
18/06/2025
ভা—-তা….র
কারাগার থেকে বের হবার পর দুমাস একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম- এরপরই ফেসবুক খোলার জন্য পরান আনচান করে উঠলো! আগের আইডির পাসওয়ার্ড, মেইল সব ভুলে গেছি- নতুন করেই আইডি বানালাম! একটা লেখা বা ছবি পোস্ট করলে আট দশটা লাইক! বুকের মধ্যে হু হু করে ! আমার প্রায় দুশো ফেক আই ডি আছে! এটাকেও বেশিরভাগ মানুষ ফেক ভাবছে !
কেউ কেউ মেসেঞ্জারে নক দেয় -আপনি কি আসলেই সাবরিনা! আমি তখন নিজের অস্তিত্ব জানান দিতে মরিয়া! উত্তর দেই - হ্যা হ্যা- আমিই …!
তিন বছরে যাঁদের সামান্যতম করুনাও আমার প্রতি জাগ্রত হয়নি এখন তাদের ভালবাসা যেন চুলার জ্বালে বসানো বলক ওঠা দুধের মতো উথলে উঠতে লাগলো! পোস্টে কমেন্ট দিতে তাদের সংকোচ-মেসেঞ্জারে অষ্ট প্রহর ঠক ঠক !
পাবলিক ফিগার যদি অসহায় নারী হয় তবে তার ফিগারটাই পাবলিকের হয় !
এক ভদ্রলোক যথেষ্ট সহানুভূতিশীল, মার্জিত- কথাবার্তায় চোসত! দু তিনদিন মেসেজ চালাচালি করে মনে হলো- পৃথিবীতে এমন নীতিবান ভালো মানুষও আছে!
কৃতজ্ঞতার বশে ফেসবুকে একদিন তার আপলোড করা ছবিতে লাইক দিলাম! সে পরদিন মেসেঞ্জারে এসে বললো, শোনো সাবরিনা- তুমি মেসেনজারে কথা বলো- পোস্টে লাইক দিও না ! আমার বউ চিল্লাচিললি করে ! সে একটু সাইকো… ইত্যাদি!
মনে মনে বললাম, ব্যাডা, গোলামের পুত -তোর বউ সাইকো না - তুই ই সাইকো!
ডিভোর্স হওয়া নারী যদি সাজগোজ করে নেচে গেয়ে ছবি দেয় তখন সমাজ ধরেই নেয় সে প্রেম করার জন্য ব্যাকুল! সে পুরুষ সংগের জন্য উতলা ! তার একাকিত্ব তাকে পীড়া না দিলেও অন্যরা এতে প্যরা নেয় ! তার একাকিত্বের সামাজিক সৎকার করার জন্য মোড়লরা মুখিয়ে থাকে ! ভাত দেয়ার মুরোদ যাদের নেই তারাও ভা-তা-র হতে চায় !
এমতাবস্থায় কায়েস আহমেদ সেলিম সাহেব মেসেঞ্জারে যোগাযোগ করেন- উনি বুদ্ধিমান! রূপের প্রশংসা করেন নি - লেখার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন! তারপরও, মিথ্যা বলবো না- প্রাথমিক পর্যায়ে তাকে খানিকটা সুযোগসন্ধানী মনে হয়েছিলো!
সাফ জানিয়ে দিয়েছিলাম প্রেমে পরার বয়স নেই, প্রেম করার পরিস্থিতি নেই! দায় ভাবলে কেটে পরেন - দায়িত্ব নিতে চাইলে বিয়ে করেন! দুজনের কেউই জানতাম না - সেদিনই আমাদের বিয়ে !
এই বয়সে ভালবাসা মানে ভালো রাখা, প্রেম মানে কর্তব্যবোধ, ভা-তা-র মানে ভাত আর সামাজিক নিরাপত্তা দেয়ার বলিষ্ঠতা !!! আজ এক বছর এক মাস পর বলি, আলহামদুলিল্লাহ- আমি কৃতজ্ঞ!