28/07/2025
দেশের উপর সক্রিয় রয়েছে শক্তিশালী বৃষ্টিবলয় ‘ধারা’। এসময়টা, কীভাবে নিজের শিশুর যত্ন নিবেন? নিরন্তর বৃষ্টি কি সব শিশুর কাছেই আনন্দদায়ক? আসুন এই জরুরি বিষয়টায় আজ কিছুটা আলোকপাত করা যাক।
আমরা হয়ত ভেবে বসতে পারি যে বর্ষায় ঠান্ডা ঠান্ডা একটা ভাব রয়েছে চারিদিকে, এতে আমাদের শিশুরা বেশ ভালোই থাকবে, অন্তত গরম তো কিছুটা কমল! কিন্তু সবক্ষেত্রে বিষয়টা কিন্তু এমন নয়। একেকজন শিশুর কাছে বর্ষাকালটা একেকরকম। সবাই কিন্তু একে সমান উপভোগ করে না।
কিছু শিশুর কাছে বৃষ্টি মানে স্কুলের ছুটি, দিনভর মজা আর খেলাধুলা হলেও অনেকের জন্য এই সময়টা কিন্তু বেশ কষ্টের হয়ে থাকে। টানা ভারি বৃষ্টির শব্দ, বজ্রপাতের গর্জন - এসব অনেক শিশুর কাছে ভয় লাগার মতো বিষয়। চারপাশ ভিজে স্যাঁতসেঁতে, কাদায় ভরা—এসবও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শুধু ভিজে যাওয়ার ভয় নয়, অনেক শিশুরা এমনও আছে যাদের শরীর ও মন একটু বেশি সংবেদনশীল। তাই তারা বর্ষার শব্দ, গন্ধ বা ভেজা ভাবগুলো অনেক বেশি তীব্রভাবে অনুভব করে।
এই সব কারণেই বর্ষার সময় কিছু শিশু অশান্ত বা অস্বস্তিতে ভুগতে পারে। কিন্তু যদি আমরা বুঝতে পারি যে ঠিক কী কারণে, কখন তাদের খারাপ লাগছে, কখন তারা বিষণ্ন হয়ে পড়ছে , তাহলে সহজ কিছু উপায়েই তাদের স্বস্তি দেওয়া সম্ভব ইনশাআল্লাহ।
আপনি যদি জানতে চান কীভাবে বর্ষার দিনে আপনার শিশুকে একটু শান্ত ও স্বস্তিতে রাখা যায়, তাহলে জানার আছে আরও অনেক কিছু, যা শুধু গল্প বা খেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। টানা বর্ষণমুখর দিনগুলোতে আপনার শিশুকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রফুল্ল রাখতে নিচের উপায়গুলো অবলম্বন করে দেখতে পারেন। সহায়ক হবে বলে আশা রাখছি, ইনশাআল্লাহ :
১. শান্ত ও নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করুন
আপনার শিশু যদি বজ্রপাত বা বৃষ্টির শব্দে ভয় পায়, তাহলে ঘরের পরিবেশটা একটু শান্ত ও আরামদায়ক রাখুন। নরম আলো, প্রিয় গল্প বলার মাধ্যমেও তার মনোযোগ অন্যদিকে ফিরিয়ে রাখতে পারেন। তবে যেই শিশু বজ্রপাত ভয় পায় অনুগ্রহ করে তাকে জোর করে বজ্রের শব্দ শুনিয়ে সাহসী করে তুলতে যাবেন না। হিতে বিপরীত ঘটতে পারে ।
২. নরম আর শুকনো পোশাক দিন
স্যাঁতসেঁতে জামাকাপড়ে অস্বস্তি আরও বেড়ে যায়। তাই তাকে নরম, আরামদায়ক এবং শুকনো জামাকাপড় পরিয়ে দিন। প্রয়োজনে অতিরিক্ত জামা ও তোয়ালে হাতের কাছে রাখুন।
৩. খেলার নতুন উপায় বের করুন
বাইরে না যেতে পারলেও ঘরের ভেতরে খেলাধুলার বা সৃজনশীল কাজের ব্যবস্থা করুন। পাজল, রং করা, গল্প শোনা বা ঘরের ভেতর ছোটখাটো খেলা—এসব শিশুকে ব্যস্ত ও খুশি রাখে।
৪. তাদের অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল হোন
শিশু ভয় পেলে তার ভয়কে ‘Cancel’ করে দিবেন না
ভয় পাওয়া মানুষের সহজাত আচরণ। এর বদলে তাকে বলুন, “তোমার ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক, আমিও মাঝে মাঝে বজ্রপাতের শব্দ ভয় পাই। তুমি চিন্তা নিও না আমি তোমার পাশে আছি।” এই আশ্বাস তাদের ভেতরের অশান্তি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
৫. রুটিন বজায় রাখুন
বর্ষাকাল এলেও শিশুদের ঘুম, খাবার ও খেলাধুলার সময় যেন বড় একটা পরিবর্তন না আসে, সেটা খেয়াল রাখুন। নিয়মিত রুটিন তাদের মনে নিরাপত্তা তৈরি করে।
৬. শারীরিক সংবেদনশীলতা বুঝে নিন
কিছু শিশু ভেজা কাপড়, ঠান্ডা মেঝে বা কাদা পছন্দ করে না। এই বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে তাদের আরাম অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।
৭. একসঙ্গে সময় কাটান
বর্ষার সময়টা শিশুদের সঙ্গে গল্প করে, একসাথে রান্না করে বা ছোট ছোট কাজ শেখানোর মাধ্যমে কাটানো যায়। এতে তাদের মন ভালো থাকে, আপনিও তাদের আরও ভালো বুঝতে পারেন।
আশা রাখি এভাবে যত্ন নিলে বর্ষণমুখর এই দিনগুলোও আপনার শিশুর জন্য স্বাভাবিক দিনের মতোই হয়ে উঠবে, বিষণ্নতা বা অস্বস্তি তাকে কাবু করে ফেলতে পারবে না। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে নিরাপদ রাখুন, আমিন৷।
সুকুন কিডস
ফুলের মতো মন…