর কাটে নি৷ তাই তরতর করে চুলগুলো বেড়েছে। রুদিতার চুলগুলোও খোপা করে আর্টিফিশিয়াল বেলীর মালা দিয়ে মুড়ে নিল।

এরপর দুজন রওনা দিল ফিয়নার বাসার উদ্দেশ্যে। ঠিক ছয়টার মধ্যে তারা পৌঁছে গেল। যুক্তি যতদূর জানে ফিয়নার মা প্যারালাইজড আর বোন আছে। সে তার মাকে নিয়েই থাকে। আর বোন থাকে দেশের বাইরে৷ সেখানে তার সংসার হয়েছে।

যুক্তি ফিয়নার বাড়িতে প্রবেশ করতেই থমকে উঠল। সামনে অনন্যা দাঁড়ানো। সে তাড়াহুড়ো করে অনন্যার কাছে গেল। সরাসরি ভূমিকা রেখে বলে উঠল

"আপনি আজকে অনুভূমিক প্রান্তর কাছে কেন যান নি? আর কেমন আছেন আপনি?"

ওপাশ থেকে উত্তর আসলো

"আমি তো আপনাকে চিনতে পারলাম না৷ কে আপনি?"

"আমি যুক্তি। গতকাল যে আমার কাছে এসেছিলেন আপনি। মনে নেই?"

"আমি তো গতকাল লন্ডন থেকে এসেছি। আমার বোনের বিয়ের জন্য। আপনি কাকে বলছেন? আমাকে?"

যুক্তি বেশ অবাক হয়ে গেল। সে বিস্মিত গলায় বলল

"আপনি অনন্যা না?"

অনন্যা নামটা শুনে আনহারিও কেঁপে উঠল। সে যুক্তিকে অস্থির গলায় বলল

"আপনার কাছে কী গতকাল আমার মতো দেখতে কেউ এসেছে? আর সে কি আপনাকে অনন্যা নামটা বলেছে? তার কোনো নম্বর কী আছে? আমাকে দেওয়া যাবে?"

যুক্তি বুঝতে পারছে না আনহারি কি বলছে! যাকে সে অনন্যা ভাবছে তাহলে সে অনন্যা না? সে আবারও জিজ্ঞেস করল

"আপনার নাম কি?"

আনহারি হালকা গলায় বলল

"আনহারি। অনন্যা আমার বোন। কয়েক বছর আগে সে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। কয়েক বছর যাবত আমরা তাকে খুঁজছি। মাঝে মাঝে মনে হয় অনন্যা বেঁচে আছে এটা আমাদের হ্যালুসিনেশন। তবে এটা বারবার ভুল প্রমাণিত হয়৷ এই যে দেখুন আপনিও তাকে দেখেছেন। তাহলে সেটা কী করে আমাদের মনের ভুল হতে পারে৷"

এর মধ্যেই ফিয়না চলে আসলো। ফিয়না যুক্তির দিকে এগিয়ে এসে বলল

"কেমন আছো? তুমি এসেছো অনেক খুশি হয়েছি।"

তারপর আনহারির দিকে আঙ্গুল তাক করে বলল

"এটা আমার বোন আনহারি। আমার মা লাবন্য জোহা প্যারালাইজড হয়ে যাওয়ায় এখানে আসতে পারে নি৷ "

এরপর ফিয়না, যুক্তি আর রুদিতাকে দেখিয়ে আনহারিকে বলল

"এ হলো যুক্তি এবং তার মেয়ে। যার কথা তোমাকে বলেছিলাম বড়ো আপা। যার গল্প করেছিলাম। উনিই হলেন সে।"

আনহারি একটা দম নিয়ে বলল

"আপনার কথা অনেক শুনেছি।"

যুক্তির মাথায় আর কিছু ঢুকছে না। সে আবার প্রশ্ন করল

"আপনার বোন অনন্যার সাথে কী হয়েছিল?"

যুক্তির মুখে অনন্যার কথা শুনে ফিয়না বেশ চমকে উঠে। কারণ যুক্তিকে অনন্যার কথা সে কখনও বলে নি। তাই কৌতুহল গলায় বলে উঠল

"অনন্যার কথা আপনি কী করে জানেন?"

যুক্তি এক নাগাড়ে সবটা বলল। একটুও যেন দম নিল না। ঠিক এ মুহুর্তে ফিয়নার চোখে পড়ল অদ্ভুত একটা বিষয়। যেটা এ দীর্ঘ তিন বছরেও লক্ষ্যণীয় হয়নি তার।

[এটা আমার বড়ো আপা গল্পের ২য় পরিচ্ছেদ। তাই আপনার বুঝতে সুবিধা হবে যদি আমার বড়ো আপা গল্পটার ১ম পরিচ্ছেদ পড়েন। না পড়লেও সমস্যা নেই। আমি এমন ভাবে লিখব যাতে আপনাদের ২য় পরিচ্ছেদ পড়লেও তেমন কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয়।]

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 9

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 8

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 7

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 6

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 5

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 4

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 3

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 2

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না। Part 1

12/10/2025

কাঁচা কলার খোসা দিয়েও যে এরকম একটা মজাদার রেসিপি হয়, ভিডিও না দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন না।

Address

Mirpur Road
Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when গল্পের ডায়েরি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to গল্পের ডায়েরি:

Share