21/01/2025
এটা মেনে নেয়া যায় কি??
তুমি কি অনুমতি নিয়েছো??
এখানে বসেছো??
গত সপ্তাহে ও দেখলাম!!
আজকে এগুলো নিয়ে চলে চাও আর এসো না।
:- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি থেকে এমনটা জানানো হয়েছে গত শুক্রবারে।আমি তখন স্টলে ছিলাম না।পরে আমার প্রতিনিধিরা জালালো আমাকে।
আমি কোনো এলিগেশন বা অভিযোগ করতে আসিনি।স্যার তার দায়িত্ব থেকেই আমাদের অনুরোধের সুরেই বলেছেন।তবে আমি শুধু মনের কিছুটা আক্ষেপ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে আসলাম।
আমি রেজওয়ান। ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ৩য় বর্ষে পড়ি আর জোহা হলে থাকি।আমার হোমটাউন দিনাজপুর।আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই আমার মা পুরো শরীর প্যারালাইজসড হয়ে যান।থমকে যায় আমার জীবনের গতি।বাপের এক ছেলে হওয়াতে কখনো অভাব বুঝতে পারিনি। বাবা গ্রামের বাজারের একজন সম্মানিত গজা ও নিমকি বিক্রেতা। কিন্তু মায়ের এমন অবস্থায় সবকিছু যেন এলোমেলো হয়ে গেল।তার চিকিৎসা শুরু হলো।এক এক করে সব সঞ্চয় শেষ হলো।অবশেষে আমার মা একটু সুস্থ হলেন।কিন্তু ততদিনে আববু নাজেহাল। বিজনেস এর ৬০ শতাংশ গুছাতেন মা।কিন্তু......... 🥹🥹
আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু হলো।বাবা মায়ের চিকিৎসা টাই ঠিকমতো চালাতে পারছেন না।তখন আমি ২৩ বছরের এক গ্রাম থেকে উঠে আসা নাদান ছেলে।বাবার একপুত্র হওয়ায় পড়াশোনা ছাড়া অন্যান্য দক্ষতা জিরো।টিউশন শুরু করলাম ভর্তির ৩ মাসের মধ্যেই। এরপর একটা ইংলিশ ব্যাচ পড়ালাম।কিন্তু ততদিনে বুঝে আসলো রাজশাহীতে রয়াল ডেপ্ট এর না হলে টিউশন দিয়ে ভাত যুগানো ও যাবে না।
বন্ধুদের থেকে টাকা নিয়ে বিজনেসে ১ম পা দিলাম।
কিন্তু দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন জিনিস হলো বিজনেস।
বিজনেস+পরিবার+নিজের চলা+অসুস্থতা সব মিলিয়ে মোটামুটি কয়েক লক্ষ টাকার মতো ঋনে পড়লাম। একদম পুরোপুরি ডিপ্রেশনে ডুবে গেলাম।আবার টাকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না হওয়াতে প্রায় বছর দেড়েক ধরে আম্মুর চেক আপ বন্ধ হয়ে গেল।তারপর আবার ঋণপরিশোধ ও মায়ের চিকিৎসার জন্য আবার নতুন করে খালি হাতেই আবার বিজনেস শুরু করলাম। আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি।
আমার যাবতীয় কাজ অনলাইনে।ভালো প্রডাক্ট সোর্স করার কারনে একটু দাম বেশি হয়ে যায়।অনেকের সাধ্যের বাহিরে চলে যায়।আবার পরিমাণ নিয়ে ভাবতে হয়।তাই চিন্তা করলাম সপ্তাহান্তে ক্যাম্পেইন করবো।
যেখানে সীমিত লাভে মোটামুটি পাইকারী দরে খুচরা দিব।এবং যার যতটুকু প্রয়োজন নিবে।এই ভেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল মসজিদ প্রাঙ্গণে নিয়মিত বসার চেষ্টা করছি।
কিন্তু, সেখানে আমার পারমিশন ব্যতিত বসা হচ্ছে না।
আমি যেমন প্রডাক্ট বিক্রি করি তা ক্যাম্পাসের অন্য জায়গায় চলে না।তাই এখানেই বসতে হয়।
মাঝে মাঝে ভাবি;- এই ক্যাম্পাসে কনসার্ট হয়,গঞ্জিকা সেবন হয়,উচ্চশব্দে গানবাজনা হয়,মিছিল মিটিং সব ই হয়।শুধু মাত্র সপ্তাহে একদিন গুড়-মধু পারমিশন নিয়ে বিক্রি করতে হবে??
অথচ আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র।
তবে বহিরাগতদের ই অধিকার বেশি??
নোট: আমাকে সেন্ট্রাল মসজিদের সামনে বসতেই হবে।তাতে যদি ভিসি স্যারের সাথে সাক্ষাৎ করা লাগে লাগুক।আমার ও আমার পরিবারের খরচ আমাকেই যোগাড় করতে হবে যে!!!!!
© Md. Rezwan Islam