30/07/2025
শি ল্পে র সে তু ব ন্ধ নে আ ম রা ই শী র্ষে
বইমেলা-২০২৬
গ্রন্থ:প্রশ্নবোধক
ধরন:উপন্যাস
লেখক:মোঃ রোকন উদ্দিন সেতু
প্রচ্ছদ:ফারহান শিব্বির
প্রকাশনায় : সপ্তর্ষি - Saptarshi
প্রুফরিডিং: সপ্তর্ষি টিম
মূল্য:০০০০
মানসম্মত বই প্রকাশ করতে চাইলে আজই যোগাযোগ করুন।- প্রকাশক এর সাথে -01714225520
শত শত বছর ধরে শ্বাশত সত্যের মুখোমুখী ভালোবাসা | ভালোবাসা ছাড়া কি আমাদের একদিন ও চলে ? সেখানে কে পুরুষ আর কে নারী সেটি বড় কথা নয় , বড় কথা হলো আমরা সবাই মানুষ | এই মানুষের ভিড়েই মানুষ খুঁজে নেয় ভালোবাসার মানুষ কে | কিনতু প্রশ্ন হলো সব ভালোবাসার মানুষ কি ভালোবাসার মানুষ হতে পারে ? উত্তর আপেক্ষিক |
কারণ স্থান কাল পাত্র ভেদে ভালোবাসার ভিন্নতা যেমন থাকে মানুষের কাছে, ঠিক তেমনি থাকে ভালবাসার রং বদলানোর "রঙিন মুখোশ" অমানুষের কাছে | কিনতু
কেন ? এই কেন আমাদের প্রত্যেকের জীবনে অহরহ |
আমরা প্রতিনিয়ত নানান প্রশ্নের মাঝে পড়ি আবার নানান প্রশ্ন অন্যকেউ করে থাকি | কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলেও কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়না কিংবা দেয়া যায় না | আবার কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর প্রশ্ন দিয়ে করতে হয় | এই রকম হাজারো প্রশ্নের বেড়া জালে গাঁথা জীবন মানুষের |. আপনার , আমার , আমাদের নানান ঘটনা সংমিশ্রনে প্রকাশিত কিংবা অপ্রকাশিত অনেক প্রশ্ন নিয়ে লেখা এই প্রশ্নবোধক |
আমার ছয় বছরের ছোট ছেলে আহিল হোসাইন রিহাম কে দিয়ে শুরু করা যাক | সে এক মুহূর্তের জন্য কথা না বলে থাকতে পারেনা | তার সমস্ত পৃথিবী জুড়ে আমি | আমার কাছে তার যত প্রশ্ন | বেশির ভাগ প্রশ্নই তাঁর গেম নিয়ে রুব্লকস নিয়ে ছবি একা নিয়ে ছবির রং নিয়ে | যদিও আমি সব বিষয়ে অনভিজ্ঞ | আমি সব প্রশ্নের উত্তর ওয়াও , রিয়েলি . রাইট বলে মনযোগী শ্রোতা বলে প্রমান দিয়ে থাকি
তার কাছে আমি সবজান্তা | যদি তার প্রশ্নের উত্তর চাওয়া পাওয়ার সাথে না মিলে , সাথে সাথে একটি কমন প্রশ্ন ছুড়ে দেয় | তা হলো - তুমি কি আমাকে লাভ করোনা ? তাঁর এমন প্রশ্নের উত্তরে সব সময় বলি " আই লাভ মোর দেন ইউ "
তখন সেও বলে - "নো ,আই লাভ মোর দেন ইউ বাবা " রাইট বাবা ? উত্তরে বলি ইউ রাইট | এখন আমাকে একটু সময় দাও অফিসের ড্রেস টা চেঞ্জ করি ? সাথে সাথে আরেকটি প্রশ্ন -
: তোমার কাজ কেমন ছিল বাবা ?
: ভালো |
: তুমি টায়ার্ড ?
: নো
: তোমার ফোন টা আমাকে দিবা ?
: কেন ?
: আমি একটা সনিক আঁকবো | তুমি কি সনিক লাইক করো ?
: হুমম করি
: তা হলে ফোন টা দাও .
: টেবিলে রাখা আছে . নাও
: ফেইস আইডি কে দিবে ?
: নিয়ে আসো |
: ইউ আর দ্য বেস্ট বাবা , উম্মা লাভ ইউ
এমনি করে কাজ শেষে ছোট ছোট প্রশ্নের মাঝে খুঁজে পাই এক অনাবিল সুখ আর আনন্দ |
এতো সব প্রশ্নের মাঝে কিছু কিছু প্রশ্ন আমাকে সমস্যায় পড়তে হয় | প্রতিদিনের মতো ছেলে কে নিয়ে ঘুমোতে যাবো
তার জন্য অতিরিক্ত একটি ঘন্টা হাতে রাখতে হয় , তাঁর সারা দিনের বাকি সব প্রশ্ন গুলো শুনার জন্য | শুরুতে সে তার মুখস্ত করা দোয়া , কালেমা আর সূরা গুলো রিভাইস করে | প্রতি রাতের রুটিন | রিভাইস শেষ হতে না হতেই তার
প্রশ্ন করা শুরু | তত ক্ষণে হাত পা আর শরীর দিয়ে আমাকে আষ্টে পৃষ্ঠে ভালো করে জড়িয়ে ধরেছে | এটি তার ঘুমের পূর্ব প্রস্তুতি | যে ভাবে সে জড়িয়ে নিয়েছে তাতে করে আবার , আমি এদিক সেদিক নড়তে পারবোনা | তাঁর ছোট্ট হাতের আঙ্গুল গুলো ততক্ষনে আমার মুখের উপর নাক চোখ কান ব্রু নিয়ে খেলা করে | আমরা মুখোমুখী শুয়ে আছি | এরই মাঝে তার প্রশ্ন করা শুরু হয়ে গেলো -
: আচ্ছা বাবা আমি আমার চোখ দিয়ে তোমার মুখ দেখি
চোখ দেখি , নাক দেখি, চুল দেখি সব দেখি রাইট বাবা ?
: হুমম রাইট
: তা হলে আমি আমার চোখ দিয়ে আমার মুখ দেখিনা কেন ??
এমন একটি প্রশ্নে আমি অবাক হলাম | আমার জন্য উত্তর দেয়ার জন্য প্রশ্নটি কঠিন হয়ে পড়লো | তার কাছে আমি সব জান্তা | তাঁকে কিছু একটা উত্তর দেয়া লাগবেই . তা না হলে ঘুমাতে তার আরো বেশি সময় নিবে | আমি বললাম -
: কারণ তুমি আমাকে লাভ করো তাই আমার টা তুমি দেখো
আর আমি তোমাকে লাভ করি তাই তোমার মুখ আমি দেখি
রাইট ?
: হা হা হা হা ইটস সো ফানি , রাইট বাবা ?
: হুম রাইট | শেয়ারিং কেয়ারিং | এখন ঘুমাও
ততক্ষনে ছেলের হাসির শব্দ শুনে আমার স্ত্রী লিভিং রুম থেকে ডেকে বলছে - আহিল ......তুমি এখনো ঘুমাওনি ?
ঘুমাও বলছি . আর কোন শব্দ শুনতে চায় না বলছি |
মায়ের ডাক শুনে সে আরো জড়ো হয়ে আমার বুকে লেগে থাকে | কিছুক্ষন চুপচাপ থেকে আস্তে করে আরেকটি প্রশ্ন করে বসে -
: আচ্ছা বাবা তুমি কি দাদা ভাই , দাদি কে লাভ করো ?
: অনেক লাভ করি |
: তুমি কি এখন ওদের কে দেখো ?
: হুম দেখি
: হা হা হা ..... ইউ সো ফানি | তুমি লায় করছো বাবা | ওরা তো আল্লাহর কাছে চলে গেছে |
তার এমন কথায় বুকের ভিতর টা কেমন যেন হাহাকার করে উঠলো | মনের অজান্তে একটা দীর্ঘ নিঃস্বাস বেড়িয়ে এলো |
ছেলে টাকে বুকের মাঝে ছেপে ধরে বললাম -
: যারা আল্লাহর কাছে চলে যাই , তাঁদের কে চোখ বন্ধ করে মনে মনে দেখতে হয় |
: ওহ থ্যাংক ইউ বাবা .........