30/08/2025
জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে গণ অধিকার পরিষদের হামলা ও ভাঙচুর।
ঢাকা: শুক্রবার (২৯ আগস্ট, ২০২৫) বিকেলে রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আকস্মিক হামলা চালিয়েছে গণ অধিকার পরিষদের একদল নেতাকর্মী। এ হামলায় কার্যালয়ের বিভিন্ন আসবাবপত্র, কাঁচের দরজা ও জানালা ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষও ঘটে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।
হামলার কারণ:
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, এই হামলার মূল কারণ হলো গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরের উপর হামলার প্রতিবাদ। গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট, ২০২৫) জাতীয় পার্টির একদল নেতাকর্মীর হামলায় নূরুল হক নূর গুরুতর আহত হন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা চালায়।
ঘটনার বিবরণ:
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ঘটনার সূত্রপাত হয় শুক্রবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটের দিকে। গণ অধিকার পরিষদের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে আসে। তারা নূরুল হক নূরের উপর হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে কার্যালয়ের ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় কার্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের বাধা দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
বাধা পেয়ে হামলাকারীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা কার্যালয়ের প্রধান ফটকের তালা ভাঙার চেষ্টা করে এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করে। কিছু নেতাকর্মী জোর করে কার্যালয়ের ভিতরে প্রবেশ করে এবং নির্বিচারে ভাঙচুর চালায়। তারা চেয়ার, টেবিল, ফাইল ক্যাবিনেট, টেলিভিশন এবং কাঁচের দরজা ও জানালা ভেঙে দেয়। কার্যালয়ের ভিতরে থাকা জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতাকর্মী প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলে তাদের উপরও হামলা চালানো হয়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
প্রতিক্রিয়া ও বক্তব্য:
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নু এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটি একটি পরিকল্পিত হামলা। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
অন্যদিকে, গণ অধিকার পরিষদের একজন সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, “জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা আমাদের সভাপতির উপর হামলা করেছে। আমরা সেই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে এসেছিলাম। কিন্তু তাদের উস্কানির কারণেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে।”
পুলিশের ভূমিকা:
খবর পেয়ে বনানী থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আজম মিয়া জানান, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এ ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের উপর জোর দিয়েছে।