Prominent Publication

  • Home
  • Prominent Publication

Prominent Publication Publications of books

বিচ্ছেদের ১৫ বছর পর নার্গিসকে লেখা নজরুলের চিঠি:কল্যাণীয়াসু,তোমার পত্র পেয়েছি-সেদিন নববর্ষার নবঘন-সিক্ত প্রভাতে। মেঘ-মেদ...
25/05/2025

বিচ্ছেদের ১৫ বছর পর নার্গিসকে লেখা নজরুলের চিঠি:

কল্যাণীয়াসু,
তোমার পত্র পেয়েছি-সেদিন নববর্ষার নবঘন-সিক্ত প্রভাতে। মেঘ-মেদুর গগনে সেদিন অশান্ত ধারায় বারি ঝরছিল। পনের বছর আগে এমনি এক আষাঢ়ে এমনি বারিধারার প্লাবন নেমেছিলো, তা তুমিও হয়তো স্মরণ করতে পারো।
আষাঢ়ের নব মেঘপুঞ্জকে আমার নমস্কার। এই মেঘদূত বিরহী যক্ষের বাণী বহন করে নিয়ে গিয়েছিলো কালিদাসের যুগে, রেবা নদীর তীরে, মালবিকার দেশে তাঁর প্রিয়ার কাছে।
এই মেঘপুঞ্জের আশীবাণী আমার জীবনে এনে দেয় চরম বেদনার সঞ্চয়। এই আষাঢ় আমার কল্পনার স্বর্গলোক থেকে টেনে ভাসিয়ে দিয়েছে বেদনার অনন্ত স্রোত। যাক, তোমার অনুযোগের অভিযোগের উত্তর দিই।

তুমি বিশ্বাস কর, আমি যা লিখি তা সত্য। লোকের মুখে শোনা কথা দিয়ে যদি আমার মূর্তির কল্পনা করে থাক, তা হলে আমায় ভুল বুঝবে-আর তা মিথ্যা।
তোমার উপর আমি কোনো ‘জিঘাংসা’ পোষণ করি না-এ আমি সকল অন্তর দিয়ে বলছি। আমার অন্তর্যামী জানেন, তোমার জন্য আমার হৃদয়ে কী গভীর ক্ষত, কী অসীম বেদনা! কিন্তু সে বেদনার আগুনে আমিই পুড়েছি-তা দিয়ে তোমায় কোনদিন দগ্ধ করতে চাইনি। তুমি এই আগুনের পরশমনি না দিলে আমি অগ্নিবীণা বাজাতে পারতাম না- আমি ধূমকেতুর বিস্ময় নিয়ে উদিত হতে পারতাম না। তোমার যে কল্যাণ-রূপ আমি আমার কিশোর বয়সে প্রথমে দেখেছিলাম, সে রূপ আজো স্বর্গের পারিজাত-মন্দারের মতো চির অম্লান হয়েই আছে আমার বক্ষে। অন্তরের আগুন বাইরের সে ফুলহারকে স্পর্শ করতে পারেনি।

তুমি ভুলে যেও না, আমি কবি-আমি আঘাত করলেও ফুল দিয়ে আঘাত করি। অসুন্দর, কুৎসিত সাধনা আমার নয়। আমার আঘাত বর্বরের কাপুরুষের আঘাতের মতো নিষ্ঠুর নয়। আমার অন্তর্যামী জানেন (তুমি কি জানো বা শুনেছো, জানি না) তোমার বিরুদ্ধে আজ আমার কোনো অনুযোগ নেই, অভিযোগ নেই, দাবিও নেই।

আমি কখনো কোনো ‘দূত’ প্রেরণ করিনি তোমার কাছে। আমাদের মাঝে যে অসীম ব্যবধানের সৃষ্টি হয়েছে, তাঁর ‘সেতু’ কোনো লোক তো নয়ই-স্বয়ং বিধাতাও হতে পারেন কি না সন্দেহ।
আমায় বিশ্বাস কর, আমি সেই ‘ক্ষুদ্র’দের কথা বিশ্বাস করিনি। করলে পত্রোত্তর দিতাম না। তোমার উপর আমার কোনো অশ্রদ্ধাও নেই, কোনো অধিকারও নেই-আবার বলছি।

আমি যদিও গ্রামোফোনের ট্রেড মার্ক ‘কুকুরে’র সেবা করছি, তবুও কোনো কুকুর লেলিয়ে দিই নাই। তোমাদেরই ঢাকার কুকুর একবার আমায় কামড়েছিলো আমার অসাবধানতায়, কিন্তু শক্তি থাকতেও আমি তার প্রতিশোধ গ্রহণ করিনি-তাদের প্রতি আঘাত করিনি।
সেই কুকুরদের ভয়ে ঢাকায় যেতে আমার সাহসের অভাব উল্লেখ করেছ, এতে হাসি পেল। তুমি জান, ছেলেরা (যুবকেরা) আমায় কত ভালোবাসে। আমারই অনুরোধে আমার ভক্তরা ক্ষমা করেছিলো। নইলে তাদের চিহ্নও থাকতো না এ পৃথিবীতে।

তুমি আমায় জানবার যথেষ্ট সুযোগ পাওনি, তাই এ কথা লিখেছ। যাক তুমি রূপবতী, বিত্তশালীনি, গুণবতী, কাজেই তোমার উমেদার অনেক জুটবে-তুমি যদি স্বেচ্ছায় স্বয়ম্বরা হও, আমার তাতে কোনো আপত্তি নেই। আমি কোন অধিকারে তোমায় বারণ করবো বা আদেশ দেব? নিষ্ঠুরা নিয়তি সমস্ত অধিকার থেকে আমায় মুক্তি দিয়েছেন।

তোমার আজকের রূপ কী, জানি না। আমি জানি তোমার সেই কিশোরী মূর্তিকে, যাকে দেবীমূর্তির মতো আমার হৃদয় বেদীতে অনন্ত প্রেম অনন্ত শ্রদ্ধার সাথে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম।
সেদিনের তুমি সে বেদী গ্রহণ করলে না। পাষাণদেবীর মতোই তুমি নিলে বেদনার বেদী-পীঠ। জীবনভরে সেইখানেই চলেছে আমার পূজা আরতি।
আজকার তুমি আমার কাছে মিথ্যা, ব্যর্থ, তাই তাকে পেতে চাইনে। জানিনে হয়তো সে রূপ দেখে বঞ্চিত হবো, অধিকতর বেদনা পাবো, তাই তাকে অস্বীকার করেই চলেছি।

দেখো? না-ই হলো এ ধূলির ধরায়! প্রেমের ফুল এ ধুলিতলে হয়ে যায় ম্লান, দগ্ধ হতশ্রী। তুমি যদি সত্যই আমায় ভালোবাসো, আমাকে চাও, ওখানে থেকেই আমাকে পাবে।
লায়লী মজনুকে পায়নি, তবু তাদের মতো করে কেউ কারো প্রিয়তমাকে পায়নি। আত্মহত্যা মহাপাপ, এ অতি পুরাণ কথা হলেও পরম সত্য। আত্মা অবিনশ্বর আত্মাকে কেউ হত্যা করতে পারে না। প্রেমের সোনার কাঠির স্পর্শ যদি পেয়ে থাকো তা হলে তোমার মতো ভাগ্যবতী কে আছে?
তারি মায়া স্পর্শে তোমার সকল কিছু আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবে। দুঃখ নিয়ে একই ঘর থেকে অন্য ঘরে গেলেই দুঃখের অবসান হয় না। মানুষ ইচ্ছা করলে সাধনা দিয়ে তপস্যা দিয়ে ভুলকে ফুল-রূপে ফুটিয়ে তুলতে পারে।

যদি কোনো ভুল করে থাকো জীবনে এই জীবনেই তার সংশোধন করে যেতে হবে; তবেই পাবে আনন্দ, মুক্তি; তবেই হবে সর্ব দুঃখের অবসান।
নিজেকে উন্নত করতে চেষ্টা করো। স্বয়ং বিধাতা তোমার সহায় হবেন। আমি সংসার করছি, তবু চলে গেছি এই সংসারের বাধাতে অতিক্রম করে ঊর্ধ্বলোকে-সেখানে গেলে পৃথিবীর সকল অসম্পূর্ণতা সকল অপরাধ ক্ষমা সুন্দর চোখে পরম মনোহর মূর্তিতে দেখা দেয়।

হঠাৎ মনে পড়ে গেল পনের বছর আগেকার কথা। তোমার জ্বর হয়েছিলো, বহু সাধনার পর আমার তৃষিত দুটি কর তোমার শুভ্র সুন্দর ললাট স্পর্শ করতে পেরেছিলো। তোমার সেই তপ্ত ললাটের স্পর্শ যেন আজো অনুভব করতে পারি।
তুমি কি চেয়ে দেখেছিলে? আমার চোখে জল, হাতে সেবা করার আকুল স্পৃহা, অন্তরে শ্রীবিধাতার চরণে তোমার আরোগ্য লাভের জন্য করুণ মিনতি।
মনে হয় যেন কালকার কথা। মহাকাল সে স্মৃতি মুছে ফেলতে পারলে না। কী উদগ্র অতৃপ্তি; কী দুর্দমনীয় প্রেমের জোয়ারই সেদিন এসেছিলো! সারা দিনরাত আমার চোখে ঘুম ছিলো না।

যাক-আজ চলেছি জীবনের অস্তমান দিনের শেষ রশ্মি ধরে ভাঁটার স্রোতে। তোমার ক্ষমতা নেই সে পথ থেকে ফেরানোর। আর তার চেষ্টা করো না। তোমাকে লেখা এই আমার প্রথম ও শেষ চিঠি হোক।
যেখানেই থাকি বিশ্বাস কর, আমার অক্ষয় আশীর্বাদী কবচ তোমায় ঘিরে থাকবে। তুমি সুখী হও, শান্তি পাও- এই প্রার্থনা। আমার যত মন্দ বলে বিশ্বাস করো, আমি ততো মন্দ নই, এই আমার শেষ কৈফিয়ত।

ইতি-
নিত্য শুভর্থী
নজরুল ইসলাম

(কপি পেস্ট)

বই : মুছে যাওয়া দিনগুলোলেখক : ড. নজরুল ইসলাম খানপ্রকাশনা : প্রমিনেন্ট পাবলিকেশনমুদ্রিত মূল্য : ৫০০/="মুছে যাওয়া দিনগুলো"...
25/02/2025

বই : মুছে যাওয়া দিনগুলো
লেখক : ড. নজরুল ইসলাম খান
প্রকাশনা : প্রমিনেন্ট পাবলিকেশন
মুদ্রিত মূল্য : ৫০০/=

"মুছে যাওয়া দিনগুলো" একটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ। লেখক ড. নজরুল ইসলাম খান প্রধানত শিক্ষক এবং কবি। নিজের হাতে গড়ে তোলা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বেসরকারি একটি শিক্ষক-সংগঠনেরও তিনি মুখ্য ভূমিকায় রয়েছেন দীর্ঘদিন ধরে। সংগঠনের কাজ করতে গিয়ে তিনি দেশের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়িয়েছেন, বহুরকম মানুষের সাথে তাঁর সম্মিলন ঘটেছে। দেশের বাইরেও তিনি ভ্রমণ করেছেন একাধিক বার। পারিবারিক জীবনেও স্ত্রী-সন্তান নিয়ে স্বাভাবিক সংসারযাত্রী। ইত্যাকার নানান কাজে নানান ভাবে জীবনের পথে অগ্রসর হতে হতে যে অভিজ্ঞতা তিনি সঞ্চয় করেছেন তারই বাক্সময় প্রকাশ ঘটেছে বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটিতে।

অনুকূল-প্রতিকূল পরিবেশের নিত্যদ্বন্দ্বের ভিতর দিয়ে অগ্রসর হওয়া জীবনের মধ্যে সুখ-দুঃখের একরকম মিশেল জীবনের পথপরিক্রমায় প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা-আশা জাগিয়ে রাখে বলেই মানুষ জীবনের পথে অগ্রসর হতে পারে, জীবনকে উপভোগ করতে পারে। সেরকম একটি জীবনচিত্র ড. নজরুলের এই আত্মজীবনীতে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠবে। এই গ্রন্থ পাঠে জীবন সম্পর্কে আমাদের চিরাচরিত অনভূতিগুলোই নতুন করে সঞ্চারিত হতে পারে; অনুভবে জেগে উঠতে পারে ভালো-মন্দের মিশেলে সৃষ্ট এক পরিচিত কিন্তু আনন্দময় শিহরন।

আত্মজীবনীগুলো মূলত লেখকের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলির পরস্পর যূথবদ্ধ চলচ্ছবির মতো। এর সবচেয়ে সমৃদ্ধ উপজীব্য হয়ে থাকে লেখকের শৈশব-কৈশোর-যৌবন বা ছাত্রজীবন। এই গ্রন্থেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি কিন্তু ড. নজরুলের শৈশব-কৈশোর-যৌবন বা ছাত্রজীবন সম্পর্কে তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি এবং জীবনের এই পর্বের যাপন-ধরন পাঠককে নষ্টালজিয়ার এক অন্যরকম মাত্রায় নিয়ে যাবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।

আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, ড. নজরুলের এই আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থটির চমৎকার বিষয়বিন্যাস, শব্দচয়ন, বক্তব্যের সাবলীল অনবদ্য উপস্থাপনা পাঠকের কাছে গ্রন্থটি সমাদৃত ও সুখপাঠ্য হয়ে উঠবে।

অভিনন্দন সবাইকে! 🌷🌷❤️❤️
23/01/2025

অভিনন্দন সবাইকে! 🌷🌷❤️❤️

*** প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ পাড়ি দিলেন অনন্তলোকে।বিদায়ে গভীর শোকাহত কবি। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই আপনার স্মৃতির তর...
14/12/2024

*** প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ পাড়ি দিলেন অনন্তলোকে।বিদায়ে গভীর শোকাহত কবি। বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই আপনার স্মৃতির তরে। অনন্তলোকে খুব ভালো থাকুন।

শুক্রবার দুপুরে কবি হেলাল হাফিজকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।

দুপুর আড়াইটার দিকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত সুপার হোমের বাথরুমে পড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয় হেলাল হাফিজের। কর্তৃপক্ষ তাকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন।

হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।

২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

সৌজন্যে - দৈনিক সমকাল।
ছবি - অন্তর্জাল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনধারা..."মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে, মানবের মাঝে আমি বাঁচিবার চাই।" কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর...
01/11/2024

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনধারা...

"মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে,
মানবের মাঝে আমি বাঁচিবার চাই।"

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক হিমালয়প্রতিম ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলা সাহিত্যে এনে দিয়েছেন এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক বলে মনে করা হয়।

তাঁর জীবন ধারার বিষয়ে যা জানা যায়, তাও জানতে ভালো লাগে।

স্কুলে অনীহা
তিনি কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছিলেন পিতামাতার চতুর্দশ সন্তান। স্কুলশিক্ষায় ছিল তাঁর অনাগ্রহ, তাই বাড়িতেই রাখা হয় গৃহশিক্ষক।

খুব কম ঘুমাতেন
রবীন্দ্রনাথের ঘুম ছিল খুব কম। তিনি খুব গভীর রাতে শুতেন আবার উঠে যেতেন প্রায় শেষ রাতে। সাধারণত তাঁর দিন শুরু হতো প্রভাত স্নান দিয়ে। ঠিক ভোর ৪টায় এক কাপ চা পান করতেন। ভোর ৪টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত একটানা লিখতেন। তারপর সকাল ৭টায় প্রাতরাশ সেরে আবার লেখা। লেখার ফাঁকে ফাঁকে চা বা কফি খেতে পছন্দ করতেন তিনি। বেলা ১১টা পর্যন্ত টানা লিখে আবার স্নানে যেতেন। এরপরই খেতে বসতেন। রবীন্দ্রনাথ দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমাতে বা বিশ্রাম নিতে তেমন পছন্দ করতেন না।

সন্ধ্যায় খেতেন রাতের খাবার

ঘণ্টাখানেক কোনো পত্রিকা বা বইয়ের পাতা উল্টে আবার লিখতে বসতেন। বিকেল ৪টায় চা, সঙ্গে কিছু নোনতা বিস্কুট। রবীন্দ্রনাথ রাতের খাবারটা সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সেরে ফেলতেন। রাতে তিনি বিদেশি খাবার খেতেই পছন্দ করতেন। আর দুপুরে সাধারণত বাঙালি খাবার খেতেন। রাতে খেয়েদেয়ে আবার একটানা রাত ১২টা পর্যন্ত চলতো লেখা বা পড়া।

কুস্তিগির রবীন্দ্রনাথ

বালক রবীন্দ্রনাথ বাড়িতে পড়াশোনার পাশাপাশি গান ও আঁকা শেখা ছাড়াও প্রায় প্রতিদিন ভোরে বিখ্যাত কুস্তিগির হিরা সিংয়ের কাছে কুস্তি শিখতেন। নিয়ম মেনে চলা রবীন্দ্রনাথ শরীর চর্চাকে খুবই গুরুত্ব দিতেন। প্রতিদিনের নিয়ম ও খাদ্যাভাস দিয়েই রোগবালাই নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি।

গান ও আবৃত্তি চর্চা

রবীন্দ্রনাথ যে শুধু লেখালেখি নিয়েই ব্যাস্ত থাকতেন তা কিন্তু না। লেখালেখির পাশাপাশি গান, নাচ এবং অভিনয়ও তিনি সমান তালে চালিয়ে যেতেন। ছোটবেলা থেকেই রবীন্দ্রনাথ গানের চর্চা করে এসেছেন। গবেষকদের মতে, রবীন্দ্রনাথ মাত্র ৭ বছর বয়সে তাঁর জীবনের প্রথম গানটি গান। সে গানটি হলো তাঁর খুড়তুতো দাদা গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘দেখিলে তোমার সেই অতুল প্রেম আননে’ গানটি। রবীন্দ্রনাথের গাওয়া প্রথম ডিস্ক বের হয় ১৯০৫ সালে। একপিঠে ছিল বঙ্কিমচন্দ্রের ‘বন্দেমাতরম’ অন্যপিঠে স্বরচিত ‘সোনার তরী’ কবিতার আবৃত্তি।

নাচকেও বাদ দেননি

রবীন্দ্রনাথ খুব ভালো ‘বলডান্স’ করতে পারতেন। তাঁকে নাচ শিখিয়েছিলেন খুড়তুতো দিদি সত্যেন্দ্রবালা ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ নানা দেশের নানা ধরনের নৃত্যশৈলী দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর নিজস্ব নৃত্যশৈলীর জন্ম দিয়েছিলেন। তবে তিনি সবসময় বলতেন, নাচের টেকনিক যেন গানের ভাবকে ছাড়িয়ে না যায়।

মঞ্চ অভিনেতা

রবীন্দ্রনাথ ১৬ বছর বয়সে জীবনের প্রথম মঞ্চ অভিনয় করেছিলেন। নিজের লেখা নাটকে প্রথম অভিনয় করেছিলেন ‘বাল্মিকী প্রতিভা’য় বাল্মীকির ভূমিকায়। অভিনয়ের জন্যে রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং মঞ্চে অবতীর্ণ হন মোট ১০১ বার।

রঙের খেলা ছিল শখ

রবীন্দ্রনাথের অনেক শখের মধ্যে আরো একটি শখ ছিল ছবি আঁকা। জীবনের অনেক আগে আঁকা শুরু করলেও নিয়মিত ছবি আঁকতে শুরু করেন ৬৭ বছর বয়সে। ১৯০১ থেকে ১৯৪০, এই চল্লিশ বছরে সাদা কালো ও গাঢ় রঙে ছোট বড় মিলিয়ে রবীন্দ্রনাথ ছবি এঁকেছিলেন প্রায় ৩ হাজার।

একজন বৃক্ষপ্রেমী

রবীন্দ্রনাথ শুধু কাব্যপ্রেমীই ছিলেন না তিনি একজন বৃক্ষপ্রেমীও ছিলেন। তাঁর গানে ও কবিতায় ছড়িয়ে আছে অসংখ্য উদ্ভিদ আর ফুলের নাম। শুধু কাব্যেই উল্লেখ আছে ১০৮টি গাছ ও ফুলের নাম। এর মধ্যে বেশ কিছু বিদেশি ফুলের বাংলা নাম দিয়েছিলেন কবি স্বয়ং। তাঁর দেওয়া কয়েকটি ফুলের নাম হলো - অগ্নিশিখা, তারাঝরা, নীলমণিলতা, বনপুলক, বাসন্তী।

কবির পোশাক

গুরুদেব বাড়িতে সাধারণত গেরুয়া বা সাদা রঙের জোব্বা আর পায়জামা পরতেন। এছাড়া তিনি উপাসনা বা সভা সমিতিতে যাওয়ার সময় জোব্বা ছাড়াও সাদা ধুতি, জামা ও চাদর ব্যবহার করতেন। ঋতু উৎসবে ঋতু অনুযায়ী নানা রঙের রেশমী উত্তরীয় ব্যবহার করতেন। যেমন বর্ষায় কালো বা লাল, শরতে সোনালি, বসন্তে বাসন্তী রঙের। কখনো কখনো জোব্বার রঙও হতো উত্তরীয়র রঙের।

হোমিওপ্যাথিকেই বিশ্বাস

রবীন্দ্রনাথের হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে চিকিৎসার প্রতি আগ্রহ ছিল খুব বেশি। তিনি নিজেও হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে চিকিৎসা করতেন। হেলথ কো-অপারেটিভ তৈরি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা ভারতে রবীন্দ্রনাথই প্রথম চালু করেন।

(কপি পেস্ট)

ইনি হলেন কবি জীবনানন্দ দাশের প্রেম শোভনা।যেখানে যেখানে শোভনা গেছেন পেছন পেছন জীবনানন্দ গেছেন। ১৯৩২ ডায়াশেসন কলেজের ছাত্...
28/10/2024

ইনি হলেন কবি জীবনানন্দ দাশের প্রেম শোভনা।

যেখানে যেখানে শোভনা গেছেন পেছন পেছন জীবনানন্দ গেছেন। ১৯৩২ ডায়াশেসন কলেজের ছাত্রী শোভনা, কত-ই বা বয়স তখন শোভনার, ১৮-র বেশি তো নয়, জীবনানন্দ ৩৩ বছরের বিবাহিত যুবক। কানা দারোয়ানের হাতে স্লিপ পাঠিয়ে নিচে বসে অপেক্ষা করতেন, কখনও মর্জি হলে শোভনা দেখা করতেন, কখনও বা করতেন না।

সাল ১৯২৯ ডিব্রুগড়ে ক্লাস নাইনের ছাত্রী শোভনা। বেকার জীবনানন্দ চাকরি খোঁজের বাহানায় সেখানে গিয়েও উপস্থিত। দরজা বন্ধ করে শোভনাকে কবিতা শোনাচ্ছেন। শোভনার মা, জীবনানন্দর কাকিমা, সরযূবালা দাস রাগ করছেন, তবুও।

সবাই মিলে শিকারে গেল, শোভনার বাবা অতুলানন্দ পেশায় ফরেস্টার, আইএফএস, জীবনানন্দ লেখাপড়ার অছিলায় শিকারে গেলেন না, শোভনাও শরীর খারাপের বাহানায় থেকে গেলেন সারা রাত।

ডিব্রু নদীর ধারে বলে শহরের নাম ডিব্রুগড়।
এই শহরেই এক দিশাহীন ও অনির্দিষ্ট প্রেমে দুজনে জড়িয়ে পড়লেন, যা সারাজীবন ধরে জীবনানন্দর লিখনে প্রধান চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে।

নীচের কবিতাটিও তারই প্রমাণ। আসলে কোনও আড়াল নেই জীবনানন্দর রচনায়। একমাত্র ভালোবাসার আড়াল ছাড়া।
বিমূঢ় রক্তের উত্তেজনায় পাখি যেভাবে পাখিনীকে পায় জীবনানন্দ দাশও কি সেভাবেই তাঁর প্রেমিকাকে কামনা করেছিলেন?

"এই তাে সে-দিন
ডিব্রু নদীর পাড়ে আমরা ঘুরছিলাম
মনে হয় যেন হাজার বছরের ও-পারে চলে গিয়েছ তুমি
শুধু অন্ধকারে বাবলা ফুলের গন্ধ যখন পাই
কিংবা কখনও-কখনও গভীর রাতে ঘাস মাড়িয়ে
তারার আলােয় সেই ব্যথিত ঘাসের শব্দ যখন শুনি
রক্তের বিমূঢ় উত্তেজনায়
তখন তােমাকে আমি পাখির কাছে পাখিনীর মত পাই"’

শোভনা তখন শিলঙে। কোনও একটা স্কুল বা কলেজে পড়াচ্ছেন। জীবনানন্দ সেখানেও গিয়ে হাজির।১৯৪৭/৪৮ অবধি জীবনানন্দ দাশের কবিতা ও গল্প উপন্যাসে যে জোয়ার এসেছিল তা আমার মনে হয় অনেকটাই শোভনার জন্য। একসময় সরাসরি শোভনা গল্প উপন্যাস ও কবিতায় জায়গা করে নিয়েছে।
ভাঙনটা শুরু হয়েছিল আগেই। ১৯৫০-এর পর শোভনা যখন জীবনানন্দর ল্যান্সডাউনের ভাড়া বাড়িতে যাচ্ছেন, তখন ঢুকবার বা বেরোবার সময় একবার মিলুদার ঘরে মুখটা বাড়িয়ে দেখেছেন মাত্র। মূল কথাবার্তা বা আড্ডাটা হয়েছে লাবণ্য বৌদির সাথে।শোভনা নিজে আমাকে একথা জানিয়েছেন।জীবনানন্দও ১৯৪৮-এর পর আর তেমন লিখেছেন কি?

এতটাই হতাশ জীবনানন্দ যে বারবার তাঁর ডায়েরিতে তথা বেবি তথা শোভনা-কে হেরোদিয়াসের কন্যা রূপে উল্লেখ করেছেন।

তথ্যসূত্রঃ- গৌতম মিত্র।।

বিশ্বের সফল মানুষদের একজন বিল গেটস। বছরে তিনি অন্তত ৫০টিরও বেশি পড়ে থাকেন। সপ্তাহে ১টি বই পড়েন-ই তিনি। বিগত এক দশকেরও বে...
27/10/2024

বিশ্বের সফল মানুষদের একজন বিল গেটস। বছরে তিনি অন্তত ৫০টিরও বেশি পড়ে থাকেন। সপ্তাহে ১টি বই পড়েন-ই তিনি। বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের সর্বোচ্চ ধনীর তালিকায় আছেন। তিনি তার এই অভাবনীয় সফলতার পিছনে বই পড়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে বিবেচনা করেন।

তিনি নিম্নোক্ত ১০টি বই পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যার একটিও পড়া হয় নি আজও...

১) A Gentleman in Moscow : বইটি মূলত রুশ বিপ্লবের পরের ইতিহাস নিয়ে লেখা উপন্যাস।এই বইটি পড়ে বিল গেটস রীতিমতো কেঁদে দিয়েছিলেন!!

২) Growth : ক্ষু্দ্র প্রাণী থেকে শুরু করে নগর- সভ্যতা অর্থাৎ বিশ্বের সবকিছু কিভাবে বেড়ে উঠেছে সেটাই আলোচিত হয়েছে এই বইয়ে। বইটি প্রকাশ করেছে MIT প্রেস।

৩) How the World Really Works : মানবজাতির টিকে থাকার রহস্য ও সমৃদ্ধি নিয়ে আলোচিত হয়েছে এই বই।

৪) Klara & the Sun : ফিউচারিস্টিক ভিন্নধর্মী সমাজ গঠন নিয়ে লেখা হয়েছে এই বই। এটি সাহিত্যে বুকার পুরস্কার প্রাপ্ত।

৫) Mendeleyev's Dream : রসায়ন ও প্রাচীন দর্শন শাস্ত্র নিয়ে লেখা হয়েছে এই বই।

৬) Stranger in a strange land : এটি বিল গেটসের অন্যতম জনপ্রিয় সায়েন্স ফ্রিকশন বই।

৭) Surrender : আর্টিস্ট Bono এর আত্নজীবনী নিয়ে রচনা করা হয়েছে বইটি।

৮) Team of Rivals : মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকনের ক্ষমতায় উঠে আসার গল্প নিয়ে লেখা হয়েছে বইটি।

৯) The Heart : এই উপন্যাসটি মাত্র ২৪ ঘন্টার একটি গল্প নিয়ে লেখা।

১০) The Inner Game of Tennis : বইটি বিশ শতকে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।

এ বছর (২০২৪) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রখ্যাত লেখিকা হান ক্যাং। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৫ট...
11/10/2024

এ বছর (২০২৪) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রখ্যাত লেখিকা হান ক্যাং। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে সুইডিশ অ্যাকাডেমি।

সংস্থাটি জানিয়েছে, হান ক্যাংকে তার ‘গভীর কাব্যিক গদ্যের’ জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তার এসব সাহিত্যকর্মে পূর্বের যুগে সাধারণ মানুষের ওপর হওয়া অত্যাচার-নির্যাতন এবং মানবজাতির ভঙ্গুরতার বিষয়টি ওঠে এসেছে।

হান ক্যাং ১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গুয়াঞ্জুতে জন্মগ্রহণ করেন। ৯ বছর বয়স হওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে রাজধানী সিউলে চলে আসেন তিনি। তার পরিবারও সাহিত্যের সঙ্গে জড়িত ছিল। তার বাবা ছিলেন একজন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক। এছাড়া গান ও সংস্কৃতির প্রতিও নিজেকে মেলে ধরেছিলেন হান ক্যাং। যা তার সাহিত্যকর্মে ফুটে উঠেছে।

তিনি ২০১৬ সালে বুকার প্রাইজ পেয়েছিলেন 'দ্যা ভেজিটেরিয়েন' উপন্যাসের জন্য।

“এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময় "           এ দুটি লাইন শোনেনি, ...
11/10/2024

“এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়,
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময় "

এ দুটি লাইন শোনেনি, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর। একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে লেখা হয়েছে কবিতার এ দুটি লাইন। কবিতার নাম ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’। কবির নাম হেলাল হাফিজ।

সমকালীন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় কবি হেলাল হাফিজ একটি মাত্র কবিতার বই দিয়ে বাংলা সাহিত্যে হয়েছেন অমর। নাম লিখিয়েছেন ইতিহাসের পাতায়। তার ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ বইটির কবিতাগুলো যেন একেকটি প্রেম আর দ্রোহের খনি। ভাষার এমন সুন্দর ব্যবহার, শব্দের এমন চমৎকার চয়ন, বিমোহিত করে তাবৎ কাব্যপ্রেমীকে।

১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোনা জেলায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা খোরশেদ আলী তালুকদার ছিলেন নামকরা শিক্ষক। মায়ের নাম কোকিলা বেগম। মাত্র তিন বছর বয়সে মাকে হারান তিনি। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলার প্রতি ঝোঁক ছিলো হেলাল হাফিজের। খেলেছেন ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, ফুটবল, ভলিবল। এমনকি নেত্রকোনার মতো জায়গায় তিনি লন টেনিসও শিখেছিলেন। কিন্তু মাতৃবিয়োগের বেদনা থেকে মুক্তি পেতেই তিনি ঝুঁকে পড়লেন কবিতায়। একটু মমতা, একটু ভালোবাসার জন্য ছুটেছেন এদিক-সেদিক। আর সেসব অনুভূতি থেকেই রচিত হয়েছে কালজয়ী সব কবিতা।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় তিনি ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি লিখেন। এই একটি কবিতা লিখেই তিনি রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যান। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্র। হেলাল হাফিজকে সবাই তখন চিনতো ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ এর কবি হিসেবে।

নিজের উপলব্ধির প্রকাশ করে তিনি বলেছেন -
“সাহিত্য করে বা কবিতা দিয়ে আমি বিত্ত-বৈভব কামাতে চাইনি, আমার আকাঙ্ক্ষা ছিলো এই কবিতা দিয়ে আমি যাতে মানুষ কামাতে পারি।”

হেলাল হাফিজ নির্ঝঞ্ঝাট একজন মানুষ। ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে ছিলো তার। কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। থাকতেন তৎকালীন ইকবাল হলে। তৎকালীন দাপুটে সব ছাত্রনেতারা থাকতেন ইকবাল হলে। হেলাল হাফিজ ইকবাল হলে থাকাকালীনই এসেছিল ২৫ মার্চের সেই গণহত্যার রাত। সেদিন তিনি তার নেত্রকোনার এক বন্ধুর সাথে ফজলুল হক হলে গল্পগুজব করতে থাকেন। রাত এগারটার দিকে গোলাগুলির শব্দ শুনে রাতে আর বের হতে পারেননি।

ভয়াল সেই কালো রাত আর কারফিউ শেষে ২৭ তারিখ তিনি ইকবাল হলে ঢুকতেই দেখলেন ৩০-৩৫টি লাশের একটি স্তূপ। কোনোমতে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে বের হতেই হলের গেটে নির্মলেন্দু গুণের সাথে দেখা হলো তার! নির্মলেন্দু গুণ এসেছিলেন হেলাল হাফিজের খোঁজ নিতে। দুঃসময়ের এ মুহূর্তে দু’জন দু’জনকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করলেন। তারপর তারা কেরানীগঞ্জ চলে গিয়েছিলেন।

হেলাল হাফিজের সারা জীবনের অমর সৃষ্টি হলো ‘যে জলে আগুন জ্বলে‘। সতেরো বছর কবিতার লেখার পর ১৯৮৬ সালে এই বইটি তিনি প্রকাশ করেন। বইয়ের প্রায় সবগুলো কবিতাই তিনি লিখেছেন ঢাকা প্রেস ক্লাব লাইব্রেরিতে বসে। লেখার ব্যাপারে তিনি খুবই খুঁতখুঁতে। প্রায় তিনশ’ কবিতা থেকে মাত্র ৫৬টি কবিতা তিনি বাছাই করেন ‘যে জলে আগুন জ্বলে’র জন্য। এই বইটির প্রায় ছাব্বিশটি সংস্করণ বের হয়েছে এখনও পর্যন্ত, যা একটি কবিতার বইয়ের জন্য এক অবিশ্বাস্য ব্যাপার। আর তার সাথে অনলাইন ভার্শন আর পাইরেটেড কপিতো আছেই।

হেলাল হাফিজ যখন খ্যাতির একেবারে শিখরে, তখনই তিনি চলে যান লোকচক্ষুর আড়ালে। এরপর আর কোনো বই প্রকাশ হয়নি অনেক বছর। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার ভাষায়-
“আমার কবিতা যখন অসম্ভব জনপ্রিয় হয়ে উঠলো, তখন আমার একটা সন্দেহ জাগলো মনে। আচ্ছা, এই যে সমকালে এতো নন্দিত হলাম, এতো ভালোবাসা পেলাম, এতো পাঠকপ্রিয়তা হলো আমার কবিতার। একদিন তো আমাকে বিদায় নিতে হবে। তো যেদিন আমি উপস্থিত থাকবো না, সেদিন কি রাতারাতি মানুষ আমাকে ভুলে যাবে? আমার কবিতা টিকবে নাকি মহাকালের স্রোতে ভেসে যাবে? সেটা পরীক্ষা করার জন্য আমি জুয়াটুকু খেলেছি। ”

হেলাল হাফিজ আজীবন কবিতাই লিখে গেছেন। প্রেমে পড়েছেন অসংখ্য নারীর। তার কবিতায় ব্যবহার করা নাম হেলেন, হিরণবালা, সাবিতা মিস্ট্রেস সবই বাস্তবের রমণী। তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে তিনি লিখেছেন,

“ভালোবেসেই নাম দিয়েছি ‘তনা’,
মন না দিলে ছোবল দিও
তুলে বিষের ফণা।”

কবি যখন দুঃখের সাগরে নিমজ্জিত, নিজেকে হারিয়ে যখন তিনি দিশেহারা হয়ে ঘুরে বেড়ান পাপ-পঙ্কিলতার পথে; তার কবিতার ভাষায়, নারীই তখন তার উদ্ধারের পথ।
“আমাকে স্পর্শ করো,
নিবিড় স্পর্শ করো নারী।
অলৌকিক কিছু নয়,
নিতান্তই মানবিক যাদুর মালিক তুমি
তোমার স্পর্শেই আমার উদ্ধার।”

আজীবন করেছেন দুঃখের চাষাবাদ। বেদনাকে পুষেছেন যতন করে। জীবনও তাঁকে হতাশ করেনি। দু’হাতে দুঃখ দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে তার জীবন। আর যেখানে দুঃখের কিছুটা কম পড়েছে, সেখানে নিজেই নিজের মত করে দুঃখ বানিয়ে নিয়েছেন। তার ভাষায়,
“বেদনা আমার খুব প্রিয়। আমি মনে করি সুখ আমার জন্য অতটা জরুরি নয়। শিল্পের জন্যে জরুরি হচ্ছে বিরহ, বিচ্ছেদ, বেদনা।”

এই বেদনার ফলেই যুগে যুগে সৃষ্টি হয়েছে সব অনবদ্য সাহিত্য। এই কষ্টের ফেরিওয়ালা তাই কষ্ট বিলিয়েছেন সারা জীবন। মানুষের ভেতরের বোধকে করেছেন জাগ্রত। কবি বলেন, তার ফেরিওয়ালা কবিতায়,
“কষ্ট নেবে কষ্ট
হরেক রকম কষ্ট আছে
কষ্ট নেবে কষ্ট”

দীর্ঘ ছাব্বিশ বছর পর ২০১২ সালে আবার বই নিয়ে হাজির হন হেলাল হাফিজ। বইয়ের নাম ‘কবিতা একাত্তর’। ২০১৩ সালে হেলাল হাফিজকে বাংলা একাডেমি পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে তার মতো প্রতিভাকে মূল্যয়ন করতে বাংলা একাডেমি হয়ত বেশ দেরিই করে ফেলেছে।

বয়সের একেবারে শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে এখন কবি। তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তার একলা জীবন চলতো ঢাকা প্রেস ক্লাবের বিপরীতে থাকা একটি হোটেল রুমে। খাওয়া-দাওয়া করতেন ক্যান্টিনে। বেশিরভাগ সময় তার প্রেস ক্লাবেই কাটতো। একাকীত্বকে সঙ্গী করেই কেটে যাচ্ছে তার জীবন। নানাবিধ রোগে ভুগতে থাকা এই কবি এখন অনেকটা শয্যাশায়ী। বর্তমানে ভর্তি আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।

কবির ভাষ্যে- " নিঃসঙ্গতা, নির্জনতা আমার ভালো লাগে। একাকীত্বের এই বেদনাকে আমি উপভোগ করি। জীবনের এই শেষ বেলায় মন তো চায়, কেউ একজন পাশে থাকুক। এটা যতটা না শারীরিক, তার চেয়ে বেশি মানসিক।"

তাঁর একটি কবিতার লাইন দিয়েই এই লেখা শেষ করছি।
“নিউট্রন বোমা বোঝ
মানুষ বোঝ না।”

প্রিয় কবি হেলাল হাফিজের ৭৫ তম জন্মবার্ষিকীতে গভীর ভালোবাসা, শ্রদ্ধা জানাই আর শারীরিক সুস্থতা কামনা করি।

© হারুন-অর-রশীদ খান।

28/09/2024

বিবিসির জরিপে পৃথিবী ‘বদলে দেওয়া’ ১০০ সাহিত্যকর্ম।

১. দ্য ওডিসি (হোমার, খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতক)

২. আঙ্কল টম'স কেবিন (হ্যারিয়েট বিচার স্টো, ১৮৫২)

৩. ফ্রাঙ্কেনস্টাইন (মেরি শেলি, ১৮১৮)

৪. নাইটিন এইটি-ফোর (জর্জ অরওয়েল, ১৯৪৯)

৫. থিংস ফল অ্যাপার্ট (চিনুয়া আচেবে, ১৯৫৮)

৬. ওয়ান থাউজ্যান্ড অ্যান্ড ওয়ান নাইটস (বিভিন্ন লেখক, ৮ম–১৮শ শতক)

৭. ডন কিহোতে (মিগুয়েল দে সারভান্তেস, ১৬০৫–১৬১৫)

৮. হ্যামলেট (উইলিয়াম শেক্সপিয়ার, ১৬০৩)

৯. ওয়ান হান্ড্রেড ইয়ার্স অব সলিটিউড (গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ, ১৯৬৭)

১০. দ্য ইলিয়াড (হোমার, খ্রিস্টপূর্ব ৮ম শতক)

১১. বিলভড (টনি মরিসন, ১৯৮৭)

১২. দ্য ডিভাইন কমেডি (দান্তে আলিগিয়ারি, ১৩০৮–১৩২০)

১৩. রোমিও অ্যান্ড জুলিয়েট (উইলিয়াম শেক্সপিয়ার, ১৫৯৭)

১৪. দ্য এপিক অফ গিলগামেশ (লেখক অজানা, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২২শ–১০শ শতক)

১৫. হ্যারি পটার সিরিজ (জে কে রাওলিং, ১৯৯৭–২০০৭)

১৬. দ্য হ্যান্ডমেইড'স টেল (মার্গারেট অ্যাটউড, ১৯৮৫)

১৭. ইউলিসিস (জেমস জয়েস, ১৯২২)

১৮. অ্যানিমেল ফার্ম (জর্জ অরওয়েল, ১৯৪৫)

১৯. জেন আয়ার (শার্লট ব্রন্টি, ১৮৪৭)

২০. ম্যাডাম বোভারি (গুস্তাভ ফ্লবেয়ার, ১৮৫৬)

২১. রোমান্স অব দ্য থ্রি কিংডমস (লুয়ো গুয়ানঝং, ১৩২১–১৩২৩)

২২. জার্নি টু দ্য ওয়েস্ট (উ চেং'এন, আনুমানিক ১৫৯২)

২৩. ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট (ফিয়দোর দস্তয়েভস্কি, ১৮৬৬)

২৪. প্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস (জেন অস্টেন, ১৮১৩)

২৫. ওয়াটার মার্জিন (শি নাই'আন, ১৫৮৯)

২৬. ওয়ার অ্যান্ড পিস (লিও টলস্টয়, ১৮৬৫–১৮৬৭)

২৭. টু কিল আ মকিংবার্ড (হার্পার লি, ১৯৬০)

২৮. ওয়াইড সারগাসো সি (জিন রাইস, ১৯৬৬)

২৯. ঈশপ'স ফেবলস (ঈশপ, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৬২০–৫৬০)

৩০. ক্যান্ডিড (ভলতেয়ার, ১৭৫৯)

৩১. মেডিয়া (ইউরিপিডিস, খ্রিস্টপূর্ব ৪৩১)

৩২. মহাভারত (বেদব্যাস, খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতক)

৩৩. কিং লিয়ার (উইলিয়াম শেক্সপিয়ার, ১৬০৮)

৩৪. দ্য টেল অফ গেনজি (মুরাসাকি শিকিবু, ১০২১-এর পূর্বে)

৩৫. দ্য সরোস অফ ইয়ং ওয়ের্থার (জোহান উলফগ্যাং ভন গোথে, ১৭৭৪)

৩৬. দ্য ট্রায়াল (ফ্রাঞ্জ কাফকা, ১৯২৫)

৩৭. রিমেমব্রেন্স অফ থিংস পাস্ট (মার্সেল প্রুস্ট, ১৯১৩–১৯২৭)

৩৮. উইদারিং হাইটস (এমিলি ব্রন্টি, ১৮৪৭)

৩৯. ইনভিজিবল ম্যান (রালফ এলিসন, ১৯৫২)

৪০. মবি-ডিক (হারম্যান মেলভিল, ১৮৫১)

৪১. দেয়ার আইজেস ওয়্যার ওয়াচিং গড (জোরা নীল হার্স্টন, ১৯৩৭)

৪২. টু দ্য লাইটহাউস (ভার্জিনিয়া উলফ, ১৯২৭)

৪৩. দ্য ট্রু স্টোরি অব আহ কিউ (লু সুন, ১৯২১–১৯২২)

৪৪. অ্যালিস'স অ্যাডভেঞ্চারস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড (লুইস ক্যারল, ১৮৬৫)

৪৫ আন্না ক্যারেনিনা (লিও টলস্টয়, ১৮৭৩–১৮৭৭)

৪৬. হার্ট অব ডার্কনেস (জোসেফ কনরাড, ১৮৯৯)

৪৭. মাঙ্কি গ্রিপ (হেলেন গার্নার, ১৯৭৭)

৪৮. মিসেস ড্যালোয়ে (ভার্জিনিয়া উলফ, ১৯২৫)

৪৯. ইডিপাস দ্য কিং (সফোক্লিস, খ্রিস্টপূর্ব ৪২৯)

৫০. দ্য মেটামরফোসিস (ফ্রাঞ্জ কাফকা, ১৯১৫)

৫১. দ্য ওরেস্টেইয়া (এস্কাইলাস, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক)

৫২. সিন্ডারেলা (লেখক অজানা, তারিখ অজানা)

৫৩. হাউল (অ্যালেন গিন্সবার্গ, ১৯৫৬)

৫৪. লে মিজারেবল (ভিক্টর হুগো, ১৮৬২)

৫৫. মিডলমার্চ (জর্জ এলিয়ট, ১৮৭১-১৮৭২)

৫৬. পেদ্রো পারামো (হুয়ান রুলফো, ১৯৫৫)

৫৭. দ্য বাটারফ্লাই লাভারস (লোককাহিনী, বিভিন্ন সংস্করণ)

৫৮. দ্য ক্যানটারবরি টেলস (জিওফ্রে চসার, ১৩৮৭)

৫৯. পঞ্চতন্ত্র (বিষ্ণু শর্মা, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০০)

৬০. দ্য পোস্টহিউমাস মেমোয়ার্স অফ ব্রাস কিউবাস (হোয়াকিম মারিয়া মাচাদো দে আসিস, ১৮৮১)

৬১. দ্য প্রাইম অব মিস জিন ব্রডি (মুরিয়েল স্পার্ক, ১৯৬১)

৬২. দ্য র‍্যাগেড-ট্রাউজারড ফিলানথ্রপিস্টস (রবার্ট ট্রেসেল, ১৯১৪)

৬৩. সং অফ লাউইনো (ওকোট পি'বিটেক, ১৯৬৬)

৬৪. দ্য গোল্ডেন নোটবুক (ডোরিস লেসিং, ১৯৬২)

৬৫. মিডনাইট'স চিলড্রেন (সালমান রুশদি, ১৯৮১)

৬৬. নার্ভাস কন্ডিশনস (টসিতসি ডাংগারেমবগা, ১৯৮৮)

৬৭. দ্য লিটল প্রিন্স (অঁতোয়া দ্য সেন্ট-একজুপেরি, ১৯৪৩)

৬৮. দ্য মাস্টার অ্যান্ড মার্গারিটা (মিখাইল বুলগাকভ, ১৯৬৭)

৬৯. রামায়ন (বাল্মিকি, খ্রিস্টপূর্ব ১১শ শতক)

৭০. অ্যান্টিগোন (সফোক্লিস, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪৪১)

৭১. ড্রাকুলা (ব্রাম স্টোকার, ১৮৯৭)

৭২. দ্য লেফট হ্যান্ড অফ ডার্কনেস (উরসুলা কে. লে গুয়িন, ১৯৬৯)

৭৩. আ ক্রিসমাস ক্যারল (চার্লস ডিকেন্স, ১৮৪৩)

৭৪. আমেরিকা (রাউল ওতেরো রাইখ, ১৯৮০)

৭৫. বিফোর দ্য ল (ফ্রাঞ্জ কাফকা, ১৯১৫)

৭৬ চিলড্রেন অফ গেবেলাওয়ি (নাগিব মাহফুজ, ১৯৬৭)

৭৭. ইল কানজনিয়েরে (পেত্রার্ক, ১৩৭৪)

৭৮. কেবরা নাগাস্ট (বিভিন্ন লেখক, ১৩২২)

৭৯. লিটল ওমেন (লুইসা মে অ্যালকট, ১৮৬৮–১৮৬৯)

৮০. মেটামরফোসেস (ওভিড, ৮)

৮১. ওমেরোস (ডেরেক ওয়ালকট, ১৯৯০)

৮২. ওয়ান ডে ইন দ্য লাইফ অফ ইভান ডেনিসোভিচ (আলেক্সান্ডার সলঝেনিৎসিন, ১৯৬২)

৮৩. অরল্যান্ডো (ভার্জিনিয়া উলফ, ১৯২৮)

৮৪. রেইনবো সার্পেন্ট (আদিবাসী অস্ট্রেলীয় গল্পচক্র, সাল অজানা)

৮৫. রেভল্যুশনারি রোড (রিচার্ড ইয়েটস, ১৯৬১)

৮৬. রবিনসন ক্রুসো (ড্যানিয়েল ডিফো, ১৭১৯)

৮৭. সং অফ মাইসেলফ (ওয়াল্ট হুইটম্যান, ১৮৫৫)

৮৮. দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অফ হাকলবেরি ফিন (মার্ক টোয়েন, ১৮৮৪)

৮৯. দ্য অ্যাডভেঞ্চারস অফ টম সয়ার (মার্ক টোয়েন, ১৮৭৬)

৯০. দ্য আলেফ (হোর্হে লুইস বোর্হেস, ১৯৪৫)

৯১. দ্য ইলোকোয়েন্ট পিয়াজেন্ট (প্রাচীন মিশরীয় লোকগল্প, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ২০০০)

৯২. দ্য এম্পেরর'স নিউ ক্লোদস (হ্যান্স ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসন, ১৮৩৭)

৯৩. দ্য জঙ্গল (আপটন সিনক্লেয়ার, ১৯০৬)

৯৪. দ্য খামরিয়াত (আবু নুওয়াস, ৮ম শতকের শেষ–৯ম শতকের শুরু)

৯৫. দ্য রাডেটজকি মার্চ (জোসেফ রথ, ১৯৩২)

৯৬. দ্য রেভেন (এডগার অ্যালান পো, ১৮৪৫)

৯৭. দ্য স্যাটানিক ভার্সেস (সালমান রুশদি, ১৯৮৮)

৯৮. দ্য সিক্রেট হিস্টরি (ডোনা টার্ট, ১৯৯২)

৯৯. দ্য স্নোই ডে (এজরা জ্যাক কেটস, ১৯৬২)

১০০. টোবা টেক সিং (সাদাত হাসান মান্টো)

সূত্র : The Business Standard

কোথাও একবার পড়েছিলাম, সৈয়দ মুজতবা আলীকে কোনো এক আসরে মদ খেতে দেখে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন—আপনি যে মদ খাচ্ছেন, এটা দে...
16/09/2024

কোথাও একবার পড়েছিলাম, সৈয়দ মুজতবা আলীকে কোনো এক আসরে মদ খেতে দেখে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন—আপনি যে মদ খাচ্ছেন, এটা দেখে তরুণ সমাজ কী শিখবে?

উত্তরে সৈয়দ মুজতবা আলী মদের গ্লাসে চুমুক দিয়ে বলেছিলেন, 'তোমার তরুণ সমাজকে বলে দিও—মদ খাওয়ার আগে আমি পৃথিবীর ২৩ টি ভাষা রপ্ত করেছি।'

উনাকে নিয়ে আরেক মজার ঘটনা আছে!

সৈয়দ মুজতবা আলী তখন বেশ বিখ্যাত লেখক। প্রতিদিনই তাঁর দর্শন লাভ করতে ভক্তরা বাসায় এসে হাজির হয়। একদিন এক ভক্ত মুজতবা আলীর কাছে জানতে চাইলেন, তিনি কোন বই কী অবস্থায় লিখেছেন। মুজতবা আলী যতই এড়িয়ে যেতে চান, ততই তিনি নাছোড়বান্দা। শেষে মুজতবা আলী সরাসরি উত্তর না দিয়ে বললেন, 'দেখো, সুইস মনস্তত্ত্ববিদ কার্ল গুসতাফ জাং একদা তাঁর ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলেন, কিছু লোক আমাকে জিজ্ঞেস করে, আমি কীভাবে লিখি। এ ব্যাপারে আমাকে একটা কথা বলতেই হয়, কেউ চাইলে তাকে আমরা আমাদের সন্তানগুলো দেখাতে পারি, কিন্তু সন্তানগুলো উৎপাদনের পদ্ধতি দেখাতে পারি না।'

এমনই হাস্যরসে পরিপূর্ণ ছিল এই মানুষটি।

তাঁর লেখা 'দেশে বিদেশে' পড়েছি পাঁচ পাঁচবার! কাবুল-কান্দাহারে হারিয়েছি প্রতিবার। ভ্রমণ কাহিনী কতটা আনন্দদায়ক হতে পারে তা এ বই না পড়লে বুঝতে পারতাম না।

আজ এই মানুষটার জন্মদিন!

শুভ জম্মদিন প্রিয় লেখক!
゚ #সংগৃহীত

“সংসারে যারা শুধু দিলে, পেলে না কিছু, যারা বঞ্চিত, যারা দুর্বল, উৎপীড়িত, মানুষ হয়েও মানুষে যাদের চোখের জলের কখনও হিসাব ন...
15/09/2024

“সংসারে যারা শুধু দিলে, পেলে না কিছু, যারা বঞ্চিত, যারা দুর্বল, উৎপীড়িত, মানুষ হয়েও মানুষে যাদের চোখের জলের কখনও হিসাব নিলে না, নিরুপায় দুঃখময় জীবনে যারা কোনদিন ভেবেই পেলে না সমস্ত থেকেও কেন তাদের কিছুতেই অধিকার নেই,—এদের কাছেও কি ঋণ আমার কম? এদের বেদনাই দিলে আমার মুখ খুলে, এরাই পাঠালে আমাকে মানুষের কাছে মানুষের নালিশ জানাতে।”

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিনে শ্রদ্ধার্ঘ্য...

Address


Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Prominent Publication posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Prominent Publication:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share