20/02/2025
‘ছেলেটি এখনো ঢাকায় পড়ে আছে কেন? ওর যায়গা তো অনেক উপরে। ’
১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘জীবন থেকে নেয়া’ চলচ্চিত্রটি দেখার পর জহির রায়হানকে নিয়ে কালজয়ী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় ঠিক এমন মন্তব্যই করেছিলেন!
'একটি দেশ/ একটি সংসার/ একটি চাবির গোছা/ একটি আন্দোলন/ একটি চলচ্চিত্র…’ সিনেমার শুরুটা হয় এই স্লোগানগুলো দিয়ে। ‘জীবন থেকে নেয়া’ শুধু আর চলচ্চিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, হয়ে উঠেছিল পাকিস্তানের নিপীড়নের বিরুদ্ধে এটি একটি প্রতীকী আন্দোলন, যেখানে একটি সংসার পুরো দেশকে প্রতিকীরূপে উপস্থাপন করেছে।
১৯৬৭ সালের ২৩ জুন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ঢাকার নবাব বংশোদ্ভূত খাজা শাহাবুদ্দিন এদেশের রেডিও ও টেলিভিশনে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ করে এবং ঘোষণা দেয়, ‘রবীন্দ্র সংগীত আমাদের সংস্কৃতি নয়’ তা উপেক্ষা করে ‘জীবন থেকে নেয়া’ সিনেমায় ব্যবহৃত হয়েছিল রবিঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটি।
'জীবন থেকে নেয়া’র সঙ্গীত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চলচ্চিত্রটির সঙ্গীত পরিচালনা করেন জহির রায়হানের অধিকাংশ সিনেমায় সঙ্গীতের ভার সামলানো সঙ্গীত পরিচালক, গায়ক ও অভিনেতা খান আতাউর রহমান। যুদ্ধের ঠিক আগের বছরই মুক্তি পাওয়া এই চলচ্চিত্রটির সংগীত মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।
চলচ্চিত্রটিতে ব্যবহৃত হয়েছে আবদুল গাফফার চৌধুরী রচিত কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানটি যা পরবর্তীকালে একুশের প্রভাতফেরীর অত্যাবশ্যকীয় গান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়াও সিনেমাটির সঙ্গীত নিয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।