Kosturi - The Mystic Musk

28/08/2025

Celebrating my 1st year on Facebook. Thank you for your continuing support. I could never have made it without you. 🙏🤗🎉

23/08/2025

In a world of noise, tea is my muted symphony. 🤍

06/06/2025

06/06/2025

তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম। বন্ধু, সুহৃদ, শুভাকাঙ্ক্ষী, প্রিয়জন, আপনজন, কাছের আর দূরের, এমনকি আমাকে পছন্দ করেন না এমন মানুষদেরও জানাচ্ছি পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা৷

রাব্বে কারীম আমাদের সকলের জীবনকে আনন্দময় রাখুন। আমাদের আমলগুলোকে কবুল করুন। আমাদের হৃদয়কে সর্বদা রবের স্মরণে ব্যাকুল রাখুন। 🤍

01/06/2025

ক্যাথারিন ডিকেন্স: এক নিঃশব্দ বিজয়িনীর গল্প

ছবির সেই অসম্ভব সৌন্দর্যময় ভদ্রমহিলার নাম ক্যাথারিন ডিকেন্স।
তিনি নিজে একজন চমৎকার কুক ছিলেন, ছিলেন কুকবুকের লেখিকাও।
কিন্তু তার সবচেয়ে পরিচিত পরিচয়—তিনি ছিলেন ‘গ্রেট এক্সপেক্টেশনস’, ‘অলিভার টুইস্ট’, ‘আ টেল অফ টু সিটিজ’-এর লেখক, কিংবদন্তি সাহিত্যিক চার্লস ডিকেন্স-এর স্ত্রী।

একটা সময় ছিল, যখন এই চার্লস ডিকেন্স-ই দারিদ্র্য, শিশু শ্রম, সমাজের অবিচার আর নিপীড়িত মানুষের কষ্ট নিয়ে লিখতেন। এমনকি তার লেখায় বারবার উঠে এসেছে পরিবারের গুরুত্ব, মাতৃত্বের মর্যাদা। অথচ এই মানুষটিই একদিন ২২ বছরের দাম্পত্যজীবন ও ১০টি সন্তানের মা ক্যাথারিনকে বলেছিলেন—

“তুমি আমার জীবনে আনফিট। আনফিট এজ এ মাদার এন্ড ওয়াইফ।”

এক সময় যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন, সেই স্ত্রীই হয়ে উঠলেন তার জীবনের “ব্যর্থতম চিঠির পাঠিকা।”

কেন?

কারণ তখন ডিকেন্স প্রেমে পড়েছেন।
না, সেই প্রেম তার স্ত্রী ক্যাথারিনের জন্য নয়।
এক ১৮ বছর বয়সী তরুণী—এলেন টারনান, থিয়েটারের এক অভিনেত্রী।
ডিকেন্স তখন নিজের জীবনটাকেই যেন এক মঞ্চ ভাবতে শুরু করেছিলেন।
চুপিচুপি ভাড়া করা বাড়িতে, অন্য নামে, এক ডুয়াল এক্সিস্টেন্সে তিনি বাস করতেন এলেনের সাথে।
এবং এই অন্যায় সম্পর্কটিকেও তিনি বানিয়ে ফেলেছিলেন এক প্রকার “কাব্যিক প্রতারণা”।

পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে বলেছিলেন—

“ক্যাথারিন মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। আমরা বিচ্ছিন্ন।”

এমন চূড়ান্ত অপমান আর গ্যাসলাইটিং-এর পর, ক্যাথারিন সত্যিই ভাবতে শুরু করেছিলেন—তাহলে কি তিনি পাগল?
এবং এক পর্যায়ে মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন।

কিন্তু কপালে যাদের সত্য থাকে, তাদের মাটির নিচেও কণ্ঠস্বর থাকে।

চেকআপের পর ডাক্তাররা তাকে সম্পূর্ণ মানসিকভাবে সুস্থ ঘোষণা করেন।
ডিকেন্স তার কাছ থেকে সন্তানদের দূরে রেখেছিলেন।
তবে সময়ের আবর্তে যখন সন্তানেরা সাবালক হলো, তখন তারা একজন একজন করে মায়ের কাছেই ফিরে এল।

এখানেই শেষ নয়।

মৃত্যুর আগে ক্যাথারিন, ডিকেন্সের লেখা সমস্ত চিঠিপত্র ব্রিটিশ মিউজিয়ামে দিয়ে দেন, এবং তার মেয়ে কেটকে বলেন:

“Give these to the British Museum — that the world may know Charles loved me once.”

চিঠিগুলো প্রকাশের পর ডিকেন্সের বানানো গল্প আর দাঁড়াতে পারল না।
বিশ্ব তখন জানতে পারল আসল ইতিহাস—কোনো ‘পাগল’ স্ত্রী নয়, বরং এক প্রতারিত, নীরব অথচ দৃঢ়চিত নারী ছিলেন ক্যাথারিন।

এই গল্প থেকে আমরা কী শিখি?
প্রতারণা, বিশ্বাসঘাতকতা—এই সবকিছুই একটা চয়েস।
অনেকেই বলে থাকেন, “ভুল হয়ে গেছে” বা “সেই সময় আমি ভিন্ন অবস্থায় ছিলাম।”
কিন্তু আদতে প্রতারণার পেছনে কোনো নৈতিক যুক্তি থাকে না,
থাকে শুধু নিজস্ব লালসা, স্বার্থপরতা, এবং একরাশ মিথ্যে।

চিটাররা মিথ্যে বলে এমন নিখুঁতভাবে যে সত্যটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে।
তারা এমনভাবে ঠকায় যে যার সঙ্গে প্রতারণা হয়, সেই নিজেকেই সন্দেহ করতে শুরু করে।

কিন্তু ইতিহাসে সবসময় চিটাররাই হেরে যায়।
জিতেন ক্যাথারিনদের মতো মানুষরাই—যারা শব্দহীন থেকেও সত্যের পক্ষে দাঁড়ান, সম্মান নিয়ে বাঁচেন।

কারণ Karma is a b***h.
বাকি সবাই ভোলেও যেতে পারে,
কিন্তু ভাগ্য কখনো ভুলে না।

31/05/2025

There’s a quiet truth that lingers behind our daily lives, too often unnoticed until it’s too late: someday, all we’ll have left are memories.

The laughter that once filled a room.
The glance across a table.
The warmth of a goodbye hug you didn’t realize was the last.
The moments that felt small—so ordinary you didn’t think twice about them—end up becoming the ones we wish we could relive most.

Life moves quickly. Too quickly. One day blurs into the next, and suddenly years have passed. We lose people. We grow apart. We move on. And sometimes, we’re left with only the imprints people left on our hearts. Imprints made not by grand gestures or dramatic events, but by quiet kindness, unspoken understanding, and little acts of love.

This is why I believe so deeply in being a good memory to someone. Not perfect. Not unforgettable. Just kind. Just present. Just someone who made someone else’s world a little softer, even for a moment.

Why Being a Good Memory Matters

When we think about legacy, we often imagine accomplishments—degrees, titles, awards, social status. But ask anyone who’s grieving, and they’ll tell you: what they miss is how a person made them feel.

Did they feel seen?
Heard?
Safe?
Valued?

These are the things that endure. The emotions. The shared silences. The belly laughs. The quiet support in moments of chaos. That is what people carry with them, sometimes long after we’re gone.

You Can’t Control Time—But You Can Shape Moments

We don’t get to choose how long we have with someone. Time is slippery. One moment you’re making memories, the next you’re clinging to them. But even if we can’t control time, we can control how we show up in it.

We can choose to slow down.
To pay attention.
To speak kindness.
To be gentle with others and ourselves.
To forgive—especially when it’s hard.
To say “I love you,” “I’m sorry,” or simply, “I’m here.”

Those tiny choices, made again and again, are what form the building blocks of a beautiful memory.

Make Today Count

You don’t have to change the world. Just brighten someone’s small corner of it.

Smile at a stranger.
Text the friend you’ve been meaning to check on.
Leave a kind comment.
Sit with someone in their sadness.
Celebrate someone’s joy as if it were your own.
Let someone know they matter.

Because you never know what moment will linger in someone’s heart forever. You never know when your words might echo in someone’s memory on a lonely night, giving them strength. You never know when your kindness becomes the thing that helps someone keep going.

And When It’s All Said and Done…

May someone, somewhere, look back on their life and remember you—not just for what you did, but for how you made them feel.

Loved.
Valued.
Seen.

That, in the end, is what matters most.

So be a good memory.
Make your moments count.
And choose love—again and again.

With warmth and reflection,
Kosturi 🌿

26/05/2025

ডিপ্রেশন দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে তা শুধু মনের ওপর নয়, মস্তিষ্কের গঠন এবং কাজের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলোয় উঠে এসেছে এমন কিছু তথ্য, যা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে একেবারে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভাবতে শেখায়। বিশেষত, নারীদের ক্ষেত্রে এই প্রভাব আরও স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে।

একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় (Yvette I. Sheline et al., 1999, Proceedings of the National Academy of Sciences) দেখা গেছে, দীর্ঘমেয়াদি ডিপ্রেশনে আক্রান্ত নারীদের হিপোক্যাম্পাসের আকার উল্লেখযোগ্যভাবে ছোট হয়ে যায়। হিপোক্যাম্পাস মস্তিষ্কের সেই অংশ, যা স্মৃতি সংরক্ষণ এবং নতুন তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যখন কেউ দীর্ঘ সময় ধরে বিষণ্নতায় ভোগেন, তখন কর্টিসল নামে একটি স্ট্রেস হরমোন অতিরিক্ত পরিমাণে নিঃসৃত হয়। এই কর্টিসল হিপোক্যাম্পাসের কোষগুলোর ক্ষতি করে এবং স্নায়ুবিক সংযোগ দুর্বল করে দেয়। ফলে শর্ট-টার্ম মেমোরি দুর্বল হয়ে যায় এবং কগনিটিভ কার্যকারিতা কমে আসে।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, এই স্মৃতিভ্রংশ সাধারণত ৬০ থেকে ৭২ দিনের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর ওপর বেশি প্রভাব ফেলে। অর্থাৎ সাম্প্রতিক স্মৃতিগুলো মনে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনে, কাজকর্মে এবং সামাজিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ডিপ্রেশনজনিত এই স্মৃতিভ্রংশ প্রায়শই ভুলভাবে আলস্য, উদাসীনতা বা ‘মনোযোগের অভাব’ বলে ব্যাখ্যা করা হয়, যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি প্রয়োজনীয় সহানুভূতি বা সহায়তা থেকে বঞ্চিত হন।

যদিও এই প্রভাব নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, গবেষণাগুলো ইঙ্গিত দেয় যে নারীরা তুলনামূলকভাবে বেশি ভোগেন এই সমস্যায়। এর পেছনে জৈবিক, মানসিক ও সামাজিক নানা কারণ থাকতে পারে—যেমন হরমোনজনিত ওঠানামা, সাংসারিক চাপ, পারিবারিক-সামাজিক দায়িত্ব এবং আত্ম-অভিপ্রকাশের সুযোগের অভাব।

এইসব দিক বিবেচনা করে গবেষকরা এখন বলছেন, ডিপ্রেশন কেবলমাত্র একটি ‘মানসিক অসুস্থতা’ নয়—এটি একটি নিউরোবায়োলজিক্যাল সমস্যা, যার ফলে মস্তিষ্কে গঠনগত ও কার্যকরী পরিবর্তন ঘটে। অতএব, এটিকে অবহেলা করা বা শুধুমাত্র ‘ইচ্ছাশক্তির অভাব’ বলে বিচার করা ভুল। বরং, এর জন্য প্রয়োজনে চিকিৎসা, কাউন্সেলিং এবং দীর্ঘমেয়াদি মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।

বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে, পরিবার ও সমাজের পক্ষ থেকে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়ানো এবং চিকিৎসা গ্রহণে উৎসাহ দেওয়া উচিত। মনে রাখা দরকার, একজন নারীর মানসিক সুস্থতা শুধু তার ব্যক্তিগত জীবনের জন্য নয়, তার পরিবার এবং সমাজের সামগ্রিক কল্যাণের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডিপ্রেশন নিয়ে সচেতনতা, সহানুভূতি এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিই পারে আমাদের ভবিষ্যৎকে আরও মানবিক ও সুস্থ করে তুলতে।

25/05/2025

প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে —এই বাক্যটি আমরা শুনে বড় হয়েছি। কিন্তু কেউ মারা গেলে যেন প্রতিবার নতুন করে থমকে যাই। মনে হয়—এই চলে যাওয়া তো ঠিক হলো না! কীভাবে একজন মানুষ হঠাৎ করে অদৃশ্য হয়ে যায়? কীভাবে সেই হাসি, কথা, গন্ধ, স্পর্শ—সব ফাঁকা হয়ে পড়ে?

মৃত্যু আমাদের সবচেয়ে কঠিন শিক্ষক। তার পাঠ একেবারে চুপচাপ, কিন্তু গভীর। এই লেখায় আমরা ভাববো:
• মানুষ মারা গেলে আমাদের মধ্যে কী ঘটে?
• আমরা কীভাবে শোক সামলাই?
• মৃত্যু কেন এতটা ভয়ের?
• মৃত্যুর সঙ্গে সহবাস কীভাবে সম্ভব?

⸻মৃত্যু মানেই শুধু হারানো নয়
আমরা সাধারণত মৃত্যু মানে বুঝি—“কেউ আর নেই”। কিন্তু বাস্তবে একজন মানুষের মৃত্যু মানে হয়:
• তার সঙ্গে জড়িত সব স্মৃতি হঠাৎ বেদনার হয়ে যাওয়া।
• তার প্রতিদিনের অভ্যাসগুলোর অনুপস্থিতি—যেমন সকালে ডাকাডাকি, একসাথে খাওয়া, হেসে ওঠা।
• এক ধরনের শূন্যতা, যা কোনো কিছুতেই পূরণ হয় না।

মৃত্যু আসলে মানুষের হারিয়ে যাওয়া নয়, বরং আমাদের ভেতরে তার অবস্থান পাল্টে ফেলা। সে আর বাইরে নেই, সে ভেতরে বাস করে।

⸻তুমি ছিলে, তাই আমি ছিলাম —সম্পর্ক ও শোক
আমরা যতটা না কাউকে ভালোবাসি, তার চেয়েও বেশি নিজেদের চিন্তায় তাকে গেঁথে ফেলি। কেউ মারা গেলে, তার স্মৃতির সঙ্গে সঙ্গে মরে যায় আমাদের একটা অংশও।

আমরা যেন প্রতিবার একটা মৃত্যুতে একটু করে ভেঙে যাই।
আবার সেই শোকের মধ্য থেকেই গড়ে উঠি নতুন করে।

⸻মৃত্যু মানে কী শুধু জীবনের শেষ?
বিজ্ঞানের ভাষায় মৃত্যু হলো:
“শরীরের সমস্ত কার্যক্রমের স্থায়ীভাবে থেমে যাওয়া।”

কিন্তু দর্শনের ভাষায় মৃত্যু একধরনের রূপান্তর:
• এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় যাওয়া।
• দেহের পরিসমাপ্তি, কিন্তু স্মৃতির উত্তরণ।

ধর্মীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী:
• ইসলাম বলে: মৃত্যু হলো দুনিয়া থেকে আখিরাতের পথে যাত্রা।
• হিন্দু ধর্মে বলা হয়: আত্মা অমর, শুধু শরীর পাল্টায়।
• বৌদ্ধ দর্শন বলে: জীবন ও মৃত্যু চক্রাকারে চলে।

তাই মৃত্যু কখনোই পুরোপুরি শেষ নয়—এটা অনেক সময় শুরু।

⸻শোক: বেদনার ভাষা
একজন মানুষ মারা গেলে আমরা কাঁদি, চুপ হয়ে যাই, আত্মগ্লানিতে ভুগি, কিংবা নির্বাক হয়ে যাই। এটা হলো শোক।

শোকের ধাপগুলো:
১. ইনকার: “না! এটা হতে পারে না।”
2. রাগ: “কেন সে আমাকে ছেড়ে গেল?”
3. চুক্তি করা: “যদি ও ফিরে আসে, আমি বদলে যাবো।”
4. মন খারাপ: এক ধরনের অবসাদগ্রস্ততা।
5. গ্রহণ: “ও নেই, কিন্তু আমি ওকে মনে রাখবো।”

শোক কাটিয়ে ওঠা মানে ভুলে যাওয়া নয়, বরং সেই শূন্যতার সঙ্গে সহাবস্থান শেখা।

⸻মৃত্যু ও আত্মীয়তা: কে কাকে কতটা স্পর্শ করে

মৃত্যু সবারই হয়, কিন্তু সবার মৃত্যু আমাদের একভাবে কাঁদায় না। কেন?

কারণ সম্পর্ক মানে শুধু রক্তের সম্পর্ক নয়।
কেউ যদি আমাদের জীবনের অংশ হয়ে ওঠে, তার মৃত্যু আমাদের অস্তিত্বেই আঁচ ফেলে।

একজন বন্ধু, একজন শিক্ষক, একজন সহকর্মী—তাদের মৃত্যু হয়তো সামাজিকভাবে “বড়” মৃত্যু নয়, কিন্তু মানসিকভাবে আমাদের ভিত নড়িয়ে দেয়।

⸻মৃত্যু নিয়ে কথা বলায় ভয় কিসের?
আমরা মৃত্যুকে যেন ‘অশুভ’ মনে করি। কেউ যদি মৃত্যু নিয়ে খোলাখুলি কথা বলে, বলি—“নেইমে বলো না!”
কিন্তু মৃত্যু তো প্রতিদিনের বাস্তবতা।

আমরা মৃত্যু থেকে পালাই,
কিন্তু মৃত্যু আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে—একটি আয়নার মতো।

মৃত্যু নিয়ে কথা বলা মানে জীবনকে আরও স্পষ্টভাবে বোঝা।

⸻মৃত্যু মেনে নেওয়ার মানসিক কৌশল

১. গ্রাফফিং: নিজের অনুভূতি লিখে ফেলা
প্রিয়জন হারানোর পর কষ্টটা কাগজে লিখুন। এতে মানসিক ভার হালকা হয়।

২. প্রার্থনা বা ধ্যান
যারা ধর্মপ্রাণ, তারা প্রার্থনা করতে পারেন। অন্যরা ধ্যান বা শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করতে পারেন—শোক সামলাতে দারুণ কাজ করে।

৩. ‘রিমেম্বারিং রিচুয়াল’
প্রতিমাসে একদিন সেই মানুষটার স্মরণে কিছু করুন—প্রিয় খাবার রান্না, তার পছন্দের গান শোনা, বা স্মৃতিচারণা। এটা শোককে ধীরে ধীরে কোমল করে।

৪. থেরাপি
প্রয়োজনে কাউন্সেলিং নিতে ভয় পাবেন না। বিশেষ করে যদি মৃত্যুর কারণে ডিপ্রেশন বা প্যানিক অ্যাটাক হয়।

⸻মৃত্যু মানে শুধুই হারানো নয়, একটি উত্তরাধিকার

যে মারা গেছেন, তার ভালোবাসা, শিক্ষা, ব্যবহার—সবকিছু আপনি বহন করছেন। আপনি বেঁচে থাকলেই সে রকমভাবে বেঁচে থাকে।

মৃত্যু শুধু একটা শরীরের অনুপস্থিতি নয়, একটা অনুভবের উপস্থিতি।

⸻মৃত্যু জীবনকে অর্থ দেয়
মৃত্যু না থাকলে আমরা সময়ের মূল্য বুঝতাম না। আমরা হয়তো কোনো দিন ক্ষমা চাইতাম না, মাফ করতাম না, ভালোবাসতাম না।

মৃত্যুই আমাদের শেখায়:
• সময় ফুরিয়ে যেতে পারে, তাই এখনকার মুহূর্তটা ধরতে হবে।
• কাউকে ভালোবাসলে বলেই ফেলুন।
• কাউকে ঘৃণা করলে, একটু বুঝে নিন—কেন?

⸻মৃত্যু আমাদের শেষ নয়, বরং সবচেয়ে গভীর সত্য

আমরা যাদের ভালোবাসি, তারা হঠাৎ হারিয়ে যায় না।
তারা ধীরে ধীরে আমাদের চোখের সামনে থেকে চলে গিয়ে, মনের ভিতরে একটা ঘর বানিয়ে নেয়।

জীবন যতই অস্থায়ী হোক, স্মৃতি চিরস্থায়ী হয়ে যায়।
মৃত্যু সেই স্মৃতিকে ধার দিয়ে যায়, ব্যথার ভিতর দিয়ে।

যারা চলে যায়, তারা হারায় না—তারা রূপ নেয়
তুমি যে ছিলে, তা-ই অনেক।
তুমি যে গেলে, তাতেই প্রমাণ—তুমি বেঁচে ছিলে সত্যিকারভাবে।
এবং আমাদের মাঝে ঠিক তেমনভাবেই বেঁচে থাকবে।

24/05/2025

⚠️ অপমান আসলে কি অনেকে সেটাই বোঝে না!

🟥 ১. প্রকাশ্যে অপমান (Public Humiliation)
❖ উদাহরণ:
• বন্ধু বা অন্য কাপলদের সামনে ঠাট্টা করে বলছে: “ও তো কিছু বোঝে না, ওর মাথায় কিছু ঢোকে না।”
• খাওয়ার টেবিলে আপনার রান্না খারাপ হয়েছে বলে অন্যদের সামনে মন্তব্য করা।
• “তুমি তো মেয়েদের মতোই আবেগী”—এই জাতীয় ব্যঙ্গ।

❖ প্রেক্ষাপট:
• বন্ধুদের আড্ডায়, পার্টিতে, অন্য দম্পতির সামনে।
• ইচ্ছাকৃতভাবে আপনাকে নিচু দেখানো, নিজের “মেধা বা রুচি” জাহির করার জন্য।

🟥 ২. ব্যক্তিত্ব খাটো করে দেখা (Character Dismissal)
❖ উদাহরণ:
• আপনার পছন্দ, সিদ্ধান্ত বা মতামতকে বারবার “childish” বলা।
• “তুমি না একটু বেশি ড্রামা করো সব কিছুতে”—এই জাতীয় ছোট করা।
• আপনার ইচ্ছা বা চাওয়া উপহাস করা: “এইসব তুচ্ছ জিনিস নিয়ে কেউ কাঁদে?”

❖ প্রেক্ষাপট:
• আপনার নিজস্বতা, স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের জায়গায় বাধা।
• প্রাইভেট কিংবা পাবলিক উভয় ক্ষেত্রেই হতে পারে।

🟥 ৩. অন্যদের সামনে তুলনা করা (Unfavorable Comparison)
❖ উদাহরণ:
• “দেখো রিমি কতো স্মার্ট, তুমি কখনো ওর মতো হতে পারবে না।”
• আত্মীয় বা অন্য দম্পতির স্ত্রীর সঙ্গে তুলনা করে বলছে, “ওর মতো পোশাক পরলে ভালো লাগত।”
• “ওর স্ত্রী অফিস করে, তুমি তো শুধু ঘরে বসে থাকো!”

❖ প্রেক্ষাপট:
• আত্মীয়দের সামনে, পারিবারিক অনুষ্ঠানে, এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায়।

🟥 ৪. প্যাসিভ আগ্রেশন বা নীরব অপমান (Passive-aggressive behavior)
❖ উদাহরণ:
• মুখে কিছু না বলা, কিন্তু সবার সামনে চোখ রোল করা, কটাক্ষ হাসি।
• আপনার কথা মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে নিজেই কথা চালিয়ে যাওয়া।
• “আমি বলেইছি, কিন্তু তুমি তো কখনো শোনো না”—এই ধরনের ইঙ্গিতপূর্ণ বাক্য।

❖ প্রেক্ষাপট:
• অফিস কলিগ, বন্ধু, আত্মীয়—যেকোনো সামনেই হতে পারে।
• এ ধরণের অপমান অনেক সময় খেয়াল না করে নিজের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে মানুষ।

🟥 ৫. ব্যক্তিগত বিষয় ফাঁস করা (Exposing private matters)
❖ উদাহরণ:
• সবার সামনে বলে ফেলা, “ওর তো আগে অনেক ছেলেবন্ধু ছিল।”
• “ওর মানসিক অবস্থা ঠিক না, মাঝে মাঝেই ব্ল্যাকআউট হয়।”
• আপনার পারিবারিক সমস্যা, শরীরের সমস্যা বা অতীত অভিজ্ঞতা সবার সামনে বলে দেওয়া।

❖ প্রেক্ষাপট:
• অফিস কলিগ, পার্টি, আত্মীয়ের বাড়ি বা বন্ধুদের মধ্যে।

🟥 ৬. নিয়ন্ত্রণমূলক অপমান (Controlling through shame)
❖ উদাহরণ:
• আপনি কোথায় যাবেন, কাদের সঙ্গে কথা বলবেন তা নিয়ে অকারণে সন্দেহ করা।
• আপনার পোশাক নিয়ে মন্তব্য: “এইটা কী পরছো! একটু ভদ্র পোশাক পরা উচিত ছিল।”
• নিজের পছন্দ চাপিয়ে দিয়ে বলছে, “তুমি তো কিছু জানো না, আমার কথাই ঠিক।”

❖ প্রেক্ষাপট:
• অফিসের কলিগদের সামনে আপনাকে চুপ করিয়ে দেওয়া বা সিধান্তে অংশ নিতে না দেওয়া।
• পরিবার বা বন্ধুমহলে আপনার মত উপেক্ষা করা।

🟥 ৭. অবহেলা ও নির্লিপ্ততা (Emotional Neglect or Ignorance)
❖ উদাহরণ:
• আপনি খারাপ সময় পার করছেন, কিন্তু সে ‘ব্যস্ত’ বলে পাশেও থাকে না।
• আপনার সমস্যার কথা বললে বিরক্ত হয়ে যায়: “সবসময় তো নেগেটিভ কথা বলো!”
• আপনার জন্মদিন, সাফল্য, বা গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলো ভুলে যাওয়া—তবে অন্যদের বিষয় ঠিক মনে রাখা।

❖ প্রেক্ষাপট:
• ব্যক্তিগত সম্পর্কেও এই নির্লিপ্ততা হতে পারে ভয়ঙ্কর অপমানজনক।

🟦 এই আচরণগুলো কেন গুরুত্ব সহকারে বোঝা জরুরি?
১. নিজের আত্মসম্মান রক্ষার জন্য।
বারবার হালকা করে দেখলে, আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়।
2. মনস্তাত্ত্বিক চাপ ও ট্রমা এড়াতে।
অনবরত অবহেলা বা অপমান একধরনের মানসিক নির্যাতন।
3. সম্পর্ককে বিশ্লেষণ করার জন্য।
আপনি এই সম্পর্কে নিরাপদ নাকি নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন—তা বুঝতে পারবেন।

✅ কী করবেন?
• চুপ না থেকে সোবার ভাষায় কিন্তু স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিন—আপনার কেমন লেগেছে।
• নিজেকে দোষী ভাবা বন্ধ করুন। অপমানকারীর আচরণ তার মানসিকতা প্রকাশ করে, আপনার মর্যাদা নয়।
• প্রয়োজনে পারিবারিক কাউন্সেলিং, বন্ধুর সহায়তা, কিংবা সাইকোথেরাপিস্টের সাহায্য নিন।
• আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—যদি অপমান আপনার আত্মসম্মান ভেঙে দেয়, তবে এক পা পিছিয়ে আসুন।

ভালোবাসা মানে সম্মান, নিরাপত্তা ও সমান মর্যাদা।
যে ভালোবাসায় কেবল ভালোবাসা বলার শব্দ আছে, কিন্তু প্রতিটি আচরণ অপমানের—সে সম্পর্ক ভালোবাসা নয়, সে একধরনের নিঃশব্দ দমন।

আপনার আত্মসম্মান বাঁচাতে হলে প্রথমে চিনে নিতে হবে—কে কোথায় কিভাবে আপনাকে ছোট করছে, এবং আপনি তা কতটুকু মেনে নিচ্ছেন।

22/05/2025

আমরা যখন চায়ের কথা বলি, তখন আমাদের মনে প্রথমে যা আসে তা হলো—শরীরের আরামের কথা। কিন্তু একটু গভীরে তাকালে দেখা যাবে, চা আসলে আমাদের মনের সঙ্গে, আবেগের সঙ্গে, এমনকি আত্মার সঙ্গেও এক আশ্চর্য সংযোগ তৈরি করে।

এক কাপ চা শুধু মুখে স্বাদ নয়, মনের রঙও বদলায়।

চায়ের রঙ—হালকা সোনালি, গাঢ় বাদামি, সবুজ, লালচে বা কখনো একেবারে স্বচ্ছ—এসব কেবল পানীয়ের রঙ নয়। প্রত্যেকটি রঙ মনের নির্দিষ্ট এক অভিব্যক্তিকে তুলে ধরে।

হালকা সোনালি চা, যেমন গ্রিন টি বা ক্যামোমাইল—এই রঙ আমাদের মস্তিষ্ককে শান্তির সংকেত পাঠায়। এটি একটি “cool color tone” যা স্নায়ু প্রশমিত করে। গবেষণায় দেখা গেছে, সবুজ বা হালকা হলুদ রঙের পানীয় আমাদের মনে ধৈর্য, ভারসাম্য এবং গভীর শ্বাস নেওয়ার অনুভূতি জাগায়। তাই তো অনেকেই দিনের শেষে এক কাপ গ্রিন টি-তে শান্তির খোঁজ পান।

গাঢ় বাদামি বা কফি রঙের দুধ চা—এটি আমাদের চেতনায় গেঁথে থাকা “ঘরের স্বাদ”, নিরাপত্তার অনুভূতি জাগায়। এই রঙ মস্তিষ্কে “grounding” বা ভরকেন্দ্রিক প্রভাব ফেলে। মানে, আপনি যদি অস্থির, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকেন, তবে এই ধরনের রঙ আপনার মনকে ধীরে ধীরে “ভূমিতে নামিয়ে” আনে। মনোবিজ্ঞান বলে, এই রঙ আমাদের নিজের ভিতরে ফিরিয়ে আনে, অতীতের কোনো নির্ভরশীল মুহূর্ত মনে করিয়ে দেয়।

লালচে বা গাঢ় গোলাপি রঙের হিবিসকাস টি বা বেরি-ফ্লেভার চা, আবেগের প্রতীক। এই রঙে থাকে উত্তেজনা, উদ্দীপনা, এমনকি রোমান্সের ইঙ্গিত। হিবিসকাস চায়ের তীব্র রঙ ও হালকা টক স্বাদ অনেক সময় আমাদের চেতনায় নতুন কোনো অভিজ্ঞতার জন্য প্রস্তুত করে। রঙবিজ্ঞান বলছে, লালচে রঙ আমাদের স্নায়ুকে একটু “জাগিয়ে” তোলে—যেটা প্রয়োজন হয় নতুন কিছু শুরু করার আগে।

ধোঁয়া ধোঁয়া সবুজ বা সাদা রঙের চা, যেমন হোয়াইট টি বা মিন্ট টি, মানসিক স্বচ্ছতা এবং একাগ্রতার প্রতীক। এই চা গুলো হালকা, কিন্তু প্রভাবশালী। নিরবতা আর স্বচ্ছতা—এই দুইয়ের মাঝে মনকে স্থির রাখতে সাহায্য করে। অনেক মডার্ন থেরাপি টেকনিক এমন পানীয়র সঙ্গে mindfulness meditation জুড়ে দেয়।

এছাড়াও, চায়ের গন্ধ বা পরিবেশ যেখানে আপনি চা খাচ্ছেন—সেটিও মনের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। গবেষণা বলছে, একটি পরিচিত গন্ধ (যেমন আদা, এলাচ বা দারচিনি) অনেক সময় মস্তিষ্কে “nostalgic trigger” তৈরি করে। মানে, আপনি জানেন না কেন, হঠাৎ একটা নির্দিষ্ট চা খেয়ে মনটা ভালো হয়ে গেল—কারণ হয়তো সেটি আপনাকে অজান্তেই কোনো প্রিয় সময় বা মানুষকে মনে করিয়ে দিয়েছে।

চা আসলে একধরনের আবেগ-উপলব্ধির যাত্রা। চায়ের রঙ, স্বাদ, ঘ্রাণ—সব মিলিয়ে সে আমাদের মনের আবহাওয়া বদলাতে জানে। আপনি কখনো মন খারাপ নিয়ে এক কাপ চা হাতে নিয়েছেন? কিছু না ভেবেও হঠাৎ যেন একটু হালকা লেগেছে?

সেটা কেবল চা নয়,
সেটা আপনার মনের সঙ্গে চায়ের এক নীরব সংলাপ।

15/05/2025

মা হবার অধিকার কে নেয়? আমি জবা (ছন্মনাম).

আমি একজন নারী। একজন মানুষ। আমারও স্বপ্ন ছিল, কোলে একটা সন্তান আসবে—আমার নিজের রক্তমাংসের অংশ। সেই ছোট হাত, ছোট পা, আমাকে জড়িয়ে ধরবে একদিন। এই স্বপ্নটা কি আমার একার ছিল? নাকি আমি একজন স্বামী থাকার পরও এই স্বপ্ন দেখতে পারি না?

আমার স্বামী আমাকে মা হবার অধিকার দেয়নি।
হ্যাঁ, ‘দেয়নি’। যেন এটা কোনো দান, কোনো ছাড়, তার ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল কিছু।

সে বলে—“এই সময়ে না। আমি ঠিক সময় হলে বলবো।”
আর আমি? আমি কি একটা যন্ত্র? একটা সময় নির্ধারিত ইনকিউবেটর? আমার শরীর, আমার মানসিক প্রস্তুতি, আমার স্বপ্ন, এগুলো কই গেলো?

এই সমাজে নারীকে যখনই কিছু চাওয়ার চেষ্টা করতে দেখি, তখনই শুনি—“এখন সময় না।”
আমার প্রশ্ন, সময় ঠিক করবেন কে? কেন একজন নারী নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তগুলো নেবার স্বাধীনতা রাখবে না?

আমার স্বামী এখন তিরিশের কাছাকাছি বয়সী। তার কাছে বয়স মানে শুধু সংখ্যা। কিন্তু নারীর জীবনে বয়স একটা বাস্তবতা। সন্তান ধারণের উপযুক্ত সময়টা সীমিত।
এই সময়ে আমি শুধুই অপেক্ষা করছি।
তার ‘ঠিক সময়’-এর জন্য।
তার ‘অনুমতি’-র জন্য।
তার ‘মনোভাব’-এর পরিবর্তনের জন্য।

এই অপেক্ষার চেয়ে পরাধীনতা আর কী হতে পারে?

আমার শরীর আমি বহন করি। আমার অনুভব আমি বুঝি। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি?
যেন আমি নিজের শরীরের উপর নিজের মালিক নই।
এই কী নারী স্বাধীনতা? এই কী ভালোবাসা?

আজ এই কথাগুলো বলার সাহস করলাম, কারণ আমি জানি—আমার মতো আরও অনেকেই আছেন, যারা মুখে না বললেও মনে মনে কাঁদেন।
আমরা চাই ভালোবাসা, চাই সম্মান, চাই যৌথ সিদ্ধান্ত।
আমরা চাই অধিকার—মা হবার অধিকার, অথবা না হবার অধিকার—যেটা আমাদের নিজের চাওয়ার উপর নির্ভরশীল হবে।

একজন মানুষকে আরেকজনের অধীনে রেখে পরিবার হয় না। হয় না ভালোবাসা।
শুধু একটা বন্দিত্ব গড়ে ওঠে, যেখানে অনুভবগুলো গুম হয়ে যায়।

আপনার মতামত দিন
আপনিও কি এমন কিছু অনুভব করেছেন? আপনার গল্পটা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। হয়তো আপনার কণ্ঠ অন্য কাউকে সাহস দেবে

12/05/2025

বিশ্বাসে ভাঙন: একজন স্ত্রীর মনোজগতে সন্দেহের আগুন আর করণীয় কিছু পথ

ভূমিকা:
বিয়ে মানেই একসাথে পথচলা, একে অপরের প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা। তবে কিছু ঘটনায় এই বিশ্বাসে ফাটল ধরতে পারে। আজকের লেখাটি এমনই এক নারীর বাস্তব অভিজ্ঞতা নিয়ে, যিনি নতুন জীবনে পা রাখার পরেই এমন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন, যা তার মনে দ্বিধা, সন্দেহ ও কষ্টের জন্ম দিয়েছে। আমরা শুধু তার অভিজ্ঞতা শোনাবো না—দেখাবো করণীয় কিছু বাস্তবসম্মত পথও।

ঘটনাটি সংক্ষেপে:
আমি একদিন আমার স্বামীর ফোন হাতে নিই একটি কাজের জন্য। হঠাৎ তার গ্যালারিতে দেখি এক নারীর বুক দেখা যাচ্ছে এমন একটি ছবি এবং আরও একটি সাজানো-গোছানো মেয়ের ছবি। ছবিগুলো ম্যসেঞ্জার থেকে সেইভ করা ছিল। আমি ভীষণ কষ্ট পাই। জিজ্ঞেস করলে সে বলে, ‘গ্রুপ থেকে দিয়েছে, সেইভ করে ফেলেছি’।

আমি প্রশ্ন করি, ‘তুমি আমার স্বামী, তাহলে এসব ছবি সেইভ করার প্রয়োজন কেন?’ সে তখন বলে, ‘একটা মেয়ে এডিট করার জন্য পাঠিয়েছিল।’ কিন্তু ইনবক্সে কিছু নেই, সব ডিলিট করা।
এই ঘটনাটি আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। আমাদের নতুন বিয়ে, আমি কী করব বুঝতে পারছি না।

এই ধরনের পরিস্থিতিতে আরও কিছু সাধারণ উদাহরণ:
১. স্বামীর ফোনে দেখা গেলো মাঝেমধ্যে এক নির্দিষ্ট মেয়ের মেসেজ—‘ভাইয়া’ ডাকে, কিন্তু কিছু কিছু ইমোজি ও ভাষা অস্বাভাবিক ঘনিষ্ঠ।
২. একটি মেয়ের সাথে নিয়মিত চ্যাট, যার ম্যাসেজ প্রতিদিন সকালে ‘গুড মর্নিং সুইটহার্ট’ দিয়ে শুরু হয়, অথচ সে নাকি শুধুই একজন বন্ধু।
৩. ফেসবুকে এক মেয়ের অনেক ছবি লাইক দেওয়া এবং কমেন্ট—‘অসাধারণ লাগছো’।
৪. স্বামী রাত জেগে ফোনে কথা বলে, এবং আপনি জিজ্ঞেস করলে বলে—‘অফিসের কাজ’।
৫. একজন পুরোনো প্রেমিকার নম্বর ডিলিট না করে রেখে দেওয়া, এবং মাঝে মাঝে তার ইনবক্স চেক করা হয়।

এইসব ঘটনার মাঝে মূল বিষয় কী?
বিশ্বাস, যোগাযোগের স্বচ্ছতা, এবং মানসিক নিরাপত্তা।
এগুলো না থাকলে একটি সম্পর্কে অবিশ্বাস জন্ম নেয়। এবং সন্দেহ একবার জন্মালে তা ভালোবাসার জায়গা দখল করে নেয়।

এই অবস্থায় করণীয় কী?
১. ঠাণ্ডা মাথায় কথা বলুন:
ঝগড়া বা কান্নাকাটি না করে তাকে নিরপেক্ষভাবে জিজ্ঞেস করুন—এই ছবিগুলোর মানে কী? আপনার অনুভূতির গুরুত্ব তাকে বুঝতে দিন।
2. যদি সে সত্যি স্বচ্ছতা দেখায়:
কোনো মেয়ে যদি এডিটিং এর জন্য ছবি দেয়, সেটি হতেই পারে। কিন্তু সেই প্রমাণ থাকা উচিত। ইনবক্স ডিলিট করাটা বরং সন্দেহ বাড়ায়। প্রশ্ন তুলুন—‘ডিলিট কেন করা হয়েছে?’
3. নিজেকে ছোট মনে করবেন না:
আপনি তার স্ত্রী। কারো যৌন আবেদনময়ী ছবি তার ফোনে থাকার বিষয়টি স্বাভাবিক না। আপনি এটা নিয়ে প্রশ্ন করতেই পারেন, এবং সেটা আপনাকে ‘সন্দেহপ্রবণ’ বানায় না।
4. একটু সময় দিন:
সম্পর্কের শুরুতে অনেক কিছু না বুঝে মাথায় চেপে বসে। কিছুদিন তাকে পর্যবেক্ষণ করুন—সে স্বচ্ছ, খোলামেলা নাকি লুকোচুরি করে?
5. নিজের প্রতি যত্ন নিন:
মানসিক চাপ আপনাকে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আত্মসম্মান ও মানসিক শান্তির কথা আগে ভাবুন। নিজেকে সময় দিন, নিজের কাজ, জীবন, ভালো লাগা নিয়ে ব্যস্ত থাকুন।
6. বিশ্বাসযোগ্য কারো সঙ্গে আলোচনা করুন:
একা এই কষ্টে না ডুবে, কারো সঙ্গে কথা বলুন—বিশ্বস্ত কোনো বন্ধুবান্ধব বা কাউন্সেলরের সঙ্গে।
7. যদি দেখেন ব্যাপারটি সত্যিই সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে:
নিয়মিত মিথ্যে, গোপন আচরণ, অন্য নারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক—তবে নিজের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নতুন বিয়ের মানে এই না যে, আপনি সব মেনে নেবেন।

শেষ কথা:
বিয়ে শুধু সামাজিক বন্ধন নয়, এটি মানসিকভাবে একে অপরকে গ্রহণ করার বিষয়। সেখানে যদি লুকোচুরি, অস্পষ্টতা বা অশোভন আচরণ চলে আসে, তখন তা নিয়ে কথা বলাই দায়িত্বশীলতা। আপনি একজন মানুষ, আপনার আবেগ-ভালোবাসা মূল্যবান। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব একপক্ষের নয়, দু’জনের।

আপনার অভিজ্ঞতা বা মতামত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন। (ইনবক্সে)
আপনার গল্প হয়তো কাউকে সাহস জোগাবে।