মিথিলা আকন্দ

মিথিলা আকন্দ A collection of quiet storms, unspoken verses, and skies I carry within.

বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনা আমাদের সমাজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদাসীনতাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। এ...
17/09/2025

বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক হৃদয়বিদারক ঘটনা আমাদের সমাজের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদাসীনতাকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে। এক মা তার ছয় মাস বয়সী শিশুকে গলা কেটে হত্যা করেছেন। পুলিশের সামনে তিনি অবলীলায় স্বীকার করেছেন যে, সন্তান জন্মের পর থেকে তিনি ভালোভাবে রান্না করতে পারেননি, বড় সন্তানের যত্ন নিতে পারেননি, আর সেই কারণেই তিনি নিজেই শিশুটিকে হত্যা করেছেন। এমন স্বীকারোক্তি শুধু ভয়ঙ্করই নয়, বরং আমাদের সমাজের অদৃশ্য এক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি।

শিশুর জন্ম একটি পরিবারের জন্য আনন্দের মুহূর্ত হলেও, একজন মায়ের জন্য এটি এক কঠিন পরীক্ষার সময়। এই সময়ে তিনি শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যান। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর নাম পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন—প্রসব-পরবর্তী বিষণ্নতা। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে মা অসহায়তা, ক্লান্তি, আত্মগ্লানি এমনকি শিশুর প্রতি বিরূপ চিন্তার মতো ভয়ংকর অনুভূতির শিকার হতে পারেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের সমাজে এই বিষয়টি এখনো স্বীকৃতি পায় না, বরং “নাটক” বা “অজুহাত” বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়।

প্রতিটি মায়ের পাশে তার পরিবার—বিশেষ করে স্বামী—সবচেয়ে বড় ভরসা হওয়ার কথা। কারণ সন্তান জন্মের পর একজন মা শারীরিক দুর্বলতার পাশাপাশি মানসিক অস্থিরতায়ও ভুগতে থাকেন। এ সময় স্বামী যদি ঘরের কাজে সহায়তা করেন, সন্তানের দায়িত্ব ভাগ করে নেন, স্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন এবং সমালোচনার বদলে বোঝাপড়া দেখান, তবে মা নিজেকে একা মনে করেন না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের সমাজে খুব কম স্বামী এই দায়িত্ব স্বতঃস্ফূর্তভাবে গ্রহণ করেন। বরং অনেক সময় পরিবার থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয়, যা মায়ের অবস্থা আরও জটিল করে তোলে।

এমন পরিস্থিতিতে সমাজের দায়িত্বও কম নয়। প্রসব-পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক পরামর্শ সেবা যুক্ত হওয়া উচিত। মিডিয়া ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা শুরু করতে হবে, যাতে মায়েরা নিজেদের সমস্যাকে লুকিয়ে না রেখে সাহসের সঙ্গে প্রকাশ করতে পারেন।

ছয় মাস বয়সী একটি শিশুর মৃত্যু কেবল একজন মায়ের অপরাধ নয়, এটি পুরো সমাজের ব্যর্থতা। আমরা যদি সময়মতো মায়েদের মানসিক অবস্থার প্রতি মনোযোগী হতাম, যদি পরিবার দায়িত্বশীল আচরণ করত, তবে হয়তো এই শিশুটি আজও বেঁচে থাকত। এই করুণ ঘটনার শিক্ষা আমাদের একটি কথাই মনে করিয়ে দেয়—একজন মায়ের যত্ন মানে শুধু সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাকে বিশ্রাম দেওয়া নয়, বরং তার মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিও সমান যত্নবান হওয়া। সন্তানের জন্মের আনন্দ তখনই পূর্ণতা পাবে, যখন মা নিজেকে নিরাপদ, ভালোবাসায় ঘেরা এবং বোঝাপড়ার পরিবেশে খুঁজে পাবেন।

শূন্য  ‼️শূন্য এমন এক ধারণা, যা মানবচিন্তার ইতিহাসে সবচেয়ে গভীর ও রহস্যময়। শূন্য মানে শুধু কিছু না থাকা নয়, বরং নতুন সম্...
12/09/2025

শূন্য ‼️

শূন্য এমন এক ধারণা, যা মানবচিন্তার ইতিহাসে সবচেয়ে গভীর ও রহস্যময়। শূন্য মানে শুধু কিছু না থাকা নয়, বরং নতুন সম্ভাবনার সূচনা। এ কারণেই দর্শনে শূন্যকে কখনো ভয়, কখনো মুক্তি, কখনো আবার সৃষ্টির উর্বর ক্ষেত্র হিসেবে দেখা হয়।

সংখ্যার জগতে শূন্য এক অদ্ভুত শক্তি। একা শূন্যের কোনো মূল্য নেই, কিন্তু একবার অন্য সংখ্যার সাথে মিলিত হলে সে সংখ্যাকে বহু গুণ বড় করে দেয়। এখানেই লুকিয়ে আছে এক জীবনদর্শন—তুমি যতই অর্জন করো না কেন, সেই অর্জনের মূল্য বাড়াতে হলে বিনয়ের শূন্যকে বুকে রাখতে হয়।

আবার আধ্যাত্মিকতার আলোয় শূন্য মানে নীরব মহাশূন্য, যেখানে সবকিছুর শুরু আর সবকিছুর শেষ। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষের যাত্রা আসলে শূন্য থেকে শুরু হয়ে আবার শূন্যের দিকে ফেরা। তাই শূন্য শুধু একটি সংখ্যা নয়, এটি হলো জীবনের মূল রূপক।

শূন্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়—সবকিছু হারিয়ে গেলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, কারণ শূন্যের ভেতরেই লুকিয়ে আছে নতুন শুরু করার ক্ষমতা। এই নীরব শক্তিই মানুষকে পুনর্জন্ম দেয়, আবার উঠে দাঁড়াতে শেখায়।

শূন্যের সৌন্দর্য তার অসীমতায়, আর ভয় তার অনন্ত রহস্যে। এ কারণেই শূন্যকে বলা যায় ভয়ানক সুন্দর সম্ভাবনা।

“শূন্যের ভেতরে আছেই সবকিছুর পূর্ণতা। কারণ শূন্য ছাড়া সৃষ্টি অসম্ভব।” — জগদীশচন্দ্র বসু

কলম- মিথিলা আকন্দ

তোমার মানুষটা তোমাকে কতটা ভালোবাসে তা আসলে বোঝা যায় তার যত্নে।তুমি একটি কথা না বললেও সে তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে নেব...
11/09/2025

তোমার মানুষটা তোমাকে কতটা ভালোবাসে তা আসলে বোঝা যায় তার যত্নে।
তুমি একটি কথা না বললেও সে তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝে নেবে – তোমার খিদে পেয়েছে, ঘুম এসেছে, তুমি ক্লান্ত, নাকি মন খারাপ।

তুমি চাওনি তবু সে নিঃশব্দে তোমার পাশে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দেবে, কোমর জড়িয়ে নেবে, চুলগুলো সরিয়ে তোমার কপালটা ফাঁকা করবে। চুমু খাবে। হাজারটা লোকের ভীড়ে, ব্যস্ততায়ও সে শক্ত করে তোমার হাত ধরে রাখবে, তোমাকে নিরাপদ অনুভব করাবে, তোমার কষ্ট গুলো নিজের ভেবে তাতে শান্তির প্রলেপ দেবে।

তোমাকে কতটা ভালোবাসে তা শেষ পর্যন্ত বলে দেবে তার চোখ—যে চোখ তোমাকে দেখলেই আনন্দে ভরে ওঠবে, উচ্ছ্বাসিত চঞ্চলতা খেলা করবে তোমার উপস্থিতিতে।

11/09/2025

কাঁথা ছাড়া কেন ঘুম আসে না: মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা

অনেক মানুষের অভ্যাস এমন হয় যে শীত কিংবা গরম—ঘুমানোর সময় তাদের কাঁথা চাই-ই চাই। বাইরে তাপমাত্রা যতই বেশি হোক না কেন, কাঁথা ছাড়া যেন ঘুমের দরজা খোলে না। অনেকের কাছে এটি অদ্ভুত মনে হলেও এর পিছনে রয়েছে মনস্তাত্ত্বিক ও শারীরিক কিছু ব্যাখ্যা।

প্রথমত, কাঁথা শরীরকে ঢেকে রাখে বলে মস্তিষ্কে এক ধরনের নিরাপত্তার অনুভূতি তৈরি হয়। ছোটবেলার কথা মনে করুন—শিশুকে যখন কাপড় বা কাঁথায় মুড়ে রাখা হয়, তখন সে নিশ্চিন্তে ঘুমায়। সেই নিরাপত্তার অনুভূতি বড় বয়সেও অবচেতনভাবে টিকে থাকে।

দ্বিতীয়ত, এটি একটি অভ্যাসের ফল। দীর্ঘদিন ধরে কাঁথা দিয়ে ঘুমালে মস্তিষ্ক শিখে নেয় যে “কাঁথা মানেই ঘুমের সিগন্যাল”। ফলে কাঁথা ছাড়া মনে হয় ঘুমের পরিবেশ অসম্পূর্ণ।

তৃতীয়ত, কাঁথার হালকা চাপ শরীরকে আরাম ও প্রশান্তি দেয়। বৈজ্ঞানিকভাবে দেখা গেছে, এমন চাপ শরীরে অক্সিটোসিন ও সেরোটোনিন হরমোন নিঃসৃত করে, যা উদ্বেগ কমিয়ে মনকে শান্ত করে এবং ঘুম সহজ করে তোলে।

সবশেষে, কাঁথা অনেক সময় এক ধরনের মানসিক ভরসা বা “comfort object” হয়ে দাঁড়ায়। যেমন কারও বিশেষ বালিশ ছাড়া ঘুম হয় না, তেমনি কারও কাছে কাঁথা মানে নিরাপত্তা, আরাম এবং নিশ্চিন্ত ঘুম।

তাই কাঁথা শুধুই একটি কাপড় নয়—বরং এটি কারও কারও কাছে মানসিক সঙ্গী, ঘুমের অদৃশ্য সহচর।

একটা বিশেষ সময়ে মনটা হঠাৎ করে ভীষণ কষ্টে ভরে ওঠে। ভুলে যাওয়া ঘটনা ফিরে আসে, পুরোনো দুঃখ কিংবা প্রতারণার স্মৃতি আবারও সাম...
10/09/2025

একটা বিশেষ সময়ে মনটা হঠাৎ করে ভীষণ কষ্টে ভরে ওঠে। ভুলে যাওয়া ঘটনা ফিরে আসে, পুরোনো দুঃখ কিংবা প্রতারণার স্মৃতি আবারও সামনে এসে দাঁড়ায়। যাদের ভেবেছিলাম ক্ষমা করেছি, বুঝি আসলে পুরোপুরি পারিনি; যেগুলো ভেবেছিলাম ভুলে গেছি, সেগুলোও যেন মনের গভীরে লুকিয়ে থেকে যায়। তখন বুকের ভেতর ভারী পাথরের মতো চাপা কষ্ট জমে থাকে। কয়েকটা দিন একেবারেই অশান্তি আর বিরক্তিতে কেটে যায়।

আমার জীবনে কষ্ট দেওয়ার মানুষ কম ছিল না, প্রতারণার অভিজ্ঞতাও কম আসেনি। কিন্তু সব শেষে আমি নিজেকে বলি—
“এই যে আমি এতকিছুর পরেও টিকে আছি, নিজেকে শেষ করে দিইনি, বরং বেঁচে আছি—এটাই আমার জয়ের প্রমাণ।”
এই কষ্ট দেওয়া মানুষগুলোই আমাকে সবচেয়ে বড় শিক্ষা দিয়েছে। স্কুল, কলেজ কিংবা বই আমাকে যতটা শেখায়নি, তার চেয়ে বেশি জীবন শিখিয়েছে এরা।

ঠিকই তো বলেছেন ফ্রিডরিখ নীৎশে—
“What does not kill us makes us stronger.”
(“যা আমাদের মারে না, তা আমাদের আরও শক্তিশালী করে।”)

আমি কৃতজ্ঞ সেই বন্ধু, আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের প্রতিও—যারা আমার অসহায়ত্ব জেনেও সাহায্যের হাত বাড়ায়নি, খোঁজ নেয়নি। ওরা ভালো থাকুক। আমি বাঁচি তাদের নিয়েই, যারা সবসময় আগলে রেখেছে, ভালোবেসেছে।

আজ আর কে দুঃখ দিলো তা নিয়ে ভাববার সময় নেই। যারা ভালোবাসে, তাদের নিয়েই দিব্যি কেটে যাচ্ছে আমার জীবন।
আলহামদুলিল্লাহ।

এবং আমি মনে রাখি—
“Forgive others, not because they deserve forgiveness, but because you deserve peace.” – Jonathan Lockwood Huie
(“অন্যকে ক্ষমা করো, তাদের প্রাপ্য বলে নয়, বরং তুমি শান্তি পাওয়ার যোগ্য বলে।”)

09/09/2025

যখন কেউ আমাকে খারাপভাবে কষ্ট দেয়, প্রথমবার আমি চেষ্টা করি তাকে বোঝাতে—সে আমার সাথে কতটা অন্যায় করেছে। কিন্তু এরপর আমি নিজেকেই বোঝাই, কাউকে তুমি বদলাতে পারবে না, বদলানো যায় শুধু নিজেকেই। তাই কষ্ট কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হলো নিজেকে বদলে ফেলা। ভুলটা কার, সেটা প্রমাণ করার চেষ্টা না করে নিজের ইমোশনকে নিয়ন্ত্রণ করা।

“Dignified Silence” মানে হলো এমন এক নীরবতা, যা দুর্বলতা নয় বরং শক্তি ও প্রজ্ঞার প্রতীক। জীবনে অনেক সময় আমরা এমন পরিস্থিত...
05/09/2025

“Dignified Silence” মানে হলো এমন এক নীরবতা, যা দুর্বলতা নয় বরং শক্তি ও প্রজ্ঞার প্রতীক। জীবনে অনেক সময় আমরা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হই, যেখানে কথা বললে মানসম্মান ক্ষুণ্ন হতে পারে, অযথা বিতর্ক বাড়তে পারে কিংবা সময় ও শক্তির অপচয় হয়। সেখানে চুপ করে থাকা মানে পালিয়ে যাওয়া নয়, বরং নিজেকে অযথা নিচে নামানো থেকে বিরত রাখা।

যখন তুমি নীরব থাকো, তখন তুমি আসলে প্রমাণ করো—

তুমি আবেগ দ্বারা নয়, বুদ্ধি দ্বারা চালিত।

তুমি জানো কোথায় নিজের অবস্থান ধরে রাখা জরুরি, আর কোথায় নীরবতাই সবচেয়ে শক্তিশালী উত্তর।

তুমি নিজের সম্মান, মানসিক শান্তি ও শক্তিকে মূল্য দাও।

“Dignified Silence” হলো এমন এক শিল্প, যা শেখায় কখন কথা বলতে হবে আর কখন নীরবতাই যথেষ্ট। কারণ, সব প্রশ্নের উত্তর কথায় দিতে হয় না—কখনও কখনও নীরবতাই সবচেয়ে গভীর, পরিপক্ব এবং এলিগেন্ট রেসপন্স।

📌 “Silence is a source of great strength.” — লাও ৎসু

🌿 “In nature, nothing is perfect and everything is perfect.” – আলবার্ট আইনস্টাইন
03/09/2025

🌿 “In nature, nothing is perfect and everything is perfect.” – আলবার্ট আইনস্টাইন

02/09/2025

এডজাস্টমেন্ট মানে সব কিছু নিঃশর্তভাবে মেনে নেওয়া নয়।
এডজাস্টমেন্ট মানে হলো—নিজের সম্মান, অনুভূতি, আর মতামতের মূল্য বজায় রেখে, অন্যের অনুভূতির প্রতিও সম্মান দেখিয়ে সমঝোতার পথ খুঁজে নেওয়া।
এটা একতরফা আত্মত্যাগ নয়, বরং পারস্পরিক বোঝাপড়ার উপর দাঁড়ানো এক ধরণের সম্মানজনক ভারসাম্য।
এডজাস্টমেন্ট তখনই সার্থক হয়, যখন তা কাউকে ছোট না করে, নিজেকেও হারিয়ে না ফেলে।

28/08/2025

মানুষের উপর আধিপত্য নয়, চিন্তার উপর নিয়ন্ত্রণ 🙂

মানুষের ধারণা কখনোই জোর করে বদলানো যায় না। প্রত্যেকের দৃষ্টিভঙ্গি তার নিজস্ব অভিজ্ঞতা, পরিবেশ ও মানসিক গঠনের উপর নির্ভর করে। তাই কাউকে জোর করে বোঝাতে গেলে বরং প্রতিরোধই তৈরি হয়। সক্রেটিস বলেছিলেন—
“Strong minds discuss ideas, average minds discuss events, weak minds discuss people.”
অর্থাৎ শক্তিশালী মন সর্বদা ভাবনার গভীরে যায়, তুচ্ছ বিষয়ে আটকে থাকে না।

আমরা হয়তো কাউকে সরাসরি বলতে পারব না—অশ্লীল, অনর্থক বা অশৃঙ্খল বিষয় এড়িয়ে গিয়ে এমন কিছু দেখুন যা মন ও জীবনকে সমৃদ্ধ করবে। কিন্তু আমরা যা করতে পারি, তা হলো ইতিবাচক বিকল্প তৈরি করা। এমন কিছু কাজ ও কনটেন্ট তৈরি করা, যা মন, জীবন ও চিন্তার উন্নয়নে সহায়ক হবে এবং মানুষকে স্বাভাবিকভাবে সেই পথে আকৃষ্ট করবে।

মানুষের উপর মানুষের আধিপত্য আসলে ভ্রান্ত ধারণা। ইতিহাস প্রমাণ করেছে—প্রতিটি আধিপত্যই শেষ পর্যন্ত সংঘাত, বিভাজন ও অস্থিরতা ডেকে আনে। মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন—
“The moment the slave decides he will no longer be a slave, his chains fall.”
অর্থাৎ মানুষ নিজেই নিজের মুক্তির পথ বেছে নেয়, অন্য কেউ সেটা চাপিয়ে দিতে পারে না।

আজকের পৃথিবী প্রযুক্তি ও তথ্যের অবারিত প্রবাহে ভরপুর। এর সুবিধার পাশাপাশি এক বিশাল অস্থিরতাও তৈরি হয়েছে। অর্থহীন বিনোদন বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট মানুষকে মুহূর্তের আনন্দ দিলেও দীর্ঘমেয়াদে মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে, চিন্তার স্বচ্ছতা কমিয়ে দেয়। এর প্রভাব পড়ে সমাজে—অসহিষ্ণুতা, অবিশ্বাস এবং নৈতিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে।

তাই প্রয়োজন চিন্তার উপর নিয়ন্ত্রণ। সুস্থ, শ্লীল ও শৃঙ্খলাবদ্ধ মন কেবল একজন মানুষের উন্নতির জন্য নয়, বরং সমগ্র সমাজ ও পৃথিবীর জন্য অপরিহার্য। মন শান্ত হলে চিন্তা উন্নত হয়, চিন্তা উন্নত হলে কাজ সৃজনশীল হয়, আর সৃজনশীল কাজই গড়ে তোলে এক সুস্থ ও সুন্দর সমাজ।

রালফ ওয়াল্ডো এমারসন বলেছিলেন—
“The ancestor of every action is a thought.”
অর্থাৎ প্রতিটি কাজের মূলেই একটি চিন্তা থাকে। তাই যদি আমরা চিন্তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারি, তবে কাজ ও তার ফলাফলও ইতিবাচক হবে।

কলম- #মিথিলা_আকন্দ

অনেক তদবির, যত্ন-আত্তি আর ভালোবাসা ঢালার পর যা হলো—এক মুঠো শাক! তাও দেখে মনে হলো যেন লটারিতে পুরস্কার জিতেছি। আনন্দ আর ধ...
28/08/2025

অনেক তদবির, যত্ন-আত্তি আর ভালোবাসা ঢালার পর যা হলো—এক মুঠো শাক! তাও দেখে মনে হলো যেন লটারিতে পুরস্কার জিতেছি। আনন্দ আর ধরেনা। লালশাক প্রথমে বেশ হিরো সাজার ভঙ্গি করে দাঁড়াল—“আমি বাঁচব, আমি বড় হবো!” কিন্তু দুদিন না যেতেই ধপাস করে কাত হয়ে পড়ল, যেন ডায়লগ শেষ হয়ে গেছে। কলমিশাকের কাহিনী আরও করুণ। শুরুতে স্বপ্ন দেখাল, পাতা গজাল, আমি আশায় বুক বাঁধলাম, আর শেষে হুট করে না-ফেরার দেশে চলে গেল। মনে হলো বিদেশি হাওয়ায় তার ভিসাই মেলেনি।

পুইশাক এখনও বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ভঙ্গিটা এমন যেন বলছে—“আমি এই বাগানের শেষ সম্রাট!” আর লাউ আড়ালে থেকে রাজনীতি করছে, সময় এলে ফল দেখাবে সেই ভরসা দিচ্ছে। এর মধ্যে আমার দুশ্চিন্তা—এই সামান্য শাক রান্না করব মাথা দিয়ে, না লেজা দিয়ে? চিন্তা করতে করতে ততক্ষণে শাক শুকিয়ে অর্ধেক হয়ে গেছে।

আমার অবস্থা এখন টাকা-ওয়ালা টাকলার মতো। টাকা কেমনে বানাব সেই চিন্তায় চুল হারিয়ে ফেলেছি, আর এখন চুল কেমনে জোগাড় করব, সেই ভাবনায় আছি। বিদেশে শাকচাষ আসলেই একেকটা টিভি সিরিয়ালের মতো—কেউ বাঁচে, কেউ মরে, কেউ হিরো, কেউ ভিলেন। আর আমি দর্শক হয়ে বসে শুধু ডায়লগ মারি—“আহা, দেশে হলে ২০ টাকায় ঝুড়ি ভরা শাক কিনে খাইতাম!” 😂

আমার কাছে বন্ধুত্বের মানে অনেক গভীর, অনেক বেশি আন্তরিক। এক ক্লাসে পড়লে কেউ আমার সহপাঠী হতে পারে, এক অফিসে কাজ করলে তারা ...
05/02/2025

আমার কাছে বন্ধুত্বের মানে অনেক গভীর, অনেক বেশি আন্তরিক। এক ক্লাসে পড়লে কেউ আমার সহপাঠী হতে পারে, এক অফিসে কাজ করলে তারা হতে পারে আমার সহকর্মী। জায়গা ভেদে পরিচিত অনেক মানুষের সাথেই ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বন্ধু হওয়ার সংজ্ঞাটা আমার কাছে আলাদা, অনেক গভীর এবং ব্যক্তিগত।

বন্ধু মানে আমার আত্মার আরেকটা প্রতিচ্ছবি। যার কাছে আমি আমার সবচেয়ে স্বাভাবিক, নির্ভীক, এবং নিরাভরণ রূপে থাকতে পারি। যার সামনে আমাকে কোনো মুখোশ পরে থাকতে হয় না, কোনো কথা বলার আগে একশোবার ভাবতে হয় না, "সে কি ভাববে?" এই ভাবনা আমাকে তাড়িত করে না।

বন্ধু সেই, যার কাছে আমার জীবনের সমস্ত গল্প বলা যায়, ভালো-মন্দ, সাফল্য-বিফলতা, এমনকি আমার পাপও। যে আমাকে সেই গল্পের জন্য কখনো বিচার করবে না, বরং পাশে থেকে বুঝতে চাইবে। যার কাছে নিজের দুর্বলতা খুলে দেখাতে ভয় নেই।

বন্ধু মানে এমন একজন, যার বাড়িতে যাওয়ার জন্য দাওয়াত লাগে না। যার ঘরে আমি নিজেকে একজন অতিথি নয়, বরং পরিবারের অংশ মনে করি। যার প্লেট থেকে নিজের পছন্দের খাবার তুলে নেওয়াটা যেন খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার।

আর বন্ধু সেই, যার সাথে নীরবতাও আরামদায়ক। যার সঙ্গ শুধু কথার জন্য নয়, উপস্থিতির জন্যই মূল্যবান। যার সাথে একসাথে বসে থাকা মানেই এক টুকরো শান্তি।

আমার কাছে বন্ধুত্ব মানে আত্মার বন্ধন। যা প্রয়োজনের বাইরেও টিকে থাকে, সময়ে ফিকে হয় না, বরং গভীর হয়। বন্ধুত্ব মানে এমন এক সম্পর্ক, যা সব হিসেব-নিকেশের ঊর্ধ্বে।

নাঈমা রুমি ❤️

Address

Dhaka
1216

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মিথিলা আকন্দ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to মিথিলা আকন্দ:

Share