20/07/2025
Muhsin Abdullah ( মুহসিন )
বিরাট জনসমাবেশের মাধ্যমে জামায়াতের শক্তির একটা দিক জানান দেয়া শেষ। এবার জামায়াত কী করবে?
জামায়াতের সাংগঠনিক শক্তি, সততা, জনসমর্থন নিয়ে মানুষের মনে মোটামুটি একটা আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে।
কিন্তু বর্তমান পৃথিবীর রাষ্ট্রব্যবস্থায় জনগনই সব নয়। কিছু মানুষ আছে, যারা সংখ্যায় কম হলেও রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য অত্যন্ত জরুরি। যারা ক্ষমতার নেপথ্যের শক্তি হিসেবে কাজ করে। এরা হলো- আর্মি, পুলিশ, আমলা, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি, শিল্পী, সাহিত্যিক ইত্যাদি। এরা সমাজের ন্যারেটিভ তৈরি করে দেয়, জনগণের মতামত প্রভাবিত করে। বড় ঘটনাকে ছোট করে, ছোট ইস্যুকে বড় করে তোলে।
২৪ এর গণ অভ্যুত্থানের কথাই ধরুন।
ছাত্র-জনতার যৌক্তিক আন্দোলন যেমন একদিকে তুঙ্গে ছিলো, তেমনি একজন জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়ার ফেসবুক প্রোফাইল লাল করা ছিলো আইকনিক ঘটনা। এতে করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা একটা মেসেজ পেয়ে যায়- কোন পক্ষে থাকা উচিত। তারা সাহস পায়।
একজন শহীদুল আলম, জুলকারনাইন সায়ের নেতাদের জন্য ব্যবস্থা করে দেয় সেফ হোমের। প্রভাবিত করে ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়ার প্রচারণাকে।
একজন আসিফ নজরুল যখন ছাত্রদের মিছিলে যোগ দেন, তখন ছাত্রদের মনোবল হয়ে ওঠে আকাশচুম্বী।
জাহাঙ্গীরনগরের একজন শিক্ষক যখন আবৃত্তি করেন- এই জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ আমার দেশ না - তখন ছাত্ররা রিএশিওরড হয়- তারা সঠিক পথেই আছে, ন্যায়ের পথে আছে।
জামায়াত নেতাদের এখন উচিৎ সাবেক আমলা, রিটায়ার্ড আর্মি, রিটায়ার্ড পুলিশ কর্মকর্তা, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীদের ঘরে ঘরে গিয়ে তাদের সমর্থন চাওয়া। জামায়াতের রাজনীতির ন্যায্যতা ব্যাখ্যা করা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রামে এদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের সমর্থন লাগবে। তাহলেই কেবল শহুরে শিক্ষিত মিডল ক্লাস- (এরা আবার ক্ষমতার একটা মধ্যবর্তী খুঁটি) - আস্থা পাবে যে জামায়াত দেশ পরিচালনার যোগ্য হয়ে উঠেছে। জামায়াত কোনো প্রান্তিক চিন্তার দল না। জামায়াত সবাইকে- সকল দল মত ধর্ম গোষ্ঠী নারী শিশু বৃদ্ধ আদিবাসী সবার জন্য নিরাপদ, সবাইকে নিয়ে দেশ চালাতে পারবে।
জামায়াত নেতারা এবার বুদ্ধিজীবীদের কাছে যান, তাদের কথা শোনেন, তাদেরকে দলে ইনকর্পোরেট করেন। কুরআন হাদীসের বিরুদ্ধে যায়না- দলের ভেতরে এমন যেকোনো সংস্কার আনেন।
জামায়াতপন্থি ১০ জন বুদ্ধিজীবীর নাম বলতে বললে কেউ বলতে পারবেন? আছে কেউ?
এইটাই সম্ভবত জামায়াত নেতাদের এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এইটা কিন্তু কর্মীদের কাজ নয়, এইটা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাজ। ভোটার বৃদ্ধির কাজ কর্মীরা করতে পারবে- ঐটা তাদের ওপর ছেড়ে দেন। আপনারা সফট পাওয়ার হাউজ গুলাতে কাজ করেন- যদি সত্যিই ক্ষমতায় যাওয়ার চিন্তা করেন।