11/12/2024
ভালোবাসায় ভরপুর একটা হৃদয় নিয়ে জন্মানো মানুষ একটা সময় এসে ভালোবাসার নামে জঘন্য বমি করে। পিরিত তারে আর কোনোদিনও খায় না।
কাছের মানুষের কাছে কিঞ্চিৎ আগ্রহ চেয়ে যে মানুষটা চরম অবহেলা পেলো, সে মানুষটা আর কোনোদিন কারো কাছে আগ্রহ চায় না।
একটু যত্নের অভাবে যে মানুষটা ছটফট করতে করতে অনাদরে ভিতরে ভিতরে পলিথিনের মতো চুপসে গেল, সেই মানুষটা অ'যত্নে পঁচে গলে গেলেও আর কাউকে বলে না, আমায় একটু বাঁচাও।
আমারে তোমার কাছে রাইখা দাও, আমি তোমার কাছেই থাকতে চাই বলা মানুষটাকে যখন দূরে ঠেলে দেওয়া হয়, সেই মানুষটা আর কোনোদিন কারোর দরজায় কড়া নাড়ে না থেকে যাওয়ার আবদার নিয়ে।
পাজড় ভাঙা ভঙ্গুর সম্পর্কগুলোকে যে মানুষটা নিজের সর্বোচ্ছ চেষ্টায় দিয়ে নকশিকাঁথার মতো সাবধানে সেলাই করে জুড়তে চেয়েও শেষমেষ জুড়তে না পেরে আলগা হয়েছে, সে মানুষটার আর কোনোদিও চোখের পাতা কেঁপে ওঠে না কোন সম্পর্কের ভাঙনে।
যে মানুষটা অন্ধের মতো কাউকে বিশ্বাস করার পর মুখোশ পেয়েছে, সে মানুষটাকে দ্বিতীয়বার কেউ বিশ্বাস করার কথা বললে শামুকের মতো গুটিয়ে নিয়েছে নিজেকে।
এক চিমটি সুখের আশা করতে যেয়ে যে মানুষটা দুঃখের সমুদ্রে হাবুডুবু খেলো, সে মেনে নিয়েছে, দুঃখই চিরন্ত সত্য বাকি সব কুঁয়াশা।
ভালোবাসা চাইতে চাইতে যে মানুষটা কাঙাল হয়ে গেল, যে মানুষটা মাথা রাখার একটা কাঁধ চেয়ে বেহায়া হয়ে গেলো, প্রতিশ্রুতি চেয়ে যে মানুষটা প্রতারণার আঘাতে টুকরো টুকরো হলো, সে মানুষটাই একদিন ভাঙতে ভাঙতে এত কঠিন হয়ে উঠে যে পৃথিবীর কোনো শক্তপোক্ত আঘাতই তাকে আর ভাঙতে পারে না।
সে শিখে যায় নিজেই নিজেকে জড়িয়ে ধরতে, নিজের সঙ্গে নিজে হাসতে, নিজের সঙ্গে নিজে কাঁদতে, নিজের সঙ্গে নিজে হাঁটতে, নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলতে, সে শিখে যায় নিজেই নিজেকে পরম যত্নে ভালোবাসতে।
ঝুম বৃষ্টির উদাস কোনো হাওয়ার দুপুরে কেউ যদি তাকে ভালোবাসার নেমন্তন্ন পাঠায়, ফুল ফোটা কোন ফাল্গুনের ভোরে যদি ফের তার ভালোবাসার ইচ্ছে জাগে কাউকে, সে নিজেকে সোজাসাপ্টা জানিয়ে দেয়, না না ওসব ভালোবাসা আমার জন্য না। ভালোবাসা একটা ভয়ঙ্কর অসুখ; ওই অসুখে একবার বুকের ভেতর ক্ষত হলে দুনিয়ার আর কোন তাবিজ, কবজ, মলমে সেই ক্ষত সেরে ওঠে না।