07/05/2023
ঢাকা শহরের কয়েকটি এলাকার নামকরণের ইতিহাস
#ঢাকা_শহরের_বিভিন্ন_স্থানের_নামকরণের_ইতিকথা~
★গেন্ডারিয়াঃ
ইংরেজি শব্দ Grand Area থেকে এসেছে। এখানে আগেকারদিনের অভিজাত ও ধনী পরিবারগুলো বসবাস করত।
★ভুতের গলিঃ
এখানে Mr. boot, নামে একজন বৃটিশ বসবাস করতেন। আর তার নাম থেকেই জায়গাটির নামকরণ হয় বুটের গলি। পরবর্তীকালে এই নামটি উচ্চারণ বিকৃতির কবলে পড়ে বদলে ভুতের গলি হয়ে যায়।
★মহাখালীঃ
মহা কালী নামের এক মন্দীরের নাম থেকে হয়েছে বর্তমানের মহাখালী।
★ইন্দিরা রোডঃ
এককালে এই এলাকায় 'দ্বিজদাস বাবু' নামে এক বিত্তবান ব্যাক্তির বাড়ী ছিল। তার অট্টলিকার পাশের সড়কটি তিনি নিজেই নির্মাণ করে বড়কন্যা 'ইন্দিরা'র নামে নামকরণ করেন।
★পিলখানাঃ
ইংরেজ শাসনামলে প্রচুর হাতী ব্যবহার হতো । বন্য হাতিকে পোষ মানানো হতো যেসব জায়গায়, তাকে বলা হতো পিলখানা । বর্তমান 'পিলখানা' ছিল সবচেয়ে বড়।
★এলিফ্যানট রোডঃ
পিলখানা হতে হাতীগুলোকে নিয়ে যাওয়া হতো 'হাতীর ঝিলে' গোসল করাতে। তারপর নেয়া হতো 'রমনা পার্কে' রোঁদ পোহাতে। আর সন্ধ্যের আগেই সেই হাতীরপাল পিলখানায় ফিরে আসতো।
এসব হাতীর যাতায়াতের রাস্তাটির নামকরণ এ কারণে হয় ★'এলিফ্যান্ট রোড' । পথের মাঝে ছোট্ট একটি কাঠের পুল ছিল, যার নামকরণ করা হয় 'হাতির পুল' ।
★কাকরাইলঃ
ঊনিশ শতকের শেষ দশকে ঢাকার কমিশনার ছিলেন মিঃ ককরেল । নতুন শহর নির্মাণ করে তার নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় 'কাকরাইল'।
★রমনা পার্কঃ
এই এলাকায় ধনাঢ্য ব্যাক্তি রম নাথ বাবু একটি মন্দির নির্মাণ করান। যার নাম 'রমনা কালী মন্দির'। এই মন্দির লাগোয়া ছিল ফুলের বাগান আর খেলাধুলার পার্ক। পরবর্তীতে গড়া হয় 'রমনা পার্ক'।
★গোপীবাগঃ
এই এলাকায় গোপীনাথ নামে একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি নিজ খরচে 'গোপীনাথ জিউর মন্দির' নির্মাণ করান। এর পাশেই ছিল ফুলের বাগান যার নাম ছিল 'গোপীবাগ'।
★টিকাটুলিঃ
এক সময় এই অঞ্চলে হুক্কার প্রচলন ছিল। আর এই হুক্কায় ব্যবহৃত টিকার কারখানা ছিল যেখানে সে জাগার নাম হয় 'টিকাটুলি'।
★তোপখানাঃ
এখানে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর গোলন্দাজ বাহিনীর অবস্থান ছিল।
★পুরানা পল্টন, নয়া পল্টনঃ
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর ঢাকাস্থ সেনানিবাসে এক প্ল্যাটুন সেনাবাহিনী ছিল। এই প্ল্যাটুন থেকে এর নামকরণ হয় পল্টন । পরবর্তীতে আগাখানিরা
এই পল্টনকে দুইভাগে ভাগ করে। নয়া পল্টন ছিল আবাসিক এলাকা আর পুরানো পল্টন ছিল বাণিজ্যিক এলাকা ।
★বায়তুল মোকারম নামঃ
১৯৫০-৬০ দিকে প্রেসিডেন্ট আয়ুব সরকারের পরিকল্পনা অনুসারে পুরানো ঢাকা ও নতুন ঢাকার মাঝে যোগাযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়। এতে করে ঐ এলাকায় বসবাস রত আগাখানীদের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক বাড়ীঘর ভাঙ্গা পড়ে চলে যায় ওই সড়কে । আগাখানীদের নেতা আব্দুল লতিফ বাওয়ানী (বাওয়ানী জুট মিলের মালিক) সরকারকে প্রস্তাব দেন, তারা নিজ খরচে এশিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ মসজিদ নির্মাণ করবে। জাগাটিতে একটি বিরাট পুকুর ছিল। যার নাম ছিল 'পল্টন পুকুর'। ওই পুকুরে একসময় ব্রিটিশ সৈন্যরা গোসল করত। ওখানেই ১৯৬৮ সালের দিকে মসজিদ ও মার্কেট প্রতিষ্ঠা করা হয় ।
★ধানমন্ডিঃ
এখানে এক সময় বড় একটি হাট বসত। হাটটি ধান ও অন্যান্য শস্য বিক্রির জন্য প্রসিদ্ধ ছিল।
★পরীবাগঃ
পরীবানু নামে নবাব আহসানউল্লাহর এক মেয়ে ছিল । সম্ভবত পরীবানুর নামে এখানে তিনি একটি বড় বাগান করেছিলেন।
★পাগলাপুলঃ
১৭ শতকে এখানে একটি নদী ছিল। নদীটির নাম ছিল পাগলা নদী। মীর জুমলা এই নদীর উপর দৃষ্টিনন্দন একটি পুল তৈরি করেছিলেন। সে সময় অনেকেই সেই দৃষ্টিনন্দন পুল দেখতে দূরদুরান্ত থেকে ওখানে আসত। সেই থেকে জায়গটির নাম হয় 'পাগলাপুল'।
★ফার্মগেটঃ
কৃষি উন্নয়ন, কৃষি ও পশুপালন গবেষণার জন্য বৃটিশ সরকার এখানে একটি ফার্ম বা খামার গড়ে তুলে। ওই ফার্মের প্রধান ফটক বা গেট থেকে এলাকাটির নাম হয় ফার্মগেট।
★শ্যামলীঃ
১৯৫৭ সালে সমাজকর্মী আব্দুল গণি হায়দারসহ বেশ কিছু ব্যক্তি এ এলাকায় বাড়ি করেন । এখানে যেহেতু প্রচুর গাছপালা ছিল তাই সবাই মিলে আলোচনা করে এলাকার নাম রাখেন শ্যামলী ।
★সূত্রাপুরঃ
এক সময় যারা কাঠের কাজ করত তাদের বলা হতো সূত্রধর। আর এই এলাকায় এককালে অনেক সূত্রধর পরিবার বসবাস করত। তখন থেকেই এই জায়গাটির নাম ছিল সূত্রাপুর।
সংগৃহীত ও সম্পাদিত।