সময় পূর্বাপর - Somoy Purbapar

সময় পূর্বাপর - Somoy Purbapar অগ্রসর পাঠকের কাগজ
সাপ্তাহিক ‘সময় পূর্বাপর’

আজ কবি দাউদ হায়দায় মৃত্যু বরন করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি বাংলাদেশের পাবনা ...
27/04/2025

আজ কবি দাউদ হায়দায় মৃত্যু বরন করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি বাংলাদেশের পাবনা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। দাউদ হায়দার চিরকুমার ছিলেন। ১৯৭৪ সালে "কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নার কালো বন্যায়" শিরোনামে একটি কবিতা লেখেন তিনি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায়। তিনি নিজেই ছিলেন পত্রিকাটির সাহিত্য সম্পাদক। এই কবিতার মাধ্যমে মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেবার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে সরকার তাকে মুক্তি দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নির্বাসনে পাঠান। সেখানে তিনি অন্নদাশঙ্কর রায়ের আশ্র‍য়ে ছিলেন বেশ কিছুকাল। ১৯৮৭ সালে গুন্টার গ্রাসের সহায়তায় পাড়ি জমান জার্মানিতে। সেই থেকে আমৃত্যু জার্মানির বার্লিন শহরেই ছিলেন। ২০০০ সালের আগস্ট মাসে আমি কবির বার্লিনের এপার্টমেন্টে আতিথ্য গ্রহণ করি। মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন সদালাপী এবং আড্ডাপ্রিয়। আধুনিক মনস্ক কবি দাউদ হায়দায় খুব শাদামাটা জীবন যাপন করতেন। ব্যাপক পড়াশোনার কারণেই বিশ্বসাহিত্যে ছিল তার অগাধ জ্ঞান। তিন বেশ কয়েকবার যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেন। আমার নিউইয়র্কের বাড়িতেও তিনি আতিথ্য গ্রহণ করেন। দাউদ হায়দারের অনুজ কবি জাহিদ হায়দারের মাধ্যমে তার সঙ্গে আমার সব সময়ই একটা যোগাযোগ ছিল। আমার সম্পাদনায় প্রকাশিত বাঙালি কবিদের ইংরেজি কবিতার অ্যান্থোলজি "আন্ডার দ্য ব্লু রুফ" এর তৃতীয় ভলিউমে তার ১০টি কবিতা ছাপা হয়েছে। কবিতাগুলো চাইলে তিনি নিজেই আমাকে ইমেইলে পাঠান। কবির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।

(কবি কাজী জহিরুল ইসলাম এর থেকে কপি পোস্ট)

শ্রদ্ধাঞ্জলি: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামালের ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকীআজ ১৮ এপ্রিল, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা ক...
18/04/2025

শ্রদ্ধাঞ্জলি: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামালের ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী

আজ ১৮ এপ্রিল, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামালের ৫৪তম শাহাদাত বার্ষিকী। এই দিনে জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে সেই অকুতোভয় বীর'কে, যিনি জীবন উৎসর্গ করে রচনা করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। তাঁর বীরত্ব, আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেম চিরকাল আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল, বীরশ্রেষ্ঠ ১৩৫৪ সালের অগ্রহায়ণ (১৯৪৭ ইং) মাসের কোন এক বৃহস্পতিবারে ভোলা জেলার দৌলতখানা উপজেলাধীন পশ্চিম হাজিপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন হাবিলদার। অত্যন্ত ডানপিটে মোস্তফা কামাল দ্বিতীয় শ্রেণী শেষ করে স্কুল ত্যাগ করেন। পিতার কর্মস্থল কুমিল্লা সেনানিবাসে তাঁর বাল্যকালের অনেকটা সময়ই কেটেছে। সেনাবাহিনীর সুশৃঙ্খল জীবন তাঁকে ভীষণভাবে আকৃষ্ট করতো। ১৯৬৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর পারিবারিক নিষেধ অমান্য করে পালিয়ে তিনি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সিপাহী পদে যোগ দেন। সেনাবাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষে কুমিল্লায় চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে তাঁকে পোষ্টিং দেয়া হয়। সৈনিক জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দুর্বার, বক্সিং এ ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ। ১৯৭১ সালে মার্চের মাঝামাঝি সময়ে কুমিল্লা সেনানিবাস থেকে তাঁকে চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদর দপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া বদলী করা হয় এবং সেখান থেকেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ঘিরে তিনটি প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়ে তোলে আশুগঞ্জ, উজানীশ্বর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এন্ডারসন খালের পাশে। কিন্তু এ সকল প্রতিরক্ষা ঘাঁটির উপর দখলদার বাহিনীর আক্রমণ প্রচণ্ড আকার ধারণ করলে তিনটি প্রতিরক্ষা ঘাঁটির সৈন্যরা রণকৌশলগত পুনঃমোতায়েন এর মাধ্যমে আখাউড়া, আখাউড়ার দক্ষিণে সঙ্গী নগরে এবং এর উত্তরে দরুইনে নতুন করে প্রতিরক্ষা গড়ে তোলে। দরুইনে পাঠানো হয় ২নং প্লাটুনকে। সিপাহী মোস্তফা কামাল এই প্লাটুনের একজন সদস্য ছিলেন। তাঁর সাহস, বুদ্ধি ও কর্মদক্ষতার কারণে মেজর শাফায়াত জামিল তাঁকে মৌখিকভাবে ল্যান্স নায়েক পদ-মর্যাদা দিয়ে একটি সেকশনের দায়িত্ব প্রদান করেন।

১৬ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী ৪র্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য কুমিল্লা-আখাউড়া রেললাইন ধরে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ১৭ এপ্রিল সকাল থেকে শত্রু দরুইন গ্রামে ২নং প্লাটুনের প্রতিরক্ষার উপর মর্টার দিয়ে গোলাবর্ষণ শুরু করে। পরের দিন বেলা ১১টার দিকে মোগরা বাজারের একটি উঁচু দালানের ছাদের ওপর বসানো একটি মেশিনগান থেকে শত্রু পক্ষ গোলাবর্ষণ শুরু করে দরুইনের প্রতিরক্ষা ঘাঁটির ওপর। দুপুরের পর থেকে দখলদার বাহিনীর আক্রমণ তীব্রতর হয়। শত্রু অল্পক্ষণের মধ্যেই পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে দরুইনে প্রতিরক্ষা ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এ রকম অবস্থায় আবারো পুনঃমোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সৈনিকেরা নতুন অবস্থানে যাওয়া শুরু করলে তিনি সকলকে স্থান ত্যাগ করে দ্রুত চলে যেতে বলেন এবং কাভার ফায়ারিং এর জন্য নিজে পরিখার ভেতর দাঁড়িয়ে থেকে হালকা মেশিনগান দিয়ে ক্রমাগত গুলি চালাতে থাকেন। সকলে তাঁকে দৌড়ে চলে আসার জন্য অনুরোধ জানালেও তিনি তাঁর অবস্থান থেকে সরেননি। এভাবেই শত্রু দ্বারা ঘেরাও হয়েও আত্মসমর্পণ না করে জীবন বাজি রেখে তিনি প্লাটুনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে সহায়তা করেন। একসময় শত্রুর গুলিতে ঝাঝরা হন মোস্তফা কামাল। তিনি তাঁর নিজ পরিখায় ঢলে পড়েন। অতঃপর, ঐ গ্রামেই তাঁকে সমাহিত করা হয়। তাঁর মৃত্যুর সময় একমাত্র ছেলের বয়স ছিল মাত্র দেড় মাস। তাঁর নির্ভীক আত্মদানের কারণে অন্যান্য সিপাহীরা নিরাপদে অন্য অবস্থানে সরে যেতে সক্ষম হয়। এই অতুলনীয় বীরত্ব ও আত্মোৎসর্গের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মাননা "বীরশ্রেষ্ঠ" উপাধিতে ভূষিত করে।

এই দিনে জাতি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করছে সেই মহান বীরকে, যিনি স্বাধীনতার সূর্য উদিত করার পথে নিজেকে করেছেন উৎসর্গ। তাঁর স্মৃতি এই স্বাধীন দেশের অনুপ্রেরণা হয়ে আমাদের অন্তরে চিরজাগরুক থাকবে।

পূর্বাপরে নববর্ষ উদযাপন উচ্ছ্বাস আর আনন্দের সাথে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানালো পূর্বাপর পরিবার। গত ২ বৈশাখ, অপরাহ্নে নিজস...
17/04/2025

পূর্বাপরে নববর্ষ উদযাপন
উচ্ছ্বাস আর আনন্দের সাথে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানালো পূর্বাপর পরিবার। গত ২ বৈশাখ, অপরাহ্নে নিজস্ব কার্যালয়ে উদযাপিত হলো এই উৎসব। অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন সর্বজনাব কবি নাসির আহমেদ, সুমন সরদার, আহমেদ স্বপন মাহমুদ,জাহিদ রহমান, মামুন খান, জেবুন্নেছা হেলেন, কামরুন নাহার, সুবীর দাস, শামসুন্নাহার, মুহিবুল। ফিলিস্তিনি কবি মাহমুদ দারবিশ এর অনুবাদ কবিতা আবৃত্তি করেন মিতালী হোসেন। সংগীত পরিবেশন করেন ড. প্রদীপ নন্দী, শওকত হোসেন , মইনুল হোসেন, রেখা ও মোমিনুল হক। পূর্বাপরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক এম এম কায়সার। অনুষ্ঠানে সদ্য প্রয়াত কবি সৌমিত্র দেব এর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

যেথায় থাকিস, ভালো থাকিসস্বপন ঘোষকোন সুদূরে পালিয়ে গেলি খুঁজব কোথায় তোকেহারিয়ে তোকে আমরা সবাই করছি মাতম শোকে।ইচ্ছে করে পা...
01/04/2025

যেথায় থাকিস, ভালো থাকিস

স্বপন ঘোষ

কোন সুদূরে পালিয়ে গেলি খুঁজব কোথায় তোকে
হারিয়ে তোকে আমরা সবাই করছি মাতম শোকে।

ইচ্ছে করে পালালে কেউ যায় কি পাওয়া তাকে?
আয়না ফিরে যাদু আমার অভাগী মা’র ডাকে!

খুঁজে ফিরি অহর্নিশি পাইনা তবু তোকে
লোনাজল রয় শুকিয়ে দু’চোখের কার্নিশে।

কই পালালি ওরে যাদু কই পালালি তুই?
মুখ লুকিয়ে কাঁদে আমার ছাদবাগানের জুঁই।

লেবু গাছে টুনটুনিটা আর আসেনা উড়ে
সেও কি বুঝে গেছে তুই চলে গেছিস দূরে?

বল্ধুরা তোর আসছে বাড়ি ঈদের উৎসবে
বলনা মানিক বাবা-মায়ের কাছে আসবি কবে?

কেঁদে যত বুকের জ্বালা হালকা করতে চাই
চোখে তোর মুখটা ভেসে ওঠে সর্বদাই।

মায়ের চোখে লোনাজল ঝরছে অবিরত
কেউ জানেনা বুকে তার কেমন গভীর ক্ষত!

খুঁজব কোথায় যাদু আমার খুঁজব কোথায় তোকে
যেথায় থাকিস, ভালো থাকিস, সুখে, অনন্তলোকে॥

(পুনশ্চ. আমার বড় ছেলে প্রতীক ঘোষ। অত্যন্ত গুণী এবং মেধাবী। নৃত্য-গীত-অভিনয় সবকিছুতেই পারদর্শী ছিল সে।
আই.পি.ই তে অনার্স করে ও এম. বি. এ ( সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টে)তে সর্বোচ্চ (৪ এর মধ্যে৩.৯৮)পেয়ে ডীন অ্যাওয়ার্ড সহ গোল্ড মেডেল পায়। ওয়েস্টার্ন রক ছিল পছন্দের।
তবে এত চমত্কার গজল সে গাইতে পারত!রাহাত ফতেহ আলি খান,
নুসরাত ফতেহ আলি খান,মেহেদি হাসান এদের অনেক গজল ওর
শুধু মুখস্থ ছিল তাই নয়, কঠিন কাজগুলো অনায়াসে গলায় তুলতে পারত।আমার সেই গুণী ছেলেটা আজ অনন্তলোকে। সবাই দোয়া/আশির্বাদ করবেন যেন তার জায়গায় সে ভালো থাকে, আমরা যেন এই অপার যন্ত্রণা কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি।)

(০১.০৪.২০২৫খ্রি.)

বত্রিশ নাম্বার রোডের প্রায় শেষ মাথায় গাছপালায় ঘেরা ‘সাঁঝের মায়া’ নামের একটা বাড়িতে বসবাস করতেন কবি সুফিয়া কামাল। রোজ ভোর...
13/03/2025

বত্রিশ নাম্বার রোডের প্রায় শেষ মাথায় গাছপালায় ঘেরা ‘সাঁঝের মায়া’ নামের একটা বাড়িতে বসবাস করতেন কবি সুফিয়া কামাল। রোজ ভোরে নামাজ পড়ে কিছুক্ষণ কোরান পাঠ করতেন কবি । তারপর বাগানে হাঁটাহাঁটি আরও কিছুক্ষণ। এই সময় পোষা বিড়ালগুলো কবির পায়ে পায়ে ঘুরতো। তুলার বলের মতো ধবধবে সাদা বিড়ালগুলোকে সাথে নিয়েই কবি এসে তারপর বারান্দায় বসে একের পর এক রবীন্দ্র সংগীত শুনতেন। কখনও কখনও অতুল প্রসাদ কিংবা রজনীকান্তের গান।

অনেক অনেক দিন আগে কবির এই রুটিন এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলো। বলা ভালো ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়েছিলো। নিত্যদিনের রুটিন ভুলে একটু বেলা হলে পরে একগাদা রেশনকার্ড হাতে নিয়ে কবি বাগানে অস্থির হয়ে পায়চারি করতেন। একগাদা রেশন কার্ডের মধ্যে কবির কার্ড একটাই। বাকিগুলো প্রতিবেশীদের, আত্মীয়দের আর স্বজনের। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঢাকা ছেড়ে তারা চলে যাবার আগে কবির কাছে এইসব কার্ড তারা রেখে গেছেন। কবি একেক দিন একেকজনকে দিয়ে সেইসব রেশন কার্ড দিয়ে চাল, চিনি, ডালডা তুলে এনে বাড়ির এক নিরিবিলি রুমে এইসব জমা করতেন। আর অপেক্ষা করতেন একজন রিকশা ড্রাইভারের জন্য। কবির বাড়ির পাশের বাড়িতে ছিলো পাকিস্তানি মিলিটারির ঘাঁটি। সব চোখ ফাঁকি দিয়ে কবির বাড়ির পেছনের দেয়াল টপকে জীবন বাজি রেখে রিকশা ড্রাইভার এসে চালের বস্তা, চিনির পোটলা, ডালডার টিন নিয়ে যেতো।

আগস্ট মাসের পর থেকে শহর আরও থমথমে হয়ে গেলে রিকশা ড্রাইভারের চলাচল খুব কঠিন হয়ে গেল।এই নিয়ে কবির দুশ্চিন্তার শেষ নাই। কবির বাড়ির পেছনেই ছিলো সোভিয়েত ইউনিয়নের কালচারাল সেন্টার। একদিন সোভিয়েত কনসাল মি. নভিকভ নিজে কবির বাড়ি এসে কবিকে আশ্বস্ত করে গেলেন। এরপর সোভিয়েত কালচারাল সেন্টারের গেট ব্যবহার করে রিকশা ড্রাইভার মালামাল নিয়ে যেতো।

তারপর হিমালয়ের জমাট বাঁধা বরফ গলে গলে আমাদের পদ্মা মেঘনা যমুনা নরসুন্দা ঘোড়াউত্রা বলেশ্বর আর ধানসিঁড়ি নদীগুলো জলে জলে পূর্ণ হয়ে উঠলো। আর জলের সাথে একজন না দুইজন না, এক লাখ না দুই লাখ না, তিরিশ লাখ মানুষের রক্ত এসে আমাদের জলের রঙ বদলে দিতে দিতে ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ এসে উপস্থিত হলো। লিস্ট ধরে ধরে রাজাকারেরা শহীদুল্লাহ্ কায়সার, মুনীর চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও অনেক শিক্ষক সহ দেশের অনেক বুদ্ধিজীবীদের কাদা মাখানো বিশেষ এক গাড়িতে করে প্রথমে নিয়ে গেল ফিজিক্যাল কলেজের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে। তারপর তারপর তারপর তাঁদেরকে আমরা খুঁজে পেয়েছিলাম রায়ের বাজারে!!!

চৌদ্দ তারিখে কবির সেই রিকশা ড্রাইভারকেও তুলে নেয়া হয়েছিলো কাদা ল্যাপ্টানো গাড়িতে!!! রিকশা ড্রাইভারের নাম গিয়াসউদ্দিন আহমদ। তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং মুহসিন হলের আবাসিক শিক্ষক। পুরো নয় মাস ধরে তিনি মাথায় গামছা বাঁধা লুঙ্গি পরা রিকশা ড্রাইভারের ছদ্মবেশে রিকশা চালিয়ে কবির বাড়ির রেশনের মালামাল পৌঁছে দিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধাদের নানান গোপন ইউনিটে।

কী বলবো?
কীভাবে বলবো? কীভাবে এক জীবনে আমরা তাঁদের ঋণ শোধ করবো?
মাথা নত করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানাই। শ্রদ্ধা এবং কৃতজ্ঞতা জানাই ‘জননী সাহসিকা’ কবি সুফিয়া কামালের প্রতি।

(সংগৃহীত)

শুভ জন্মদিন কণ্ঠের যাদুকর তালাত মাহমুদভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের অন্যতম সেরা পুরুষ অ-শাস্ত্রীয় ও অর্ধ-শাস্ত্রীয় গায়...
25/02/2025

শুভ জন্মদিন কণ্ঠের যাদুকর তালাত মাহমুদ
ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গীতাঙ্গনের অন্যতম সেরা পুরুষ অ-শাস্ত্রীয় ও অর্ধ-শাস্ত্রীয় গায়করূপে বিবেচিত বিখ্যাত জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী তালাত মাহমুদ গজলের রাজা)( শাহেনশাহ ই গজল) ১৯২৪ সালের ২৪ শে ফেব্রুয়ারি ভারতের লখনৌয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।।

তিনি সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা ছিলেন।।শৈশবে তিনি রাত জেগে নিবিষ্ট চিত্তে তৎকালীন বিখ্যাত ভারতীয় শাস্ত্রীয় গায়কদের গান শ্রবণ করতেন।।তিনি এমন এক রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করে ছিলেন যেখানে সঙ্গীতচর্চাকে উৎসাহিত করা হত না।।তিনি তার বাবার অমতে চলচিত্রে অভিনয় করেছিলেন।।

তালাত মাহমুদ১৯৩০ সালের শেষের দিকে
লখনৌর মারিস সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের পন্ডিতাস সি আর ভাটের কাছে ধ্রুপদী সঙ্গীতে হাতে খড়ি নেন।।
১৯৩৯ সালে ১৬ বছর বয়সে অল ইন্ডিয়া রেডিও,
লখনৌ- এ দাগ,মির, জিগর গজল গেয়ে তার সঙ্গীত জীবনের সুচনা হয়।।তার কণ্ঠস্বর ছিল অন্যান্য কণ্ঠ শিল্পীদের থেকে স্বতন্ত্র প্রকৃতির।। তার এই স্বতন্ত্র কন্ঠের জন্য ১৯৪১ সালে এইচ এম ভি গ্রুপ তার গানের ডিস্ক বের করার প্রস্তাব দেয়।।গজল গায়ক হিসাবে তার সুখ্যাতি লখনৌ ছাড়িয়ে কলকাতা পর্যন্ত পৌছে যেটি তার গন্তব্য হয়ে যায়।।

১৯৪৪ সালে খ্যাতি ছড়িয়ে
পরে সারা ভারতে।।তিনি কলকাতা ও বোম্বে ১৬ টির মত ফিল্মে অভিনয় করেছিলেন।।প্রথমে তিনি তপন কুমার নামে অনেক বাংলা গান গেয়েছিলেন।।তার গাওয়া কিছু বাংলা গান ছিল সুপার হিট যা আজও বেতারে বাজে।।।তিনি ৫০ ও ৬০ এর দশকের বিখ্যাত সঙ্গীতপরিচালকের সুরে গান করেছিলেন।।

১৯৪৯ সালে হিন্দী ফিল্মে গান
করার জন্য বোম্বে আসেন।।আগে থেকেই তার খ্যাতি ছিল ছড়ানো।।বোম্বে যাবার সাথ সাথেই অনেক কাজের আসতে থাকে।।" আরজু" ফিল্মে অনিল বিশ্বাসের পরিচালনায় তার গাওয়া " এই দিল মুঝে এইছি জাগ লে চল জাঁ কোয়ি না হো গানটি তাকে বিশাল সফলতা এনে দেয়।।এরপর থেকে তাকে আর পিছনের দিকে ফিরে তাকাতে হয়নি।।

তার জীবনে প্রায় আটশত
গান গেয়েছিলেন।।তিনি আধুনিক অর্ধ - শাস্ত্রীয় ও
শাস্ত্রিয়বিহীন গজলের প্রকৃত রচয়িতা ছিলেন।।ফলে সমসাময়িক অন্যান্য গজল গায়কদের উপর তার বেশ প্রভাব পড়ে।।এরফলে মেহেদী হাসান ও
জগজিৎ সিংএর পাশাপাশি নিজেকে সামিল করেছেন।।

১৯৫০ এর দশকে ভারত উপ মহাদেশের জনপ্রিয় তিন পুরুষ গায়কের একজনরুপে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।।
বাদ বাকিরা হোচ্ছেন মোহাম্মদ রফি ও মুকেশ।। শুভ জন্মদিনে ওনার প্রতি রহিল বিনম্র শ্রদ্ধা!
-আশরাফুল আলম

**আর চোখে পড়ে না ঐতিহ্যবাহী পাল তোলা নৌকা...**এক সময়ে নদীগুলোতে সারি সারি পাল তোলা নৌকা চোখে পড়লেও সময়ের বিবর্তণ, জৌলুস ...
25/02/2025

**আর চোখে পড়ে না ঐতিহ্যবাহী পাল তোলা নৌকা...**

এক সময়ে নদীগুলোতে সারি সারি পাল তোলা নৌকা চোখে পড়লেও সময়ের বিবর্তণ, জৌলুস হারানো নদ-নদীর করুণ অবস্থা আর যান্ত্রিক সভ্যতা বিকাশের ফলে বিলুপ্তির পথে এই পাল তোলা নৌকা। আবহমান গ্রামবাংলার লোকসংস্কৃতির অন্যতম ধারক ঐতিহ্যবাহী পালতোলা নৌকা। হাতে গোনা দু’একটা পালের নাও বাদামী নাও চোখে পড়লেও তাদের নৌকায় আগের মতো আর মানুষ ওঠে না। নতুন বধূ শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়ি যাওয়ার জন্য পালতোলা নৌকার বায়না আর ধরে না।

নওগাঁ জেলার ছোট যমুনা নদীবেষ্টিত আত্রাই উপজেলার বেশির ভাগ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত ছিল নদী আর পালের নৌকা, ডিঙ্গি নৌকাসহ বিভিন্ন নৌকার সম্পর্ক। দশ থেকে পনেরো বছর আগেও দেশের পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা আর ধলেশ্বরী নদীর নৈসর্গ রূপের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে সারি সারি নৌকা। এসব নৌকায় ছিল রঙিন পাল। স্বচ্ছ পানির কলতান আর পালে লাগা বাতাসের পত পত শব্দ অনুভূতি জুগিয়েছে প্রাণে। পালতোলা নৌকায় নদী ভ্রমণে যতটা না তৃপ্ত হতো মন তার চেয়ে দূর পদ্মা, যমুনা, কালীগঙ্গা আর ধলেশ্বরীর পাড় থেকে সারি সারি নৌকার ছন্দবদ্ধ চলা আর বাতাসে পাল উড়ার মনোরম দৃশ্য দেখে মনপ্রাণ আনন্দে নেচে উঠেছে।

নদীর পাড়ে দল বেঁধে মানুষ পালতোলা নৌকার সে দৃশ্য দেখে চোখ জুড়ায়ি আসতো। আর মাঝনদী থেকে ভেসে আসা দরাজকণ্ঠে ভাটিয়ালি গানের সুর শুনে মনে তৃপ্ত এনে দিতো। নদীকে ঘিরে এক সময় পালতোলা নৌকা ছিল যাতায়াতের মাধ্যম। এপাড় থেকে ওপাড়ের যাত্রীদের ভাসিয়ে নিয়ে যেত নৌকা। তবে কালের পরিক্রমায় এসব নৌকা এখন অতীত। এখন নদীতে যেটুকু সময় পানি থাকে বিশেষ করে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নৌকা চলাচল করে। পালতোলা নৌকার দেখা মিলে না। এক সময় সাম্পন, যাত্রীবাহী গয়না, একমালাই নৌকা, কোষা নৌকা, ছিপনাও, ডিঙিনৌকা, পেটকাটা নাও, বোঁচা নাও সহ বিভিন্ন ধরণের পালের নাওয়ের ব্যবহার ছিল।

যান্ত্রিক সভ্যতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে পালতোলা নৌকা। কদর নেই মাঝি-মাল্লাদেরও। নৌকায় পাল এবং দাঁড়-বৈঠার পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে ডিজেলচালিত ইঞ্জিন। মাঝেমধ্যে দু’একটা পালের নাও এখনো নদ-নদীতে দেখা যায়।

ছবির সূত্র: রজার গোয়েন

সাল: ১৯৬৫

কিংবদন্তিগাজী মাজহারুল আনোয়ারগীতিকার, সুরকার, কাহিনীকার, পরিচালক, প্রযোজক, পরিবেশক ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব ২২ ফেব্রুয়ারী ...
24/02/2025

কিংবদন্তি
গাজী মাজহারুল আনোয়ার
গীতিকার, সুরকার, কাহিনীকার, পরিচালক,
প্রযোজক, পরিবেশক ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব
২২ ফেব্রুয়ারী ১৯৪৩ ~ ৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

গাজী মাজহারুল আনোয়ার বাংলাদেশের জনপ্রিয় সুরকার গীতিকারদের একজন। স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম নিয়ে অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা মাজহারুল আনোয়ার একাধারে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, রচয়িতা, গীতিকার ও সুরকার। তিনি ২০০২ সালে বাংলাদেশের একুশে পদক লাভ করেন। ২০ হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন তিনি। বিবিসি বাংলা তৈরিকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বিশটি বাংলা গানের তালিকায় রয়েছে তার লেখা তিনটি গান।

বিশিষ্ট চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, প্রযোজক-পরিচালক-পরিবেশক এবং একুশে পদকপ্রাপ্ত গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের জন্মদিন আজ। ১৯৪৩ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২০ হাজার গানের রচয়িতা গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। ১৯৬৫ সাল থেকে যুক্ত হন চলচ্চিত্রে। লিখতে শুরু করেন কাহিনী, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গান। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। বেশ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছবির পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার কিছু টিভি নাটকও পরিচালনা করেন। তিনি ২০০২ সালে একুশে পদক লাভ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য স্বাধীন দেশের সর্বপ্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’ও লাভ করেন তিনি। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একাধিকবার বাচসাস পুরস্কারসহ তার অর্জিত পুরস্কারের সংখ্যা ১১০ এর অধিক।

সৌজন্যে ধ্রুব আহসান

বিস্ময়কর সন্ধান: ৩০০০ বছর পুরনো পানীয় মিশরীয় ফারাও এর কবরে আবিষ্কৃত হয়েছে**মিশরীয় মরুভূমিতে, একটি আশ্চর্যজনক আবিষ্ক...
24/02/2025

বিস্ময়কর সন্ধান: ৩০০০ বছর পুরনো পানীয় মিশরীয় ফারাও এর কবরে আবিষ্কৃত হয়েছে**

মিশরীয় মরুভূমিতে, একটি আশ্চর্যজনক আবিষ্কার প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিকদের বিভ্রান্ত করেছে। ফেরাউনের কবর খনন করার সময়, একটি নিখুঁত সংরক্ষিত পানীয় পাওয়া যায়, যা 3,000 বছরেরও বেশি সময় আগে প্রাচীন মিশরের রীতিনীতি এবং আচার-আচরণ সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ প্রস্তাব করে।

১. এক অবিশ্বাস্য আবিষ্কার**
শুষ্ক মরুভুমি পরিবেশের জন্য ধন্যবাদ যে ক্যানটি চমৎকার অবস্থায় আছে, এতে বি*য়ার বা ওয়া*ইন একটি আদিম রূপ, মিশরীয় দৈনন্দিন জীবন এবং ধর্মীয় আচার-আচরণগুলিতে প্রয়োজনীয় পানীয় থাকতে পারে।

২। উপকরণ এবং উৎপাদন**
রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে এই পানীয়টি বার্লি এবং প্রাকৃতিক ঈস্ট দিয়ে তৈরি করা যেত, যুগের মিশরীয় বি*য়ারের মত। ম*দ, যদিও কম সাধারণ, উচ্চ শ্রেণীর জন্য সংরক্ষিত ছিল।

৩। সাংস্কৃতিক গুরুত্ব**
এই আবিষ্কারটি শুধুমাত্র মিশরীয়দের খাদ্যাভ্যাসের উপর আলোকপাত করে না, বরং ধর্মীয় ও অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে পানীয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও তুলে ধরে, মরোনোর কালচারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।

৪. বর্তমান এর সাথে সংযুক্ত হচ্ছি**
এই প্রাচীন পানীয়ের অধ্যয়ন সংরক্ষণ এবং উৎপাদন পদ্ধতির অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করতে পারে, যদিও প্রাচীন, আধুনিক খাদ্য এবং পানীয় প্রক্রিয়াকরণ কৌশল পাঠ প্রদান করতে পারে।

এই আবিষ্কারটি মিশরীয় সভ্যতার আধুনিকতা তুলে ধরে এবং এর রীতিনীতি ও বিশ্বাসকে আরও ভালভাবে বুঝতে নতুন দরজা খুলে দেয়, ঐতিহাসিক গবেষণায় অতীতকে বর্তমানের সাথে সংযুক্ত করে।

“শখের তোলা আশি টাকা” প্রবাদটির বাস্তব উদাহরণ ছিলেন সিরাজগঞ্জের দেলোয়ার হোসেন মিঞা। তার শখ পূরণের গল্প যেমন ব্যতিক্রমী, ত...
24/02/2025

“শখের তোলা আশি টাকা” প্রবাদটির বাস্তব উদাহরণ ছিলেন সিরাজগঞ্জের দেলোয়ার হোসেন মিঞা। তার শখ পূরণের গল্প যেমন ব্যতিক্রমী, তেমনি মর্মস্পর্শী।

ঘটনাটি ১৯৬৫ সালের। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার রহিমাবাদ গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন মিঞা। যিনি পাঁচ বিঘা জমি বিক্রি করে একটি রেডিও কিনছিলেন, আর ব্যাটারি কেনার জন্য বিক্রি করেছিলেন আরও এক বিঘা জমি!

শখ পূরণে মানুষ কতকিছুই তো করে, কিন্তু এমন ঘটনা ইতিহাসে বিরল। এর জন্য অবশ্য পরবর্তীতে দেলোয়ার মিঞাকে অনেক কষ্টও করতে হয়েছে। অভাবের তাড়নায় সাত বছরের মাথায় আবার শখের সেই রেডিও বিক্রিও করেছেন তিনি। তার আগে বিক্রি করছেন নিজের বসতবাড়ি।

তাঁর ছেলে আলতাফ হোসেন বাবার স্মৃতি হিসেবে ৫০ বছর পরে ২০২২ সালে সেই রেডিও আবার বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছেন।

অর্ধশতাব্দীর বেশি পুরোনো রেডিও দেখতে এখন অনেকে ভিড় করছেন আলতাফ হোসেনের বাড়িতে। কিন্তু তিনি রেডিও বাজাতে পারছিলেন না। রেডিওটি চালু করতে একসঙ্গে আটটা ব্যাটারি লাগে। এর দাম প্রায় ৪০০ টাকা। কিন্তু ওই টাকা খরচের সামর্থ্যও নেই আলতাফের। কারণ, শখের মূল্য দিতে গিয়ে বাবা তাঁদের নিঃস্ব করে গেছেন। রেডিওটার গায়ে লেখা আছে নিপ্পন ইলেকট্রনিক কোম্পানি লিমিটেড, জাপান।

বাবার সেই কাহিনি বলতে গিয়ে চোখ ভিজে উঠে আলতাফের। তাঁর বয়স এখন প্রায় সত্তর বছর। শুনেছি, তিনি মানুষের বাড়িতে রাখালের কাজ করেন।

আলতাফ হোসেন বলেন, বাবার শখের শেষ ছিল না। এলাকার মানুষ যা চাইতেন, বাবা তা–ই দিতেন। সবাইকে খুশি করতে গিয়ে একসময় পৈতৃক ২৬ বিঘা জমি শেষ হয়ে গেল। ১৯৭২ সালে রেডিওটাও ১৮০ টাকায় বিক্রি করে দিলেন। আলতাফ বললেন, ‘তখন আমি চিক্কর দিয়া উঠলাম। কইলাম বাবা, জমিও গেল, রেডিও গেল! বাবা আমাক সান্ত্বনা দিয়ে কইলেন, আবার কিনে দিব।’

রেডিও বিক্রির আগে আলতাফ হোসেনের বাবা ১৯৬৯ সালে নিজের বাড়িও বিক্রি করেন। ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি তিনি মারা যান। কয়েকবছর আগে শুনেছিলাম, আলতাফ পাশের বনবাড়িয়া গ্রামের রহমান মাস্টারের বাড়িতে রাখালের কাজ করেন। তাতেও তাঁর কোনো দুঃখ নেই। তাঁর মন পড়ে থাকে রেডিওর কাছে। স্থানীয় জিল্লার খন্দকার নামের এক ব্যক্তি রেডিওটি কিনেছিলেন। তিনি দিনে দুবার করে তাঁর বাড়িতে যান। কিছুতেই তাঁরা দিতে চান না। ২০১০ সালে জিল্লার খন্দকার মারা গেলে রেডিওটা তাঁর ছেলে আমজাদের কাছে ছিল। তাঁর কাছে গেলে তিনি বলতেন বাবা মারা যাওয়ার আগে কোথায় রেখে গেছে জানেন না। তবু হাল ছাড়েন না আলতাফ।

পাশের চেংটিয়া গ্রামের নির্মাণশ্রমিকের সহকারী হাবিবুর আলী শেখ, পাঁচ বিঘা জমি বিক্রি করে রেডিও কেনার বিষয়টি তিনিও জানেন। তাঁর ভাষ্যমতে, তখন তাঁর পুরো জ্ঞান হয়েছে। আলতাফ হোসেনের বাবা রেডিও কিনে আনলেন। গ্রামের শত শত মানুষ এসে সেই রেডিওতে ভাষণ শুনছেন, গান শুনছেন—এসব তিনি নিজের চোখে দেখেছেন।

২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি সকাল সাতটায় ৫০০ টাকার একটা নোট নিয়ে তিনি আমজাদের কাছে গিয়ে অনুনয় করে বলেন, রেডিওটা ফেরত না দিলে আপনার বাবা কবরে কষ্ট পাবেন। এ কথা শুনে টাকা ছাড়াই আমজাদ তাঁর হাতে রেডিওটি তুলে দেন। আলতাফ হোসেন বলেন, পাঁচ বছর বয়স থেকে তিনি রাখালি করছেন। সারা জীবন শুধুই কষ্ট। এ জন্য বিয়ে করতেও দেরি হয়েছে। মেয়েটা ৩ বছর আগে এইচএসসি পাস করেছে। ছেলেটা ছোট। তখনও রাখালিই করছেন। সংসারই চলে না। বাবার রেডিওর সেই আওয়াজ ভুলতে পারেন না। মন চায় রেডিওটা বাজাতে। আটটা ব্যাটারির দাম এখন ৪০০ টাকা। বিদ্যুতে শুনবেন, তার জন্য মিস্ত্রির কাছে নিতে হবে। সে সামর্থ্যও যে তাঁর নেই। বলতে বলতে আলতাফ হোসেন রেডিওটা বুকের কাছে ধরেন। তাঁর চোখ ভিজে ওঠে।

চুপি চুপি বল কেউ জেনে যাবে -স্মরণ -         গীতিকার মনসুর আহমেদ---------------------------------------------------গীতিকা...
22/02/2025

চুপি চুপি বল কেউ জেনে যাবে -

স্মরণ -

গীতিকার মনসুর আহমেদ
---------------------------------------------------
গীতিকার, গায়ক, সুরকার মনসুর আহমেদের জন্ম ২০ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৫ সালে রংপুর শহরের জুম্মাপাড়ায়।

প্রচন্ড অভিমানী ছিলেন তিনি। আর অভিমান না থাকলে একজন প্রকৃত শিল্পীও হওয়া যায় না। তাইতো মনসুর আহমেদ ছিলেন প্রকৃতই একজন শিল্পী।

প্রথিতযশা এই সঙ্গীতজ্ঞ প্রথম জীবনে গায়ক ছিলেন। একেক সময় চলচ্চিত্রে এক ধরনের গানের ঢেউ আসে।

দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় সিনেমার গানের আদলে এখানে গান রচিত হচ্ছিল বলে তিনি খুব ভেঙে পড়েছিলেন। দেশের নানান অবক্ষয় তাঁকে খুব কষ্ট দিয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও তিনি এসব অসঙ্গতিকে রুখতে না পারায় অভিমানে একসময় সবকিছু থেকে দূরে চলে যান।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৩ সালে মনসুর আহমেদ লাহোরে বাঙালি সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে নিজের আত্মপ্রকাশ ঘটান।

তাঁর সঙ্গীত পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র 'হুসন কি শেহজাদি' তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তাঁর সঙ্গীত পরিচালনায় অনেকগুলো ছবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো - রাখাল বন্ধু, লাইলী-মজনু, ডাকু মনসুর, একমুঠো ভাত, বাহাদুর, বাহরাম বাদশা প্রভৃতি।

তাঁর সুর করা অনেক গানের মধ্যে রয়েছে ‘পাখির বাসার মতো দুটি চোখ তোমার’, ‘চুপি চুপি বলো কেউ জেনে যাবে’, ‘তুমি যে ডাকাত তুমি চোর’ এসব।

১২ জুন ২০১৪ সালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি।

-- মেসবা খান

বহু মাত্রিক ব্যক্তিত্ব. কবি "আসাদ চৌধুরী"---------------------------------------------------আসাদ চৌধুরী বাংলাদেশের একজন ...
21/02/2025

বহু মাত্রিক ব্যক্তিত্ব. কবি "আসাদ চৌধুরী"
---------------------------------------------------
আসাদ চৌধুরী বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কবি ও সাহিত্যিক।

তিনি মনোগ্রাহী টিভি উপস্থাপনা ছাড়াও চমৎকার আবৃত্তির জন্যও জনপ্রিয় ছিলেন।

সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় রয়েছে তাঁর অবাধ পদচারনা। কবিতা ছাড়াও তিনি বেশকিছু শিশুতোষ গ্রন্থ, ছড়া, জীবনী ইত্যাদি রচনা করেছেন। সম্পাদনা করেছেন কিছু অনুবাদ কর্মও।

১৯৮৩ সালে তাঁর রচিত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য 'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শীর্ষক' গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।

তিনি একজন বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত কবি। তাঁর কবিতা গীতিময় ও ছন্দোদ্ভাসিত। তাঁর ব্যঙ্গার্থক কবিতা 'কোথায় পালালো সত্য' একটি জনপ্রিয় পদ্য।

জন্মেছিলেন ১৯৪৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার উলানিয়ায়। পিতার নাম মোহাম্মদ আরিফ চৌধুরী। মাতা সৈয়দা মাহমুদা বেগম। স্ত্রী শাহানা বেগম।

তিনি ১৯৫৭ সালে পুরান ঢাকার আর্মানিটোলা হাই স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৯৬০ সালে বরিশালের ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।

শিক্ষকতা করেছেন ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে।

১৯৮৫-১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তিনি ভয়েস অব জার্মানীর ঢাকাস্থ সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেন। আসাদ চৌধুরী বাংলা একাডেমিতে চাকরির পর এর পরিচালক হিসেবে অবসর গ্রহন করেন।

তিনি বহু কবিতা, প্রবন্ধ, গবেষনা, শিশু সাহিত্য, জীবনী, ইতিহাস রচনা ও অনুবাদ সহ সম্পাদনার কাজও করেছেন।

সাহিত্য সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদান রাখায় একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সন্মাননায় ভূষিত হন বিরল এই ব্যক্তিত্ব।

২০২৩ এর ৫ অক্টোবর টরেন্টোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।(c)

Address

Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when সময় পূর্বাপর - Somoy Purbapar posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to সময় পূর্বাপর - Somoy Purbapar:

Share

Category