29/05/2025
মিথ্যা অভিযোগে কারো চাকরি চলে যাবে কিন্তু সে আদালতে বিচার চাইতে পারবে না ??? এই আইন কি আপনি সরকারি চাকরিজীবী হলে মেনে নিতেন ?
সচিবালয়ের আন্দোলন নিয়ে ফ্রেন্ডলিস্টের অনেককে না বুজেই মন্তব্য করে দেখলাম । আসলে কোন বিষয়ে বিস্তারিত না জেনে চিলে কান নিয়ে গেলো শুনে চিলের পিছনে দৌড়ানো আমাদের পুরনো অভ্যাস । আর সরকারি চাকরিজীবীদের নিয়ে মানুষের কেন জানি চুলকানি বেশি ।
আসেলে সরকারি চাকরির নতুন আইনে দুর্নীতি, চুরি, তদবির বাণিজ্য বা ঘুষ সংক্রান্ত অপরাধের বিচার বা শাস্তির বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই। অথচ আপনারা ভাবতেছেন দুর্নীতি, চুরি, তদবির বাণিজ্য বা ঘুষ সংক্রান্ত বিষয়ে আইন করায় সচিবালয়ে সরকারি চাকরিজীবীরা আন্দোলন করতেছে ।
কিন্তু কেউ জানেনা আসলে আন্দোলন হচ্ছে অনানুগত্যের অজুহাতে শাস্তির আইনের বিরুদ্ধে ।
🔴 অনানুগত্যের অজুহাতে শাস্তি:
এই আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো কর্মচারী "অনানুগত্য প্রকাশ" করেন, তাহলে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ, বরখাস্ত অথবা নিম্নতম বেতন গ্রেডে নামিয়ে আনা যাবে। কিন্তু কোথাও স্পষ্ট করে বলা হয়নি—"অনানুগত্য" বলতে কী বোঝানো হয়েছে। ফলে একজন কর্মকর্তা তার ইচ্ছামতো যেকোনো বক্তব্য বা আচরণকে অনানুগত্য হিসেবে ধরে শাস্তি দিতে পারেন।
🔴 কর্ম সম্পাদনে ব্যর্থতার ফাঁদ:
আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো কর্মচারী কর্ম সম্পাদনে ব্যর্থ হন, তাহলে তাকেও একই ধরনের শাস্তি দেওয়া যাবে। কিন্তু "ব্যর্থতা" নির্ধারণের মানদণ্ড নেই। উদাহরণস্বরূপ, একজন কর্মকর্তা যদি ২ ঘণ্টার কাজ মাত্র ১০ মিনিটে করে দিতে বলেন, আর কর্মচারী সেটি না পারলে, সেটিকে ব্যর্থতা দেখিয়ে শাস্তি দিতে পারেন।
🔴 স্বেচ্ছাচারিতার আশঙ্কা:
এইসব অস্পষ্ট ধারাগুলোর কারণে কোনো কর্মকর্তা চাইলেই একটি অজুহাত তৈরি করে একটি ন্যায়পরায়ণ কর্মচারীকেও চাকরি থেকে অপসারণ করতে পারেন—বিশেষ করে যখন কর্মচারী কোনো অন্যায় আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানায়।
🔴 আইনগত প্রতিকার নেই:
সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হলো, এ ধরনের শাস্তির বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ারও সুযোগ রাখা হয়নি। মিথ্যা অভিযোগে কারো চাকরি চলে যাবে কিন্তু সে আদালতে বিচার চাইতে পারবে না। ফলে একজন সরকারি চাকরিজীবী পুরোপুরি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দয়া ও মর্জির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বেন।
🔴 নারী কর্মীদের জন্য ঝুঁকি:
যদি কোনো নারী কর্মচারী কর্মকর্তার অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হন, তাহলে তাকেও অনানুগত্য বা কর্মদক্ষতার অভাবের অজুহাতে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। এর ফলে নারীদের পেশাগত মর্যাদা ও নিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হবে।
মনে রাখা জরুরি:
“পানি সবসময় নিচের দিকেই গড়ায়।”
অর্থাৎ, এই আইন বাস্তবে যাদের উপর প্রয়োগ হবে, তারাই জানেন এর প্রকৃত যন্ত্রণা। যারা নিজেরা সরকারি চাকরিতে নেই, তারা হয়তো এসব কথার গভীরতা উপলব্ধি করতে পারবেন না।
👉 এই আইনে আরও অনেক অসংগতি রয়েছে, যা সময়ের সঙ্গে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। এই আইন সংশোধন না হলে এর শিকার হবেন সাধারণ কর্মচারীরাই।