14/04/2024
শাকিব খানের ক্রেজ বরাবরই ছিলো দেব জিতের থেকে বেশি। আপনি কোয়ালিটি সিনেমা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন অথবা শাকিবের পশ্চিমবঙ্গ বক্স অফিসে সফলতা নিয়েও। তবে ক্রেজ জিনিশটা ভিন্ন।
গত এক পোস্টে আমি যখন বললাম শাকিব এর ক্রেজ দেব ও জিতের ক্রেজের যোগফল থেকেও বেশি তাতে অনেক মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায় কমেন্ট বক্সে। আমি নিজেও একজন শাকিবের কট্টর সমালোচক ; এবং এমন না যে এখন আমার চোখে শাকিব সমালোচনার উর্দ্ধে চলে গেছে। অথবা, আমি শাকিবকে সামনে শুধু প্রশংসা করে যাবো। অথবা আমি তার দালালী করার জন্য কোনো বেনিফিট পেয়েছি। আজ আমি এই পোস্ট লেখছি হয়ত আগামীকাল আবারো ট্রল বা সমালোচনা করবো - যদি সেটার কোনো স্কোপ পাই।
ব্যাপারটি হলো বাস্তবতার। সোজা কথায় শাকিবের যত হিট সিনেমা আছে তার সমান ব্যবসাসফল সিনেমাও শাকিব ও জিতের দুজনের মিলিয়ে নেই। শাকিবের যত ব্যবসাসফল আছে তা দেব জিতের ক্যারিয়ারের টোটাল সিনেমার থেকে বেশি।
হ্যা, অনেকে বলতে পারেন শাকিবের সিনেমা এখন ঈদে চলে ব্লা ব্লা। কিন্ত সেটা তো পূজা, ক্রিসমাস, ঈদ দেব আর জিতেরাও টার্গেট করে তাতে বিশেষ লাভ হয় কি? ২০১২ - ১৩ সময়কাল এর পরে দুই বাংলার সিনেমার বক্স অফিস নিম্নমুখী ও সুপারস্টারদের বাজারেও ঘাটতি নেমেছে। তবে দুই পাশের এই বাজে সময়েও যেন শাকিবই ছিলেন ক্রেজের Care Of Address। দেবের বর্তমানের বড়পর্দার সিরিয়াল আবির পরমব্রতদের সিনেমার মত লং রানে হিট হয় Word Of Mouth এ ঠিকই কিন্ত ওপেনিং তো যা তা। ৫ কোটি তুলতে কান্নাকাটি বেধে যায় গ্রোসেই, নেট সেল তো পরের ব্যাপার।
এদিকে শাকিবের আয়কে যদি রুপিতেও কনভার্ট করা যায় তবুও নামেমাত্র হলে কিছু সিলেক্টিভ হল থেকেই শাকিব ঈদের ওপেনিংয়ে দেব জিতের বর্তমান সময়ের ওপেনিং এর টোটাল যোগফল এর তুলনায় অনেক অনেক বেশি কামায়।
ওপেনিং টা হলো ক্রেজ। শাকিবের বাজে থেকে বাজে সিনেমাও ঈদের সময় বাংলাদেশের বাজারে হাউজফুল যায় প্রথম ৩ দিন। তাতে সিনেমার কি রিভিউ কি কোয়ালিটি তার ধার ধারার সময় নেই। এটাই ক্রেজ। কিন্ত এটা সেই ২০১৪ থেকে দেব জিতের পক্ষে সম্ভব না।
ক্রেজ তো ওপেনিংয়েই দেখা যায়। লং টার্ম আয় তো সিনেমার কোয়ালিটির কারণে আসে। এছাড়া যদি প্রাইম সময়ের কথাও বলি শাকিব এক বছরে ১০ টা, ৭ টা করেও হিট সুপারহিট দিতো। এক ঈদে ৩ খানা হিট সুপারহিট ব্লকবাস্টার দিতো। এটা দেব জিত ওদের প্রাইমেও কখনো পারেনি।
দেবের সবচেয়ে বড় আয়ের সিনেমা আমাজন আর চাঁদের পাহাড় বড় স্কেল ও বাজেটের কারণে ইভেন্ট ফিল্ম হিসাবে হাইপ কুড়িয়ে আয় এনেছে। কিন্ত শাকিবের জন্য ১৫ কোটি বাজেট লাগেনা। শিকারী নবাবের একটি লুক বা গান অথবা প্রিয়তমা সিনেমার একটি লুক বা গান কি ক্রেজ তোলে সেটাই কি প্রমাণের জন্য যথেস্ট নয়?? বাজে সময়েও কে স্ট্রাগলিং টাইমে অডিয়েন্সের উপর প্রভাব ধরে রেখেছে সেটাতেই স্পস্ট।
বলতে পারেন জিতের দুই বাংলায় বড় হিট আছে শাকিবের নেই। যেয়ে দেখুন জিতের মাল্টিপ্লেক্সের কালেকশনের হাল গত এক যুগে। মাল্টিপ্লেক্সে জিতের অডিয়েন্স একদম শুন্যর বরাবর। সোজাসুজি বললে সুপারস্টার দূরে থাক একটা স্টারের সমানও না, খুবই লজ্জাজনক। এদিকে শাকিবের সিনেমাতে কোয়ালিটির ইস্যু থাকলেও যখন প্রিয়তমা, রাজকুমার, শিকারী, নবাব আসে মাল্টিপ্লেক্সেও তান্ডব আসে। তো কে বেশি এগিয়ে থাকলো??
দেবের তো কোলকাতা বা বড় শহরের বাদে সিংগেল স্ক্রীন, মফস্বল, গ্রামে সিরিয়াল গুলো মশামাছিও দেখে না।
পশ্চিমবঙ্গে দেব জিতের ক্যারিয়ার বেস্ট সিনেমা থেকে বা বছরের সেরা আয় থেকে বলিউডের ছোট্টা খাট্টা বা মাঝারী সিনেমাও বেশি আয় আনে। আর সুপারস্টারের কথা বাদ দেই। এদিকে বাংলাদেশে শাহরুখের মত স্টার যে বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় ; তার ৩ টে সিনেমা বেশ ভালো কামালেও শাকিবের প্রিয়তমাকে বিট করতে পারেনি। এটাই বাংলাদেশের গ্রাম, শহর, মফস্বলে শাকিবের রিচ।
এত এত সমালোচনা, কন্ট্রোভারসি, বাজে সিনেমা, ফিটনেস ইস্যু তবুও শাকিব টিকে আছেন। শীর্ষস্থানেই টিকে আছেন। তাকে দেবের মত সিরিয়াল বা কোনো ফিল্মমেকারের পিছে যেতে হয়নি, জিতের মত নিজের হোম টেরিটোরিতে স্ট্রাগল বা টিভি রাইটস বেচে ক্যারিয়ার সামলাতে হচ্ছেনা।
শাকিব ক্রেজে দুই বাংলার এই রানিং শতকের সবচেয়ে বড় ক্রেজধারী সুপারস্টার। এটাই সত্য। It May Hurt Some People, But The Truth Must Be Told
✍️ 🅚🅘🅝🅖 🅜🅐🅚🅔🅡