17/05/2025
১. সাধারণ গনতন্ত্রের মৃত্যু দুই ভাবে ঘটে। হঠাৎ করে গনতন্ত্র উৎখাত হতে পারে। যেমন: চীনে প্রসিডেন্টকে হত্যা করে, সংবিধান বাতিল করা হয়। কিন্তু আধুনিক সময়ে গনতন্ত্র ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শাসকরা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কৌশলগত উপায়ে আস্তে আস্তে দুর্বল করে দেয়। ধীরে ধীরে নিয়ম পরিবর্তন করে নিজেদের পক্ষে নিয়ে আসে।
২. আধুনিক স্বৈরশাসকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জোড় করে কিংবা সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে না। বরং নির্বাচন ও গনতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতা আসে। তারা উন্নয়ন, অর্থনীতি ও মানুষের হতাশে পুঁজি করে বিরোধী পক্ষ কিংবা ভিন্ন মতকে জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দেয় এবং তাদের বিশ্বাস যোগ্যতাকে নষ্ট করে দেয়। ভোটে পরিবর্তন এনে নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করে। উদাহরণ হিসেবে যে সব নেতার নাম বলা যায়: ভেনিজুয়েলার হুগো শ্যাভেজ,হাঙ্গেরির ভিক্তর অর্বান ও তুরস্কের প্রসিডেন্ট এরদোয়ান।
৩.পূর্বে দল গুলো নেতা হিসেবে সাধারণত: অপেক্ষাকৃত উদার ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিদের মনোনয়ন করত। কিন্তু আধুনিক সময়ে চরমপন্থী, আর্থিক সক্ষম ব্যাক্তিরা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে এমন ব্যক্তিতে ক্ষমতার আসনে বসানো হয়। এগুলাকেই পুজি করে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার সর্বোচ্চ আসন দখল করে। একই ভাবে ভারতে উগ্রবাদী সংগঠের নেতা; মোদি দুই বার ক্ষমতায় আসে। ফলস্বরূপ, গনতন্ত্র দুর্বল হতে থাকে।
৪. সংবিধান বা লিখিত আইনের বিরুদ্ধেও এমন কিছু অলিখিত বিধি-বিধান থাকে, যা গনতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করে।
যেমন:
ক. বিরুদ্ধ মতকে সম্মান জানানো।
খ. ক্ষমতা থাকলেও তা মাত্রাতিরিক্ত ভাবে ব্যবহার না করা।
কিন্তু স্বৈরশাসকরা এই ধরনের অলিখিত নিয়মের তোয়াক্কা না করে, বিরোধী পক্ষকে দমন করে এমন অবস্থা করে, যাতে তারা আর মাথা তুলে না দাঁড়াতে পারে। দেশ বাঁচানোর নামে এমন সব কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়, যা গনতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেয়।
৫. চরম দলীয় বিভক্ত তৈরি করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়ানো হয়। সমঝোতা ও অসহযোগিতা অনুপস্থিত থাকে। দুই পক্ষ একে অন্যকে শত্রু মনে করে।রাজনৈতিক নীতি ও শিষ্টাচার লঙ্ঘিত হয়।
আর এভাবেই গনতন্ত্র ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যায়।
----- স্টিফেন জেলেস্কি এবং ডেনিয়েল জিবলেট (হাউ ডেমোক্রেসি ডাই)