18/09/2025
চলতি বছর একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে শিক্ষা ও মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখায় বড় ধরনের বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দেখা গেছে, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চাকরিজীবী, প্রাথমিক শিক্ষক এমনকি ব্যবসায়ীদের সন্তানরাও এই কোটায় ভর্তি হয়েছে। ফলে প্রকৃত মেধাবীরা ভালো কলেজে পড়ার সুযোগ হারিয়েছেন। শিক্ষা বোর্ডের মতে, এখন মুক্তিযোদ্ধার সর্বনিম্ন বয়স ৬৭ বছর, তাই তাদের সন্তান কলেজগামী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অথচ এ বছর দেড় হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ভর্তি হয়েছে, যা অনিয়মের ইঙ্গিত দেয়।
অভিভাবক ঐক্য ফোরামের দাবি, ঐতিহাসিক আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের পর আর কোনো কোটা ব্যবস্থা থাকা উচিত নয়। কেবল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সীমিত সম্মানসূচক কোটা রাখা যেতে পারে। অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। ভর্তি কমিটির তথ্যে দেখা যায়, এ বছর মোট ১০ লাখ ৬৬ হাজার শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছে, যার মধ্যে শিক্ষা ও মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সুযোগ পেয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার। এর মধ্যে শিক্ষা কোটা–১-এ ভর্তি হয়েছে দুই হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী, যা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীর সংখ্যার তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব শিক্ষার্থীকে কলেজে ভর্তি হতে হলে কোটার কাগজপত্র জমা দিতে হবে। ব্যর্থ হলে ভর্তি বাতিল হবে, ফলে শিক্ষার্থীরা নতুন জটিলতায় পড়ছে। তারা স্বীকার করেছেন, এ কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারেনি। আগামী বছর প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি কোটার বিধান না থাকায় বর্তমান কোটা ব্যবস্থার কোনো যৌক্তিকতা নেই। সব মিলিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্বার্থে কোটা বহাল রাখার ফলে ভর্তি প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে নতুন ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।